এনসিপি সভায় ছাত্রলীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৫ ১১:০৫:২৭
এনসিপি সভায় ছাত্রলীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক

গাইবান্ধায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর একটি মতবিনিময় সভায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সভাটি অনুষ্ঠিত হয় শুক্রবার (২৩ মে) গাইবান্ধা জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে, যেখানে এনসিপির সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার, উপজেলা কমিটি গঠন ও দলীয় নিবন্ধনসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতারা অংশ নেন।

তবে পুরো সভার আলোচনার মধ্যে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় ছিল ছাত্রলীগের শ্রীপুর ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম তালুকদারের উপস্থিতি। তিনি ২০১৩ সালের ছাত্রলীগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং ওই কমিটি এখনও বহাল রয়েছে। ২০২৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তবে পরাজিত হন।

শ্রীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি হাফিজুর রহমান জানান, সাদ্দাম তালুকদার এখনও তাদের কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং এটি ২০১৩ সালের কমিটি থেকে পরিবর্তিত হয়নি। তিনি বলেন, “সুসময়ে দলের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার পর কেউ যদি দুর্দিনে মুখ ফিরিয়ে নেয় বা গাদ্দারি করে, তাহলে সে বিষয়ে বলার ভাষা থাকে না। আদর্শিক পরিবর্তন ব্যক্তিগত বিষয় হতে পারে, কিন্তু অতীতের পরিচয় একেবারে মুছে ফেলা যায় না।”

অন্যদিকে এনসিপির অভ্যন্তর থেকে এমন বিতর্কিত ব্যক্তিকে দলের সভায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন নেতা। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “একজন বিতর্কিত, ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক আদর্শে বেড়ে ওঠা নেতাকে দলে জায়গা দেওয়া আমাদের আদর্শিক অবস্থানের পরিপন্থি। এনসিপি একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায়। এখানে কোনো প্রকার বিতর্কিত ও পুরোনো ধারার রাজনীতির ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া চলবে না।”

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই মন্তব্য করছেন, পুরোনো রাজনৈতিক মুখ নিয়েই নতুন দল গঠিত হলে এনসিপির পরিবর্তনের বার্তা কেবল মুখেই থেকে যাবে।

এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) নাজমুল হাসান সোহাগ সাংবাদিকদের জানান, তিনি সাদ্দাম তালুকদারকে চেনেন না এবং এনসিপির সভায় তার উপস্থিতির বিষয়ে অবগত নন। অন্যদিকে, গাইবান্ধা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা ফিহাদুর রহমান দিবসের সঙ্গে যোগাযোগের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এখনো পর্যন্ত এনসিপি থেকে এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এ বিতর্ক দলটির আদর্শিক অবস্থান ও নতুন রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রশ্ন তোলে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ