নেত্রকোনায় কিশোরী ধর্ষণ ও আত্মহত্যা মামলার রায়: তিন যুবকের মৃত্যুদণ্ড 

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৮ ২০:৩৫:৫১
নেত্রকোনায় কিশোরী ধর্ষণ ও আত্মহত্যা মামলার রায়: তিন যুবকের মৃত্যুদণ্ড 
ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা এলাকায় ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ৩টায় নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ড. একেএম এমদাদুল হক এই রায় দেন।

রায়ে ধর্ষণের মামলায় তিন যুবককে মৃত্যুদণ্ড এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন—অপু চন্দ্র সরকার (২০), মামুন আকন্দ (২৫) ও সুলতান মিয়া (২২)। এদের মধ্যে অপু চন্দ্র সরকার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. নুরুল কবীর রুবেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র ও আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওই তিন যুবক এক কিশোরীকে মাছের খামারের একটি ঘরে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। মেয়েটির মা রাতে কৌশলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা হুমকি দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে।

কিন্তু ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে অপমান ও মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে কিশোরী নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

প্রথমে নেত্রকোনা মডেল থানা বিষয়টি অপমৃত্যু হিসেবে মামলা রেকর্ড করে। কিশোরীর মা ধর্ষণের মামলা দিতে চাইলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি এবং তাকে অপমান করে থানায় থেকে বের করে দেয়। পরে এলাকায় ব্যাপক প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের মুখে তৎকালীন ওসি আমীর তৈমুর ইলিকে প্রত্যাহার করা হয়।

পরে কিশোরীর মা পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন—একটি ধর্ষণ, অপরটি আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে। আদালতের নির্দেশে পুনরায় লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয় এবং তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে এই রায় ঘোষণা করা হয়।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ