যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত ১১০০ অবৈধ ভারতীয়

যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ ভারতীয় নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১১০০ জন ভারতীয় অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এর মধ্যে প্রায় ৬২ শতাংশ ব্যক্তিই বাণিজ্যিক ফ্লাইটের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন। ভারতের মুখপাত্র রন্ধীর জয়সওয়াল জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমন্বয় ও তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের শনাক্তকরণ এবং তাদের প্রত্যাবাসন কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হচ্ছে।

জয়সওয়াল আরও উল্লেখ করেন, ভারতীয় সরকারের লক্ষ্য অবৈধ অভিবাসন দমন করা এবং দেশের স্বার্থে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োগ করা। তবে শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ করে শিক্ষার্থী ভিসার ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভিসা আবেদনকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাসগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন, নতুন শিক্ষার্থী এবং এক্সচেঞ্জ ভিসার জন্য ইন্টারভিউ গ্রহণ বন্ধ রাখতে, যতক্ষণ না নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়।

এই নির্দেশনার ফলে মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা পাওয়ার সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে, বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ভিসার অপেক্ষায় রয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

একই সাথে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। এই সমন্বয়ের মাধ্যমে উভয় দেশের সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং বৈধ অভিবাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। তবে নতুন ভিসা নীতি ও প্রক্রিয়ার ফলে বৈদেশিক শিক্ষার্থী এবং অভিবাসীদের ভবিষ্যত কর্মকাণ্ডে কিছু অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।

পরিস্থিতি বিবেচনায় ভারতের সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের একাডেমিক পরিকল্পনায় কোনোরকম বিঘ্ন না পান। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্দেশনার প্রভাব আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিদ ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

- ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক