Firstpost-এর বিশ্লেষণ

"প্রফেসর ইউনুস সরে গেলে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে ভারত"

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ৩০ ১৭:০৫:১৯
"প্রফেসর ইউনুস সরে গেলে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে ভারত"

ঢাকার এক সন্ধ্যায়, যখন ধুলিঝড় শহরকে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে, তখন এক গোপন বৈঠকে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস দৃঢ় কণ্ঠে একটি ঘোষণা দেন—“আমি সরে দাঁড়াবো, যদি এই রাজনৈতিক পাগলামির শেষ না হয়।” উপস্থিত ছাত্রনেতারা স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ ইউনুস এখন শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন, বরং তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মুখ, নোবেল বিজয়ী, এবং একটি নিরপেক্ষ কণ্ঠস্বরের প্রতীক। তার এমন ঘোষণায় শুধু একটি পদ ত্যাগ নয়, বরং গোটা রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ছে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম Firstpost একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। শিরোনাম ছিল, "India’s Bangladesh Bet: While Losing Yunus Makes Delhi Dearly"। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের জন্য প্রফেসর ইউনুস একধরনের কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষাকারী ছিলেন। যদিও তিনি সরাসরি ভারতপন্থী নন, তবুও তার অবস্থান ছিল ভারতের জন্য নিরাপদ। কারণ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ কখনোই পুরোপুরি চীন বা পাকিস্তানের বলয়ে ঢুকে যেত না। ফলে তার বিদায় ভারতীয় স্বার্থে বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

প্রতিবেদনটিতে ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতাও ইঙ্গিত করা হয়েছে। বলা হয়, ভারত একের পর এক কৌশলগত ভুল করেছে—বিশেষ করে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনকে নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে এবং অভ্যন্তরীণভাবে হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদকে উৎসাহিত করে। এ ধরনের একপাক্ষিক সমর্থন বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের প্রতি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করেছে, যা রাজনৈতিক ও কৌশলগতভাবে দীর্ঘমেয়াদে বিপজ্জনক।

যদি ইউনুস সত্যিই সরে দাঁড়ান, তাহলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এক ধরনের রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হবে। একদিকে এনসিপির মতো অস্থির রাজনৈতিক উদ্যোগ, অন্যদিকে পুনর্গঠনের চেষ্টায় ব্যস্ত বিএনপি—এই দুইয়ের মাঝে নিরপেক্ষ কোনো গ্রহণযোগ্য শক্তি অনুপস্থিত থাকবে। সেনাবাহিনীর অবস্থানও অনিশ্চিত। একই সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বও বিভ্রান্ত হবে, কারণ ইউনুসই ছিলেন সেই সেতুবন্ধন যিনি মানবাধিকার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করতেন।

এই পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় হচ্ছে—এই শূন্যতা কে পূরণ করবে? চীন, আমেরিকা না পাকিস্তানঘেঁষা কোনো শক্তি? ভারতের অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ইউনুসের সরে যাওয়া মানে এক ধরনের "স্ট্র্যাটেজিক ক্লাউড" হারিয়ে ফেলা, যার অভাবে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় আরও কোণঠাসা হয়ে পড়তে পারে।

এই পটভূমিতে তরুণদের প্রতিক্রিয়াও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ছাত্রদের রোডমার্চ এবং পোস্টারে ইউনুসের সমর্থনে স্লোগান তুলে ধরা হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে পোস্টার—“ইউনুস সরে গেলে দালাল আসবে, প্রস্তুত হও।” এসবই ইঙ্গিত দেয়, নতুন প্রজন্মের কাছে ইউনুস এখনও বিশ্বাসযোগ্য ও ন্যায়বিচারের প্রতীক।

ভারতের তরফ থেকেও উদ্বেগ স্পষ্ট। ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার খবর পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছে, "প্ল্যান বি" চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে দিল্লি। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে—ইউনুস চলে গেলে আদৌ কি ভারত তার পছন্দের সরকার বা সমর্থক শক্তিকে ফেরাতে পারবে?

উপসংহারে বলা যায়, ইউনুসের বিদায়ের সম্ভাবনা শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতির জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে। ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা গেছে—যে রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে তারা একপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করেছে, সেখানেই তাদের কৌশলগত বিপর্যয় ঘটেছে। বাংলাদেশে সেই ভুল আবারো করা হচ্ছে কিনা—এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত