স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি এখন আত্মনির্ভরতা। তিনি বলেন, “আমরা আর কারও ওপর নির্ভরশীল থাকতে চাই না। আমাদের নিজেদের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করতে হবে। যেহেতু আমরা এখনও অন্যদের ওপর নির্ভরশীল, তাই যত দ্রুত সম্ভব এই নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসাই এখন সবচেয়ে জরুরি। এর কোনো বিকল্প নেই।”
আজ বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর টেকসই ও মসৃণ রূপান্তর কৌশল বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি’র সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরে পররাষ্ট্র সেবা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সভার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সভায় ড. ইউনূস বলেন, “স্বনির্ভর হতে হলে আমাদের অভ্যাস বদলাতে হবে। নিজেদের মেধা, শ্রম ও অধ্যবসায় দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। শুরুতে কঠিন মনে হলেও এই পথেই আনন্দ ও সার্থকতা নিহিত। আমরা যখন নতুন বাংলাদেশের কথা বলি, তখন সেটি একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশেরই প্রতিশ্রুতি।”
তিনি আরও বলেন, “এই জাতি নিজ যোগ্যতায় দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে। আমাদের শক্তি হলো তরুণ প্রজন্ম ও তাদের সৃষ্টিশীলতা। এই শক্তি ও সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা নির্ভরতার শৃঙ্খল থেকে দেশকে মুক্ত করবে। আমরা আর পরনির্ভরতার বন্ধনে বাঁচতে চাই না।”
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, কৃষি উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, মুখ্য সচিব এম সিরাজউদ্দিন মিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফাইজ তাইয়েব আহমাদ, এবং এসডিজি বাস্তবায়নের মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদসহ ইআরডির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বৈঠকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ঢাকাচেম্বার সভাপতি তাসকিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আব্দুল মুকতাদির।
বিশ্লেষকদের মতে, এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বৈদেশিক সহায়তার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো গঠন করা। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে সেই রূপান্তর পরিকল্পনার দিকনির্দেশনাই স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
-নাজমুল হাসান
ঘন ঘন ভূমিকম্পের আতঙ্কের মধ্যেই এবার সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা
বঙ্গোপসাগরে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি দুর্বল নিম্নচাপ তীব্রতর হয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চলে রূপ নিয়েছে যা আগামীকাল সোমবার আরও শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত দুই দিনে চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ের এই নতুন খবর জনমনে বাড়তি শঙ্কা তৈরি করেছে।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এনভাইরোনমেন্ট অ্যান্ড সাস্টেনিবিলিটির আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন। আজ ২৩ নভেম্বর পাওয়া সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন আগামী ২৬ বা ২৭ নভেম্বর দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে বিশেষ করে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপের দক্ষিণ পাশে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই লঘুচাপটি পর্যায়ক্রমে নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপ ও সর্বশেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে এ বিষয়ে সব আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল একমত হলেও সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি কেমন পরিমাণে শক্তিশালী হবে ও কোন স্থানের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে এই বিষয়ে বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিচ্ছে। তবে বর্তমান বিশ্লেষণ অনুযায়ী ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে শুরু করে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী যেকোনো স্থানের ওপর দিয়ে এটি উপকূলে আঘাত হানতে পারে। গবেষক পলাশ আশা প্রকাশ করেন যে ২৬ নভেম্বর অধিক নিশ্চয়তা সহকারে জানা যাবে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি কতটা শক্তিশালী হবে এবং ঠিক কোন স্থানের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে।
কৃষকদের জন্য বিশেষ পরামর্শ দিয়ে গবেষক জানান সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ফলে জমিতে থাকা পাকা আমন ধান কাটা ও মাড়াই করা শেষ করার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। শীতকালীন শাকসবজি চাষিরা সম্ভাব্য এই বৃষ্টিপাতের কথা মাথায় রেখে বীজ বোনা ও জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারেন। তবে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরো দেশে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমুদ্রগামী জেলেদের জন্য সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখের পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উত্তাল হওয়া শুরু করার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ১ ডিসেম্বরের মধ্যে উপকূলে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে সমুদ্রে মাছ ধরা সব ট্রলারকে। ৩০ নভেম্বরের পরে নতুন করে সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ বিষয়ক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ১ ডিসেম্বরের পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল হতে শুরু করবে। বিশেষ করে ১ ডিসেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল থাকার আশঙ্কা করা যাচ্ছে যা নৌপথে যাতায়াতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
বড় ভূমিকম্প হলে তা মোকাবিলা নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দেশে বড় আকারের ভূমিকম্প হলে তা মোকাবিলা করার সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অব. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রবিবার ২৩ নভেম্বর সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এই শঙ্কার কথা জানান।
ভূমিকম্প নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন অন্য কোনো দেশে ভূমিকম্প নিয়ে কোনো আগাম সতর্কতা আছে কি না তা তাঁর জানা নেই তবে বাংলাদেশে নেই। অনেক দেশে নাকি একটা অ্যাপ আছে যার মাধ্যমে দশ সেকেন্ড আগে সতর্কতা দেওয়া যায়। এমন একটা অ্যাপ খোলা যায় কি না সরকারও সেই চিন্তা করছে। তিনি আফটার শক বা ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন নিয়ে বলেন অনেকে বলে একটা ভূমিকম্প হওয়ার পরে এক দেড় ঘণ্টা পর আরেকটা হওয়ার শঙ্কা থাকে আবার এক দেড় ঘণ্টা পর সেই শঙ্কা কমে যায়। কিন্তু আমাদের দেশে তো একটা হওয়ার পর ছোট আকারে আরেকটা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই তাই পরবর্তীতে আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া তিনি জলাশয় ভরাট করে ভবন নির্মাণের সমালোচনা করে বলেন এতে ঝুঁকি বেশি থাকে। ভূমিকম্প হলে লোকজন গিয়ে কোথাও দাঁড়াবে তেমন কোনো মাঠও নেই বলে ভবিষ্যতে এ বিষয়ে নজর দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কোনো শঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন এমন কোনো শঙ্কা নেই। তিনি দাবি করেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে তবে নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসবে সেই সময়ে বিভিন্ন দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সভা সমিতির সংখ্যাও বেড়ে যাবে। তিনি বলেন আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির মধ্যেই ছিল যা পরে গেল দেড় বছরের চেষ্টায় উন্নতির দিকে গেছে।
দেশে অপরাধের মাত্রা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে এক নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মন্তব্যের জবাবে উপদেষ্টা বলেন এটা একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মন্তব্য আর সে কীভাবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক হলো সেটাও আমি জানি না। তিনি মন্তব্য করেন যে দেশে এখন সবাই বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষক কিন্তু কে কোন যোগ্যতায় হয়েছে তা তাঁর জানা নেই।
সবশেষে মধ্যরাতে এক সাংবাদিককে ডিবি তুলে নিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সাংবাদিকদের মধ্যেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান ওই ব্যক্তি যে কাজটি করেছেন সেটা সাংবাদিক হিসেবে না বরং সেটা ছিল অন্য ধরনের কাজ।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ৫৬টি দেশের পক্ষ থেকে যে বড় বার্তা পেল নির্বাচন কমিশন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতির মধ্যেই এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছে নির্বাচন কমিশন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কমনওয়েলথ। রবিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা সফররত কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বচওয়ে।
বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জানান আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় কমনওয়েলথভুক্ত ৫৬টি দেশ ইসিকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন আমরা তাঁদের স্বাগত জানাচ্ছি এবং তাঁরা আসবেন। আমরা আশা করি আমাদের এবারের যে ফ্রি ফেয়ার ক্রেডিবল ও পার্টিসিপেটরি বা অংশগ্রহণমূলক ইলেকশন হচ্ছে সেটার সম্পর্কে আমরা একটা ভালো রেজাল্ট পাব।
ইসি সচিব আরও উল্লেখ করেন যে কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের সেক্রেটারি জেনারেল স্পেসিফিক বা নির্দিষ্ট করে আমাদের বলেছেন ওনার সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ৫৬টি দেশ এবং আমরা যদি কোনো সহযোগিতা চাই সেটা ওনারা করার জন্য প্রস্তুত আছেন। এছাড়া যুক্তরাজ্য আমাদের সহযোগিতা করছে শুনে তিনি খুশি হয়েছেন বলে জানান সচিব।
নির্বাচনের সময় দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন হবে তা নিয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইসি সচিব বলেন আমাদের ল অ্যান্ড অর্ডার বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কেও তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে আমরা বলেছি আমরা সারা দেশকে তিনটি ভাগে রেড ইয়েলো এবং গ্রিন এই জোনে ভাগ করছি এবং সেই ভাগে ভাগ করে আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিগুলোকে সামাল দেব। তিনি আরও জানান কমনওয়েলথ মহাসচিবের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা হয়েছে এবং কমিশনের ওপর আস্থা ও আশাবাদ ব্যক্ত করে আজকের আলোচনা শেষ করেছেন তিনি।
গ্যাসের দাম বাড়ছে আজ!
দেশের সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, আজ রবিবারই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে কৃষিখাত, সার উৎপাদন ব্যয় এবং সরকারের ভর্তুকি কাঠামোতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
এর আগে পেট্রোবাংলা এবং দেশের বিভিন্ন গ্যাস বিতরণ সংস্থা সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ৪০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। গত ৬ অক্টোবর বিইআরসির আয়োজিত গণশুনানিতে এই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শুনানি শেষে বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, গ্যাসের দাম সমন্বয়ে “সবদিক বিবেচনা করে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।” তার বক্তব্যে বিশেষভাবে উঠে আসে কৃষিকে অগ্রাধিকার ও এলএনজি আমদানির বাস্তব খরচ বিবেচনার বিষয়টি।
? এলএনজি আমদানি বাড়ানোর প্রস্তাব
পেট্রোবাংলার প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী-
- দাম বাড়ানো হলে ৭টি অতিরিক্ত কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে
- অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সার কারখানায় ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে পূর্ণ মাত্রায় সরবরাহ
- এপ্রিল–মে: ১৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট
- জুন: ১৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট
- জুলাই–সেপ্টেম্বর: ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট
এই মাসভিত্তিক সরবরাহ কাঠামো বাস্তবায়নের জন্যই গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে প্রতি কেজি ইউরিয়া সার উৎপাদনে খরচ হচ্ছে প্রায় ৩৮ টাকা। কিন্তু বাজারে তা কৃষকদের কাছে বিক্রি হয় ২৭ টাকা, এবং বিসিআইসি ডিলারদের কাছে সরবরাহ করে ২৫ টাকায়। এতে প্রতি কেজিতে ১৩ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সরকারকে।
সার উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও দীর্ঘদিন ধরে কৃষকদের জন্য সার মূল্য কম রেখেছে সরকার। কিন্তু এলএনজি আমদানির বাড়তি খরচ, বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি দামের অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ সরবরাহ ব্যয়ের কারণে ভর্তুকির পরিমাণও দ্রুত বাড়ছে।
গণশুনানিতে বিইআরসি চেয়ারম্যানের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তে কৃষি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। সার উৎপাদনে গ্যাসের দাম সরাসরি প্রভাব ফেলে, ফলে কোনো পরিবর্তনই কৃষক, উৎপাদক এবং সরকারের ওপর বহুমাত্রিক প্রভাব ফেলতে পারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এলএনজি আমদানির খরচ বাড়লেও সার শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যদিকে, অতিরিক্ত দাম কৃষি উৎপাদন ব্যয় ও খাদ্য নিরাপত্তায় চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ফলে আজকের গ্যাস মূল্য ঘোষণা একটি নীতি–নির্ধারণী গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ভূমিকম্পের পর আগামী ৭২ ঘণ্টাকে কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
গতকালের ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের রেশ কাটতে না কাটতেই আজ শনিবার আরও দুবার মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এদিন সকালে ৩ দশমিক ৩ মাত্রা এবং সন্ধ্যায় ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। আজকের এই কম্পনগুলোকে আফটার শক হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বা বিএমডির পরিচালক চলতি দায়িত্ব মো. মমিনুল ইসলাম।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান মাটির দুর্বল গঠনের কারণেই গতকালের ভূমিকম্পে কম্পন বা ঝাঁকুনি বেশি সময় ধরে অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের পর পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মো. মমিনুল ইসলাম বলেন গতকাল যে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার বড় ধরনের ভূমিকম্প হলো সেটার পরে আজকের দুটি ঘটনা মূলত আফটার শক। সাধারণত আফটার শকে আগের মাত্রার চেয়ে অন্তত ১ পয়েন্ট কম মাত্রা হয় তাই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এমন আফটার শক ঘটতে পারে। এ সময় আতঙ্কিত না হয়ে শকের সময় নিরাপদে থাকাটা জরুরি বলে তিনি মত দেন।
রিখটার স্কেলে গতকালের ভূমিকম্পের মাত্রা ৬ এর নিচে থাকলেও এর স্থায়িত্ব ও তীব্রতা বেশি অনুভূত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন গতকাল মাত্রা ৬ এর নিচে হলেও ওয়েভ বা কম্পন বেশি সময় স্থায়ী এবং ঝাঁকি বেশি হওয়ার প্রধান কারণ হলো আমাদের এই অঞ্চলের মাটির গঠন কিছুটা দুর্বল। অপেক্ষাকৃত মাটির গঠন দুর্বল হলে শক বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়।
তিন দফায় এই কম্পনগুলো বাংলাদেশকে পুনরায় ভূমিকম্পের ঝুঁকির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ। ভবিষ্যৎ বিপর্যয় এড়াতে তিনি পরামর্শ দেন যে আমাদের এই অঞ্চল ভূমিকম্পের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ তাই ভবন নির্মাণে অধিক সচেতন হতে হবে ও বিল্ডিং কোড মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি তিনি খোলা মাঠ ও পার্ক সংরক্ষণ করার এবং ভবন সংলগ্ন রাস্তাগুলোকে সুপ্রশস্থ করার ওপর জোর দেন।
কম্পন থামলেও কাটছে না আতঙ্ক বরং প্রাণ বাঁচাতে গিয়েই নতুন বিপদে শিক্ষার্থীরা
দেশে গত ৩৬ ঘণ্টায় তৃতীয় দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত নিচে নামতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শনিবার ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের সময় সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে শামসুন্নাহার হলের তিনজন কুয়েত মৈত্রী হলের একজন বেগম রোকেয়া হলের একজন এবং মাস্টারদা সূর্যসেন হলের একজন আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনই ছাত্রী।
শামসুন্নাহার হলের ছাত্র সংসদের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ইসরাত জাহান সুমনা সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে তাঁর পা ভেঙে যেতে পারে। শামসুন্নাহার হলে আহত অন্য দুইজনকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কুয়েত মৈত্রী হলের একজন শিক্ষার্থীও সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হয়েছেন। বেগম রোকেয়া হলের একজন শিক্ষার্থী আতঙ্কে অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন এবং তাঁকেও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে হাতে ব্যথা পেয়েছেন। এদিন সন্ধ্যায় মাত্র ৭ ঘণ্টার ব্যবধানে আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয় তবে তা ছিল হালকা মাত্রার। এই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল রাজধানী থেকে মাত্র ৩ মাইল দূরে এবং রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। এর আগে শনিবার সকালেও ৩ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছে যার উৎপত্তি ছিল নরসিংদীতে।
উল্লেখযোগ্য যে এর আগে শুক্রবারের ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। গতকালও ঢাবির হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের চারতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে মোট তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছিলেন। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থীও লাফ দিয়ে পা ভেঙেছেন। ওই ঘটনায় তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হন কমপক্ষে ছয় শতাধিক মানুষ। এছাড়া ঢাকার কিছু ভবনে ফাটল এবং হেলে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে।
সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা ও উপকূল অতিক্রমের সম্ভাব্য সময় নিয়ে নতুন তথ্য
ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা নিয়ে ব্রেকিং নিউজ দিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। শনিবার ২২ নভেম্বর নিজের ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত পোস্ট দিয়ে তিনি দেশবাসীকে এই আগাম সতর্কবার্তা জানান।
ওই পোস্টে মোস্তফা কামাল পলাশ লিখেছেন ২২ নভেম্বর পাওয়া সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৫ বা ২৬ নভেম্বর দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে বিশেষ করে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপের দক্ষিণ পাশে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই লঘুচাপটি পর্যায়ক্রমে নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপ ও সর্বশেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। সর্বশেষ আবহাওয়া মডেল বিশ্লেষণ করে তিনি জানান সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে শুরু করে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী যে কোনো স্থানের ওপর দিয়ে উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই আঘাত হানার সম্ভাব্য সময় আগামী ১ থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৩০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষকদের জন্য বিশেষ পরামর্শ দিয়ে তিনি লিখেছেন ডিসেম্বরের ১ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ফলে জমিতে থাকা পাকা আমন ধান কাটা ও মাড়াই করা শেষ করার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। এছাড়া শীতকালীন শাকসবজি চাষিরা সম্ভাব্য এই বৃষ্টিপাতের কথা মাথায় রেখে বীজ বোনা ও জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার জন্যও তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। তবে নভেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত পুরো দেশে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমুদ্রগামী জেলেদের সতর্ক করে এই আবহাওয়াবিদ লিখেছেন নভেম্বরের ২৮ তারিখের পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উত্তাল হওয়া শুরু করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। তাই ৩০ নভেম্বরের মধ্যে উপকূলে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে ২৯ নভেম্বরের পরে নতুন করে সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার জন্যও তিনি জেলেদের সতর্ক করেছেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ প্রসঙ্গে তিনি পর্যটকদের সতর্ক করে লিখেছেন ২৮ নভেম্বরের পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল হতে শুরু করবে। বিশেষ করে ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল থাকার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ এড়াতে এই সময়ে পর্যটন সম্পর্কিত ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ঢাকায় আবারও ভূমিকম্প
ঢাকায় আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শনিবার বিকেল ৬টার কিছু পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কম্পন টের পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি বা উৎস সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। বিস্তারিত শিগগিরই জানানো হবে।
ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলোর তালিকা এবং বিশেষজ্ঞদের ভয়াবহ পরিসংখ্যান
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে এবং এতে ঢাকায় চারজনসহ সারা দেশে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার ২১ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প অনুভূত হয় যা বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই কম্পন সৃষ্টি করে। ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর থেকে চারদিকে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং অনেকের ধারণা এরপর হতে পারে আরও বড় ভূমিকম্প। এই ঝুঁকি বিবেচনায় সমগ্র বাংলাদেশকে মোট ৩টি জোনে ভাগ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে উচ্চ ঝুঁকির আওতাভুক্ত অঞ্চলকে জোন ১ মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা জোন ২ এবং জোন ৩ এর এলাকা নিম্ন ঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রকাশিত মানচিত্রে দেখা যায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা জোন ১ এর আওতায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত। ফল্ট লাইন বা প্লেট বাউন্ডারির কাছাকাছি অঞ্চলগুলো ভূমিকম্পের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। বিশেষ করে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ৯টি জেলা ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল গাজীপুর নরসিংদীর কিছু অংশ পুরো কিশোরগঞ্জ কুমিল্লা বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির নানা এলাকা উচ্চঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে বিবেচিত। অন্যদিকে জোন ৩ এলাকাভুক্ত খুলনা যশোর বরিশাল ও পটুয়াখালীতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম।
রাজধানীজুড়ে প্রায় ২১ লাখ ৪৬ হাজার ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে নগর সংস্থাগুলো। এসব ভবনের বেশিরভাগই নির্মাণ হয়েছে নিয়মকানুন না মেনে পুরোনো নকশায় বা দুর্বল ভিত্তির ওপর। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে রাজধানীতে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে সতর্ক করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন শুক্রবারের ভূমিকম্প ঢাকা থেকে খুব কাছে ও কয়েক দশকের মধ্যে মাত্রা বেশি হওয়ায় অধিকাংশ মানুষ কম্পন অনুভব করেছেন এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি ও জাইকার এক যৌথ জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকায় সাত বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হলে শহরের ৭২ হাজার ভবন ভেঙে পড়বে। এছাড়া ১ লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তৈরি হবে সাত কোটি টন কনক্রিটের স্তূপ।
বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের অবস্থান ইন্ডিয়ান প্লেটে এবং এই প্লেট উত্তরপূর্ব দিকে এগোচ্ছে। সিলেটের উত্তরে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট যেটি দক্ষিণমুখী। এই দুই প্লেট একটি অন্যটিকে চাপ দিচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশের পূর্ব দিকে মিয়ানমার সাবপ্লেটেও সাবডাক্ট হয়েছে এবং উত্তরে ডাউকি ফল্ট আছে। পূর্বে মিয়ানমারের সাগাইং ফল্ট ও মধুপুর ফল্ট থাকায় ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মমিনুল ইসলাম বলেন এবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকার একেবারে কাছেই ছিল ফলে অনুভূত হয়েছে অনেক বেশি। চট্টগ্রামের রাঙামাটি বা খাগড়াছড়িতে যদি ৭ মাত্রার ওপরেও ভূমিকম্প হয় তাহলে ঢাকায় এতটা ঝাঁকুনি অনুভূত হয় না। তিনি সতর্ক করে বলেন এই ভূমিকম্পের স্থায়িত্বকাল আর ৫ থেকে ৭ সেকেন্ড বেশি হলেই ঢাকার অনেক ভবনই ধসে পড়ত। এ ধরনের ভূমিকম্পের সম্মুখীন ঢাকা ও আশপাশের এলাকা আগে কখনো হয়নি। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন যে সাধারণভাবে মনে হতে পারে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প থেকে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প মাত্র এক পয়েন্ট বেশি কিন্তু বিষয়টি মোটেও এমন নয়। ৫ মাত্রার চেয়ে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পের কম্পনের প্রবণতা ১০ গুণ বেশি। এখানে প্রতিটি ভগ্নাংশ মানে এর তীব্রতা তত গুণ বেশি। ফলে এই ভূমিকম্পের প্রবণতা বা তীব্রতা অন্তত ১০০ কিলোমিটার রেডিয়াসে থাকে।
পাঠকের মতামত:
- শিরোপা জয়ের রেসে আজ বাংলাদেশ নাকি পাকিস্তান কার পাল্লা ভারীে
- অ্যাপোনিয়ার পর এবার তিশার বিরুদ্ধে কলকাতার প্রযোজকের গুরুতর অভিযোগ
- চট্টগ্রাম ১ আসনে বিএনপির নুরুল আমিন নাকি জামায়াতের সাইফুর রহমান কার পাল্লা ভারী
- রমজান ছাড়াও সারা বছর খেজুর খাওয়ার যে সাতটি বড় স্বাস্থ্যগুণের কথা বলছেন পুষ্টিবিদরা
- ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়: তারেক রহমান
- ভূমিকম্পের আগাম বার্তা পেতে স্মার্টফোনের যে অপশনটি এখনই চালু করা জরুরি
- ঘন ঘন ভূমিকম্পের আতঙ্কের মধ্যেই এবার সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা
- গান নিয়ে মন্তব্যের জেরে বাউল ও তৌহিদি জনতার সংঘর্ষে রণক্ষেত্র মানিকগঞ্জ
- লা লিগায় উত্তেজনার রাত: শীর্ষে ফেরার মিশনে রিয়াল মাদ্রিদ, টানা পঞ্চম জয়ের খোঁজে আতলেতিকো!
- রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত: রিজভী
- ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে এক ভবনের ওপর হেলে পড়ল আরেকটি ভবন,এলাকায় চরম আতঙ্ক
- গায়ের রং ও গঠন নিয়ে সহপাঠীদের বিদ্রূপের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের করুণ পরিণতি
- টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় আবারও কেঁপে উঠল এশিয়ার দুই দেশ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শিক্ষক হয়ে গালিগালাজ করায় হাদির কড়া সমালোচনা করলেন নীলা
- নৌকার ভোট বাগে আনতে বিএনপি ও জামায়াতের যত কৌশল
- শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বড় দুঃসংবাদ
- বড় ভূমিকম্প হলে তা মোকাবিলা নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ৩০০ আসনের জন্য ১৪৮৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে এনসিপি শুরু করল বিশেষ কার্যক্রম
- ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ৫৬টি দেশের পক্ষ থেকে যে বড় বার্তা পেল নির্বাচন কমিশন
- দাদা-দাদী-নানা-নানীর অতিরিক্ত আদরে বাড়ছে 'সিক্স পকেট সিনড্রোম', জানুন বিস্তারিত
- ফোবিয়া: সহজে চেনা, সময়মতো চিকিৎসা জরুরি
- বিশ্বের ১০ দামী খাবার, চোখ কপালে তোলার মতো মূল্য
- কোরআনের আলোকে আল্লাহর রহমত পাওয়ার ১০ উপায়
- আজ থেকেই যেসব গ্রাহকসেবা বন্ধ বাংলাদেশ ব্যাংকের
- শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না
- সিএসই তে মিউচুয়াল ফান্ড বাজারে ধাক্কা
- ইস্টার্ন পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের ব্যতিক্রমী ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ফু-ওয়াং সিরামিকের Q1 ফলাফলে চাপের প্রতিফলন
- ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের EPS তিনগুণ বৃদ্ধি
- ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির Q1 ফলাফলে চমক
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ১৩ মিউচুয়াল ফান্ডের NAV হালনাগাদ
- যতবার গাজা যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভয়ংকর রেকর্ড
- "প্রশাসন আমাদের কথায় গ্রেফতার করবে, মামলা করবে।"
- গ্যাসের দাম বাড়ছে আজ!
- বহুমুখী যেসব কর্মসূচিতে রাজধানী সরগরম
- রবিবারের নামাজের ওয়াক্তনামা এক নজরে
- বায়ুদূষণে আবারও বিপজ্জনক ঢাকার বাতাস
- টিভিতে ক্রিকেট–ফুটবলসহ একঝাঁক বড় ম্যাচ
- বহিষ্কৃত ১০ নেতা ফের বিএনপির দলে
- ভারতের চিকেন নেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতার নির্দেশ
- শ্যাম্পু ছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে খুশকি কমানোর সহজ ও ঘরোয়া উপায়
- ভূমিকম্পের পর আগামী ৭২ ঘণ্টাকে কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
- সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সুদান
- স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন কি না সেই প্রশ্নের জবাবে যা জানালেন রুমিন ফারহানা
- কম্পন থামলেও কাটছে না আতঙ্ক বরং প্রাণ বাঁচাতে গিয়েই নতুন বিপদে শিক্ষার্থীরা
- কাগজে কলমে যুদ্ধবিরতি থাকলেও গাজার বাস্তব চিত্র দেখে শিউরে উঠছে বিশ্ব
- বাংলাদেশ–ভারত লড়াইয়ে উত্তাপ সর্বোচ্চে
- আজকের ভূমিকম্প আমাদের কী শিক্ষা দিচ্ছে: একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ভয়ংকর ঝুঁকিতে দেশের তিন বড় শহর: মাটির নিচ থেকে আসছে বড় বিপদের বার্তা
- ইতিহাস ভারতের, বর্তমান বাংলাদেশের: পরিসংখ্যান ও শক্তির বিচারে কে এগিয়ে?
- ফায়ার সার্ভিসে ফোনের বন্যা, হেলে পড়েছে কয়েকটি ভবন
- যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের
- রাকিবের দুর্দান্ত দৌড়, মোরসালিনের ফিনিশিং: শুরুতেই ব্যাকফুটে ভারত
- ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলোর তালিকা এবং বিশেষজ্ঞদের ভয়াবহ পরিসংখ্যান
- প্রপাগান্ডা আর ষড়যন্ত্র পেরিয়ে জনতার কাতারে: জন্মদিনে তারেক রহমানকে নিয়ে ভাবনা
- ভূমিকম্পের পর আগামী ৭২ ঘণ্টাকে কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
- হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?
- তারকাদের বাদ দিয়েই বাংলাদেশের মুখোমুখি ভারত, কোচের কড়া সিদ্ধান্তে তোলপাড়
- ঢাকার বংশালে ভূমিকম্পে ৩ জনের মৃত্যু হলো যেভাবে
- সোমবার রাজধানীর বাজার বন্ধের পূর্ণ তালিকা
- ২৫০ বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ: বাংলাদেশ কি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে?








