আগে জুলাই সনদের,পরে নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় এনসিপি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো তারিখ ঘোষণার আগে ‘জুলাই সনদ’ কার্যকর করতে হবে। এ সনদ হবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে গৃহীত ঐকমত্যের লিখিত প্রকাশ, যা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের রূপরেখা দেবে।

সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সর্বদলীয় সংলাপ শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, এনসিপির পক্ষ থেকে বৈঠকে তিনটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমত, আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র (সনদ) তৈরি ও চূড়ান্ত করার জোর দাবি জানানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ৫ আগস্টের আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরের মাধ্যমে ওই সনদ কার্যকর করতে হবে। আর তৃতীয়ত, নির্বাচন কমিশনের কাঠামোগত সংস্কার ও পুনর্গঠনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি—জুলাই সনদ প্রকাশ ও তা কার্যকরের পরই নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। তার আগে কোনো তারিখ ঘোষণাকে আমরা সময়োচিত মনে করি না।”

এনসিপি’র এই অবস্থান মূলত একটি প্রক্রিয়াভিত্তিক সমঝোতার ওপর জোর দিচ্ছে, যেখানে ধারাবাহিকতা ও বাস্তব ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি গ্রহণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে তারা মনে করছে, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করতে হলে আগে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা পুনর্গঠন করতে হবে।

অন্যদিকে, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম দফার সংলাপে যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা তৈরি হয়েছে, সেগুলোকে ভিত্তি করেই একটি ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করা হবে। এই সনদেই ভবিষ্যতের রূপরেখা ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির এই অবস্থান রাজনৈতিক বাস্তবতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিককে তুলে ধরে—নির্বাচনের আগে শুধু সময় নির্ধারণ নয়, বরং প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও দলগুলোর সম্মিলিত দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।