সামনে এলো ফিলিস্তিন-আফ্রিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৭ ১৮:৪৯:৪১
সামনে এলো ফিলিস্তিন-আফ্রিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংকটের মধ্যে গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনি জনগণকে আফ্রিকার দুর্বল ও রাজনৈতিকভাবে অস্থির দেশগুলোতে পুনর্বাসনের প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। সাম্প্রতিক একাধিক প্রতিবেদনে এমন পরিকল্পনার তথ্য উঠে এসেছে, যা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক নীতিমালার পরিপন্থী বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১০ লাখ গাজাবাসীকে লিবিয়ায় পুনর্বাসনের একটি পরিকল্পনা করছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঁচ মার্কিন কর্মকর্তা, যাদের মধ্যে তিনজন দাবি করেন এ উদ্দেশ্যে লিবিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগও হয়েছে। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব দিয়েছে ১০ বছর ধরে জব্দ থাকা লিবিয়ার বহির্বিশ্বে সংরক্ষিত শত শত কোটি ডলারের সম্পদ মুক্ত করে দেওয়ার।

তবে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন, সময়সীমা বা অর্থায়ন বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানায় এনবিসি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও, পরে একজন কর্মকর্তা দাবি করেন এমন কোনো পরিকল্পনা নেই এবং প্রতিবেদনটি সত্য নয়।

এর আগে জেরুসালেম পোস্ট ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এর প্রতিবেদনেও গাজাবাসীদের মরক্কো, সোমালিয়া, সুদান এবং বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সোমালিল্যান্ডে পুনর্বাসনের সম্ভাব্য উদ্যোগের তথ্য উঠে আসে। এসব দেশগুলোর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুর্বলতা, নিরাপত্তাহীনতা এবং আঞ্চলিক জটিলতার সুযোগ নিয়ে ফিলিস্তিনিদের সেখানে পাঠানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা হয় বলেও জানায় প্রতিবেদনগুলো।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিকল্পনা "আঞ্চলিক সংকটের সমাধান নয়, বরং এক ধরনের জবরদস্তি বাস্তুচ্যুতি", যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। বিশেষ করে লিবিয়া, যেখানে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার—ত্রিপোলিভিত্তিক প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দেবেইবাহ এবং পূর্বাঞ্চলের সামরিক নেতা খলিফা হাফতারের নেতৃত্বে সংঘাত-সৃষ্ট পরিবেশ বিরাজমান, সেখানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের স্থায়ী পুনর্বাসন আরেকটি মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ

এ ধরনের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী উল্লেখ করে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজা উপত্যকার জনগণের ঐতিহাসিক অধিকারকে অস্বীকার করে জোরপূর্বক পুনর্বাসন তাদের নিজভূমি থেকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার একটি বিপজ্জনক কৌশল।

ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থানে আন্তর্জাতিক সংহতি দাবি

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরিকল্পনা শুধু ফিলিস্তিনিদের আত্মপরিচয় এবং ভৌগোলিক অধিকারকে খর্ব করে না, বরং মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিলতর করে তোলে। ফলে আফ্রিকার দেশগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই চাপ-সৃষ্ট কূটনৈতিক পরিকল্পনার বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়ে মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে অবস্থান নেওয়া।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত