থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা, শান্তি আলোচনায় বসছেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৮ ১০:১৭:১১
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা, শান্তি আলোচনায় বসছেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী
ছবিঃ সংগৃহীত

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সীমান্ত সংঘাত পঞ্চম দিনে পা দিয়েছে। দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ গোলাগুলির ফলে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ। মূলত প্রাচীন মন্দিরঘেরা সীমান্ত অঞ্চল নিয়ে এই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।

এই সংকট মোকাবিলায় শান্তি আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। সোমবার (২২ জুলাই) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বিকেল ৩টায় তারা বৈঠকে মিলিত হবেন। এই আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দুই নেতার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। আলোচনায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অংশ নেবেন এবং চীনও একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে।

দুই দেশই একে অপরকে হামলার জন্য দায়ী করছে। কম্বোডিয়ার অভিযোগ, থাই সেনারা ভারী অস্ত্র নিয়ে তাদের মাটিতে প্রবেশ করেছে। অন্যদিকে, থাইল্যান্ড জানিয়েছে, কম্বোডিয়ার স্নাইপাররা মন্দিরের আশপাশে অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের ভূমিতে রকেট হামলা চালিয়েছে। সীমান্তের অন্তত সাতটি এলাকায় এখনও গোলাগুলি চলছে।

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি অংশ নিচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁদের কর্মকর্তারা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন শান্তি আলোচনায় সহায়তার জন্য। এদিকে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ণের জন্মদিন উপলক্ষে যে বড় আয়োজন হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে যুদ্ধাবস্থার কারণে।

প্রাণহানির দিক থেকেও অবস্থা উদ্বেগজনক। থাইল্যান্ড বলেছে, তাদের ৮ সেনা ও ১৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। কম্বোডিয়া জানিয়েছে, তাদের ৫ সেনা ও ৮ জন বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন। থাই সেনারা আরও বলেছে, তারা কম্বোডিয়ার ১২ জন নিহত সেনার মরদেহ ফেরত দিয়েছে।

সংঘাতের ফলে থাইল্যান্ডের সীমান্ত এলাকা থেকে ১ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ এবং কম্বোডিয়া থেকে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডকে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে, আবার থাইল্যান্ড বলছে কম্বোডিয়া হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।

জাতীয়তাবাদী উত্তেজনা বাড়তে থাকায় থাই সরকার নাগরিকদের সতর্ক করেছে যেন তারা কম্বোডিয়ান অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কোনো হিংসাত্মক আচরণ না করে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখনও চরমে, তবে শান্তি আলোচনার মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধান আসবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ