পাবনায় মসজিদ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, বাড়ি ঘরে আগুন ১৪৪ ধারা জারী করে উপজেলা প্রশাসন।

এম এস রহমান
এম এস রহমান
স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা
সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৭ ১৭:৫৩:০৭
পাবনায় মসজিদ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, বাড়ি ঘরে আগুন ১৪৪ ধারা জারী করে উপজেলা প্রশাসন।
ছবি: সংগৃহীত

তারাপুরে মসজিদের বারান্দা নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১, সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা, এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা

পাবনার বেড়া উপজেলার তারাপুর গ্রামে মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল ইসলাম রবিবার (২৭ জুলাই) সকালে ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেন। তার স্বাক্ষরিত আদেশ অনুযায়ী, রবিবার সকাল ১০টা থেকে সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ওই এলাকায় পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েত, মিছিল, মাইকিং, অস্ত্র প্রদর্শনসহ যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার (২৫ জুলাই) নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণের সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পক্ষ নতুন মসজিদ নির্মাণে এগিয়ে গেলে অপর পক্ষ বাঁধা দেয়। এরপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঘটে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন।

আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে গুরুতর অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে হাদিস প্রামানিক (৪০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ওইদিন বিকেলে ২০টিরও বেশি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায় তাঁর স্বজন ও সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

এ ঘটনায় শনিবার রাতেই বেড়া থানায় দুই পক্ষ পৃথক দুটি মামলা করে। মতিন প্রামাণিকের দায়েরকৃত মামলায় ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। অপর মামলাটি দায়ের করেন হোসনে আরা খাতুন, যেখানে ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মতিন প্রামাণিকের মামলার আসামি সেলিম হোসেন (৪৮) কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে রবিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। তিনি হোসনে আরা গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে মসজিদের কিয়াম নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে নতুন মসজিদ গড়ে ওঠে। সেই দ্বন্দ্বের জেরেই সম্প্রতি বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তেজনা ছড়ায়।

এলাকায় বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

বেড়া মডেল থানার ওসি ওলিউর রহমান বলেন, “মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মামলা করা হয়নি।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ