আমীর খসরু: নির্বাচিত সরকার না থাকায় বিনিয়োগ থমকে গেছে

দেশে নির্বাচিত সরকার না থাকায় প্রশাসনের কার্যকারিতা দিন দিন কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিতামূলক সরকার না থাকায় বিদেশি বিনিয়োগও স্থবির হয়ে পড়েছে। এমনকি দেশের ব্যবসায়ীরাও এখন একটি নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষায় আছেন।

রবিবার (২৭ জুলাই) ঢাকায় বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

আমীর খসরুর ভাষায়, “নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির অভাবের কারণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, এমনকি পুলিশ সদস্যরাও এখন কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। ফলে প্রশাসনের মধ্যে গতিশীলতা নেই। বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে গেছে।”

‘জুলাই আন্দোলন’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি নতুন কিছু নয়— বাংলাদেশের মানুষের ঐতিহ্যের অংশ। শেখ হাসিনার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরতাম না। ৫ আগস্টের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”

তিনি দাবি করেন, “নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা হলেই দেশের জনগণ প্রকৃত মালিকানা ফিরে পাবে এবং সাংবিধানিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।”

আন্দোলনের মধ্যকার মতভেদ প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, “বিভিন্ন মত থাকতেই পারে। কিন্তু কেউ এই আন্দোলন হাইজ্যাক করতে পারবে না। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকেও এককভাবে কৃতিত্ব দাবি করছি না— যদিও বিএনপির নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলনের লক্ষ্য একটাই— জনগণের ভোটাধিকার ও মালিকানা ফিরে পাওয়া। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং দায়িত্বশীল প্রশাসন কল্পনা করা যায় না।”

বিপ্লব-পরবর্তী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যেসব দেশে বিপ্লবের পর দ্রুত নির্বাচিত সরকার গঠিত হয়েছে, সেখানে উন্নয়ন হয়েছে। আর যেসব দেশে তা বিলম্বিত হয়েছে, তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।”

রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকা স্বাভাবিক উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, “আমরা বাকশালের মতো একদলীয় শাসনব্যবস্থার চিন্তা করছি না। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর জনগণের মধ্যে যে রাজনৈতিক সচেতনতা এসেছে, সেটিকে সম্মান জানিয়েই ভবিষ্যতের রাজনীতি পরিচালিত হওয়া উচিত। যাদের নির্বাচন নিয়ে ভয় আছে, তারা না-ই বা অংশ নিলো। তবে জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার টিকে থাকতে পারে না— এটাই বাস্তবতা।”

/আশিক