রোদে ভিটামিন ডি পাওয়ার সঠিক কৌশল জেনে নিন

শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণে সূর্যের আলোকে প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু কীভাবে, কখন এবং কতক্ষণ রোদে থাকা উচিত তা নিয়ে এখনো অনেকের মধ্যেই বিভ্রান্তি রয়েছে। বিশেষ করে শীতকালে যখন সূর্যের আলো তুলনামূলক কম পাওয়া যায়, তখন ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি বাড়ে। এই প্রসঙ্গে দিল্লিভিত্তিক চিকিৎসক ডা. জামাল খান সম্প্রতি একটি ভিডিওতে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে সঠিকভাবে সূর্যের আলো ব্যবহার করে শরীরে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি উৎপন্ন করা যায়।
ডা. জামাল বলেন, সূর্যের আলো সরাসরি ভিটামিন ডি তৈরি করে না; বরং সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (UVB rays) ত্বকে পড়ে একটি জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ভিটামিন ডি উৎপাদন করে। অর্থাৎ, সূর্যের আলো হলো মূলত এই রাসায়নিক প্রক্রিয়ার উদ্দীপক। কিন্তু সব সময় সূর্যের আলো একরকম কাজ করে না। দিনের যে কোনো সময় রোদে বের হলেই ভিটামিন ডি পাওয়া যায় এই ধারণাটি ভুল।
তার মতে, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি সবচেয়ে কার্যকর থাকে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে, কারণ তখন সূর্যের কোণ এমন অবস্থানে থাকে, যা ত্বকের উপর সরাসরি UVB রশ্মি ফেলে। সকাল ৯টার আগে বা বিকেল ৪টার পর রোদে থাকলে এই রশ্মির তীব্রতা কম থাকে, ফলে শরীর তেমনভাবে ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে না। এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট রোদে থাকে, তবে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ সম্ভব।
অনেকে মনে করেন, রোদে থাকতে হলে শরীর পুরোপুরি নগ্ন হতে হবে। কিন্তু ডা. জামাল খান এই ধারণাকে ভুল বলে অভিহিত করেন। তার মতে, হালকা সুতির পোশাক পরলেও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকে পৌঁছাতে পারে, কারণ পাতলা কাপড় UV রশ্মির বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। তবে মোটা কাপড়, জিন্স, বা সিন্থেটিক পোশাক পরলে রশ্মি ত্বকে পৌঁছায় না, তাই রোদে থাকার সময় হালকা সুতির পোশাকই উপযুক্ত।
ভিটামিন ডি উৎপাদনের জন্য শরীরের কোন অংশে রোদ পড়া সবচেয়ে কার্যকর এই প্রশ্নের উত্তরে ডা. জামাল বলেন, শরীরের যে অংশে রক্তসঞ্চালন বেশি এবং চর্বির স্তর তুলনামূলক পাতলা, সেখানে রোদ বেশি কার্যকরভাবে কাজ করে। বিশেষ করে কোমর ও পিঠের অংশে সূর্যের আলো পড়লে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়। তিনি বলেন, “রোদে থাকার সময় সূর্যের দিকে পিঠ করে কোমরের অংশে আলো পড়া সবচেয়ে উপকারী।”
অনেকে আবার মনে করেন, বেশি সময় রোদে থাকলে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বাড়বে। কিন্তু চিকিৎসক জামাল খান বলছেন, এটি প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, “প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট রোদে থাকা যথেষ্ট। এর বেশি সময় রোদে থাকলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, তবে ১৫ মিনিটই শরীরের প্রাকৃতিক চাহিদা পূরণে যথেষ্ট।”
ভিটামিন ডি কেবল সূর্যের আলো থেকেই নয়, কিছু খাবার থেকেও পাওয়া যায়। যেমন— ডিমের কুসুম, চর্বিযুক্ত মাছ, দুধ, মাখন ইত্যাদি। তবে ডা. জামালের মতে, এই খাদ্য উৎসগুলো থেকে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া যায় না। শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি-এর ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই সূর্যের আলো থেকেই আসে।
রোদে থাকার সময় অনেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন। এ বিষয়ে ডা. জামাল বলেন, “সানস্ক্রিন ত্বকে UVB রশ্মি পৌঁছাতে বাধা দেয়, ফলে ভিটামিন ডি উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই রোদে ভিটামিন ডি আহরণের সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার না করাই ভালো। তবে রোদে থাকার পর ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত।”
ভিটামিন ডি শুধু হাড় বা রক্তের জন্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত সূর্যালোক না পেলে মানুষের শরীরে সেরোটোনিন হরমোনের ঘাটতি হয়, যা বিষণ্ণতা, ঘুমের সমস্যা এবং ক্লান্তি বাড়ায়। সূর্যের আলো সেরোটোনিন উৎপাদন বাড়ায়, ফলে মানসিক প্রশান্তি বজায় থাকে। ডা. জামাল বলেন, “ভিটামিন ডি শুধু দেহ নয়, মনেরও ওষুধ। যারা নিয়মিত সূর্যালোক পান, তারা সাধারণত মানসিকভাবে আরও প্রফুল্ল ও স্থিতিশীল থাকেন।”
তার মতে, সুস্থ থাকার সহজ উপায় হলো প্রতিদিন ১৫ মিনিটের সূর্যালোক। এটি কেবল হাড় মজবুত রাখে না, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মনকে সতেজ রাখে। তবে তিনি সতর্ক করেন, দুপুরের রোদে দীর্ঘক্ষণ থাকা উচিত নয় বিশেষত গরমের সময়, কারণ এতে ত্বক পোড়ার ঝুঁকি থাকে।
হরর সিনেমা হতে পারে থেরাপি, জানেন কী এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি?
মানুষ স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেলেও, আশ্চর্যের বিষয় হলো অনেকেই স্বেচ্ছায় ভয় উপভোগ করতে ভালোবাসেন। জম্বি, দানব বা অদৃশ্য আতঙ্কের মতো ভৌতিক সিনেমার দৃশ্য দেখে অনেকেই এক ধরনের মানসিক শান্তি অনুভব করেন। সিনেমা দেখার সময় ভয়ে কাঁপলেও শেষে মন হালকা হয় এবং বাস্তব জীবনের দুশ্চিন্তা সাময়িকভাবে দূরে সরে যায়।
শুনতে অবাক লাগলেও বিজ্ঞান বলছে—হরর সিনেমা দেখা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। বিশেষ করে যারা উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তায় ভোগেন, তাদের জন্য ভয়ও এক ধরনের 'থেরাপি' হিসেবে কাজ করতে পারে।
মস্তিষ্ককে প্রস্তুত করে ভয়ঙ্কর গল্প
মনোবিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভীতিকর সিনেমা আমাদের উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী কোল্টান স্ক্রিভনার বলেন, "ভয়ঙ্কর গল্প আমাদের মস্তিষ্ককে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত করে।"
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, ভীতিকর গল্প বা সিনেমা নিরাপদ পরিবেশে ভয় অনুভবের সুযোগ দেয়। এতে আবেগ নিয়ন্ত্রণ শেখা যায় এবং বাস্তব জীবনের চাপ সামলানো সহজ হয়।
স্ক্রিভনারের গবেষণায় ভৌতিক সিনেমার দর্শকদের তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
অ্যাড্রেনালিন জাঙ্কিজ: যারা ভয়ের মাধ্যমে রোমাঞ্চ খোঁজেন।
হোয়াইট নাকলারস: যারা ভয়ের মধ্য দিয়ে আনন্দ পান এবং নিজেদের ভয়কে জয় করার অনুভূতি উপভোগ করেন।
ডার্ক কোপার্স: যারা ভয়কে এক ধরনের নিরাপত্তার অনুভূতি হিসেবে দেখেন।
ডেনমার্কের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ভৌতিক সিনেমা দেখেন, তারা সংকটের সময় মানসিকভাবে বেশি স্থিতিশীল থাকেন। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারির মতো চরম পরিস্থিতিতেও তারা তুলনামূলকভাবে বেশি ধৈর্য ধরতে পেরেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মার্ক মিলার বলেন, ভয়ঙ্কর গল্প আমাদের মস্তিষ্ককে ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে তা কল্পনা করতে সাহায্য করে, যা অনিশ্চয়তা সামলাতে সুবিধা দেয়।
শিশুদের উদ্বেগ কমানোর জন্য নেদারল্যান্ডসে 'মাইন্ডলাইট' নামের একটি ভিডিও গেম তৈরি হয়েছে, যেখানে ভয়কে থেরাপির অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, এই গেম খেলার পর শিশুদের উদ্বেগ অনেক কমে গেছে।
হরর সিনেমার মানসিক উপকারিতা
১. নিরাপদ ভয় অনুভব: হরর সিনেমার ভয় বাস্তব নয়। শরীর ভয় পাওয়ার প্রতিক্রিয়া দেখায়—হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, অ্যাড্রেনালিন নিঃসৃত হয়—কিন্তু মস্তিষ্ক জানে আপনি নিরাপদ আছেন। এটি এক ধরনের মানসিক অনুশীলনের মতো কাজ করে এবং বাস্তব জীবনের চাপ সামলাতে সাহায্য করে।
২. চিন্তা থেকে বিরতি: হরর সিনেমা এত বেশি মনোযোগ কাড়ে যে দর্শক নিজের দুশ্চিন্তা ভুলে গিয়ে সব মনোযোগ সিনেমায় দিতে বাধ্য হন। এটি মানসিকভাবে একটি মূল্যবান বিরতি, যা উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
৩. ভয় সহ্য করার অভ্যাস তৈরি: যারা বাস্তব জীবনে কোনো ধরনের ভয়কে এড়িয়ে চলেন, তারা হরর সিনেমার মাধ্যমে নিরাপদ পরিবেশে ভয় অনুভব করতে পারেন। এতে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ভয় সহ্য করতে শেখে এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হয়।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যদি কেউ অতিরিক্ত ভয় বা দুঃস্বপ্নে ভোগেন, তবে এমন সিনেমা দেখা থেকে বিরত থাকা উচিত।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
ত্বক মসৃণ ও রোগমুক্ত রাখতে চান? প্রতিদিনের রুটিনে অ্যালোভেরা জেল রাখার ৫টি উপকারিতা
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী শুধু একটি সাধারণ উদ্ভিদ নয়, এটি প্রকৃতির অন্যতম এক নিয়ামক হিসেবে পরিচিত। শত শত বছর ধরে এটি ওষুধ, সৌন্দর্যচর্চা এবং ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে তা শরীরের ভেতর ও বাইরে—দু'দিক থেকেই উপকার এনে দেয় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
অ্যালোভেরার ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
১. ত্বকের যত্নে অপরিহার্য: অ্যালোভেরা জেল ত্বকের আর্দ্রতা বা ময়েশ্চার বজায় রাখতে অসাধারণ কাজ করে। বিশেষত গ্রীষ্মকালে রোদে পোড়া বা সামান্য পুড়ে যাওয়া ত্বক দ্রুত সারিয়ে তোলে। এতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদানগুলো ব্রণ, দাগ এবং র্যাশ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বককে উজ্জ্বল, মসৃণ ও সতেজ দেখায়।
২. চুলের জন্য প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: অ্যালোভেরা চুলে একটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এটি মাথার ত্বককে পরিষ্কার রাখে, খুশকি কমায় এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে। নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে চুল পড়া রোধে কার্যকর ফল পাওয়া যায়।
৩. হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক: অ্যালোভেরা জুস শরীরের হজমশক্তি বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এতে বিশেষ ধরনের এনজাইম থাকে, যা খাদ্য ভাঙতে সহায়তা করে এবং গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য বা অ্যাসিডিটির মতো সাধারণ সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: অ্যালোভেরাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই থাকে। এই উপাদানগুলো সম্মিলিতভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এটি শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ জমা হওয়া কমায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোর পুনর্গঠনে সহায়তা করে।
৫. ক্ষত সারাতে ও প্রদাহ কমাতে কার্যকর: অ্যালোভেরা জেল প্রাকৃতিক ফার্স্ট-এইড উপাদান হিসেবে পরিচিত। কোনো ক্ষতস্থানে এটি লাগালে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া দ্রুত কমে আসে এবং নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে, যার ফলে ক্ষত দ্রুত সারে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন, যদিও অ্যালোভেরা উপকারী, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে জুস খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। তাই এর পূর্ণাঙ্গ সুফল পেতে পরিমিতভাবে এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করা জরুরি।
কাঁচকলার জাদু: ৫টি পরিবর্তনে শরীরকে সুস্থ রাখতে সেদ্ধ কাঁচকলা খান
ইদানীং পুষ্টিবিদদের মধ্যে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ বা প্রতিরোধী শ্বেতসার নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি কাঁচকলায় প্রচুর পরিমাণে এবং এর সঙ্গে উপকারী ফাইবার **'পেকটিন'**ও পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞ রায়ান ফার্নান্দো জানাচ্ছেন, নিয়মিত অল্প পরিমাণে সেদ্ধ কাঁচকলা ভাতের সঙ্গে খেলে মানবদেহে এর নানা ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সহজপাচ্য এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর সেদ্ধ কাঁচকলা নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে সহায়তা মেলে।
নিয়মিত কাঁচকলা খাওয়ার ৫টি উপকারিতা
১. পেটের স্বাস্থ্য সুরক্ষা: কাঁচকলায় থাকা ফাইবার অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার খাদ্য হিসেবে কাজ করে। এর ফলে অন্ত্রের পরিবেশ পরিষ্কার থাকে, হজম প্রক্রিয়া ভালো হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস ও পেট ফাঁপার মতো সাধারণ সমস্যাগুলো কমে আসে। পেটের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য এটি বিশেষ উপকারী।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা: কাঁচকলা উচ্চ ফাইবারযুক্ত হওয়ায় সেদ্ধ করে খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে। এতে অতিরিক্ত খাবার বা ঘন ঘন ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমে আসে, যা শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৩. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ: কাঁচকলায় যে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ পাওয়া যায়, তা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে দেয় না। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম। এই কারণে এটি ডায়াবেটিক বা উচ্চ রক্তে শর্করা রয়েছে এমন রোগীদের জন্যও উপকারী খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
৪. হৃদ্স্বাস্থ্য সুরক্ষা: কাঁচকলায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদ্পেশিকে সক্রিয় রাখে। এছাড়াও, এটি শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাসেও বিশেষ সাহায্য করে।
৫. ভিটামিন ও খনিজের জোগান: কাঁচকলাতে ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং অভ্যন্তরীণ প্রদাহ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সেদ্ধ কাঁচকলা সহজে হজম হয় ঠিকই, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। বেশি খেলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে গ্যাস বা পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সূত্র : আনন্দবাজার
ঘরে বসেই বানান ডিজিটাল NID: সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া জানুন ধাপে ধাপে
বাংলাদেশে এখন জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল বা অনলাইনভিত্তিক। আগে যেখানে এটি শুধু হাতে লেখা বা ল্যামিনেটেড কার্ড আকারে বিতরণ করা হতো, এখন সেটি বদলে গেছে স্মার্ট NID বা ডিজিটাল NID কার্ডে। এই স্মার্ট কার্ড কেবল একটি পরিচয়পত্র নয়- এটি আপনার জাতীয়তা, নাগরিক অধিকার ও ডিজিটাল পরিচয়ের সরকারি স্বীকৃতি বহন করে।
ডিজিটাল NID বা স্মার্ট কার্ড তৈরি বা সংগ্রহের প্রক্রিয়াটি এখন অত্যন্ত সহজ। আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করতে পারেন, তথ্য যাচাই করতে পারেন এবং প্রয়োজনে ডিজিটাল কপি ডাউনলোড করে তা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কাজে ব্যবহার করতে পারেন। নিচে ধাপে ধাপে পুরো প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করা হলো।
ধাপ ১: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
প্রথমেই যেতে হবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে-? https://services.nidw.gov.bd
এটি নির্বাচন কমিশন (EC Bangladesh)-এর নিয়ন্ত্রিত একটি সরকারি ওয়েবসাইট, যেখানে NID সংক্রান্ত সব সেবা পাওয়া যায়। এখানে আপনি নতুন নিবন্ধন, পুরোনো তথ্য সংশোধন, NID পুনর্মুদ্রণ বা ডিজিটাল কপি ডাউনলোড সব কিছু করতে পারবেন।
ধাপ ২: অনলাইন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন
ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট (Account) খুলতে হবে। এর জন্য উপরের মেনু থেকে “Create Account” বা “Register” বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর কয়েকটি তথ্য দিতে হবে-
- আপনার NID নম্বর
- জন্মতারিখ
- বর্তমান ঠিকানার জেলা ও উপজেলা
- মোবাইল নম্বর (যেটি আপনার নামে নিবন্ধিত)
এরপর আপনার মোবাইলে একটি OTP (One Time Password) আসবে। সেটি দিয়ে আপনি সহজেই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। এটি একবার করলেই আপনি ভবিষ্যতে বারবার লগইন করতে পারবেন।
ধাপ ৩: তথ্য যাচাই ও প্রোফাইল তৈরি
রেজিস্ট্রেশন শেষ হলে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত সব তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে। নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা, পিতা-মাতার নাম, ছবি ইত্যাদি যাচাই করুন।
যদি কোনো ভুল পান, তাহলে “Information Update” বা “তথ্য হালনাগাদ” অপশন থেকে সংশোধনের আবেদন করতে পারেন। এই সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করলেও পরে আপনাকে স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে।
ধাপ ৪: ডিজিটাল NID কপি ডাউনলোড করুন
যদি আপনি ইতিমধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন, কিন্তু হাতে এখনো স্মার্ট কার্ড না পান তাহলে আপনি আপনার Digital NID (অনলাইন কপি) ডাউনলোড করতে পারবেন।
লগইন করার পর “Download Form” বা “Print Smart ID” অপশনে যান। এখানে আপনার তথ্য যাচাই করে সিস্টেম একটি PDF কপি তৈরি করবে, যেটি আপনি ডাউনলোড করে প্রিন্ট নিতে পারবেন।
এই কপিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলা, মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন, পাসপোর্ট আবেদন বা যেকোনো সরকারি কাজে অস্থায়ী NID হিসেবে বৈধ।
ধাপ ৫: নতুন নিবন্ধনের প্রক্রিয়া (যাদের এখনো NID নেই)
যদি আপনার বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হয় এবং আপনি এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র না নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে প্রথমে নতুনভাবে নিবন্ধন করতে হবে।
এর জন্য যেতে হবে আপনার উপজেলা নির্বাচন অফিসে। সঙ্গে নিতে হবে-
- জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পিতা-মাতার NID কার্ড
- বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ (যেমন বিদ্যুৎ বিল বা ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেট)
সেখানে আপনার ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। এরপর আপনার তথ্য NID ডাটাবেজে যুক্ত হবে। কয়েক সপ্তাহ পর আপনি অনলাইনে গিয়ে নিজের ডিজিটাল NID ডাউনলোড করতে পারবেন।
ধাপ ৬: স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করুন
আপনি অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পর নির্বাচন কমিশন আপনার তথ্য যাচাই করে স্মার্ট NID কার্ড প্রস্তুত করবে। কার্ড প্রস্তুত হলে আপনাকে এসএমএস দিয়ে জানানো হবে।
এসএমএস পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে গিয়ে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। কার্ডে থাকবে আপনার নাম, ছবি, জন্মতারিখ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ডিজিটাল চিপ যা আধুনিক পরিচয় ব্যবস্থার অংশ।
ধাপ ৭: তথ্য সংশোধন ও নিরাপত্তা
ডিজিটাল NID ব্যবস্থায় তথ্য সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কখনোই অজানা ওয়েবসাইট বা ব্রোকারের মাধ্যমে তথ্য জমা দেবেন না।
যদি কোনো ভুল পান, তবে সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে সংশোধনের আবেদন করুন। প্রয়োজনে স্থানীয় নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
অতিরিক্ত টিপস ও পরামর্শ
- ওয়েবসাইটের ঠিকানা services.nidw.gov.bd ছাড়া অন্য কোনো লিংক ব্যবহার করবেন না।
- আপনার NID নম্বর ও জন্মতারিখ কাউকে জানাবেন না।
- OTP বা লগইন পাসওয়ার্ড কখনো শেয়ার করবেন না।
- পাসওয়ার্ডে অন্তত ৮টি অক্ষর ব্যবহার করুন- অক্ষর, সংখ্যা ও চিহ্ন মিলিয়ে।
- তথ্য হালনাগাদের আবেদন করলে ট্র্যাকিং নম্বরটি সংরক্ষণ করুন।
বাংলাদেশের ডিজিটাল NID ব্যবস্থা নাগরিক সেবা সহজ ও আধুনিক করেছে। আগে যেখানে পরিচয় যাচাই বা সরকারি সেবা পেতে দিন কাটাতে হতো, এখন ঘরে বসেই আপনি পরিচয় যাচাই, ডাউনলোড বা তথ্য সংশোধন করতে পারেন।
ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী ছেলে না থাকলে সম্পত্তি বণ্টনের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা
ইসলামে উত্তরাধিকার বা সম্পত্তি বণ্টনের নিয়মকে বলা হয় ফারায়েজ। এটি এমন এক বিধান যা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। কুরআনের সূরা আন-নিসা (৪:১১–১২, ১৭৬) তে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর একজন মুসলমানের সম্পত্তি কীভাবে ও কার মধ্যে ভাগ হবে। ইসলামী উত্তরাধিকার ব্যবস্থার মূল দর্শন হলো কারও প্রতি অবিচার না করা, পারিবারিক সম্পর্ক রক্ষা করা এবং সম্পদকে সমাজে ন্যায্যভাবে সঞ্চালিত করা।
ইসলামিক আইন অনুযায়ী, সম্পত্তি বণ্টনের আগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মৃত ব্যক্তির জানাজা ও দাফনের খরচ পরিশোধ করা হয়, এরপর তার জীবদ্দশার কোনো ঋণ থাকলে তা শোধ করতে হয়, এবং সর্বশেষে যদি মৃত ব্যক্তি কোনো ওসিয়তনামা (Will) করে যান তবে সেটি কার্যকর করতে হয় তবে ওসিয়তের পরিমাণ কখনোই সম্পদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি হতে পারে না। এই তিন ধাপ শেষ হওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে শরিয়াহ অনুযায়ী ভাগ হয়।
যদি কোনো পুরুষের মৃত্যু হয় এবং তার ছেলে না থাকে, তবে তার সম্পত্তি বণ্টিত হবে তার কন্যা, স্ত্রী, পিতা-মাতা ও ভাইবোনের মধ্যে। কন্যা বা মেয়ের ক্ষেত্রে কুরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে এক মেয়ে থাকলে সে পাবে মোট সম্পত্তির অর্ধেক (½), আর যদি দুই বা ততোধিক মেয়ে থাকে, তারা একত্রে পাবে দুই-তৃতীয়াংশ (⅔)। অর্থাৎ ছেলে না থাকলে মেয়েরাই প্রধান উত্তরাধিকারী। স্ত্রী জীবিত থাকলে, সন্তান থাকলে তিনি পাবেন মোট সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ (⅛), আর সন্তান না থাকলে এক-চতুর্থাংশ (¼)।
পিতা-মাতা উভয়েই জীবিত থাকলে তারা প্রত্যেকে পাবেন এক-ষষ্ঠাংশ (⅙) করে। তবে যদি মৃত ব্যক্তির কোনো সন্তান না থাকে, তাহলে মা পাবেন এক-তৃতীয়াংশ (⅓) এবং পিতা পাবেন বাকি অংশ। ইসলামী শরিয়াহে পিতা-মাতার অধিকারকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে; তারা জীবিত থাকলে কখনোই বঞ্চিত হন না।
এ ছাড়া ভাই-বোন তখনই উত্তরাধিকারী হন, যখন মৃত ব্যক্তির কোনো সন্তান ও পিতা জীবিত না থাকে। সেই ক্ষেত্রে একজন বোন এক-অর্ধেক (½) পায়, আর দুই বা ততোধিক বোন মিলে দুই-তৃতীয়াংশ (⅔) পায়। যদি ভাই-বোন একসাথে থাকে, তাহলে ভাগ হবে ২:১ অনুপাতে অর্থাৎ ভাইয়ের ভাগ মেয়ের দ্বিগুণ। এটি অনেকেই সমালোচনা করলেও ইসলামিক নীতিতে এটি ন্যায্যতার প্রতিফলন, কারণ পুরুষের ওপর পারিবারিক অর্থনৈতিক দায়িত্ব বেশি।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় একজন পুরুষ মারা গেছেন, রেখে গেছেন স্ত্রী, দুই মেয়ে ও পিতা-মাতা। এখানে স্ত্রী পাবেন এক-অষ্টমাংশ (১/৮), দুই মেয়ে মিলে পাবেন দুই-তৃতীয়াংশ (২/৩), এবং পিতা-মাতা প্রত্যেকে পাবেন এক-ষষ্ঠাংশ (১/৬)। এই হিসাব অনুযায়ী কেউই বঞ্চিত নয়, বরং প্রত্যেকেই তাদের প্রাপ্য অংশ পাচ্ছেন। যদি হিসাবের যোগফল সম্পদের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে ইসলামী “আওল” পদ্ধতিতে অনুপাতে কমিয়ে ভাগ করা হয়, যেন সবাই তাদের ন্যায্য অংশ পান।
ইসলামে সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ইচ্ছার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কেউ মৃত্যুর আগে কোনো উত্তরাধিকারীকে বাদ দিতে পারেন না, কিংবা কাউকে অতিরিক্ত সুবিধা দিতে পারেন না। মৃত্যুর আগে সম্পত্তি ইচ্ছাকৃতভাবে একপক্ষের নামে লিখে দেওয়া বা কাউকে বঞ্চিত করা শরিয়াহ অনুযায়ী হারাম। তবে কেউ চাইলে মৃত্যুর আগে নিজের সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত অংশ কোনো গরিব আত্মীয়, এতিম বা দাতব্য কাজে ওসিয়ত করতে পারেন, যা ইসলাম অনুমোদন করে।
ফারায়েজ ব্যবস্থার বিশেষত্ব হলো এর ন্যায়বিচারমূলক ভারসাম্য। ইসলাম বলে, সম্পত্তি এক প্রজন্মের ব্যক্তিগত মালিকানা নয়, এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব ও আমানত। তাই ছেলে না থাকলে মেয়ের অধিকার পুরোপুরি সুরক্ষিত, স্ত্রী বঞ্চিত নন, পিতা-মাতা উপেক্ষিত নন। এভাবে ইসলাম পরিবারে অর্থনৈতিক স্থিতি, ন্যায্যতা এবং প্রজন্মের ভারসাম্য নিশ্চিত করে।
ইসলামী উত্তরাধিকার আইন সমাজে নারীর অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রথম দৃষ্টান্ত। সপ্তম শতাব্দীতেই ইসলাম নারীদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার স্বীকৃতি দিয়েছে যখন পৃথিবীর অন্য কোনো সভ্যতায় নারীর সম্পত্তির অধিকার ছিল না। ছেলে না থাকলেও মেয়ের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তার পিতার সম্পত্তিতে, যা কুরআনে আল্লাহ নিজেই নির্ধারণ করেছেন।
শীতকালে সুস্থ থাকার ৫টি অপরিহার্য অভ্যাস
শীতকাল শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে। ঠান্ডা আবহাওয়া, দিনের ছোট হওয়া এবং বাড়ি ও কাজের চাপ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। তবে সঠিক অভ্যাস ও সচেতনতার মাধ্যমে এই ঋতুতে নিজেকে সুস্থ, সতেজ এবং প্রাণবন্ত রাখা সম্ভব।
শীত আসন্ন। এখনই এই ঋতুর জন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। সঠিক পরিকল্পনা করলে শীতের সময়ও শরীর ও মন সতেজ রাখা সহজ হয়। আসুন জেনে নিই শীতকালের যত্নের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।
মানসম্মত ঘুম
শীতের ছোট দিন আমাদের প্রায়ই বেশি ঘুমাতে প্ররোচিত করে। তবে ঘুমের মান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন।ঘুমের মান উন্নত করতে একটি ধারাবাহিক শোবার সময়সূচী অনুসরণ করা উচিত। এছাড়া শোবার ঘরটি হালকা ঠান্ডা রাখা, প্রায় ১৫-১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা ঘুমের জন্য উপযুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, এই তাপমাত্রায় ঘুম গভীর ও আরামদায়ক হয়।
হাইড্রেটেড থাকা
শীতকালে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে প্রায়ই পর্যাপ্ত পানি পান করা ভুলে যাওয়া হয়। তবে শরীর ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকিতে থাকে।শুষ্ক বায়ু ত্বককে রুক্ষ করে, ফলে ক্লান্তি এবং পানিশূন্যতার অনুভূতি দেখা দিতে পারে। তাই সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া হালকা উষ্ণ ভেষজ চা শরীরকে হাইড্রেটেড এবং আরামদায়ক রাখে।
ত্বকের যত্ন ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
শীতকালে বাতাস সাধারণত শুষ্ক থাকে। এই কারণে ত্বক রুক্ষ ও ফাটার সমস্যায় ভুগতে পারে। প্রতিদিনের ত্বক পরিচর্যার অংশ হিসেবে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।গোসলের পর আর্দ্রতা ধরে রাখতে হাইড্রেটিং লোশন বা বডি অয়েল ব্যবহার করুন। ঠোঁট ও হাত শুষ্কতার জন্য সবচেয়ে সংবেদনশীল, তাই লিপ বাম এবং হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
ভিটামিন ডি গ্রহণ
শীতকালে সূর্যের আলো সীমিত থাকার কারণে শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এই অভাব শরীরে ক্লান্তি এবং মেজাজহীনতার কারণ হতে পারে।দাঁড়ানোর সুযোগে দিনে অন্তত ১০-১৫ মিনিট সূর্যের আলো নিন। এটি শরীরে প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি সরবরাহ করবে। যদি আপনি এমন কোনো অঞ্চলে থাকেন যেখানে সূর্যের আলো খুব কম, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ বিবেচনা করা যেতে পারে।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ
শীতকালে ভারী খাবারের প্রবণতা থাকে, তবে স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ অপরিহার্য। মৌসুমি শীতকালীন সবজি, মিষ্টি আলু এবং পাতা যুক্ত শাকখাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। উষ্ণ স্যুপ ও স্টু তৈরি করে খেলে শরীরকে উষ্ণ রাখা যায় এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায়। এই ধরনের সুষম খাদ্য শরীরকে শক্তিশালী রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
শীতের আগে এই অভ্যাসগুলো গড়ে নিলে শরীর ও মনকে সতেজ রাখা সহজ হয়। মানসম্মত ঘুম, পর্যাপ্ত পানি, ত্বকের যত্ন, ভিটামিন ডি এবং পুষ্টিকর খাবারএসবের সমন্বয় শীতকালে সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি।
ধীরগতির ইন্টারনেটকে বিদায়; ওয়াই-ফাইয়ের স্পিড ও কভারেজ বাড়াতে ৭টি কার্যকর কৌশল
আজকের দিনে ইন্টারনেট ছাড়া দৈনন্দিন জীবন যাপন করা কঠিন। অনলাইন ক্লাস, অফিস মিটিং কিংবা বিনোদনের সময় হঠাৎ যদি ঘরের ওয়াই-ফাইয়ের গতি কমে যায়, তবে তা চরম বিরক্তির কারণ হতে পারে। ভিডিও আটকে যাওয়া, ভয়েস কেটে যাওয়া বা বাফারিংয়ের মতো সমস্যাগুলো নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগে বাধা সৃষ্টি করে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সহজ ও কার্যকর উপায় অনুসরণ করলেই ঘরে বসে ওয়াই-ফাইয়ের গতি অনেকটা বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ওয়াই-ফাইয়ের স্পিড ও স্থিতিশীলতা বাড়ানোর ৭টি সহজ কৌশল:
১. রাউটারের সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করুন
ওয়াই-ফাই সিগন্যাল সাধারণত রাউটার থেকে সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে। যদি রাউটারটিকে ঘরের কোণে, কোনো দেয়ালের পেছনে বা মেঝেতে রাখা হয়, তবে সিগন্যাল দুর্বল হয়ে যায়। তাই গতি বাড়াতে রাউটারকে ঘরের মাঝখানে এবং তুলনামূলকভাবে উঁচু স্থানে রাখুন। এতে সিগন্যাল সমানভাবে ছড়াবে এবং কার্যকর গতি নিশ্চিত হবে।
২. নিয়মিত রাউটার রিস্টার্ট করুন
দীর্ঘ সময় ধরে রাউটার চালু থাকলে এতে ক্যাশ মেমরি জমে যায়, যার ফলে নেটওয়ার্ক ধীর হয়ে পড়ে। কয়েক দিন পরপর রাউটারের পাওয়ার বন্ধ করে আবার চালু (রিস্টার্ট) করলে এটি নতুনভাবে কাজ শুরু করে এবং এর পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
৩. পুরনো রাউটার বা মডেম আপগ্রেড করুন
আপনার ইন্টারনেট প্যাকেজ যত দ্রুতগতিরই হোক না কেন, যদি রাউটার পুরনো হয়, তবে তা অনেক সময় সেই উচ্চ গতি সমর্থন করতে পারে না। তাই আধুনিক ‘ডুয়াল-ব্যান্ড’ বা ‘ওয়াই-ফাই ৬’ প্রযুক্তি সমর্থন করে এমন রাউটার ব্যবহার করুন। এই ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি স্পিড ও স্থিতিশীলতা দুটোই বাড়াতে সাহায্য করে।
৪. ব্যান্ডউইথের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করুন
একই সঙ্গে যদি অনেকগুলো ডিভাইস ভিডিও স্ট্রিমিং, ডাউনলোড বা গেম খেলায় ব্যস্ত থাকে, তাহলে মোট ব্যান্ডউইথ ব্যবহারকারী ডিভাইসগুলোর মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। এই কারণে গতি কমে আসতে পারে। অপ্রয়োজনীয় ডিভাইসগুলো ওয়াই-ফাই থেকে অফ করে রাখুন এবং প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের অগ্রাধিকার দিন।
৫. রাউটারের ফার্মওয়্যার আপডেট রাখুন
রাউটার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিতভাবে সফটওয়্যার আপডেট বা ফার্মওয়্যার আপডেট প্রকাশ করে। এই আপডেটগুলোতে সাধারণত সিস্টেমে থাকা ত্রুটি বা বাগ ঠিক করা হয় এবং সামগ্রিক পারফরম্যান্স উন্নত হয়। তাই রাউটারের সেটিংসে গিয়ে আপডেট আছে কি না, তা যাচাই করুন এবং থাকলে তা ইনস্টল করে নিন। এতে অনেক সময় গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যেতে পারে।
৬. সিগন্যাল এক্সটেন্ডার বা মেশ সিস্টেম ব্যবহার করুন
বড় বাসা বা একাধিক ফ্লোরের বাড়িতে ওয়াই-ফাই সিগন্যাল দুর্বল হয়ে পড়া একটি সাধারণ সমস্যা। এক্ষেত্রে ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার বা মেশ নেটওয়ার্ক সিস্টেম ব্যবহার করলে সিগন্যাল ঘরের প্রতিটি কোণে পৌঁছাবে এবং নেটওয়ার্কের গতি সমান ও স্থিতিশীল থাকবে।
৭. ইন্টারনেট প্যাকেজ যাচাই করুন
কখনো কখনও ধীর গতির সমস্যাটা রাউটার বা অবস্থানে নয়, বরং আপনার ইন্টারনেট প্যাকেজেই থাকে। যদি আপনার সংযোগে একাধিক ব্যবহারকারী নিয়মিত উচ্চ ব্যান্ডউইথের কাজ করেন, তবে অপেক্ষাকৃত বেশি গতির প্যাকেজে আপগ্রেড করুন। এতে গতি ও স্থায়িত্ব দুটোই উন্নত হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ওয়াই-ফাই ধীর হয়ে গেলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নিয়মিত রাউটার রিস্টার্ট করা, আপডেট রাখা, সঠিক স্থানে বসানো এবং প্রয়োজনমতো ডিভাইস আপগ্রেড করলেই আপনার ইন্টারনেট স্পিড তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে। সচেতন ব্যবহার এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণই দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্ন সংযোগের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
ব্রণ, বলিরেখা ও সানবার্ন থেকে মুক্তি; ত্বকের যত্নে আইস কিউব ব্যবহারের ১০ সহজ কৌশল
শীতের আগমনের এই সময়ে রূপচর্চায় শীতলতা যোগ করতে পারে বরফ। বরফের মাধ্যমে ত্বকের লাবণ্য ফুটিয়ে তোলা সম্ভব এবং এটি রূপচর্চার একটি সহজ ও কার্যকর উপায়। রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ত্বকের বড় হয়ে যাওয়া লোমকূপ সংকুচিত করা, মেকআপ দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী রাখা এবং অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা সমাধানে বরফ অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
বিভিন্ন ফলের রস অথবা অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে বরফের কিউব বা আইস কিউব তৈরি করে রূপচর্চায় ব্যবহার করা যায়। এই পদ্ধতিটি সহজ এবং সময়ও বাঁচায়। কিশোরী বয়স থেকে যেকোনো ত্বকের অধিকারী ব্যক্তি বরফের মাধ্যমে রূপচর্চা করতে পারবেন। তবে সাইনাস বা মাইগ্রেনের কারণে যারা মাথা ব্যথায় ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে বরফ ব্যবহার না করার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাইরে রোদ থেকে ঘরে ফিরেও বরফ ব্যবহার করা যাবে।
ত্বকের যত্নে বরফের ১০টি উপকারিতা
১. ব্রণের ফোলাভাব হ্রাস
বরফ ব্রণের ফোলাভাব কমাতে দারুণ সহায়ক। একটি পরিষ্কার কাপড়ে কয়েক টুকরা বরফ নিয়ে ব্রণের ওপর হালকা করে চেপে ধরলে ব্রণ সংকুচিত হয়।
২. ত্বকের দীপ্তি বৃদ্ধি
বরফ ঘষলে ত্বকে দ্রুত দীপ্তি ফিরে আসে। পরিষ্কার করার পর ত্বকে এক টুকরা বরফ ঘষে নিলে স্নিগ্ধতা আসে। বরফ ঘষার ফলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, ফলে ত্বক সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকে।
৩. বলিরেখা দূরীকরণ
নিয়মিত বরফ ব্যবহার ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে এবং বলিরেখা দূর করতে বেশ উপকারী।
৪. ভ্রু প্লাকের ব্যথা হ্রাস
ভ্রু প্লাক করার সময় তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই ব্যথা কমাতে প্লাক করার শুরুতে এক টুকরা বরফ ঘষে নেওয়া উচিত। এতে ভ্রুর অংশ খানিকটা অবশ হয়ে আসে, ফলে ব্যথা কম হয়।
৫. চোখের ফোলাভাব কমানো
অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে অনেক সময় চোখের নিচে ফুলে যেতে পারে। চোখের এই ফোলাভাব কমাতে বরফ চেপে ধরলে চোখে আরাম আসে এবং ত্বক টানটান হয়।
৬. রোদে পোড়াভাব দূর
সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরও ত্বক পুড়ে গেলে বা জ্বালাভাব এলে তা কমাতে বরফ কাজে আসে। রোদ থেকে ঘরে ফিরে ত্বকে খানিকটা বরফ ঘষে নিলে জ্বালাভাব কমে আসে এবং পোড়াভাবও দূর হয়।
৭. মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী
মেকআপের শুরুতে মুখে বরফ ঘষে নিলে তা লোমকূপ সংকুচিত করে এবং ত্বক শীতল হয়। এর ফলে ত্বকে মেকআপ সহজেই বসে এবং দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়।
৮. নেইলপলিশ দ্রুত শুকানো
নখে নেইলপলিশ লাগানোর পর দ্রুত শুকানোর জন্য নেইলপলিশ দেওয়া হাত কিছুক্ষণ বরফ ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
৯. লালচেভাব ও র্যাশ কমানো
রোদ, অ্যালার্জি, ওয়্যাক্সিং বা প্লাকিং ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ত্বকে লালচেভাব হতে পারে। এমন সমস্যায় বরফ কাপড়ে মুড়ে ত্বকে ঘষে নিলে লালচেভাব এবং র্যাশ কমে আসে।
১০. লোমকূপ সংকুচিত করা
বরফ ব্যবহারের অন্যতম প্রধান সুবিধা হলো এটি ত্বকের বড় হয়ে যাওয়া লোমকূপকে সংকুচিত করতে সাহায্য করে।
বরফ ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি
বরফ ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী হলেও, সঠিকভাবে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকে সরাসরি বরফ ঘষে নেওয়া উচিত নয়, কারণ এতে চামড়ার নিচে থাকা সূক্ষ্ম শিরাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই বরফ সবসময় পরিষ্কার কাপড়ে পেঁচিয়ে ত্বকে হালকাভাবে ঘষে নেওয়া নিরাপদ।
বুক ধড়ফড়ের নেপথ্যে পানিশূন্যতা: হৃদস্পন্দন দ্রুত হলে যা করবেন, জানালেন বিশেষজ্ঞরা
মানুষের হৃদস্পন্দন সাধারণত প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার হয়ে থাকে। তবে কখনো কখনো হৃদপিণ্ডের স্পন্দন অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত, জোরে বা অনিয়মিত অনুভূত হতে পারে। বুক, গলা বা ঘাড়ে এই ধড়ফড় বা দৌড়ঝাঁপের মতো অনুভূতি তৈরি হয়। কখনো আবার মনে হতে পারে যেন হৃদপিণ্ডের একটি স্পন্দন বাদ পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দনের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রায়শই উপেক্ষিত কারণ হতে পারে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন।
পানিশূন্যতা যেভাবে হৃদস্পন্দন বাড়ায়
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, শরীরে তরলের অভাব হলে হৃদপিণ্ডকে রক্ত সঞ্চালনের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এতে হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াটিকে হৃৎপিণ্ডের ওপর বাড়তি চাপ হিসেবে দেখা হয়।
রক্তের ঘনত্ব বৃদ্ধি: পর্যাপ্ত পানি না পেলে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যায়, ফলে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় এবং হৃদপিণ্ডের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা: পানিশূন্যতা থাকলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য নষ্ট হয়, বিশেষ করে পটাশিয়াম-এর মাত্রা কমে যায়। এই ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ। দ্রুত হৃদস্পন্দন তীব্র পানিশূন্যতার লক্ষণও হতে পারে, যার জন্য তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন।
অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দনের অন্যান্য সাধারণ কারণ
অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল বা ক্যাফেইন সেবন
উদ্বেগ বা তীব্র মানসিক চাপ
রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া), হাইপারথাইরয়েডিজম বা অন্যান্য হৃদরোগ
ব্যায়াম বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম
রক্তে শর্করা বা অক্সিজেনের ঘাটতি
কিছু ধরনের ওষুধ, যেমন ডিকনজেস্ট্যান্ট-জাতীয় ওষুধ সেবন
পানিশূন্যতার লক্ষণ ও তীব্রতা
গাঢ় রঙের প্রস্রাব বা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
মাথাব্যথা
পেশির টান
ত্বক শুষ্ক ও ঠান্ডা লাগা
মুখ শুকিয়ে যাওয়া এবং তৃষ্ণা বৃদ্ধি
তীব্র পানিশূন্যতা হলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা প্রয়োজন। এর লক্ষণগুলো হলো:
বিভ্রান্তি বা প্রলাপ
মাথা ঘোরা, বিরক্তি ও দুর্বলতা
দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস
ডুবে যাওয়া চোখ, কুঁচকে যাওয়া ত্বক
খুব গাঢ় প্রস্রাব হওয়া
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা শকে চলে যাওয়া
হৃদস্পন্দন হলে করণীয় ও প্রতিরোধের উপায়
হালকা পানিশূন্যতা দূর করতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন অথবা ইলেক্ট্রোলাইটযুক্ত পানীয়, যেমন নারকেলের জল বা ওআরএস (ORS) গ্রহণ করুন।
তবে তীব্র ডিহাইড্রেশনের ক্ষেত্রে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। সেখানে শিরাপথে দ্রুত তরল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
হৃদস্পন্দন প্রতিরোধে করণীয়
নিয়মিত পানি পান করুন, বিশেষ করে গরমের সময় বা শারীরিক পরিশ্রমের পরে।
অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন সেবনের মাত্রা কমান।
খাদ্যতালিকায় ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ খাবার, যেমন কলা বা নারকেল পানি রাখুন।
যদি কোনো ওষুধ বা সাপ্লিমেন্টের কারণে ধড়ফড় হয় বলে সন্দেহ হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, প্রথমবারের মতো হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলে বা এর ধরন পরিবর্তন হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি। তবে কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত এবং অবিলম্বে চিকিৎসা নেওয়া আবশ্যক। যদি হৃদস্পন্দনের সঙ্গে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলো দেখা দেয়
বুকে তীব্র ব্যথা,শ্বাসকষ্ট,মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া,অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
সূত্র : হেলথ
পাঠকের মতামত:
- রোদে ভিটামিন ডি পাওয়ার সঠিক কৌশল জেনে নিন
- পরিবর্তনের ইঙ্গিত: তাপমাত্রা ও কুয়াশা নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
- জোর করে দাবি আদায় করতে চায় কিছু দল: আমীর খসরুর
- জয়–হাসিনা সাক্ষাৎ: দিল্লির নীলনকশার প্রথম ধাপ?
- ১০ বছরের মধ্যে এনসিপি ক্ষমতায় যাবে: হান্নান মাসউদ
- মিশর সফরে সারজিস আলম: রাফা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াবেন
- সারা দেশে নির্বাচনের জোয়ার বইছে: প্রেস সচিব
- তুলার গুদামে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট, নিয়ন্ত্রণে আসেনি এখনো
- এবার সামনে এলো বাবলা হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য: কিলিং মিশনে জড়িত ৪ জন শনাক্ত
- বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চাই না: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে সতর্ক থাকার বার্তা রাজনাথ সিংয়ের
- আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের রাজশাহী সফর: নির্বাচনের প্রসঙ্গ এড়িয়ে টিটিসি পরিদর্শন
- হরর সিনেমা হতে পারে থেরাপি, জানেন কী এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি?
- ১.৫৫ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি: বিশ্বব্যাংকের ঋণের প্রকল্পে লুটপাটের মহোৎসব
- দেশের পরিবর্তনে দলগুলোর ভূমিকা দেখেই জোটের সিদ্ধান্ত নেবে গণঅধিকার পরিষদ
- জন্মভূমিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন: সরকারের পট পরিবর্তনের পর প্রথম সফর
- ব্লাড ব্যাংকের রক্তে এইচআইভি: সরকারি হাসপাতালের রক্ত নিয়ে আক্রান্ত হলো ৫ শিশু
- ত্বক মসৃণ ও রোগমুক্ত রাখতে চান? প্রতিদিনের রুটিনে অ্যালোভেরা জেল রাখার ৫টি উপকারিতা
- পাকিস্তান-আফগানিস্তান আলোচনা স্থগিত: চুক্তি না হওয়ায় যুদ্ধবিরতি অনির্দিষ্ট ধাপে
- কাঁচকলার জাদু: ৫টি পরিবর্তনে শরীরকে সুস্থ রাখতে সেদ্ধ কাঁচকলা খান
- জম্মু হত্যাকাণ্ড ১৯৪৭: নির্বিচারে মুসলিমদের হত্যার ভয়াবহ চিত্র, যা তুলে ধরল গবেষণা
- গণহত্যার অভিযোগে নেতানিয়াহুসহ ৩৭ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
- পরাজয়ের ভয়ে গণভোটের বিরোধিতা করছে বিএনপি: ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের
- গাজায় শান্তি ফেরাতে আন্তর্জাতিক বাহিন মোতায়েনের ঘোষণা দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
- জাহানারা আলমের অভিযোগ 'ভিত্তিহীন': মুখ খুললেন সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল মঞ্জু
- আর্থিক খাতের রক্তক্ষরণ: আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটের মাশুল গুনছে ২৪টি ব্যাংক
- পাকিস্তান-বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠতা:'চিকেনস নেক' সুরক্ষিত করতে সীমান্তে ভারতের নতুন সেনাঘাঁটি
- কালো মুরগি কেন এত দামি: জেনেটিক বিস্ময়, ঐতিহ্য ও বিলাসিতার এক অনন্য সংমিশ্রণ
- বঙ্গোপসাগরে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা, জানুন বিস্তারিত
- ঘরে বসেই বানান ডিজিটাল NID: সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া জানুন ধাপে ধাপে
- ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী ছেলে না থাকলে সম্পত্তি বণ্টনের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা
- জেনে নিন ভাপা পিঠা বানানোর সহজ রেসিপি
- আফগান–পাক উত্তেজনা ফের চরমে
- ১২ দিনের যুদ্ধের পর বরফ গলছে কি ইরান–মার্কিন সম্পর্কে?
- জুলাই সনদে নতুন সংকট: মুখোমুখি বিএনপি ও জামায়াত
- জানা গেল জাতীয় নির্বাচনের সময়
- ৭ নভেম্বরের বিপ্লব: জিয়াউর রহমানের প্রতি সমর্থনের গল্প শোনালেন মির্জা ফখরুল
- জোট বাদ দিয়ে নতুন যে কৌশল নিচ্ছে জামায়াত: উদ্দেশ্য একাধিক দলের অংশগ্রহণ বাড়ানো
- নির্বাচন নিয়ে ইসি'র চূড়ান্ত বার্তা: প্রস্তুত শতভাগ, ভোট ফেব্রুয়ারিতে
- ব্রিটিশ প্রতিনিধির হুঁশিয়ারি: বাংলাদেশের নির্বাচনে 'অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়'
- ট্রাম্পের ভারত সফর আসন্ন? মোদিকে 'মহান ব্যক্তি' বলে প্রশংসা
- যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই আফগানিস্তানে গোলাবর্ষণ পাকিস্তানের; উত্তেজনা চরমে
- শুক্রবার থেকে শনিবার ২২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
- এনসিপি'র বার্তা: বিএনপি-জামায়াত যে কারো সঙ্গে জোটে যেতে পারি, শর্ত একটাই
- পাক-ভারত সংঘাতে বিমান বিধ্বস্ত: ট্রাম্পের নতুন দাবি
- মবের ভয় কেন? যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলেন, ভয় তাদেরই: প্রেস সচিব
- বিএনপিকে অবজ্ঞা করলে ফল ভালো হবে না: উপদেষ্টাদের প্রতি মির্জা ফখরুলের হুঁশিয়ারি
- হাউসকা দুর্গের ভূগর্ভ আর ‘শয়তানের বাইবেল’ কোডেক্স গিগাস: কিংবদন্তি, ইতিহাস ও ভয়ের মনস্তত্ত্ব
- বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সয়াবিন চুক্তি: কি কারণে ভারতের বাজার হারানোর শঙ্কা তৈরি হলো?
- শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কি সম্ভব? যা আছে আইআরআইর আট দফার সুপারিশে
- ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা পাস, মোট ছুটি যতদিন
- ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক সংলাপ: জ্ঞানচর্চায় উপনিবেশের ছায়া কাটাতে আহ্বান বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানীর
- গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত
- ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
- চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আবারও পর্দায় পূজা চেরি
- শেয়ারবাজারে শীর্ষ বিশ শেয়ারের তালিকা প্রকাশ
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ
- ৫ ও ৬ নভেম্বর বন্ধ থাকবে ২ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ড
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- গ্রিন সিগন্যাল কী পেল মান্না, নুর, পার্থসহ ১২ জোটনেতা
- ঢাকার আজকের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি এক নজরে
- ইসরায়েলের নেতাদের জন্মনাম ও পরিচয় পরিবর্তনের যত কারণ
- ১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা
- ড. ইউনুস বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী মুসলিমের মধ্যে ৫০তম
- রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প








