সিনহুয়ার সাক্ষাৎকার

চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতা নতুন স্তরে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে: ঢাকার কর্মকর্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৭ ২০:০২:৩৭
চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতা নতুন স্তরে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে: ঢাকার কর্মকর্তা
প্রতীকী ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে। এই সম্পর্ক আগামী দিনে দুই পক্ষের জন্যই আরও উপকারী হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) ব্যবসায়িক উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি।

সম্প্রতি চীনের সিনহুয়া বার্তা সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতা খুবই ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ। চীন আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ অংশীদার।”

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চীন গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে রয়েছে। বর্তমানে প্রায় এক হাজার চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কাজ করছে। নাহিয়ান রহমান বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের সহায়তা সবসময়ই উল্লেখযোগ্য। তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগ ছাড়াও ওষুধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স খাতেও চীনের নতুন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি আঞ্চলিক উৎপাদন কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং সেই লক্ষ্যে চীনের সঙ্গে আরও গভীর অংশীদারত্ব প্রয়োজন।” চীনের উচ্চ প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদনের অভিজ্ঞতা এবং বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতা একত্রে কাজ করলে দুই দেশের অর্থনীতিই উপকৃত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশের শিল্প খাতে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তিনি টেকসই জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি উল্লেখ করেন। রোচির মতে, “শিল্পখাতকে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি দিতে হলে নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে মনোযোগ বাড়াতে হবে। সৌর, বায়ু ও জলবিদ্যুৎ এই ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময়।”

তিনি আরও বলেন, “চীন এই পরিবর্তনে আমাদের সবচেয়ে কার্যকরী অংশীদার হতে পারে। তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে সহায়তা করতে পারে।”

চীনের বিনিয়োগ আকর্ষণের পদ্ধতির প্রশংসা করে রোচি বলেন, “বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে চীন বিশ্বে অন্যতম উদাহরণ। আমরা চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিচ্ছি এবং আমাদের নীতিগুলোও সেই অনুযায়ী গড়ে তুলছি।”

এই মাসেই বিডার একটি প্রতিনিধি দল চীন সফরে যাবে বলে জানান তিনি। এই সফরে চীনের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরা হবে। বিশেষ করে, টেক্সটাইল, ওষুধ, তথ্যপ্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অটোমোবাইল খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ইতিমধ্যে রয়েছে, এবং আরও একটি অঞ্চলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান রোচি। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী চীনা উদ্যোক্তাদের জন্য আমরা করসহ নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছি, যা তাদের জন্য খুবই সহায়ক হবে।”

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “গত ৫০ বছরের অর্জন আগামী দিনের জন্য একটি ভালো ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ