হাদির চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট জানাল পরিবার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২১:১২:১২
হাদির চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট জানাল পরিবার
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার প্রয়োজনীয় সব প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তার ভাই ওমর বিন হাদি নিশ্চিত করেছেন যে হাদির শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি লক্ষ্য করা গেলেও চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বর্তমানে তিনি স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি জানান হাদির সুস্থতার জন্য আরেকটি জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে তবে তার বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি সেই ধকল সওয়ার মতো উপযোগী না হওয়ায় এখনই অপারেশন টেবিলে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এর আগে সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরের সেলেতার বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে কালক্ষেপণ না করে সরাসরি তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ভর্তি করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অধীনে পূর্ণাঙ্গ ডায়াগনস্টিক প্রক্রিয়া শুরু হয় যেখানে হাদির সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য তার ভাই ওমর বিন হাদি এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিনুল হাসান ফয়সালও সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। উল্লেখ্য গত শুক্রবার দুপুরে পল্টন এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার পর হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এক জরুরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হচ্ছে এবং প্রধান উপদেষ্টা নিজে তার চিকিৎসার বিষয়টি সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে উন্নত চিকিৎসার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশবাসীর কাছে বিশেষ দোয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।


হাদির চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট জানাল পরিবার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২১:১২:১২
হাদির চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট জানাল পরিবার
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার প্রয়োজনীয় সব প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তার ভাই ওমর বিন হাদি নিশ্চিত করেছেন যে হাদির শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি লক্ষ্য করা গেলেও চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বর্তমানে তিনি স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি জানান হাদির সুস্থতার জন্য আরেকটি জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে তবে তার বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি সেই ধকল সওয়ার মতো উপযোগী না হওয়ায় এখনই অপারেশন টেবিলে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এর আগে সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরের সেলেতার বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে কালক্ষেপণ না করে সরাসরি তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ভর্তি করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অধীনে পূর্ণাঙ্গ ডায়াগনস্টিক প্রক্রিয়া শুরু হয় যেখানে হাদির সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য তার ভাই ওমর বিন হাদি এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিনুল হাসান ফয়সালও সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। উল্লেখ্য গত শুক্রবার দুপুরে পল্টন এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার পর হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এক জরুরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হচ্ছে এবং প্রধান উপদেষ্টা নিজে তার চিকিৎসার বিষয়টি সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে উন্নত চিকিৎসার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশবাসীর কাছে বিশেষ দোয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।


খালেদা জিয়া ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ: প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২০:৪২:৫০
খালেদা জিয়া ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ: প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ঐতিহাসিক ভাষণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অভিহিত করে তাকে রাষ্ট্রের ‘অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বা ভিআইপি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দেওয়া এই ভাষণে তিনি উল্লেখ করেন যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতি খালেদা জিয়ার অবিচল অঙ্গীকার এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের উন্নয়নে তার অবদান বিবেচনা করেই সরকার তাকে এই বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছে। বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই প্রবীণ নেত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে সরকার শুরু থেকেই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং তার পরিবারের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে দেশে বা প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

একই ভাষণে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী বিচার প্রক্রিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে ড. ইউনূস এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্বাধীন ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন। তিনি দেশবাসীকে জানান যে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অভ্যুত্থানের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা এবং এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক সংস্কার এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন— এই তিনটি বিষয়কে তার সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ইতিমধ্যেই ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক একটি মামলার রায় ঘোষিত হওয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচারের পথ সুগম হয়েছে।

বিজয় দিবসের এই বিশেষ মুহূর্তে ড. ইউনূস ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের পাশাপাশি সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী বীরদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং বলেন যে বিগত বছরগুলোতে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের কারণে স্বাধীনতার সূর্য ম্লান হলেও জুলাই অভ্যুত্থান জাতিকে আবারও একটি বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে অন্তর্বর্তী সরকার যে বিস্তৃত সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দেশের আপামর জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তা সফল পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে এবং একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।


১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৯:০৭:১৪
১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা
ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহান বিজয় দিবসের সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করে জানিয়েছেন যে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া এই ভাষণে তিনি দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে আসন্ন এই ভোটের ওপরই নির্ভর করছে সমগ্র জাতির তথা আগামীর প্রজন্মের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের সন্তানের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি। জনগণের হাতেই দেশের ভাগ্য গড়ার চাবিকাঠি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি সবাইকে যোগ্য ও সৎ প্রার্থী নির্বাচিত করার আহ্বান জানান যাতে একটি সুন্দর ও নিশ্চিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

ভোটকে জনগণের ভবিষ্যৎ রচনার প্রধান অক্ষর হিসেবে অভিহিত করে ড. ইউনূস দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন যে ভোট বাক্সে নিজের রায় জমা দিতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তিনি প্রতিটি নাগরিককে সযত্নে এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে কেউ যদি ভোটদানে বাধা সৃষ্টি করতে আসে তবে তাকে সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিহত করতে হবে। ভোটের মাঠে যে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি জনগণকে আশ্বস্ত করেন যে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের পথ মসৃণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর।


পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি আর ফিরে আসবে না: ড. ইউনূস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:১৯:২৭
পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি আর ফিরে আসবে না: ড. ইউনূস
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্ব্যর্থহীন ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন যে ভয় দেখিয়ে সন্ত্রাস ঘটিয়ে বা রক্ত ঝরিয়ে এই দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর জাতির সামনে এসে তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন যে পরাজিত শক্তি এবং ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্টরা দেশকে অস্থিতিশীল করার যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে তা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দেওয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে দেশবাসীর সামনে উপস্থিত হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন বিজয়ের এই আনন্দের দিনেও গভীর বেদনার সঙ্গে জানাতে হচ্ছে যে জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সম্প্রতি যে বর্বরোচিত হামলা হয়েছে তা কেবল একজন ব্যক্তির ওপর আঘাত নয় বরং এটি বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও আমাদের গণতান্ত্রিক পথচলার ওপরই সরাসরি আঘাত।

শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা জানান যে তিনি বর্তমানে অত্যন্ত সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে ইতিমধ্যেই তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। সরকার এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন যে এই ষড়যন্ত্রে জড়িতরা যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন তাদের কাউকেই বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। হাদির সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহতালার কাছে দেশবাসীকে কায়মনোবাক্যে দোয়া করার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ড. ইউনূস সবাইকে সংযম বজায় রাখার অনুরোধ করেন। তিনি অপপ্রচার বা গুজবে কান না দিয়ে ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্টদের সৃষ্ট অস্থিরতা মোকাবিলায় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি এ দেশের পবিত্র মাটিতে আর কোনোদিন ফিরে আসার সাহস পাবে না।


১৬ ডিসেম্বর ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে আসলে কী হচ্ছিল?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:০৯:৩৫
১৬ ডিসেম্বর ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে আসলে কী হচ্ছিল?
ছবি : সংগৃহীত

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করলেও বিজয়ের সেই মাহেন্দ্রক্ষণের খবর সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাতে কিছুটা সময় লেগেছিল এবং অনেকেই রেডিওর মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয়ের বার্তা পেয়েছিলেন। তবে দুপুরের দিকেই যখন ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও আত্মগোপনে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা প্রকাশ্যে ঢাকার রাস্তায় বেরিয়ে আসতে শুরু করেন তখন সাধারণ মানুষের বুঝতে বাকি ছিল না যে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। গবেষকদের মতে ক্যান্টনমেন্টে আত্মসমর্পণের খুঁটিনাটি নিয়ে যখন রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছিল তখনো বাইরের সাধারণ মানুষ কিছুটা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলেন কিন্তু ভারতীয় বাহিনীকে শহরে প্রবেশ করতে দেখে সেই শঙ্কা কেটে গিয়ে চারদিক ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে মিত্রবাহিনী ঢাকায় প্রবেশ করে এবং ঠিক একই সময়ে মার্কিন সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থান নেয় যা ছিল এক নাটকীয় মুহূর্ত।

ক্যান্টনমেন্টের ভেতরের পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর যেখানে সকাল থেকেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল গন্দর্ভ সিং নাগরা ও পাকিস্তানের মেজর জেনারেল জামশেদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক চলছিল। ঘটনার মোড় ঘুরে যায় যখন সকালে মেজর জেনারেল নাগরার পাঠানো ‘প্রিয় আবদুল্লাহ’ সম্বোধন করা একটি লিখিত বার্তা পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজির কাছে পৌঁছায় এবং এরপর নাগরাকে নিরাপদে শহরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় যা কার্যত ঢাকার পতন নিশ্চিত করে। পাকিস্তানি জনসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিকের বর্ণনামতে নিয়াজি ও নাগরার মধ্যে তখন কিছু কৌতুকপূর্ণ কিন্তু অশালীন কথাবার্তাও হয়েছিল। পরবর্তীতে জেনারেল জে এফ আর জ্যাকব আত্মসমর্পণের দলিল নিয়ে হাজির হলে নিয়াজি একে ‘যুদ্ধবিরতির খসড়া’ বলতে চাইলও জ্যাকব তা নাকচ করে দেন এবং দলিলে ‘ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ড’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি উঠলে জানানো হয় এটি দুই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অবশেষে বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক দলিলে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নিয়াজি তার রিভলভার ও ব্যাজ জেনারেল অরোরার হাতে তুলে দেন।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার আগেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিজয়ের উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষ বাংলাদেশের পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে আসে যা বিবিসির তৎকালীন ফুটেজেও স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শী ও গবেষক আফসান চৌধুরীর মতে তখনো শহরের কোথাও কোথাও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল এবং মানুষের মনে আনন্দ ও আতঙ্কের এক মিশ্র অনুভূতি কাজ করছিল। প্রয়াত সেনা কর্মকর্তা মইনুল হোসেন চৌধুরীর স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায় সন্ধ্যার পর ঢাকার রাস্তাঘাট কিছুটা জনশূন্য ছিল কারণ পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করলেও সাধারণ মানুষের মনে তখনো পুরোপুরি ভয় কাটেনি। তবে সব শঙ্কা ছাপিয়ে দিনশেষে রেসকোর্স ময়দান থেকে ভেসে আসা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানই প্রমাণ করে যে বাঙালি জাতি তার কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা


সিঙ্গাপুরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওসমান হাদি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:০২:৫৮
সিঙ্গাপুরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওসমান হাদি
ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচনী প্রচারণা শেষে সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় গুলিবিদ্ধ শরীফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত সংকটাপন্ন এবং সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে (এসজিএইচ) উন্নত চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জন ও হাদির চিকিৎসার সমন্বয়ক ডা. আব্দুল আহাদ সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে নিশ্চিত করেছেন যে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গুলিবিদ্ধ এই যোদ্ধার মস্তিষ্কে ইস্কেমিক পরিবর্তন ও ব্রেন ইডেমা বা ফোলা ভাব এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনি জানান যে ব্রেন স্টেমে গুরুতর আঘাতের ফলে ভেন্ট্রিকুলার সিস্টেমে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে যা বর্তমানে চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং সেখানে নিউরোসার্জারি ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার টিম যৌথভাবে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে।

চিকিৎসকদের সর্বশেষ মূল্যায়ন অনুযায়ী বর্তমানে হাদির কিডনি হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস কৃত্রিম ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে সচল রাখা হয়েছে এবং তার গ্লাসগো কোমা স্কেল বা জিসিএস স্কোরে এখনো কোনো পরিবর্তন আসেনি অর্থাৎ নিউরোলজিক্যাল অবস্থার দৃশ্যমান কোনো উন্নতি বা অবনতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ডা. আহাদ ব্যাখ্যা করেন যে ব্রেন ইনজুরির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বা ‘টাইম উইন্ডো’ থাকে যার মধ্যে শরীর ইতিবাচক সাড়া দিলে ভবিষ্যৎ সুস্থতার সম্ভাবনা তৈরি হয় তাই চিকিৎসকরা এখন সেই সময়সীমার মধ্যেই হাদির শারীরিক প্রতিক্রিয়ার দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন। এছাড়া ফুসফুসের সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে আগের মতোই রক্তের উপস্থিতি দেখা গেছে এবং এই জটিলতা বিবেচনা করেই সিঙ্গাপুরে তার শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যবস্থাপনা বা রেসপিরেটরি ম্যানেজমেন্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাদির চোখ খোলা বা অবস্থার উন্নতি হওয়া নিয়ে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন তথ্যকে ভিত্তিহীন গুজব বলে নাকচ করে দিয়ে ডা. আহাদ স্পষ্ট জানিয়েছেন যে তার অবস্থা এখনো ‘স্ট্যাটিক’ বা অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনি বলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও অনেক সময় অপ্রত্যাশিত অলৌকিক পরিবর্তন দেখা যায় এবং সেই আশাতেই সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও নিবিড় পরিচর্যা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এই সংকটময় মুহূর্তে হাদির পরিবার ও সহকর্মীরা দেশবাসীর কাছে ভুল তথ্য না ছড়িয়ে কায়মনোবাক্যে দোয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যেন তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারও সবার মাঝে ফিরে আসতে পারেন।


একাই থামিয়ে দিলেন পাকিস্তানি বহর: বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৯:২৮:২৩
একাই থামিয়ে দিলেন পাকিস্তানি বহর: বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ
ছবি : সংগৃহীত

আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক মৃত্যুঞ্জয়ী বীর সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের ৭৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৭ সালের আজকের এই গৌরবোজ্জ্বল দিনে ভোলার দৌলতখান উপজেলার পশ্চিম হাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই অকুতোভয় বীর যার আত্মত্যাগের বিনিময়ে রচিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য ইতিহাস। সেনাবাহিনীর হাবিলদার হাবিবুর রহমান ও মালেকা বেগমের জ্যেষ্ঠ সন্তান মোস্তফা কামালের শৈশব কেটেছিল কুমিল্লা সেনানিবাসে যেখানে বাবার কর্মস্থলের সুবাদে সেনাদের কুচকাওয়াজ ও মার্চপাস্ট দেখে তার মনেও সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দানা বেঁধেছিল। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় খুব বেশি দূর না এগোলেও দেশপ্রেমের টানে মাত্র ২০ বছর বয়সে ১৯৬৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর নিজের জন্মদিনে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক হিসেবে তার চাকরি চূড়ান্ত হয়।

একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে যখন দেশজুড়ে যুদ্ধের দামামা বাজছিল তখন মোস্তফা কামালের ইউনিটকে কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্থানান্তর করা হয় এবং ১৮ এপ্রিল দরুইন গ্রামে তিনি যে বীরত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। সেদিন মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন মর্টারের গোলাবর্ষণ ও ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুক্তিবাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন মেজর শাফায়াত জামিলের নির্দেশে এবং নিজের অসামান্য সাহসিকতার কারণে মোস্তফা কামালকে মৌখিকভাবে ল্যান্সনায়েকের দায়িত্ব দিয়ে দশজন সৈনিকের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল। যুদ্ধের এক পর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুখে যখন টিকতে না পেরে সহযোদ্ধারা পিছু হঠতে বাধ্য হচ্ছিলেন তখন মোস্তফা কামাল সঙ্গীদের নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে নিজের এলএমজি নিয়ে একাই শত্রুর মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নেন।

নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে মোস্তফা কামাল ট্রেঞ্চে অবস্থান নিয়ে অবিরাম গুলি চালিয়ে শত্রুবাহিনীর অগ্রগতি রুখে দেন এবং তার নিখুঁত নিশানায় প্রায় ২০-২৫ জন পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু হলে হানাদারদের মনোবল ভেঙে পড়ে। একনাগাড়ে যুদ্ধ করতে করতে একসময় তার এলএমজির গুলি শেষ হয়ে যায় এবং তিনি মারাত্মকভাবে জখম হন যার সুযোগ নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনারা ট্রেঞ্চে ঢুকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে এই বীরযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তার ক্ষতবিক্ষত দেহটি পরবর্তীতে স্থানীয় গ্রামবাসী দরুইন গ্রামে সমাহিত করেন যেখানে আজ তার স্মৃতিসৌধ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। শাহাদাতের সময় তিনি বাবা-মা, স্ত্রী পেয়ারা বেগম ও মাত্র দেড় মাস বয়সী শিশুসন্তান মোশারেফ বাচ্চুসহ ভাই-বোনদের রেখে গিয়েছিলেন। কালের পরিক্রমায় তার পরিবারের অনেকেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন এবং সর্বশেষ ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তার ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমানও মারা যান।

মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান 'বীরশ্রেষ্ঠ' উপাধিতে ভূষিত করে। তার স্মৃতিরক্ষার্থে ভোলা সদরের আলীনগর ইউনিয়নে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে একটি জাদুঘর এবং ভোলা শহরে একটি বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানী ঢাকার কমলাপুর স্টেডিয়ামটির নামকরণও এই মহান বীরের নামে করা হয়েছে যা তরুণ প্রজন্মের কাছে তার বীরত্বগাথা পৌঁছে দিতে ভূমিকা রাখছে।


১ বছরের শিশুও মুক্তিযোদ্ধা: ৫৪ বছরের লজ্জাজনক চিত্র

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৯:০৩:১৮
১ বছরের শিশুও মুক্তিযোদ্ধা: ৫৪ বছরের লজ্জাজনক চিত্র

স্বাধীনতার পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি বরং ভুয়া সনদের দাপটে প্রকৃত ইতিহাস আজ প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের বয়স ছিল মাত্র এক বা দুই বছর তারাও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় নাম লিখিয়েছেন এবং এমন ভুয়া সনদধারীর সংখ্যা প্রায় আট হাজার বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন যে বিগত সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যথেচ্ছভাবে কাটছাঁট করা হয়েছে এবং বিশেষ করে চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুযোগ-সুবিধা থাকায় এই জালিয়াতির মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় প্রায় দশ হাজার মানুষ চাকরি পেয়েছেন যাদের অনেকেরই প্রয়োজনীয় নথিপত্র নেই এবং এদের মধ্যে প্রায় দুই হাজার আটশ জনকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে যা নিয়ে বর্তমানে প্রায় চার হাজার মামলা চলমান রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক এই পরিস্থিতিকে অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং জানিয়েছেন যে কমান্ডারদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণেই মূলত এই অনিয়মগুলো ডালপালা মেলেছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভুয়াদের দাপট দেখা তার জন্য চরম গ্লানিকর এবং পরিতাপের বিষয় হলো এরা আদালতের মাধ্যমে নামের আগে ‘বীর’ শব্দ যুক্ত করিয়েছে যা বাতিলের জন্য এখন সরকারকে আইনি লড়াই চালাতে হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছেন তবে চার হাজার মামলার জটিলতার কারণে এই প্রক্রিয়াটি কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে যদিও সরকার মামলাগুলোর ওপর কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে এবং দু-একটি রায় পেলেই তা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে বাকি ভুয়াদের বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৬৮ জন যার মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ১৪৭ জন ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন এবং জীবিত আছেন ৮৬ হাজার ৫২১ জন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দৌরাত্ম্য কমাতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বা জামুকা এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যার আওতায় এখন থেকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলার সরকারি ওয়েবসাইটের পাশাপাশি স্থানীয় জনবহুল এলাকা যেমন ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর বাজার বা নোটিশ বোর্ডে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ও ঠিকানাসহ তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হবে যাতে সাধারণ মানুষ তাদের চিনতে পারে এবং কেউ অমুক্তিযোদ্ধা হলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারে। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং অনলাইনে অভিযোগ নেওয়ার ব্যবস্থাও চালু করেছে যাতে ৫৪ বছরের জমে থাকা এই আবর্জনা পরিষ্কার করে প্রকৃত বীরদের সম্মান পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।


সাভারে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনের সূচনা করলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৮:৪৮:১৯
সাভারে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনের সূচনা করলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার প্রত্যুষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দিনের শুরুতেই সকাল সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান এবং সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদনের পরপরই সকাল ৬টা ৫৬ মিনিটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করেন এবং বিউগলের করুণ সুরের মূর্ছনায় তখন পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকায় এক আবেগঘন ও গম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এবারের বিজয় দিবস উদ্‌যাপনে এক ভিন্নমাত্রা ও রোমাঞ্চ যোগ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং 'টিম বাংলাদেশ' যারা সর্বোচ্চ সংখ্যক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাশুটিং করে একটি নতুন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। দেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে ৫৪ জন দক্ষ প্যারাট্রুপার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরের আকাশে পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন করবেন যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা প্যারাশুটিং প্রদর্শনী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ঐতিহাসিক এই দিনটিকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করতে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকেই তেজগাঁও বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর চৌকস দলগুলো পৃথকভাবে মনোমুগ্ধকর ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শন করবে এবং আকাশপথে এই শক্তি প্রদর্শনীর পাশাপাশি সেখানে একটি বিশেষ বিজয় দিবস ব্যান্ড শোয়েরও আয়োজন রাখা হয়েছে যা উপস্থিত দর্শকদের দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত করবে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত