আফগানিস্তান থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা: পাকিস্তানে অভিযানে নিহত ৫৪ জঙ্গি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৭ ২২:০২:০৩
আফগানিস্তান থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা: পাকিস্তানে অভিযানে নিহত ৫৪ জঙ্গি

সত্য নিউজ:আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালানো ৫৪ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দিনগত রাতভর চালানো এই অভিযানকে সাম্প্রতিক বছরের অন্যতম ভয়াবহ বলে আখ্যায়িত করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। রবিবার (২৭ এপ্রিল) এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। খবর এপির। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, আফগান সীমান্তবর্তী উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার কাছে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নিহতদের ‘খাওয়ারিজ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে—একটি শব্দ, যা সাধারণত পাকিস্তানি সরকার তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সদস্যদের বোঝাতে ব্যবহার করে। সেনাবাহিনী সরাসরি কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিত দিয়েছে, নিহত সন্ত্রাসীরা ‘বিদেশি প্রভুদের’ নির্দেশে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে উচ্চমাত্রার হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে প্রবেশের চেষ্টা করছিল।

নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ৭০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের ক্ষমতা দখলের পর টিটিপির কার্যক্রম আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, টিটিপির বর্তমানে কয়েক হাজার সদস্য আফগানিস্তানের ভেতর আশ্রয় নিয়েছে এবং সেখান থেকেই পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করছে।

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা

এই অনুপ্রবেশ প্রচেষ্টার সময়টি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এক পর্যটক দল ওপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় নয়াদিল্লি ইসলামাবাদকে দায়ী করেছে। পাকিস্তান অবশ্য এই অভিযোগ 'ভিত্তিহীন' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। আজ রোববার পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তাতার এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "পশ্চিম সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর মনোযোগ সরিয়ে নিতেই ভারত পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। প্রকৃতপক্ষে, পাকিস্তান নিজের ভূখণ্ডের নিরাপত্তা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ।"

বিশ্লেষকরা বলছেন, আফগান সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা এবং টিটিপির মতো সংগঠনের বিরুদ্ধে আরও সমন্বিত অভিযান চালানো এখন পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত জরুরি। একইসঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং কূটনৈতিকভাবে আফগানিস্তান সরকারকে চাপ প্রয়োগ করাও পাকিস্তানের নীতির অংশ হতে পারে। এদিকে পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, সীমান্ত অঞ্চলে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কড়া নজরদারি অব্যাহত থাকবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ