ভারতীয় বাহিনীর দাবি:পেহেলগাম হামলার মূল পরিকল্পনাকারী শেষ

পেহেলগাম হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সুলেমান নিহত: দাবি ভারতীয় বাহিনীরকাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সুলেমান ওরফে হাশিম মুসাকে হত্যা করার দাবি করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। সোমবার (২৮ জুলাই) ‘অপারেশন মহাদেব’ নামে চালানো এক যৌথ অভিযানে তাকে ও আরও দুইজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযানে অংশ নেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের বিশেষ বাহিনী। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শ্রীনগরের একটি এলাকায় সন্ত্রাসীদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় এবং শুরু হয় দীর্ঘ বন্দুকযুদ্ধ। এই সংঘর্ষে সুলেমান ছাড়াও নিহত হয় আরও দুই শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী আবু হামজা ও ইয়াসির।
ভারতের দাবি, নিহত সুলেমান পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়েবার সক্রিয় সদস্য এবং অতীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতেও কাজ করেছেন। যদিও পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। একইসঙ্গে দিল্লি এখনো পর্যন্ত তাদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন এলাকা পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন প্রাণ হারান। এই হামলা সারা ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। হামলার পরপরই সুলেমানের বিরুদ্ধে ২০ লাখ রুপির পুরস্কার ঘোষণা করে কাশ্মীর পুলিশ।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ‘অপারেশন সিঁদুর’ মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই এ অভিযান চালানো হয়, যা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এখনও পুরো এলাকায় তল্লাশি চলছে। তারা সম্ভাব্য গোপন আস্তানা, অস্ত্র ও গোলাবারুদের খোঁজে চিরুনি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
/আশিক
হাসিনা, রাজাপাকসে, শর্মা–এর পর কি এবার মোদি? মণিপুরের অস্থিরতায় দিল্লিতে কাঁপন
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে দীর্ঘ ২৯ মাস ধরে চলমান অস্থিরতা ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ভাঙন নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে—নরেন্দ্র মোদি কি নিজ দেশের ভেতরেই এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক সংকটে পড়তে যাচ্ছেন? প্রতিবেশী দেশগুলোতে একের পর এক মোদি-সমর্থিত শাসকদের পতনের পর, এবার ভারতের ভেতরেও মোদির ভবিষ্যৎ নিয়ে জোরালো আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রতিবেশীদের পতন ও ডমিনো ইফেক্ট
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতন, শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকসে পরিবারের ক্ষমতাচ্যুতি, নেপালে কেপি শর্মা অলির সরে দাঁড়ানো—সবগুলো ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক প্রভাব বলয়ের মধ্যেই ঘটেছে। অনেকেই এগুলোকে আলাদা আলাদা গণঅভ্যুত্থান ভেবেছিলেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে এগুলো ছিল একটি “ডমিনো ইফেক্ট”—যেখানে একের পর এক শাসক জনরোষে পতিত হয়েছেন, আর সেই শাসকরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দিল্লির সমর্থনপুষ্ট ছিলেন। এখন সেই ডমিনো পড়তে পড়তে ভারতের দরজায় এসে ঠেকছে।
মণিপুরের অস্থিরতা: মোদির ভাবমূর্তিতে আঘাত
মণিপুরে টানা ২৯ মাস ধরে দাঙ্গা, সহিংসতা ও অব্যবস্থাপনা মোদি সরকারের জন্য এক বড় ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার শক্তিশালী সেনা ও পুলিশি উপস্থিতি দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। সম্প্রতি বিজেপির তিন প্রভাবশালী নেতা দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধুমাত্র দলবদল নয়; বরং শাসকদলের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত।
অভ্যন্তরীণ চাপে বিজেপি ও আরএসএসের দ্বন্দ্ব
মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আরএসএস ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। কিন্তু বর্তমানে সেই আরএসএসের ভেতর থেকেই মোদির সরে যাওয়ার দাবি উঠছে। বিদ্রূপাত্মকভাবে, বয়সসীমার কারণে যেভাবে তিনি অটল বিহারী বাজপেয়ী বা লালকৃষ্ণ আদভানিকে সরিয়ে দিয়েছিলেন, এখন সেই একই নিয়মের ফাঁদে তিনি নিজেই পড়ছেন। বিজেপির একটি শক্তিশালী অংশ এখন বলছে, “৭৫ বছর হয়ে গেছে, এবার সরে দাঁড়ানোর সময়।”
দক্ষিণ ভারতের নতুন চ্যালেঞ্জ
উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অস্থিরতার পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতে বিজেপি একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। জনপ্রিয় অভিনেতা বিজয় থালাপাতির নতুন রাজনৈতিক দল সেখানে প্রবল সাড়া ফেলছে। দক্ষিণ ভারত বরাবরই বিজেপির জন্য দুর্ভেদ্য অঞ্চল ছিল। নতুন এই শক্তির উত্থান মোদির অজেয় ভাবমূর্তিকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
মোদির ভাবমূর্তি ও আন্তর্জাতিক চাপ
মোদি দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে অজেয় নেতা হিসেবে তুলে ধরেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কারচুপির অভিযোগ, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক, এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন তাঁর ভাবমূর্তি দুর্বল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিবেশীদের সংকট সামাল দিতে ব্যর্থ মোদি এখন নিজের দেশেও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারছেন না।
বাংলাদেশের শিক্ষা ও ভারতের প্রশ্ন
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতন অনেককে বিস্মিত করেছিল। অথচ তার আগে থেকেই দেশের ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ জমছিল। ঠিক একইভাবে মণিপুরের অস্থিরতা, বিজেপির অভ্যন্তরীণ ভাঙন এবং জনগণের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ভারতের জন্য এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করছে।
শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসে, বাংলাদেশের শেখ হাসিনা, নেপালের কেপি শর্মা ওলি—সবাই একসময় নিজেদের অজেয় ভাবতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনরোষে তাদের পতন হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি কি সেই ধারাবাহিকতার নতুন অধ্যায় হতে যাচ্ছেন? আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মণিপুরের ভাঙনকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করার সুযোগ নেই। এটি এক বড় ছবির অংশ—যেখানে ভারতের ভেতরে-বাইরে সবকিছু মিলিয়ে এক নিখুঁত ঝড়ের আবহ তৈরি হচ্ছে।
প্রশ্ন এখন একটাই—রাজাপাকসে, হাসিনা, শর্মার পর এবার কি মোদির পালা? উত্তর সময়ই দেবে।
চায়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একই প্রেমিকের সঙ্গে দুই গৃহবধূর পলায়ন
একই পরিবারের দুই গৃহবধূ এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের তিন মেয়েকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে দুজনেই মিলে পালিয়ে যান একই পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে। তবে স্বপ্নের ঘর বাঁধার আগেই পুলিশ তাদের আটক করেছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায়।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছেন সেই প্রেমিক। স্থানীয় সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, সোমবার বিকেলে হঠাৎ করেই ইয়াসিন শেখ এবং তার ভাই আনিসুর শেখের স্ত্রীরা নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা তাদের কোথাও খুঁজে না পেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তারা জানান, তাদের স্ত্রীরা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে যাননি, বরং প্রতিবেশী যুবক আরিফ মোল্লা তাদের প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন। আরিফের স্ত্রীও পুলিশের কাছে একই দাবি করেন।
পরপর দুটি পরিবার থেকে একই ধরনের অভিযোগ আসায় পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে। তারা দুই গৃহবধূর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে। তবে পুলিশ সেখানে পৌঁছানোর আগেই প্রেমিক আরিফ মোল্লা পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে।
অবশেষে মঙ্গলবার রাতে ওই দুই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। বুধবার তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা স্বীকার করেন, একই প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর জন্যই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তারা জানান, বাড়ির লোকজন যেন তাদের আটকাতে না পারে, সেজন্য তারা চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন।
পুলিশের প্রশ্নের জবাবে বড় জা কুলচান বেগম অকপটে জানান, “হ্যাঁ, আমরা দুজন একই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছিলাম।” পুলিশের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা। কারণ সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় একাধিক প্রেমিকের নাম উঠে আসে। কিন্তু এখানে দুই নারীর লক্ষ্য একই ব্যক্তি হওয়ায় তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
এই ঘটনায় পুরো এলাকায় তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, একই পরিবারের দুই গৃহবধূ যে একই পুরুষের প্রেমে পড়বেন এবং এমন ভয়ংকর পরিকল্পনা করবেন, তা তারা কখনো ভাবেননি। অনেকেই বলছেন, এই ঘটনা সমাজ ও পারিবারিক সম্পর্কের ভাঙন কতটা গভীর হয়েছে, তা স্পষ্ট বোঝাচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই নারীকে আদালতে তোলা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে। একইসঙ্গে মূল অভিযুক্ত প্রেমিক আরিফ মোল্লাকে ধরতে সর্বাত্মক অভিযান চলছে।
ভারতে ভোট চুরির ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাঁস করবেন রাহুল গান্ধী
ভারতে ভোট চুরি এবং ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ তুলে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত করে তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি দাবি করেছেন, তার হাতে এমন অকাট্য প্রমাণ রয়েছে যা প্রকাশ পেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনগণের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না। রাহুল এই প্রমাণকে 'হাইড্রোজেন বোমা' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রলডটইন এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিহারের পাটনায় ‘ভোটাধিকার যাত্রা’র সমাপনী অনুষ্ঠানে রাহুল বলেন, সম্প্রতি মহারাষ্ট্র বিধানসভা এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল আসনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। তার ভাষ্যমতে, কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা এলাকায় কীভাবে ভোট চুরি হয়েছে, সেটির বিস্তারিত প্রমাণ কংগ্রেস ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছে।
রাহুলের অভিযোগ ও বিজেপির প্রতিক্রিয়া
রাহুল গান্ধীর দাবি অনুযায়ী, কংগ্রেস মহাদেবপুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা ছয় মাস ধরে পরীক্ষা করে এক লাখেরও বেশি অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই অনিয়মগুলোতে নির্বাচন কমিশন বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ করেছে। রাহুল যেসব অনিয়মের কথা বলেছেন তার মধ্যে রয়েছে:
ডুপ্লিকেট নাম: ১১,৯৬৫টি
ভুয়া বা অকার্যকর ঠিকানা: ৪০,০৯টি
একই ঠিকানায় একাধিক নিবন্ধন: ১০,৪৫৪টি
অকার্যকর ছবি: ৪,১৩২টি
ফরম-৬-এর অপব্যবহার: ৩৩,৬৯২টি
রাহুলের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি নেতা রবি শঙ্কর প্রসাদ তাকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, "নির্বাচনের সঙ্গে পরমাণু বোমা বা হাইড্রোজেন বোমার তুলনা কেন করছেন? বিরোধীদলীয় নেতা হয়ে নিজেকে কেন ছোট করছেন?"
নির্বাচন কমিশনের অবস্থান
কংগ্রেসের এসব অভিযোগ অবশ্য নির্বাচন কমিশন অস্বীকার করেছে। গত ১৪ আগস্ট কমিশন রাহুলের মহাদেবপুরা-সংক্রান্ত অভিযোগকে 'ভুল ও বিভ্রান্তিকর' বলে মন্তব্য করে। এর আগেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কমিশন জানিয়েছিল, ভোটের ফলাফল নিয়ে হতাশ রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ 'সম্পূর্ণ হাস্যকর'। কংগ্রেসের দাবি, শুধু কর্ণাটক নয়, মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনেও জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে বিজেপি 'শৈল্পিক কারচুপি' করেছে।
ভারত আমাদের হাত বেঁধে, মুখ ঢেকে বন্দীদের মতো করে নিয়ে যায়—এরপর সমুদ্রে ফেলে দেয়
নুরুল আমিন তার ভাইয়ের সঙ্গে শেষবার গত ৯ মে কথা বলেছেন। ফোনকলে তিনি জানতে পারেন, তার ভাই কায়রুলসহ ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মিয়ানমারে বিতাড়িত করেছে ভারত সরকার। এই ৪০ জন শরণার্থী প্রাণ বাঁচাতে কয়েক বছর আগে মিয়ানমার থেকে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বর্তমানে মিয়ানমারে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ চলছে, যেখানে সামরিক জান্তার অনুগত বাহিনীর সঙ্গে ক্ষুদ্র-জাতিগোষ্ঠীর মিলিশিয়া ও প্রতিরোধ বাহিনীর সংঘাত চলছে। এই পরিস্থিতিতে নুরুলের জন্য তার পরিবারকে আবার দেখার সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কোঠায়।
বিতাড়নের তিন মাস পর বিবিসি মিয়ানমারে থাকা সেই শরণার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত ‘বা হ্তু আর্মি (বিএইচএ)’ প্রতিরোধ দলের সঙ্গে আশ্রয় নিয়েছেন।
শরণার্থী সৈয়দ নুর ভিডিও কলে বিবিসিকে বলেছেন, “আমরা মিয়ানমারে নিরাপদ বোধ করি না। এখানে পুরো এলাকা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো।” তিনি একটি কাঠের তৈরি আশ্রয়শিবিরে ছিলেন, তার চারপাশে আরও ছয়জন শরণার্থী ছিলেন।
দিল্লিতে থাকা নুরুল আমিন বলেন, “আমি মানতেই পারি না যে আমার মা-বাবা ও যাঁদের বিতাড়ন করা হয়েছে, তাঁরা কী কষ্টে আছেন।” তিনি আরও বলেন, “মানুষকে কীভাবে শুধু সমুদ্রে ফেলা যায়? বিশ্বে মানবিকতা বেঁচে আছে, কিন্তু আমি ভারত সরকারের মধ্যে কোনো মানবিকতা দেখিনি।”
বিতাড়নের প্রক্রিয়া
বিবিসি জানায়, এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রথমে দিল্লি থেকে উড়োজাহাজে করে বঙ্গোপসাগরের একটি দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নৌযানে করে আন্দামান সাগরে নিয়ে জীবনরক্ষাকারী জ্যাকেট পরিয়ে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। সাঁতরে তাঁরা তীরে পৌঁছান এবং এখন মিয়ানমারে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়েছেন।
জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার থমাস অ্যান্ড্রু বলেছেন, ভারতের বিরুদ্ধে এ অভিযোগের সপক্ষে ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ’ রয়েছে। তিনি জেনেভায় ভারতের মিশনপ্রধানের কাছে এই তথ্য উপস্থাপন করলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাননি। বিবিসিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো উত্তর পায়নি।
একজন শরণার্থী জন তার ভাইকে ফোনে বলেছেন, “তারা (ভারতীয় কর্তৃপক্ষ) আমাদের হাত বেঁধে, মুখ ঢেকে বন্দীদের মতো করে নিয়ে গেছে। তারপর (নৌকায় উঠিয়ে) সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে।”
বিতাড়িত শরণার্থীদের ওপর নির্যাতন
সৈয়দ নুর বলেন, উড়োজাহাজ থেকে নামার পর তাদের দুটি বাসে ওঠানো হয়, যার পাশে ‘ভারতীয় নৌসেনা’ লেখা ছিল। তিনি আরও বলেন, “আমাদের হাত প্লাস্টিক দিয়ে বাঁধা হয়েছিল এবং মুখ কালো কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল।” বাসে থাকা লোকজন হিন্দি ভাষায় কথা বলতেন।
নৌকায় হাত খোলা ও মুখের কাপড় সরানোর পর শরণার্থীরা বুঝতে পারেন, তারা একটি বড় যুদ্ধজাহাজে আছেন। অনেকেই টি-শার্ট, কালো প্যান্ট ও কালো সেনা বুট পরা ছিলেন। সৈয়দ নুর বলেন, নৌকায় তারা ১৪ ঘণ্টা ছিলেন। খাবার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল চাল, ডাল ও পনির।
কিছু পুরুষ শরণার্থী অভিযোগ করেছেন, নৌকায় তাদের ওপর নির্যাতন ও অপমান করা হয়েছে। ফয়েজ উল্লাহ নামের একজন তার ডান কনুইয়ে ক্ষত দেখিয়ে বলেন, তাকে বারবার পেটানো, থাপ্পড় মারা ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসা করা হচ্ছিল, কেন তারা অবৈধভাবে ভারতে আছেন।
মে মাসে বিতাড়িত হওয়া ৪০ জনের মধ্যে ১৫ জন খ্রিস্টান ছিলেন। নুর বলেন, “দিল্লি থেকে যাওয়ার সময় শরণার্থীদের আটক করা ব্যক্তিরা বলতেন, ‘তুমি হিন্দু হওনি কেন? খ্রিস্টান হওয়ার কারণ কী?’” তিনি আরও বলেন, ‘খৎনা হয়েছে কি না দেখার জন্য আমাদের বিবস্ত্র হতে বাধ্য করা হয়েছে।’
এক শরণার্থী ইমান হোসেন বলেন, সেনারা তাকে কাশ্মীরের পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। এই হত্যাকাণ্ডে রোহিঙ্গাদের জড়িত থাকার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
নৌকা থেকে ফেলে দেওয়া
৮ মে সন্ধ্যায় শরণার্থীদের নৌযানের পাশে থাকা সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসতে বলা হয়। সেখানে কালো রাবারের চারটি ছোট নৌকা দেখতে পান তারা। দুটি নৌকায় ২০ জন করে শরণার্থীকে স্থানান্তর করা হয়। ৭ ঘণ্টার বেশি হাতবাঁধা অবস্থায় ভ্রমণের পর সৈন্যরা তাদের জীবন রক্ষাকারী জ্যাকেট পরিয়ে হাতের বাঁধন খুলে পানিতে ঝাঁপ দিতে বলে। নুর বলেন, “আমরা দড়ি ধরে ১০০ মিটারের বেশি সাঁতার কেটে তীরে পৌঁছেছি।” এরপর তাদের বলা হয়, তারা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছেন, এবং তারপর সৈন্যরা চলে যায়।
৯ মে ভোরে স্থানীয় জেলেরা তাদের খুঁজে পান এবং জানান, তারা মিয়ানমারে আছেন। এরপর জেলেরা তাদের ফোন ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন যেন তারা ভারতে থাকা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
জাতিসংঘ বলেছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যখন এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্দামান সাগরে পাঠায়, তখনই তাদের জীবন চূড়ান্ত ঝুঁকিতে ফেলে।
ক্ষতিপূরণের আবেদন ও আতঙ্ক
১৭ মে নুরুল আমিন ও অন্যান্য পরিবারের সদস্যরা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করেছেন। সেখানে তাদের স্বজনদের দিল্লিতে ফিরিয়ে আনা, বিতাড়ন বন্ধ করা এবং ৪০ জনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কলিন গঞ্জালেস বলেন, “এটি রোহিঙ্গা বিতাড়নের ভয়াবহতার কথা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে। যুদ্ধক্ষেত্রে জীবনরক্ষাকারী জ্যাকেট পরিয়ে কেউ মানুষকে সমুদ্রে ফেলে দিতে পারে, তা স্বাভাবিকভাবে বিশ্বাস করা কঠিন।”
তবে পিটিশনের জবাবে দুই সদস্যের বেঞ্চের এক বিচারক এ অভিযোগকে ‘কাল্পনিক ধারণা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এ ঘটনা ভারতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। নুরুল আমিন বলেন, “আমার মনে শুধু এই ভয় যে ভারত সরকার আমাদেরও নিয়ে যাবে ও সমুদ্রে ফেলে দেবে। এখন আমরা বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাই।”
বাংলাদেশ আর পশ্চিমবঙ্গের ভাষা এক, আমি কী করব?: মমতা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও ভাষার ইস্যুকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) আক্রমণ করেছেন। মঙ্গলবার বর্ধমানে একটি প্রশাসনিক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ভাষা এক হলে আমি কী করব? বাংলায় কথা বললে কাজ পাওয়া যায় না, হোটেলে জায়গা মেলে না, পড়াশোনার সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। এটা আমরা মেনে নেব না।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে অনেকের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি একে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) একটি গোপন রূপ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে খেলা হচ্ছে, ভোটার তালিকা থেকে বাঙালিদের বাদ দেওয়ার ফন্দি চলছে।”
মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে আমি প্রণাম করি, কিন্তু বিজেপির ললিপপ হয়ে গেলে চলবে না।” তিনি অভিযোগ করেন, কমিশন ভোটের সময় বিজেপির একটি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “তিনি কেন বলবেন, বাংলায় চোর আছে তাই টাকা বন্ধ হয়েছে? যদি চুরি নিয়েই প্রশ্ন থাকে, তাহলে উত্তরপ্রদেশ বা মহারাষ্ট্রে তাকানো হোক।”
মমতা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করছে। আসন্ন নির্বাচনের আগে তৃণমূল নেত্রীর এই ধারাবাহিক আক্রমণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে তার বার্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিজেপির পক্ষ থেকে এখনো এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে এর আগে শাসক দল দাবি করেছে, মমতা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই ধরনের প্রচার চালাচ্ছেন।
সূত্র : টিভি নাইন বাংলা
মোদি একজন অত্যন্ত ভয়ংকর ব্যক্তি: ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে বিস্ফোরক ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘অত্যন্ত ভয়ংকর ব্যক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, গত মে মাসে জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে হামলাকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের যে সংঘাত শুরু হয়েছিল, তা কেবল তার একটি ফোন কলের মাধ্যমেই থেমেছিল।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, “ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত শুরু হলে আমি মোদিকে ফোন করি। তাকে জিজ্ঞেস করি, পাকিস্তানের সঙ্গে কী চলছে? আমি তাকে একজন অত্যন্ত ভয়ংকর মানুষ মনে করি। ফোনকলে তার রাগ ও ঘৃণা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। দুই দেশের মধ্যে এই বৈরিতা অবশ্য বহু পুরোনো—শত শত বছরের শত্রুতার মতো।”
ট্রাম্প জানান, সেই ফোনকলে তিনি মোদিকে সতর্ক করে বলেছিলেন, “আমি আপনাদের সঙ্গে কোনো বাণিজ্যচুক্তি করতে চাই না। যদি সংঘাত পরমাণু যুদ্ধ পর্যন্ত গড়ায়, তাহলে সেটাই আপনাদের পরিণতি হবে। আমি আরও বলেছিলাম, আগামীকাল যদি ফোন না করেন এবং সংঘাত না থামান তাহলে শুধু বাণিজ্যচুক্তিই বাতিল করব না, এমন শুল্ক আরোপ করব যাতে আপনাদের মাথা ঘুরে যাবে।”
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়। এরপর ৪ মে ভারত শুরু করে ‘অপারেশন সিঁদুর’, যেখানে লস্কর-ই-তৈয়বা (লেট) এবং জইশ-ই মোহাম্মদ (জেম)-এর ৭০ জনেরও বেশি সদস্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করে নয়াদিল্লি। জবাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ৭ মে শুরু করে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’। পাকিস্তানের দাবি, এই অভিযানে ভারতে ৩১ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়েছে। টানা পাঁচ দিন সংঘাত চলার পর ৯ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ইসলামাবাদ এ জন্য ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিলেও নয়াদিল্লি সেই দাবি মানেনি।
সংঘাত-পরবর্তী পরিস্থিতিতে দিল্লির সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে, যা আজ বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
/আশিক
সিংহের গর্জনে রাজনীতিতে থালাপতি বিজয়: মোদির আধিপত্যে কি ফাটল ধরবে?
“জঙ্গলে যত শিয়াল থাকুক না কেন, রাজা সবসময় সিংহই”—এই উক্তি দিয়ে রাজনৈতিক মঞ্চ কাঁপালেন ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা থালাপতি বিজয়। তামিল সিনেমার কিংবদন্তি এই তারকা এবার সরাসরি রাজনীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তামিলনাড়ুতে নিজের রাজনৈতিক দল গঠন করে তিনি শুরু করলেন এক নতুন অধ্যায়, যা শুধু আঞ্চলিক রাজনীতি নয়, বরং জাতীয় রাজনীতিতেও আলোড়ন তুলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, বিজয়ের এই অভিষেক নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপির জন্য নতুন সতর্ক সংকেত।
দক্ষিণ ভারতে বিজেপির দুর্বলতা
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে বিজেপির প্রভাব ঐতিহাসিকভাবে সীমিত। বিশেষ করে তামিলনাড়ু রাজ্যে দলটির গ্রহণযোগ্যতা খুবই কম। এখানকার ভোটাররা ঐতিহ্যগতভাবে আঞ্চলিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল—ডিএমকে, এআইএডিএমকে, টিডিপি কিংবা কংগ্রেসই এখানকার ভোটের মূল খেলোয়াড়। এই বাস্তবতায় বিজয়ের মতো জনপ্রিয় তারকার রাজনৈতিক আগমন দক্ষিণ ভারতের ভোটের সমীকরণ আমূল পাল্টে দিতে পারে।
মোদির জনপ্রিয়তার চ্যালেঞ্জ
জাতীয় পর্যায়ে মোদির জনপ্রিয়তা দীর্ঘ সময় ধরে অটুট থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার সরকারের একাধিক বিতর্কিত নীতিমালা সমালোচনার মুখে পড়েছে। নাগরিকত্ব আইন, কৃষক আন্দোলন কিংবা বিরোধী শিবিরের ক্রমবর্ধমান ঐক্য বিজেপির অবস্থানকে নড়বড়ে করেছে। যদি দক্ষিণ থেকে বিজয়ের মতো একজন ক্যারিশম্যাটিক ও তরুণমুখী নেতৃত্ব উঠে আসে, তবে তা মোদির একচ্ছত্র আধিপত্যে বড় ধরনের ধাক্কা হতে পারে।
তরুণ সমাজে বিজয়ের প্রভাব
থালাপতি বিজয় শুধু একজন চলচ্চিত্র তারকা নন; তিনি সামাজিক বার্তা, শিক্ষা ও যুবসমাজকে কেন্দ্র করে কাজের জন্যও জনপ্রিয়। তার রাজনৈতিক দল এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও ইতোমধ্যেই তরুণ প্রজন্মের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই সাড়া তার রাজনৈতিক যাত্রাকে শক্ত ভিত দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তার নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠতে পারে, যা আঞ্চলিক সীমা ছাড়িয়ে জাতীয় পরিসরেও প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে।
আঞ্চলিক জোটের নতুন সমীকরণ
দক্ষিণ ভারতে বিজেপির সীমিত অবস্থান বজায় আছে বহুদিন ধরে। কংগ্রেস ও আঞ্চলিক দলগুলো নিজেদের প্রভাব ধরে রেখেছে। এখন যদি বিজয় রাজনীতিতে শক্ত ভিত্তি তৈরি করেন, তবে বিজেপির দক্ষিণমুখী বিস্তার আরও কঠিন হয়ে উঠবে। সম্ভাবনা আছে, তিনি আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে কৌশলগত জোট গড়ে তোলেন, যা বিজেপির বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী ব্লক তৈরি করতে পারে।
ভবিষ্যতের রাজনীতি: সতর্ক সংকেত নাকি মোড় ঘোরা?
সব মিলিয়ে বলা যায়, থালাপতি বিজয়ের রাজনীতিতে আগমন ভারতীয় রাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এখনই মোদির পতনের ভবিষ্যদ্বাণী করা না গেলেও, বিজয়ের উত্থান বিজেপির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। দক্ষিণ ভারতের রাজনীতি যদি বিজয়ের হাত ধরে নতুন গতিপথে হাঁটে, তবে আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতির ভারসাম্যও পাল্টে যেতে পারে।
রাজা কিন্তু একটাই—সিংহ: বিজয়ের মন্তব্যে তোলপাড় ভারতের রাজনীতি
ভারতের তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও নবীন রাজনীতিক থালাপতি বিজয়। সম্প্রতি মাদুরাইয়ে পারাপাথিতে দলীয় দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিজয়। সেখানে হাজারও সমর্থকের সামনে তিনি বিজেপিকে ‘আদর্শগত শত্রু’ এবং ক্ষমতাসীন ডিএমকেকে ‘রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে ঘোষণা করেন। জনসভায় দেওয়া তার কিছু মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেওয়া ‘হুংকার’ এখন আলোচনার কেন্দ্রে। বিজয় বলেন, “সিংহ সব সময় সিংহই থাকে। সে একবার গর্জন করলে আট কিলোমিটার দূর পর্যন্ত প্রতিধ্বনি শোনা যায়। জঙ্গলে যত শিয়ালই থাকুক, রাজা সব সময় সিংহই থাকে। সিংহ শিকারের জন্য বেরোয়, বিনোদনের জন্য নয়। সিংহ একাই শিকার করে। বনে যতই শেয়াল থাকুক না কেন, রাজা কিন্তু একটাই—সিংহ।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে বিজয় পরোক্ষভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং নিজের জনপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট করে তুলেছেন।
এ ছাড়া তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৬ সালের নির্বাচনে তার দল তামিলগা ভেট্রি কাজগম (টিভিকে) কারো সঙ্গে জোটে যাবে না। বিজয়ের ভাষায়, “আমাদের একমাত্র আদর্শিক শত্রু বিজেপি এবং রাজনৈতিক শত্রু ডিএমকে। টিভিকে কোনো সুবিধাভোগীদের দল নয়। তেমন কারো সঙ্গে আমরা জোটবদ্ধ হবো না।”
বিজয়ের এই স্পষ্ট অবস্থান এবং আত্মবিশ্বাসী ভাষণ তার রাজনীতিতে প্রবেশের মাত্র প্রথম ধাপ হলেও অনেকেই বলছেন, তিনি একটি শক্তিশালী তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে পারেন। ২০২৬ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে থালাপতি বিজয়ের মন্তব্য কতটা প্রভাব ফেলবে তা সময়ই বলে দেবে। তামিল রাজনীতিতে সিনেমার তারকাদের প্রভাব নতুন নয়। এনটি রামা রাও থেকে জয়ললিতা, কমল হাসান থেকে শুরু করে এবার থালাপতি বিজয়—সবাই নিজস্ব ভঙ্গিতে জনমনে জায়গা করে নিয়েছেন।
/আশিক
‘ক্রাশের’ স্বামীকে হত্যা করতে গুগলের সাহায্য নিয়ে বোমা বানালেন প্রেমিক!
ভারতের ছত্তিশগড়ে এক অদ্ভুত ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। এক প্রেমিক তার 'ক্রাশের' স্বামীকে হত্যা করার জন্য একটি মিউজিক সিস্টেমের মধ্যে বিস্ফোরক বোমা ভরে পার্সেল হিসেবে পাঠান।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার পেছনে রয়েছে খয়রাগড় গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বিনয় বর্মা। তিনি গুগল সার্চের মাধ্যমে মিউজিক সিস্টেমে বোমা সেট করেছিলেন। তার পরিকল্পনা ছিল আফসার খানের জীবন শেষ করে নিজের পছন্দের নারীকে আপন করে নেওয়া।
ঘটনার দিন আফসার খান নামে ওই ব্যক্তির কাছে একটি বড় পার্সেল আসে। পার্সেলের পোস্ট অফিসের লোগো দেখে তার সন্দেহ হলে তিনি পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে মিউজিক সিস্টেমটি খুলে দেখে স্পিকারের ভেতরে প্রায় ২ কেজি বিস্ফোরক রয়েছে, যা বিদ্যুতের সংযোগ মাত্রই বিস্ফোরিত হতে পারত।
পুলিশ এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত আরও ছয়জনকে আটক করেছে এবং এর মাধ্যমে একটি অবৈধ বিস্ফোরক পাচার চক্রের তথ্যও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে, তদন্তকারীরা এখনো যাচাই করছেন এর পেছনে আরও বড় কোনো চক্র আছে কি না।
পাঠকের মতামত:
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
- হাসিনা, রাজাপাকসে, শর্মা–এর পর কি এবার মোদি? মণিপুরের অস্থিরতায় দিল্লিতে কাঁপন
- ডাকসু নির্বাচন কি জাতীয় রাজনীতির পূর্বাভাস? জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য
- ঢাকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম: কোন পণ্য বেড়েছে, কোথায় মিলছে স্বস্তি
- জাহাঙ্গীরনগরে রাতভর ভোট গণনা, বিক্ষোভ ও বর্জনে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস
- নেপালে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ: নিহত ৩৪, আহত দেড় হাজারের বেশি
- জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু
- UNHRC-তে মুখোমুখি ভারত–সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তানকে আক্রমণ দিল্লির
- দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত
- জাকসু নির্বাচনী দায়িত্বে শিক্ষকের মৃত্যু
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ঝড়ের উত্থান: ২৮২ শেয়ার দাম বাড়ল, লেনদেনে রেকর্ড ৭৭৮ কোটি টাকা!
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন
- শির্কের ভয়াবহতা বুঝতে সহজ উদাহরণ
- দিনের বেলা ভাতঘুম: উপকারী নাকি ক্ষতিকর?
- সপ্তাহের শেষ দিনে ডিএসইতে সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
- জাকসুতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন সাদীর
- গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ক
- ডাকসুতে শিবিরের নিরঙ্কুশ জয়ের পেছনে যত কৌশল
- অস্থির নেপাল থেকে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল
- নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রধান পছন্দ সুশিলা কার্কি, বলছে ‘জেন জেড’ আন্দোলন
- মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিভাজনের আশঙ্কা
- নেপালে রাজনৈতিক শূন্যতা: সেনা তত্ত্বাবধানে উত্তাল দেশ, নতুন নেতৃত্ব কে?
- ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন: নিরাপত্তা, অনিয়ম ও বিতর্কে সরগরম ক্যাম্পাস
- ১০ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারের সার্বিক চিত্র ও বিশ্লেষণ
- ডিএসই ব্লক মার্কেট: বড় লেনদেনে যেসব কোম্পানি
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- জলবায়ু ইস্যুতে গণমাধ্যমের দায়িত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: নিরাপত্তায় ১২০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, একদিনে আক্রান্ত ৬২৫
- ভাঙ্গায় ১১ ঘণ্টা অবরোধ শেষে ফের নতুন ঘোষণা
- জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে আর জিডি করতে হবে না: ইসি
- ডাকসুতে জয়ীদের উদ্দেশ্যে জামায়াত আমিরের বার্তা
- কর ফাঁকি তদন্তে শেখ হাসিনার ব্যাংক লকার সিলগালা
- "ষড়যন্ত্র ভেদ করে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে হবে"
- ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫: কারা পেলেন সেরা সম্মাননা
- যুক্তরাষ্ট্রে আটক কোরীয় শ্রমিকদের দেশে ফেরাতে চার্টার্ড ফ্লাইট
- কাপ্তাই বাঁধে ১৬ গেট খোলা: কর্ণফুলীতে তীব্র পানি প্রবাহ
- জরায়ুর যত্নে সচেতনতা: নারীর সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত
- মহেশখালী-মাতারবাড়ি: পর্যটন ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত
- ডোপ টেস্ট কী, কেন করা হয়, কেন এত এখন জরুরি
- একীভূতকরণ প্রসঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের ব্যাখ্যা
- বিজয়ের পর শিবিরের তিনটি কাজের নির্দেশ
- ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমকে নিয়ে জুলকারনাইন সায়েরের বার্তা
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গোয়ালন্দে কবর অবমাননার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র নিন্দা
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে ৩ প্রতারক গ্রেপ্তার
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- রজনীকান্ত–কমল হাসান আবারও একসঙ্গে বড় পর্দায়
- শেয়ারদর বৃদ্ধি নিয়ে ডিএসইকে যে ব্যাখ্যা দিল বিডিকম অনলাইন
- নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব