“স্বাধীন কমিশন চাই, শুধু কাগজে না”—সালাহউদ্দীন আহমেদ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৩ ১৯:৪২:২৮
“স্বাধীন কমিশন চাই, শুধু কাগজে না”—সালাহউদ্দীন আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা শুধু সংবিধানে উল্লেখ থাকলেই যথেষ্ট নয়, বরং এটি কার্যকর করতে হলে উপযুক্ত ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপের ১৮তম দিনের আলোচনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এর জন্য একটি কার্যকর নিয়োগ পদ্ধতি থাকা জরুরি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আচরণবিধি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া চালানো উচিত। নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।”

তিনি জানান, সংলাপে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি পাঁচ সদস্যের সিলেকশন কমিটির প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার (সভাপতি), বিরোধী দলের পক্ষ থেকে নির্বাচিত ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন আপিল বিভাগের বিচারপতি।

এই কমিটি কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে। সেখানে রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটি এবং সাধারণ নাগরিকরা প্রার্থীর নাম জমা দিতে পারবে। এ জন্য সংসদে একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়েছে।

সালাহউদ্দীন বলেন, “এই সার্চ কমিটি প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত যাচাই করে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করবে এবং তা সিলেকশন কমিটির কাছে পাঠাবে। এরপর সিলেকশন কমিটি ঐকমত্যের ভিত্তিতে কমিশনের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।”

আগের প্রস্তাবে প্রতিটি পদের জন্য দুটি করে নাম সুপারিশ করার যে কথা ছিল, সেটি বাদ দিয়ে এবার প্রতিটি পদের জন্য একটি করে নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কমিশনারের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।

এ ছাড়া সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের উপধারায় নতুন একটি সংযোজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে—সংসদ কমিশনের সদস্যদের জবাবদিহিতা ও আচরণবিধি নির্ধারণে আইন প্রণয়ন করবে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি কমিশন চাই, যারা সত্যিকার অর্থেই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। অতীতে একাধিকবার কমিশন গঠিত হলেও তারা কার্যত স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই আমরা গঠন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চাচ্ছি।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ টেনে সালাহউদ্দীন বলেন, “আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। আজ জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে সে লক্ষ্যে পৌঁছেছে। আমরা ধরে নিচ্ছি, আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই হবে। সেই প্রেক্ষাপটে একটি শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন খুবই জরুরি।”

তিনি সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, তা স্বাগত জানান এবং বলেন, “এই সর্বসম্মত প্রস্তাব একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ভিত্তি তৈরি করবে।”

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ