শিক্ষা ও সাহিত্যের আলোকবর্তিকা নিভে গেল—চলে গেলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১০ ২৩:৪৩:৪৮
শিক্ষা ও সাহিত্যের আলোকবর্তিকা নিভে গেল—চলে গেলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

বাংলাদেশের সাহিত্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতির আকাশে এক বিশাল নক্ষত্র নিভে গেল। দেশের প্রজ্ঞা ও মানবিকতার প্রতীক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই। শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। রেখে গেছেন স্ত্রী, এক পুত্র, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য ছাত্রছাত্রী এবং অগণিত ভক্ত-গুণগ্রাহী।

তাঁর প্রয়াণের সঙ্গে যেন শেষ হলো এক প্রজ্ঞাপূর্ণ যুগ—যেখানে জ্ঞানের সঙ্গে মানবিকতার, সাহিত্যের সঙ্গে যুক্তির, শিল্পের সঙ্গে সমাজবোধের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জীবন ও কর্মে।

৩ অক্টোবর সকালটা ছিল তাঁর জীবনের শেষ কর্মমুখর সকাল। ধানমন্ডি থেকে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) যাচ্ছিলেন নিয়মিত ক্লাস নিতে। হঠাৎ গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চালক তাঁকে দ্রুত পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলামসহ তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা সেখানে ছুটে যান এবং তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। চিকিৎসকেরা জানান—তিনি ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’-এর শিকার হয়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর হৃদযন্ত্রে স্টেন্ট বসানো হয়।

তবে শনিবার থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অক্সিজেন লেভেল নেমে যায়, ফুসফুসে পানি জমে, অবশেষে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা, পরিবার ও শিক্ষার্থীদের অগণিত প্রার্থনা সত্ত্বেও তিনি আর ফিরে আসেননি। শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

তাঁর মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগতে নেমে আসে গভীর শোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী, প্রকাশক, পাঠক—সবাই যেন একসঙ্গে নির্বাক হয়ে যান।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন,

“তিনি ছিলেন আধুনিক মননসম্পন্ন এক শিক্ষক, যিনি সাহিত্যের পাশাপাশি মানুষকে চিনতে শিখিয়েছেন। তাঁর কথায় ও লেখায় এক অদ্ভুত স্বচ্ছতা ও সত্যের সাহস ছিল।”

ল্যাবএইড হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ফখরুল আলম, কায়সার হক, কবি দিলারা হাফিজ, ফরিদ কবির, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, কথাসাহিত্যিক ও চিকিৎসক মোহিত কামাল, এবং আরও অনেকে। তাঁরা বললেন, “মনজুরুল ভাই ছিলেন আমাদের সাহিত্য-শিক্ষা মহলের প্রাণ। তাঁর চলে যাওয়া মানে এক শূন্যতার সূচনা।”

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু বলেন,

“অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর পর বেঙ্গলের বহু কাজে মনজুরুল ইসলাম নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর চলে যাওয়া আমাদের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে অপরিমেয় ক্ষতি।”

শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে বারডেমের হিমঘরে নেওয়া হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে তাঁর সহকর্মী, ছাত্রছাত্রী ও ভক্তরা শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। বেলা ১১টায় মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, যেখানে সর্বস্তরের মানুষ জানাবে শ্রদ্ধা। বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তাঁকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে—যেখানে ঘুমিয়ে আছেন তাঁরই মতো এই দেশের চিন্তার স্থপতিরা।

জীবনের পথ ও সাহিত্যকীর্তি

১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনের সিংহভাগ কাটিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। অবসরের পরও তিনি একাডেমিয়া ছাড়েননি—ইউল্যাব-এ যোগ দেন নতুন প্রজন্মকে সাহিত্যের আলোয় গড়ে তুলতে।

তিনি বাংলা সাহিত্যে ‘জাদুবাস্তবতা’র এক নতুন ধারা প্রতিষ্ঠা করেন—যেখানে বাস্তবতার গণ্ডি পেরিয়ে মানবমনের গভীর স্তরগুলো উন্মোচিত হয় কল্পনা ও প্রতীকী বয়ানে। তাঁর ‘প্রেম ও প্রার্থনার গল্প’ বইটি ২০০৫ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা সৃজনশীল বইয়ের পুরস্কার পায়। ১৯৯৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক অর্জন করেন। সাহিত্য, অনুবাদ, নন্দনতত্ত্ব ও প্রবন্ধচর্চায় তাঁর কাজ বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক পরিসরে এক নতুন পরিচিতি।

এক শিক্ষক, এক মানবিক আলোকস্তম্ভ

শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি ছিলেন শুধু শিক্ষক নন—এক প্রেরণা, এক মেন্টর, যিনি শেখাতেন চিন্তা করতে, প্রশ্ন করতে, সত্যকে ভালোবাসতে। ক্লাসরুমে তাঁর কণ্ঠে সাহিত্য মানে ছিল মানবতার পাঠ, আর জীবনের প্রতিটি ব্যাখ্যা একেকটি গল্প হয়ে ফুটে উঠত তাঁর ব্যাখ্যায়।

তিনি ছিলেন এক মানবিক বুদ্ধিজীবী—যিনি ক্ষমতার সামনে সত্য উচ্চারণে দ্বিধা করতেন না, কিন্তু কারও প্রতি ঘৃণাও পোষণ করতেন না। তাঁর জীবন ছিল এক আলোকিত যাত্রা—যেখানে সাহিত্য, শিক্ষা, সততা ও সৌন্দর্য মিশে ছিল একাকার।

বিদায় এক আলোকিত আত্মাকে

দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি মহল আজ শূন্য হয়ে গেল। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আমাদের ছেড়ে গেছেন, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া আলোকরেখা এখনো অনুপ্রেরণা হয়ে জ্বলে থাকবে প্রতিটি পাঠকের, প্রতিটি ছাত্রের, প্রতিটি মুক্তমনের হৃদয়ে।

তিনি ছিলেন শিক্ষক, চিন্তক, লেখক—সবচেয়ে বড় কথা, তিনি ছিলেন এক আলোকিত মানুষ।


ইসরায়েল থেকে মুক্তি পেয়েছেন শহিদুল আলম, তুরস্কের ফ্লাইটে আঙ্কারার পথে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১০ ১৭:২২:১৫
ইসরায়েল থেকে মুক্তি পেয়েছেন শহিদুল আলম, তুরস্কের ফ্লাইটে আঙ্কারার পথে

বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমকে বহনকারী একটি ফ্লাইট আজ বিকেলে ইসরায়েল থেকে উড্ডয়ন করেছে বলে তুরস্কের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। তুর্কি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট নম্বর TK 6921 স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে ইস্তাম্বুলে অবতরণের কথা রয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকেলে তাঁর যাচাইকৃত ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন—

“বাংলাদেশের নাগরিক শহিদুল আলমের মুক্তি ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।”

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হাতে শহিদুল আলমের আটক হওয়ার পরপরই বাংলাদেশ সরকার তুরস্ক, মিশর ও জর্ডান সরকারের মাধ্যমে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করে। তুরস্ক এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করে।

তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই শহিদুল আলমকে ইস্তাম্বুলে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর গাজামুখী মানবিক অভিযানে অংশ নেওয়া ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের সবচেয়ে বড় জাহাজ ‘কনসায়েন্স’-এ ছিলেন শহিদুল আলম। জাহাজটিতে বিভিন্ন দেশের ৯৩ জন মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ অংশ নিয়েছিলেন। ইসরায়েলি নৌবাহিনী ওই দিন জাহাজটিতে অভিযান চালিয়ে সব যাত্রীকে আটক করে তেলআবিবে নিয়ে যায়।

শহিদুল আলমকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের আঙ্কারা, কায়রো ও আম্মানস্থ দূতাবাসগুলো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিল। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের তৎপরতার ফলেই এই অগ্রগতি এসেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের এক কর্মকর্তা।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বার্তায় আরও বলেন,

“বাংলাদেশ মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমরা প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। শহিদুল আলমের মুক্তি আমাদের কূটনৈতিক সাফল্যের প্রতিফলন।”

সরকারি কর্মকর্তারা জানান, শহিদুল আলমকে তুরস্ক থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও চলছে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁকে বাংলাদেশে আনা হতে পারে।


গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১০ ১০:৪৯:২০
গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়

বাংলাদেশে গুমের ইতিহাস নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বুধবার (৯ অক্টোবর) আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর ট্রাইব্যুনাল এই মামলাগুলো আমলে নেয় এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। মামলার অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এবং সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ও র‍্যাবের সাবেক ২৮ কর্মকর্তা।

এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সেনা–পুলিশ বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার শুরু হলো। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেল এই আদেশ দেন। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আদালত আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) এবং টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেল (টিএফআই)–এ রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, ব্লগার, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ভিন্নমতাবলম্বী ব্যক্তিদের অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন ও গুম করা হয়। তদন্তে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের গুমের তথ্য পাওয়া গেছে, তবে অনুমান করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ শাসনামলে সাড়ে তিন হাজারের বেশি গুমের ঘটনা ঘটেছিল। এসব অপরাধের দায়ে দুটি মামলায় ৩০ জনেরও বেশি অভিযুক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৩ জন সামরিক কর্মকর্তা। এদের মধ্যে ১১ জন এখনো সক্রিয় সেবায় রয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আদালতে বলেন, এই মামলাগুলো বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায় উন্মোচন করছে। র‍্যাব ও ডিজিএফআইয়ের মতো রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, কর্মী, সাংবাদিক এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হতো। তিনি আদালতে জানান, বন্দিদের ‘সাবজেক্ট’ নামে ডাকা হতো, নির্যাতন কক্ষগুলোকে বলা হতো ‘আয়নাঘর’, আর যারা ‘বিশেষ বন্দি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন, তাদের কোডনেম ছিল ‘মোনালিসা’। এসব ‘আয়নাঘর’-এ মানুষকে হাত কেটে ফেলা, নখ উপড়ে ফেলা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করা, কিংবা দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখার মতো নির্মম নির্যাতন করা হতো—যার সাক্ষ্য এখনো বহন করছেন গুম থেকে ফেরা অনেক ভুক্তভোগী।

ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন গুমের শিকার পরিবারগুলোর সদস্যরাও। দীর্ঘ আট বছর গুম থাকার পর ফিরে আসা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আল আযমী বলেন, “বিনা অপরাধে আমাকে ডিজিএফআই বন্দি করে রেখেছিল প্রায় আট বছর। আজকের এই বিচার শুরু হওয়া আমাদের আশার প্রতীক। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।” ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম আরমান, যিনি আট বছর অন্ধকার কারাগারে ছিলেন, বলেন, “গত ১৬ বছরে সংবিধান কেবল কাগজে লেখা ছিল। আজ মনে হচ্ছে আইন আবার কথা বলতে শুরু করেছে।”

বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “আমাদের গুম করা হয়েছিল, কিন্তু কষ্ট ভোগ করেছে পরিবার। সাত মাস গুমে থেকেও বিশ্বাস হারাইনি যে বাংলার মাটিতে একদিন বিচার পাব।” মানবাধিকারকর্মী মাইকেল চাকমা, যিনি পাঁচ বছরের বেশি সময় গুম ছিলেন, বলেন, “যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে, তারা যেন জানে—এই বিচার ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “এখানে কোনো বাহিনীর দায় নয়, দায় ব্যক্তির। জনগণের করের টাকায় বেতন পাওয়া কোনো কর্মকর্তা রাষ্ট্রের নামে অপরাধ করলে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “এই বিচার কেবল ভুক্তভোগীদের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য এক বার্তা—ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু ন্যায়বিচার চিরস্থায়ী।”

ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের মধ্যে অনেকেই পলাতক। কয়েকজনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হবে। আগামী ২২ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রসিকিউশন দপ্তর জানিয়েছে, প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতেও শুনানি আয়োজন করা হতে পারে।

বাংলাদেশে গুমের ইতিহাসে এই মামলা এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি কেবল আওয়ামী আমলের রাজনৈতিক দমননীতি বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার নয়—বরং একটি রাষ্ট্রীয় আত্মসমালোচনার সূচনা, যেখানে বলা হচ্ছে, “আর নয় আয়নাঘর, আর নয় অন্ধকার।”

সূত্রঃ আমার দেশ।


ইসরায়েলে আটক শহিদুল আলমকে ফিরিয়ে আনার চূড়ান্ত চেষ্টা—তুরস্কের বিশেষ বিমান প্রস্তুত, অপেক্ষা শেষ মুহূর্তের সম্মতির

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১০ ১০:২৮:৪৭
ইসরায়েলে আটক শহিদুল আলমকে ফিরিয়ে আনার চূড়ান্ত চেষ্টা—তুরস্কের বিশেষ বিমান প্রস্তুত, অপেক্ষা শেষ মুহূর্তের সম্মতির

বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমকে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত করতে তুরস্কের কূটনৈতিক সহায়তায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস উইং।

শুক্রবার সকালে প্রকাশিত সরকারি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তুর্কি কর্তৃপক্ষ আশাবাদী যে, আজ (শুক্রবার) বিশেষ বিমানযোগে শহিদুল আলমকে আঙ্কারায় নিয়ে আসা সম্ভব হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তা এখনও পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের আঙ্কারাস্থ রাষ্ট্রদূত আমানুল হক বৃহস্পতিবার রাতেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শহিদুল আলমের আটক হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে জর্ডান, মিশর ও তুরস্কে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো সক্রিয় কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিন দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে শহিদুল আলমের মুক্তির বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও শুক্রবার সকালে একই তথ্য প্রকাশ করা হয়। পোস্টে বলা হয়,

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দ্বারা অবৈধভাবে আটক শহিদুল আলমের মুক্তি নিশ্চিতে তুরস্কের সহায়তায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে। তুর্কি কর্তৃপক্ষ আশা করছে, আজই বিশেষ বিমানযোগে তাঁকে আঙ্কারায় নেওয়া সম্ভব হবে।

তবে কূটনৈতিক সংবেদনশীলতা বিবেচনায় তুরস্ক এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি।

গত ৮ অক্টোবর ২০২৫, গাজা অভিমুখী ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন–এর সবচেয়ে বড় জাহাজ ‘কনসায়েন্স’ আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। জাহাজটিতে ছিলেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, যিনি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সচেতনতা গড়ে তুলতে সক্রিয় ছিলেন।

‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ ছিল এমন এক উদ্যোগ যা গাজায় চলমান ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিকভাবে সংগঠিত হয়।এই বহরে ৯টি জাহাজ অংশ নেয়, যার মধ্যে একটি ছিল “থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা”—একটি শান্তিকামী উদ্যোগ, যেখানে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও মানবাধিকারকর্মীরা যোগ দেন।

ইসরায়েলি সেনারা ওই বহর আটক করে ৯৩ জন অধিকারকর্মী ও নাবিককে বন্দি করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে শহিদুল আলমের কোনো স্বাধীন যোগাযোগ ছিল না।

শহিদুল আলম বাংলাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত আলোকচিত্রী ও ‘দৃক পিকচার লাইব্রেরি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বরাবরই মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের পক্ষে সরব কণ্ঠস্বর। ২০১৮ সালে বাংলাদেশেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় আন্দোলনের সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এবার তাঁর ইসরায়েলি বন্দিত্ব আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার শহিদুল আলমের অবৈধ আটক নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। একই সঙ্গে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা চলছে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শহিদুল আলমের মুক্তির বিষয়টি “মানবিক অগ্রাধিকার” হিসেবে বিবেচনা করছে। আঙ্কারায় কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, তুরস্ক কেবল মধ্যস্থতা নয়, প্রয়োজনে মানবিক করিডর তৈরির প্রস্তাবও দিতে পারে।

শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে, তুরস্কের একটি বিশেষ মেডিকেল ও কূটনৈতিক দল ইতোমধ্যে আঙ্কারা বিমানবন্দরে প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে, যদি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মুক্তির চূড়ান্ত সম্মতি দেয়।বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, শহিদুল আলম মুক্তি পেলে তাঁকে আঙ্কারায় নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ব্রিফিং শেষে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।

শহিদুল আলমের মুক্তি এখন কেবল বাংলাদেশ নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার অঙ্গনেও নজর কাড়ছে। তুরস্ক, জর্ডান, মিশরসহ মুসলিম বিশ্বের কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই তাঁর মুক্তির দাবিতে নীরব কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখন—ইসরায়েল কত দ্রুত আন্তর্জাতিক চাপ মেনে তাঁকে মুক্তি দেয়, এবং আজই কি সত্যিই আঙ্কারায় পৌঁছাতে পারবেন শহিদুল আলম?


ব্যাংকিং খাতে বড় রদবদল: ৫ ব্যাংক একীভূত করে নতুন ব্যাংক গঠন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ২১:৫৫:৪৬
ব্যাংকিং খাতে বড় রদবদল: ৫ ব্যাংক একীভূত করে নতুন ব্যাংক গঠন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক

দুর্বল বা বিপদের মুখে থাকা পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন এই ব্যাংকের মূলধন হিসেবে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকার অর্থ সহায়তা দেবে।

পাঁচটি ব্যাংক হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (পিএলসি), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক (পিএলসি), ইউনিয়ন ব্যাংক (পিএলসি), এক্সিম ব্যাংক (পিএলসি) এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (পিএলসি)।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য জানান।

মূলধন ও নামের প্রস্তাব

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকার অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।

নতুন ব্যাংকের মূলধন বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী:

বেইল-ইন প্রক্রিয়া: বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকার আমানত মূলধনে রূপান্তরিত হবে।

সরকারি সহায়তা: অবশিষ্ট ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার মূলধন হিসেবে দেবে।

নতুন এই ব্যাংকের জন্য দুটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে: ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক ও সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক।


ব্যাংকিং খাতে বড় রদবদল: ৫ ব্যাংক একীভূত করে নতুন ব্যাংক গঠন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ২১:৫৩:৪০
ব্যাংকিং খাতে বড় রদবদল: ৫ ব্যাংক একীভূত করে নতুন ব্যাংক গঠন
ছবি: সংগৃহীত

দুর্বল বা বিপদের মুখে থাকা পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন এই ব্যাংকের মূলধন হিসেবে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকার অর্থ সহায়তা দেবে।

পাঁচটি ব্যাংক হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (পিএলসি), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক (পিএলসি), ইউনিয়ন ব্যাংক (পিএলসি), এক্সিম ব্যাংক (পিএলসি) এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (পিএলসি)।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য জানান।

মূলধন ও নামের প্রস্তাব

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকার অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।

নতুন ব্যাংকের মূলধন বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী:

বেইল-ইন প্রক্রিয়া: বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকার আমানত মূলধনে রূপান্তরিত হবে।

সরকারি সহায়তা: অবশিষ্ট ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার মূলধন হিসেবে দেবে।

নতুন এই ব্যাংকের জন্য দুটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে: ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক ও সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক।


আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় ইনজেকশন পুশ করা হয়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ২১:৪৪:০৯
আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় ইনজেকশন পুশ করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তার জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই রাতে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যান। মাথায় কালো টুপি পরিয়ে মাইক্রোবাসে করে তাকে কথিত ‘আয়নাঘরে’ রাখা হয় এবং আন্দোলন প্রত্যাহারে ভিডিও বার্তা দিতে চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হলে তাকে ইনজেকশন পুশ করে অজ্ঞান করে ফেলে রাখা হয়েছিল।

আন্দোলনের ধারাবাহিক বিবরণ

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ঢাকা মহানগরীর চানখারপুলে ছয়জন হত্যার ঘটনায় সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে দশম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আসিফ মাহমুদ তার সাক্ষ্য দেন।

আসিফ মাহমুদ জানান, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণার রায়ের প্রতিবাদে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে আন্দোলন শুরু হয়। ১৪ জুলাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।

১৫ জুলাইয়ের হামলা: পরদিন ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উসকানির পর ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। তাদের হামলায় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী আহত হন।

গুলি ও হত্যা: ১৬ জুলাই তারা জানতে পারেন পুলিশের গুলিতে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আবু সাঈদসহ সারাদেশে ছয়জন আন্দোলনকারী নিহত হন।

১৮ জুলাই শাটডাউন: ১৮ জুলাই দেশব্যাপী পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যাপক গুলিবর্ষণ করে। এতে সারাদেশে কমপক্ষে ২৯ জন আন্দোলনকারী নিহত হওয়ার খবর পান তারা। এই দিনেই সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়।

১৯ জুলাই: এই দিন আন্দোলনকারীদের ওপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। সেদিন সারাদেশে শতাধিক নিহত হওয়ার খবর পান তারা।

অপহরণ ও আয়নাঘর

আসিফ মাহমুদ বলেন, ১৯ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশান নিকেতন এলাকা থেকে ডিবি পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী লোকজন তাকে এবং সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে তুলে নিয়ে যান।

“সেখানে আমাকে আন্দোলন প্রত্যাহারে একটি ভিডিও বার্তা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। আমি রাজি না হলে আমাকে ইনজেকশন পুশ করে অজ্ঞান করে ফেলে রাখা হয়। ২৪ জুলাই সকালে আমাকে নিকেতনস্থ সেই স্থানে রেখে যাওয়া হয়।”

তিনি জানান, ৫ আগস্টের পর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আয়নাঘর পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন যে, তাকে তুলে নিয়ে যে রুমে রাখা হয়েছিল, সেটি সেই জায়গা। ছাড়া পেয়ে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন নজরদারি করেন এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।


ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি বাংলাদেশ: কূটনৈতিক অগ্রযাত্রায় নতুন মাইলফলক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১১:২০:১০
ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি বাংলাদেশ: কূটনৈতিক অগ্রযাত্রায় নতুন মাইলফলক
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে যুক্ত হলো আরেকটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ইউনেসকোর ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও ফ্রান্সে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহার নির্বাচিত হওয়াকে ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ বাংলাদেশ অফিস।

আজ এক বার্তায় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছে, “ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতির পদে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রমাণ করে যে দেশটি শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও যোগাযোগ খাতে বৈশ্বিক নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।”

এটি ইউনেসকোর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এই মর্যাদাপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হলো। জাতিসংঘের মতে, এই অর্জন বাংলাদেশের বহুপাক্ষিক কূটনীতি, টেকসই উন্নয়ন, জ্ঞান বিনিময় ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ভূমিকার প্রতিফলন।

বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে—স্বাধীনতার এক বছর পর—ইউনেসকোতে যোগ দেয়। সেই থেকে দেশটি শিক্ষা সংস্কার, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নের এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনের সভাপতির পদে বাংলাদেশের এই নির্বাচন কেবল কূটনৈতিক সাফল্য নয়, বরং এটি একটি বৈশ্বিক স্বীকৃতি—যা দেশের ভাবমূর্তি, নীতি প্রভাব ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।

খন্দকার এম. তালহার এই অর্জন বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক ও মানবিক কূটনীতির ফসল হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি পূর্বেও ইউনেসকোর বিভিন্ন নীতি ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অবস্থানকে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

জাতিসংঘ বলেছে, “বাংলাদেশের এই নেতৃত্ব ইউনেসকোর ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারণে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি যুক্ত করবে—বিশেষত শিক্ষা অন্তর্ভুক্তি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে।”

বাংলাদেশের এই অর্জন এমন এক সময়ে এলো, যখন দেশটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মানব উন্নয়ন, জলবায়ু অভিযোজন ও শান্তিরক্ষা ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকার কারণে প্রশংসিত হচ্ছে। ফলে ইউনেসকোর সর্বোচ্চ ফোরামে সভাপতির আসন লাভ বাংলাদেশের কূটনৈতিক অর্জনের ধারাকে আরও এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

-নাজমুল হাসান


শেখ হাসিনার ভারত থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে দিল্লি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১১:১৮:৩৮
শেখ হাসিনার ভারত থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে দিল্লি
ছবি: সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে আর উসকানিমূলক কথা বলতে দেবে না ভারত। মূলত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে নজর দিয়েই ভারত এই উদ্যোগ নিতে চলেছে। দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ শ্রী রাধা দত্তের বরাত দিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেলে এই তথ্য জানিয়েছেন।

‘জামাই আদর’ বন্ধের কারণ

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “ভারতে শেখ হাসিনার ‘জামাই আদর’ সম্ভবত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মাটি থেকে কোনো কথা না বলতে। তিনি যদি বলতে থাকেন, তাহলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আর কখনোই ভালো হবে না।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতে থেকে দিল্লিতে বসে কোনো কথা বলা যাবে যাবে না। যদি তিনি (শেখ হাসিনা) কথা বলতে থাকেন, তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আর উন্নত হবে না, স্বাভাবিক থাকবে না।”

পরবর্তী সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের প্রস্তুতি

আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি অথবা জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারে বলে ভারত ধারণা করছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় যে-ই আসুক না কেন, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত।

মোস্তফা ফিরোজের মতে, “ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা আগামী নির্বাচন থেকে যারা পরবর্তী সরকারে আসবে, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলবে। ভারত নিশ্চিতভাবেই জানে যে আগামী সরকার হবে বিএনপি অথবা জামায়াত সরকার। দুই সরকারের যারাই নির্বাচিত হোক না কেন, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে ভারত।”

তবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ রাখতে পারবেন।


সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার পথে বাংলাদেশ: বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১০:৪৭:৫২
সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার পথে বাংলাদেশ: বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে
ছবিঃ সত্য নিউজ

দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে সরকার একটি ‘বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনা’ (Multimodal Transport Plan) গ্রহণের পথে অগ্রসর হচ্ছে। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো—সড়ক, রেল ও নৌপথকে একীভূত করে একটি সমন্বিত, দক্ষ ও সময়সাশ্রয়ী জাতীয় যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিন জানিয়েছেন, পরিকল্পনাটির খসড়া প্রণয়ন প্রায় সম্পন্ন। তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, আমাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পরিবহন পরিকল্পনার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে পারব।”

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বিএসএস) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ মঈনুদ্দিন জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনা প্রণয়নের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, “পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় বিশদ তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। বিদ্যমান সড়ক, রেল ও নৌরুটের মানচিত্র তৈরি, পণ্য ও যাত্রী চলাচলের তথ্য বিশ্লেষণ, অবকাঠামোগত ঘাটতি নিরূপণ, বিনিয়োগ অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং সবচেয়ে কার্যকর পরিবহন মাধ্যম চিহ্নিত করার কাজ চলছে।”

তিনি আরও জানান, পরিকল্পনাটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সরকার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংককে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছে। “উন্নত দেশের পরিবহন ব্যবস্থাপনার মানদণ্ড অনুযায়ী তাদের পরামর্শ পাওয়া গেলে পরিকল্পনাটি হবে আরও বাস্তবসম্মত ও কার্যকর,” বলেন মঈনুদ্দিন।

বর্তমান পর্যায়ে পরিকল্পনাটি মূলত সড়ক, রেল ও নৌপথের সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশের বন্দর, বাণিজ্যকেন্দ্র, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও পর্যটন এলাকাগুলোর সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।

তবে তিনি উল্লেখ করেন, এই পর্যায়ে বিমান পরিবহন খাতের পূর্ণ অন্তর্ভুক্তি করা হয়নি, বিশেষ করে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে। কারণ, এ খাতটি এখনো প্রাথমিক বিকাশধারায় রয়েছে।

শেখ মঈনুদ্দিন বলেন, “এই পরিকল্পনার অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হলো একটি কেন্দ্রীয় সমন্বিত নীতিমালা তৈরি করা, যার অধীনে ভবিষ্যতের সব অবকাঠামো প্রকল্প এই মাস্টার প্ল্যানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাস্তবায়িত হবে।”

তিনি স্বীকার করেন যে বাংলাদেশের পরিবহন খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বিভাগসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। তাঁর মতে, “ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ, রোডস অ্যান্ড হাইওয়েজ, ব্রিজ অথরিটি ও এভিয়েশনসহ সব সংস্থাকে ভবিষ্যতে এক ছাতার নিচে এনে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।”

অতীতের দুর্বল পরিকল্পনার উদাহরণ হিসেবে তিনি ঢাকা বিমানবন্দরের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। “বিমানবন্দরে যাত্রীরা পৌঁছানোর পর সরাসরি কোনো গণপরিবহন পান না। দূর থেকে ট্যাক্সি এনে নিতে হয়, যা পরিকল্পনার ঘাটতির স্পষ্ট উদাহরণ।”

তিনি জানান, নতুন বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনায় এই ঘাটতি পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে বিমানবন্দরে মেট্রোরেল সংযোগ বাড়ানো হবে এবং নিয়মিত বাস ও ট্যাক্সি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

মঈনুদ্দিন বলেন, “আমরা এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যেখানে দেশের প্রতিটি পরিবহন খাত পারস্পরিকভাবে সংযুক্ত থাকবে—যাতে সময়, ব্যয় ও সম্পদের সর্বোচ্চ সাশ্রয় নিশ্চিত করা যায়।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে লজিস্টিক্স খাতে দক্ষতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে। দেশের রপ্তানি, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যও পাবে নতুন গতি।

-আশরাফুল ইসলাম

পাঠকের মতামত: