মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা

সিরিয়া-ইসরায়েল আবারও আলোচনায়, বৃহস্পতিবার বাকুতে দ্বিতীয়বারের মতো মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ১১:২৬:৪১
সিরিয়া-ইসরায়েল আবারও আলোচনায়, বৃহস্পতিবার বাকুতে দ্বিতীয়বারের মতো মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক
ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে ফের উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানি ও ইসরায়েলের কৌশলবিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমারের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কূটনৈতিক একটি সূত্র এএফপিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। খবর শাফাক নিউজের।

সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। একই দিনে আল-শিবানি রাশিয়ার রাজধানী মস্কো সফরে যাবেন।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এটি দুই দেশের মন্ত্রীদের মধ্যে দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। এর আগে, গত সপ্তাহে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন তারা।

সম্প্রতি দামেস্ক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় রয়েছে। আলোচনার মূল বিষয় ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত গোলান মালভূমির বিচ্ছিন্নকরণ চুক্তির পুনরায় কার্যকর করা।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সিরিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি ও কূটনৈতিক স্বীকৃতির বিষয়ে নতুনভাবে ভাবছে তেলআবিব।

আজারবাইজান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, দেশটি কেবল ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান অস্ত্র ক্রেতা নয়, বরং ককেশাস অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক শক্তি হিসেবেও কাজ করছে।

প্রসঙ্গত, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে শত শত বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বিশেষ করে, দক্ষিণ সিরিয়ার গোলান মালভূমির জাতিসংঘ-নিয়ন্ত্রিত বাফার জোনে একাধিকবার সামরিক অভিযান চালিয়েছে দেশটি।

/আশিক


কাতারকে সাবধান হতে বললেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১২:০৬:৪১
কাতারকে সাবধান হতে বললেন ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে কাতারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি ইসরায়েলকেও ভবিষ্যতে আক্রমণ পরিচালনায় আরও সাবধান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করেছেন। দোহায় হামলার পর কাতারকে “মহান মিত্র” আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে কাতার অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। উপসাগরীয় এ দেশটি আঞ্চলিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকায় তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে রাজনৈতিকভাবে সতর্ক থাকতে হয়। ট্রাম্পের ভাষায়, “কাতার আমাদের বড় মিত্র। তারা ভৌগোলিকভাবে সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকায় জটিল পরিস্থিতি সামলাচ্ছে। এজন্য তাদের শব্দচয়নেও কিছুটা সতর্ক থাকতে হয়। তবে নিঃসন্দেহে তারা যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও মহান মিত্র।”

রোববার নিউ জার্সির মরিসটাউন থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকেও দোহায় হামলার প্রসঙ্গে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “আমরা যখন আক্রমণ চালাই, তখন খুব সতর্ক থাকা জরুরি। তাই ইসরায়েলসহ সবাইকে এ বিষয়ে সাবধান হতে হবে।”

উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার নিউইয়র্কে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানির সঙ্গে এক নৈশভোজ বৈঠক করেছিলেন ট্রাম্প। বৈঠক সম্পর্কে কাতারি দূতাবাসের উপপ্রধান জানিয়েছেন, এটি ছিল অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ।

-রফিক


“গো ব্যাক মোদি” স্লোগানে মুখরিত মণিপুর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:৩৮:২৭
“গো ব্যাক মোদি” স্লোগানে মুখরিত মণিপুর
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অস্থির রাজ্য মণিপুরে প্রায় আড়াই শতাধিক প্রাণহানির দুই বছর পর অবশেষে সফর করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে তাঁর এই বহুল আলোচিত সফরের মধ্যেই ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যে। শনিবার বিকেলে মোদির সফর শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সড়কে নেমে আসে বিক্ষুব্ধ জনতা এবং স্লোগানে মুখরিত হয়—“গো ব্যাক মোদি।” শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। এতে বহু মানুষ আহত হন এবং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে।

মোদি তিন দিনের এক সরকারি সফরে আছেন, যার অন্তর্ভুক্ত আসাম, মণিপুর এবং বিহার। বিশেষ করে বিহার সফরকে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হচ্ছে। ভারতের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল এই রাজ্যে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ বাস করে। হিন্দিভাষী উত্তরাঞ্চলের একমাত্র রাজ্য এটি, যেখানে এখনও ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এককভাবে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আগামী অক্টোবর বা নভেম্বরে নির্ধারিত রাজ্য নির্বাচনের আগে তাই এই সফরকে কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সফরের অংশ হিসেবে মোদি বিহারে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ঘোষণা করেছেন। এই প্যাকেজে কৃষি প্রকল্প, রেলপথ উন্নয়ন, সড়ক অবকাঠামো এবং বিমানবন্দর সম্প্রসারণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা নির্বাচনের আগে উন্নয়ন বার্তা জোরালো করার একটি প্রচেষ্টা।

মণিপুরে ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হয়েছিল ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সংঘাত। মূলত হিন্দু মেইতেই সম্প্রদায় এবং খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে জমি, সরকারি চাকরি এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন একসময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। এই সহিংসতায় এখনো পর্যন্ত অন্তত ২৫০ জন নিহত হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে সরকারের তৈরি অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মোদি শনিবার কুকি অধ্যুষিত চুরাচান্দপুর জেলায় জনসমক্ষে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, “মণিপুরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আমি আপনাদের পাশে আছি, ভারত সরকার আপনাদের পাশে আছে।” তিনি উভয় সম্প্রদায়কে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানান। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে, যেখানে মেইতেই সম্প্রদায় ঘনবসতিপূর্ণ, একটি জনসভায় বক্তব্য রাখারও কথা রয়েছে।

মোদি সর্বশেষ মণিপুর সফর করেছিলেন ২০২২ সালে। সে সময় তিনি প্রায় ৯৬০ মিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেছিলেন, যার মধ্যে পাঁচটি নতুন হাইওয়ে এবং একটি আধুনিক পুলিশ সদর দফতর অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু সেই উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর পরই ২০২৩ সালের মে মাসে সহিংসতা তীব্র আকার ধারণ করে, যা রাজ্যের সামাজিক শান্তি ভেঙে দেয়।

রাজনীতির ক্ষেত্রেও মণিপুর অস্থির সময় পার করছে। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং, যিনি বিজেপির প্রতিনিধি ছিলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি সংঘাতকবলিত সময়ে রক্তপাত ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর পদত্যাগের পর থেকে মণিপুর সরাসরি নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে, মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে জমি ও সরকারি চাকরি নিয়ে বিরোধকে রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থে আরও উসকে দিচ্ছেন। এতে বিভাজন গভীরতর হচ্ছে এবং স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়ে আসছে। মোদির এই সফর তাই শুধু উন্নয়ন ঘোষণা নয়, বরং জটিল সামাজিক সংঘাতের মধ্যে সরকারের ভূমিকা ও সংকট ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা কতটা তা পরীক্ষা করার এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

-শরিফুল


অবরুদ্ধ গাজায় মৃত্যু-ক্ষুধার মিছিল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:২২:৩০
অবরুদ্ধ গাজায় মৃত্যু-ক্ষুধার মিছিল
ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন অভিযানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ধারাবাহিক বিমান হামলায় রবিবার ও সোমবারের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার অন্তত ১৬টি ভবন, যার মধ্যে তিনটি বহুতল আবাসিক টাওয়ারও রয়েছে। যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে খাদ্যসংকট ও চিকিৎসা ঘাটতি মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে, যার ফলে অপুষ্টি ও ক্ষুধাজনিত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২২ জনে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করছে যে যদি জরুরি সহায়তা দ্রুত না পৌঁছায়, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সামরিক অভিযানের মূল লক্ষ্য গাজার উত্তরাঞ্চল দখল এবং সেখানকার সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কেবল রবিবারেই গাজা সিটির অন্তত ৩৫ জন বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। রেমাল এলাকায় অবস্থিত আল-কাওসার টাওয়ারে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে সেটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। লাগাতার বোমাবর্ষণে হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা মারওয়ান আল-সাফি বলেন, “আমরা জানি না কোথায় আশ্রয় নেব। প্রতিদিন আমাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো এ পরিস্থিতিকে ভয়াবহ আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, গত চার দিনে সংস্থার অন্তত ১০টি ভবন ইসরায়েলি হামলায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি স্কুল ও দুটি ক্লিনিক ছিল, যেখানে হাজারো বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। তিনি এক্সে লিখেছেন, “গাজায় এখন আর কোনো নিরাপদ স্থান নেই—কেউ নিরাপদ নয়।” শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মুখপাত্র টেস ইঙ্গ্রামও জানিয়েছেন যে গাজার কথিত মানবিক অঞ্চলগুলো বাস্তবে নিরাপদ নয়। তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিদিন আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের ভিড় বাড়ছে, এমনকি এক নারী নিরাপদ আশ্রয় না পেয়ে রাস্তায় সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য হয়েছেন।

বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবনযাপনও হয়ে উঠেছে মানবেতর। উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে আসা আহমেদ আওয়াদ জানান, মর্টারের আঘাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে এলেও এখনো মৌলিক কোনো চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়নি। পানীয় জল, টয়লেট কিংবা আশ্রয়ের ব্যবস্থা নেই; পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে। আরেকজন ফিলিস্তিনি, আবেদআল্লাহ আরাম, জানান তাঁর পরিবার তীব্র পানির সংকটে ভুগছে, পর্যাপ্ত খাবার নেই, শিশুরা মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। তিনি বলেন, “বাস্তুচ্যুত হওয়া মানে যেন শরীর থেকে প্রাণটাকে টেনে বের করে নেওয়ার মতো।”

-রফিক


ইসরায়েলি অবরোধের বিরুদ্ধে সমুদ্রপথে প্রতিবাদ, গাজাগামী নৌবহরে যোগ দিল গ্রিসের দুটি জাহাজ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:১৫:১২
ইসরায়েলি অবরোধের বিরুদ্ধে সমুদ্রপথে প্রতিবাদ, গাজাগামী নৌবহরে যোগ দিল গ্রিসের দুটি জাহাজ
ছবিঃ এ এফ পি

গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে গ্রিসের সাইরোস দ্বীপ থেকে দুটি জাহাজ রওনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক এই উদ্যোগের নাম গ্লোবাল সুমুদ্র ফ্লোটিলা, যা গাজার মানুষের জন্য খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে।

রবিবার সন্ধ্যায় গ্রিসের এরমোপোলিস বন্দরে প্রায় ৫০০ মানুষ জড়ো হয়ে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিয়ে জাহাজ দুটিকে বিদায় জানান। গ্রিসের পতাকা বহনকারী ‘অক্সিজেন’ ও ‘ইলেকট্রা’ নামের এই জাহাজ দুটি পাঁচ ও আটজন ক্রু নিয়ে যাত্রা শুরু করে। সঙ্গে রয়েছে দুর্ভিক্ষকবলিত গাজার মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী।

একজন ক্রু সদস্য বলেন, “এভাবে আমরা দেখাতে চাই, ইসরায়েলের মানুষের ওপর অনাহার চাপিয়ে দেওয়ার কোনো অধিকার নেই। আমরা ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছি।” আরেকজন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু ইসরায়েল নয়, নিজেদের সরকারকেও বোঝানো—তারা যেন এ ধরণের অন্যায়কে সমর্থন না করে।”

জাতিসংঘ আগস্টে গাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। সেখানে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে। তবে ইসরায়েল এই দাবিকে অস্বীকার করেছে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, তারা কোনো সরকার বা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। ‘সুমুদ’ শব্দের অর্থ ‘অটলতা’। এই অভিযানে সমর্থন জানিয়েছেন পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থানবার্গসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি।

যাত্রাপথ ঝুঁকিমুক্ত নয়। টিউনিশিয়ার উপকূলে থাকাকালে অন্তত দুটি সন্দেহভাজন ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবু ক্রু সদস্যদের মনোবল অটুট। তাদের কথায়, “গাজায় মানুষ যেভাবে প্রতিদিন জীবন নিয়ে লড়াই করছে, তার তুলনায় আমাদের এই ঝুঁকি কিছুই নয়।”

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে গাজায় ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক এই নৌবহর গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো ও অবরোধ ভাঙার এক প্রতীকী প্রচেষ্টা।

-এ এফ পি


দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষোভ প্রশমনে ট্রাম্পের ‘ওপেন ডোর’ নীতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১০:৩২:৫৯
দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষোভ প্রশমনে ট্রাম্পের ‘ওপেন ডোর’ নীতি
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার এক সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছেন, বিদেশি কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রে “স্বাগত” এবং তিনি কোনোভাবেই বিনিয়োগকারীদের ভয় দেখাতে চান না। তার এই মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে যখন মাত্র ১০ দিন আগে মার্কিন অঙ্গরাজ্য জর্জিয়ার একটি বিশাল অভিযানে প্রায় ৪৭৫ জন দক্ষিণ কোরিয়ান শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানটি পরিচালনা করে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই), যারা অভিযোগ করে যে, অনেক শ্রমিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অথবা তারা যে ভিসা পেয়েছিলেন তাতে ম্যানুয়াল শ্রমের অনুমতি ছিল না। এ অভিযানটি ছিল ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক ঘোষিত সাম্প্রতিকতম অভিবাসন অভিযানের মধ্যে সবচেয়ে বড় একক রেইড। যদিও শেষ পর্যন্ত তাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়নি, হাতকড়া পরানো ও শিকল দিয়ে বেঁধে শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দক্ষিণ কোরিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। শুক্রবার সিউল সরকার তাদের দেশে ফেরত পাঠায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং এ ঘটনাকে “বিস্ময়কর” অভিহিত করে সতর্ক করে দেন যে, এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রেড ইউনিয়নগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনার দাবি তুলেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার পোস্টে স্পষ্ট করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে জটিল প্রযুক্তি পণ্যের কারখানা তৈরির জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞদের থাকা প্রয়োজন। তিনি লেখেন,

“চিপস, সেমিকন্ডাক্টর, কম্পিউটার, জাহাজ, ট্রেন—এসব পণ্য আমরা অন্যদের কাছ থেকে শিখতে চাই বা অনেক ক্ষেত্রে পুনরায় শিখতে চাই, কারণ আগে এগুলোতে আমরা দক্ষ ছিলাম কিন্তু আর তেমন নেই।”

তিনি আরও যোগ করেন,

“আমরা তাদের স্বাগত জানাই, তাদের কর্মীদের স্বাগত জানাই এবং গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, আমরা তাদের কাছ থেকে শিখব এবং খুব শিগগিরই তাদের থেকেও ভালো করব।”

এই বার্তাটি মূলত বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে একটি আশ্বাস—যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে চায় না, বরং বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে শিল্প পুনর্জাগরণে আগ্রহী।

বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন অভিযান অব্যাহত থাকলেও, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের প্রতি এই নরম বার্তা দেখায় যে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চায় এবং উচ্চ প্রযুক্তি উৎপাদনে বিদেশি দক্ষতাকে মূল্য দেয়।

-শাহিন আলম


টিকটক বন্ধ নাকি বাঁচবে? স্পেনের যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকেই মিলবে সিদ্ধান্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ০৯:১৫:২২
টিকটক বন্ধ নাকি বাঁচবে? স্পেনের যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকেই মিলবে সিদ্ধান্ত
রবিবার শুরু হওয়া আলোচনায় চীনের পক্ষ থেকে ছিলেন হে লিফেং এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ছিলেন স্কট বেসেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা স্পেনের মাদ্রিদে উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য বৈঠকে দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় বসেছেন। বিশ্ব অর্থনীতির দুই প্রধান শক্তি—ওয়াশিংটন ও বেইজিং—চলমান শুল্কযুদ্ধ প্রশমনের চেষ্টা করছে। আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং চীনের ভাইস-প্রিমিয়ার হে লিফেং।

এই বৈঠকের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো টিকটক। চীনা মালিকানাধীন এই জনপ্রিয় অ্যাপের যুক্তরাষ্ট্রে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। মার্কিন বাজারে টিকটক চালিয়ে যেতে হলে চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে দ্রুত নতুন ক্রেতা খুঁজে বের করতে হবে। নাহলে দেশটিতে টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরুতে টিকটক নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি একের পর এক তিনবার সময়সীমা বাড়িয়েছেন। গত রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, চতুর্থ দফায়ও সময় বাড়ানো হতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা হয়তো টিকটককে বন্ধ হতে দেব, অথবা না-ও দিতে পারি… সেটা চীনের ওপর নির্ভর করছে। আমার কাছে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়।”

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপকে ঘিরে নয়; এটি মূলত তথ্য সুরক্ষা, ডিজিটাল বাণিজ্য এবং ভূরাজনৈতিক প্রভাবের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণকে ঘিরে এক বৃহত্তর লড়াই। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ টিকটক ব্যবহার করছে, যা বিষয়টিকে আরও সংবেদনশীল করে তুলেছে।

এদিকে, উভয় দেশ নভেম্বর পর্যন্ত শুল্কবিরতির সময়সীমা বাড়িয়েছে। এর ফলে আপাতত একে অপরের ওপর শতভাগের বেশি আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি কমেছে। এই বিরতি দুই দেশকে আলোচনার জন্য আরও সময় দিচ্ছে, বিশেষ করে “অন্যায্য বাণিজ্যনীতি” ও জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট জটিল বিষয়গুলো সমাধানের জন্য।

অনেকের ধারণা, এই বৈঠক ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে আসন্ন দক্ষিণ কোরিয়া শীর্ষ সম্মেলনে সরাসরি সাক্ষাতেরও পথ তৈরি করছে। অক্টোবরেই এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দুই নেতার সাক্ষাত বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বড় সিদ্ধান্ত বয়ে আনতে পারে।

সব মিলিয়ে মাদ্রিদে চলমান আলোচনাই এখন বিশ্বদৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এখানেই নির্ধারিত হতে পারে শুধু যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য সম্পর্ক নয়, টিকটকেরও বেঁচে থাকার ভবিষ্যৎ।


যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে ভারতীয় প্রৌঢ় খুন: অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা ট্রাম্পের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ০৯:০৩:১০
যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে ভারতীয় প্রৌঢ় খুন: অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা ট্রাম্পের
(বাঁ দিকে) আমেরিকায় নিহত ভারতীয় প্রৌঢ়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে আমেরিকার নরম নীতি এখন অতীত। এ ধরনের অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং অবৈধভাবে কেউ যেন আর আমেরিকায় প্রবেশ করতে না পারে, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনা

গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে চন্দ্র নাগামাল্লাইয়া (৬০) ডালাসে তাঁর পরিবারের সামনে নির্মমভাবে খুন হন। জানা গেছে, তাঁর হোটেলের কর্মচারী ৩৭ বছর বয়সী ইয়োরডানিস কোবোস-মার্টিনেজ, যিনি কিউবা থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন, ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে চন্দ্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, তিনি চন্দ্রের মাথা কেটে তা নিয়ে রাস্তায় হেঁটে যান এবং পরে মুণ্ডে লাথি মারেন। ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া

এই ভয়াবহ ঘটনার পর সমাজমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প লিখেছেন, “ডালাসের সম্মানিত ব্যক্তি চন্দ্র নাগামাল্লাইয়া তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের সামনে খুন হয়েছেন। হত্যাকারী একজন অবৈধ অভিবাসী, যিনি কিউবা থেকে এসেছিলেন। এর আগে শিশুনিগ্রহ ও গাড়ি চুরির অভিযোগেও তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের অদক্ষতার কারণে তাঁকে আটকে রাখা হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে নরম হওয়ার দিন শেষ। আমেরিকাকে আবার নিরাপদ করতে হবে। এই অপরাধী এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে এবং হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে।”

অভিবাসন ইস্যুতে নতুন করে বিতর্ক

ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতি নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, যেসব অভিবাসীর অপরাধমূলক রেকর্ড আছে, তাঁদের কেন পুনর্বাসিত বা বহিষ্কার করা হয়নি। ট্রাম্পের বক্তব্যে ইঙ্গিত মিলেছে যে, ভবিষ্যতে তিনি ক্ষমতায় ফিরলে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহতের পরিবার ও কূটনৈতিক তৎপরতা

চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার মৃত্যুতে ডালাসে বসবাসরত ভারতীয় প্রবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে শোক নেমে এসেছে। নিহতের পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় দূতাবাস ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে।


উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ায় উত্তেজনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১২:১৪:৫৮
উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ায় উত্তেজনা
ছবিঃ সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাধর নেতা কিম জং উনের বোন কিম জো ইয়ং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের আসন্ন যৌথ সামরিক মহড়াকে "অপরিণামদর্শী শক্তি প্রদর্শনী" বলে অভিহিত করেছেন, যা "অপ্রীতিকর ফলাফল" ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম KCNA এ খবরটি প্রকাশ করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান আগামী সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপের আশেপাশে যৌথ সামরিক মহড়া পরিচালনার পরিকল্পনা করেছে। এই মহড়ায় নৌ, বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কার্যক্রম একত্রিত হবে, যা পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়ার হুমকির বিরুদ্ধে প্রস্তুতি বাড়াবে।

যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ২৮,৫০০ সেনা মোতায়েন করেছে এবং যৌথ সামরিক মহড়ার পাশাপাশি একটি টেবিলটপ এক্সারসাইজও অনুষ্ঠিত হবে। এতে দুই দেশের সামরিক সম্পদকে সমন্বিত করার চেষ্টা করা হবে।

কিম জো ইয়ং এই মহড়াকে “বিপজ্জনক ধারণা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তার বক্তব্যে বলা হয়েছে, “যারা (মিত্র দেশগুলি) এ অঞ্চলে বাস্তব ক্রিয়ায় শক্তি প্রদর্শন করছে, তারা ভুল জায়গায় এটি করছে। এর ফলে তাদের নিজেকেই অপ্রীতিকর ফলাফল ভোগ করতে হবে।”

উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে এমন যৌথ সামরিক মহড়ার বিরোধিতা করে আসছে এবং এগুলোকে আক্রমণের মহড়া হিসেবে অভিহিত করেছে। কিম জো ইয়ং-এর এই সতর্কবার্তা তার ভাই কিম জং উনের সাম্প্রতিক অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনের পর এসেছে। সেখানে কিম জং উন বলেছেন, উত্তর কোরিয়া "পারমাণবিক ও প্রচলিত সামরিক শক্তি একযোগে এগিয়ে নেওয়ার নীতি অব্যাহত রাখবে"।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ব্যর্থ শীর্ষ সম্মেলনের পর, উত্তর কোরিয়া বারবার ঘোষণা করেছে যে তারা কখনও পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়বে না এবং নিজেকে "অপ্রত্যাহারযোগ্য" পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে।

কিম জং উন ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আরও সাহসী হয়েছেন, এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমর্থন স্থাপন করেছেন। গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উত্তর কোরিয়ার সফরের সময় রাশিয়া ও পিয়ংইয়াং পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

-হাসানুজ্জামান


গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কা, নাসা থেকে বহিষ্কার চীনা গবেষকরা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১১:৪৩:৫৮
গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কা, নাসা থেকে বহিষ্কার চীনা গবেষকরা
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কায় চীনা নাগরিকদের ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও তারা আর নাসার কোনো স্থাপনা, গবেষণা প্রকল্প কিংবা অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারবেন না। ফলে নাসায় ঠিকাদার, গবেষক বা শিক্ষার্থী হিসেবে কাজ করা চীনা নাগরিকদের কার্যক্রম হঠাৎ করেই স্থগিত হয়ে যায়।

ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ৫ সেপ্টেম্বর থেকে চীনা নাগরিকরা নাসার ডিজিটাল সিস্টেম থেকে লগআউট হয়ে যান এবং তাদেরকে ভার্চুয়াল কিংবা সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর নাসার পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয় যে, সংস্থার নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে চীনা নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নাসার প্রেস সচিব বেথানি স্টিভেন্স বলেন, সংস্থার সংবেদনশীল কার্যক্রম সুরক্ষায় এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল। তাঁর ভাষায়, শারীরিক এবং সাইবার উভয় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি সীমিত করার জন্য নাসা এই অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা নিয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতে চীনা নাগরিকদের ওপর বাড়তি নজরদারির আরেকটি ধাপ। মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা কমিউনিস্ট সরকারের সঙ্গে যুক্ত একাধিক গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনা ধরা পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের দ্রুত অগ্রসরমান মহাকাশ কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে এবং উভয় দেশের প্রতিযোগিতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ফক্স বিজনেসের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ‘দ্বিতীয় মহাকাশ প্রতিযোগিতায়’ নেতৃত্ব দিতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, চীনের চন্দ্রাভিযান শান্তিপূর্ণ অনুসন্ধানের আড়ালে সামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। একই ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারাও। স্পেস ফোর্সের প্রধান জেনারেল বি. চান্স সাল্টজম্যান সম্প্রতি বলেছেন, চীনের মহাকাশ কর্মসূচি সরাসরি তাদের সামরিক কৌশলের সঙ্গে সম্পর্কিত।

এদিকে চীনও মহাকাশ কর্মসূচি এগিয়ে নিচ্ছে দ্রুতগতিতে। আগস্টে দেশটি সফলভাবে লং মার্চ-১০ চন্দ্র রকেটের পরীক্ষা চালিয়েছে এবং দশকের শেষ নাগাদ নভোচারীদের চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। ফলে নাসার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র-চীন মহাকাশ প্রতিযোগিতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি শুধু প্রযুক্তি বা গবেষণার ক্ষেত্রেই নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতি ও নিরাপত্তা প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

-শরিফুল

পাঠকের মতামত: