নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে ডিসি, এসপি ও ওসিদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১২ ১৪:২৩:০৭
নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে ডিসি, এসপি ও ওসিদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনা
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা প্রদানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সুষ্ঠু নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের শান্তি ও সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সভায় যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে:

নিরপেক্ষতা: ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

দায়িত্বে বিরতি: গত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের আসন্ন নির্বাচনে যথাসম্ভব দায়িত্ব প্রদান করা থেকে বিরত রাখা।

নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি: ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা।

প্রশিক্ষণ ও নিরাপত্তা জোরদার

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে একটি ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে সব ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে।

আনসার-ভিডিপি: ‘প্রাক নির্বাচনী প্রশিক্ষণ’ শিরোনামে প্রায় ৫ লাখ ৮৫ হাজার আনসার-ভিডিপি সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাদের মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জন অস্ত্রসহ নিয়োজিত থাকবেন।

বিজিবি ও সশস্ত্র বাহিনী: এবারের নির্বাচনে বিজিবির ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ইতোমধ্যে ৬০% নির্বাচনি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।

বর্তমান পরিস্থিতি

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল এখন অনেক কমে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি এখন শান্ত ও ভালো রয়েছে। তিনি জানান, ফ্যাসিস্ট চক্রের সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হওয়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে এবং মাদকের গডফাদারদের আটক করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১২ ১০:৩১:৪০
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকা বিশ্বের ১২৭টি শহরের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার (IQAir)-এর তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৯টায় ঢাকার গড় বায়ুমান সূচক (AQI) ছিল ১৬৪, যা স্বাস্থ্যের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ। এই তালিকায় আজ প্রথম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের শহর লাহোর (AQI: ১৯৩)।

দূষণের কারণ ও উদ্বেগ

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজধানীর দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। বৃষ্টি হলে কিছু দিনের জন্য দূষণ কমলেও, তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

গতকাল শনিবার ঢাকায় ৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল, যা দূষণ কমাতে সহায়ক ছিল। তবে আজকের মতো বৃষ্টিহীন দিনে দূষণের মাত্রা দ্রুত বাড়ে। পরিসংখ্যান বলছে, জুলাই মাসে দূষণ তুলনামূলক কম থাকে, তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করে। চলতি অক্টোবরের শুরু থেকেই ঢাকার দূষণ পুনরায় আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।


মরণযাত্রায় শীর্ষে বাংলাদেশ,তবুও কমছে না অবৈধ অনুপ্রবেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১২ ১০:২৫:৫৩
মরণযাত্রায় শীর্ষে বাংলাদেশ,তবুও কমছে না অবৈধ অনুপ্রবেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

ভাঙাচোরা নৌকায় ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা। চলতি বছরে অবৈধ পথে ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসনের হার ২২ শতাংশ কমলেও, এই পথ পাড়ি দিয়ে প্রবেশ করেছেন মোট ৫০ হাজার ৮৫০ জন, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। শুধু চলতি মাসেই এই রুটে প্রবেশ করেছেন ৮ হাজার ৪৬ জন। এই রুটে ইউরোপে প্রবেশকারীদের অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক।

ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক রুট

ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রনটেক্সের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ জন। এর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশ, মিসর ও মরক্কোর নাগরিকরা।

মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট: কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় সাগরপথ দিয়েই এখনো সবচেয়ে বেশি অভিবাসী ইতালিতে প্রবেশ করে। পুরো ইউরোপে মোট অবৈধ প্রবেশকারীদের প্রায় ৪০ শতাংশ এই রুট দিয়ে প্রবেশ করেছে।

অন্যান্য রুট: পশ্চিম আফ্রিকান রুট দিয়ে অবৈধ প্রবেশ ৫৮ শতাংশ এবং পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে ৪৭ শতাংশ কমেছে। তবে পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অনিয়মিত প্রবেশ বেড়েছে ২৮ শতাংশ।

ইংলিশ চ্যানেল: ফ্রান্স হয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৩০০ জন নাগরিক যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন।

মানবিক সংকট

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, অবৈধ পথে ইউরোপ প্রবেশের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মানবিক সংকট এখনো গভীর। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর এই সংখ্যা প্রমাণ করে, সহজে ইউরোপ প্রবেশের জন্য মানুষ এখনও জীবনের ঝুঁকি নিতেও দ্বিধা করছে না।


৪ বার সংশোধন হলো ট্রাইব্যুনাল আইন, যুক্ত হলো ‘নির্বাচনী অযোগ্যতা’ ধারা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১২ ১০:১৬:১৪
৪ বার সংশোধন হলো ট্রাইব্যুনাল আইন, যুক্ত হলো ‘নির্বাচনী অযোগ্যতা’ ধারা
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বেশ কিছু সংশোধনী এনেছে। গত বছর ১৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল নতুন করে বিচারকাজ শুরু করার পর এক বছরে আইনটিতে চারবার পরিবর্তন আনা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এসব সংশোধনী আইনটিকে সময়োপযোগী করার জন্য আনা হয়েছে।

চতুর্থ সংশোধনী: নির্বাচনী অযোগ্যতা

আইনে সর্বশেষ ৬ অক্টোবর রাতে চতুর্থ সংশোধনীর অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এই সংশোধনী অনুযায়ী:

নির্বাচনী অযোগ্যতা: মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলেই, তিনি আর নির্বাচন করার যোগ্য হবেন না।

অন্যান্য পদ: জনপ্রতিনিধি হয়ে থাকলে সেই পদে থাকার যোগ্যতা হারাবেন। এছাড়া কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা প্রজাতন্ত্রের (সরকারের) কোনো সেবায় নিয়োগ পাওয়ারও অযোগ্য হবেন।

এই সংশোধনীর ফলে গত বছর ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনারও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সব সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গেজেটে বলা হয়েছে, আইনটির ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দেওয়া হয়েছে।

প্রথম তিন সংশোধনী ও নতুন ধারা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে প্রথম সংশোধনী আনা হয় নভেম্বরে, যেখানে বেশ কিছু নতুন ধারা যুক্ত করা হয়:

আদালতের আওতা: বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত অপরাধও ট্রাইব্যুনালে আমলে নেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়।

বিচারের আওতা: সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবিসহ যেকোনো বাহিনীর বিচার করা যাবে।

অপরাধের সংজ্ঞা: আক্রমণ, নিপীড়ন, গুম, যৌনদাসী, জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি, জোরপূর্বক গর্ভধারণ ও জোরপূর্বক বন্ধ্য করাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

ভিডিও সাক্ষ্য: ট্রাইব্যুনাল চাইলে ভার্চুয়াল শুনানির আয়োজন করতে পারবেন এবং বিদেশি আইনজীবীকে বিচারকাজে অংশ নিতে দিতে পারবেন।

দ্বিতীয় দফা পরিবর্তন আনা হয় চলতি বছর ১০ ফেব্রুয়ারি, যেখানে আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় ছয় সপ্তাহ থেকে কমিয়ে তিন সপ্তাহ করা হয়। এই সংশোধনীতে ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য অভিযুক্তের সম্পদ জব্দ করার ক্ষমতাও ট্রাইব্যুনালকে দেওয়া হয়।

তৃতীয় দফা সংশোধন করা হয় ১০ মে, যার মাধ্যমে রাজনৈতিক দল ও এর সঙ্গে সংযুক্ত সংগঠন বা ব্যক্তিগোষ্ঠীকে বিচারের আওতায় আনার বিধান যুক্ত করা হয়।


হজ নিবন্ধনে নেই আশানুরূপ সাড়া, কোটা খালি থাকার শঙ্কা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ২১:৫৫:৫২
হজ নিবন্ধনে নেই আশানুরূপ সাড়া, কোটা খালি থাকার শঙ্কা
ছবিঃ সংগৃহীত

চলতি বছরের হজ কোটার একটি বড় অংশ খালি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ হজ নিবন্ধনের সময়সীমা শেষ হতে আর মাত্র একদিন বাকি থাকলেও আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। চলতি বছর বাংলাদেশের হজের মোট কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন।

হজ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, শনিবার (১১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ হাজার ৯১২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৯ হাজার ১০৫ জনসহ মোট ২২ হাজার ১৭ হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। সৌদি সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামীকাল রবিবার (১২ অক্টোবর) হজ নিবন্ধনের শেষ দিন।

এজেন্সিগুলোর প্রতি মন্ত্রণালয়ের তাগিদ

এই পরিস্থিতিতে দ্রুত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হজ এজেন্সিগুলোকে তাগিদ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে হজযাত্রীদের সুবিধার্থে শনিবারও হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকের শাখাগুলো খোলা রাখা হয়েছিল।

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে হজ এজেন্সিগুলোর কাছে পাঠানো এক তাগিদপত্রে জানানো হয়েছে:

নিবন্ধন না করা এজেন্সি: তালিকাভুক্ত ৩২৯টি এজেন্সিকে ন্যূনতম ৪৬ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করতে হবে। কোনো এজেন্সি যৌক্তিক কারণ ছাড়া এই শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রাক-নিবন্ধন না করা: একইভাবে, ৪৮টি এজেন্সি কোনো প্রাক-নিবন্ধন ও প্রাথমিক নিবন্ধনই করেনি বলেও জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগ্রহ কমের কারণ

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, “অনেকে সম্প্রতি ওমরাহ পালন করায় হজে আগ্রহ কম দেখাচ্ছেন। অনেকের ধারণা, ওমরাহ করলে আর হজ করার প্রয়োজন নেই—এই ভুল ধারণার কারণেও সাড়া কম।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, শেষ মুহূর্তে নিবন্ধনের সংখ্যা বাড়বে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ২৬ মে সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।


জনগণের সুবিধার জন্য জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের স্থান ও সময় পরিবর্তন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ২১:০৪:২৯
জনগণের সুবিধার জন্য জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের স্থান ও সময় পরিবর্তন
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ১৫ অক্টোবর বুধবারের পরিবর্তে ১৭ অক্টোবর শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আজ শনিবার (১১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সাংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা

বৈঠক শেষে কমিশন সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানান, জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আগ্রহী জনগণের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে অনুষ্ঠানটি ১৭ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে কমিশনের পক্ষ থেকে ১৫ অক্টোবর বুধবার বিকেলে সনদ স্বাক্ষরিত হবে বলে জানানো হয়েছিল।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।


১৫ জন সেনা কর্মকর্তা সেনাসদরের হেফাজতে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৯:২৩:৫৫
১৫ জন সেনা কর্মকর্তা সেনাসদরের হেফাজতে
ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় অভিযুক্ত ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সেনাসদর। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন মেজর জেনারেলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসের মেস আলফাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।

হেফাজত ও নিখোঁজ

মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, তিনটি মামলায় মোট ২৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অবসরে আছেন ৯ জন, একজন লিয়েন পিওরিয়ডে (LPR) এবং বর্তমানে কর্মরত আছেন ১৫ জন।

হেফাজতে: ৮ অক্টোবর চার্জশিট দাখিলের পর এলপিআর ও সার্ভিসে থাকা মোট ১৬ জনকে সেনাসদরে সংযুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি ১৫ জন সেনাসদরে এসেছেন এবং তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন।

নিখোঁজ: মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদকে ৯ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।


আমার পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে তারা:শহিদুল আলম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৫:৪২:১৯
আমার পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে তারা:শহিদুল আলম
ছবিঃ সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাওয়া নৌবহর ফ্রিডম ফ্লোটিলা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাকে স্বাগত জানাতে আসা শুভাকাঙ্ক্ষীরা এ সময় ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে স্লোগান দেন।

‘সবচেয়ে বড় অপমান’

বিমানবন্দরে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটকের অভিজ্ঞতা নিয়ে শহিদুল আলম বলেন, তিনি তার ওপর শারীরিক নির্যাতনের বিষয়ে কিছু বলতে চান না। তবে:

“সবচেয়ে বেশি অপমানিত বোধ করেছি যখন বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেখে তা তারা (ইসরায়েলি বাহিনী) মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এটা আমাকে ভীষণভাবে আক্রান্ত করেছে। এ অপমানের বিচার আমাদের আদায় করে নিতে হবে।”

সংগ্রাম চলবে মুক্তির জন্য

কঠিন সময় পার করার কথা জানিয়ে শহিদুল আলম বলেন, “আমাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু গাজাবাসীর ওপর যা হয়েছে তার তুলনায় আমাদেরটা কিছুই না।” তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন:

“যতক্ষণ ফিলিস্তিন মুক্ত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলতে হবে। গাজার মানুষ এখনও আক্রান্ত। এখনও তাদের ওপর নির্যাতন চলছে এবং সেটা যতক্ষণ পর্যন্ত শেষ না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাজ শেষ হয়নি।”

তিনি বলেন, তার মুক্তি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের সরকার ও টার্কিশ এয়ারলাইন্সের সহযোগিতার কারণে। তিনি মনে করেন, আরও হাজারও ফ্লোটিলা গাজায় যাওয়া দরকার।


উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিটের দরকার নেই, জাতির প্রয়োজন: আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৪:০৫:৪২
উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিটের দরকার নেই, জাতির প্রয়োজন: আসিফ নজরুল
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। পুরোনো ছবি

সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকে ‘সেফ এক্সিট’-এর (নিরাপদ প্রস্থান) কথা বললেও উপদেষ্টাদের জন্য এমন কোনো প্রয়োজন নেই। বরং ভয়াবহ ও অসুস্থ রাষ্ট্রকাঠামো থেকে এই জাতিরই সেফ এক্সিট হওয়া প্রয়োজন।

শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাতির সেফ এক্সিট প্রয়োজন কেন?

আসিফ নজরুল বলেন, “উপদেষ্টা হিসেবে আমাদের কারও সেফ এক্সিটের দরকার নেই। কিন্তু এই রাষ্ট্রযন্ত্র, যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে, ব্যাংক লুট হয়ে সাধারণ মানুষের আমানত উধাও হয়ে যায়—সেখান থেকে আমাদের জাতিরই সেফ এক্সিট প্রয়োজন।”

তিনি আরও বলেন, গত ৫৫ বছরে যে দুঃশাসনের চিত্র আমরা দেখেছি, তা থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে সামনে আরও ভয়াবহতা অপেক্ষা করছে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও মানবাধিকারকর্মীরা।


শিক্ষা ও সাহিত্যের আলোকবর্তিকা নিভে গেল—চলে গেলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১০ ২৩:৪৩:৪৮
শিক্ষা ও সাহিত্যের আলোকবর্তিকা নিভে গেল—চলে গেলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

বাংলাদেশের সাহিত্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতির আকাশে এক বিশাল নক্ষত্র নিভে গেল। দেশের প্রজ্ঞা ও মানবিকতার প্রতীক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই। শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। রেখে গেছেন স্ত্রী, এক পুত্র, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য ছাত্রছাত্রী এবং অগণিত ভক্ত-গুণগ্রাহী।

তাঁর প্রয়াণের সঙ্গে যেন শেষ হলো এক প্রজ্ঞাপূর্ণ যুগ—যেখানে জ্ঞানের সঙ্গে মানবিকতার, সাহিত্যের সঙ্গে যুক্তির, শিল্পের সঙ্গে সমাজবোধের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জীবন ও কর্মে।

৩ অক্টোবর সকালটা ছিল তাঁর জীবনের শেষ কর্মমুখর সকাল। ধানমন্ডি থেকে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) যাচ্ছিলেন নিয়মিত ক্লাস নিতে। হঠাৎ গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চালক তাঁকে দ্রুত পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলামসহ তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা সেখানে ছুটে যান এবং তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। চিকিৎসকেরা জানান—তিনি ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’-এর শিকার হয়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর হৃদযন্ত্রে স্টেন্ট বসানো হয়।

তবে শনিবার থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অক্সিজেন লেভেল নেমে যায়, ফুসফুসে পানি জমে, অবশেষে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা, পরিবার ও শিক্ষার্থীদের অগণিত প্রার্থনা সত্ত্বেও তিনি আর ফিরে আসেননি। শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

তাঁর মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগতে নেমে আসে গভীর শোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী, প্রকাশক, পাঠক—সবাই যেন একসঙ্গে নির্বাক হয়ে যান।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন,

“তিনি ছিলেন আধুনিক মননসম্পন্ন এক শিক্ষক, যিনি সাহিত্যের পাশাপাশি মানুষকে চিনতে শিখিয়েছেন। তাঁর কথায় ও লেখায় এক অদ্ভুত স্বচ্ছতা ও সত্যের সাহস ছিল।”

ল্যাবএইড হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ফখরুল আলম, কায়সার হক, কবি দিলারা হাফিজ, ফরিদ কবির, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, কথাসাহিত্যিক ও চিকিৎসক মোহিত কামাল, এবং আরও অনেকে। তাঁরা বললেন, “মনজুরুল ভাই ছিলেন আমাদের সাহিত্য-শিক্ষা মহলের প্রাণ। তাঁর চলে যাওয়া মানে এক শূন্যতার সূচনা।”

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু বলেন,

“অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর পর বেঙ্গলের বহু কাজে মনজুরুল ইসলাম নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর চলে যাওয়া আমাদের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে অপরিমেয় ক্ষতি।”

শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে বারডেমের হিমঘরে নেওয়া হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে তাঁর সহকর্মী, ছাত্রছাত্রী ও ভক্তরা শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। বেলা ১১টায় মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, যেখানে সর্বস্তরের মানুষ জানাবে শ্রদ্ধা। বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তাঁকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে—যেখানে ঘুমিয়ে আছেন তাঁরই মতো এই দেশের চিন্তার স্থপতিরা।

জীবনের পথ ও সাহিত্যকীর্তি

১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনের সিংহভাগ কাটিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। অবসরের পরও তিনি একাডেমিয়া ছাড়েননি—ইউল্যাব-এ যোগ দেন নতুন প্রজন্মকে সাহিত্যের আলোয় গড়ে তুলতে।

তিনি বাংলা সাহিত্যে ‘জাদুবাস্তবতা’র এক নতুন ধারা প্রতিষ্ঠা করেন—যেখানে বাস্তবতার গণ্ডি পেরিয়ে মানবমনের গভীর স্তরগুলো উন্মোচিত হয় কল্পনা ও প্রতীকী বয়ানে। তাঁর ‘প্রেম ও প্রার্থনার গল্প’ বইটি ২০০৫ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা সৃজনশীল বইয়ের পুরস্কার পায়। ১৯৯৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক অর্জন করেন। সাহিত্য, অনুবাদ, নন্দনতত্ত্ব ও প্রবন্ধচর্চায় তাঁর কাজ বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক পরিসরে এক নতুন পরিচিতি।

এক শিক্ষক, এক মানবিক আলোকস্তম্ভ

শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি ছিলেন শুধু শিক্ষক নন—এক প্রেরণা, এক মেন্টর, যিনি শেখাতেন চিন্তা করতে, প্রশ্ন করতে, সত্যকে ভালোবাসতে। ক্লাসরুমে তাঁর কণ্ঠে সাহিত্য মানে ছিল মানবতার পাঠ, আর জীবনের প্রতিটি ব্যাখ্যা একেকটি গল্প হয়ে ফুটে উঠত তাঁর ব্যাখ্যায়।

তিনি ছিলেন এক মানবিক বুদ্ধিজীবী—যিনি ক্ষমতার সামনে সত্য উচ্চারণে দ্বিধা করতেন না, কিন্তু কারও প্রতি ঘৃণাও পোষণ করতেন না। তাঁর জীবন ছিল এক আলোকিত যাত্রা—যেখানে সাহিত্য, শিক্ষা, সততা ও সৌন্দর্য মিশে ছিল একাকার।

বিদায় এক আলোকিত আত্মাকে

দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি মহল আজ শূন্য হয়ে গেল। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আমাদের ছেড়ে গেছেন, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া আলোকরেখা এখনো অনুপ্রেরণা হয়ে জ্বলে থাকবে প্রতিটি পাঠকের, প্রতিটি ছাত্রের, প্রতিটি মুক্তমনের হৃদয়ে।

তিনি ছিলেন শিক্ষক, চিন্তক, লেখক—সবচেয়ে বড় কথা, তিনি ছিলেন এক আলোকিত মানুষ।

পাঠকের মতামত: