ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ভেষজ পাতা: কীভাবে ও কখন খাবেন কুলেখাড়া?

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ২১:২০:১৮
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ভেষজ পাতা: কীভাবে ও কখন খাবেন কুলেখাড়া?
ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে সুগার আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আয়ুর্বেদশাস্ত্রে উল্লেখিত প্রাকৃতিক উপাদানের কদর বাড়ছে। এই প্রাকৃতিক নিরাময়ের মধ্যে অন্যতম ভূমিকা রাখে কুলেখাড়া (Kulekhara)। বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, কুলেখাড়া সুগারকে বশে রাখতে পারে। এ বার প্রশ্ন হলো, কখন এবং কোন উপায়ে কুলেখাড়া খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে?

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে কুলেখাড়ার কদর

আয়ুর্বেদের প্রাচীন গ্রন্থ ‘চরক সংহিতা’ ও ‘সুশ্রুত সংহিতা’-তে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা রয়েছে। কুলেখাড়ার মধ্যে থাকা ট্যানিন, ফ্ল্যাভোনয়েডস ও স্যাপোনিন জাতীয় উপাদানগুলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।

কুলেখাড়ার রস আলফা অ্যামাইলেজ ও আলফা গ্লুকোসাইডেজ উৎসেচককে প্রতিরোধ করতে পারে। যার ফলে শর্করার হজম প্রক্রিয়া অনেক ধীর গতির হয়ে যায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কখন এবং কীভাবে খাবেন কুলেখাড়া?

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কুলেখাড়া সেবনের তিনটি সহজ উপায় নিচে দেওয়া হলো:

১. সকালে খালি পেটে রস: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২০-৩০ মিলিলিটার কুলেখাড়ার রস পান করলে ভালো ফল মেলে।

২. পাতার কাত্থ (ক্বাথ): ১০ গ্রাম শুকনো কুলেখাড়া পাতা ২০০ মিলিলিটার জলে দিয়ে জ্বাল দিতে দিতে ৫০ মিলিলিটারে নিয়ে আসতে হবে। এই কাত্থ দিনে দুই বারে পান করতে পারেন।

৩. গুঁড়ো ও মধু: যেহেতু স্বাদে কুলেখাড়া তেঁতো, তাই এটি সরাসরি খেতে না পারলে পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে তাতে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

ডায়াবেটিসের পাশাপাশি এই ভেষজ যকৃতের নানা রোগ, রক্ত তৈরি ও শোধনে এবং মূত্রবর্ধনেও বিশেষ কাজে লাগে।


সুস্থ থাকতে আটার রুটিতে মেশান ৩ উপাদান, দেখুন ম্যাজিক!

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৯:৪৮:৩০
সুস্থ থাকতে আটার রুটিতে মেশান ৩ উপাদান, দেখুন ম্যাজিক!
ছবিঃ সংগৃহীত

খাবারের তালিকায় আটার রুটি অনেকেরই পছন্দের। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হিসেবে অনেকেই ভাতের পরিবর্তে আটার রুটিকে প্রাধান্য দেন। যদি আপনিও তাদের একজন হয়ে থাকেন, তবে জেনে নিন, সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে আটার রুটিতে মেশাবেন কোন তিনটি বিশেষ উপকরণ।

ভাত ও রুটির পুষ্টিগুণে খুব বেশি পার্থক্য নেই, উভয়ই শস্যজাতীয় খাবার এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ। তবে ভাতের চেয়ে রুটি সহজে হজম হয় না, যে কারণে পেট বেশিক্ষণ ভরিয়ে রাখে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে দারুণ কাজ করে।

রুটির পুষ্টিগুণ বাড়াবে যে ৩ উপাদান

আটার রুটিপ্রেমীদের জন্য পুষ্টিবিদরা রুটি তৈরিতে তিনটি বিশেষ উপাদান মেশানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। একেক দিন একেকটি উপাদান মিশিয়ে রুটি তৈরি করলে স্বাদের যেমন পার্থক্য হবে, তেমনি বাড়বে রুটির পুষ্টিগুণও।

১। কালোজিরা: প্রকৃতির এক বিস্ময়কর বীজ হলো কালোজিরা, যা মৃত্যু ছাড়া সব রোগের ওষুধ হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে রয়েছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন, লিনোলিক অ্যাসিড, ওলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

ব্যবহারের উপায়: স্বাভাবিকভাবে গোল রুটি তৈরি করে তাতে কালোজিরা ছিটিয়ে দিন। এরপর কালোজিরা যেন রুটি থেকে বের হয়ে না যায়, সেজন্য বেলন-পিঁড়িতে আরেকবার রুটিটি বেলে নিন।

২। তিল: একই পদ্ধতিতে আটার রুটিতে তিল ব্যবহার করতে পারেন। তিলে থাকা প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন বি ও ই, ক্যালসিয়াম ও আয়রন-এর মতো উপাদান রুটির পুষ্টিগুণ আরও বাড়িয়ে তুলবে।

৩। বিভিন্ন ধরনের বাদাম: আটার রুটি তৈরি করতে বিভিন্ন ধরনের বাদামও মেশাতে পারেন। বাদাম কুচি করে কিংবা ব্লেন্ডারে পাউডার করে আটার মিশ্রণে মিশিয়ে রুটি তৈরি করুন। এতে করে এই রুটি সারাদিন আপনাকে সতেজ ও শক্তিশালী রাখতে কাজ করবে।


অ্যালার্জি থেকে মুক্তি চান? খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ৫ খাবার

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৪:৩৪:৪৫
অ্যালার্জি থেকে মুক্তি চান? খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ৫ খাবার
ছবিঃ সংগৃহীত

অ্যালার্জি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি অনেক সময় খাদ্যনালি, শ্বাসনালি বা চোখের মতো স্পর্শকাতর অঙ্গে দেখা দিলে মারাত্মক হতে পারে। অ্যালার্জির সঠিক কারণ জানা গেলে তার চিকিৎসা সম্ভব। তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকলে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা সম্ভব। অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়ে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যুক্ত করা জরুরি।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, অ্যালার্জি প্রতিরোধে ৫টি কার্যকর খাদ্যাভ্যাস:

১. ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল ও সবজি: ভিটামিন ‘সি’ একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি হিস্টামিন নামক রাসায়নিকের নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করে, যা অ্যালার্জির উপসর্গ তৈরি করে।

যেগুলো খাবেন: আমলকী, কমলালেবু, স্ট্রবেরি, কিউই, পেঁপে, ক্যাপসিকাম এবং ব্রকোলির মতো ফল ও সবজি।

২. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছ: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (বিশেষ করে EPA এবং DHA) শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতেও কার্যকর।

যেগুলো খাবেন: স্যালমন, টুনা, ম্যাকেরেল বা অন্যান্য তৈলাক্ত সামুদ্রিক মাছ। উদ্ভিজ্জ উৎস হিসেবে আখরোট ও ফ্ল্যাক্সসিড (তিসি বীজ)।

৩. প্রোবায়োটিকস: প্রোবায়োটিক হলো উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে। অ্যালার্জি প্রতিরোধে অন্ত্রের সুস্থতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

যেগুলো খাবেন: টকদই, কেফির এবং বাটারমিল্ক।

৪. কুয়ারসেটিন যুক্ত খাবার: কুয়ারসেটিন হলো এক ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-হিস্টামিন হিসেবে কাজ করে এবং অ্যালার্জির কারণে হওয়া প্রদাহ কমায়।

যেগুলো খাবেন: পেঁয়াজ (বিশেষত লাল পেঁয়াজ), আপেল (খোসাসহ), আঙুর, বেরি, ব্রকোলি এবং গ্রিন টি।

৫. হলুদ: হলুদে থাকা প্রধান সক্রিয় উপাদান কারকিউমিন। এটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-অ্যালার্জিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত।

যেভাবে খাবেন: কাঁচা হলুদের সঙ্গে চারটি গোলমরিচের দানা মিশিয়ে খালিপেটে খেতে পারেন।

সতর্কতা

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই খাবারগুলো অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও, এগুলো কোনো চিকিৎসার বিকল্প নয়। গুরুতর অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১০ ১৯:৪৮:২৭
মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন

মাইগ্রেন শুধু “খারাপ মাথাব্যথা” নয়; এটা একধরনের স্নায়বিক সমস্যা। মাথার একপাশে বা দু’পাশে ধকধকে ব্যথা, আলো–শব্দে অস্বস্তি, বমি বমি ভাব বা বমি, মাথা ঘোরা—এসবই মাইগ্রেনের পরিচিত মুখ। কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যথার আগে চোখে ঝিলিমিলি আলো দেখা, কথায় জড়ানো, জিভ/হাতে ঝিনঝিনি—এগুলোকে বলা হয় “অরা”। সাধারণত একটি আক্রমণ ৪–৭২ ঘণ্টা থাকে; ৭২ ঘণ্টার বেশি চললে হাসপাতালে দেখানো দরকার।

মাইগ্রেন কেন হয়—এক কথায় বললে “ব্রেনের নেটওয়ার্কে” সাময়িক বিশৃঙ্খলা। মস্তিষ্কের ব্যথা–পথ সক্রিয় হয়ে মাথার আবরণে প্রদাহ–রক্তনালির প্রসারণ ঘটায়, তাই ব্যথা ধকধকে লাগে। পারিবারিক ইতিহাস, হরমোনের ওঠানামা (বিশেষ করে মাসিকের সময়), ঘুমে অনিয়ম, স্ট্রেস, কিছু খাবার (পুরোনো চিজ, প্রসেসড মাংস, চকলেট, এমএসজি/অ্যাসপার্টেম), অতিরিক্ত/হঠাৎ ক্যাফেইন–অ্যালকোহল, তীব্র আলো–শব্দ–গন্ধ, আবহাওয়া বদল, হঠাৎ ভারী ব্যায়াম—এসব ট্রিগার অনেকের ক্ষেত্রে কাজ করে। কার কার কীতে ট্রিগার হচ্ছে, সেটা বোঝার সহজ উপায় হলো ছোট একটা “হেডেক ডায়েরি”—কবে, কতক্ষণ, কী খেয়েছিলেন/ঘুম–স্ট্রেস কেমন ছিল—এগুলো নোট নিন; ২–৩ সপ্তাহেই নিজের প্যাটার্ন ধরতে পারবেন।

লক্ষণগুলো কেমন? বেশির ভাগ মানুষ বলেন—ব্যথা নড়াচড়ায় বাড়ে, আলো–শব্দ খারাপ লাগে, বমি বমি ভাব থাকে, চোখ–কপাল–কানপাশে চাপ লাগে। অনেকের ঘাড় টনটনে, মাথার ত্বক সংবেদনশীল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে। আক্রমণের আগের ১–২ দিন হাই ওঠা, মেজাজ বদল, ঘাড় শক্ত, হঠাৎ কিছু খেতে মন চাওয়া বা বারবার প্রস্রাবের মতো সংকেতও আসতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে মাঝেমাঝে “অ্যাবডোমিনাল মাইগ্রেন”—মাথার বদলে পেটের মাঝখানে ব্যথা–বমি বমি ভাব দেখা যায়। গর্ভাবস্থায় কারও কারও মাইগ্রেন কমে, আবার প্রসবের পর হরমোন বদলে বাড়তেও পারে—তাই পরিকল্পনা করে চলাই ভালো।

কখনই দেরি করবেন না? জীবনের “সবচেয়ে তীব্র” আকস্মিক মাথাব্যথা, জ্বর–ঘাড় শক্ত–জড়ানো কথা–দৃষ্টি ডাবল, শরীরের একপাশ হঠাৎ দুর্বল/অসাড়, মাথায় আঘাতের পর নতুন ব্যথা, >৫০ বছর বয়সে নতুন মাথাব্যথা—এসব হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা নিন। এগুলো অন্য গুরুতর সমস্যারও ইঙ্গিত হতে পারে।

নির্ণয় সাধারণত ইতিহাস–লক্ষণেই হয়। চিত্র অস্বাভাবিক হলে বা “রেড ফ্ল্যাগ” থাকলে ডাক্তার MRI/CT, রক্তপরীক্ষা বা বিরল ক্ষেত্রে স্পাইনাল ট্যাপ করতে পারেন—স্ট্রোক/টিউমার/সংক্রমণ排除 করতেই এসব লাগে।

চিকিৎসা দুই ভাগ—আক্রমণ থামানো ও আগাম প্রতিরোধ। আক্রমণের শুরুতেই পানি খান, অন্ধকার–নিঃশব্দ ঘরে শুয়ে পড়ুন, কপাল/ঘাড়ে ঠাণ্ডা সেঁক দিন। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল/আইবুপ্রোফেন/নাপ্রোক্সেন দ্রুত নিন (খালি পেটে নয়); বমি বমি ভাব থাকলে ডাক্তারি পরামর্শে মেটোক্লোপ্রামাইড/ডমপেরিডন যোগ হয়। তীব্র মাইগ্রেনে “ট্রিপটান” (যেমন সুমাট্রিপটান/রিজাট্রিপটান) খুব কার্যকর—নাসাল স্প্রে/ট্যাবলেট/ইনজেকশন আকারে পাওয়া যায়। ট্রিপটান না হলে বা মানায় না—নতুন জেনারেশনের “জিপ্যান্ট” (CGRP ব্লকার) বা “ডিট্যান” আছে; এগুলো ডাক্তারের পরামর্শেই নেবেন। গুরুত্বপূর্ণ—মাসে ৮–১০ দিনের বেশি পেইনকিলার/ট্রিপটান ব্যবহার করলে “মেডিকেশন ওভারইউজ হেডেক” হতে পারে; তাই বারবার হলে প্রতিরোধের পরিকল্পনায় যান।

প্রতিরোধমূলক ওষুধ কাদের দরকার? মাসে চার বা তার বেশি মাইগ্রেন–দিন হলে, আক্রমণ ১২ ঘণ্টার বেশি হলে, কাজ–জীবন ভীষণ ব্যাহত হলে। অপশন আছে—বিটা–ব্লকার (প্রোপ্রানোলল/মেটোপ্রোলল), ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার (ফ্লুনারিজিন/ভেরাপামিল), অ্যামিট্রিপটাইলিন/ভেনলাফাক্সিন, টপিরামেট/ভ্যালপ্রোয়েট (গর্ভ–উপযোগী নয়), ক্রনিক মাইগ্রেনে বোটক্স, আর টার্গেটেড CGRP–মোনোক্লোনাল ইনজেকশন (মাসিক/দুই–তিন মাস অন্তর)। কার জন্য কোনটি—এটা সম্পূর্ণই ব্যক্তিভেদে; আপনার অন্যান্য রোগ–ওষুধ–গর্ভধারণের পরিকল্পনা—সব বিবেচনায় ডাক্তার ঠিক করেন। ওষুধছাড়া কিছু FDA–ক্লিয়ারড ডিভাইসও আছে—ঘাড়/কপাল/মাথার স্নায়ুতে হালকা ইলেকট্রিক/ম্যাগনেটিক স্টিমুলেশন—যেগুলো নির্বাচিত রোগীতে উপকারী হতে পারে।

জীবনযাপনই আসল “ফাউন্ডেশন”—একই সময়ে শোয়া–উঠা, ৭–৮ ঘণ্টা নিয়মিত ঘুম; খাবার স্কিপ নয়, পর্যাপ্ত পানি; সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটা/হালকা কার্ডিও; স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট (গভীর শ্বাস, ধ্যান, প্রগ্রেসিভ মাংস–রিল্যাক্সেশন); স্ক্রিনে ২০–২০–২০ নিয়ম (২০ মিনিটে ২০ সেকেন্ড ২০ ফুট দূরে তাকান), ব্লু–লাইট ফিল্টার; কাজের জায়গায় কড়া আলো–তীব্র গন্ধ এড়ানো। খাবারের ক্ষেত্রে “ট্রিগার–খাবার” সবার এক নয়—তাই ডায়েরি দেখে সিদ্ধান্ত নিন। সাধারণভাবে প্রিজারভেটিভ/অতিপ্রক্রিয়াজাত খাদ্য কমিয়ে শাকসবজি–ফল, বাদাম–বীজ, ডাল–শস্য, মাছ–ডিমের দিকে ঝুঁকুন; পানি–ই ইঞ্জিনের জ্বালানি।

শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে রুটিনটাই প্রথম ওষুধ—ঘুম–খাবার–স্ক্রীন–খেলা ব্যালান্সে রাখুন; ওজন–ভিত্তিক ডোজে চিকিৎসা হয়। গর্ভাবস্থায় ওষুধের নিয়ম আলাদা—নন–ড্রাগ কৌশল আগে, প্রয়োজনে কিছু সীমিত–নিরাপদ অপশন; নিজে নিজে কিছু শুরু/বন্ধ করবেন না। মাসিক–সম্পর্কিত মাইগ্রেনে মাসিকের আগ–পরে কয়েকদিন “শর্ট–উইন্ডো” প্রতিরোধ কাজ দেয়—ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে নিন।

সবশেষে, একটা সহজ ৫–পয়েন্ট অ্যাকশন প্ল্যান—আজ থেকেই: (১) ছোট হেডেক ডায়েরি শুরু করুন, (২) একই সময়ে ঘুম–খাবার—স্কিপ নয়, (৩) পানি ২–২.৫ লিটার, ক্যাফেইন নিয়ন্ত্রণ, (৪) ৩০ মিনিট হাঁটা + ১০ মিনিট শ্বাস–ব্যায়াম, (৫) ট্রিগার–খাবার ২ সপ্তাহ বাদ দিয়ে দেখুন—উপকার মিলল কি না। আক্রমণ বাড়তে থাকলে বা কাজকর্মে বড় বাধা হলে দেরি না করে নিউরোলজিস্টের সঙ্গে প্রতিরোধমূলক পরিকল্পনা করুন।

মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণযোগ্য। লক্ষ্য একটাই—আক্রমণের সংখ্যা, তীব্রতা ও অক্ষমতা কমিয়ে আপনাকে স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনে রাখা। ধৈর্য, নিয়মিত রুটিন আর টেইলার্ড চিকিৎসা—এই তিনে সমাধানই “মেইন স্ট্রিট”–এর জন্য সবচেয়ে বাস্তব পথ।


স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ২২:০৩:০৩
স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন। শারীরিক সক্ষমতা ধরে রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল ও সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে রান্নাঘরে পরিবর্তন আনা জরুরি—তেলের ব্যবহার কমিয়ে শাকসবজি ও দানাশস্যের পরিমাণ বাড়াতে হবে। কিন্তু অনেকেই তেল কম দিয়েও সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার রান্না করার কৌশল জানেন না।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন উপায়ে এবং কীভাবে রান্নায় তেলের ব্যবহার কমাবেন:

তেল কমানোর ৫টি সহজ কৌশল

১. চামচ ব্যবহার করুন: তেলের জার থেকে কড়াইতে সরাসরি তেল ঢালা থেকে বিরত থাকুন। এতে তেল বেশি ব্যবহার হয়। এর বদলে একটি চামচ ব্যবহার করে মেপে মেপে তেল ব্যবহার করুন।

২. খাবার ভাপিয়ে নিন: সব সময় কষিয়েই রান্না করতে হবে, এমন কোনো নিয়ম নেই। শাকসবজি বা মাংস—তেল দিয়ে রান্না করার আগে তা ভাপিয়ে নিন। ভাপিয়ে নিলে ভাজার আগে তেল কম লাগে এবং খাবারের পুষ্টিগুণ ও স্বাদ অটুট থাকে।

৩. সঠিক পাত্র ব্যবহার: কম তেলে রান্না করতে হলে সঠিক পাত্র বেছে নেওয়া জরুরি। ননস্টিক প্যান ব্যবহার করলে কম তেলেই সুস্বাদু পদ রান্না করা যায়। কয়েক ফোঁটা তেলে ভাজাভুজি রান্না করতে আপনি এয়ার ফায়ারও বেছে নিতে পারেন।

৪. রান্নার আগে ম্যারিনেট: মাছ কিংবা মাংস রান্নার আগে ম্যারিনেট করে রাখুন। ম্যারিনেট করা খাবার দ্রুত রান্না হয়ে যায় এবং তেলও কম লাগে। ম্যারিনেশনের সময়ে এক চামচ তেল বা দই ব্যবহার করলে আর অতিরিক্ত তেলের দরকার পড়বে না।

৫. আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না: আঁচ কমিয়ে এবং ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। আঁচ কমিয়ে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ অটুট থাকে। আর ঢাকা দিয়ে রান্না করলে কম তেলেও সুস্বাদু খাবার তৈরি করা সম্ভব। উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার চেয়ে এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।


পুরুষের বন্ধ্যত্ব কেন হয়? যে ৫টি খাবার শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়ায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১১:৪৪:২৪
পুরুষের বন্ধ্যত্ব কেন হয়? যে ৫টি খাবার শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়ায়
ছবি: সংগৃহীত

সন্তান ধারণে ব্যর্থতা কেবল নারীর কারণে ঘটে—এমন ভ্রান্ত ধারণা সমাজে প্রচলিত থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, বন্ধ্যত্ব নারী ও পুরুষ উভয়েরই হতে পারে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অনেক সময়ই পুরুষের বন্ধ্যত্ব কোনো দম্পতির সন্তান না হওয়ার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়।

ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের প্রধান পরামর্শক অধ্যাপক ডা. মোসাম্মাত রাশিদা বেগম জানান, পুরুষের বন্ধ্যত্ব প্রধানত শুক্রাণুজনিত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।

বন্ধ্যত্বের কারণ ও ঝুঁকিসমূহ

ডা. রাশিদা জানান, শুক্রাণু তৈরি না হওয়া, পরিমাণে কম তৈরি হওয়া, গতিশীলতার ত্রুটি বা আকৃতিগত সমস্যার কারণেই বন্ধ্যত্ব হয়। এছাড়া সহবাসে অক্ষমতার কারণে শুক্রাণু নারীর দেহে পৌঁছাতে না পারাও একটি কারণ।

যেসব কারণে শুক্রাণুর গুণগত মান কমে:

জীবনযাপন ও পরিবেশ: আধুনিক জীবনযাপন, দূষণ, অতিরিক্ত গরম পরিবেশে কাজ, ধূমপান-অ্যালকোহল গ্রহণ, ভিটামিন ও জিংকের ঘাটতি এবং কীটনাশকযুক্ত খাবার শুক্রাণুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

রোগ ও ওষুধ: ডায়াবেটিস, হরমোনের অসাম্যতা, হেপাটাইটিস চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিহেপাটিক, গ্যাস্ট্রিকের জন্য অ্যান্টি আলসারেন্ট জাতীয় ওষুধ, হার্টজনিত ব্যথার জন্য সালফাসালাজিন, মেথোট্রেক্সেট, রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপির মতো ক্যানসারের ওষুধ ভূমিকা রাখতে পারে।

শারীরিক সমস্যা: অণ্ডকোষে সংক্রমণ, আঘাত বা নালি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেও পর্যাপ্ত শুক্রাণু তৈরি হলেও বীর্যে মিশতে পারে না, যা বন্ধ্যত্বের কারণ।

শুক্রাণু বাড়াতে যে খাবারগুলো জরুরি

বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনধারায় পরিবর্তনের মাধ্যমে পুরুষের প্রজনন সক্ষমতা অনেকাংশে বাড়ানো সম্ভব। নিচে তেমন কয়েকটি খাবার উল্লেখ করা হলো:

১. আনার: এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়াতে এবং শুক্রাণুর গুণগত মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

২. ওয়ালনাট (আখরোট): ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই বাদাম শুক্রাণুর ক্ষিপ্রতা ও জীবনশক্তি বাড়ায়। প্রতিদিন ৭০ গ্রাম ওয়ালনাট খাওয়া যেতে পারে।

৩. ব্ল্যাক চকলেট: এতে রয়েছে এল-আরজিন অ্যামাইনো এসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়ায় এবং ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে।

৪. টমেটো: লাইকোপেন নামক উপাদানযুক্ত এই সবজি শুক্রাণুর গুণগত মান বাড়াতে সহায়ক। রান্নার সময় জলপাই তেল ব্যবহার করলে শোষণ আরও ভালো হয়।

৫. কুমড়োর বীজ: এতে থাকা জিং, ফাইটোস্টেরল ও টেস্টোস্টেরন হরমোন শুক্রাণুর উৎপাদন বাড়ায়।

প্রজনন সক্ষমতা বাড়াতে অতিরিক্ত পরামর্শ

অতিরিক্ত ওজন: শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। অতিরিক্ত ফ্যাট টেস্টোস্টেরনকে ইস্ট্রোজেনে রূপান্তর করে, যা শুক্রাণু হ্রাস করে।

বর্জন: ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন।

সতর্কতা: কেমোথেরাপি বা গুরুতর চিকিৎসার আগে শুক্রাণু সংরক্ষণ করতে পারেন।

চিকিৎসা: প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে আইইউআই বা টেস্টটিউব বেবি পদ্ধতির সহায়তা নিন।

পুরুষের বন্ধ্যত্ব আজ আর অজানা বিষয় নয়। সচেতনতা, সঠিক চিকিৎসা ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।


সকালে এই ৪টি অভ্যাস হার্টের ক্ষতি বাড়াতে পারে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১১:৩৮:২৫
সকালে এই ৪টি অভ্যাস হার্টের ক্ষতি বাড়াতে পারে
ছবি: সংগৃহীত

জীবনের প্রতিটি দিনই নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসে, আর দিনের ভালো শুরু শরীর ও মনের জন্য ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তবে হৃদরোগে আক্রান্ত বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সময়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, এই সময়েই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, সকালে কর্টিসল (Cortisol) নামে এক ধরনের স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। এর ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় এবং রক্তের ঘনত্ব বেড়ে গিয়ে হার্টের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় কিছু সাধারণ অভ্যাস হার্টের ক্ষতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

যে ৪টি অভ্যাস হার্টের জন্য ক্ষতিকর

১. খালি পেটে চা-কফি: ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চা বা কফি পান করলে কর্টিসলের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এতে স্ট্রেস ও রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, যা হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

২. পানি না খাওয়া: ঘুমের সময়ে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠে সঙ্গে সঙ্গে পানি না খেলে রক্ত ঘন হয়ে যায়, ফলে হৃদযন্ত্রকে রক্ত পাম্প করতে অনেক বেশি চাপ নিতে হয়।

৩. ঘুম ভাঙার পরপরই মোবাইল দেখা: সকালে মোবাইল স্ক্রিনে চোখ দিলে এবং নেতিবাচক খবর পড়লে মনের ওপর চাপ পড়ে। মানসিক চাপ সরাসরি হৃদপিণ্ডের ওপর প্রভাব ফেলে।

৪. হুটহাট কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া: সকালে হঠাৎ ব্যস্ততা বা মানসিক চাপ শুরু করলে হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। এই অভ্যাস হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আরও বাড়ায়।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সকালে কিছু অভ্যাস মেনে চলা জরুরি:

১. হাইড্রেশন: ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করুন। এটি শরীরকে হাইড্রেট করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

২. স্বাস্থ্যকর নাস্তা: প্রোটিনসমৃদ্ধ ও হালকা নাস্তা (যেমন: ডিম, ওটস, টক দই, ফল, বাদাম) হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

৩. হালকা ব্যায়াম: প্রতিদিন ১০–১৫ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করলে রক্তসঞ্চালন ঠিক থাকে।

৪. শান্ত থাকুন: সকালে অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো না করে কিছু সময় নিজেকে দিন এবং শান্তভাব বজায় রাখুন।

৫. সময়মতো ওষুধ: হৃদরোগীদের অবশ্যই নিয়মিত ও সময়মতো ওষুধ সেবন করতে হবে।

সূত্র : টিপস ২৪


২১ শতকের নীরব ঘাতক: কোলোরেক্টাল ক্যানসারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে যে খাবার

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৯:১৫:১৩
২১ শতকের নীরব ঘাতক: কোলোরেক্টাল ক্যানসারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে যে খাবার
ছবি: সংগৃহীত

একসময় বার্ধক্যজনিত রোগ হিসেবে দেখা হলেও, এখন কোলোরেক্টাল ক্যানসার তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে। ইউরোপজুড়ে পরিচালিত এক গবেষণায় জানা গেছে, ২০–২৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে এই রোগের হার প্রতি বছর গড়ে ৭.৯ শতাংশ বেড়েছে। গবেষকরা এই বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারকে (Ultra-Processed Food) দায়ী করছেন।

ক্যানসার বৃদ্ধির ভয়ংকর চিত্র

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এই রোগের হার সবচেয়ে দ্রুত বাড়লেও, ৩০–৩৯ বছর বয়সিদের মধ্যে বৃদ্ধির হার ছিল ৪.৯ শতাংশ এবং ৪০–৪৯ বছর বয়সিদের মধ্যে ১.৬ শতাংশ।

বিশ্বজুড়ে এই রোগের বিস্তারও উদ্বেগজনক। ১৯৯০ সালে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের রোগী ছিল প্রায় ৯৪ হাজার ৭০০ জন, যা ২০১৯ সালে বেড়ে ২ লাখ ২৫ হাজার ৭৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। যদিও ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে এ রোগের হার কমছে, ৫০ বছরের নিচের মানুষের মধ্যে এর বিস্তার দ্রুত বাড়ছে।

অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের ঝুঁকি

বিজ্ঞানীরা তরুণদের মধ্যে এ রোগের বৃদ্ধির জন্য জেনেটিক কারণকে খুব একটা দায়ী করছেন না। ২০২৫ সালে প্রকাশিত এক সমীক্ষাতেও স্পষ্ট হয়েছে যে, অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার এর অন্যতম প্রধান কারণ। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, রেডি মিলস, চিনিযুক্ত খাবার, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত মাংসসহ ফাস্টফুড।

ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় ৪৬ হাজারেরও বেশি পুরুষকে ২৪ থেকে ২৮ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, যারা সবচেয়ে বেশি অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার খেয়েছেন, তাদের কোলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ২৯ শতাংশ বেশি। অবাক করার বিষয় হলো—পুষ্টি ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পরও একই ফল পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, অতিরিক্ত ওজন না থাকা সত্ত্বেও এই খাবারগুলো ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

ভবিষ্যৎ স্বীকৃতি ও প্রতিরোধ

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অ্যালকোহল ও তামাক যেমন বিশ্বব্যাপী ক্যানসারের কারণ হিসেবে স্বীকৃত হতে কয়েক দশক নিয়েছিল, তেমনি আগামী এক দশকের মধ্যেই তরুণদের কোলোরেক্টাল ক্যানসারের অন্যতম কারণ হিসেবে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের বিষয়টি স্বীকৃতি পাবে।

তবে আশার খবর হচ্ছে—২০২৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দই খেলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন—অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিয়ে নিয়মিত দইসহ স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। প্রচলিত কথা, খাবারই ওষুধ। আর এখন বিজ্ঞান বলছে—খাবারই প্রতিরোধ।


নখকুনির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি: ঘরোয়া চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৯:২১:৩০
নখকুনির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি: ঘরোয়া চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়
ছবি: সংগৃহীত

নখকুনি—শুনতে সাধারণ মনে হলেও যাদের হয়েছে, তারা জানেন এর যন্ত্রণা কতটা কষ্টকর। পায়ের নখ যখন চামড়ার ভেতরে ঢুকে যায়, তখনই তৈরি হয় এই সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই নিজের মতো করে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেন, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাতে সুফল মেলে না। তাই এমন সমস্যার মুখোমুখি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি আছে, যা নিয়মিত মেনে চললে নখকুনির যন্ত্রণা অনেকটাই কমানো সম্ভব।

চিকিৎসকরা বলছেন, নখকুনির প্রধান কারণগুলো হলো:

জুতা: টাইট বা ফিটিং জুতা পরা।

নখ কাটা: ভুলভাবে নখ কাটা, কখনোই গোল করে না কেটে সোজাভাবে কাটা উচিত।

আঘাত: নখে ধাক্কা লাগা বা আঘাত পাওয়া।

হাইজিন: হাইজিন ঠিকভাবে অনুসরণ না করা এবং পায়ের ঘাম ও জীবাণু সংক্রমণ।

ঘরোয়া উপায়ে নখকুনি সারানোর পদ্ধতি

১. গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখা: প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখলে আশপাশের ত্বক নরম হয়, ব্যথা কমে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পায়। চাইলে পানিতে অল্প লবণও মিশিয়ে নিতে পারেন।

২. অ্যাপল সিডার ভিনেগার: এক কাপ পানিতে ২ চা চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পা ১০–১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস নষ্ট করে, ইনফেকশন কমিয়ে আনে।

৩. কটন বলের ব্যবহার: নখ ও চামড়ার মাঝে সামান্য কটন বল রেখে দিন। এতে নখ কিছুটা ওপরে ওঠে এবং ভেতরে ঢোকার প্রবণতা কমে যায়।

৪. অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম: পা ভালোভাবে শুকিয়ে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা আইডিন লাগিয়ে নিন। এটি জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

নখকুনির সমস্যা অবহেলা করলে তা মারাত্মক জটিলতায় রূপ নিতে পারে। যদি ইনফেকশন বেড়ে যায়, পা ফুলে যায়, পুঁজ জমে বা ৫-৬ দিনের মধ্যেও ব্যথা না কমে—তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস


ঘুম থেকে উঠেই শরীর ব্যথা? হতে পারে ৫টি গুরুতর কারণ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৬ ১৭:৪১:০৭
ঘুম থেকে উঠেই শরীর ব্যথা? হতে পারে ৫টি গুরুতর কারণ
ফাইল ছবি

অনেকেই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর পুরো শরীরে একধরনের আড়ষ্টতা অনুভব করেন। বিছানা ছেড়ে মেঝেতে পা ফেললে পায়ের তালুতে ব্যথা হয়। মনে হয় হাত, পাসহ পুরো দেহের ভাঁজে ভাঁজেই যেন ব্যথা লুকিয়ে আছে। অতিরিক্ত পরিশ্রম ছাড়াই যদি প্রায়ই এমনটা হয়, তাহলে তা একদমই শরীরের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। ছোট ছোট সমস্যাকে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে অনেক সময় বড় ধরনের অসুখ হয়ে থাকে। টেক্সাসের হেলথ কেয়ার অ্যাসোসিয়েটস এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর ব্যথার ৫টি প্রধান কারণ নিচে দেওয়া হলো:

১. ভুল ঘুমানোর অবস্থান

মানুষ ভেদে ঘুমের ধরন আলাদা হয়ে থাকে। ঘুমের অবস্থান খারাপ হলে শরীরে ব্যথা হতে পারে। পাশ ফিরে ঘুমানো অনেক ক্ষেত্রে ভালো হতে পারে, বিশেষ করে যাদের ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়, যেমন অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (Obstructive Sleep Apnea)। এই রোগে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয় এবং ঘুম ভালো না হলে শরীর ব্যথা হতে পারে।

২. নিম্নমানের বিছানা

যেখানে ঘুমাবেন, সেটি ভালো ও আরামদায়ক হওয়া উচিত। বিছানা খারাপ হলে সেটিই হতে পারে শরীর ব্যথার কারণ। নিম্নমানের বিছানা পিঠের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে না। তাই নিজের ওজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভালো মানের বিছানা ব্যবহার করা জরুরি।

৩. অতিরিক্ত ওজন

মাত্রাতিরিক্ত ওজন থাকলে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। অতিরিক্ত ওজন থাকলে ঘুমানোর সময় পিঠ ও ঘাড়ে ওজনের চাপ পড়ে। এ থেকে শরীর ব্যথা হয় এবং অনেক সময় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৪. শ্বাসকষ্টের রোগ

শ্বাসকষ্ট রোগীদের ঘুমের সময়ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে ঘুমানোর সময় মানুষের শ্বাস নেওয়া কিছুটা কমে এবং শরীরে অক্সিজেনের অভাব হতে পারে। ফলে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কার্যক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। এই কারণে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

৫. অন্যান্য উপসর্গ

ঘুম ভালো না হলে বা শ্বাসকষ্টের রোগ থাকলে ঘুমের সময় নাক ডাকা, দম বন্ধ হওয়া বা হাঁপানো, সকালে মাথাব্যথা, দিনের বেলায় তন্দ্রাভাব, ঘুম থেকে ওঠার পর মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন, হতাশা অনুভব ও অমনোযোগী হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পাঠকের মতামত: