অর্থনীতির চেয়ে বড় সংকটে রাজনীতি: আমীর খসরু

সত্য নিউজ: বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে দেশকে এক গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তার মতে, রাজনৈতিক ভিত্তি না থাকলে বাজেট হোক কিংবা অর্থনৈতিক নীতি, বাস্তবে তা কাজ করবে না।
সোমবার (১৯ মে) রাজধানীর গুলশানে ‘নীতি সংস্কার ও আগামীর জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ বক্তব্য দেন। এই সংলাপের আয়োজন করে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
❝গণতন্ত্রহীনতায় বাজেট কার্যকর হতে পারে না❞
আমীর খসরু বলেন, “এই সরকার এমন এক শাসনব্যবস্থা চালু করেছে, যা গণতান্ত্রিক নয় এবং সাংবিধানিকভাবেও প্রশ্নবিদ্ধ। এই অবস্থায় দেশ কোথায় যাচ্ছে, নির্বাচন কবে হবে, এই সরকার কতদিন থাকবে এসব প্রশ্ন এখন মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই বাজেট প্রস্তুতির নামে একটি প্রতীকী আয়োজন চলছে।”
তিনি আরও বলেন, "বাজেট একটি প্রশ্নবিদ্ধ জিডিপির ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে। অতীতে ফ্যাসিস্ট সরকারের যেসব বাজেট ছিল, তারই ধারাবাহিকতা আমরা আবার দেখতে পাচ্ছি। অথচ অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক বাস্তবতায় পরিবর্তন এসেছে, সেগুলোর প্রতিফলন নেই বাজেটে।"
❝নিয়ন্ত্রণ মানেই লুটপাট, মুক্ত বাজারে যেতে হবে❞
তিনি বাংলাদেশে অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রণমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার মতে, “নিয়ন্ত্রণ যত বাড়বে, লুটপাটও তত বাড়বে। অতীতে আমরা নিয়ন্ত্রণের আড়ালে দুর্নীতি ও সম্পদ পাচার দেখেছি। এখন সময় এসেছে একটি মুক্ত এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার।”
খসরু বলেন, "বাংলাদেশের আগামী অর্থনৈতিক মডেল হওয়া উচিত ‘We Are Open for Business’ অর্থাৎ আমরা ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ, প্রতিযোগিতা ও স্বচ্ছতা ছাড়া অর্থনীতি টেকসই হতে পারে না।"
❝রাজনৈতিক সংকট ছাড়া অর্থনৈতিক সংস্কার সম্ভব নয়❞
বিএনপি নেতা খসরু দৃঢ়ভাবে বলেন, “রাজনৈতিক সংকট নিরসন না হলে কোনো অর্থনৈতিক সংস্কার সফল হবে না। আপনি অর্থনীতি নিয়ে যতই পরিকল্পনা করুন, যখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকবে না তখন অর্থনীতি ধসে পড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “জনগণ গত ১৪-১৫ বছর ধরে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয়। অথচ অন্তর্বর্তী সরকার এখন সেই আন্দোলনের সুফল উপেক্ষা করে একক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি বাদ দিয়ে এখন প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দেশ চালানোর চেষ্টা হচ্ছে।”
❝রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাজনৈতিক পরামর্শ ছাড়া সিদ্ধান্ত অনুচিত❞
মিয়ানমারের সঙ্গে 'মানবিক করিডর' বিষয়েও সরকারের একতরফা অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, “এটি একটি কৌশলগত ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অথচ এতে কোনো অংশীজন বা রাজনৈতিক দলের মতামত নেওয়া হয়নি। সরকারের একতরফা দৃষ্টিভঙ্গি জাতীয় স্বার্থকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।”
❝মতপার্থক্যে সম্মান দেখিয়ে এগোতে হবে❞
তিনি বলেন, “আমাদের সহনশীল হতে হবে। রাজনৈতিক মতভেদ থাকা সত্ত্বেও, একে অপরের মতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। রাজনৈতিক সহাবস্থান না থাকলে আমরা অর্থনীতির কোনও রূপান্তর করতে পারব না। সংঘাত ও প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসাই হবে আমাদের প্রথম কাজ।”
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জ দাখিল, বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার
- বাহরাইনেরমানামায় বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন, নেতৃত্বে আক্তার হোসেন
- বাহরাইনে জাতীয়তাবাদী শক্তির পুনর্জাগরণ: গ্যালালী শাখায় নতুন নেতৃত্ব
- চীন না ভারত? উন্নয়ন না আনুগত্য? বুলেট ট্রেন বলছে স্পষ্ট জবাব
- অবশেষে বিসিবি সভাপতি ফারুককে নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ
- বিশ্বশক্তির নজর এখন বাংলাদেশে: খনিজ ভাণ্ডারের নতুন মানচিত্র
- তারেক-ইউনুস উত্তপ্ত ফোনালাপ: যা জানা গেল
- হালদা নদীতে ডিম ছাড়ল রুই জাতীয় মা মাছ, সংগ্রহ প্রায় ১৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম
- নতুন বিসিবি সভাপতিবুলবুলের কাছে আশরাফুলের চাওয়া
- ঈদের দিন বৃষ্টি হবে কি?
- চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ভোর: দক্ষিণ এশিয়ার তেলের ‘রাজসিংহাসন’ দখলের পথে বাংলাদেশ?
- ভারতের গর্ব এস-৪০০ ধ্বংস: বাস্তবতা নাকি প্রচারযুদ্ধ?
- ধ্বংস থেকে নেতৃত্ব: ৫ আগস্ট থেকে যেভাবে শুরু হলো অর্থনীতির পুনর্জাগরণ
- ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় হঠাৎ বিরতি: যুক্তরাষ্ট্র কি নতুন কৌশল নিচ্ছে?
- ধর্ম-সংস্কৃতি উপেক্ষা নয়: সংবিধান সংশোধনে ১৮০ শিক্ষকের সরব প্রতিবাদ