জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ নির্বাচন: তারেক রহমান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ২১:৪৭:৩৮
জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ নির্বাচন: তারেক রহমান
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো নির্বাচন। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, “ইতিহাসের নৃশংসতম ফ্যাসিস্ট শক্তির পতনের পর ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তির অহেতুক বিতর্কে জড়ানো শহীদদের আত্মত্যাগকে অসম্মান করার শামিল।”

তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপদ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং দেশ-বিদেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতির মূল অঙ্গীকার হবে।

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য ঘোষণার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জনগণের দীর্ঘ দেড় দশকের অপেক্ষার অবসান ঘটবে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা, তারা নিজেদের ভোট নিজেরাই দিয়ে পছন্দের প্রার্থী বেছে নিতে পারবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তব্য গণতন্ত্রকামী জনগণের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মধ্যে অনৈক্য তৈরি হলে পতিত ফ্যাসিবাদ আবার ফিরে আসতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জনগণ যখন জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে, তখনই তারা শক্তিশালী হবে, আর জনগণ শক্তিশালী হলে দেশও শক্তিশালী হবে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, জনগণের কাছে বিএনপির শক্তি হলো জনশক্তি। তাই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং এমন কোনো কাজে জড়ানো যাবে না যাতে জনগণের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।

/আশিক


মাইলস্টোনের নিহত শিক্ষকরা চিরস্মরণীয়: প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ২০:০৯:১১
মাইলস্টোনের নিহত শিক্ষকরা চিরস্মরণীয়: প্রধান উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক মেহেরীন চৌধুরী, মাসুকা বেগম ও মাহফুজা খানম মানবতা ও সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নিহত তিন শিক্ষকের পরিবারের সদস্যরা। এ সময় শিক্ষক মেহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল, তাদের দুই ছেলে আদিল রশিদ ও আয়ান রশিদসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা; শিক্ষক মাসুকা বেগমের বোন পাপড়ি রহমান ও ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান; এবং শিক্ষক মাহফুজা খাতুনের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা, তার বোনসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই মর্মান্তিক স্মৃতি এখনও সবার মনে দগদগে। তিনি নিহত শিক্ষকদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং বলেন, এই শোক শুধু তাদের একার নয়, পুরো জাতি এই শোককে ধারণ করে।

তিনি নিহত শিক্ষকদের পরিবারের সদস্যদের কাছে তাদের স্মৃতিচারণ শুনতে চান। শিক্ষক মেহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল তার স্ত্রীর সাহসিকতার কথা তুলে ধরে বলেন, দগ্ধ শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে তার স্ত্রী নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। শিক্ষক মাহফুজা খাতুনের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা মায়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। শিক্ষক মাসুকা বেগমের ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান জানান, মাসুকা সবসময় তার পরিবারের প্রতি নিবেদিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই শিক্ষকরা জাতির গর্ব ও আদর্শ। অন্যের জীবন বাঁচাতে তারা যেভাবে আত্মত্যাগ করেছেন, তা মানবতা ও সাহসিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাদের স্মৃতি ধরে রাখতে যা কিছু করা প্রয়োজন, তা করা হবে বলেও জানান তিনি।

এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ অন্যান্য উপদেষ্টাগণ এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

/আশিক


দুদকের জালে এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তা: চাওয়া হলো সম্পদ বিবরণী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ১৭:৪০:০৫
দুদকের জালে এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তা: চাওয়া হলো সম্পদ বিবরণী

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)-এর ১৭ জন কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চেয়ে পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দুদকের অনুসন্ধানে এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

যাদের সম্পদ বিবরণী চাওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন: এনবিআর সদস্য মো. লুৎফুল আজিম, সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (সিআইসি) মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাসান, এবং অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু। এছাড়াও আরও ১২ জন কর্মকর্তা এই তালিকায় রয়েছেন।

আক্তার হোসেন বলেন, দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এই কর্মকর্তাদের নিজ নামে অথবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তির নামে বৈধ আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পদ পাওয়া গেছে। সেই কারণে কমিশন তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব দাখিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে, গত ২৯ জুন দুদক এনবিআরের ৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের ঘোষণা করে। এরপর ১ জুলাই আরও ৫ জন এবং ৩ জুলাই আরও ৫ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার কথা জানায় সংস্থাটি।

সম্প্রতি এনবিআর সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও বদলি করেছে সরকার। গতকাল সোমবার (১৮ আগস্ট) এনবিআরের শীর্ষ ৯ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুদক।

গত মে ও জুন মাসে এনবিআরের যৌক্তিক সংস্কার ও চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছিলেন এনবিআর কর্মকর্তারা। ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে তারা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিও পালন করেন। পরবর্তীতে রাজস্ব সংস্কারে উপদেষ্টা কমিটি গঠনের পর আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয় সংগঠনটি।

/আশিক


ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, পেছানোর সুযোগ নেই: আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ১৪:১১:৩২
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, পেছানোর সুযোগ নেই: আসিফ নজরুল
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত সময় থেকে পিছিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই।’

ড. আসিফ নজরুল জানান, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার বিদায় নেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের, দলের না। আমাদের যত ধাপ আছে, সব কিছুই আমরা মাথার মধ্যে এটাই রাখছি, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, আমরা ফেব্রুয়ারিতে চলে যাব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন মন্তব্য প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কথা বলে। ওইটা একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। তারা রাজনৈতিক সুরে নানা বক্তব্য রাখছেন। নির্বাচনের সময়ে কে কি বলবেন এটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই দেখবেন।’

/আশিক


এক ফ্যান-দুটি বাতির ব্যবহার, বিদ্যুৎ বিল ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা!

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ১২:১৮:৫৪
এক ফ্যান-দুটি বাতির ব্যবহার, বিদ্যুৎ বিল ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা!
ছবিঃ সংগৃহীত

হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের এক দিনমজুর গ্রাহকের নামে আগস্ট মাসে আসে এক লাখ ৬৭ হাজার ৯৫ টাকার ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গ্রাহক কাজী ছাওধন মিয়া, যিনি প্রতিদিনের আয়ে সংসার চালান, এ বিল দেখে হতবাক হয়ে পড়েন।

দিনমজুর ছাওধন মিয়া জানান, তার ঘরে একটি ফ্যান ও দুটি বাতি ছাড়া আর কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় না। সাধারণত মাসে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বেশি বিল আসে না। অথচ চলতি আগস্টে তার হাতে আসে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫ টাকার বিল, যেখানে বিলম্ব ফি ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫৯৫ টাকা এবং ব্যবহার দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৮৫ মেগাওয়াট। অথচ জুন মাসের বিলে তার খরচ ধরা হয়েছিল মাত্র ১০৫ টাকা।

অভিযোগকারী জানান, এ বিল হাতে পেয়ে তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং টানা দুই দিন বিদ্যুৎ অফিসে ঘোরাঘুরি করেছেন। কর্মকর্তারা তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে বিল সংশোধন করে দেওয়া হবে।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী ক্ষমা সুত্রধর স্বীকার করেন, “ইচ্ছে করে নয়, কম্পিউটার ব্যবহারে ভুলের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।” এ ঘটনায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস।

কাজী ছাওধনের মতো আরও অনেক গ্রাহক এবার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। সাধারণত ২০০-২৫০ টাকার বিল আসা গ্রাহকের এবার বিল এসেছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। নবীগঞ্জের এক ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, “প্রতি মাসে ৬০০-৮০০ টাকা বিল আসত। অথচ এবার বিল এসেছে ১ হাজার ৬০০ টাকা।”

দৌলতপুর গ্রামের বদরুল ইসলাম জানান, বিল কমানোর আশায় তিনি ঘরে দুটি মিটার বসালেও এবার আগের চেয়ে বেশি বিল এসেছে। অপর গ্রাহক আব্দুল মতিন বলেন, বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে অভিযোগ করলে কর্মকর্তারা বলেছেন, “আগামী মাস থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে।”

একজন গ্রাহক কাজল মিয়ার অভিজ্ঞতাও একইরকম। তার প্রতিবেশীর মিটারে ব্যবহার দেখানো হয়েছে ১২২০ ইউনিট, অথচ বিলে ধরা হয়েছে ১৩০০ ইউনিট। তার অভিযোগ, গ্রাহকদের কাছ থেকে দেড়গুণ থেকে দ্বিগুণ বিল আদায় করা হচ্ছে।

হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নবীগঞ্জ অফিসের ডিজিএম মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “গরমের সময় স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি বিল আসে।” তবে কাজী ছাওধন মিয়ার বিল প্রসঙ্গে তিনি স্বীকার করেন, “এটি কম্পিউটার ব্যবহারকারীর ভুলে হয়েছে। দায়ী কর্মীকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং তার বিল সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ভুল হবে না।”

-রফিক


শূন্যপদ আর অনিয়মে জর্জরিত শিক্ষা খাত, ভোগান্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ১১:২৩:২৬
শূন্যপদ আর অনিয়মে জর্জরিত শিক্ষা খাত, ভোগান্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী
ছবিঃ সংগৃহীত

দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে শূন্যপদে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম থমকে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীরা চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী মতাদর্শে ঘনিষ্ঠ অনেক কর্মকর্তাকে বদলি করা হলেও এখনো অনেক পদ পূরণ হয়নি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার বই ছাপানোর দরপত্রও এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা বই হাতে পাবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

গত ২২ জুলাই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়েরকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর রুটিন দায়িত্ব পালন করেন অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবর রহমান। সোমবার নতুন সচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রেহানা পারভীন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ. ম. কবিরুল ইসলাম অবসরে যাওয়ার পর সেই পদেও এখনো কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আপাতত অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য। ফলে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থমকে গেছে। নতুন শিক্ষাবর্ষের বই মুদ্রণের কার্যক্রম শুরু হয়নি, দরপত্রও চূড়ান্ত করা হয়নি। চলতি বছরও বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা বই পাবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে নিম্নমানের বই সরবরাহ করেছে বেশিরভাগ মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৩০ শতাংশ বইয়ের মান ছিল অগ্রহণযোগ্য। নিয়মিত চেয়ারম্যান না থাকায় এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, বরং বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলোই পুরস্কৃত হয়েছে। এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফাতিহুল কাদীর স্বীকার করেন, প্রতিষ্ঠানের প্রধান না থাকলে স্বাভাবিকভাবেই কাজ ব্যাহত হয়। তার মতে, “সামনের সময়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্রুত শূন্য পদ পূরণ জরুরি।”

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর বোর্ডেও স্থবিরতা বিরাজ করছে। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর সংস্থার সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ পালিয়ে যান। তার পর থেকে রুটিন দায়িত্বে রয়েছেন অধ্যাপক মো. জাফর আহম্মদ। এক বছরেও সংস্থাটি স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পারেনি। তিন মাস ধরে সার্ভার বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরভাতার ফাইল আটকে আছে। বর্তমানে ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা না পেয়ে দুর্ভোগে ভুগছেন। শিক্ষক নেতারা দ্রুত অর্থ বরাদ্দ ও বোর্ড পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষা খাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক পদও শূন্য। আপাতত যুগ্ম পরিচালক প্রফেসর খন্দকার মাহফুজুল আলম দায়িত্বে আছেন। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)-এর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদও দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে। ফলে প্রশিক্ষণ, মনিটরিং ও মূল্যায়ন কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে অধ্যাপক এসএম কামাল উদ্দিন হায়দারকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সাবেক সচিব সিদ্দিক জোবায়ের। তিনি অতীতে আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। একইভাবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবিরকেও আওয়ামী ঘনিষ্ঠ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) মো. মজিবর রহমান বলেন, “শিক্ষা খাতে অবহেলা, গাফিলতি, বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। অল্প সময়ে এর সমাধান সম্ভব নয়। এজন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিতে হবে এবং ধাপে ধাপে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে।”

-শরিফুল


এনা পরিবহন কেলেঙ্কারি ও ভিডিও কাণ্ডে বিতর্কে বিএফআইইউ প্রধান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ১১:১৩:৫২
এনা পরিবহন কেলেঙ্কারি ও ভিডিও কাণ্ডে বিতর্কে বিএফআইইউ প্রধান
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের একাধিক আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এই ভিডিও ফাঁসের ঘটনা এমন এক সময়ে সামনে এসেছে যখন শাহীনুল ইসলাম সম্প্রতি এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর ফ্রিজ করা ব্যাংক হিসাব থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। গত বছরের নভেম্বরে এনায়েত উল্লাহ ও তার পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রায় ৫০টি ব্যাংক হিসাবে ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করেছিল বিএফআইইউ। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে ব্যাংক আল-ফালাহর চারটি হিসাব পুনরায় ফ্রিজ না করে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়।

সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি জানতে পারে। দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, এনায়েত উল্লাহ প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস থেকে প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করতেন। দুদকের আবেদনের ভিত্তিতে গত ২৭ মে আদালত পুনরায় ওই ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করার নির্দেশ দেন। তবে বর্তমানে হিসাবগুলোতে রয়েছে প্রায় ১০১ কোটি টাকা। বাকি অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়ার পেছনে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে শাহীনুল ইসলাম বলেন, “এনা পরিবহনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসা পরিচালনার স্বার্থে কিছু অর্থ উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। অনুরূপভাবে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও একই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দুদক জানতে চাইলে আমি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবো।”

তবে আপত্তিকর ভিডিও প্রসঙ্গে তার দাবি, “আমাকে হেয় করার জন্য কে বা কারা ভিডিওগুলো ছড়িয়েছে। এগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া।” তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) থেকে এসব ভিডিও প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে পড়ে এবং সোমবার (১৮ আগস্ট) থেকে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিও প্রকাশের পর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এরই প্রেক্ষিতে ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইটি বিভাগকে।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৮ আগস্ট বিএফআইইউর তৎকালীন প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর দীর্ঘদিন সংস্থাটির প্রধানের পদ শূন্য থাকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এএফএম শাহীনুল ইসলামকে প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে গভর্নরের নেতৃত্বাধীন সার্চ কমিটির সুপারিশ তালিকায় তার নাম না থাকায় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েই শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। ভিডিও কেলেঙ্কারির ঘটনা সেই বিতর্ককে আরও জোরদার করেছে।

-রফিক


মুরাদনগরের ট্রিপল মার্ডারে নতুন মোড়: কাঠগড়ায় আসিফ মাহমুদের বাবা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৮ ২১:৫২:৩০
মুরাদনগরের ট্রিপল মার্ডারে নতুন মোড়: কাঠগড়ায় আসিফ মাহমুদের বাবা
ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া।

কুমিল্লার মুরাদনগরের আকুবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা মো. বিল্লাল হোসেন মাস্টার জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ওই ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া রুমা আক্তার। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

রুমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের পরিবারের ৩ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার মায়ের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভিন্ন মামলার প্রসঙ্গ টেনে আনা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, তার মা এর আগে ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন, কিন্তু শিমুল চেয়ারম্যানের জন্য নির্বাচিত হতে পারেননি। গ্রামের অসহায় মানুষদের সাহায্য করায় শিমুল চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার মায়ের বিরোধ ছিল। রুমা অভিযোগ করেন, ‘উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল মাস্টারের নির্দেশে এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।’

রুমা আক্তার জানান, ওই দিন সকাল ৬টায় ঘটনার শুরু হয়। তিনি ও তার ছোট বোন আড়াই ঘণ্টা ধরে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলেন এবং ৯৯৯-এ ফোন দিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাননি। তার অভিযোগ, থানা থেকে তাদের বাড়িতে আসতে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সকাল ৯টার পর। তিনি থানার ওসির ওপর সন্তুষ্ট থাকলেও এসআই নাহিদের কালক্ষেপণের কারণে সহযোগিতা পেতে বিলম্ব হয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, তার ও এসআই নাহিদের কললিস্ট চেক করলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে।

রুমা আরও বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের পর যারা মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়েছেন, তারা ঘটনাস্থলে ছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তিনি শিমুল চেয়ারম্যান ও শরিফকে মূল আসামি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, পুলিশ চাইলে ঘটনার পরপরই তাদের গ্রেপ্তার করতে পারত।

শারীরিক ও মানসিক কষ্টের কথা জানিয়ে রুমা বলেন, ‘আমি না-ও বেঁচে থাকতে পারি। আমি এখনো অসুস্থ, শরীরে অসংখ্য সেলাই। আমাকে রাম দা দিয়ে কুপিয়েছে।’ তিনি বলেন, ঘটনার প্রায় দুই মাস হয়ে গেলেও র‍্যাব কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর আর কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি মনে করেন, প্রশাসন চাইলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারে।

তার মা বিএনপি করতেন বলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল, এমনটাও উল্লেখ করেন রুমা। তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডে উপদেষ্টার বাবা জড়িত। সাংবাদিকরা সত্য উন্মোচন না করলে আমি বিচার পাব না।’ রুমা আক্তার নিজেকে অসহায় দাবি করে বলেন, এই ঘটনায় তিনি স্বজন হারিয়েছেন এবং সাতটি শিশু এতিম হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার কোনো দল নেই। আমরা শুধু বিচার চাই।’

রুমা জানান, এর আগে সংবাদ সম্মেলন করার কারণে তার বাবাকে হেনস্তা করা হয়েছে এবং তাকেও তারা খুঁজছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসন তাদের কোনো নিরাপত্তা দিচ্ছে না এবং কোনো রাজনৈতিক দল তাদের পাশে দাঁড়ায়নি।

/আশিক


‘ধর্ম নয়, যোগ্যতায় মানুষ মূল্যায়িত হবে’: জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৮ ২১:৪১:৩৫
‘ধর্ম নয়, যোগ্যতায় মানুষ মূল্যায়িত হবে’: জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বর্তমান সরকার সব ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করছে এবং কোনো ধরনের বিভাজন বা বৈষম্য যাতে না ঘটে সে বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সতর্ক।

সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে জেএম সেন হলে আয়োজিত চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শেষদিনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, সবার অংশগ্রহণে একটি প্রগতিশীল ও কল্যাণময় বাংলাদেশ গড়তে মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে। ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়, বরং জ্ঞান, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে বৌদ্ধ; সেটি বিষয় না। দেশের নাগরিক হিসেবে দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটালে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা ঐতিহাসিক জেএম সেন হল প্রাঙ্গণে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বিপ্লবী মাস্টার দা সূর্যসেন, যাত্রা মোহন সেন, নেলী সেনগুপ্ত ও মহিম চন্দ্র দাশের আবক্ষ ভাস্কর্য ঘুরে দেখেন।

/আশিক


নির্বাচনী রোডম্যাপ চূড়ান্ত: শীঘ্রই আসছে ইসির পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৮ ১৯:৫৩:২২
নির্বাচনী রোডম্যাপ চূড়ান্ত: শীঘ্রই আসছে ইসির পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা
ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশন (ইসি) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা বা ‘রোডম্যাপ’ চলতি সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনী রোডম্যাপের বিষয়ে আমরা বলেছিলাম, তা এই সপ্তাহেই ঘোষণা দেবো। ইতোমধ্যে এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এখন কমিশনে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। কর্মপরিকল্পনা মূলত আন্তঃঅনুবিভাগীয় এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সবকিছু সমন্বয়ের পর আমরা আশা করছি, এ সপ্তাহেই চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশ করা সম্ভব হবে।’

নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা তো পরবর্তী বিষয়। আসল কথা হলো—সংশ্লিষ্ট সবাই যদি নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন, তবে কোনো সমস্যা হবে না।’ তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।

মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় প্রসঙ্গে তিনি জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়, ফোকাল পার্সন নির্ধারণ, পরিপত্র ও নির্দেশনা ইস্যু ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ চলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি সমন্বয় করে সময়ের আগেই কাজগুলো গুছিয়ে রাখতে।’

সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, মোট ৮৩টি আসন নিয়ে আপত্তি এসেছে। এসব আপত্তির শুনানি আগামী ২৪ আগস্ট থেকে শুরু হবে এবং টানা চার দিন চলবে। এরপরই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটকেন্দ্র

এনআইডি সংশোধন প্রসঙ্গে আখতার আহমেদ বলেন, ‘সোমবারের মাসিক সমন্বয় সভায় এ সংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এনআইডি কারেকশনের জন্য যেসব আবেদন বাতিল হচ্ছে, আবেদনকারীরা আবার তা সংশোধনের জন্য জমা দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তাদের আপিলের সুযোগ রয়েছে এবং সেই আপিল অনুযায়ী আমরা নিষ্পত্তি করছি।’ তিনি জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার আপিল জমা পড়েছে।

তিনি আরও জানান যে, ভোটার নিবন্ধনের জন্য ব্যবহৃত ফরম-২-এর কিছু ফর্ম এখনো স্ক্যান করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে ২০০৮ সাল থেকে কিছু ফর্ম স্ক্যানের বাইরে ছিল। সেগুলো স্ক্যান করে পোর্টালে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে, যা তথ্যভান্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

ভোটকেন্দ্র বিষয়ে সচিব বলেন, মাসিক সমন্বয় সভায় ভোটকেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হবে না, তবে অতীতের কেন্দ্রগুলি হুবহু রাখা হবে না; যৌক্তিক প্রয়োজন থাকলে সমন্বয় করা যাবে। জাতীয় নির্বাচনে প্রতি ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ভোটারের ব্যবস্থা রাখা হবে।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ২২টি দলের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। যাদের আবেদন বাতিল বা বিবেচনাযোগ্য নয়, তাদেরকে চিঠি দিয়ে জানানো হচ্ছে এবং কোন শর্ত পূরণ না করায় তাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়নি, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই কাজগুলো আগেই শেষ করতে, যাতে সবার সুবিধা হয়। শেষ মুহূর্তে হুড়োহুড়ি করে কাজ করতে না হয়।’

/আশিক

পাঠকের মতামত: