ট্রাম্পের শারীরিক অবস্থা নিয়ে গুঞ্জন, হোয়াইট হাউস বলছে ‘বিপজ্জনক নয়’

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৮ ১১:০০:৪৭
ট্রাম্পের শারীরিক অবস্থা নিয়ে গুঞ্জন, হোয়াইট হাউস বলছে ‘বিপজ্জনক নয়’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পায়ে সামান্য ফোলা এবং হাতে আঘাতের দাগ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ের নানা গুজব ও জল্পনার পর অবশেষে হোয়াইট হাউস থেকে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গতকাল বৃহস্পতিবার জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শরীরে ধরা পড়েছে “ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিসিয়েন্সি”—বয়সজনিত একটি সাধারণ শিরাজনিত শারীরিক সমস্যা, যা গুরুতর নয়।

৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। তিনিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া ব্যক্তি। তাঁর স্বাস্থ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহও সেই অনুপাতে বেশি। বিশেষ করে সম্প্রতি নিউ জার্সিতে অনুষ্ঠিত ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে ট্রাম্পের ফুলে থাকা গোড়ালি এবং ডান হাতে দেখা দেওয়া দাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকেই ধারণা করেন, হাতে থাকা দাগটি মেকআপ দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করা হয়েছে।

এ প্রেক্ষিতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই বিষয়টি জনসমক্ষে আনার নির্দেশ দেন, স্বচ্ছতার স্বার্থে। প্রেস সেক্রেটারি লেভিট বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রেসিডেন্ট নিজেই তাঁর ডান পায়ের নিচের অংশে সামান্য ফোলা ভাব অনুভব করেন। এরপর সতর্কতামূলক পরীক্ষার অংশ হিসেবে হোয়াইট হাউসের চিকিৎসকরা তাঁকে আল্ট্রাসাউন্ড করান। পরীক্ষায় দেখা যায়, তিনি ভুগছেন ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিসিয়েন্সিতে। এটি মূলত বয়সজনিত একটি অবস্থায়, যেখানে পায়ের কিছু শিরা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রক্ত স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হতে ব্যর্থ হয়।

লেভিট আরও জানান, ট্রাম্পের ডান হাতে যে বিবর্ণতা বা আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে, সেটি মূলত ঘন ঘন করমর্দনের ফলে টিস্যুতে চাপ ও ক্ষরণ এবং নিয়মিত অ্যাসপিরিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। উল্লেখ্য, অ্যাসপিরিন সাধারণত হৃদরোগ প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয় এবং এটি রক্ত পাতলা করার ওষুধ হিসেবেও পরিচিত।

হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক আনুষ্ঠানিক চিঠিতে প্রেসিডেন্টের চিকিৎসক ড. শন বারবাবেলা নিশ্চিত করেন যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো “চমৎকার” স্বাস্থ্যগত অবস্থায় রয়েছেন এবং তাঁর শারীরিক সক্ষমতা পূর্ণমাত্রায় বজায় রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রায়ই নিজেকে দারুণ উদ্যমী, সুস্থ ও শক্তিশালী নেতা হিসেবে তুলে ধরেন। এমনকি তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা ও সমর্থকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়া পোস্টারে তাঁকে ‘সুপারম্যান’-এর বেশে চিত্রিত করাও হয়েছে। তবে এবার নিজেকেই সামান্য স্বাস্থ্য জটিলতার বিষয়ে সবার সামনে স্বীকার করতে হয়েছে।

ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ছাড়েন ৮২ বছর বয়সে। ট্রাম্প আগেই দাবি করে এসেছেন যে বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা দীর্ঘদিন ধরে গোপন করা হয়েছিল। তবে এবার ট্রাম্পকেই নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জনমত ও সন্দেহের মুখে পড়তে হচ্ছে।

তবে ট্রাম্পের দল ও হোয়াইট হাউস পরিষ্কার করে বলেছে, তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা কোনোভাবেই রাষ্ট্র পরিচালনার পথে বাধা নয়, এবং প্রেসিডেন্ট তাঁর পূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন বলেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

এই ব্যাখ্যার মধ্য দিয়ে হোয়াইট হাউস চায়, চলমান গুজব ও বিভ্রান্তি প্রশমিত হোক এবং ট্রাম্পের নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় জনআস্থা অটুট থাকুক।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ