নামাজের সময়সূচি
১২ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি

আগামীকাল রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখের জন্য ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য প্রধান বিভাগের দৈনিক নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো। (এই সময়সূচি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ইসলামিক ক্যালেন্ডার থেকে সংগৃহীত। স্থানীয় তারতম্যের জন্য ২/১ মিনিট ভিন্ন হতে পারে)।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সময়সূচি
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ফজর ০৪টা ৩৯ মিনিটে (AM), সূর্যোদয় ০৫টা ৫৪ মিনিটে (AM), জোহর ১১টা ৪৭ মিনিটে (AM), আসর ০৪টা ০০ মিনিটে (PM), মাগরিব ০৫টা ৩৮ মিনিটে (PM), এবং ইশা ০৬টা ৫৩ মিনিটে (PM)।
অন্যান্য প্রধান বিভাগীয় শহরের আনুমানিক সময়সূচি
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোর সময়সূচিতে সামান্য পার্থক্য আসে। ১২ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের জন্য প্রধান বিভাগগুলোর নামাজের আনুমানিক সময়সূচি নিম্নরূপ:
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ফজর ০৪টা ৩৫ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৪৯ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ০৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৭ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫২ মিনিটে।
খুলনা: খুলনায় ফজর ০৪টা ৪৩ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৬ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫২ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৫ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৪ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৯ মিনিটে।
রাজশাহী: রাজশাহীতে ফজর ০৪টা ৪৪ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৮ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫৪ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৮ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৬ মিনিটে এবং ইশা ০৭টা ০২ মিনিটে।
সিলেট: সিলেটে ফজর ০৪টা ৩৫ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৪৬ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৪ মিনিটে, আসর ০৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৪ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৪৯ মিনিটে।
রংপুর: রংপুরে ফজর ০৪টা ৪১ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৫ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫১ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৫ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৩ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৯ মিনিটে।
বরিশাল: বরিশালে ফজর ০৪টা ৪১ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫০ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৩ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪১ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৬ মিনিটে।
যে ভবিষ্যদ্বাণী কাঁপিয়ে দেবে মুসলিম বিশ্ব: ঈমানশূন্য পৃথিবীতে যেভাবে ধ্বংস হবে কাবা!
বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ের স্পন্দন ও কিবলা, পবিত্র কাবা ঘর, এক ভয়াবহ সময়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণীতে উল্লেখ রয়েছে। ধর্মীয় গ্রন্থ ও হাদিসের আলোকে, এই মর্মান্তিক ঘটনাটি মহাপ্রলয় বা কিয়ামতের চূড়ান্ত লক্ষণগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়, যা ঘটবে এমন এক যুগে যখন পৃথিবী থেকে ঈমান প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, কিয়ামতের বড় বড় নিদর্শনগুলো, যেমন ইমাম মাহদীর আত্মপ্রকাশ, দাজ্জালের উত্থান এবং হযরত ঈসা (আ.)-এর আকাশ থেকে অবতরণের মতো ঘটনাগুলো ঘটে যাওয়ার পরই এই ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হবে। সেই সময়ে পৃথিবীতে ইসলামের প্রভাব এতটাই ক্ষীণ হয়ে পড়বে যে, ইসলাম শুধু নামেই টিকে থাকবে এবং পবিত্র কোরআনের শিক্ষা মানুষের আমল থেকে মুছে যাবে।
বর্ণনায় এসেছে, সেই অন্ধকার যুগে মক্কা ও মদিনা নগরী পুণ্যবান ও ঈমানদার মানুষশূন্য হয়ে পড়বে। হজ ও তাওয়াফ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাবা ঘর কেবলই একটি প্রাচীন স্থাপনা হিসেবে পরিগণিত হবে, তার আধ্যাত্মিক গুরুত্ব মানুষ ভুলে যাবে।
হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, এই ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে ‘জুসুয়াকাতাইন’ নামক এক আবিসিনিয়ান (বর্তমান ইথিওপিয়া) ব্যক্তি। তাকে সরু পায়ের অধিকারী ও কৃষ্ণ বর্ণের একজন ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সে তার বাহিনী নিয়ে এসে কাবার প্রতিটি পাথর ও অলংকার খুলে ফেলবে এবং একে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবে। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, সেই সময় পৃথিবীতে এমন কোনো মুসলিম উপস্থিত থাকবে না, যে তাকে বাধা দিতে এগিয়ে আসবে।
ইতিহাসে কাবা ঘর একাধিকবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রতিবারই মুসলিমদের ভালোবাসা ও ঐক্যের ফলে তা পুনর্নির্মিত হয়েছে। কিন্তু শেষ জামানার এই ধ্বংসলীলা হবে চূড়ান্ত, কারণ এরপর এটি পুনর্নির্মাণের মতো কোনো ঈমানি শক্তি বা ঐক্য পৃথিবীতে অবশিষ্ট থাকবে না।
এই ঘটনার পরই মহাবিশ্বের চূড়ান্ত পর্ব, যেমন সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হওয়া এবং মহাপ্রলয়ের চূড়ান্ত ঘণ্টা বেজে ওঠার মতো নিদর্শনগুলো প্রকাশ পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কবরের চারপাশে কি ফুলগাছ লাগানো যাবে? জেনে নিন শরীয়তের বিধান
কবরের চারপাশে ফুলগাছ লাগানো কি জায়েজ? এটি একটি সাধারণ ধর্মীয় প্রশ্ন, যা নিয়ে অনেকের মনে দ্বিধা রয়েছে। এই বিষয়ে ইসলামের মৌলিক বিধান এবং প্রচলিত কুসংস্কার সম্পর্কে নিচে আলোকপাত করা হলো।
কবরের পাশে ফুলগাছ ও ফুল দেওয়ার বিধান
ফুকাহায়ে কেরাম (ইসলামী আইনজ্ঞরা) বলছেন, কবরের চতুর্দিকে ফুলগাছ লাগানো মৌলিকভাবে নিষেধ নয়। তবে যদি এর উদ্দেশ্য হয় মৃতব্যক্তির প্রতি আলাদা সম্মান প্রদর্শন, তাহলে তা শিরকের সাদৃশ্য হওয়ার কারণে নিষেধ।
ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা (আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটির ফতওয়াসমগ্র) তে এই বিষয়ে কঠোরতা রয়েছে। ফতোয়া নং ৪০২৩-এ বলা হয়েছে: শহীদদের কবরে কিংবা অন্যদের কবরে ফুল দেওয়া এমন এক বেদআত (ইসলামে নতুন উদ্ভাবিত প্রথা) যা আবিষ্কৃত করেছে এমন কিছু মুসলিম রাষ্ট্র, যাদের বন্ধন অমুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে দৃঢ়। কাফেররা তাদের মৃতদের সঙ্গে যা করে, এর মাধ্যমে তারা তাদের অনুকরণ করে। এটি শরিয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ, কেননা, এতে কাফেরদের সাদৃশ্যতা গ্রহণ বিদ্যমান।
ফল-ফুল ব্যবহার নিয়ে কুসংস্কার
আমাদের দেশের অনেক অঞ্চলে কবরস্থানের গাছের ফল-ফলের ব্যাপারে কিছু কুসংস্কার প্রচলিত আছে। অনেকে মনে করেন, কবরস্থানের গাছের ফুল-ফল ব্যবহার করলে বা খেলে কোনো অঘটন ঘটতে পারে বা শারীরিক-মানসিক ক্ষতি হতে পারে।
ইসলামের দৃষ্টিতে এই সব ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। কবরস্থানের গাছের ফুল ও ফল অন্য সব জায়গার গাছের ফুল-ফলের মতোই ব্যবহার করা যাবে এবং খাওয়া যাবে। তাতে ক্ষতি হওয়ার কোনো কারণ নেই।
ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রাঃ): জীবন, নেতৃত্ব ও উত্তরাধিকার ভূমিকা
ইতিহাসে এমন কিছু ব্যক্তিত্ব আছেন, যাদের জীবন ও কর্ম কেবল একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কেই নয়, বরং সমগ্র মানবজাতিকেই প্রভাবিত করেছে। হজরত আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তাঁদেরই একজন। তিনি শুধু ইসলামের প্রথম খলিফা ছিলেন না, ছিলেন মানবিকতা, সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও সত্যনিষ্ঠার এক অনন্য প্রতীক।
নবী করিম হজরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বাধিক ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিশ্বাসভাজন হিসেবে তিনি ইসলামী ইতিহাসের সূচনালগ্ন থেকেই অপরিসীম ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর নাম উচ্চারণ হলেই মনে পড়ে “সিদ্দিক” — অর্থাৎ যিনি সত্যকে স্বীকৃতি দেন ও বিন্দুমাত্র সন্দেহ করেন না।
হজরত আবু বকর (রাঃ)-এর জীবন একদিকে ইসলামী সমাজের প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশের সূচনা, অন্যদিকে নেতৃত্ব ও শাসনব্যবস্থার এক নৈতিক দৃষ্টান্ত। নবীজির (সাঃ) মৃত্যুর পর মুসলিম উম্মাহ যে গভীর সংকটে পড়েছিল, আবু বকর (রাঃ) সেই মুহূর্তে নেতৃত্ব গ্রহণ করে প্রমাণ করেছিলেন, সত্যিকারের খলিফা কেবল রাজনৈতিক নেতা নন, বরং বিশ্বাস, সাহস ও প্রজ্ঞার প্রতিমূর্তি।
জন্ম ও বংশপরিচয়
হজরত আবু বকর (রাঃ) জন্মগ্রহণ করেন ৫৭৩ খ্রিস্টাব্দে মক্কার কুরাইশ বংশের বনু তাইম গোত্রে। তাঁর পিতা ছিলেন আবু কুহাফা উসমান ইবনে আমির, এবং মাতা সলমা বিনতে সাখার, যিনি “উম্মুল খাইর” নামে পরিচিত ছিলেন। এই পরিবার কুরাইশ সমাজে মর্যাদাসম্পন্ন হলেও তুলনামূলকভাবে শান্ত ও ধর্মভীরু ছিল।
তাঁর পূর্ণ নাম: আব্দুল্লাহ ইবনে উসমান ইবনে আমির ইবনে আমর ইবনে কা‘ব ইবনে সা‘দ ইবনে তাইম ইবনে মুররাহ ইবনে কা‘ব ইবনে লুয়াই ইবনে গালিব আল-কুরাইশি। “আবু বকর” উপাধি তাঁর প্রিয় ডাকনাম, আর “সিদ্দিক” উপাধি প্রদান করেন নবী করিম (সাঃ) স্বয়ং, তাঁর অটল বিশ্বাস ও নির্ভীক আস্থার কারণে। শৈশবে আবু বকর ছিলেন কোমল, বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীল। কিশোর বয়স থেকেই তাঁর মধ্যে সততা ও নম্রতার প্রতিফলন দেখা যায়। তিনি মূর্তিপূজায় বিশ্বাস করতেন না এবং একেশ্বরবাদে আস্থাশীল ছিলেন।
ইসলাম গ্রহণ
যখন নবী করিম (সাঃ) আল্লাহর কাছ থেকে নবুয়ত লাভ করে মক্কায় তাওহীদের দাওয়াত প্রচার শুরু করেন, তখন প্রথমদিকে ইসলাম গ্রহণকারীদের সংখ্যা ছিল অতি অল্প। হজরত খদিজা (রাঃ), আলী (রাঃ), জায়েদ ইবনে হারিসা (রাঃ)-এর পর প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন আবু বকর (রাঃ)। ইতিহাসে বর্ণিত আছে, যখন নবীজির (সাঃ) নবুয়তের খবর তিনি শুনলেন, তখন এক মুহূর্ত দেরি না করে নবীর কাছে গেলেন। নবী করিম (সাঃ) তাঁকে আল্লাহর একত্ববাদ, আখিরাত ও ন্যায়ের দাওয়াত দেন। আবু বকর বিনা দ্বিধায় ইসলাম গ্রহণ করেন এবং বলেন, “আমি তোমার মুখ থেকে যা শুনেছি, তার সবই সত্য। আমি কোনো প্রমাণ চাই না, কারণ আমি তোমাকে কখনো মিথ্যা বলতে দেখিনি।”
এই অকুণ্ঠ বিশ্বাসই তাঁকে “আস-সিদ্দিক” উপাধি এনে দেয়। পরবর্তীতে নবী করিম (সাঃ)-এর মেরাজের সংবাদে যখন অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করে, তখন আবু বকর (রাঃ) দ্বিধাহীনভাবে বলেন, “যদি মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন যে তিনি আসমানে গেছেন, তবে অবশ্যই তা সত্য।” এভাবে তিনি ঈমানের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
ইসলাম প্রচারে ভূমিকা
ইসলাম গ্রহণের পর আবু বকর (রাঃ) কেবল নিজের জন্যই তা সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি তাঁর বন্ধু, আত্মীয় ও পরিচিতদের ইসলাম গ্রহণে আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করেন অনেক বিখ্যাত সাহাবি—যেমন উসমান ইবনে আফফান, আবদুর রহমান ইবনে আউফ, তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ, সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস প্রমুখ।
এ ছাড়া দাসপ্রথা বিরোধী অবস্থান নেওয়ার ক্ষেত্রে আবু বকর (রাঃ)-এর অবদান অসাধারণ। তিনি তাঁর নিজের সম্পদ থেকে বহু দাস-দাসীকে মুক্ত করেছেন, যাদের মধ্যে হযরত বিলাল (রাঃ) ছিলেন অন্যতম। বিলাল (রাঃ)-কে যখন কুফরি ত্যাগ না করার অপরাধে গরম মরুভূমিতে শায়িত করে নির্যাতন করা হচ্ছিল, তখন আবু বকর (রাঃ) নিজের অর্থ দিয়ে তাঁকে কিনে নিয়ে মুক্তি দেন। এই কাজ শুধু মানবিকতার উদাহরণই নয়, বরং সামাজিক ন্যায়বিচারের এক জাগ্রত দৃষ্টান্ত।
নবী করিম (সাঃ)-এর সহচর ও হিজরত
আবু বকর (রাঃ) নবী করিম (সাঃ)-এর জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে উপস্থিত ছিলেন। মক্কায় নির্যাতনের সময় থেকে শুরু করে মদিনায় ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত তিনি ছিলেন নবীর ছায়াসঙ্গী। হিজরতের সময় সাওর গুহায় আশ্রয় নেওয়ার ঘটনাটি ইসলামী ইতিহাসের এক চিরস্মরণীয় অধ্যায়।নবী (সাঃ) ও আবু বকর (রাঃ) তিনদিন গুহায় অবস্থান করেন। কুরআনের সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত ৪০-এ আল্লাহ তাআলা বলেন— “যখন তারা উভয়েই গুহায় ছিল, এবং সে (মুহাম্মদ) তার সঙ্গীকে বলেছিল: ‘ভয় করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন।’” এই আয়াতে আবু বকর (রাঃ)-কে “গুহার দ্বিতীয় ব্যক্তি” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা তাঁর মর্যাদাকে ইসলামী ইতিহাসে চিরস্থায়ী করেছে।
মদিনায় অবদান ও যুদ্ধসমূহে অংশগ্রহণ
মদিনায় ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর, আবু বকর (রাঃ) নবীর (সাঃ) অন্যতম প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ইসলামী সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো গঠনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
তিনি প্রায় সকল প্রধান যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করেছেন—
বদর যুদ্ধ (৬২৪ খ্রিস্টাব্দ): আবু বকর (রাঃ) নবীর (সাঃ) তাবুর প্রহরায় নিযুক্ত ছিলেন। এই যুদ্ধে তাঁর দৃঢ়তা ও আনুগত্য মুসলমানদের অনুপ্রেরণা দেয়।
উহুদ যুদ্ধ (৬২৫ খ্রিস্টাব্দ: নবীজির পাশে থেকে তিনি শত্রুর মোকাবিলায় অবিচল থাকেন।
খন্দক যুদ্ধ (৬২৭ খ্রিস্টাব্দ): শহরের দক্ষিণ অংশ রক্ষার দায়িত্ব ছিল তাঁর অধীনে। তিনি নির্ভীকভাবে প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করেন।
হুদায়বিয়া চুক্তি (৬২৮ খ্রিস্টাব্দ): তিনি নবী করিম (সাঃ)-এর সঙ্গে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং শান্তিচুক্তির সাক্ষী ছিলেন।
মক্কা বিজয় (৬৩০ খ্রিস্টাব্দ): তিনি নবীর (সাঃ) সঙ্গে মক্কা বিজয়ে অংশ নেন। বিজয়ের পর তিনি ইসলামী দাওয়াতের প্রচারে অংশ নেন এবং প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা ও উদারতার নীতি অনুসরণ করেন।
তাবুক অভিযান (৬৩০ খ্রিস্টাব্দ): এই অভিযানে যখন নবী করিম (সাঃ) মুসলমানদের আর্থিক সহায়তা চাইলেন, আবু বকর (রাঃ) তাঁর সমস্ত সম্পদ দান করেন। নবীজির প্রশ্নে তিনি উত্তর দেন, “আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকেই আমার পরিবারের জন্য রেখে এসেছি।” এই বক্তব্য মুসলিম ইতিহাসে আত্মত্যাগের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে অমর হয়ে আছে।
নবী করিম (সাঃ)-এর মৃত্যু ও মুসলমানদের সংকটকাল
নবী করিম (সাঃ)-এর মৃত্যুর মুহূর্ত ছিল মুসলিম সমাজের জন্য এক গভীর ধাক্কা। অনেক সাহাবি তা বিশ্বাস করতে পারেননি। উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) ক্রোধে তরবারি উঁচিয়ে বলেছিলেন, “যে বলবে মুহাম্মদ (সাঃ) মারা গেছেন, আমি তার ঘাড় উড়িয়ে দেব।” এই সময়ে আবু বকর (রাঃ) মসজিদে প্রবেশ করে জনসম্মুখে কুরআনের আয়াত পাঠ করেন— “মুহাম্মদ তো একজন রসূল। তাঁর আগে অনেক রসূল চলে গেছেন। তবে কি তিনি মারা গেলে বা নিহত হলে তোমরা পিছনে ফিরে যাবে?” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১৪৪)। এই ঘোষণায় মুসলিম সমাজে বাস্তবতার স্বীকৃতি আসে এবং আবু বকর (রাঃ)-এর নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রমাণিত হয়।
খিলাফত লাভ ও শাসনব্যবস্থা
নবীজির (সাঃ) মৃত্যুর পর, সাকিফা বানু সাঈদা-এ এক ঐতিহাসিক বৈঠক বসে। সেখানে মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা হয়। অবশেষে সর্বসম্মতিক্রমে আবু বকর (রাঃ)-কে ইসলামের প্রথম খলিফা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
তিনি মুসলমানদের উদ্দেশ্যে প্রথম ভাষণে বলেন—
“আমি তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম নই, তবে আমাকে তোমাদের নেতা করা হয়েছে। আমি যদি সঠিক পথে চলি, তবে আমাকে সহযোগিতা করো; যদি বিপথে যাই, তবে আমাকে সংশোধন করো। সত্যকে গ্রহণ করো, মিথ্যা থেকে দূরে থাকো।” এই বক্তৃতা তাঁর নেতৃত্বের দর্শন প্রকাশ করে—ন্যায়, জবাবদিহিতা ও জনগণের অংশগ্রহণ।
রিদ্দা যুদ্ধ ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ
খিলাফতের শুরুর বছরগুলো ছিল অশান্ত। নবীজির (সাঃ) মৃত্যুর পর আরবের বিভিন্ন গোত্র নবুয়তের দাবি করে বিদ্রোহ শুরু করে। কেউ কেউ জাকাত দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
আবু বকর (রাঃ) দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দেন— “যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মানে, তারা যদি জাকাত না দেয়, আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব।” এই বিদ্রোহ দমন অভিযানে খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রাঃ)-কে নেতৃত্ব দেন। অবশেষে রিদ্দা যুদ্ধের মাধ্যমে আরব উপদ্বীপ পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হয়।
কুরআন সংকলন
রিদ্দা যুদ্ধের সময় অনেক হাফেজে কুরআন শাহাদাত বরণ করলে উমর (রাঃ)-এর পরামর্শে আবু বকর (রাঃ) কুরআন সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। তিনি জায়েদ ইবন সাবিত (রাঃ)-কে প্রধান করে একটি দল গঠন করেন, যারা বিভিন্ন খণ্ড ও মুখস্থ আয়াত একত্র করে একটি সংহত সংকলন তৈরি করেন। এই সংকলনই পরবর্তীতে “মুসহাফে উসমানী”-এর ভিত্তি হয়ে ওঠে।
বৈদেশিক অভিযান ও ইসলামী রাষ্ট্রের সম্প্রসারণ
আবু বকর (রাঃ) তাঁর শাসনকালে ইসলামী রাষ্ট্রকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং বাইজেন্টাইন ও পারস্য সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি সিরিয়ার সীমান্তে মুসলিম বাহিনী পাঠান, যার নেতৃত্ব দেন ইয়াজিদ ইবনে আবি সুফিয়ান ও আমর ইবনে আস (রাঃ)। এই অভিযানগুলো ইসলামী সাম্রাজ্যের ভূখণ্ড সম্প্রসারণে এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রশাসনিক নীতি ও নৈতিকতা
আবু বকর (রাঃ)-এর প্রশাসনিক আদর্শ ছিল সরলতা ও ন্যায়নিষ্ঠার মিশ্রণ। তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নিজের জন্য ন্যূনতম ভাতা নিতেন। তিনি নিজ হাতে পশুপালন করতেন, যেন রাষ্ট্রীয় অর্থে নির্ভর না করতে হয়। মৃত্যুর আগে তিনি ঘোষণা দেন—রাষ্ট্র থেকে যা ভাতা নিয়েছেন, সব ফেরত দিতে চান। এমন আত্মনিয়োগ ও জবাবদিহিতার নজির বিশ্ব ইতিহাসেও বিরল।
মৃত্যু ও সমাধি
৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে, ৬৩ বছর বয়সে, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মৃত্যুর আগে উমর (রাঃ)-কে উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করেন। ২৩ আগস্ট, ৬৩৪ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন এবং মদিনার হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর ঘরে নবীজির (সাঃ)-এর পাশে দাফন করা হয়। আজও তাঁর রওজা মসজিদে নববীর দক্ষিণপাশে অবস্থিত, যেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে আসে।
উত্তরাধিকার ও মূল্যায়ন
হজরত আবু বকর (রাঃ)-এর নেতৃত্বের সময়কাল অল্প হলেও এর প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ভিত্তি স্থাপন করেন, কুরআন সংরক্ষণ নিশ্চিত করেন এবং মুসলিম সমাজকে ভেতর থেকে ঐক্যবদ্ধ করেন।
তাঁর জীবন আমাদের শেখায়— নেতৃত্ব মানে ক্ষমতা নয়, দায়িত্ব। ঈমান মানে অন্ধ আনুগত্য নয়, যুক্তি ও আস্থার সংমিশ্রণ। ইসলামী সমাজ টিকে থাকে ন্যায়, সহমর্মিতা ও আত্মত্যাগের ভিত্তিতে।
হজরত আবু বকর (রাঃ) ছিলেন এক অনন্য নেতৃত্বের প্রতীক, যিনি নবীজির (সাঃ) আদর্শকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করেছিলেন। তাঁর খিলাফত ইসলামী সভ্যতার প্রথম ভিত্তি স্থাপন করে, যার ওপর দাঁড়িয়ে পরবর্তীতে উমর (রাঃ), উসমান (রাঃ) ও আলী (রাঃ)-এর যুগে ইসলাম বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম শক্তিশালী সভ্যতায় পরিণত হয়। তাঁর জীবন আমাদের শেখায়, সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকলে স্বল্পকালেও ইতিহাসে অমর হওয়া যায়।
আগামীকাল ১০ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
আগামীকাল শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখের জন্য ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য প্রধান বিভাগের দৈনিক নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো। (এই সময়সূচি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ইসলামিক ক্যালেন্ডার থেকে সংগৃহীত। স্থানীয় তারতম্যের জন্য ২/১ মিনিট ভিন্ন হতে পারে)।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সময়সূচি
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ফজর ০৪টা ৩৮ মিনিটে (AM), সূর্যোদয় ০৫টা ৫৪ মিনিটে (AM), জোহর ১১টা ৪৫ মিনিটে (AM), আসর ০৩টা ৫৯ মিনিটে (PM), মাগরিব ০৫টা ৩৭ মিনিটে (PM), এবং ইশা ০৬টা ৫২ মিনিটে (PM)।
অন্যান্য প্রধান বিভাগীয় শহরের আনুমানিক সময়সূচি
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোর সময়সূচিতে পার্থক্য আসে। ১০ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের জন্য প্রধান বিভাগগুলোর নামাজের আনুমানিক সময়সূচি নিম্নরূপ:
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ফজর ০৪টা ৩৩ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৪৭ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪০ মিনিটে, আসর ০৩টা ৫৪ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩২ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৪৬ মিনিটে।
খুলনা: খুলনায় ফজর ০৪টা ৪৩ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৯ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৯ মিনিটে, আসর ০৪টা ০১ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪০ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৭ মিনিটে।
রাজশাহী: রাজশাহীতে ফজর ০৪টা ৪৬ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০১ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫৩ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৩ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৪ মিনিটে এবং ইশা ০৭টা ০০ মিনিটে।
সিলেট: সিলেটে ফজর ০৪টা ৩৪ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৪৮ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৩ মিনিটে, আসর ০৩টা ৫৪ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩২ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৪৮ মিনিটে।
রংপুর: রংপুরে ফজর ০৪টা ৪৩ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৯ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫০ মিনিটে, আসর ০৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪০ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৭ মিনিটে।
বরিশাল: বরিশালে ফজর ০৪টা ৩৯ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৫ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ০৩টা ৫৯ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৮ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৩ মিনিটে।
জেনে নিন ০৯ অক্টোবর ঢাকা ও অন্যান্য বিভাগের নামাজের সময়সূচি
বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখের জন্য ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য প্রধান বিভাগের দৈনিক নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো। (এই সময়সূচি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ইসলামিক ক্যালেন্ডার থেকে সংগৃহীত। স্থানীয় তারতম্যের জন্য ২/১ মিনিট ভিন্ন হতে পারে)।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সময়সূচি
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ফজর ৪টা ৩৯ মিনিটে (AM), সূর্যোদয় ৫টা ৫৩ মিনিটে (AM), জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে (AM), আসর ৪টা ০০ মিনিটে (PM), মাগরিব ৫টা ৩৮ মিনিটে (PM), এবং ইশা ৬টা ৫৩ মিনিটে (PM)।
অন্যান্য প্রধান বিভাগীয় শহরের আনুমানিক সময়সূচি
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোর সময়সূচিতে পার্থক্য আসে। ৯ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের জন্য প্রধান বিভাগগুলোর নামাজের আনুমানিক সময়সূচি নিম্নরূপ:
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ফজর ৪টা ৩৫ মিনিটে, সূর্যোদয় ৫টা ৪৯ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ৩টা ৫৯ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৩৭ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৫২ মিনিটে।
খুলনা: খুলনায় ফজর ৪টা ৪৩ মিনিটে, সূর্যোদয় ৫টা ৫৫ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৯ মিনিটে, আসর ৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৪১ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৫৬ মিনিটে।
রাজশাহী: রাজশাহীতে ফজর ৪টা ৪৩ মিনিটে, সূর্যোদয় ৫টা ৫৬ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫২ মিনিটে, আসর ৪টা ০৪ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৪২ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৫৭ মিনিটে।
সিলেট: সিলেটে ফজর ৪টা ৩৫ মিনিটে, সূর্যোদয় ৫টা ৪৬ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৪ মিনিটে, আসর ৪টা ০১ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৩৩ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৪৮ মিনিটে।
রংপুর: রংপুরে ফজর ৪টা ৪১ মিনিটে, সূর্যোদয় ৫টা ৫৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫১ মিনিটে, আসর ৪টা ০৩ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৪১ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৫৬ মিনিটে।
বরিশাল: বরিশালে ফজর ৪টা ৪১ মিনিটে, সূর্যোদয় ৫টা ৫৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫১ মিনিটে, আসর ৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৪০ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৫৬ মিনিটে।
কন্যা হত্যা ও গোত্রীয় সংঘাতের যুগে এক বিশ্বস্ত শিশুর বেড়ে ওঠা
প্রায় দেড় হাজার বছর আগে আরব উপদ্বীপে নেমে এসেছিল এক ভয়াল অন্ধকার। এই সময়কাল ইতিহাসে আইয়্যামে জাহেলিয়াত বা অজ্ঞতার যুগ নামে পরিচিত । এই নামকরণ কোনো সাধারণ অজ্ঞতার জন্য নয়, বরং ছিল মানবিকতার চরমতম বিপর্যয় ।
সামাজিক ও নৈতিক সংকট: মক্কার জমিন ছিল গোত্রে গোত্রে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ক্ষেত্র । সমাজের মূল ভিত্তি ছিল দাসপ্রথা ও ধনীদের সীমাহীন শোষণ । সবচেয়ে ভয়াবহ ও অমানবিক প্রথাটি ছিল কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া ।
ধর্মীয় বিকৃতি: ইব্রাহিম (আঃ) প্রতিষ্ঠিত পবিত্র কাবা ঘর তখন মূর্তিপূজার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল । কাবা ভরে ছিল ৩৬০টি মূর্তিতে।
ব্যতিক্রমী আগমন: ঠিক এমন এক ঘোর নৈতিক শূন্যতায়, জন্ম হলো এক ব্যতিক্রমী শিশুর, যিনি কেবল একটি সমাজ নয়, গোটা মানবজাতির ইতিহাসের গতিপথ চিরতরে পাল্টে দিলেন।
জন্মের অলৌকিক পটভূমি: হস্তীবাহিনীর ঘটনা ও পিতৃহীন জন্ম
ঐতিহাসিক সময়কাল: মহানবী (সাঃ) ৯ই রবিউল আউয়াল তারিখে মক্কার বিখ্যাত বনু হাশিম বংশে সুবহে সাদেকের সময় জন্মগ্রহণ করেন । ইংরেজি পঞ্জিকা অনুসারে তারিখটি ছিল ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ বা ২২শে এপ্রিল ।
হস্তীবাহিনীর ঘটনা: তাঁর জন্মের মাত্র ৫০ থেকে ৫৫ দিন পূর্বে, ইয়েমেনের শাসক আবরাহা বিশাল হস্তীবাহিনী (আসহাবে ফীল) নিয়ে কাবা ধ্বংস করতে আসেন । আবরাহার উদ্দেশ্য ছিল মক্কার পরিবর্তে সানা'য় (ইয়েমেন) নির্মিত গির্জার দিকে আরবদের হজ্বকে ফিরিয়ে আনা ।
আল্লাহর সাহায্য: আবরাহার হাতি যখন কাবার দিকে এগোতে চাইল, তখন তা মাটিতে বসে পড়ল । এমন সময় আল্লাহ তা'আলা ঝাঁকে ঝাঁকে আবাবিল পাখি প্রেরণ করলেন, যারা ছোট ছোট পাথর (কঙ্কর) নিক্ষেপ করে সেই বিশাল বাহিনীকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয় ।
তাৎপর্য: এই অলৌকিক ঘটনাটি ছিল নবুয়তের আগমনের পূর্বাভাস এবং কাবার উচ্চ সম্মান ও সুমহান মর্যাদার প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক সুস্পষ্ট নিদর্শন ।
পিতা-মাতার বিয়োগ: জন্মের আগেই তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ ইন্তেকাল করেন । এরপর ছয় বছর বয়সে তিনি মাতা আমিনা (রাঃ)-কেও হারান ।
শৈশবে লালন-পালন ও আত্মিক শুদ্ধিকরণ
দুধমাতা হালিমা ও বরকত: তৎকালীন মক্কার রীতি অনুযায়ী, শিশু মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে বনু সা'দ গোত্রের ধাত্রী হালিমা সাদিয়া (রাঃ)-এর কাছে মরুভূমিতে পাঠানো হয় । উদ্দেশ্য ছিল শহর থেকে দূরে গ্রামীণ পরিবেশে শিশুদের বলিষ্ঠ দেহ ও বিশুদ্ধ আরবী ভাষা শিক্ষা দেওয়া । শিশুটিকে গ্রহণ করার পর হালিমা (রাঃ)-এর পরিবার অলৌকিকভাবে বরকত লাভ করতে থাকে ।
বক্ষ বিদারণ (শাক্ক আল-সাদর): শিশু মুহাম্মাদ (সাঃ) যখন হালিমা (রাঃ)-এর কাছে ছিলেন, তখন তাঁর বক্ষ বিদারণের অলৌকিক ঘটনাটি ঘটে । খেলার সময় ফেরেশতা জিবরাঈল (আঃ) তাঁর বক্ষ উন্মোচন করে তাঁর হৃদপিণ্ড থেকে শয়তানের অংশটি বা কলুষতাকে অপসারণ করেন ।
শুদ্ধিকরণ: এরপর হৃৎপিণ্ডটি জমজমের পানি দ্বারা ধুয়ে তা যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করা হয় । এটি ছিল নবুয়তের জন্য তাঁর দৈহিক ও আত্মিক শুদ্ধিকরণ এবং তাঁকে সব ধরনের পাপ ও কলুষতা থেকে পবিত্র করার প্রস্তুতি ।
দাদা আব্দুল মুত্তালিবের আশ্রয়: মায়ের মৃত্যুর পর বৃদ্ধ দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাঁকে মক্কায় নিয়ে আসেন । দাদা তাঁকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন এবং কা'বার ছায়ায় নিজের বিশেষ আসনেও বসতে দিতে।
চাচার তত্ত্বাবধান: আট বছর দু'মাস দশ দিন বয়সে দাদা আব্দুল মুত্তালিব মৃত্যুবরণ করলে , চাচা আবু তালিব তাঁকে নিজ সন্তানের চেয়েও বেশি স্নেহ ও সম্মানের সাথে প্রতিপালন করেন ।
যৌবন, কর্মজীবন ও 'আল-আমিন' উপাধি
কর্মজীবন: কৈশোরে তিনি চাচা আবু তালিবের মেষ চরাতেন । বিশ বছর বয়সে তিনি চাচার সঙ্গে ব্যবসায়িক সফরে সিরিয়া গমন করেন ।
ব্যবসা ও বিবাহ: ২৫ বছর বয়সে তিনি মক্কার সম্ভ্রান্ত ও ধনী মহিলা খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রাঃ)-এর ব্যবসার ভার নিয়ে সিরিয়া গমন করেন । তাঁর সততা ও ব্যবসায়িক সাফল্য দেখে খাদিজা (রাঃ) মুগ্ধ হন এবং পরে তাঁকে বিবাহের প্রস্তাব দেন । বিবাহের সময় খাদিজা (রাঃ)-এর বয়স ছিল ৪০বছর।
কাবা সংস্কারে বিচক্ষণতা: যখন তাঁর বয়স ৩৫ বছর, তখন কাবা গৃহ পুনর্নির্মাণের সময় হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের সম্মান নিয়ে গোত্রীয় সংঘাত সৃষ্টি হলে, তিনি চাদরের মাধ্যমে বুদ্ধিদীপ্ত সমাধান দেন এবং রক্তপাত এড়ান ।
বিশ্বস্ততার প্রতীক: তাঁর চারিত্রিক গুণাবলী ছিল সর্বজনস্বীকৃত। তাঁর সততা, বিশ্বস্ততা, নম্র-ভদ্রতা এবং আমানত হেফাজতের কারণে আরববাসীগণ তাঁকে 'আল-আমিন' (অতি বিশ্বস্ত) উপাধিতে ভূষিত করেছিল । তিনি ছিলেন আরববাসীগণের মধ্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আমানতদার ।
সিরাত অধ্যয়নের আহ্বান ও পরবর্তী পর্বের ঘোষণা
এই পর্বে আমরা মহানবী (সাঃ)-এর জীবনের নবুয়ত-পূর্ব চল্লিশ বছরের বিস্তারিত চিত্র দেখলাম, যা ছিল জাহেলিয়াতের সব ধরনের অশ্লীলতা, পাপাচার ও কলুষতা থেকে মুক্ত । তাঁর জীবন ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও পরিচালনার অধীন । তাঁর চরিত্র ছিল সততা, ন্যায়পরায়ণতা এবং বিশ্বস্ততার এক পূর্ণাঙ্গ নমুনা, যা তাঁকে মানবজাতির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করেছিল।
বিশেষ বার্তা:
সম্মানিত পাঠক, মহানবী (সাঃ)-এর পবিত্র জীবন অত্যন্ত বিস্তৃত। আমাদের এই ধারাবাহিক পর্বগুলো শায়খ সফিউর রহমান মোবারকপুরী রচিত বিশ্বখ্যাত সিরাত গ্রন্থ 'আর-রাহীকুল মাখতূম'-এর তথ্য অনুযায়ী, তথ্য সংক্ষেপ না করে, সহজ ভাষায় তুলে ধরার একটি প্রচেষ্টা মাত্র। তাঁর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের জন্য মূল সিরাত গ্রন্থগুলো অধ্যয়নের আহ্বান রইল।
আগামী পর্ব: নবুয়তের সূচনা: হেরা গুহার অভ্যন্তরে প্রথম ওহী ও জিবরাঈল (আঃ)-এর আগমন (সূত্র: আর-রাহীকুল মাখতূম)।
আল-আকসা ও শাম: কেন এই ভূখণ্ডকে পৃথিবীর সভ্যতার কেন্দ্র বলা হয়?
পবিত্র কোরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে রাব্বুল আলামিন একটি অঞ্চলকে পবিত্র ও বরকতময় ভূখণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। মুফাসসিরদের (তাফসির বিশেষজ্ঞ) ভাষায়, এই ভূখণ্ডটির নাম হলো শাম। সেকালে শাম বলতে মূলত ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান এবং আশপাশের অঞ্চলকে বোঝানো হতো। এই ঐতিহাসিক ভূখণ্ডে ইবরাহিম (আ.), ইসহাক (আ.), ইয়াকুব (আ.), মুসা (আ.), দাউদ (আ.), সুলাইমান (আ.), ঈসা (আ.) সহ অসংখ্য নবী-রাসুল বসবাস করতেন, তাই একে পৃথিবীর সভ্যতার কেন্দ্রও বলা যায়।
পবিত্র কোরআনে শাম শব্দটি সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও, মুফাসসিরদের মতে পাঁচটি আয়াতে এই অঞ্চলের মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। চলুন, দেখে নিই সেই আয়াতগুলো:
৫টি আয়াতে শামের মর্যাদা
১. সুরা বনি ইসরাইল : ১
“পবিত্র ও মহীয়ান তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে (শাম) আমি কল্যাণময় করেছি। তাকে আমার নিদর্শনাবলি দেখানোর জন্য (ভ্রমণ করিয়েছি)।”
তাৎপর্য: এই আয়াতে মিরাজ গমনের সময় মসজিদুল আকসার চারপাশকে কল্যাণময় বা বরকতময় বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
২. সুরা আরাফ : ১৩৭
“যে জাতিকে দুর্বল ও দীনহীন ভাবা হত আমি তাদের আমার কল্যাণ প্রাপ্ত রাজ্যের (শাম) পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী বানাই, আর বনি ইসরায়েল জাতি সম্পর্কে তোমার রবের শুভ ও কল্যাণময় বাণী (প্রতিশ্রুতি) পূর্ণ হলো, যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল। আর ফির’আউন ও তার সম্প্রদায়ের কীর্তিকলাপ ও উচ্চ প্রাসাদসমূহকে আমি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছি।”
তাৎপর্য: বনি ইসরায়েল জাতিকে ফির’আউনের হাত থেকে মুক্ত করে এই পবিত্র রাজ্যের উত্তরাধিকারী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
৩. সুরা আম্বিয়া : ৭০-৭১
“তারা তার (ইবরাহিম আ.) বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু আমি তাদেরই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে ছাড়লাম। আর আমি তাকে ও (তার ভ্রাতুষ্পুত্র) লুতকে উদ্ধার করে এমন দেশে (শাম) নিয়ে গেলাম, যা আমি বিশ্ববাসীর জন্য কল্যাণময় করেছি।”
তাৎপর্য: হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে উদ্ধার করে শাম অঞ্চলে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
৪. সুরা আম্বিয়া : ৮১
“(আমার ক্ষমতাবলেই) আমি উদ্দাম বায়ুকে (স্বাভাবিক গতিসম্পন্ন) করেছিলাম সোলায়মানের জন্য। তার নির্দেশমতো তা প্রবাহিত হতো সেই দেশের (শাম) দিকে, যাতে আমি কল্যাণ রেখেছি।”
তাৎপর্য: হজরত সুলাইমান (আ.)-এর জন্য বায়ুর গতি নিয়ন্ত্রিত হতো শামের দিকে।
৫. সুরা সাবা : ১৮
“তাদের (কওমে সাবা) এবং যেসব জনপদের (শাম) প্রতি আমি অনুগ্রহ বর্ষণ করেছিলাম, সেগুলোর মাঝে অনেক দৃশ্যমান জনপদ স্থাপন করে দিয়েছিলাম এবং সেগুলোর মাঝে সমান সমান দূরত্বে সফরের মঞ্জিল ঠিক করে দিয়েছিলাম। (আর তাদের বলেছিলাম) তোমরা এসব জনপদে রাতে আর দিনে নিরাপদে ভ্রমণ করো।”
তাৎপর্য: এই অঞ্চলে আল্লাহ তাআলা সুনির্দিষ্ট ও দৃশ্যমান জনপদ সৃষ্টি করে দেন।
আগামীকাল বুধবার বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
আগামীকাল বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখের জন্য ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য প্রধান বিভাগের দৈনিক নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো। (এই সময়সূচি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ইসলামিক ক্যালেন্ডার থেকে সংগৃহীত। স্থানীয় তারতম্যের জন্য ২/১ মিনিট ভিন্ন হতে পারে)।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সময়সূচি
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ফজর ৪টা ৩৮ মিনিটে (AM), সূর্যোদয় ৫টা ৫৩ মিনিটে (AM), জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে (AM), আসর ৪টা ০০ মিনিটে (PM), মাগরিব ৫টা ৩৯ মিনিটে (PM), এবং ইশা ৬টা ৫৪ মিনিটে (PM)।
অন্যান্য প্রধান বিভাগীয় শহরের আনুমানিক সময়সূচি
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোর সময়সূচিতে পার্থক্য আসে। ৮ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের জন্য প্রধান বিভাগগুলোর নামাজের আনুমানিক সময়সূচি নিম্নরূপ:
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ফজর ৪টা ৩৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ৩টা ৫৮ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৩৭ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৫২ মিনিটে।
খুলনা: খুলনায় ফজর ৪টা ৪২ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৯ মিনিটে, আসর ৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৪১ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৫৬ মিনিটে।
রাজশাহী: রাজশাহীতে ফজর ৪টা ৪২ মিনিটে, সূর্যোদয় ৫টা ৫৬ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫২ মিনিটে, আসর ৪টা ০৪ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৪২ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৫৭ মিনিটে।
সিলেট: সিলেটে ফজর ৪টা ৩৪ মিনিটে, সূর্যোদয় ৫টা ৪৮ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৪ মিনিটে, আসর ৪টা ০১ মিনিটে, মাগরিব ৫টা ৩৩ মিনিটে এবং ইশা ৬টা ৪৮ মিনিটে।
কোরআনের ভুল খুঁজতে গিয়েই ইসলাম কবুল: যে গল্প পাল্টে দিল এক প্রফেসরের জীবন
ইসলামের বিরুদ্ধে বিতর্কের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি, কোরআনে ভুল খুঁজে বের করাই ছিল তার লক্ষ্য। কিন্তু সেই গবেষণার পথই তাকে নিয়ে গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক গন্তব্যে – সত্যের সন্ধানে। কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও যুক্তিবিদ্যার প্রফেসর ডক্টর গ্যারি মিলার, যিনি একসময় খ্রিস্টান ধর্মের একজন সক্রিয় প্রচারক ছিলেন, তিনি এখন ইসলাম গ্রহণ করে পরিচিত হয়েছেন আব্দুল আহাদ নামে।
কোরআনের নির্ভুলতা: এক অচিন্তনীয় ধাক্কা
ডক্টর গ্যারি মিলার ছিলেন বাইবেলের একজন গভীর পণ্ডিত। তার ধারণা ছিল, ১৪০০ বছর আগের গ্রন্থ কোরআনে নিশ্চয়ই ব্যাকরণগত, ঐতিহাসিক বা গাণিতিক অনেক ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যাবে, যা দিয়ে তিনি মুসলিমদের পরাজিত করতে পারবেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি কোরআন অধ্যয়ন শুরু করেন।
কিন্তু গবেষণার শুরুতেই তিনি এক অপ্রত্যাশিত ধাক্কা খেলেন। পৃথিবীর কোনো লেখকই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারেন না যে তার বইয়ে কোনো ভুল নেই। অথচ কোরআন শুরুতেই ঘোষণা করছে, "এই সেই কিতাব, যাতে কোনো সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য এটা পথনির্দেশক।" এমন নির্ভুলতার দাবি ডক্টর মিলারকে বিস্মিত করে। তিনি আরও দেখলেন, কোরআন নিজেই তার ভুল খুঁজতে আসা ব্যক্তিদের বারবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। কোরআনে বলা হয়েছে, "তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তা করে না? এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো পক্ষ থেকে হতো, তবে তারা অবশ্যই এতে অনেক অসঙ্গতি দেখতে পেত।"
মহানবীর ব্যক্তিগত জীবনের অনুপস্থিতি ও সম্মিলিত আলোচনার গুরুত্ব
ডক্টর মিলার কোরআনের গভীরে গিয়ে আরও কিছু বিষয় লক্ষ্য করলেন, যা তাকে ইসলামের সত্যতার দিকে আকৃষ্ট করে। তিনি দেখলেন, সম্পূর্ণ কোরআনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রায় কিছুই লেখা নেই। যদি এটি তাঁর নিজের লেখা হতো, তবে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘটনা এতে থাকতো। এই যুক্তি তাকে মানতে বাধ্য করে যে, কোরআন মুহাম্মদ (সা.)-এর লেখা কোনো গ্রন্থ নয়।
এছাড়াও, সম্মিলিত আলোচনার ওপর কোরআনের জোর তাকে মুগ্ধ করে। কোরআনে বলা হয়েছে, "বলুন, আমি তোমাদের একটা বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি যে, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুজন দুজন অথবা একজন একজন করে দাঁড়াও। এরপর তোমরা চিন্তা করে দেখো তোমাদের সঙ্গী আদৌ উন্মাদ নয়; সে তো আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদের সতর্ককারী মাত্র।" অর্থাৎ, আল্লাহ এখানে অবিশ্বাসীদেরকে বিনা চিন্তায় মহানবী (সা.)-এর অনুসরণ না করে, তাঁর কথাগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার নির্দেশ দিয়েছেন। একা সিদ্ধান্তে আসতে না পারলে, একাধিক ব্যক্তি মিলে আলোচনা করে তারপর ঈমান আনার কথা বলা হয়েছে।
মরিয়ম (আ.)-এর বিশেষ সম্মান
ডক্টর মিলারের নজর কেড়েছিল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঈসা (আ.)-এর মা মারিয়াম (আ.)-কে কোরআন যে উচ্চ সম্মান দিয়েছে, তা বাইবেলের চেয়েও বেশি। যেখানে মহানবী (সা.)-এর কন্যা ফাতিমা (রা.) বা তাঁর স্ত্রী আয়েশা (রা.)-এর নাম কোরআনে একবারও উল্লেখ নেই, সেখানে মারিয়াম (আ.)-এর নাম কোরআনে ৩৪ বার এসেছে। এমনকি তাঁর নামে একটি সম্পূর্ণ সূরাও নাযিল হয়েছে। অন্যদিকে, মহানবী (সা.)-এর নাম কোরআনে এসেছে মাত্র চার বার, আর ঈসা (আ.)-এর নাম এসেছে ২৫ বার।
ডক্টর গ্যারি মিলার উপলব্ধি করলেন, কোরআনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছিল, তার কোনোটিই যুক্তিতে টেকে না। কোরআন নিজেই প্রতিটি অভিযোগের উত্তর দিয়েছে। অবশেষে, তিনি বিনা সন্দেহে কোরআনের সামনে আত্মসমর্পণ করেন এবং ১৯৭৮ সালে ইসলাম কবুল করে নিজের নাম রাখেন আব্দুল আহাদ।
যুগে যুগে ডক্টর মিলারের মতোই যারা কোরআনের ভুল ধরতে গিয়েছেন, তারাই এই গ্রন্থের গভীরে সত্যের পথ খুঁজে পেয়েছেন। আল্লাহ নিজেই কোরআনে বলেছেন, "আর আমি আমার আয়াত ভীষকভাবে বর্ণনা করেছি জ্ঞানীদের জন্য।"
পাঠকের মতামত:
- ১২ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ভেষজ পাতা: কীভাবে ও কখন খাবেন কুলেখাড়া?
- দায়সারাভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর গ্রহণযোগ্য নয়: আখতার হোসেন
- জনগণের সুবিধার জন্য জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের স্থান ও সময় পরিবর্তন
- সুস্থ থাকতে আটার রুটিতে মেশান ৩ উপাদান, দেখুন ম্যাজিক!
- রাতে ঘুম আসে না? শোয়ার ঘরে যে সামান্য বদল আনলে মিলবে শান্তি
- ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি ১৬৪৮: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উত্থান
- ১৫ জন সেনা কর্মকর্তা সেনাসদরের হেফাজতে
- চাঁদ কি ধ্বংস হতে চলেছে? বিজ্ঞানীদের পারমাণবিক হামলার পরিকল্পনা!
- যে ভবিষ্যদ্বাণী কাঁপিয়ে দেবে মুসলিম বিশ্ব: ঈমানশূন্য পৃথিবীতে যেভাবে ধ্বংস হবে কাবা!
- শরীরের পরিবর্তন দেখে অবাক হবেন: প্রতিদিন খান মাত্র ১ লবঙ্গ
- রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সম্পর্ক: ইশরাক হোসেনের বাগদান সম্পন্ন
- কবরের চারপাশে কি ফুলগাছ লাগানো যাবে? জেনে নিন শরীয়তের বিধান
- জাতীয় পার্টির কর্মী সমাবেশে ককটেল বিস্ফোরণ, উত্তপ্ত পরিস্থিতি
- এশিয়ান কাপ বাছাই: শেষ আশা বাঁচিয়ে রাখতে বাংলাদেশের সামনে কঠিন সমীকরণ
- বিশ্বজুড়ে কোরিয়ান ড্রামার ঝড়: যে ১০টি সিরিজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই
- গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই: মির্জা ফখরুল
- জ্বালানি সংকট সৃষ্টি করেছেন রাজনীতিবিদেরা: বিস্ফোরক মন্তব্য জ্বালানি উপদেষ্টার
- বিছানায় বসে প্রেম’: ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা আদনানের বিরুদ্ধে স্ত্রীর নতুন বিস্ফোরক পোস্ট
- কোথাও দাওয়াত দিতো না: মারুফা আক্তারের চোখে জল আনা সেই কষ্টের কথা
- আজ ৪ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির শঙ্কা, ২০ জেলায় সতর্কতা
- ব্রণ সারাতে চান? ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রণ দূর করার ৭ কার্যকর উপায় জেনে নিন
- নারীদের জন্য বড় সুযোগ! ঘরে বসেই আয় করুন মাসে লাখ টাকা
- আমার পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে তারা:শহিদুল আলম
- শুধু অভিযোগ নয়, গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি: ডাকসু-জাকসুর তীব্র আহ্বান, দেশের বিবেক জাগুক
- সাত মিলিয়ন ডাউনলোড: হোয়াটসঅ্যাপের প্রতিদ্বন্দ্বী ‘আরাত্তাই’
- সিরিজ বাঁচাতে আজ আফগানিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ, একাদশে আসছে পরিবর্তন?
- অ্যালার্জি থেকে মুক্তি চান? খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ৫ খাবার
- প্রতিটি মেয়ের স্বপ্নপূরণে রাষ্ট্রকে সঙ্গী করব: তারেক রহমান
- ষড়যন্ত্র করে একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার চেষ্টা: মিয়া গোলাম পরওয়ার
- ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল না দেওয়ায় চটলেন পুতিন
- উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিটের দরকার নেই, জাতির প্রয়োজন: আসিফ নজরুল
- মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে ৫০টির বেশি জাহাজ, বাংলাদেশের আমদানি-সংক্রান্ত উদ্বেগ
- শিক্ষা ও সাহিত্যের আলোকবর্তিকা নিভে গেল—চলে গেলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
- মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন
- ইসরায়েল থেকে মুক্তি পেয়েছেন শহিদুল আলম, তুরস্কের ফ্লাইটে আঙ্কারার পথে
- ট্যাঙ্গো, পাম্পাস আর বিপ্লবের দেশ: আর্জেন্টিনার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি
- নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা: কে পেলেন এ বছরের সম্মানজনক পুরস্কার?
- আজ থেকে পাঁচ দিন দেশের আবহাওয়া কেমন থাকবে?
- মধু খাঁটি না ভেজাল? আগুন দেওয়া বা পানিতে মেশানো নয়, যা বলছেন গবেষকরা
- সাবধান! হোটেলকক্ষে গোপন ক্যামেরা শনাক্তের ৬ কৌশল
- গুগল জেমিনি প্রো বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা
- পারফিউম নয়, ফিটকিরি: ১০০ টাকায় তৈরি করুন নিজস্ব ঘরোয়া সুগন্ধি
- ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রাঃ): জীবন, নেতৃত্ব ও উত্তরাধিকার ভূমিকা
- নোবেল শান্তি পুরস্কারের ঘোষণা আজ, ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ
- চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াং-এর রহস্যময় সমাধি: মাটির সেনাবাহিনী, পারদের নদী আর অমরত্বের অভিশাপ
- ফিলিপাইনে ৭.৫ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প: সুনামি সতর্কতা, আতঙ্কে মিন্দানাওবাসী
- গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়
- ইসরায়েলে আটক শহিদুল আলমকে ফিরিয়ে আনার চূড়ান্ত চেষ্টা—তুরস্কের বিশেষ বিমান প্রস্তুত, অপেক্ষা শেষ মুহূর্তের সম্মতির
- শেষ বাঁশি বাজার মুহূর্তে স্বপ্ন চুরি: নাটকীয় ম্যাচে হারল বাংলাদেশ
- কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
- আন্দেসের হৃদয়ে এক বিপ্লবী দেশ: বলিভিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- জিরো-ওয়েস্ট কুকিং’: সবজির খোসাও হবে সুস্বাদু রেসিপি
- তারেক রহমানের ঘোষণা: “জনগণের নির্বাচনে আমি থাকব জনগণের মধ্যেই”
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- মধু খাঁটি না ভেজাল? আগুন দেওয়া বা পানিতে মেশানো নয়, যা বলছেন গবেষকরা
- আধুনিক বিজ্ঞান ও কোরআনের আলোকে জিন: রহস্যময় অস্তিত্বের এক নতুন দিগন্ত!
- কন্যা হত্যা ও গোত্রীয় সংঘাতের যুগে এক বিশ্বস্ত শিশুর বেড়ে ওঠা
- গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়
- স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও বাড়ল মূল্য
- ১৯৭৪ সালের ১ টাকা এখনকার কত টাকার সমান?
- চ্যাম্পিয়নের দুর্দিন: সেভিয়ার মাঠে ৪–১ গোলে হার বার্সেলোনার