অ্যালার্জি থেকে মুক্তি চান? খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ৫ খাবার

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৪:৩৪:৪৫
অ্যালার্জি থেকে মুক্তি চান? খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ৫ খাবার
ছবিঃ সংগৃহীত

অ্যালার্জি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি অনেক সময় খাদ্যনালি, শ্বাসনালি বা চোখের মতো স্পর্শকাতর অঙ্গে দেখা দিলে মারাত্মক হতে পারে। অ্যালার্জির সঠিক কারণ জানা গেলে তার চিকিৎসা সম্ভব। তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকলে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা সম্ভব। অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়ে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যুক্ত করা জরুরি।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, অ্যালার্জি প্রতিরোধে ৫টি কার্যকর খাদ্যাভ্যাস:

১. ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল ও সবজি: ভিটামিন ‘সি’ একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি হিস্টামিন নামক রাসায়নিকের নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করে, যা অ্যালার্জির উপসর্গ তৈরি করে।

যেগুলো খাবেন: আমলকী, কমলালেবু, স্ট্রবেরি, কিউই, পেঁপে, ক্যাপসিকাম এবং ব্রকোলির মতো ফল ও সবজি।

২. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছ: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (বিশেষ করে EPA এবং DHA) শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতেও কার্যকর।

যেগুলো খাবেন: স্যালমন, টুনা, ম্যাকেরেল বা অন্যান্য তৈলাক্ত সামুদ্রিক মাছ। উদ্ভিজ্জ উৎস হিসেবে আখরোট ও ফ্ল্যাক্সসিড (তিসি বীজ)।

৩. প্রোবায়োটিকস: প্রোবায়োটিক হলো উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে। অ্যালার্জি প্রতিরোধে অন্ত্রের সুস্থতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

যেগুলো খাবেন: টকদই, কেফির এবং বাটারমিল্ক।

৪. কুয়ারসেটিন যুক্ত খাবার: কুয়ারসেটিন হলো এক ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-হিস্টামিন হিসেবে কাজ করে এবং অ্যালার্জির কারণে হওয়া প্রদাহ কমায়।

যেগুলো খাবেন: পেঁয়াজ (বিশেষত লাল পেঁয়াজ), আপেল (খোসাসহ), আঙুর, বেরি, ব্রকোলি এবং গ্রিন টি।

৫. হলুদ: হলুদে থাকা প্রধান সক্রিয় উপাদান কারকিউমিন। এটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-অ্যালার্জিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত।

যেভাবে খাবেন: কাঁচা হলুদের সঙ্গে চারটি গোলমরিচের দানা মিশিয়ে খালিপেটে খেতে পারেন।

সতর্কতা

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই খাবারগুলো অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও, এগুলো কোনো চিকিৎসার বিকল্প নয়। গুরুতর অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


মাইগ্রেনের তীব্রতা কমাতে দৈনন্দিন জীবনে যে পরিবর্তন আনা জরুরি

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৫ ১৯:১৯:০৩
মাইগ্রেনের তীব্রতা কমাতে দৈনন্দিন জীবনে যে পরিবর্তন আনা জরুরি
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রতিদিনের জীবনে হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা আলো সহ্য না হওয়া এবং কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া মাইগ্রেন হাজারো মানুষের জীবন একেবারে থামিয়ে দেয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন এই যন্ত্রণার পেছনে শুধু স্ট্রেস বা ঘুমের অভাব নয় বরং শরীরের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ভিটামিনের ঘাটতিই হতে পারে প্রধান অপরাধী। নতুন গবেষণা জানাচ্ছে ভিটামিন ডি রাইবফ্লাভিন ম্যাগনেশিয়াম ও কোএনজাইম কিউ১০ এর মাত্রা কমে গেলেই মাইগ্রেনের ঘনত্ব তীব্রতা ও সময়কাল নাটকীয়ভাবে বেড়ে যেতে পারে।

গবেষকদের মতে ভিটামিন ডি মস্তিষ্কে ব্যথা সংক্রান্ত সংকেত নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর অভাবে প্রদাহ বৃদ্ধি পায় এবং নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায় যা সরাসরি মাইগ্রেন ট্রিগার করে। বিশেষত যাদের ভিটামিন ডি এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাদের মধ্যে মাইগ্রেন পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি অনেক বেশি। জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি গ্রহণের পরামর্শ দেয়।

ম্যাগনেশিয়াম শরীরের বৈদ্যুতিক সংকেত ও স্নায়ুকোষের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এর ঘাটতি হলে স্নায়ু অতিরিক্ত উদ্দীপিত হয় এবং ফলে মাইগ্রেনের প্রবণতা বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত যথেষ্ট ম্যাগনেশিয়াম গ্রহণ করলে ব্যথার ঘনত্ব ও তীব্রতা কমে আসতে পারে। নারীদের জন্য দৈনিক ৩১০ থেকে ৩২০ মিলিগ্রাম এবং পুরুষদের জন্য ৪০০ থেকে ৪২০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম সুপারিশ করা হয়।

রাইবফ্লাভিন বা ভিটামিন বি২ কোষের মাইটোকন্ড্রিয়াকে শক্তি যোগায়। গবেষণা দেখায় মাইটোকন্ড্রিয়ার কার্যকারিতা কমে গেলে মাইগ্রেনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। রাইবফ্লাভিন সাপ্লিমেন্টেশন অনেক ক্ষেত্রে মাথাব্যথার পুনরাবৃত্তি কমাতে সাহায্য করে। নারীদের জন্য প্রতিদিন ১ দশমিক ১ মিলিগ্রাম এবং পুরুষদের জন্য ১ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম রাইবফ্লাভিন প্রয়োজন। তবে চিকিৎসা গবেষণায় ব্যবহৃত ডোজ আরও বেশি তাই সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

কোএনজাইম কিউ১০ এর ঘাটতি কোষের শক্তি উৎপাদন কমিয়ে দেয় যা মাইগ্রেনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সীমিত গবেষণায় দেখা গেছে এই সাপ্লিমেন্ট কিছু মানুষের মাইগ্রেন প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে তবে এ নিয়ে আরও বড় গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

আন্তর্জাতিক হেডেক সোসাইটি মাইগ্রেনকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। অরা ছাড়া মাইগ্রেনে ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা মাথাব্যথা আলো শব্দ সংবেদনশীলতা ও বমিভাব হয়। অন্যদিকে অরাযুক্ত মাইগ্রেনে অস্থায়ী স্নায়ুবিক সমস্যা দৃষ্টি ভাষা বা সংবেদনশীলতায় ব্যাঘাত ঘটে। ট্রিগার হতে পারে বিশেষ খাবার কম পানি চাপ তীব্র গন্ধ আবহাওয়া পরিবর্তন হরমোন অনিয়মিত ঘুম বা পুষ্টির ঘাটতি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন সমস্যা বাড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি নিয়মিত ঘুম সময়মতো খাবার পর্যাপ্ত পানি হালকা ব্যায়াম এবং চাপ কমানোর অভ্যাস মাইগ্রেন কমাতে বড় ভূমিকা রাখে। যোগা বা ধ্যান এবং আকুপাংচার বা সাইকোথেরাপিও কিছু ক্ষেত্রে উপকার দিতে পারে। মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ওষুধের পাশাপাশি ভিটামিন ও খনিজের ভারসাম্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনধারার পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


ক্যানসার থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় আনুন ৫টি সহজ পরিবর্তন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৪ ১৮:৫৫:২৪
ক্যানসার থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় আনুন ৫টি সহজ পরিবর্তন
ছবিঃ সংগৃহীত

ক্যানসার শব্দটি শুনলেই অনেকের মনে ভয় কাজ করে। সাম্প্রতিক সময়ে রোগটি যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে তাতে উদ্বেগ বাড়াই স্বাভাবিক। তবে সুখবর হলো ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। গবেষণা বলছে আমাদের জীবনযাপন খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন অভ্যাসই এই রোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলোতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারলে ক্যানসারের সম্ভাবনাও কমে যায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বিখ্যাত চিকিৎসক ডক্টর এরিক বার্গের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রকাশ করেছে যা নিয়মিত মেনে চললে ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ডক্টর এরিক প্রথমেই ব্যাখ্যা করেন ক্যানসার আসলে কীভাবে হয়। তিনি বলেন ক্যানসার বুঝতে হলে প্রথমে জানতে হবে কীভাবে এটি তৈরি হয়। আমাদের শরীরের কোষে থাকা মাইটোকন্ড্রিয়া যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন কোষের স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এই নিয়ন্ত্রণহীন কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে আর এটাই ক্যানসার। তাই ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য মাইটোকন্ড্রিয়াকে সুস্থ রাখা সবচেয়ে জরুরি।

ক্যানসার দূরে রাখতে ডক্টর এরিক পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রথমত তিনি পরিশোধিত খাবার বাদ দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন। ডক্টর এরিকের মতে ক্যানসার প্রতিরোধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো খাদ্যতালিকা থেকে পরিশোধিত খাবার বাদ দেওয়া। যেমন পরিশোধিত চিনি পরিশোধিত তেল ও স্টার্চযুক্ত খাবার ইত্যাদি। এসব খাবার শরীরে প্রদাহ বাড়ায় এবং কোষের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

দ্বিতীয়ত তিনি নিয়মিত রোদ পোহানোর পরামর্শ দিয়েছেন। ডাক্তাররা বলেন যত বেশি সম্ভব রোদ পোহানো উচিত। কারণ শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হবে এবং ফলে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। শীতকালে যদি রোদ না পাওয়া যায় তবে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মনে রাখতে হবে ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য এটি একটি অত্যন্ত জরুরি ভিটামিন।

তৃতীয়ত উপবাস বা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রুটিনে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যেখানে শরীরকে দীর্ঘ সময় ধরে উপবাসের অবস্থায় রাখা হয়। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী উপবাসও করা যেতে পারে। উপবাস মাইটোকন্ড্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। এ ক্ষেত্রে ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী সিয়াম পালন একটি শ্রেষ্ঠ উপায় হতে পারে।

চতুর্থত নিয়মিত ব্যায়াম করার কথা বলা হয়েছে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে মাইটোকন্ড্রিয়া সুস্থ থাকে। শুধু তাই নয় ব্যায়াম ক্ষতিগ্রস্ত মাইটোকন্ড্রিয়াকেও শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।

পঞ্চমত মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডক্টর এরিক। তিনি বলেন যতটা সম্ভব মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন। এর জন্য দীর্ঘক্ষণ হাঁটতে যাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো জরুরি। এছাড়া আশেপাশে যারা বিষাক্ত মানুষ আছেন তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখাও মানসিক প্রশান্তির জন্য প্রয়োজন।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


রমজান ছাড়াও সারা বছর খেজুর খাওয়ার যে সাতটি বড় স্বাস্থ্যগুণের কথা বলছেন পুষ্টিবিদরা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৮:২৫:৫৯
রমজান ছাড়াও সারা বছর খেজুর খাওয়ার যে সাতটি বড় স্বাস্থ্যগুণের কথা বলছেন পুষ্টিবিদরা
ছবিঃ সংগৃহীত

সৌদি আরবের খেজুর আমাদের দেশে সারা বছর পাওয়া যায় তবে সাধারণত রমজান মাস ছাড়া এর জনপ্রিয়তা বা কদর কিছুটা কম দেখা যায়। রমজানে এর চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ কারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সেহরি ও ইফতারে খেজুরকে অপরিহার্য মনে করেন। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলছেন শুধু রোজার মধ্যেই নয় বরং এই ছোট্ট ফলের মধ্যে লুকিয়ে আছে এমন সাতটি জাদুকরী স্বাস্থ্যগুণ যা দৈনন্দিন জীবনেও মানুষকে অনেক জটিল রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।

প্রথমত খেজুর দ্রুত শক্তি ফেরত দিতে অসামান্য ভূমিকা রাখে। খেজুরে থাকে প্রাকৃতিক চিনির উৎস গ্লুকোজ ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ। ক্লান্তি কাটাতে শরীরের শক্তি বাড়াতে এবং কর্মক্ষমতা পুনরুদ্ধারে এটি অত্যন্ত কার্যকর। মাত্র এক দুটি খেজুরই একজনকে তাৎক্ষণিক উদ্দীপনা ও সতেজতা দিতে পারে।

দ্বিতীয়ত এটি রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। যারা অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত খেজুর খেলে উপকার পাবেন। খেজুর রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে যা দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও অক্সিজেন সরবরাহের জন্য অপরিহার্য।

তৃতীয়ত খেজুর কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। খেজুরে কোনো ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা অতিরিক্ত চর্বি নেই। ফলে এটি নিয়মিত খেলে শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে এবং অন্যান্য চর্বি সংকুল খাবারের চাহিদাও কমিয়ে আনে।

চতুর্থত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেজুর বেশ কার্যকরী। কয়েকটি খেজুর খেলে ক্ষুধা কমে যায়। এতে অতিরিক্ত খাবারের প্রবণতা কমে অথচ শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি ও প্রাকৃতিক শর্করা পাওয়া যায়। ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এটি একটি সহজ ও কার্যকরী উপায় হিসেবে বিবেচিত।

পঞ্চমত এটি হজম শক্তি বাড়ায়। বেশি খাওয়াদাওয়ার পরে হজমে সমস্যা হলে খেজুর হজমে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি পাকস্থলীর কার্যক্রমকে প্রাকৃতিকভাবে সমর্থন করে এবং খাবারের পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে।

ষষ্ঠত কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া প্রতিরোধে খেজুরের জুড়ি নেই। খেজুরে থাকা ফাইবার ও প্রাকৃতিক উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে এবং নিয়মিত ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি পাচন প্রক্রিয়াকে সুস্থ রাখার জন্য খুবই কার্যকর।

সপ্তমত ক্যানসার প্রতিরোধে খেজুর সহায়ক ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে খেজুর বিশেষ করে পেটের ক্যানসার প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের ক্যানসারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রতিদিন কয়েকটি খেজুর খাওয়া মানেই শুধু রমজানে নয় বরং সারা বছর সুস্থতা বজায় রাখা। ছোট এই ফলটিতে লুকিয়ে আছে বড় স্বাস্থ্যগত সম্ভাবনা যা শরীরকে শক্তিশালী রোগমুক্ত ও সতেজ রাখার জন্য অত্যন্ত জরুরি।


ফোবিয়া: সহজে চেনা, সময়মতো চিকিৎসা জরুরি

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৩:০৩:২৫
ফোবিয়া: সহজে চেনা, সময়মতো চিকিৎসা জরুরি
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক সমাজে ফোবিয়া এখন কেবল ব্যক্তিগত মানসিক অস্বস্তি নয় বরং এমন একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট, যা কোটি মানুষের দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করছে। ফোবিয়া একটি নির্দিষ্ট ধরণের অযৌক্তিক ভয়, যা বাস্তব বিপদের তুলনায় অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তীব্র হয় এবং আচরণ, সম্পর্ক ও সামাজিক অংশগ্রহণে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থাগুলোর পরিসংখ্যান বলছে, পৃথিবীতে আনুমানিক ১০ জনের মধ্যে ১ জন কোনো না কোনো ধরনের ফোবিয়া নিয়ে বেঁচে আছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে করা দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় দেখা গেছে ফোবিয়া নারী-পুরুষ উভয়কে প্রভাবিত করলেও নারীদের মধ্যে এর হার তুলনামূলক বেশি।

ফোবিয়ার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জেনেটিক প্রবণতা, অতীতের আঘাতমূলক অভিজ্ঞতা, শৈশবের মানসিক পরিবেশ এবং মস্তিষ্কের অতিসক্রিয় ‘আলার্ম সিস্টেম’—এই সবকিছু মিলেই ফোবিয়া তৈরি হয়। ভয় নিয়ন্ত্রণকারী মস্তিষ্কের অংশ Amygdala অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে গেলে সাধারণ ঘটনা থেকেও ভয় উস্কে ওঠে।

স্পেসিফিক ফোবিয়া: বস্তুভিত্তিক ভয় যা শৈশবেই শুরু হয়

স্পেসিফিক ফোবিয়া সবচেয়ে সাধারণ এবং সবচেয়ে সহজে শনাক্তযোগ্য। শিশুদের মধ্যে যেমন মাকড়সা, বজ্রপাত বা অন্ধকার–ভীতি স্বাভাবিক, কিন্তু যখন তা বয়সের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণযোগ্য না হয়ে ওঠে তখনই তা ফোবিয়ার রূপ নেয়।

প্রাণীভীতি (Animal Phobias)

বিশ্বজুড়ে মাকড়সা (Arachnophobia), সাপ (Ophidiophobia), কুকুর (Cynophobia) ও পোকামাকড়–ভীতি সবচেয়ে সচরাচর দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের বিবর্তনীয় স্মৃতির সঙ্গে এসব ভীতি জড়িয়ে আছে।

প্রাকৃতিক পরিবেশভীতি (Natural Environment Phobias)

উচ্চতা, বজ্রপাত, গভীর পানি, অন্ধকার—এই সকল প্রাকৃতিক পরিবেশভীতি সাধারণত কোন ট্রমাটিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কিত।

রক্ত-ইনজেকশন-ইনজুরি ভীতি (BII Phobias)

এই শ্রেণিতে থাকা ব্যক্তিরা চিকিৎসা বা রক্ত সম্পর্কিত পরিস্থিতিকে ভয় করেন। কেউ কেউ শরীরে মেডিকেল পরীক্ষা করতে পারেন না শুধুমাত্র এই অস্বস্তিকর ভয়ের কারণে।

পরিস্থিতিভিত্তিক ফোবিয়া (Situational Phobias)

বদ্ধ জায়গা, বিমানযোগে ভ্রমণ বা গাড়ি চালানোর সময় আতঙ্ক এগুলোই এই শ্রেণির উদাহরণ। এসব ফোবিয়া প্রায়ই ঘাম, মাথা ঘোরা বা অস্বস্তির মতো শারীরিক লক্ষণ সৃষ্টি করে।

কমপ্লেক্স ফোবিয়া: দীর্ঘমেয়াদী ভয়, যা দৈনন্দিন জীবনকেই রূপান্তরিত করেসোশ্যাল ফোবিয়া (Social Anxiety Disorder)

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোশ্যাল অ্যানজাইটি এখন তরুণ সমাজে সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে। ভুল করার ভয়, অন্যের বিচার–শঙ্কা এবং সামাজিক পরিবেশে অস্বস্তি এই সব মিলে ব্যক্তিকে একা করে দেয়।শিক্ষাজীবনে পিছিয়ে পড়া, চাকরিক্ষেত্রে সমস্যা, জনসমক্ষে কথা বলার অক্ষমতা এসবই এর বাস্তব ফলাফল।

এগোরাফোবিয়া: চারদিকেই যেন ফাঁদ

অনেকের ধারণা, এটি শুধু খোলা জায়গার ভয় কিন্তু বাস্তবে এটি আরও বিস্তৃত। ভিড়, দোকানপাট, গণপরিবহন, লিফট, এমনকি নিজের বাড়ির বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রেও ভয় দেখা দিতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত এগোরাফোবিয়া সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তৈরি করতে পারে, তাই সহায়তা অত্যন্ত জরুরি।

ফোবিয়ার সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব

ফোবিয়া শুধু ব্যক্তিগত মানসিক সমস্যা নয় এটি জাতীয় উৎপাদনশীলতা ও সামাজিক মঙ্গলেও প্রভাব ফেলে। অনেক দেশে ফোবিয়া-সংশ্লিষ্ট মানসিক সমস্যার কারণে

  • কর্মক্ষমতা কমে যায়
  • অনুপস্থিতি বাড়ে
  • সিদ্ধান্ত-গ্রহণ ক্ষমতা কমে
  • পরিবারে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক সমস্যাকে লজ্জার বিষয় ভেবে চিকিৎসা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

চিকিৎসাব্যবস্থা এবং আশার আলো

ফোবিয়া সম্পূর্ণ চিকিৎসাযোগ্য এটাই মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত চিকিৎসাগুলো অত্যন্ত কার্যকর:

  • CBT (Cognitive Behavioral Therapy)
  • এক্সপোজার থেরাপি
  • মাইন্ডফুলনেস ট্রেনিং
  • পেশাদার কাউন্সেলিং
  • জরুরি সহায়তা সেবা

GAD, Panic, PTSD–র মতো সমস্যার সাথে ফোবিয়া যুক্ত থাকলে সমন্বিত চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যেমন NIMH, Mind UK ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো ফোবিয়া মোকাবেলায় ধাপে ধাপে গাইডলাইন ও বিশেষজ্ঞ সহায়তা দেয়।


ওষুধ না খেয়েও মাত্র তিনটি সহজ ব্যায়ামে যেভাবে কমবে পিঠের ব্যথা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ১১:০৫:১৫
ওষুধ না খেয়েও মাত্র তিনটি সহজ ব্যায়ামে যেভাবে কমবে পিঠের ব্যথা
ছবিঃ সংগৃহীত

সারাদিন বসে কাজ করলে হাড়ের ক্ষয়জনিত কারণে অনেকেরই পিঠ ও কোমরে ব্যথা হয়। এছাড়া ভুলভাবে ভারি জিনিস তোলা ব্যায়ামের অভাব এবং পেশির সমস্যার কারণেও এ ধরনের ব্যথা হয়ে থাকে। এই ব্যথা যদি দিনের পর দিন হতেই থাকে তাহলে ভোগান্তির শেষ থাকে না। বিশেষ করে কর্মব্যস্ত দিনের শেষে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথাও বাড়ে। তাই চিকিৎসকরা ওষুধ খাওয়ার আগে কয়েকটি সহজ ব্যায়ামের অভ্যাস করার পরামর্শ দেন যাতে পিঠের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

প্রথম ব্যায়ামটির জন্য মাটিতে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। এরপর একটি হাঁটু দুই হাত দিয়ে চেপে বুকের কাছে নিয়ে আসতে হবে। একটি করে পা ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড করে ওই অবস্থানে ধরে রাখতে হবে। পা ভাঁজের ফলে কোমরে চাপ তৈরি হবে এবং তার ফলে ব্যথার জায়গার পেশি শিথিল হবে। এতে সময়ের সঙ্গে ব্যথাও কমবে।

আরেকটি কার্যকর উপায় হলো চিৎ হয়ে শুয়ে একটি পা চেয়ারে বসার ভঙ্গিতে ভাঁজ করতে হবে। দুই হাত দেহের দুই দিকে কাঁধের সমান্তরালে ছড়িয়ে দিতে হবে। ডান পা হলে বাম দিকে এবং বিপরীতে ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ড করে রাখতে হবে। এই ব্যায়ামের ফলে মেরুদণ্ডের আশপাশের পেশি সম্প্রসারিত হয় এবং শ্রোণিদেশের সঞ্চালন কোমরের ওপর তৈরি চাপ কমাতে সাহায্য করে।

পিঠ ও কোমরের ব্যথার উপশমে ক্যাট কাউ স্ট্রেচ বেশ উপকারী। মাটিতে দুই হাত রেখে এবং হাঁটু মুড়ে বিড়ালের ভঙ্গিতে বসতে হবে। এরপর পেটে চাপ দিয়ে একবার পিঠ ওপরের দিকে ফোলাতে হবে। ১০ সেকেন্ড ওই অবস্থানে থাকার পর আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসতে হবে। এই ব্যায়ামটি মেরুদণ্ডসহ আশপাশের পেশির ভার লাঘব করে এবং তার ফলে ব্যথাও কমে যায়।


রক্তশূন্যতা দূর করতে চান? শীতের ৫ খাবারেই মিলবে সমাধান

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২০ ২১:২৬:৩৭
রক্তশূন্যতা দূর করতে চান? শীতের ৫ খাবারেই মিলবে সমাধান
ছবিঃ সংগৃহীত

শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে মানুষ দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে, মাথা ঘোরা ও শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায় ভোগে। এছাড়া নখ ভেঙে যাওয়া কিংবা ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণও দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আয়রন কেবল রক্ত তৈরির কাজই করে না, বরং শরীরে শক্তি উৎপাদন, মস্তিষ্কের স্নায়ু সচল রাখা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতেও এটি অপরিহার্য। শীতের এই মৌসুমে হাতের কাছেই এমন কিছু শাকসবজি পাওয়া যায়, যা প্রাকৃতিকভাবেই শরীরে আয়রনের অভাব পূরণ করতে সক্ষম। নিয়মিত এসব খাবার খেলে রক্তশূন্যতার ঝুঁকি কমে এবং আলাদা করে ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয় না।

শীতকালে শরীর সুস্থ রাখতে এবং আয়রনের ঘাটতি মেটাতে খাদ্যতালিকায় নিচের ৫টি খাবার রাখা অত্যন্ত জরুরি

পালং শাক

শীতের সবজির মধ্যে পালং শাককে আয়রনের খনি বলা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের পাশাপাশি প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে। প্রতিদিনের খাবারে স্যুপ, সালাদ, ডাল, তরকারি কিংবা স্মুদির মাধ্যমে খুব সহজেই পালং শাক যুক্ত করা যায়। অল্প পরিমাণে খেলেও শরীর এর সুফল পায়।

বেথুয়া শাক

একসময় শুধু গ্রামাঞ্চলে জনপ্রিয় থাকলেও পুষ্টিগুণের কারণে বেথুয়া শাক এখন শহরের বাজারেও সহজলভ্য। এই শাকে ফেনোলিক্স, ফ্লেভোনয়েডস, প্রোটিন এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীরে আয়রনের অভাব দূর করতে দারুণ কার্যকর। রায়তা, পরোটা, ভাজি কিংবা ডালের সঙ্গে রান্না করে বেথুয়া শাক খাওয়া হলে এর পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।

গাজর ও মুলোর পাতা

শীতকালে গাজর ও মুলো প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই খাওয়া হয়, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এর পাতা ফেলে দেন। অথচ পুষ্টিবিদদের মতে, এই ফেলে দেওয়া পাতাতেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রনসহ নানা খনিজ উপাদান। গাজর বা মুলোর পাতা ফেলে না দিয়ে সেগুলো দিয়ে শাক ভাজি, তরকারি, স্যুপ বা ভর্তা তৈরি করে খাওয়া যায়। নিয়মিত এই পাতা খাওয়ার অভ্যাস রক্তশূন্যতার ঝুঁকি কমায়।

মটরশুঁটি

শীতের বাজারে পাওয়া টাটকা মটরশুঁটিও আয়রনের চমৎকার উৎস। মটর-পনির, স্যুপ, খিচুড়ি বা শুধুই সেদ্ধ করে মটরশুঁটি খাওয়া যায়। প্রতিদিন এক বাটি মটরশুঁটি খাদ্যতালিকায় রাখলে তা আয়রনের ঘাটতি পূরণে এবং অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ব্রকোলি

আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় ব্রকোলিও বেশ এগিয়ে। ব্রকোলিতে আয়রনের পাশাপাশি প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণ করতে বিশেষ সহায়তা করে, তাই এটি স্বাস্থ্যের জন্য দ্বিগুণ উপকারী। ব্রকোলি ভাপিয়ে, অল্প তেলে ভেজে, স্যুপ বা সালাদ হিসেবে খেলে এর পুষ্টিগুণ বজায় থাকে এবং হজমেও সুবিধা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের এই সবজিগুলোতে ভিটামিন সি থাকায় তা আয়রন শোষণ বাড়ায়, দেহের শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং ত্বক ও চুলের সমস্যা কমায়। তাই যারা নিয়মিত ক্লান্তি বা দুর্বলতায় ভুগছেন, তারা সাপ্লিমেন্ট বা ওষুধ গ্রহণের আগে শীতের এই প্রাকৃতিক খাবারগুলো ডায়েটে যুক্ত করলে সুস্থ ও সতেজ থাকতে পারবেন।


ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে যেসব খাবার: থাইরয়েড রোগীদের জন্য জরুরি পরামর্শ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২০ ১২:৩৭:৩২
ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে যেসব খাবার: থাইরয়েড রোগীদের জন্য জরুরি পরামর্শ
ছবিঃ সংগৃহীত

মানবদেহের গলার সামনের দিকে অবস্থিত প্রজাপতি আকৃতির থাইরয়েড গ্রন্থিটি আমাদের শরীরের বৃদ্ধি, বিপাকক্রিয়া, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হার্ট রেট এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই গ্রন্থিতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হয়। তবে অনেকেই জানেন না যে, ওষুধের পাশাপাশি কিছু নির্দিষ্ট খাবার খেলে তা শরীরের জন্য মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এবং ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে দিতে পারে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনের তথ্য অনুযায়ী, থাইরয়েডের ওষুধ চলাকালীন খাদ্যাভ্যাসে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

গবেষণায় দেখা গেছে, সয়াবিন এবং সয়াজাতীয় খাবার থাইরয়েডের ওষুধের কাজে বাধা দেয়। সয়াবিন, সয়া মিল্ক কিংবা টফুর মতো খাবারগুলো ওষুধের শোষণক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ফলে রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি ধীর হয়ে যায়। একইভাবে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারও এই ওষুধের সঙ্গে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট বা অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার যেমন দুধ, দই বা ব্রোকলি ওষুধের কাছাকাছি সময়ে খাওয়া উচিত নয়। চিকিৎসকরা সাধারণত ওষুধ খাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর এসব খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

সকালের নাশতার সঙ্গে বা ওষুধ খাওয়ার পরপরই কফি পান করার অভ্যাস অনেকেরই আছে, যা থাইরয়েড রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কফি থাইরয়েডের ওষুধকে শরীরে সঠিকভাবে শোষিত হতে বাধা দেয়। এছাড়া আয়রন সমৃদ্ধ খাবার বা আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। রেড মিট বা লাল মাংসের মতো উচ্চ আয়রনযুক্ত খাবার ওষুধের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি আঁশ বা ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন—গোটা শস্য, ডাল এবং দানাশস্যও ওষুধের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ফলের রসের ক্ষেত্রে আঙুরের রস এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এটি ওষুধের শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

খাদ্যতালিকা থেকে অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার বাদ দেওয়া থাইরয়েড রোগীদের জন্য জরুরি। দুধ, মাখন ও চিজের মতো দুগ্ধজাত খাবার হরমোনের ভারসাম্যে অতিরিক্ত প্রভাব ফেলতে পারে, তাই এগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। এর বাইরেও এমন কিছু সাধারণ খাবার আছে যা শরীরে কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যেমন—রান্না করা গাজর, পাকা কলা, শুকনা ফল, মধু, ময়দার রুটি, সাদা ভাত, আলু এবং সাদা পোস্ত। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে সুস্থতার জন্য ওষুধের পাশাপাশি এই ধরনের খাবারগুলো সীমিত পরিমাণে খাওয়াই উত্তম।


বিড়াল পালনের সঙ্গে মানসিক রোগের ঝুঁকি, আন্তর্জাতিক গবেষণায় নতুন ইঙ্গিত

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২০ ১০:১৪:২১
বিড়াল পালনের সঙ্গে মানসিক রোগের ঝুঁকি, আন্তর্জাতিক গবেষণায় নতুন ইঙ্গিত
ছবিঃ সংগৃহীত

বিড়াল পোষার সঙ্গে স্কিজোফ্রেনিয়ার মতো জটিল মানসিক রোগের ঝুঁকি বাড়ার একটি সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সাম্প্রতিক একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা। বিশ্বের ১১টি দেশের মোট ১৭টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণার ফলাফল পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা এমন তথ্য সামনে এনেছেন। গবেষকদের মতে, এই ঝুঁকির মূল কারণ হলো 'টক্সোপ্লাজমা গন্ডি' নামের একটি বিশেষ পরজীবী। সাধারণত বিড়ালের শরীরেই এই পরজীবীর বংশবৃদ্ধি ঘটে এবং সেখান থেকে বিড়ালের মলমূত্র, দূষিত পানি কিংবা ঠিকমতো রান্না না করা মাংসের মাধ্যমে এটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে আনুমানিক ৪ কোটি মানুষ এই পরজীবীর বাহক, যদিও তাদের অধিকাংশের মধ্যেই কোনো বাহ্যিক উপসর্গ দেখা যায় না। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই পরজীবীটি মানুষের মস্তিষ্কে প্রবেশ করার ক্ষমতা রাখে এবং ডোপামিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ নিউরোট্রান্সমিটারের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এ কারণেই দীর্ঘ সময় ধরে বিজ্ঞানীরা মানসিক রোগের সঙ্গে এই পরজীবীর কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড সেন্টার ফর মেন্টাল হেলথের নেতৃত্বে পরিচালিত এই নতুন পর্যালোচনায় বিড়াল পালন এবং স্কিজোফ্রেনিয়া-সম্পর্কিত অসুস্থতার মধ্যে পরিসংখ্যানগতভাবে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সংযোগ খুঁজে পাওয়া গেছে।

তবে গবেষকরা এই ফলাফলের কিছু সীমাবদ্ধতার কথাও উল্লেখ করেছেন। পর্যালোচিত গবেষণাগুলোর বেশিরভাগই ছিল পর্যবেক্ষণমূলক এবং সেগুলোর মানও ছিল ভিন্ন ভিন্ন। ফলে এই গবেষণা নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে না যে বিড়াল পালন বা টক্সোপ্লাজমা গন্ডি পরজীবীটি সরাসরি স্কিজোফ্রেনিয়ার কারণ। কিছু গবেষণায় বয়সকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে দেখানো হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ৯ থেকে ১২ বছর বয়সে বিড়ালের সংস্পর্শে থাকার অভিজ্ঞতা পরবর্তী জীবনে এই রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। আবার কোনো কোনো গবেষণায় শুধু বিড়াল পোষা নয়, বরং বিড়ালের কামড় খাওয়ার সঙ্গে মানসিক ঝুঁকির সংযোগ পাওয়া গেছে, যা নির্দেশ করে যে অন্য কোনো জীবাণুও এখানে ভূমিকা রাখতে পারে।

সামগ্রিকভাবে গবেষকরা মনে করছেন, সাধারণ সংক্রমণগুলো কীভাবে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে, তা নিশ্চিত হতে আরও কঠোর এবং দীর্ঘমেয়াদী গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, এই গবেষণার ফলাফল দেখে বিড়াল মালিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। বরং এটি আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকির কারণগুলো অত্যন্ত জটিল এবং বিজ্ঞানের কাছে এখনো এর অনেক কিছুই পুরোপুরি পরিষ্কার নয়।

সূত্র: সায়েন্সঅ্যালার্ট।


উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ে চিন্তিত? রান্নাঘরের এই ৭টি উপাদানই হতে পারে সমাধান

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৯:০০:০৪
উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ে চিন্তিত? রান্নাঘরের এই ৭টি উপাদানই হতে পারে সমাধান
ছবিঃ সংগৃহীত

উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল বর্তমানে বিশ্বজুড়েই এক বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে, যা নীরবে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, কোলেস্টেরল হলো মোমজাতীয় এক ধরনের চর্বি, যা শরীরের কোষ ও হরমোন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়। তবে রক্তে এর পরিমাণ বেড়ে গেলে তা বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসকদের মতে, এলডিএল বা ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল কমিয়ে রাখা এবং এইচডিএল বা ‘ভালো’ কোলেস্টেরল বাড়ানোই সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি। ওষুধের পাশাপাশি দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যোগ করলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

রান্নাঘরে থাকা সাধারণ ধনে বীজ শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, এটি কোলেস্টেরল কমাতেও বেশ কার্যকরী। গবেষণায় দেখা গেছে, ধনে বীজের পানি বা নির্যাস খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন হার্টকে সুরক্ষা দেয়। একইভাবে হলুদ বা এর মূল উপাদান কুরকুমিন দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ কমাতে এবং ধমনীতে ব্লক তৈরি হওয়া রোধ করতে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিনের খাবারে বা দুধে হলুদ মিশিয়ে খেলে লিভারের কার্যকারিতা বাড়ে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কাঁচা রসুনের ভূমিকাও প্রমাণিত। প্রায় ৩৯টি গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে দেখা গেছে, টানা দুই মাসের বেশি সময় প্রতিদিন কাঁচা রসুন খেলে মোট কোলেস্টেরল এবং এলডিএল উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে। এটি স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর। এছাড়া সুগন্ধি মসলা দারুচিনিও রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড ও খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সক্ষম। এটি ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে। তবে দিনে সর্বোচ্চ ২ গ্রামের বেশি দারুচিনি না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসির বীজ অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ফাইবার ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তনালীর কার্যকারিতা বাড়ায় এবং অন্ত্রে কোলেস্টেরল শোষণের গতি ধীর করে দেয়। আঙুর বীজের নির্যাস বা এক্সট্র্যাক্টও রক্তনালীকে শক্তিশালী রাখতে এবং কোলেস্টেরলজনিত ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, গ্রিন টি বা সবুজ চায়ে থাকা ক্যাটেচিন উপাদানটি মোট কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রতিদিন চিনি ছাড়া কয়েক কাপ গ্রিন টি পানের অভ্যাস হার্টের ঝুঁকি কমাতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভালো চর্বিযুক্ত খাবার যেমন—ঘি, বাদাম বা অ্যাভোকাডো খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে মনে রাখতে হবে, উপরে উল্লেখিত প্রাকৃতিক উপায়গুলো ওষুধের সম্পূর্ণ বিকল্প নয়, বরং সহায়ক মাত্র। তাই যেকোনো নতুন খাবার বা সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত