জানুন মানসিক সুস্থতায় বিজ্ঞানসম্মত ছয়টি পরামর্শ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৮ ১৯:৩৯:২০
জানুন মানসিক সুস্থতায় বিজ্ঞানসম্মত ছয়টি পরামর্শ
ছবি: সংগৃহীত

মানসিক স্বাস্থ্য একটি মানুষের সামগ্রিক সুস্থতার অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা আবেগিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক পরিপূর্ণতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। এটি কেবল একজন ব্যক্তির চিন্তা, অনুভূতি এবং আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে না, বরং তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সম্পর্ক রক্ষা এবং দৈনন্দিন জীবনের চাপ মোকাবিলায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

একজন মানুষ যদি মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন, তবে তিনি নিজের সামর্থ্য উপলব্ধি করতে পারেন, জীবনের কঠিন সময়কে যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হন এবং সমাজের সঙ্গে কার্যকরভাবে যুক্ত থাকতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভালো মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ের উন্নয়নের পূর্বশর্ত।

মানসিক সুস্থতা বজায় রাখার কার্যকর পরামর্শ:

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

১. শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা: নিয়মিত ব্যায়াম, যোগাভ্যাস বা কোনো খেলাধুলায় অংশগ্রহণ মানসিক চাপ কমাতে এবং মনের স্থিতি বজায় রাখতে সহায়ক।

২. সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখা: পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক। মানুষের সঙ্গে আন্তরিক সংযোগ একাকীত্ব কমায় এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।

৩. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা: ঘুমের ঘাটতি মনঃসংযোগ কমানো, মেজাজ খারাপ হওয়া এবং মানসিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা নিরবিচারে ঘুম গুরুত্বপূর্ণ।

৪. নিজের জন্য সময় বরাদ্দ: পছন্দের কোনো শখ বা সৃজনশীল কাজে সময় দেওয়া মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।

৫. ব্যক্তিগত যত্ন: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান ও ধ্যান/মেডিটেশনের মতো মানসিক প্রশমনের অনুশীলন মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখে।

৬. পেশাদার সহায়তা নেওয়া: নিজেকে দুর্বল ভাবার কিছু নেই যখন প্রয়োজন মনে হয়, তখন অবশ্যই কাউন্সেলর বা মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও সচেতনতা:

বর্তমান যুগে মানসিক রোগের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিষণ্ণতা (ডিপ্রেশন), উদ্বেগ (অ্যাংজাইটি), বাইপোলার ডিসঅর্ডার, স্কিজোফ্রেনিয়া প্রভৃতি মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা বিশ্বব্যাপী লাখো মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে মানসিক রোগ নিয়ে এখনও রয়েছে নানা কুসংস্কার ও সামাজিক বাঁধাধরা দৃষ্টিভঙ্গি। ফলে অনেকেই এই সমস্যার কথা গোপন রাখেন এবং চিকিৎসা গ্রহণে দ্বিধা করেন, যা দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা আরও জটিল করে তোলে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক স্বাস্থ্যকে শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ, সুস্থ মনের অধিকারী না হলে ব্যক্তি জীবনের অন্যান্য দিক যেমন কর্মক্ষমতা, সম্পর্ক বা দৈনন্দিন দায়িত্ব পালন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ