ইতিহাস, দর্শন ও ইসলাম
হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.): ন্যায়, প্রজ্ঞা ও বিশ্বনেতৃত্বের এক স্বর্ণযুগ

ইসলামের ইতিহাসে হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) এমন এক মহান ব্যক্তিত্ব যিনি শক্তি, সাহস, ন্যায়বিচার, প্রজ্ঞা এবং আল্লাহভীতি দ্বারা বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা, নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সাহাবি, এবং এমন এক নেতা যাঁর শাসনকাল মুসলিম সভ্যতার সোনালি যুগ হিসেবে পরিচিত। তাঁর শাসনামলে শুধু ইসলামী সাম্রাজ্য ভৌগোলিকভাবে বিস্তৃত হয়নি, বরং প্রশাসনিক কাঠামো, বিচারব্যবস্থা, করনীতি, সামাজিক কল্যাণ এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সংস্কার হয়েছে। পশ্চিমা ঐতিহাসিকরাও স্বীকার করেছেন, তাঁর শাসন ছিল মানব ইতিহাসের অন্যতম সফল, সুশৃঙ্খল ও ন্যায়নিষ্ঠ শাসনব্যবস্থার উদাহরণ।
প্রাথমিক জীবন ও পারিবারিক পটভূমি
হযরত ওমর (রা.) ৫৮৩ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় কুরাইশ গোত্রের বানু আদী শাখায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম ছিল খাত্তাব ইবনে নুফাইল এবং মাতার নাম হাতমা বিনতে হাশিম। তাঁর পরিবার কুরাইশদের মধ্যে সামাজিক মর্যাদার দিক থেকে সম্মানিত ছিল, তবে ধনী ছিল না। শৈশব থেকেই ওমর (রা.) ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, সাহসী এবং শারীরিকভাবে বলবান। তিনি তলোয়ার চালনা, ঘোড়সওয়ারি, উটপালন এবং ক্রীড়ায় পারদর্শী ছিলেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি আরবি সাহিত্য, কবিতা, বংশাবলি বিদ্যা এবং বক্তৃতাশৈলীতে দক্ষতা অর্জন করেন। সেই সময়ের মক্কার সমাজে বংশগৌরব, বাগ্মিতা এবং শারীরিক সক্ষমতা ছিল নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা—যা ওমর (রা.)-এর মধ্যে শৈশব থেকেই স্পষ্ট ছিল। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি মক্কার বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন এবং কুরাইশদের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন।
ইসলাম গ্রহণের পূর্ববর্তী জীবন
ইসলাম আবির্ভাবের প্রথম দিকে ওমর (রা.) ছিলেন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর কঠোর বিরোধীদের একজন। তিনি মুসলমানদের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করতেন এবং তাঁদের ওপর নির্যাতনে অংশ নিতেন। তাঁর কঠোর স্বভাব ও দৃঢ় বিশ্বাস তাঁকে ইসলামের অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ করে তুলেছিল। অনেক ঐতিহাসিক বর্ণনায় এসেছে যে, এক পর্যায়ে তিনি নবীজীকে হত্যা করার সংকল্প করেছিলেন, যাতে মুসলমানদের আন্দোলন পুরোপুরি দমন করা যায়।
ইসলাম গ্রহণের ঘটনা
তাঁর জীবনের মোড় ঘুরে যায় এক ঐতিহাসিক ঘটনায়। নবীজীকে হত্যার উদ্দেশ্যে পথে বের হয়ে তিনি শুনলেন, তাঁর বোন ফাতিমা বিনতে খাত্তাব ও ভগ্নীপতি সাঈদ ইবনে যায়েদ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে তিনি কুরআন তিলাওয়াত শুনতে পান। সুরা ত্বা-হা’র আয়াত শুনে তাঁর হৃদয় কেঁপে ওঠে। পবিত্র কুরআনের বাণী তাঁর অন্তরে গভীর প্রভাব ফেলে, এবং তিনি উপলব্ধি করেন যে, এটি মানুষের রচিত কোনো কথা নয়, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ সত্য।
এই অভিজ্ঞতার পর তিনি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। মুসলমানদের জন্য এটি ছিল এক বিশাল বিজয়, কারণ ওমর (রা.)-এর সাহস, প্রভাব এবং নেতৃত্বগুণ মুসলিম সমাজকে নতুন শক্তি যোগায়। তাঁর ইসলাম গ্রহণের পর থেকেই মুসলমানরা প্রকাশ্যে ইবাদত করতে শুরু করেন।
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও ভূমিকা
১. নবীজীর সহচর হিসেবে ভূমিকা: ইসলাম গ্রহণের পর হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) শুধুমাত্র একজন সাধারণ অনুসারী হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকেননি; বরং তিনি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম নিকটতম ও বিশ্বস্ত সহচরে পরিণত হন। বদর, উহুদ, খন্দক, খাইবার এবং হুনায়েনসহ প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ গাজওয়ায় তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং প্রতিটি যুদ্ধে তাঁর অসীম সাহস ও কৌশলগত দক্ষতা নবীজীর জন্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে। বদরের যুদ্ধে তাঁর যুদ্ধদক্ষতা মুসলিম বাহিনীর মনোবল বৃদ্ধি করে এবং শত্রুপক্ষের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
ওমর (রা.)-এর চরিত্রে ছিল দৃঢ়তা ও নির্ভীকতা, যা মুসলিম বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ও আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলত। তিনি কেবল যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পরামর্শেও নবীজীর কাছে মূল্যবান ছিলেন। তাঁর কঠোর মনোভাব এবং সত্যের পক্ষে আপসহীন অবস্থান ইসলামের শত্রুদের মনে এক ধরনের ভয় এবং মুসলমানদের মনে নিরাপত্তার অনুভূতি সৃষ্টি করেছিল।
২. হিজরত: মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের সময় অধিকাংশ মুসলমান গোপনে রাতের আঁধারে শহর ত্যাগ করেছিলেন, কারণ কুরাইশরা মুসলমানদের হিজরত ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছিল। কিন্তু ওমর (রা.)-এর সাহস ছিল অতুলনীয়। তিনি প্রকাশ্যে মক্কার কাবাঘরে গিয়ে কুরাইশদের নেতৃবৃন্দের সামনে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন,
“যে তার স্ত্রীকে বিধবা করতে চায়, সন্তানকে পিতৃহীন করতে চায়, সে যেন পথে এসে আমাকে বাধা দেয়।”
এই ঘোষণা শুধু ব্যক্তিগত সাহসিকতার প্রকাশই ছিল না, বরং এটি মুসলমানদের জন্য এক বিশাল প্রেরণা হয়ে ওঠে। তাঁর এই কর্মে মক্কার ইসলামের শত্রুরা বুঝে যায় যে মুসলমানরা আর ভীত-সন্ত্রস্ত জনগোষ্ঠী নয়; বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস ও আত্মত্যাগের মানসিকতা অর্জন করেছে। ইসলামী ইতিহাসে এ ঘটনা অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
৩. হুদায়বিয়ার সন্ধি ও পরবর্তী ঘটনা: হিজরতের ছয় বছর পর ৬ হিজরিতে (৬২৮ খ্রিঃ) নবী মুহাম্মদ (সা.) ও মুসলিম বাহিনী কাবা শরিফে ওমরাহ আদায়ের উদ্দেশ্যে মক্কার দিকে অগ্রসর হন। কুরাইশদের বাধার কারণে মক্কার উপকণ্ঠে হুদায়বিয়া নামক স্থানে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা মুসলমানদের জন্য আপাতদৃষ্টিতে অসম এবং অপমানজনক মনে হয়েছিল। চুক্তির শর্তগুলোর মধ্যে ছিল—সেই বছর মুসলমানরা উমরাহ করতে পারবে না, এবং মক্কা থেকে কেউ মদিনায় গেলে তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে; তবে মদিনা থেকে কেউ মক্কায় গেলে তাকে ফেরত দিতে হবে না।
এই শর্তগুলো শুনে ওমর (রা.)-এর মন বিদীর্ণ হয়ে যায়। তিনি নবীজীর কাছে প্রশ্ন করেন, “আমরা কি সত্য ধর্মে নেই? আল্লাহ কি আমাদের সহায় নন?” নবীজী ধৈর্যের সাথে উত্তর দেন, “অবশ্যই।” তবুও তাঁর অন্তরে কষ্ট থেকে যায়। কিন্তু কয়েক মাস পর এই চুক্তির সুফল স্পষ্ট হয়—যুদ্ধবিরতির সুযোগে ইসলাম দ্রুত প্রসার লাভ করে, বহু মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ইসলাম গ্রহণ করে এবং মুসলিম রাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়। তখন ওমর (রা.) স্বীকার করেন, নবীজীর দূরদর্শিতা সত্যিই অসাধারণ ছিল এবং এই চুক্তি ছিল কৌশলগত বিজয়ের এক মাইলফলক।
৪. নবীজীর ইন্তেকালের পর: ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ইন্তেকালের সংবাদ শোনার পর ওমর (রা.) গভীর শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। তিনি প্রথমে বাস্তবতা মেনে নিতে অস্বীকার করেন এবং ক্রোধভরে বলেন, “যে বলবে মুহাম্মদ (সা.) ইন্তেকাল করেছেন, আমি তার মাথা উড়িয়ে দেব। বরং তিনি মূসা (আ.)-এর মতো আল্লাহর কাছে গেছেন এবং আবার ফিরে আসবেন।”
এই পরিস্থিতিতে আবু বকর সিদ্দিক (রা.) মসজিদে এসে কুরআনের আয়াত পাঠ করেন—
“মুহাম্মদ কেবল একজন রাসূল; তাঁর পূর্বে বহু রাসূল অতিবাহিত হয়েছেন। তিনি যদি মারা যান অথবা নিহত হন, তবে কি তোমরা পেছনে ফিরে যাবে?” (সূরা আলে ইমরান: ১৪৪)
এই আয়াত শোনার পর ওমর (রা.) যেন বাস্তবতায় ফিরে আসেন এবং তাঁর চোখ দিয়ে অশ্রুধারা প্রবাহিত হয়। তিনি উপলব্ধি করেন, আল্লাহর রাসূলের ইন্তেকাল এক বাস্তবতা এবং উম্মাহকে এখন ঐক্যবদ্ধ থেকে নতুন নেতৃত্বের অধীনে অগ্রসর হতে হবে। এই ঘটনার মাধ্যমে তাঁর আন্তরিকতা, নবীজীর প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং সত্য মেনে নেওয়ার বিনয়ী মানসিকতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
খেলাফতকাল (৬৩৪–৬৪৪ খ্রিঃ): হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর ইন্তেকালের পর ৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর দশ বছরের শাসনকাল ইসলামী ইতিহাসের এক সুবর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত, কারণ এই সময়ে ইসলামী রাষ্ট্র অভূতপূর্ব ভূখণ্ড বিস্তার, প্রশাসনিক কাঠামো উন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং অর্থনৈতিক সংস্কারে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে।
প্রশাসনিক সংস্কার
প্রদেশ ব্যবস্থা: ওমর (রা.)-এর শাসনামলে দ্রুত বিস্তৃত সাম্রাজ্যকে কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য তিনি একে বিভিন্ন প্রদেশ ও প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করেন। প্রতিটি প্রদেশে গভর্নর (আমির) নিয়োগ করা হতো, যাঁরা প্রশাসন, কর আদায়, আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের কল্যাণের দায়িত্ব পালন করতেন। বড় প্রদেশগুলো আবার জেলায় বিভক্ত ছিল, যাতে স্থানীয় পর্যায়ে শাসন কার্যক্রম দ্রুত ও দক্ষতার সাথে পরিচালিত হয়।
দায়িত্বরতদের জবাবদিহিতা: ওমর (রা.) কর্মকর্তাদের আর্থিক ও নৈতিক জবাবদিহিতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। তিনি গভর্নর ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব রাখতে বাধ্য করতেন এবং দায়িত্ব গ্রহণের আগে ও পরে তাঁদের সম্পদ তালিকা সংগ্রহ করতেন, যাতে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা যায়। দায়িত্বে অবহেলা বা অনিয়ম প্রমাণিত হলে তিনি বিনা দ্বিধায় তাঁদের অপসারণ করতেন।
দেওয়ান ব্যবস্থা: তাঁর আমলে প্রবর্তিত দেওয়ান ছিল প্রশাসনিক নথিপত্র সংরক্ষণ ও বেতন ব্যবস্থাপনার জন্য একটি সুশৃঙ্খল রেজিস্ট্রি সিস্টেম। এতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের নাম, পদমর্যাদা, দায়িত্ব ও বেতন নির্ধারণের রেকর্ড রাখা হতো। এটি ছিল মুসলিম রাষ্ট্রে প্রথম আধুনিক আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর ভিত্তি।
জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগ: ওমর (রা.) মদিনার মসজিদে নিয়মিত বসে জনতার অভিযোগ ও পরামর্শ শুনতেন। এভাবে তিনি সাধারণ জনগণকে শাসকের সাথে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ দেন, যা একাধারে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করত। তিনি রাত্রিকালীন টহলেও বের হতেন, যাতে নিজ চোখে জনগণের অবস্থা দেখতে পারেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
অর্থনৈতিক সংস্কার
বায়তুল মাল প্রতিষ্ঠা: ওমর (রা.) রাষ্ট্রীয় অর্থব্যবস্থাকে কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনার জন্য বায়তুল মাল প্রতিষ্ঠা করেন। এতে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, কর, খাজনা ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় আয় জমা রাখা হতো এবং তা জনকল্যাণে ব্যয় করা হতো। তিনি এই তহবিলের অপচয় বা ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছিলেন।
ভূমি কর ও খাজনা ব্যবস্থা: তিনি কৃষিজমি ও অন্যান্য উৎপাদনশীল সম্পদের ওপর ন্যায়সঙ্গত কর আরোপ করেন। মুসলিম ও অমুসলিম উভয়েই কর দিত, তবে করহার ছিল সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে নির্ধারিত। যুদ্ধবন্দী ও চুক্তিভিত্তিক অমুসলিম প্রজারা জিজিয়া কর দিত, কিন্তু বিনিময়ে রাষ্ট্র তাঁদের জীবন, সম্পদ ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করত।
গরিব ও এতিমদের জন্য ভাতা:তাঁর শাসনামলে দরিদ্র, এতিম, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের জন্য নিয়মিত ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা ছিল, যা ইতিহাসে প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উদাহরণ। শিশুদের জন্য দুধ ও খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
বিচার ব্যবস্থা
কাজী নিয়োগ: তিনি প্রতিটি প্রদেশে স্বতন্ত্র বিচার বিভাগ গঠন করেন এবং সেখানকার জন্য ন্যায়পরায়ণ ও যোগ্য বিচারক (কাজী) নিয়োগ করেন। কাজীরা স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করতেন, এবং শাসক পর্যন্ত তাঁদের সিদ্ধান্ত মেনে চলতেন।
আইনের শাসন: ওমর (রা.) দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, শাসকসহ সকলেই আইনের অধীন। একাধিক ঘটনায় দেখা যায়, তিনি সাধারণ নাগরিকের মতো আদালতে হাজির হয়েছেন এবং মামলার রায় নিজের বিপক্ষে গেলে তা বিনা আপত্তিতে মেনে নিয়েছেন। তাঁর এই নীতি আইনের শাসনের প্রকৃত রূপ তুলে ধরে, যা আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সামরিক ও ভূখণ্ড বিস্তার: হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.)-এর খেলাফতকাল ইসলামী সাম্রাজ্যের ভূখণ্ড বিস্তারের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব সময় হিসেবে চিহ্নিত। মাত্র দশ বছরের শাসনামলে তিনি ইসলামী রাষ্ট্রকে আরব উপদ্বীপের বাইরে প্রসারিত করে মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং পারস্যের বিশাল অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করেন। এই বিস্তার ছিল শুধু সামরিক শক্তির ফল নয়, বরং দক্ষ কৌশল, শৃঙ্খলাবদ্ধ সেনাবাহিনী, ন্যায়নিষ্ঠ শাসননীতি এবং বিজিত জনগণের সাথে মানবিক আচরণের সমন্বিত ফল।
পারস্য জয়: পারস্যের সাসানীয় সাম্রাজ্য তখনকার বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিল। তবে ধারাবাহিক সংঘর্ষে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং ওমর (রা.)-এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী এই সুযোগকে কাজে লাগায়।
কাদিসিয়ার যুদ্ধ (৬৩৬ খ্রিঃ): এই ঐতিহাসিক যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী সাসানীয় সেনাদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে। যুদ্ধটি কয়েক দিন ধরে চলে এবং মুসলিম বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন সা'দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)।
নাহাওয়ান্দের যুদ্ধ (৬৪২ খ্রিঃ): “বিজয়ের বিজয়” নামে পরিচিত এই যুদ্ধের মাধ্যমে সাসানীয় সাম্রাজ্যের পতন সম্পূর্ণ হয়। পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যেই পারস্য সম্পূর্ণ মুসলিম শাসনের অধীনে আসে।এই বিজয় শুধু ভৌগোলিক বিস্তারই নয়, বরং ইসলামী সভ্যতার সাংস্কৃতিক ও প্রশাসনিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করে, কারণ পারস্যের উন্নত প্রশাসনিক পদ্ধতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ইসলামী রাষ্ট্রে যুক্ত হয়।
রোমান ভূখণ্ড জয়:পূর্ব রোমান বা বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যও তখন মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করছিল। তবে একাধিক যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করে।
ইয়ামুকের যুদ্ধ (৬৩৬ খ্রিঃ): সিরিয়ার ইয়ামুক নদীর তীরে সংঘটিত এই যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী বিশাল বিজয় অর্জন করে, যার ফলে সিরিয়া এবং প্যালেস্টাইন মুসলিম শাসনের অধীনে আসে। এই যুদ্ধে খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) অসামান্য নেতৃত্বের পরিচয় দেন।
মিশর বিজয় (৬৩৯–৬৪২ খ্রিঃ): আমর ইবনে আস (রা.)-এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী মিশর জয় করে। মিশরের কপটিক খ্রিস্টান জনগণ রোমান শাসনের নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়ে মুসলিম শাসনকে স্বাগত জানায়।
এই বিজয়গুলো মুসলিম রাষ্ট্রকে সমুদ্রপথে বাণিজ্য ও কৌশলগত অবস্থানে শক্তিশালী করে তোলে।
জেরুজালেম দখল:
জেরুজালেম ছিল খ্রিস্টান ও ইহুদিদের জন্য পবিত্র নগরী। ইয়ামুক যুদ্ধে বাইজান্টাইন বাহিনী পরাজিত হওয়ার পর নগরীর নেতারা আত্মসমর্পণের শর্তে ওমর (রা.)-এর কাছে চাবি হস্তান্তর করতে সম্মত হয়, তবে শর্ত ছিল যে, খলিফা নিজে এসে চাবি গ্রহণ করবেন।
ওমর (রা.) সাধারণ পোশাকে, এক উট ও একজন খাদেমসহ মদিনা থেকে জেরুজালেমে আসেন। তাঁর সরলতা, ন্যায়বিচার ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতা খ্রিস্টান নেতাদের মুগ্ধ করে। তিনি শহরে প্রবেশ করে খ্রিস্টান ও ইহুদিদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেন এবং তাঁদের উপাসনালয় রক্ষা করার নির্দেশ দেন। এই ঘটনা ইসলামী শাসনের সহিষ্ণুতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
সাফল্য ও অবদান
ন্যায়বিচারের প্রতীক – “আল-ফারুক”: ওমর (রা.)-এর অটল ন্যায়পরায়ণতার কারণে তিনি “আল-ফারুক” উপাধি লাভ করেন, যার অর্থ সত্য ও মিথ্যার মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্যকারী। তাঁর শাসনে ধনী-গরিব, মুসলিম-অমুসলিম—সকলের জন্য সমান বিচার নিশ্চিত করা হতো।
রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের আধুনিকীকরণ: তাঁর শাসনে প্রদেশভিত্তিক প্রশাসনিক কাঠামো, কর ব্যবস্থা, সেনাবাহিনীর রেজিস্ট্রি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ডাক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। এটি ছিল মুসলিম বিশ্বের প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রশাসনিক সংস্কার।
সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা: তিনি দরিদ্র, এতিম, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের জন্য নিয়মিত ভাতা চালু করেন। যুদ্ধাহত সৈনিকদের জন্যও রাষ্ট্রীয় সহায়তার ব্যবস্থা করেন।
শিক্ষা ও জ্ঞান বিস্তার: নতুন অঞ্চলে মসজিদ ও মক্তব প্রতিষ্ঠা করে কুরআন শিক্ষা ও সাধারণ জ্ঞানচর্চার প্রসার ঘটান। বিজিত এলাকায় ইসলামী শিক্ষা ও স্থানীয় জ্ঞানের মেলবন্ধন ঘটাতে সহায়তা করেন।
ধর্মীয় সহিষ্ণুতা: বিজিত অমুসলিম জনগণকে তাঁদের ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা দেন এবং তাঁদের উপাসনালয় সংরক্ষণ করেন। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তা ও কর ব্যবস্থার মাধ্যমে মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে সহাবস্থান নিশ্চিত করেন।
রাস্তা ও অবকাঠামো উন্নয়ন: তিনি সড়ক, সেতু, কূপ, খাল এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা উন্নত করেন। ডাক ব্যবস্থা ও সীমান্ত প্রতিরক্ষা জোরদার করেন, যা বাণিজ্য, যোগাযোগ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে।
শহীদ হওয়া
৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দে ফজরের নামাজ আদায়ের সময় এক অমুসলিম দাস আবু লুলু ফিরোজ তাঁকে ছুরিকাঘাত করে। কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর আগে তিনি শুরা কমিটি গঠন করে পরবর্তী খলিফা নির্বাচন করার নির্দেশ দেন। তাঁকে মদীনায় নবীজীর পাশে দাফন করা হয়।
ইতিহাসে স্থান ও প্রভাব
হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) কেবল ইসলামের দ্বিতীয় খলিফাই নন, তিনি ছিলেন এমন এক দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, যিনি নেতৃত্ব, প্রশাসনিক প্রজ্ঞা ও নৈতিক দৃঢ়তার মাধ্যমে বিশ্ব ইতিহাসে স্থায়ী ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর কঠোর ন্যায়বিচার, দৃঢ় প্রশাসন, স্বচ্ছ জবাবদিহিতা এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে অবিচল মনোভাব তাঁকে মুসলিম বিশ্বের ইতিহাসে অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছে।
তাঁর শাসনকাল প্রমাণ করেছে যে একটি রাষ্ট্র কেবল সামরিক শক্তি বা ভূখণ্ড বিস্তারের মাধ্যমে নয়, বরং সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং নৈতিক শৃঙ্খলার মাধ্যমে স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ হতে পারে। ওমর (রা.) এমন এক কাঠামোগত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন, যেখানে প্রদেশভিত্তিক শাসন, করনীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সামরিক সংগঠন এবং সামাজিক নিরাপত্তা একে অপরের সাথে সমন্বিত ছিল। এই মডেল পরবর্তী শতাব্দীগুলিতে মুসলিম সাম্রাজ্যের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
আধুনিক ঐতিহাসিক, বিশেষত পশ্চিমা গবেষকরাও তাঁকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ব্রিটিশ ঐতিহাসিক থমাস আর্নল্ড ও জর্জ সার্টন তাঁর শাসনকে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও নৈতিক নেতৃত্বের বিরল সমন্বয় বলে অভিহিত করেছেন। এমনকি অমুসলিম গবেষকরাও স্বীকার করেছেন, তাঁর শাসনব্যবস্থা ছিল অগ্রসরমান রাষ্ট্র পরিচালনার এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
তাঁর নেতৃত্বে ইসলামী রাষ্ট্র শুধু ভূখণ্ডগতভাবে নয়, বরং প্রশাসনিক ও নৈতিক ক্ষেত্রেও এক সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী রূপ লাভ করে। তিনি রাষ্ট্রে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে যেমন কঠোর ছিলেন, তেমনি দরিদ্র, এতিম, বিধবা ও অমুসলিম নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় ছিলেন অসীম সহৃদয়। ফলে বিজিত অঞ্চলের অনেক জনগণ মুসলিম শাসনকে স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে, যা ইসলামের শান্তিপূর্ণ বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ওমর (রা.)-এর মৃত্যুর পরও তাঁর প্রবর্তিত নীতি, আইন ও সংস্কার শতাব্দীর পর শতাব্দী মুসলিম শাসনব্যবস্থায় কার্যকর ছিল। তাঁর ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা, এবং জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ পরবর্তী খলিফা, শাসক ও নেতাদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকে।
হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) ছিলেন এমন এক বিরল চরিত্র, যাঁর জীবন মুসলিম উম্মাহর জন্য অনন্ত অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনার উৎস। ইসলাম গ্রহণের আগে একজন দৃঢ় প্রতিপক্ষ থেকে তিনি রূপান্তরিত হয়েছিলেন ইসলামের এক অকুতোভয় রক্ষক ও সংস্কারক নেতায়। তাঁর খেলাফতের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল ঈমান, সাহস, ন্যায়বিচার, বিনয় এবং জনকল্যাণমূলক উদ্যোগের প্রতিফলন।
তিনি প্রমাণ করেছিলেন, একজন শাসকের শক্তি কেবল সামরিক ক্ষমতায় নয়, বরং ন্যায়পরায়ণতা, সততা, এবং প্রজাদের কল্যাণে নিবেদিত নেতৃত্বে নিহিত। তাঁর প্রতিষ্ঠিত নীতি ও দৃষ্টান্ত কেবল ইসলামী সভ্যতার সোনালি অধ্যায় রচনা করেনি, বরং মানব ইতিহাসেও আদর্শ রাষ্ট্রনায়কত্বের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তাঁর জীবন ও শাসন আজও আমাদের শেখায়—ন্যায় ও সত্যের পথে অবিচল থাকলে একটি জাতি শুধু টিকে থাকে না, বরং ইতিহাসে অমর হয়ে যায়।
আজ ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি
ইসলামের পাঁচটি রুকন বা পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে নামাজ অন্যতম এবং এটি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ইমান বা বিশ্বাসের পর নামাজই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী কিয়ামতের দিন মানুষের কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাশাপাশি ইসলামে ওয়াজিব, সুন্নত এবং নফল নামাজের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পার্থিব জীবনে যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন সঠিক সময়ে বা ওয়াক্তমতো ফরজ নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অত্যন্ত জরুরি এবং ঈমানি দায়িত্ব।
আজ বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি (৯ পৌষ ১৪৩২ বাংলা এবং ৩ রজব ১৪৪৭ হিজরি)। ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত নামাজের সময়সূচি অনুযায়ী আজকের জোহর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে দুপুর ১২টা ১ মিনিটে। আসর নামাজের সময় শুরু হবে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে। মাগরিব বা সূর্যাস্তের পরবর্তী নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বিকেল ৫টা ২০ মিনিট এবং এশা নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে। এছাড়া আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ফজর নামাজের সময় শুরু হবে ভোর ৫টা ১৭ মিনিটে।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ঢাকার সময়ের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিভাগের সময়ের কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। ঢাকার সময়ের সঙ্গে যে সকল বিভাগের সময় বিয়োগ করতে হবে তার মধ্যে চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে ৫ মিনিট এবং সিলেটের ক্ষেত্রে ৬ মিনিট বিয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ ঢাকার চেয়ে এই এলাকাগুলোতে ৫ থেকে ৬ মিনিট আগেই নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে।
অন্যদিকে ঢাকার সময়ের সঙ্গে অন্যান্য বিভাগের সময় যোগ করে নামাজ আদায় করতে হবে। যার মধ্যে খুলনার জন্য ৩ মিনিট, রাজশাহীর জন্য ৭ মিনিট, রংপুরের জন্য ৮ মিনিট এবং বরিশালের জন্য ১ মিনিট অতিরিক্ত সময় যোগ করতে হবে। অর্থাৎ ঢাকার চেয়ে এই বিভাগগুলোতে ১ থেকে ৮ মিনিট পরে নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে। মুসল্লিদের নিজ নিজ এলাকার সঠিক সময় অনুযায়ী যথাযথভাবে ইবাদত পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫: আজকের ৫ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচি
ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে ইমান বা বিশ্বাসের পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ। পরকালে হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে বলে ধর্মীয় বিধানে উল্লেখ রয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাশাপাশি ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল নামাজের গুরুত্বও অপরিসীম। মুসলিম উম্মাহর জন্য ব্যস্ততার মাঝেও নির্দিষ্ট ওয়াক্ত অনুযায়ী ফরজ নামাজ আদায় করা বাধ্যতামূলক। আজ মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ৮ পৌষ ১৪৩২ বাংলা এবং ২ রজব ১৪৪৭ হিজরির জন্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের একটি নির্ভুল সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
ঢাকার কেন্দ্রীয় সময়ের ওপর ভিত্তি করে আজকের জোহর নামাজের সময় শুরু হবে দুপুর ১২টা ০১ মিনিটে। আসরের ওয়াক্ত শুরু হবে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে এবং মাগরিবের আজান হবে সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিটে। এরপর এশা নামাজের সময় শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে। আগামীকাল বুধবার পবিত্র ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে ভোর ৫টা ১৭ মিনিটে। এই সময়সূচি মূলত ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দেশের বিভিন্ন বিভাগে এই সময়ের কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
ঢাকার সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতে সময় যোগ অথবা বিয়োগ করে নামাজের ওয়াক্ত নির্ধারণ করতে হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের ক্ষেত্রে ঢাকার সময় থেকে ৫ মিনিট এবং সিলেট বিভাগের ক্ষেত্রে ৬ মিনিট বিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দাদের ঢাকার সময়ের সাথে ৭ মিনিট এবং রংপুর বিভাগের ক্ষেত্রে ৮ মিনিট যোগ করে নামাজের সময় নির্ধারণ করতে হবে। খুলনা বিভাগে ৩ মিনিট এবং বরিশাল বিভাগে ১ মিনিট যোগ করে স্থানীয় সময় অনুযায়ী নামাজ আদায় করতে হবে।
নামাজের এই সময়সূচি পরিবর্তনের বিষয়টি মূলত সূর্যের অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল। তাই নির্ভুলভাবে ইবাদত সম্পন্ন করতে নিজ নিজ এলাকার নির্ধারিত সময় সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। বিউবো বা আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যের মতো নামাজের এই সময়সূচিও প্রতিদিন সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফরজ নামাজ আদায় করা কেবল ধর্মীয় দায়িত্বই নয় বরং এটি একজন মুমিনের জীবনের শৃঙ্খলা ও আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।
জেনে নিন আজকের নামাজের সঠিক সময়
রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এর জন্য নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা। আজ ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ৩০ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। নিয়মিত ইবাদত পালনের সুবিধার্থে মুসুল্লিদের জন্য সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরুর সময়গুলো নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী
আজ জোহরের ওয়াক্ত শুরু হবে দুপুর ১২টা ০০ মিনিটে।
আসরের নামাজের সময় শুরু হবে বিকেল ৩টা ৪১ মিনিটে।
আজ সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে মাগরিবের আজান ও নামাজের সময় নির্ধারিত হয়েছে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে।
এশার ওয়াক্ত শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে। এছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে ভোর ৫টা ২১ মিনিটে।
আজ সোমবার ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে বিকেল ৫টা ১৬ মিনিটে এবং আগামীকাল মঙ্গলবার সূর্যোদয় হবে ভোর ৬টা ৩৭ মিনিটে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে সময়ের এই সূক্ষ্ম পার্থক্যগুলো বিবেচনায় নিয়ে নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। মুসুল্লিদের নিজ নিজ এলাকার মসজিদের জামাতের সময়ের সাথে এই সূচি সমন্বয় করে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য এলাকায় অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে ঢাকার সময়ের সাথে কয়েক মিনিট কমবেশি হতে পারে।
মরুভূমিতে রহমতের ঝরনা: যেভাবে সৃষ্টি হলো পবিত্র জমজম কূপ
আজ থেকে হাজার বছরেরও বেশি সময় আগের কথা। আল্লাহর বিশেষ নির্দেশে হজরত ইবরাহিম (আ.) তার স্ত্রী হজরত হাজেরা (আ.) এবং দুগ্ধপোষ্য শিশুসন্তান ইসমাঈল (আ.)-কে এক জনমানবহীন নির্জন মরুপ্রান্তরে রেখে আসার সিদ্ধান্ত নেন। আজকের আধুনিক মক্কা নগরী তখন ছিল ধূ-ধূ বালু আর পাথুরে পাহাড়ের এক রুক্ষ ও জনশূন্য ভূমি। এই কঠিন পরীক্ষায় হজরত হাজেরা (আ.) যখন জানতে পারেন যে এটি স্বয়ং আল্লাহর নির্দেশ, তখন তিনি ইমানি দীপ্তকণ্ঠে বলেছিলেন যে তবে আল্লাহ তাদের কখনোই ধ্বংস হতে দেবেন না।
কয়েক দিনের মাথায় সাথে থাকা সামান্য খাবার ও পানি ফুরিয়ে গেলে শুরু হয় চরম সংকট। তৃষ্ণায় কাতর শিশু ইসমাঈল (আ.)-এর ছটফটানি দেখে মা হাজেরা স্থির থাকতে পারলেন না। তিনি পানির সন্ধানে ব্যাকুল হয়ে সাফা পাহাড় থেকে মারওয়া পাহাড়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। সন্তানের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আর আল্লাহর ওপর অটল বিশ্বাস নিয়ে তিনি সাতবার এই দুই পাহাড়ের মাঝে দৌড়ান। মরুভূমির প্রখর উত্তাপে ক্লান্ত-শ্রান্ত মা যখন শেষবার মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছান, তখনই ঘটে সেই অলৌকিক ঘটনা।
সপ্তমবার মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছানোর পর তিনি একটি গায়েবি শব্দ শুনতে পান। দ্রুত সন্তানের কাছে ফিরে এসে দেখেন এক বিস্ময়কর দৃশ্য। যেখানে তৃষ্ণার্ত শিশু ইসমাঈল (আ.) পা ছুড়ছিলেন, ঠিক তার পায়ের নিচ থেকেই মাটি চিরে পানির ধারা বেরিয়ে আসছে। আনন্দে আত্মহারা হাজেরা (আ.) সেই পানির অপচয় রোধ করতে চারদিকে বালুর বাঁধ দিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন ‘জমজম জমজম’ অর্থাৎ থামো থামো। পরবর্তীতে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন যে উম্মে ইসমাইল যদি পানিটুকু ওভাবে আটকে না দিতেন তবে তা আজ প্রবহমান নদীতে পরিণত হতো।
পৃথিবীর এই শ্রেষ্ঠ কূপের সৃষ্টি ছিল মহান আল্লাহর এক অনন্য কুদরত। যেখানে এক ফোঁটা পানির অস্তিত্ব ছিল না, সেখানে এই চিরস্থায়ী উৎস থেকে আজ পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষ তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। এই অলৌকিক রহমতের পানিকে কেন্দ্র করেই ধীরে ধীরে মক্কায় জনবসতি গড়ে ওঠে যা আজকের পবিত্র মক্কা মুকাররমা। রাসুলুল্লাহ (সা.) জমজম নিয়ে বলেছেন যে এই পানি যে উদ্দেশ্যে পান করা হবে, আল্লাহ সেই উদ্দেশ্যই পূরণ করবেন। মা হাজেরার সেই ঐতিহাসিক ত্যাগকে সম্মান জানাতেই আজ বিশ্বজুড়ে হাজীদের জন্য সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে সায়ি করা ওয়াজিব বা আবশ্যকীয় ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।
আজকের নামাজ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তর সময়সূচি প্রকাশ
ইসলামে নামাজকে পঞ্চম স্তম্ভ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং সময়মতো নামাজ আদায় একজন মুসলমানের জন্য অপরিহার্য ইবাদত। হাদিসে এসেছে, যারা নামাজের সময়ের আগেই মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামাজের অপেক্ষায় থাকেন, ফেরেশতারা তাদের জন্য দোয়া করতে থাকেন। এ কারণেই প্রতিটি মুসলমানের উচিত দৈনন্দিন ব্যস্ততার মধ্যেও নামাজের সময় সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং যথাসময়ে ইবাদত আদায় করা।
আজ রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। এ উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আজকের নামাজের নির্ধারিত সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা অনুসরণ করে মুসল্লিরা সহজেই নামাজ আদায় করতে পারবেন।
আজ ঢাকায় ফজরের নামাজের সময় নির্ধারিত হয়েছে ভোর ৫টা ১৬ মিনিটে। দুপুর ১২টা ০০ মিনিটে জোহরের নামাজ আদায় করা যাবে। বিকেল ৩টা ৪১ মিনিটে শুরু হবে আসরের সময়। সূর্যাস্তের পর সন্ধ্যা ৫টা ১৯ মিনিটে মাগরিবের নামাজ এবং রাত ৬টা ৩৮ মিনিটে ইশার নামাজ আদায়ের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
আবহাওয়া ও জ্যোতির্বিদ্যার হিসাব অনুযায়ী, আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে বিকেল ৫টা ১৬ মিনিটে এবং সূর্যোদয় হয়েছে সকাল ৬টা ৩৬ মিনিটে। নামাজের সময়সূচি অনুসরণ করে সময়মতো ইবাদত আদায় করলে ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আত্মিক প্রশান্তিও অর্জিত হয়।
-রাফসান
জানাজার নামাজে কী পড়বেন, কী করবেন না
কোনো মুসলিম ব্যক্তি ইন্তেকাল করলে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনায় মরদেহ সামনে রেখে যে বিশেষ নামাজ আদায় করা হয়, সেটিই জানাজার নামাজ। ইসলামী পরিভাষায় ‘জানাজা’ শব্দটি মূলত মরদেহকে নির্দেশ করে। এই নামাজ ফরজে কেফায়া হিসেবে গণ্য, অর্থাৎ সমাজের কিছু মানুষ আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব আদায় হয়ে যায়; তবে কেউ আদায় না করলে এলাকার সবাই গুনাহগার হয়।
জানাজার নামাজ পুরুষদের জন্য আবশ্যিক বিধান হিসেবে বিবেচিত। সাধারণভাবে নারীদের জানাজার নামাজে অংশগ্রহণের বিধান নেই বলে ফিকহি গ্রন্থগুলোতে উল্লেখ রয়েছে। এই নামাজ আদায়ের জন্য অন্যান্য নামাজের মতোই পবিত্রতা শর্ত, অর্থাৎ ওজু ছাড়া জানাজার নামাজ সহিহ হয় না।
জানাজার নামাজের কাঠামো অন্যান্য ফরজ বা নফল নামাজের তুলনায় ভিন্ন। এতে রুকু, সিজদা কিংবা বৈঠক নেই। মরদেহ সামনে রেখে সবাই কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে। জানাজার নামাজে মোট চারটি তাকবির দিতে হয় এবং পুরো নামাজ দাঁড়ানো অবস্থাতেই সম্পন্ন করা হয়।
প্রথম তাকবির বলার পর সানা পাঠ করা হয়। দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরুদ শরিফ পাঠ করতে হয়। তৃতীয় তাকবিরের পর মৃত ব্যক্তির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। মৃত ব্যক্তি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হন, তবে সাধারণ জানাজার দোয়া পড়া হয়; আর শিশু হলে শিশুদের জন্য নির্ধারিত দোয়া পাঠ করা হয়। চতুর্থ তাকবিরের পর ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে জানাজার নামাজ শেষ করা হয়। প্রথম তাকবির ছাড়া অন্য কোনো তাকবিরে হাত তোলা হয় না।
জানাজার নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়; বরং মনে মনে করাই যথেষ্ট। নিয়তের মর্মার্থ হলো চার তাকবিরসহ ফরজে কেফায়া জানাজার নামাজ এই ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে আদায় করছি।
সানার উচ্চারণ হলো: “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।”
এরপর দরুদ শরিফ পাঠ করে তৃতীয় তাকবিরে দোয়া করা হয়। যদি পূর্ণ দোয়া মুখস্থ না থাকে, তবে সংক্ষিপ্তভাবে ‘আল্লাহুম্মাগফির লিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত’ বললেও দোয়া আদায় হয়ে যায়।
ইমাম তাকবিরগুলো উচ্চস্বরে বলবেন, আর মুক্তাদিরা নিচু স্বরে তাকবির ও দোয়া পাঠ করবেন। জানাজার কাতার বিজোড় হওয়া উত্তম বলে আলেমরা উল্লেখ করেছেন।
জানাজার নামাজের মাধ্যমে একদিকে মৃত ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত কামনা করা হয়, অন্যদিকে এতে অংশগ্রহণকারীর জন্যও বিপুল সওয়াবের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তাই ইসলামে জানাজার নামাজকে মানবিক দায়িত্ব ও ইমানি কর্তব্য উভয় হিসেবেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত কামনায় জানাজার দোয়া ও এর তাৎপর্য
মৃত্যু জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী যা থেকে কারোরই পলায়নের পথ নেই। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী যে জন্মেছে তাকে একদিন না একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। মায়াময় পৃথিবীর সব রূপ-রঙ পেছনে ফেলে মানুষকে পাড়ি জমাতে হবে পরকালীন জগতে যেখান থেকে আর ফেরার কোনো পথ নেই। সেই জগতে কেউ কারোর বন্ধু বা শত্রু নয় বরং প্রত্যেককে নিজ নিজ আমলের দায়ভার নিজেকেই বহন করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ ٱلْمَوْتِ (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫; সুরা আনকাবুত : ৫৭)।
আর সুরা নাহলে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন তাদের নির্ধারিত সময় এসে যায়, তখন তারা এক মুহূর্তও বিলম্বিত করতে পারে না, আবার ত্বরান্বিতও করতে পারে না। (আয়াত : ৬১)। মৃত্যুর পর পরকালীন জীবনের প্রথম ধাপ হলো কবর। যারা এই ধাপ সহজে অতিক্রম করতে পারবে তাদের জন্য পরবর্তী ধাপগুলো হবে শান্তিময়।
হাদিসে এসেছে কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা উচিত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— তোমরা মৃত ব্যক্তিকে দ্রুত দাফন করো। যদি সে নেককার হয়, তবে তাকে কল্যাণের দিকে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দিলে; আর যদি অন্যরকম হয়, তবে সেই বোঝা তোমাদের কাঁধ থেকে নেমে গেল। (সহিহ বোখারি : ১৩১৫)। জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া যা মৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমার সুপারিশ হিসেবে গণ্য হয়।
জানাজার নামাজে বালেগ পুরুষ বা নারী হলে এই দোয়া পড়তে হয়—
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا، وَمَيِّتِنَا، وَصَغِيرِنَا، وَكَبِيرِنَا، وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا، وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا، اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الْإِيمَانِ، وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الْإِسْلَامِ، اللَّهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ، وَلَا تُضِلَّنَا بَعْدَهُ
(উচ্চারণ— আল্লাহুম্মাগফির লি হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়েবিনা ওয়া ছগিরিনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উংছানা, আল্লাহুম্মা মান আহয়াইতাহু মিন্না ফাআহইয়িহি আলাল ইসলাম ওয়া মান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ইমান। আল্লাহুম্মা লা তাহরিমনা আঝরাহু ওয়া লা তুদিল্লানা বাদাহু।)
(আবু দাউদ ৩২০১, তিরমিজি ১০২৪)।
মৃত যদি ছেলে শিশু হয় তবে পড়তে হয়—
اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًاً , وَّاجْعَلْهُ لَنَا أَجْرًا وَّذُخْرًا , اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا شَفِيْعًا وَّمُشَفَّعًا
(উচ্চারণ— আল্লাহুম্মাজআলহু লানা ফারাতঁও ওয়াজআলহু লানা আজরাঁও ওয়া জুখরাঁও ওয়াজআলহু লানা শা-ফিআও ওয়া মুশাফ্ফাআ)।
আর মেয়ে শিশু হলে এই দোয়ার শেষ অংশে ‘লাহা’ ও ‘শা-ফিআতাঁও’ শব্দ ব্যবহার করে দোয়া পড়তে হয়।
(উচ্চারণ— আল্লাহুম্মাজআলহা লানা ফারাতঁও ওয়াজআলহা লানা আজরাঁও ওয়া জুখরাঁও ওয়াজআলহা লানা শা-ফিআতাঁও ওয়া মুশাফ্ফাআহ)।
জানাজা আদায়ের জন্য মৃত ব্যক্তিকে কিবলার দিকে রেখে ইমাম তার বুক বরাবর দাঁড়াবেন। প্রথমে তাকবির বলে সানা পড়তে হয় যেখানে ‘ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা’-এর পর ‘ওয়া জাল্লা সানাউকা’ যোগ করতে হয়। এরপর দ্বিতীয় তাকবির দিয়ে দরুদে ইব্রাহিম এবং তৃতীয় তাকবিরের পর নির্দিষ্ট দোয়া পড়তে হয়। সর্বশেষ চতুর্থ তাকবির বলে ডানে ও বাঁয়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ সম্পন্ন করতে হয়
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়: ২০ ডিসেম্বর
ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে নামাজ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে বিবেচিত। ইমান বা বিশ্বাসের পরেই নামাজের স্থান যা ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী হাশরের ময়দানে বা কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। তাই একজন মুমিনের জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ নির্ধারিত সময়ে আদায় করা অত্যন্ত আবশ্যক। আজ শনিবার ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি এবং ৫ পৌষ ১৪৩২ বাংলা তারিখের জন্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
আজকের সূচি অনুযায়ী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায়
জোহর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে বেলা ১১টা ৫৭ মিনিটে।
আসরের নামাজ আদায়ের সময় শুরু হবে দুপুর ৩টা ৩৯ মিনিটে।
সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজের সময় হবে সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে
এশার নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে।
এছাড়া আগামীকাল রোববার পবিত্র ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে ভোর ৫টা ১৩ মিনিটে।
পরকালের মুক্তি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য শত ব্যস্ততার মাঝেও সময়মতো নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
উল্লেখ্য যে ঢাকার সময়ের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিভাগের সময়ের কিছুটা তারতম্য রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে উল্লিখিত সময় থেকে ৫ মিনিট এবং সিলেটের ক্ষেত্রে ৬ মিনিট সময় বিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে ঢাকার সময়ের সঙ্গে খুলনার জন্য ৩ মিনিট, রাজশাহীর জন্য ৭ মিনিট, রংপুরের জন্য ৮ মিনিট এবং বরিশালের জন্য ১ মিনিট সময় যোগ করে নামাজের ওয়াক্ত নির্ধারণ করতে হবে। সব ধরনের ফরজ নামাজের পাশাপাশি ওয়াজিব ও সুন্নত নামাজ আদায়েও মুসল্লিদের যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জুমার দিনে দরুদ পাঠের বিশেষ ফজিলত
ইসলামে জুমার দিনকে সপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে আল্লাহ তায়ালা বান্দার জন্য বিশেষ রহমত, ক্ষমা ও নৈকট্য লাভের সুযোগ রেখে দিয়েছেন। এই পবিত্র দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ আমল হলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, জুমার দিন ও রাতে পাঠ করা দরুদ সরাসরি রাসুল (সা.)–এর নিকট পেশ করা হয় এবং ফেরেশতারা বিশেষভাবে এই দরুদ গ্রহণের দায়িত্বে থাকেন। ফলে অন্যান্য দিনের তুলনায় জুমার দিনে দরুদ পাঠের গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণ বেশি।
বিশেষ করে জুমার দিন আসরের নামাজের পর সময়টিকে ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয়। বহু আলেম ও ইসলামি বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে, এই সময়টি দুআ কবুলের অন্যতম বিশেষ মুহূর্ত। এই সময়ে নির্দিষ্ট দরুদ শরিফ পাঠের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অসাধারণ ফজিলত। বর্ণনায় এসেছে, কেউ যদি জুমার দিন আসরের পর নির্দিষ্ট দরুদ ৮০ বার পাঠ করে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার ৮০ বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন এবং তাকে ৮০ বছরের ইবাদতের সওয়াব দান করেন। গুনাহে ভারাক্রান্ত ও আল্লাহর ক্ষমা প্রত্যাশী বান্দার জন্য এটি এক বিশাল সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
জুমার দিনে নির্দিষ্ট দরুদের পাশাপাশি সাধারণ দরুদ বেশি বেশি পাঠ করাও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি রাসুল (সা.)–এর প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর ১০টি রহমত নাজিল করেন, ১০টি গুনাহ মাফ করেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। জুমার দিনে এই দরুদ যত বেশি পাঠ করা হবে, বান্দা তত বেশি আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের সুযোগ পায় এবং অন্তরে প্রশান্তি অনুভব করে।
ইসলামি বর্ণনায় দরুদের গুরুত্ব শুধু দুনিয়াবি কল্যাণেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং আখিরাতের কঠিন মুহূর্তগুলোর সঙ্গেও এর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, কিয়ামতের দিন পুলসিরাত পার হওয়ার সময় দরুদ পাঠকারীর জন্য এই দরুদ নূরের মতো কাজ করবে এবং তাকে পথ দেখাবে। অর্থাৎ, দুনিয়ায় পাঠ করা দরুদ আখিরাতে বান্দার জন্য আলো ও সহায়তায় পরিণত হবে।
জুমার দিনের আমলকে পূর্ণতা দিতে দরুদ পাঠের পাশাপাশি সূরা কাহফ তিলাওয়াত, বেশি বেশি যিকির ও ইস্তেগফার, এবং আন্তরিক দুআ করার কথাও ইসলামি বর্ণনায় উৎসাহিত করা হয়েছে। বিশেষত আসরের পর সময়টিতে আল্লাহর নিকট ক্ষমা, হেদায়েত ও কল্যাণ কামনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। এসব আমলের মাধ্যমে একজন মুমিন শুধু ইবাদতই করেন না, বরং নিজের আত্মাকে শুদ্ধ করার এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করেন।
সব মিলিয়ে জুমার দিন একজন মুসলমানের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিশেষ উপহার। এই দিনে দরুদ পাঠের মাধ্যমে নবীপ্রেম প্রকাশ, গুনাহ মাফের আশা এবং আখিরাতের সফলতার পথ সুগম হয়। তাই এই মহামূল্যবান দিনটি যেন অবহেলায় না কেটে যায়, বরং ইবাদত, দরুদ ও দুআর মাধ্যমে তা অর্থবহ করে তোলাই একজন মুমিনের দায়িত্ব।
পাঠকের মতামত:
- পাকস্থলীর ধ্বংস করছে আপনার এই ৩টি সাধারণ অভ্যাস
- কম ঘুমে শরীরে বাসা বাঁধছে যেসব মারাত্মক রোগ
- মাত্র ৭ দিনে চুল পড়া কমানোর জাদুকরী ঘরোয়া পদ্ধতি
- সরকারি পদ ছেড়ে ভোটের ময়দানে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান
- ভারতের 'বাহুবলী' রকেটের কাঁধে চড়ে মহাকাশ জয়
- রিকশায় চড়ে মনোনয়নপত্র কিনলেন আলোচিত বক্তা আমির হামজা
- হাদি হত্যার রহস্য উন্মোচন: যুবলীগ কর্মী হিমনের বড় স্বীকারোক্তি
- ভারত এবং আওয়ামী লীগ দেশ অস্থিতিশীল করছে: নাসীরুদ্দীন
- আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কড়া বার্তা
- হাদিকে সেলাই করা ব্যাঙের সাথে তুলনা করলেন বিএনপি নেত্রী মনি
- বৈপ্লবিক বিয়ে: বরের সাজে হাদি হত্যার বিচার চাইলেন ফরহাদ
- জোনায়েদ সাকিকে সমর্থন দিয়ে বিএনপির বড় ত্যাগ
- মাহমুদুর রহমান মান্নার ভোটযুদ্ধ শেষ: আদালত দিল বড় রায়
- চুল পড়ার পেছনে লুকানো ৫টি অবহেলিত কারণ
- ৪৬তম বিসিএসের ভাইভার সময়সূচি প্রকাশ, জানুন বিস্তারিত
- মিশ্র লেনদেনে শেষ হলো ডিএসইর আজকের বাজার
- ২৪ ডিএসইতে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ২৪ ডিসেম্বরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- তারেক রহমানের আগামী ৩ দিনের কর্মসূচি জানালেন সালাহউদ্দিন
- নতুন বছরে কত দিন ছুটি? জানাল সরকার
- উত্থান-পতনের দোলায় ডিএসই–৩০ তালিকা
- স্পট মার্কেটে সীমিত দুই ব্যাংকের পারপেচুয়াল বন্ড
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর, একসঙ্গে খুলছে যেসব বন্ড
- পুঁজিবাজারে আলোচনায় টোসরিফার ক্রেডিট রেটিং
- বাংগাস বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর
- যে কোম্পানির পরিচালকের শেয়ার কেনার ঘোষণা
- বেক্সিমকোর মূলধন কাঠামোতে ইতিবাচক অগ্রগতি
- ডিএসইতে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর সর্বশেষ এনএভি প্রকাশ
- ডিএসই আপডেট: সূচক ও লেনদেনের সর্বশেষ চিত্র
- রমজান উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে বড় ছাড় দিল সরকার
- হীরার বৃষ্টি এবং হিলিয়ামের মেঘে ঢাকা রহস্যময় এক নতুন গ্রহ
- শীতে ঠান্ডা নাকি গরম পানিতে গোসল: কোনটি বেশি নিরাপদ
- শীর্ষ গণমাধ্যমে হামলা আসলে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা: নাসির
- মাত্র ২৯ ঘণ্টায় বাজিমাত: জমার অংক জানালেন তাসনিম জারা
- বিমানবন্দরে ভিড় করলেই ব্যবস্থা: নেতাকর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন তারেক
- বাংলাদেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হলেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী
- এক নজরে আজকের মুদ্রার বিনিময় হার
- ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র তালিকা প্রকাশ করল ঢাকা বোর্ড
- বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ থাকবে
- চরম টানাপড়েনে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক, বাড়ছে উত্তেজনা
- ইমরান খানের দলের সাথে শর্তসাপেক্ষ সংলাপে রাজি শাহবাজ শরিফ
- নানামুখী চ্যালেঞ্জে ভোটের মাঠে জটিল সমীকরণ
- আজ কেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
- আজ ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি
- রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দাম এখন আকাশচুম্বী
- তুরস্কে বিমান বিধ্বস্তে লিবিয়ার সেনাপ্রধান নিহত
- তারেক রহমানকে বরণে ঢাকায় নামছে মানুষের ঢল
- ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলায় জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ
- তিন তারকাকে হারিয়ে বিপিএলের শুরুতেই বিপাকে চট্টগ্রাম রয়্যালস
- ঠোঁট ফাটা কেবল শীতের দোষ নয় বরং আসল অপরাধী অন্য কেউ
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন আকাশছোঁয়া দাম
- রেকর্ড দামে স্বর্ণ: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে বাজুসের নতুন মূল্য
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- নারী-সঙ্গীর হাতে পুরুষের যৌনাঙ্গ ছিন্নকরণ: বাংলাদেশে অবহেলিত এক সহিংসতার সংকট
- আজ টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- আজ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
- সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে শরিফ ওসমান হাদি
- হাদির মৃত্যু ঘিরে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ ইতিহাসের দামী সোনা কিনবেন ক্রেতারা
- ছুটির দিনেও উত্তপ্ত ঢাকা: আজ কোথায় কী কর্মসূচি?
- বাংলা দখল করতে এলে দিল্লি কেড়ে নেব: মমতা
- হাদির জানাজা উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার প্রতিবাদে মির্জা ফখরুল
- এবার মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান








