জুলাই শহীদ ও যোদ্ধাদের পাশে সরকার, পুনর্বাসনে ২৫৯ কোটি বরাদ্দঃ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২১ ১৫:৪৬:৫৪
জুলাই শহীদ ও যোদ্ধাদের পাশে সরকার, পুনর্বাসনে ২৫৯ কোটি বরাদ্দঃ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা
ছবিঃ বি এস এস

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক এ আজম বলেছেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য সরকারের পুনর্বাসন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তাদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধ থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।” আজ সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আহতদের জন্য এখনো পৃথক কোনো চাকরির কোটার ব্যবস্থা নেই, তবে সরকার তাদের যোগ্যতা ও প্রয়োজন অনুযায়ী চাকরি বা ব্যবসায়িক সহায়তার সুযোগ সৃষ্টিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর, সরকার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের কল্যাণে প্রশাসনিক দায়িত্ব দেয়। এরপর ২০২৫ সালের ২৮ এপ্রিল গঠিত হয় 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর'। এ অধিদপ্তরের দায়িত্বে রয়েছে শহীদ ও আহতদের তালিকা চূড়ান্তকরণ, আর্থিক সহায়তা, চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ।

২০২৫ সালে একটি বিশেষ অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকার নিহতদের “জুলাই শহীদ” এবং আহতদের “জুলাই যোদ্ধা” হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যের ভিত্তিতে এ পর্যন্ত ৮৪৪ জন শহীদের তালিকা প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়। আহতদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে—ক্যাটাগরি ‘এ’-তে ৪৯৩ জন, ‘বি’-তে ৯,০০৮ জন এবং ‘সি’-তে ১০,৬৪২ জন। নতুন আরও ১,৭৬৯ জনের তালিকা যাচাই শেষে গেজেট আকারে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।

আর্থিক সহায়তা ও ভাতা:

প্রতিটি শহীদ পরিবারের জন্য এককালীন ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে, যা সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৭৭.২০ কোটি টাকা ইতোমধ্যে ৭৭২টি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭২টি পরিবার উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা নিষ্পত্তির পর অর্থ পাবে। বাকি টাকা আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেওয়া হবে।

আহতদের ক্ষেত্রে—

ক্যাটাগরি ‘এ’-তে প্রতিজনকে ৫ লাখ টাকা (ইতিমধ্যে ২ লাখ দেওয়া হয়েছে, মোট: ৯.৮৬ কোটি),

‘বি’ শ্রেণিতে প্রতিজন ৩ লাখ টাকা (ইতিমধ্যে ১ লাখ, মোট: ৯.০৮ কোটি),

‘সি’ শ্রেণির প্রতিজনকে ১ লাখ টাকা পূর্ণরূপে পরিশোধ করা হয়েছে (মোট: ১০৬.৪২ কোটি)।

সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সরকার ২০২.৫৬ কোটি টাকা এককালীন সহায়তা হিসেবে বিতরণ করেছে। বাকি অর্থ চলতি অর্থবছরেই দেওয়া হবে।

মাসিক ভাতা:

শহীদ পরিবার ও ক্যাটাগরি ‘এ’ আহতরা মাসে ২০ হাজার টাকা,

ক্যাটাগরি ‘বি’ আহতরা ১৫ হাজার টাকা,

ক্যাটাগরি ‘সি’ আহতরা ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। এতে প্রতি মাসে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৪.৬৭ কোটি টাকা।

চিকিৎসা সহায়তা ও বিদেশে চিকিৎসা:

উন্নত চিকিৎসার জন্য ৭৫ জন আহতকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে—সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তুরস্ক ও রাশিয়ায়। বর্তমানে ৪৬ জন বিদেশে চিকিৎসাধীন এবং আরও ৩২ জন যাত্রার অপেক্ষায় রয়েছেন। এ পর্যন্ত বিদেশে চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে ৭৮.৫২ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে চিকিৎসা, সহায়তা ও সঞ্চয়পত্র মিলিয়ে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৫৯.৬৮ কোটি টাকা।

দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন পরিকল্পনা:

সরকার আহতদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে চাকরি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ দিচ্ছে। একইসঙ্গে ভাতাভোগীদের তথ্য ডিজিটালভাবে সংরক্ষণের জন্য একটি ‘ম্যাজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (MIS)’ তৈরি করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী এবং প্রধান তথ্য অফিসার নিজামুল কবীর।

-সুত্রঃবি এস এস

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

লেনদেনের শীর্ষ দশে যেসব শেয়ার

লেনদেনের শীর্ষ দশে যেসব শেয়ার

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২১ জুলাই) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন ছিল কিছুটা চাঙা। এই দিনে লেনদেনের... বিস্তারিত