বিশেষ প্রতিবেদন

শুধু অভিযোগ নয়, গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি: ডাকসু-জাকসুর তীব্র আহ্বান, দেশের বিবেক জাগুক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৫:১৬:৪৬
শুধু অভিযোগ নয়, গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি: ডাকসু-জাকসুর তীব্র আহ্বান, দেশের বিবেক জাগুক
শুরুতে সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, প্রথম সারিতে র‌্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, হারুন অর রশিদ, আনোয়ার লতিফ খান, লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম। দ্বিতীয় সারিতে ব্রি. জে. জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, র‌্যাব কর্মকর্তা কেএম আজাদ, লে. কর্নেল খায়রু

ঢাকা — গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রকাশিত তথ্য ও প্রামাণ্যচিত্রের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) থেকে কড়া আবেদনে সাড়া পড়েছে: অভিযুক্ত হিসেবে ইতোমধ্যে নাম ওঠা ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক। ডাকসুর সহ-সভাপতি সাদিক কায়েম সরাসরি বলেছেন, “যে কোনো পরিচয়ের খুনি, ধর্ষক বা গুমকারী—তাদের রাজনৈতিক পরিচয় বা উচ্চ সামরিক পদমর্যাদা হলেও বিচারের মুখোমুখি করা হবে”—এমনই একটি সিদ্ধান্ত না হলে ছাত্রসমাজ নিরব থাকবে না।

সাদিক কায়েম তাঁর ফেসবুক পেজে গুম কমিশনের রিপোর্ট ও প্রামাণ্যচিত্র শেয়ার করে অভিযোগ তুলেছেন যে, গত পনেরো বছরে রাষ্ট্রক্ষমতার বিভিন্ন স্তর ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং সেই বিচার প্রক্রিয়ায় এখনো নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন কিছু উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাসহ সামরিক নেতৃত্বের নাম—তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়া­না জারি রয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেছেন, “অপরাধীরা যদি নিঃশর্তভাবে দণ্ডিত না হন, তবে আমরা ইনসাফ চাইবেই।”

আপাতত ডাকসু–জাকসু–সহ প্রগতিশীল শিক্ষার্থীবর্গের আভ্যন্তরীন আয়োজন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সাড়া দেখা যাচ্ছে। জাকসুর সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেকর্ড ও জনপ্রতিবেদনগুলোতে যেসব নাম উঠে এসেছে, তাদের গ্রেফতার না করে বিচারের কার্যকারিতা নিশ্চিত করা যাবে না।” বিবৃতিটি আরও যোগ করেছে, “যতদিন এসব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে না, ততদিন প্রতিবাদ ও জবাবদিহিতার দাবি জারি থাকবে।”

রাজনৈতিক-আইনি পরিভাষায় এই দাবি পুরোদমে অভিযুক্তদের ‘ইনকোন্নভিকা’ (in-custody presentation) এবং স্বাধীন তদন্তের ওপর দাঁড়ায়—তাই অনেকেই প্রশ্ন করছেন: আদৌ কীভাবে দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের ব্যবস্থা করা সম্ভব? বিশ্লেষকরা বলে থাকেন, উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে উপযুক্ত আইনি প্রস্তুতি, প্রমাণের ধারাবাহিকতা ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া বাধ্যতামূলক। আবার পরিবারের পক্ষ থেকে অনেকে বলছেন—বহু বছরের অপেক্ষার পরে ন্যায়ের বিষয়ে নাড়ি না কেঁপে গেলে কল্পনাও করা যায় না।

দুর্ভেদ্য বাস্তবতা হলো—আদেশ, পরোয়ানা কিংবা আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ইচ্ছা, অনুসন্ধানকেন্দ্রিক সক্ষমতা ও সুরক্ষাব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ কাজ করে। সাদিক কায়েম এই প্রেক্ষিতটিকেই লক্ষ্য করে বলেন, “কারাগারে না থাকা কোনো আসামি ‘বিচার’ থেকে পালাতে পারে—তাই দ্রুত গ্রেপ্তার জরুরি। যারা অপরাধের সাথে যুক্ত, তাদের রাজনৈতিক বা সামরিক পরিচয় বিচার-প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।”

অন্যদিকে, আইনী পরামর্শকরা বলে থাকেন—নিশ্চিত এবং টেকসই বিচারের জন্য প্রয়োজন বৈধ প্রমাণ-উপাত্ত, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড। তারা আরও বলেন, দ্রুত গ্রেপ্তার অর্থে আদালত-বহির্ভূত বিচার বা জনরোষে ভাঙচুর সহ অরাজকতা হওয়া উচিত নয়; বরং আইনের ফাঁড়া বেঁধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও স্থির প্রক্রিয়া বজায় রেখে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়া উত্তম। এ প্রসঙ্গে অনেকেই আর্জি করেন—দুর্নীতির তদন্তবাহিনী ও স্বাধীন তত্ত্বাবধায়করা যদি মিশে কাজ করে, তবে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে।

প্রতিবাদের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে একটি বিস্তৃত সামাজিক দাবি—নিয়ম-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে একদিকে ছাত্রসমাজ চাপ সৃষ্টি করবে, অন্যদিকে আইন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়গুলো নজরে রাখছে। পরিবারগুলোর ক্লান্ত আর্তচিৎকার আর সমাজের সংবেদনশীলতা দুটোই এখন প্রভাব ফেলতে পারে স্বরাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে—কিন্তু চূড়ান্ত সড়কটি নিরাপদ হবে কেবল যখন বিচারবহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠিত ও প্রদর্শনযোগ্য শাস্তি কার্যকর করা হবে।

অবশেষে, ছাত্রনেতা ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এ পর্যায়ে একটি সুস্পষ্ট সংকেত দিচ্ছে: কোনো দুর্নীতি বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ছত্রছায়ায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ অনুকম্পায় ক্ষমা নয়—তারা দাবী করছে যে, ন্যায়বিচার হবে এমন বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করা না গেলে ভবিষ্যতে দেশের বিচারব্যবস্থা ও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও অপব্যবহারের শিকার হবে। এই দাবির মধ্যে এখন প্রশ্ন দাঁড়ায়—কোনো সরকার বা প্রশাসন কি তৎপরতা দেখাবে, নাকি বাস্তবে ক্ষমতা ও নীতিগত জটিলতায় বিষয়টি বারবার টলমল করবে? উত্তরটা সময়ই বলবে; ততদিন জনতার চোখ থাকবে, আর ছাত্রসমাজের অনড় চাপ রাজনৈতিক ও বিচারিক স্তরে ভূমিকা রাখবে—এটাই বর্তমান পরিস্থিতির সবচেয়ে তীক্ষ্ণ এবং গভীরতম পাঠ।


প্রতিটি মেয়ের স্বপ্নপূরণে রাষ্ট্রকে সঙ্গী করব: তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৪:২৬:০০
প্রতিটি মেয়ের স্বপ্নপূরণে রাষ্ট্রকে সঙ্গী করব: তারেক রহমান
ছবিঃ সংগৃহীত

আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস। এই উপলক্ষে বাংলাদেশের প্রতিটি মেয়ের স্বপ্ন দেখা, শেখা, নেতৃত্ব দেওয়া ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের অধিকারের কথা স্মরণ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শনিবার (১১ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা ও ঐতিহ্যের ভিত্তি

তারেক রহমান বলেন, “একজন কন্যাসন্তানের পিতা হিসেবে আমি জানি, মেয়েদের ক্ষমতায়ন কেবল নীতির বিষয় নয়—এটা ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা। আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে প্রতিটি মেয়ে স্বাধীনতা, সুযোগ ও নিরাপত্তা পাবে, যা প্রত্যেক পিতা-মাতা তাদের সন্তানের জন্য কামনা করে।”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে গার্মেন্টস খাত লাখো নারীর আশার প্রতীক হয়ে উঠেছিল এবং তার সময়েই নারীর উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠিত হয়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সময়েই মেয়েদের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা মূল্যে শিক্ষা চালু করা হয় এবং ‘ফিমেল সেকেন্ডারি স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রজেক্ট’ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষায় লিঙ্গসমতা এনেছিল।

তিনি বলেন, “এই সব উদ্যোগ প্রমাণ করেছে—যখন রাষ্ট্র মেয়েদের মর্যাদা রক্ষা ও ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করে, তখন পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী হয়।”

ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা

বিএনপির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনায় নারীর ক্ষমতায়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

১. পরিবারভিত্তিক সহায়তা: পরিবারভিত্তিক সহায়তা ‘ফ্যামিলি কার্ড’ নারীদের নামে প্রদান।

২. উদ্যোক্তা উন্নয়ন: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ঋণ, ব্যবসায় প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা।

৩. শিক্ষা ও নিরাপত্তা: গ্রামীণ ও শহুরে মেয়েদের জন্য একাডেমিক ও কারিগরি শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি এবং তাদের চলাফেরা, মতপ্রকাশ ও ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

৪. নেতৃত্বে অংশগ্রহণ: নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা ফাঁকা বুলি দিই না—আমরা বিশ্বাস থেকে কথা বলি, ঐতিহ্য ও প্রতিশ্রুতির শক্তিতে। প্রতিটি মেয়েদের স্বপ্নপূরণের পথে রাষ্ট্রকে তার সঙ্গী করব, প্রতিবন্ধক নয়।”


 ষড়যন্ত্র করে একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার চেষ্টা: মিয়া গোলাম পরওয়ার

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১১ ১৪:১৮:৩৩
 ষড়যন্ত্র করে একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার চেষ্টা: মিয়া গোলাম পরওয়ার
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার মন্তব্য করেছেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অস্থিরতা বাড়ছে। তিনি অভিযোগ করেন, “দু-একজন উপদেষ্টা এবং প্রশাসন গোপনে গোপনে ষড়যন্ত্র করে একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা কেমন যেন একটা চাপের মধ্যে আছেন।”

আজ শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে খুলনার পাইকগাছা সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

সুশাসনের বিপ্লব ও নীতির পরিবর্তন

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের গোপন পথ ছেড়ে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার স্বার্থে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে মনোযোগী হতে হবে।

তিনি বলেন:

“২৪-এর গণ আন্দোলনের ছাত্র-জনতার যুদ্ধ ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আর আমাদের দ্বিতীয় যুদ্ধ হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এবার সুশাসনের জন্য বিপ্লব করতে হবে।”

তিনি অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার পরে যারা দেশ শাসন করেছে, তারা বারবার দেশকে ‘চোরের দিক থেকে চ্যাম্পিয়ন’ করেছে এবং দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে ‘বেগমপাড়া’ তৈরি করেছে। এসব অনাচার দূর করতে কোরআনের আইনকে সংসদে পাঠাতে হবে।

ক্ষমতায় গেলে প্রতিশ্রুতি

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ইসলামী দলগুলোর মধ্যে এখন ঐক্য তৈরি হয়েছে—এই ঐক্য থাকলে বাকিরা বাতিলের খাতায় চলে যাবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন:

শিক্ষা ব্যবস্থা: ক্ষমতায় গেলে প্রথম কাজ হবে বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে সবার শিক্ষা নিশ্চিত করা।

দুর্নীতি: দ্বিতীয় কাজ হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন।

সুবিধা বর্জন: নির্বাচনে জয়ী হলে জামায়াত নেতারা কোনো সরকারি প্লট, গাড়ি, বাড়ি বা অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করবেন না।

নির্বাচনী দাবি: আগামী ফেব্রুয়ারিতে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিকের ভোটের মূল্যায়ন করতে হবে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় জামায়াত নেতারা।


শাপলা না পেলে ধানের শীষসহ সব প্রতীক বাতিলের দাবি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ২১:২০:৫১
শাপলা না পেলে ধানের শীষসহ সব প্রতীক বাতিলের দাবি
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, “নিবন্ধন যদি আমাদের দিতে হয়, সেটা শাপলা দিয়েই হবে। শাপলা ছাড়া এনসিপির নিবন্ধন হবে না এবং এনসিপিও শাপলা ছাড়া নিবন্ধন মানবে না।”

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

অদৃশ্য শক্তি ও ইসির নীরবতা

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ইসির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে দুই ঘণ্টা তারা প্রতীক প্রশ্নে ইসির ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “শাপলা না দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কোনো আইনি প্রতিবন্ধকতা দেখি নাই। প্রতিবন্ধকতা অন্য জায়গা থেকে দেখেছিলাম। অদৃশ্য শক্তির এখানে হাত রয়েছে।” তিনি প্রশ্ন করেন, দুই ঘণ্টা ধরে ইসি কেন নিশ্চুপ ছিল।

“আমরা ধরে নেব যে তারা এটাতে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। আমরা তাদের বলে এসেছি যে, আপনারা যদি শাপলা না দেন, তাহলে ব্যাখ্যা দিতে হবে।”

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছাচারিতা করছে এবং কোনো গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন আচরণ করছে। এই মাসের মধ্যেই কোনো প্রভাব বা শক্তি তাদের ওপর বিরাজ করছে কি না, তা জাতির সামনে স্পষ্ট হবে এবং এই মাস পর্যন্ত এনসিপি অপেক্ষা করবে।

প্রতীকের ক্ষেত্রে আল্টিমেটাম

শাপলা প্রতীক না দিলে বিকল্প হিসেবে অন্যান্য দলের প্রতীক বাতিলের দাবি জানিয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, “যদি রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতীকের দায়িত্ব তারা নেন যে এ প্রতীক রক্ষা করবেন, তাহলে ধানের শীষ এবং শাপলা সবগুলোকে রক্ষা করে ওই ধরনের আইন সংশোধন করতে হবে।”

তিনি বলেন, “সুতরাং নির্বাচন কমিশনের সামনে দুটি পথ রয়েছে। একটি হলো ধান, তারা, সোনালি আঁশ বাতিল করা। আরেকটি হলো শাপলা দেওয়া। আমরা আশা করি যে কারো প্রতীকই বাতিল না হোক।”

প্রবাসী ভোটার ও নিবন্ধন শঙ্কা

বৈঠকে এনসিপি নেতারা ভোটার নিবন্ধন ও প্রবাসী ভোট নিয়েও আলোচনা করেন। দলের যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, প্রবাসীরা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। কিন্তু প্রবাসী ভোটারদের অ্যাপস চালু হতে দেরি হওয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসীকে ভোটের বাইরে রাখার একটি পাঁয়তারা চলছে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। কমিশন জানিয়েছে, অক্টোবরের মধ্যে অ্যাপটি চালু করা হবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ জানান, জেন-জি ও তরুণ ভোটারদের কথা ভেবে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ভোটার হওয়ার দাবি জানিয়েছে এনসিপি।


কেউ কিছু জানে না, এমনও অনেক মিটিং হচ্ছে: আমির খসরু

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১৪:২২:২৩
কেউ কিছু জানে না, এমনও অনেক মিটিং হচ্ছে: আমির খসরু
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী মন্তব্য করেছেন, কূটনীতিকরা কার বাসায় বৈঠক করবে, তা নিয়ে বিএনপি চিন্তা করে না। তিনি বলেন, “কেউ কিছু জানে না, এমনও অনেক মিটিং হচ্ছে। এগুলোর কোনো গুরুত্ব নেই আমাদের কাছে।” তার মতে, আগামীর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনাই গুরুত্বপূর্ণ।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকায় নবনিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠক ও বিনিয়োগের লক্ষ্য

বৈঠকের নেতৃত্ব দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জার্মানির রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতি আগ্রহ দেখান।

আমির খসরু বলেন, “বিএনপি বলেছে ১৮ মাসের মধ্যে ১ কোটি কর্মসংস্থান করব। এক কোটি কর্মসংস্থানের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রয়োজন। স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য জার্মানির সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি জানান, জার্মানি ইতোমধ্যে চীন ও ভারতে বিনিয়োগ করেছে এবং তারা বাংলাদেশকে আগামী দিনের বিনিয়োগের জন্য ভালো গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, “সুতরাং বাংলাদেশে জার্মানির বিনিয়োগের প্রত্যাশা করছি; এ ব্যাপারে তাদের আগ্রহ আছে।”

গণতন্ত্র ও বিনিয়োগ

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিনিয়োগের জন্য নির্বাচন ও দেশের স্থিতিশীলতা অবশ্যই দরকার। সবাই নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। নির্বাচিত সরকার এলে বিনিয়োগকারীরা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিনিয়োগে যে সমস্যাগুলো ছিল, সে বিষয়ে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি, সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। বিনিয়োগ সামিটে বিনিয়োগকারীদের কাছে আমাদের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে দিয়েছি, প্রত্যেকটি দূতাবাসেও দিয়েছি। বিনিয়োগকারীরা জানেন, আমাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের বিনিয়োগে কোনো সমস্যা থাকবে না।”


শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১২:১৬:৫৬
শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত গুমের দুটি আলাদা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ৩০ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার দপ্তর এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। পরোয়ানাগুলো পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এবং সংশ্লিষ্ট ১২টি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিস্তারিত

গতকাল বুধবার ট্রাইব্যুনাল-১ গুমের দুটি মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম দুটি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন এবং পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল সেই আবেদন মঞ্জুর করে।

মামলার সংখ্যা: দুটি (টিএফআই সেল গুম মামলা ও জেআইসি সেল গুম মামলা)।

আসন্ন পদক্ষেপ: আসামিদের আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আসামির অবস্থান: আসামিদের মধ্যে অনেকে এখনো বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন। তবে চিফ প্রসিকিউটর জানান, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর আইন অনুযায়ী তারা আর কর্মরত হিসেবে বিবেচিত হবেন না।

অভিযুক্তদের তালিকায় যারা

দুই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি করে অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক।

ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ প্রধান (লে. জেনারেল মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল মো. সাইফুল আলম, লে. জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল হামিদুল হক)।

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন ও ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদসহ র‍্যাবের একাধিক সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও পরিচালক।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে ভিন্ন মতাদর্শের রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু ব্যক্তিকে গোপনে তুলে নিয়ে গোপন বন্দিশালায় নির্যাতনের চিত্র এই অভিযোগপত্রে তুলে ধরা হয়েছে।


অষ্টম প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পথে ফ্রান্স: ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ম্যাক্রোঁ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১০:২৫:৪৮
অষ্টম প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পথে ফ্রান্স: ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ম্যাক্রোঁ
ছবিঃ সংগৃহীত

ফ্রান্সে রাজনৈতিক সংকট ক্রমেই গভীর হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুর পদত্যাগের পর দেশটি আবারও অস্থিরতার মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন বলে বুধবার রাতে এলিসি প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ, সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে ফ্রান্স নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম জানতে পারবে।

লেকর্নু ফরাসি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে জানান, চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগই হবে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। তিনি বলেন, “এটি এমন সময় নয় যখন রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে হবে বা আগাম নির্বাচনের পথে যেতে হবে; বরং এখন প্রয়োজন কার্যকর নেতৃত্ব।”

গত তিন দিনে ফ্রান্সে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। লেকর্নু সোমবার পদত্যাগপত্র জমা দেন—মাত্র এক মাসেরও কম সময় দায়িত্বে থাকার পর। তবে রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোঁ তাকে বুধবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন অর্থনীতি সংকোচন (austerity budget) নিয়ে পার্লামেন্টের অচলাবস্থা নিরসনের জন্য।

লেকর্নুর আগের দুই প্রধানমন্ত্রীও একই বাজেট নিয়ে সংসদের বিরোধিতায় পদচ্যুত হন। ফলে ম্যাক্রোঁর সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে কীভাবে বাজেট পাস করানো সম্ভব হবে। এলিসি প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি মনে করেন বছরের শেষ নাগাদ বাজেট নিয়ে একটি সমঝোতার পথ তৈরি করা সম্ভব।

যদি লেকর্নু পুনরায় নিয়োগ না পান, তবে এটি হবে ম্যাক্রোঁর সাত বছরের শাসনামলের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী। অর্থাৎ, ফরাসি রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা এখন কার্যত বিলাসিতা।

‘রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের সময় নয়’

লেকর্নু স্পষ্ট করে বলেন, “এখন রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের সময় নয়। জনগণকে ভুল ধারণা দেওয়া উচিত নয় যে বাজেট রাষ্ট্রপতি ভোট দেন।” তিনি আরও জানান, সংসদের নিম্নকক্ষে বেশিরভাগ দল আগাম নির্বাচনের বিপক্ষে, তাই সংসদ ভেঙে দেওয়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার ফিলিপ সম্প্রতি ম্যাক্রোঁর পদত্যাগ ও আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আহ্বানের দাবি তুলেছিলেন। তবে লেকর্নু বলেছেন, ম্যাক্রোঁকে ২০২৭ পর্যন্ত তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করতেই হবে।

‘মিশন শেষ’ ঘোষণা করে বিদায়

নিজের পদত্যাগের সময় লেকর্নু বলেন, “আমি সবকিছু চেষ্টা করেছি। আজ রাতে আমার মিশন শেষ।” তিন বছর প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেতা নিজেকে বর্ণনা করেছেন “একজন যোদ্ধা সন্ন্যাসী” হিসেবে।

তিনি ইঙ্গিত দেন যে প্রযুক্তিনির্ভর (technocratic) একটি নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে, যেখানে সদস্যদের ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকবে না। তাঁর মতে, “দেশের সমস্যা সমাধানই এখন একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।”

পেনশন সংস্কার ইস্যুতে লেকর্নু বলেছেন, অবসর গ্রহণের বয়স বৃদ্ধি সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার দরজা খুলে দেওয়া যেতে পারে, তবে তা স্থগিত করলে ২০২৭ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ইউরো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী এলিজাবেথ বর্ন—যিনি সংস্কারটি ভোট ছাড়াই সংসদে পাস করিয়েছিলেন—এরই মধ্যে স্থগিত রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

‘সবকিছুর বিরুদ্ধেই ভোট দেব’

ফ্রান্সের সংসদীয় রাজনীতির বাস্তবতা আরও জটিল। ২০২২ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর ম্যাক্রোঁর দল ডানপন্থী রিপাবলিকানদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক নয় এমন একটি সমঝোতায় সরকার চালিয়ে আসছে। কিন্তু এই জোটও সংসদে সংখ্যালঘু অবস্থায়। ফলে যে কোনো নতুন প্রধানমন্ত্রীকে আবারও অবিশ্বাস প্রস্তাবের মুখোমুখি হতে হতে পারে।

অন্যদিকে, চরম ডানপন্থী নেতা মেরিন ল্য পেন ঘোষণা দিয়েছেন, “নতুন সরকার যাই করুক, আমি তার বিরুদ্ধেই ভোট দেব।” তাঁর দল ন্যাশনাল র‌্যালি এখন ২০২৭ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ দেখছে, কারণ সংবিধান অনুযায়ী ম্যাক্রোঁ তৃতীয় মেয়াদে প্রার্থী হতে পারবেন না।

এ অবস্থায় রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব এখন পুরোপুরি ম্যাক্রোঁর কাঁধে। তাঁর পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে—ফ্রান্স স্থিতিশীলতার পথে ফিরবে, নাকি আরও গভীর রাজনৈতিক অচলাবস্থায় নিমজ্জিত হবে।

-আলমগীর হোসেন


শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচজন উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে: রাশেদ খান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১০:০৬:৩৭
শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচজন উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে: রাশেদ খান
ছবি: সংগৃহীত

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা পিছিয়ে যাচ্ছে। তার মতে, আজকের আলোচনা দেখে মনে হচ্ছে, নতুন করে আবার আলোচনা শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচজন উপদেষ্টা হাত মিলিয়েছে” এবং তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

‘আমরা পিছনে ফিরে যাচ্ছি’

রাশেদ খান বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে তারা শুনেছিলেন যে, আজকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। কিন্তু:

“আজকের আলোচনা যেভাবে শুরু হয়েছে, আমার কাছে মনে হলো নতুন করে আমরা আলোচনা শুরু করছি।”

তিনি আরও বলেন, “আজকের এই আলোচনা দেখে মনে হচ্ছে যে আমরাও শেখ হাসিনার সঙ্গে হাত মিলিয়েছি।” তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, যে দলগুলো সর্বশেষ দিন জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের পক্ষে ছিল, তারাও আজকে অবস্থান পরিবর্তন (ইউটার্ন) করেছে এবং এখন বলছে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট।

রাজনৈতিক চরিত্রের সমালোচনা

রাশেদ খান বলেন, “আমাদের রাজনীতিবিদদের এই ধরনের চরিত্র জনগণ পছন্দ করে না। আপনি সকালে একটা বলবেন, বিকালে একটা বলবেন, আজকে একটা বলবেন, কালকে একটা বলবেন—এটা হতে পারে না।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “তাহলে কি আমরা সেই গণঅভ্যুত্থানের পরে যখন ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়, সেখানে ফিরে যাচ্ছি? যেখানে আমাদেরকে সামনে অগ্রসর হওয়ার কথা, সেখানে আজকের আলোচনা দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমরা পিছনে ফিরে যাচ্ছি।”

ঐকমত্যের অভাব

গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, “আমি ঐকমত্য কমিশনকে স্পষ্টত জানিয়েছি, আপনারা যেমনভাবে আজকের এই আলোচনা দেখে হতাশ হচ্ছেন, ঠিক একইভাবে আমরাও এই আলোচনা দেখে হতাশ হচ্ছি। এটা জনগণ কোনোভাবেই প্রত্যাশা করে না।”

তিনি বলেন, “নয়টি রাজনৈতিক দল বসেছিলাম, আলোচনা করেছি। দেখলাম আজকের এই ঐকমত্য কমিশনে তাদের মধ্যে ভিন্ন মত।” তিনি মনে করেন, আরও এক মাস যদি এইভাবে আলোচনা চলে, তবে কোনোভাবেই সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হবে না।


নির্বাচন সামনে রেখে এনসিপিকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতে নীরব প্রতিযোগিতা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ০৯:৪৬:৪৮
নির্বাচন সামনে রেখে এনসিপিকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতে নীরব প্রতিযোগিতা
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-কে নিয়ে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে শুরু হয়েছে এক কৌশলগত টানাপোড়েন। আলোচনা এগোলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সমঝোতা হয়নি বলে জানিয়েছেন উভয় দলের নেতারা। বিএনপি চাইছে এনসিপিকে জামায়াত থেকে দূরে রাখতে, অন্যদিকে জামায়াত চাইছে ভোটের মাঠে গণঅভ্যুত্থানের আবেগ পক্ষে রাখতে এনসিপিকে পাশে টানতে।

ঐক্যের পথে বাধা ও দলীয় কৌশল

এনসিপি নেতারা জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনে জামায়াত প্রত্যাশিত সংখ্যক আসনে ছাড় এবং সব রকম সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তাদের সঙ্গে গেলে ডানপন্থি ‘ট্যাগের’ ভয় রয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপি পাশে চাইলেও প্রত্যাশিত সংখ্যক আসন ছাড়তে রাজি নয়। এ দলটি নির্বাচনে প্রত্যাশিত সহায়তা দেবে কি না, তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে এনসিপি নেতাদের।

জামায়াত সূত্র নিশ্চিত করেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টাই বিএনপির সঙ্গে এনসিপির নির্বাচনী ঐক্যে আগ্রহী। তাদের কারণেই এনসিপি জামায়াতের যুগপৎ আন্দোলনে আসেনি। এনসিপি সূত্র জানিয়েছে, এই ঐক্য না হলে উপদেষ্টাদের অন্তত একজন ঢাকায় বিএনপির দলীয় প্রতীকে প্রার্থী হতে পারেন।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বিএনপি অন্য দলকে নিয়ে সরকার গঠনে প্রস্তুত, যার মধ্যে ছাত্রদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি নতুন দলও রয়েছে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, অন্য দলের মতো বিএনপির সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তবে নির্বাচনী জোট বা আসন বণ্টনের আলাপ হয়নি। এনসিপি ৫০-৬০ আসনে ছাড় পেলে জোটের বিষয় ভাববে।

বিএনপির ‘স্বতন্ত্রের ভয়’ ও জামায়াতের সুবিধা

এনসিপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, নতুন এ দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আগামী সংসদে প্রতিনিধিত্ব থাকা জরুরি। বিএনপির সঙ্গে থাকলে যেসব আসনে ছাড় পাওয়া যাবে, সেগুলোতে জয়ের সম্ভাবনা বেশি।

বিএনপির ভয়: বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, এনসিপিকে আসন ছাড়লেও স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন—এ নিশ্চয়তা নেই। নির্বাচনী আইন সংশোধিত হওয়ায় এনসিপি নেতাদের নিজ প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। ধানের শীষ না থাকলে স্থানীয় বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে সাংগঠনিক ও আর্থিক সামর্থ্যে পিছিয়ে থাকা এনসিপির প্রার্থীরা মাঠে টিকতে পারবেন না।

জামায়াতের সুবিধা: জামায়াতের সঙ্গে গেলে এনসিপি ৫০-৬০ আসনে অনায়াসে ছাড় পেতে পারে। জামায়াতের সংগঠন ও জনবল বিনা খরচে শতভাগ কাজ করবে এবং জামায়াতের কেউ বিদ্রোহী হবেন না। তবে এনসিপি নেতাদের একাংশের ভয়, এর ফলে তারা ডানপন্থি তকমা পাবেন।

জামায়াতের এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, তাদের জরিপ অনুযায়ী, এনসিপির সারাদেশে ৩ থেকে ৪ শতাংশ ভোট রয়েছে। এনসিপিকে সঙ্গে রাখলে গণঅভ্যুত্থানের আবেগ বিএনপির দিকে যাবে না—এটি জামায়াতের মূল্যায়ন।

হেফাজত ফ্যাক্টর

জামায়াতের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও খেলাফত আন্দোলন এনসিপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। হেফাজতের ‘মুরব্বিরা’ জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার ঘোর বিরোধী। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির মতো এনসিপিও হেফাজতের সমর্থন পেতে চাইছে। এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, যদি এনসিপি একা জোট করতে পারে, তবে বিএনপির সঙ্গে দরকষাকষিতে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে।


সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুলের আহ্বান: ‘আর বিলম্ব নয়’

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৪:২৩:১৮
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুলের আহ্বান: ‘আর বিলম্ব নয়’
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলমকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। বুধবার (৮ অক্টোবর) তার আটকের খবর নিশ্চিত হওয়ার পর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল তার পোস্টে লেখেন, “শহিদুল আলমকে মুক্ত করুন। আমি সরকারকে তার নিরাপদে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

আটকের আগে শহিদুল আলমের বার্তা

আটকের আগ মুহূর্তে শহিদুল আলম ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি জানান এবং তাকে বহনকারী জাহাজ ‘দ্য কনশেনসে’ ইসরায়েলি আক্রমণের লাইভও করেন।

ভিডিওবার্তায় শহিদুল আলম বলেন:

“আমি শহিদুল আলম বাংলাদেশের ফটোগ্রাফার ও লেখক। আপনি যদি এই ভিডিওটি দেখেন, তার মানে আমাদের সমুদ্রে আটকে দেওয়া হয়েছে এবং আমাকে অপহরণ করেছে ইসরায়েল দখলদার বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির সক্রিয় সহযোগিতা এবং সহায়তায় গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে এই দেশ।”

তিনি আরও বলেন, “আমি আমার সব সহযোদ্ধা ও বন্ধুদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য।”

হামলা ও কর্মীদের অবস্থা

ত্রাণবাহী ফ্লোটিলা জানিয়েছে, সামরিক বাহিনী দ্য কনশেনস নামের নৌকায় হামলা করে। এই জাহাজে শহিদুল আলমসহ ৯৩ জন সাংবাদিক, ডাক্তার এবং কর্মী ছিলেন। এই জাহাজের সঙ্গে থাকা তিনটি ছোট নৌকাও আক্রমণ করে ইসরায়েলিরা।

পাঠকের মতামত: