"কারাগারে ১১ মাস, এবার আদালতে নিজের অবস্থান জানালেন দীপু মনি"

প্রায় এক বছর কারাগারে থাকার পর প্রথমবারের মতো নিজেকে সরাসরি আদালতের সামনে তুলে ধরলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মানি লন্ডারিং মামলার শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “আমি মামলা লড়তে চাই, তথ্যই আমার শক্তি। কিন্তু আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছি না।”

আদালতে দাঁড়িয়ে দীপু মনি অভিযোগ করেন, তার বিরুদ্ধে ৭০টি মামলা থাকলেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাচ্ছেন না। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। তার দাবি, “আমার বিরুদ্ধে ২৮টি ব্যাংক হিসাবের কথা বলা হচ্ছে, অথচ আমার ছয়টি হিসাব রয়েছে, যার মধ্যে দুটি বন্ধ। আমি নিয়মিত আয়কর দিই, সব কাগজপত্র আছে আমার কাছে।”

তিনি বলেন, “একজন মানুষের সুনাম গড়তে সারা জীবন লাগে, কিন্তু তা নষ্ট হতে দুই মিনিটই যথেষ্ট। আমি আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো বিস্তারিতভাবে জানতে চাই, কারণ আমি একজন নাগরিক এবং আইনি লড়াইয়ের অধিকার আমার রয়েছে।”

এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিপি আদালতে জানান, দীপু মনি ৫ কোটি টাকারও বেশি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তার ২৮টি ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে।

শুনানি শেষে আদালত দুদকের গ্রেপ্তার আবেদন মঞ্জুর করেন। দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয় এবং পরে প্রিজন ভ্যানে করে ফের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠানো হয়। গাড়ির ভেতরে তিনি নিঃশব্দ ও হতাশ দেখা যায়।

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার কাওয়ালিন নাহার বলেন, “আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে হলে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। কেউ যদি সঠিকভাবে আবেদন করেন, তাকে বঞ্চিত করা হয় না। দীপু মনির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার সুযোগ নেই।”

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি দুদক দীপু মনি ও তার স্বামী ব্যারিস্টার তাওফিক নেওয়াজের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, দীপু মনি ৫ কোটি ৯২ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তার ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৬০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ১৯ আগস্ট দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকেই তিনি কারাগারে আছেন।