আল জাজিরার প্রতিবেদন

প্রথমবার বহু-মারক ক্ষেপণাস্ত্র 'খায়বার' ছুঁড়ল ইরান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৩ ১৬:৫৮:৫৭
প্রথমবার বহু-মারক ক্ষেপণাস্ত্র 'খায়বার' ছুঁড়ল ইরান

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) ইসরায়েলের ওপর চালানো সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ‘খায়বার’ (কাদর এইচ) বহু-মারক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার কথা নিশ্চিত করেছে। এটিই ছিল অত্যাধুনিক এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম ব্যবহার, যা ইরানের সামরিক সক্ষমতার এক নতুন মাত্রা উপস্থাপন করে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ (IRNA) জানিয়েছে, এই হামলা ছিল “জায়নবাদী শাসনের ধারাবাহিক দুষ্কর্মের” বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া। হামলায় বুদ্ধিমান ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয় ঘটিয়ে এক নতুন কৌশলের মাধ্যমে আঘাত হানা হয়।

“এই অভিযানে প্রথমবারের মতো খায়বার (কাদর এইচ) বহু-মারক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, যা নতুন এবং চমকপ্রদ কৌশলে অধিকতর নিখুঁত, বিধ্বংসী এবং কার্যকরভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে,” বিপ্লবী গার্ডের জনসংযোগ দপ্তর জানায়।

খায়বার (Qadr H) ক্ষেপণাস্ত্র বহুমুখী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে, যার অর্থ একটি মাত্র ক্ষেপণাস্ত্র একাধিক নির্দিষ্ট স্থানে একসঙ্গে আঘাত হানতে পারে। এই বৈশিষ্ট্য আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে এবং যুদ্ধ কৌশলে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন আনে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই পদক্ষেপ তাদের যুদ্ধকৌশলে একটি ঐতিহাসিক উন্নয়ন, যা ঐতিহ্যবাহী একক ওয়ারহেড থেকে বহুমারক যুদ্ধাস্ত্রের দিকে অগ্রসরের ইঙ্গিত দেয়।

আইআরএনএ জানিয়েছে, এই হামলায় ইসরায়েল অধিকৃত এলাকার উত্তর থেকে দক্ষিণ এবং কেন্দ্র পর্যন্ত ‘কৌশলগত স্থাপনায়’ আঘাত হানা হয়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে যে বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে, তবে অন্তত একটি ক্ষেপণাস্ত্র দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ইসরায়েল ইলেকট্রিক কোম্পানির (IEC) একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার কাছাকাছি আঘাত হানে, যার ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।

এই হামলা ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনাকে এক বিপজ্জনক নতুন ধাপে নিয়ে গেছে। বিশেষ করে, এ ধরনের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার অঞ্চলজুড়ে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।

হরমুজ প্রণালীসহ উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, যা বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহ ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

ইরানের ‘খায়বার’ বহু-মারক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল ব্যবহার শুধুমাত্র একটি কৌশলগত হামলা নয়, বরং এটি ইরান ও তার প্রতিপক্ষদের জন্য একটি রাজনৈতিক ও প্রযুক্তিগত বার্তা। পরিস্থিতির গতি-প্রকৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, অঞ্চলজুড়ে নিরাপত্তা আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে এবং বড় ধরনের সামরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সূত্র: আল জাজিরা

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ