'আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে পুলিশের কলঙ্ক মোচনের সুযোগ'

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ১৭:৫৫:৫৬
'আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে পুলিশের কলঙ্ক মোচনের সুযোগ'

বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) আবু নাসের মোহাম্মদ খালেদ বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে শুধু একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি হবে দেশ রক্ষার নির্বাচন, পুলিশ বাহিনীর অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন এবং অতীতের কলঙ্ক মোচনের এক ঐতিহাসিক সুযোগ।

রোববার (২২ জুন) সকালে টাঙ্গাইলের মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের (পিটিসি) ৫৫তম ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, "আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে আমাদের শুধু বাহিনীর ভেতরে নয়, সকল স্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ এবং সহিংসতামুক্ত নির্বাচন উপহার দিতে হবে। এটি কেবল গণতন্ত্রের জন্য নয়, আমাদের পেশাগত সম্মান ও ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।"

তিনি আরও বলেন, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন সময় এসেছে জনবান্ধব, মানবিক ও পেশাদার পুলিশের রূপ প্রতিষ্ঠার। “আমরা অতীতের কলঙ্কজনক অধ্যায় ভুলে, দেশের মানুষের আস্থা অর্জনে কাজ করছি,” যোগ করেন তিনি।

বক্তব্যে আবু নাসের মো. খালেদ বিগত ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কোথায় আমরা ভুল করেছি। সেই আন্দোলনের আত্মবিশ্লেষণ আমাদের বাহিনীকে ঘুরে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে।”

তিনি জানান, এখন পুলিশ বাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকার নির্দেশিকা ও বলপ্রয়োগ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলার চেষ্টা করছে। “আমরা জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছি এবং ইতিমধ্যেই অনেকাংশে সফল হয়েছি,” মন্তব্য করেন তিনি।

আবু নাসের মো. খালেদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি সতর্ক করে বলেন, “ভবিষ্যতে আমাদের আরও সচেতন থাকতে হবে। যদি আমরা জনগণের দিকে এক হাত বাড়াই, তারা আমাদের বুকে জড়িয়ে নেবে। কিন্তু যদি আমরা অপেশাদার আচরণ করি, তাহলে অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা ফিরে আসার আশঙ্কা থেকেই যায়।”

তিনি পুলিশ সদস্যদের জনগণের ভাষা ও মনের ভাষা বুঝে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান এবং বলেন, “আপনারা শুধু শৃঙ্খলা রক্ষাকারী নন, বরং মানবিকতার বাহকও বটে।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট ডিআইজি আশরাফুল আলম, ডেপুটি কমান্ড্যান্ট এ এইচ এম কামরুজ্জামান বিপিএম এবং টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।

কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করেন ৮১৭ জন ট্রেইনি পুলিশ সদস্য, যারা সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন।

এই বক্তব্য এবং অনুষ্ঠানটি পুলিশের পেশাগত দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি নতুন পরিবর্তনের বার্তা বহন করে। দেশ ও জনগণের সঙ্গে একটি আস্থার সেতুবন্ধ গড়তে পুলিশ বাহিনীর মানবিক, আধুনিক এবং জবাবদিহিমূলক ভূমিকাই হবে আগামীর অভিযাত্রার মূল চাবিকাঠি।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ