শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় নামাজের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৫ ১১:৩০:২৬
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় নামাজের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি

নামাজ শুধু মুসলমানদের একটি ধর্মীয় আচার নয়—এটি এক ধরনের পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থাও, যা শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতা নিশ্চিত করে। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি যেমন স্রষ্টার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন, তেমনি নিজের শরীর ও মনকেও রাখেন সক্রিয় ও সুশৃঙ্খল।

নামাজের সময়কার নড়াচড়া যেমন রুকু ও সিজদা এক ধরনের হালকা ব্যায়াম হিসেবে কাজ করে। এতে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সক্রিয় থাকে, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং জয়েন্টগুলো নমনীয় হয়। বিশেষত, সিজদার সময় মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ে, যা মনঃসংযোগ ও স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সহায়ক। নামাজের পূর্বে ওজুর মাধ্যমে প্রতিদিন নির্দিষ্ট অঙ্গ ধোয়ার অভ্যাস ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভ্যেস গড়ে তোলে, যা জীবাণু সংক্রমণ রোধে কার্যকর।

নামাজ মানসিক চাপ কমিয়ে আত্মিক প্রশান্তি এনে দেয়। নির্দিষ্ট সময় অনুসরণে গড়ে ওঠা দৈনন্দিন রুটিন ব্যক্তি জীবনে শৃঙ্খলা আনে। নামাজের একাগ্রতা এক ধরনের ধ্যানের মতো কাজ করে, যা মনকে শান্ত রাখে এবং মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই অভ্যাস নেতিবাচক চিন্তা কমিয়ে ইতিবাচক চিন্তার বিকাশ ঘটায়।

নামাজের আরেকটি বড় দিক হলো এর সামাজিক প্রভাব। জামাতে নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতা জন্ম নেয়। ধনী-গরিব, শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে—যা সমাজে সাম্য ও একতা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে। জামাতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে একে অপরের খোঁজখবর নেওয়া এবং পারস্পরিক সহায়তার সুযোগও সৃষ্টি হয়।

বর্তমান কর্মব্যস্ত ও প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে যেখানে মানসিক চাপ ও একাকীত্ব বেড়েছে, সেখানে নামাজ হতে পারে সহজ ও কার্যকর সমাধান। এটি কেবল ধর্মীয় অনুশীলন নয়, বরং জীবনঘনিষ্ঠ এক চর্চা—যা শারীরিক-মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি সমাজে স্থিতিশীলতাও আনতে পারে।


ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আগামীকালের ইবাদতের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ২২:০৪:১৪
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আগামীকালের ইবাদতের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী
ছবি: সংগৃহীত

রোববার, ৫ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখের জন্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার দৈনিক নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো।

ওয়াক্ত সময় (আনুমানিক)

ফজর / সুবহে সাদিক ৪টা ৩৮ মিনিট (AM)

সূর্যোদয় ৫টা ৫২ মিনিট (AM)

জোহর ১১টা ৫১ মিনিট (AM)

আসর ৪টা ০৩ মিনিট (PM)

মাগরিব ৫টা ৪৩ মিনিট (PM)

ইশা ৭টা ০ মিনিট (PM)

উল্লিখিত ঢাকা সময়ের সঙ্গে নিচের সময়গুলো যোগ-বিয়োগ করে নিতে হবে:

চট্টগ্রাম -৫ মিনিট (বিয়োগ)

সিলেট -৬ মিনিট (বিয়োগ)

খুলনা +৩ মিনিট (যোগ)

রাজশাহী +৭ মিনিট (যোগ)

রংপুর +৮ মিনিট (যোগ)

বরিশাল +১ মিনিট (যোগ)


রমজান কবে? জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থার পূর্বাভাসে মিলল সেই ইঙ্গিত

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১৫:২৫:১৩
রমজান কবে? জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থার পূর্বাভাসে মিলল সেই ইঙ্গিত
ছবি: সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থার প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, পবিত্র রমজান মাস আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার শুরু হতে পারে। এই হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে আমরা রমজান মাস থেকে ঠিক ১৩৯ দিন দূরে আছি।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান জানিয়েছেন, রমজান মাস শুরু হবে নতুন চাঁদ ওঠার ভিত্তিতে। এই নতুন চাঁদ আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) আবুধাবির সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টা ১ মিনিটে ‘জন্ম নেবে’। তবে নতুন চাঁদ সূর্যাস্তের এক মিনিট পরই অস্ত যাবে। তাই সেই দিন সন্ধ্যায় খালি চোখে চাঁদ দেখা সম্ভব হবে না। ফলে চাঁদ দেখা কমিটির আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণের পর রমজানের প্রথম দিন ১৯ ফেব্রুয়ারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রোজার সময়কাল ও আবহাওয়া

আল জারওয়ান জানান, আবুধাবিতে রোজা রাখার সময় শুরুতে প্রায় ১২ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট হবে এবং মাসের শেষের দিকে এটি ধীরে ধীরে বেড়ে ১৩ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে পৌঁছাবে। দিনের আলো শুরুতে ১১ ঘণ্টা ৩২ মিনিট থাকবে এবং মাস শেষে ১২ ঘণ্টা ১২ মিনিটে পৌঁছাবে।

আবুধাবিতে ওই মাসের শুরুতে তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকতে পারে। রমজানের শেষ দিকে তাপমাত্রা বেড়ে ১৯ ডিগ্রি থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। আল জারওয়ান আরও জানান, পবিত্র রমজানের পুরো মাস বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা মৌসুমি গড় আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ সময় বৃষ্টির পরিমাণ ১৫ মিলিমিটার ছাড়াতে পারে।


ওমরাহ পালনে ১০টি নতুন নিয়ম: যা না মানলেই জরিমানা

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১৪:৪১:৩০
ওমরাহ পালনে ১০টি নতুন নিয়ম: যা না মানলেই জরিমানা
ওমরাহর নিয়মে ব্যাপক পরিবর্তন, মানতে হবে যে ১০ বিষয়

ওমরাহ পালন প্রতিটি মুসলিমেরই হৃদয়ের লালিত স্বপ্ন। কিন্তু এই স্বপ্নযাত্রায় ভিসা আবেদন থেকে আবাসন—সবকিছুই অনেক সময় জটিল হয়ে উঠত। তবে এবার সেই প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন এনেছে সৌদি আরব। উমরাহ যাত্রা আরও স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল করতে নতুন কিছু নিয়ম চালু করেছে সৌদি সরকার।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) খালিজ টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওমরাহ অপারেটরদের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানানো হয়। নতুন নিয়মে ভিসা আবেদন, পরিবহন, হোটেল—সবকিছুই সরকারি অনুমোদিত অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। নিচে ওমরাহ যাত্রার আগে প্রতিটি হাজির জন্য জানা জরুরি ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন তুলে ধরা হলো:

ওমরাহ যাত্রায় জানা জরুরি ১০টি পরিবর্তন

১. ভিসা আবেদনের সময়ই হোটেল বুকিং বাধ্যতামূলক: এখন আর ভিসা পাওয়ার পর হোটেল বুক করা যাবে না। ওমরাহ ভিসার আবেদন করার সময়ই মাসার সিস্টেম বা নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে অনুমোদিত হোটেল বুক করতে হবে। কেউ আত্মীয়ের বাসায় থাকলে তা ভিসা আবেদনের সময় উল্লেখ করতে হবে।

২. পর্যটন ভিসায় ওমরাহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ: এখন থেকে পর্যটন ভিসায় কেউ ওমরাহ পালন করতে পারবেন না। অপারেটররা সতর্ক করেছেন, কেউ চেষ্টা করলে তাকে থামিয়ে দেওয়া বা এমনকি মদিনার রিয়াজুল জান্নাহয় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হতে পারে। ওমরাহ গাইড শিহাব বলেন, “পর্যটন ভিসায় গেলে ঝুঁকি আছে।”

৩. আলাদা ওমরাহ ভিসা বাধ্যতামূলক: সব হাজিকেই এখন নুসুক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আলাদা ওমরাহ ভিসা নিতে হবে। এটি ই-ভিসা হিসেবে বা অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্টের প্যাকেজের মাধ্যমেও করা যাবে।

৪. আত্মীয়ের বাসায় থাকলে সৌদি আইডি নম্বর: যারা পরিবার বা আত্মীয়ের বাসায় থাকার পরিকল্পনা করছেন, তাদের সেই হোস্টের ইউনিফায়েড সৌদি আইডি নম্বর দিতে হবে। এই আইডিটি সরাসরি ভিসার সঙ্গে যুক্ত থাকবে।

৫. সফরসূচি বদলানো যাবে না: ভিসা আবেদন করার সময় সফরসূচি (ইটিনারারি) আপলোড করতে হবে, যা পরবর্তীতে পরিবর্তন বা স্থগিত করা যাবে না। ওমরাহ অপারেটর কায়সার মাহমুদের মতে, ফেরার তারিখ পিছিয়ে দিলে প্রতি হাজির জন্য কমপক্ষে ৭৫০ সৌদি রিয়াল জরিমানা দিতে হয়।

৬. বিমানবন্দরে বুকিং যাচাই: সৌদিতে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নুসুক বা মাসার প্ল্যাটফর্মে থাকা হোটেল ও পরিবহন বুকিং যাচাই করবে। কোনো তথ্য অনুপস্থিত থাকলে যাত্রা থামিয়ে দেওয়া বা জরিমানা করা হতে পারে।

৭. কেবল অনুমোদিত ট্যাক্সি ও পরিবহন ব্যবহার: সব হাজিকেই নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে অনুমোদিত ট্যাক্সি, বাস বা ট্রেন ব্যবহার করতে হবে। এখন থেকে অনুমোদিত যানবাহন ছাড়া কেউ বিমানবন্দর থেকে মক্কা বা মদিনায় যেতে পারবেন না।

৮. নিয়ম ভাঙলে কড়াকড়ি জরিমানা: অনুমোদনবিহীন ট্যাক্সি ব্যবহার, নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান বা বুকিং না করা—সব ক্ষেত্রেই জরিমানা শুরু হবে ৭৫০ দিরহাম থেকে।

৯. অন-অ্যারাইভাল ভিসা: যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও শেনগেন অঞ্চলের ভিসাধারী বা সেসব দেশে বসবাসকারী মুসলমানেরা নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে অন-অ্যারাইভাল ভিসা পেতে পারেন।

১০. ট্রেন সেবা ও সময়সীমা: হারামাইন এক্সপ্রেস ট্রেন রাত ৯টার পর চালু থাকে না। যারা দেরিতে পৌঁছান, তাদের আগে থেকেই বিকল্প অনুমোদিত যানবাহন বুক করতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, নতুন এই নিয়মগুলো ওমরাহ প্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ, স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল করতে তৈরি করা হয়েছে।


নূহ (আ.)-এর প্রতি তার জাতির ৫টি অভিযোগের জবাব

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৩ ১৪:৫৫:৫৭
নূহ (আ.)-এর প্রতি তার জাতির ৫টি অভিযোগের জবাব
নবী নুহের (আ.) দাওয়াত ও অবিশ্বাসীদের ৫ অভিযোগ। ছবি: ক্যানভা

হজরত আদম (আ.)-এর ইন্তেকালের কয়েকশো বছর পর যখন মানুষ শয়তানের ধোঁকায় ধীরে ধীরে মূর্তিপূজা ও শিরক করতে শুরু করে, তখন আল্লাহ তাআলা তাদের মাঝে নবী হিসেবে পাঠান হজরত নূহ (আ.)-কে। কোরআনে তার নামে একটি সুরা রয়েছে এবং মোট ২৮টি সুরায় ৮১টি আয়াতে তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

হজরত নূহ (আ.) সাড়ে নয়শো বছর বেঁচে ছিলেন এবং এই দীর্ঘ সময় ধরে অক্লান্তভাবে দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে যান। তিনি তার জাতিকে বলেন, “হে আমার জাতি, তোমরা আল্লাহর এবাদত করো, তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নাই। তবু কি তোমরা সাবধান হবে না?” (সুরা মুমিনুন: ২৩)। কিন্তু তার সম্প্রদায়ের লোকেরা তার দাওয়াতে সাড়া না দিয়ে কানে আঙুল দিয়ে, নিজেকে কাপড় দিয়ে আড়াল করে সটকে পড়েছে।

কোরআনে হজরত নূহের (আ.) জাতির অবিশ্বাসীরা যে পাঁচটি প্রধান অভিযোগ এনেছিল, তা তুলে ধরা হয়েছে। প্রত্যেক নবীর প্রতিই অবিশ্বাসীরা এই পাঁচটি অভিযোগ করেছে এবং আল্লাহ তাআলা প্রতিটি অভিযোগের জবাব দিয়েছেন।

নূহ (আ.)-এর প্রতি অবিশ্বাসীদের ৫টি অভিযোগ ও জবাব

১. প্রথম অভিযোগ: নবী তো রক্ত-মাংসের মানুষ

অবিশ্বাসীরা বলত: তুমি তো আমাদের মতোই রক্ত-মাংসের মানুষ, কোনো ফেরেশতা নও। তাহলে তোমাকে আল্লাহর নবী হিসেবে মানতে হবে কেন?

জবাব: আল্লাহ যাকে নির্বাচিত করেন, তিনিই নবী হন। আল্লাহ মানুষের জন্য মানুষের মধ্য থেকেই নবী নির্বাচন করেন। কোরআনে বলা হয়েছে, কাফেররা সব সময়ই সংশয় প্রকাশ করে, আল্লাহ যদি কোনো ফেরেশতাকেও নবী বানিয়ে পাঠাতেন, তবুও তারা সংশয় করত। (সুরা আনআম: ৯)

২. দ্বিতীয় অভিযোগ: বাপ-দাদার মতাদর্শ ত্যাগ

অবিশ্বাসীরা যুক্তি দিত: তুমি যেসব কথাবার্তা বলো, বাপ-দাদা কারও মুখে এমন কথা শুনিনি। বাপ-দাদার মতাদর্শ ত্যাগ করে তোমার নতুন মতাদর্শ আমরা কেন গ্রহণ করব?

জবাব: পূর্বপুরুষদের মতাদর্শ শুনলেই তা ঠিক হবে এমন নয়। জ্ঞানচর্চায় ভুল প্রমাণিত হতে পারে। মৌলিকভাবে দেখতে হবে যিনি কথা বলছেন তিনি সত্যবাদী কিনা। (সুরা আরাফ: ৬১-৬২)

৩. তৃতীয় অভিযোগ: ক্ষমতার লোভ

তারা অভিযোগ করত: তোমার আসল ধান্ধা হলো ক্ষমতা, তুমি আমাদের নেতা হতে চাও।

জবাব: হজরত নূহ (আ.) এই অভিযোগের জবাবে বলেন, “এই দাওয়াতের বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোনো ধন-সম্পদ বা বিনিময় চাই না। আমার পুরস্কার তো শুধু বিশ্বপালকের নিকটেই রয়েছে।” (সুরা শুআরা: ১০৯)

৪. চতুর্থ অভিযোগ: নিম্নশ্রেণির লোকজনের অনুসরণ

তাদের অভিযোগ ছিল: তোমার সঙ্গী-সাথী হলো সমাজের সব নিম্নশ্রেণির জাহেল লোকজন। অভিজাত লোকেরা তোমার ধার ধারে না।

জবাব: হজরত নূহ (আ.) বলেন, “আমি কোনো (দরিদ্র) ইমানদার ব্যক্তিকে তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার সান্নিধ্য লাভে ধন্য হবে। বরং আমি দেখছি তোমরাই জাহেল।” (সুরা হুদ: ২৯)

৫. পঞ্চম অভিযোগ: সম্পদশালী না হওয়া

তারা বলত: তুমি তো নেতা বা সম্পদশালী কেউ নও। তাহলে তুমি কীভাবে নবী হলে? আমরা তোমার অনুসরণ কেন করবো?

জবাব: হজরত নূহ (আ.) বলেন, “আমি তোমাদের বলি না, আমার কাছে আল্লাহর ধন-ভাণ্ডার আছে, আর না আমি গায়েব জানি এবং আমি এটাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা।” (সুরা হুদ: ৩১) অর্থাৎ, একজন নবীর মূল দায়িত্ব মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা। আল্লাহ তার ইচ্ছা অনুযায়ী তার কোনো বান্দাকে নবী হিসেবে নির্বাচিত করেন।

শিক্ষণীয় বিষয়

এই প্রতিটি অভিযোগই ছিল মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে আসার অজুহাত। হজরত নূহ (আ.) অসীম ধৈর্যশীলতার সাথে তার দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। তার জীবন থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে, মানুষ অভিযোগ করবেই, কিন্তু নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে।


জেনে নিন ৩রা অক্টোবরের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ২২:৩৮:৪০
জেনে নিন ৩রা অক্টোবরের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আগামী শুক্রবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৫-এর সেহরি, ইফতার এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী নিচে প্রদান করা হলো। দিনটি শুক্রবার হওয়ায় যোহরের সময় জুম'আর নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা: ৩রা অক্টোবর, ২০২৫-এর পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী

সেহরির শেষ সময়: ভোর ৪:৩১ AM

ফজর: ভোর ৪:৩৭ AM

যোহর (জুম'আ): দুপুর ১১:৫১ AM

আসর: বিকাল ৪:০৬ PM

ইফতার ও মাগরিব: সন্ধ্যা ৫:৪৯ PM

ইশা: সন্ধ্যা ৭:০২ PM

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

যেহেতু দিনটি শুক্রবার, যোহরের নামাজের সময় মসজিদে জুম'আর নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

আপনার স্থানীয় মসজিদের আজানের সময়ের সাথে এক বা দুই মিনিটের সামান্য পার্থক্য থাকতে পারে। সবচেয়ে সঠিক সময়ের জন্য স্থানীয় মসজিদের সময়সূচী অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আগামীকালের ইবাদতের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ২১:৫২:৫৬
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আগামীকালের ইবাদতের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী
ছবি: সংগৃহীত

প্রতিদিনের ইবাদতের জন্য নামাজের সময়সূচী একটি অপরিহার্য বিষয়। সূর্যের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে এই সময় পরিবর্তিত হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক গণনাসূত্র অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আগামীকাল, ২রা অক্টোবর, ২০২৫ (বৃহস্পতিবার)-এর তাহাজ্জুদ, সেহরি, ইফতার এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সম্ভাব্য সময়সূচী নিচে তুলে ধরা হলো।

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা: ২রা অক্টোবর, ২০২৫-এর পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী

তাহাজ্জুদ: রাত ১:০০ AM থেকে ফজরের আজানের পূর্ব পর্যন্ত।(ইসলামিক রীতি অনুযায়ী, রাতের শেষ তৃতীয়াংশ তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য সর্বোত্তম সময় হিসেবে গণ্য হয়।)

সেহরির শেষ সময়: ভোর ৪:৩৭ AM(রোজা রাখার জন্য এই সময়ের পূর্বেই পানাহার শেষ করতে হবে।)

ফজর: ভোর ৪:৩৭ AM

সূর্যোদয়: সকাল ৫:৫০ AM

যোহর: দুপুর ১১:৪৯ AM

আসর: বিকাল ৩:০৯ PM

ইফতার ও মাগরিব: সন্ধ্যা ৫:৪৬ PM(সারাদিনের রোজা শেষে এই সময়ে ইফতার করতে হবে।)

ইশা: সন্ধ্যা ৭:০১ PM

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

সেহরির শেষ সময় হলো ফজরের ওয়াক্ত শুরুর মুহূর্ত এবং ইফতারের সময় হলো মাগরিবের ওয়াক্ত শুরুর মুহূর্ত।

ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোর (যেমন: গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার) সময় ঢাকার সময়ের সাথে এক বা দুই মিনিটের সামান্য পার্থক্য হতে পারে। সর্বাধিক নির্ভুলতার জন্য আপনার স্থানীয় মসজিদের সময়সূচী অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


বিবাহিত ব্যক্তির নামাজ অবিবাহিত ব্যক্তির চেয়ে ৭০ গুণ উত্তম—কথাটা কি সত্যি?

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ২১:০৩:১৪
বিবাহিত ব্যক্তির নামাজ অবিবাহিত ব্যক্তির চেয়ে ৭০ গুণ উত্তম—কথাটা কি সত্যি?
ছবি: সংগৃহীত

বিয়ে মানুষকে শালীন, পবিত্র ও পরিপূর্ণ জীবনযাপনের পথে নিয়ে যায়। ইসলামে বিয়েকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়। নবী কারিম (সা.) বলেছেন, “হে যুবসমাজ, তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য আছে, তার বিয়ে করা উচিত... আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে।” (বোখারি : ৫০৬৫, মুসলিম : ১৪০০) এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, সামর্থ্য হলে দেরি না করে বিয়ে করা উত্তম।

বিয়ের কথা সামনে এলেই আমাদের সমাজে একটি বহুল প্রচলিত কথা শোনা যায়—‘বিবাহিত ব্যক্তির নামাজ অবিবাহিত ব্যক্তির চেয়ে ৭০ গুণ উত্তম।’ অনেক ওয়াজ মাহফিলেও কিছু বক্তা এমনটা বলে থাকেন। কিন্তু এই কথাটি কি আসলেই হাদিস-সম্মত? চলুন, এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আলেমদের বক্তব্য জেনে নিই।

বিশেষজ্ঞ আলেমদের বক্তব্য

ফুকাহায়ে কেরাম (ইসলামী আইনজ্ঞরা) বলেন, নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ এবং ইবাদতের শ্রেষ্ঠতম রূপ। তবে, ‘বিবাহিত ব্যক্তির ২ রাকাত নামাজ অবিবাহিত ব্যক্তির ৭০ রাকাত নামাজের চেয়েও উত্তম’—এই কথাটি সঠিক নয়। হাদিসে এর কোনো ভিত্তি নেই।

জনপ্রিয় ইসলামি স্কলার মুফতি রেজাউল করীম আবরার বলেন, সমাজে প্রচলিত এই কথাটি ‘চরম আপত্তিকর’ এবং এটি সম্পূর্ণ জাল হাদিস (বিশুদ্ধ নয়)।

আলেমদের মত: তিনি বলেন, “হাদিসে বিয়ের অনেক ফজিলতের কথা বলেছেন রাসুল (সা.)। কিন্তু কোনো জিনিসের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে কখনোই কোনো জাল বর্ণনা দিয়ে দলিল দেওয়া যাবে না।” ইমাম উকাইলি (রাহি.), ইমাম ইবনুল জাওজি, ইমাম তাহের পাটনি এবং ইমাম আল্লামা শাওকানিসহ সব উলামায়ে কেরাম এই বর্ণনাকে জাল হাদিস বলে আখ্যায়িত করেছেন।

অতএব, বিয়ে করা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলেও, এর ফজিলত ব্যাখ্যা করতে জাল হাদিস দিয়ে দলিল দেওয়া উচিত নয়।


আগামীকালের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়সূচী

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ২২:০৫:১১
আগামীকালের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়সূচী
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে, বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড সময় অনুযায়ী আগামী ১ অক্টোবর, ২০২৫ (বুধবার)-এর সেহরি, ইফতার, তাহাজ্জুদ এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সম্ভাব্য সময়সূচী নিচে দেওয়া হলো।

বিস্তারিত সময়সূচী (ঢাকা):

তাহাজ্জুদ: রাত ১:০০ AM থেকে ফজরের আজানের পূর্ব পর্যন্ত।(ইসলামিক রীতি অনুযায়ী, রাতের শেষ তৃতীয়াংশ তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য সর্বোত্তম সময় হিসেবে গণ্য হয়।)

সেহরির শেষ সময়: ভোর ৪:৩৬ AM(রোজা রাখার জন্য এই সময়ের পূর্বেই পানাহার শেষ করতে হবে।)

ফজর: ভোর ৪:৩৬ AM

সূর্যোদয়: সকাল ৫:৪৯ AM

যোহর: দুপুর ১১:৪৮ AM

আসর: বিকাল ৩:০৮ PM

ইফতার ও মাগরিব: সন্ধ্যা ৫:৪৫ PM(সারাদিনের রোজা শেষে এই সময়ে ইফতার করতে হবে।)

ইশা: সন্ধ্যা ৭:০০ PM

গুরুত্বপূর্ণ নোট:

এই সময়সূচীটি রাজধানী ঢাকার জন্য প্রযোজ্য। চট্টগ্রাম বা সিলেট বিভাগের সময় ঢাকার চেয়ে ৫-৭ মিনিট আগে এবং রাজশাহী বা খুলনা বিভাগের সময় ঢাকার চেয়ে ৫-১০ মিনিট পরে হতে পারে।

সবচেয়ে সঠিক সময়ের জন্য আপনার স্থানীয় মসজিদের সময়সূচী অনুসরণ করা উত্তম।


যে সাগরে কেউ ডুবে না, কেন সেখানে লুকিয়ে আছে এক অভিশপ্ত ইতিহাস?

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ২০:৪২:৪১
যে সাগরে কেউ ডুবে না, কেন সেখানে লুকিয়ে আছে এক অভিশপ্ত ইতিহাস?
মৃত সাগর/ছবি: সংগৃহীত

ভূগোলের এক অপার বিস্ময় মৃত সাগর, যা পৃথিবীর সর্বনিম্ন বিন্দুতে অবস্থিত এক লবণাক্ত হ্রদ। কিন্তু এর পরিচয় শুধু ভূগোলের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়। এটি এক ঐতিহাসিক নিদর্শন, যা প্রায় চার হাজার বছর আগে ঘটে যাওয়া এক ঐশ্বরিক আযাবের নীরব সাক্ষী। এই সাগর সেই কওমে লুত বা লুতের জাতির ধ্বংসের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, যাদেরকে তাদের সীমালঙ্ঘনের জন্য এক ভয়াবহ পরিণতি বরণ করতে হয়েছিল।

যেসব পাপে লিপ্ত ছিল কওমে লুত:

ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় বর্ণনা অনুযায়ী, হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর ভাতিজা হযরত লুত (আঃ)-কে সদোম জাতির প্রতি নবী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। এই জাতি ইতিপূর্বে মানব ইতিহাসে দেখা যায়নি এমন সব পাপে লিপ্ত ছিল।

তাদের প্রধান তিনটি পাপ ছিল:

১. প্রকাশ্যে অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও বেহায়াপনা।

২. ডাকাতি ও রাহাজানি, যা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল।

৩. সমকামিতা, যা ছিল তাদের সবচেয়ে বড় সীমালঙ্ঘন।

হযরত লুত (আঃ) তাদের এই পথ থেকে সরে আসার জন্য বারবার আহ্বান জানান, কিন্তু তারা তার কথায় কর্ণপাত না করে উল্টো তাকেই শহর থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়।

ঐশ্বরিক আযাব এবং ধ্বংসের বিবরণ:

যখন তাদের অবাধ্যতা চরমে পৌঁছায়, তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব চূড়ান্ত হয়। ফেরেশতারা মানুষের রূপ ধরে হযরত লুত (আঃ)-এর কাছে আসেন এবং তাকে রাতের আঁধারে তার অনুসারীদের নিয়ে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেন। তাকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, "চলার পথে কেউ যেন পেছনে ফিরে না তাকায়।"

ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী, হযরত জিবরাইল (আঃ) তার ডানা দিয়ে পুরো শহরটিকে শূন্যে তুলে ফেলেন, এরপর সেটিকে উল্টে জমিনে নিক্ষেপ করেন এবং আকাশ থেকে তাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করা হয়। এই মহাধ্বংসে লুত (আঃ)-এর স্ত্রীও ধ্বংস হয়েছিলেন, কারণ তিনি আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে পেছনে ফিরে তাকিয়েছিলেন।

শেষ নবীর নির্দেশনা:

সহীহ বুখারী শরীফের হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই ধরনের আযাবের স্থান অতিক্রম করার সময় অনুশোচনার সাথে, ক্রন্দনরত অবস্থায় প্রবেশ করতে বলেছেন। কারণ, এই স্থানগুলো অহংকার প্রদর্শনের জায়গা নয়, বরং শিক্ষা গ্রহণের স্থান।

আজও মৃত সাগর কোনো প্রাণের অস্তিত্ব ছাড়াই এক নীরব সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, যা মানুষকে তার সৃষ্টিকর্তার অবাধ্যতার ভয়াবহ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

পাঠকের মতামত: