ড.ইউনুসের জাপান সফর: কি বললেন আল-জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৭ ০৯:৫৬:২০
ড.ইউনুসের জাপান সফর: কি বললেন আল-জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন?

দেশের ভেতরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিক্ষোভের উত্তাপে যখন জনজীবন উদ্বেগে, তখন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের জাপান সফর নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আল জাজিরার সাংবাদিকজুলকারনাইন এই সফরকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ ও ‘ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং' এর অংশ’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এক ফেসবুক পোস্টেজুলকারনাইন লেখেন,

“যখন দেশ উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রয়েছে, তখন একটি দায়বদ্ধ ও সৎ ব্যক্তিত্বের উচিত হতো দেশকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করা। অথচ ড. ইউনুস আবারও এক অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফরে যাচ্ছেন।”

তিনি বলেন, “যত বিদেশ সফরে ড. ইউনুস গেছেন, তার চেয়ে কম বিদেশ সফর করেছেন পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সরকারপ্রধানরাও এত ঘন ঘন বিদেশ সফরে যান না।”

জুলকারনাইনসরাসরি প্রশ্ন তোলেন, “একজন অস্থায়ী, অনির্বাচিত সরকারপ্রধান কীভাবে রাষ্ট্রীয় খরচে ব্যক্তিগত সম্মাননা গ্রহণ কিংবা বক্তৃতার জন্য দেশের বাইরে যেতে পারেন?”

জাপান সফরের প্রসঙ্গেজুলকারনাইন উল্লেখ করেন, “এই সফরের কেন্দ্রবিন্দু আবারও তার ‘তিন শূন্য’ ধারণার বক্তৃতা—এবার ৩০তম নিক্কেই ফোরামে। এর আশেপাশে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য বৈঠক, যা গণমাধ্যমে বড় করে তুলে ধরা হবে।”

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এর আগের কাতার সফরে তিনি এমন এক সম্মেলনে গিয়েছিলেন, যেখানে কোনো রাষ্ট্রপ্রধানও ছিল না। তারপর পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে যান ভ্যাটিকানে, শুধুমাত্র এই কারণে যে প্রয়াত পোপ নাকি তার প্রশংসক ছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার কোনো রাষ্ট্রপ্রধান বা এমনকি ভিয়েতনাম-কাম্বোডিয়ার কেউও সেখানে যাননি।”

জুলকারনাইনআরও জানান, “জাপান সফর শেষ না হতেই দশ দিনের মধ্যে আরেকটি বিদেশ সফরে যাচ্ছেন তিনি, কারণ এবার তাকে একটি পুরস্কার দেওয়া হবে। অথচ এসব সফরে তিনি একা যান না—তার সঙ্গে বিশাল একটি প্রতিনিধি দল থাকে, যাদের সব খরচই রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বহন করা হয়।”

জুলকারনাইনপোস্টের শেষ অংশে জনসচেতনতার কথা বলেন:

“যদি কোনো নির্বাচিত সরকারপ্রধান এত ঘন ঘন বিদেশ সফর করতেন, তাহলে আমরা প্রশ্ন তুলতাম। তাহলে একজন অনির্বাচিত, অস্থায়ী সরকারের প্রধানের বেলায় সেই প্রশ্ন তুলবো না কেন?”

বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনুসের এই ঘনঘন বিদেশ সফর একটি অস্থায়ী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা মনে করেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যখন দেশের ভেতরে জনমনে অসন্তোষ প্রবল এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে, তখন জাতীয় অগ্রাধিকারের তালিকায় শীর্ষে থাকা উচিত ছিল সঙ্কট প্রশমনে ভূমিকা রাখা। বরং এর পরিবর্তে, বিদেশ সফর ও ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিংয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও বলেন, “একটি অনির্বাচিত সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘনঘন বিদেশ সফর জনমনে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য।” অনেকে এটিকে নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্যও মনে করছেন, কারণ এসব সফর কেবল রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা বাড়ানোর একটি প্রচেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হয়।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত