শেকলবন্দি বাপ্পীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা সুলতান বাপ্পী একসময় ছিলেন সক্রিয় ও উদ্যমী রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে বারবার ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার শিকার হয়ে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাথায় আঘাত পাওয়ার পর তিনি ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারান এবং প্রায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। পরিবারের অসহায় পরিস্থিতির কারণে গত চার বছর ধরে তাকে শেকলবন্দি করে রাখতে বাধ্য হয় তার স্বজনেরা।
সম্প্রতি তার এই করুণ অবস্থার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি সুলতান বাপ্পীর উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব নেন এবং তাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ প্রেক্ষিতে সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের রমারখিল গ্রামে বাপ্পীর বাড়ি পরিদর্শন করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন মোবাইলফোনে ভিডিও কলে বাপ্পীর সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসার আশ্বাস প্রদান করেন।
ছাত্রদল নেতারা জানান, মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে বাপ্পীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে এবং তারেক রহমান ইতোমধ্যে তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০২১ সালে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মিলাদ মাহফিল আয়োজনের পর থেকেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগ বারবার বাপ্পীর ওপর হামলা চালায়। হামলার পর রাস্তায় প্রকাশ্যে কটূক্তি করে বলা হতো, এত পেটানোর পরও কিভাবে সে হেঁটে বেড়ায়। সেই নির্যাতনের ফলেই তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন এবং পরিবার তাকে তিনটি শেকলে বেঁধে রাখতে বাধ্য হয়। কিছু সময়ের জন্য তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। বর্তমানে শয্যাশায়ী অবস্থায় থেকে কোমরে গুরুতর ক্ষতও সৃষ্টি হয়েছে।
সুলতান বাপ্পী সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং পরিবারের জন্য একটি স্থায়ী জীবিকার ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, তারেক রহমানের উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পেলে বাপ্পী আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন এবং আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পরপরই তারেক রহমান চিকিৎসার দায়িত্ব নেন, যা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তিনি আরও বলেন, গত ১৭ বছরের আওয়ামী দুঃশাসন ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অসংখ্য ছাত্রদল নেতা-কর্মী আহত ও নিহত হয়েছেন। লক্ষ্মীপুরের সুলতান বাপ্পীর ঘটনাই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
-রাফসান
যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্ক পুনর্গঠনে কূটনৈতিক দেনদরবার ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচনার লক্ষ্য নিয়ে হোয়াইট হাউসে পৌঁছেছেন সৌদি আরবের প্রভাবশালী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। গত কয়েক দশকের তেলনির্ভর সহযোগিতা ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার পাশাপাশি বাণিজ্য, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং সম্ভাব্যভাবে বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি উন্নয়ন—এই বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলোতে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণ করাই সফরের মূল ফোকাস।
২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটি এমবিএস–এর প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। ওই হত্যাকাণ্ড বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো উপসংহারে এসেছিল—মোহাম্মদ বিন সালমান অভিযানটির অনুমোদন দিয়েছিলেন। তিনি অবশ্য সরাসরি কোনও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন, তবে দেশের কার্যত শাসক হিসেবে দায় স্বীকার করেছিলেন।
সাত বছরের বেশি সময় পর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আবারও ঘনিষ্ঠতায় ফিরতে চায় উভয় দেশ—একদিকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি, অন্যদিকে বৈশ্বিক জ্বালিবাজারের শীর্ষ উৎপাদক।
ট্রাম্প তার গত সফরে সৌদি আরবের করা ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ অঙ্গীকারকে সামনে রেখে নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ উন্মোচনে আগ্রহী। মানবাধিকার ইস্যু তিনি আগে এড়িয়ে গিয়েছিলেন, এবারও সেই ধারা বজায় রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন। অন্যদিকে সৌদি নেতৃত্ব আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চায়।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প নিশ্চিত করেন যে, রিয়াদকে উন্নত মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে তিনি অনুমোদন দেবেন। এই বিক্রয় অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে দিতে পারে এবং দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের প্রতিবেশীদের ওপর ‘গুণগত সামরিক সুবিধা’ বজায় রাখার মার্কিন নীতিকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।
সৌদি বিশ্লেষক আজিজ আলঘাশিয়ান বলেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের অধ্যায় “এখন কার্যত পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে” ওয়াশিংটন ও রিয়াদ।
প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বে নতুন সমীকরণ
দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্কের ভিত্তি ছিল তেলের স্থিতিশীল সরবরাহ এবং বিনিময়ে মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা। তবে ২০১৯ সালে ইরানের হামলায় সৌদি তেল স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ওয়াশিংটনের কার্যকর প্রতিক্রিয়া না পাওয়া দুই দেশের সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি করে। সাম্প্রতিক সময়ে হামাস সদস্যদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের দোহা বোমা হামলা এই উদ্বেগ নতুন করে উসকে দেয়।
এ প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কাতারের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, সৌদি আরবও এ ধরনের সুবিধা পাবে।
রিয়াদ সবশেষ আলোচনায় কংগ্রেস অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তির দাবি জানালেও, ওয়াশিংটন এটিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্তসাপেক্ষে বিবেচনা করছে।সৌদি নেতৃত্ব আবার ইসরায়েলের কাছ থেকে একটি দৃশ্যমান ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত সেই পদক্ষেপ নিতে রাজি নয়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ফলে প্রতিরক্ষা চুক্তির পথ আপাতত জটিল হয়ে আছে।
পাশাপাশি আলঘাশিয়ান মনে করেন, কাতারের মডেলের মতো যে কোনও নির্বাহী আদেশ পূর্ণাঙ্গ চুক্তি না হলেও “প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ” হবে।
এক পশ্চিমা কূটনীতিক সংক্ষেপে বলেন, “ট্রাম্প চান স্বাভাবিকীকরণ, সৌদি চায় পূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি—কিন্তু দুই পক্ষই পুরোটা পাবে না; এটিই বাস্তবকথা, এটিই কূটনীতি।”
বিশেষজ্ঞ ডেনিস রস মনে করেন, সম্ভাব্য নির্বাহী আদেশ যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবকে যে কোনো নিরাপত্তা হুমকির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পরামর্শ ও সহযোগিতার কাঠামো দেবে। এতে অস্ত্র প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে থাড বা প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন, এমনকি আঞ্চলিক নৌবাহিনী পাঠানোর মতো বিস্তৃত সহায়তা থাকতে পারে।
নিউক্লিয়ার ও এআই এজেন্ডা: আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা তুঙ্গে
সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার লক্ষ্য—তেলনির্ভরতা কমিয়ে প্রযুক্তি, জ্বালানি, উদ্ভাবন ও শিল্পায়নে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানে স্থাপন করা। এ কারণেই তারা এআই প্রযুক্তি এবং উন্নত চিপস অ্যাক্সেসকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি উন্নতমানের মার্কিন চিপস ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে, যা রিয়াদের ওপর প্রতিযোগিতার চাপ বাড়িয়েছে।
এছাড়া সৌদি নেতৃত্ব একটি পূর্ণাঙ্গ বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির স্বপ্ন দেখছে। তবে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত—ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বা ব্যবহৃত জ্বালানির পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের অধিকার না রাখার অঙ্গীকার—রিয়াদ গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছে। কারণ এই দুটি প্রক্রিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তিগত পথ উন্মুক্ত করতে পারে।
ডেনিস রস আশা করেন, আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হবে এবং অন্তত একটি পারমাণবিক সহযোগিতা চুক্তি—অথবা এ নিয়ে আশাবাদী বিবৃতি—ঘোষণা হতে পারে।
-আলমগীর হোসেন
হামাসের আপত্তি সত্ত্বেও গাজা পুনর্গঠনে জাতিসংঘে বড় সিদ্ধান্ত
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রণীত এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়ে যে প্রস্তাবটি পাস করেছে, সেটিকে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই প্রস্তাবে গাজায় একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী—ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)—গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী বেশ কিছু দেশ ইতোমধ্যেই অংশগ্রহণে আগ্রহ জানিয়েছে।
১৩টি দেশ—যাদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও সোমালিয়া উল্লেখযোগ্য—এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, যদিও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত থাকে। কোনো দেশই প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে যায়নি। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, এই প্রস্তাব গাজায় কার্যকর যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি দৃঢ় করার পথে “গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে হামাস প্রস্তাবটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, কারণ তাদের দাবি অনুযায়ী এটি ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার ও রাজনৈতিক দাবি পূরণ করে না।
টেলিগ্রামে দেওয়া বিবৃতিতে হামাস অভিযোগ করে, প্রস্তাবটি গাজায় “আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব” চাপিয়ে দেয়, যা গাজার জনগণ ও তাদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য অগ্রহণযোগ্য। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাহিনীর ভূমিকাকে গাজার ভেতরে প্রসারিত করে প্রতিরোধ শক্তিকে নিরস্ত্র করার পরিকল্পনা আইএসএফ-কে নিরপেক্ষতার বাইরে নিয়ে যাবে এবং সংঘাতে ইসরায়েলের পক্ষে কার্যকর পক্ষ হিসেবে দাঁড় করাবে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, আইএসএফ ইসরায়েল ও মিসরের পাশাপাশি নতুন করে প্রশিক্ষিত ও যাচাইকৃত একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং হামাসসহ সকল অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর স্থায়ী নিরস্ত্রীকরণে ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে গাজায় কার্যরত পুলিশ বাহিনী হামাসের অধীনেই পরিচালিত হয়।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ জানান, আইএসএফ গাজায় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসী কাঠামো ভাঙন, অস্ত্র অপসারণ এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি গাজায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনিক কাঠামো—বোর্ড অব পিস (বিওপি)—গঠনেরও অনুমোদন দেওয়া হয়। এই বোর্ড একটি প্রযুক্তিনির্ভর, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটির তত্ত্বাবধান করবে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠন, শাসনব্যবস্থা এবং মানবিক সহায়তার সামগ্রিক তদারকি করবে।
দুই বছরের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পর গাজা পুনর্গঠনের অর্থায়ন বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ ফান্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। আইএসএফ ও বিওপি দু’টিই ফিলিস্তিনি কমিটি ও নতুন পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।
প্রস্তাব পাসের পর ট্রাম্প একে “ঐতিহাসিক” আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, এই সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তিনি বলেন, বোর্ড অব পিসের চূড়ান্ত সদস্যদের নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে এবং তিনি নিজেই এর নেতৃত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
নতুন খসড়া প্রস্তাবে প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি “বিশ্বাসযোগ্য পথরেখা” উল্লেখ করা হয়েছে—যা নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি সদস্য দেশের জোরালো দাবির প্রতিফলন। তবে ইসরায়েল প্রকাশ্যেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করে আসছে, যা ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বাস্তব প্রয়োগে বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ আরব রাষ্ট্রগুলোও প্রস্তাবে আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে চাপ প্রয়োগ করেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র আবারও জোর দিয়ে বলেন, প্রস্তাবটির ভাষা কাগজে সীমাবদ্ধ না রেখে দ্রুত বাস্তবে রূপান্তর জরুরি, যাতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে একটি কার্যকর রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) এবং মিসর, সৌদি আরব ও তুরকিসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ প্রস্তাবটির দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে। পিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রস্তাবের ধারাগুলো “অবিলম্বে ও জরুরি ভিত্তিতে” কার্যকর করতে হবে।
রাশিয়া ও চীন ভেটো ব্যবহার না করলেও প্রস্তাবের অস্পষ্ট কাঠামো, জাতিসংঘের প্রতিফলনের সীমাবদ্ধতা এবং দুই রাষ্ট্র সমাধানের বিষয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি না থাকার কারণে তারা ভোটদানে বিরত থাকে। তাদের মতে, প্রস্তাবের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো এখনও অস্পষ্ট এবং বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট নিশ্চয়তা নেই।
এর আগে প্রস্তাবের প্রথম ধাপ—ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং আটক ব্যক্তিদের বিনিময়—চলতি বছরের ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়। ওয়াল্টজ এটিকে “অত্যন্ত ভঙ্গুর প্রথম ধাপ” হিসেবে উল্লেখ করেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলার পর শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে এক ধরনের সাময়িক বিরতি সৃষ্টি করে। ওই হামলায় ১,২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মা হন। এর পরবর্তী ইসরায়েলি অভিযানগুলোতে এখন পর্যন্ত ৬৯,৪৮৩-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।
-নাজমুল হাসান
প্রকাশ্যে যুবদল নেতাকে হত্যা নিয়ে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
রাজধানীর পল্লবীতে প্রকাশ্যে গুলি করে যুবদল নেতা ও পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার ঘটনা এলাকাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে সেকশন-১২ ব্লক-সি এলাকায় বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি দোকানে বসে থাকা অবস্থায় হেলমেট পরা তিন দুর্বৃত্ত দোকানে ঢুকে খুব কাছ থেকে পরপর সাত রাউন্ড গুলি ছোড়ে। গুলির আঘাতে কিবরিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা দ্রুতগতিতে দোকানের ভেতরে ঢুকে মুহূর্তেই গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় একজন হামলাকারীকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাতটি গুলির খোসা উদ্ধার করে এবং ঘটনাটির পেছনে রাজনৈতিক বিরোধ না অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায়।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই আরেকটি নৃশংসতা প্রকাশ পায়। খুনি দল দোকান থেকে বের হয়ে দ্রুত পালাতে একটি ব্যাটারি চালিত রিকশায় ওঠে। কিন্তু রিকশার চার্জ কম থাকায় চালক আরিফ দ্রুত রিকশা চালাতে না পারায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে কোমরে গুলি করে পালিয়ে যায়। আহত রিকশাচালক আরিফকে পথচারী পিয়ারুল ইসলাম প্রথমে স্থানীয় ইসলামী হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন। আহত আরিফ জানান, দুজন হেলমেটধারী ব্যক্তি তাকে দ্রুত রিকশা চালাতে চাপ দিচ্ছিলেন; কিন্তু রিকশার ব্যাটারি দুর্বল থাকায় তিনি গতি বাড়াতে পারেননি, এতে তারা গুলি করে পালিয়ে যায়।
এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যুবদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে ও পল্লবী এলাকায় বিক্ষোভ করেন এবং দাবি করেন যে এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসংগ্রামের বিদ্বেষ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
পুলিশ জানায়, এই হত্যাকাণ্ড দলীয় কোন্দল, ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি বড় কোনো গোষ্ঠীর ছক সব দিকই তদন্ত করা হচ্ছে। আটক দুর্বৃত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তার তথ্যের ভিত্তিতে বাকি হামলাকারীদের ধরতে অভিযান চলছে। এখনো মামলা হয়নি, তবে নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
-শরিফুল
মতিঝিল-পল্টনের আসনে হেভিওয়েট বনাম নবাগত: আলোচনায় ঢাকা-৮
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশের মানুষের আগ্রহ বাড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন আসনে নানা ধরনের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল আসন ঢাকা-৮ (শাহবাগ, মতিঝিল, রমনা, পল্টন ও শাহজাহানপুর) এবার ভিন্ন কারণে আলোচনায় এসেছে। এই আসনে অভিজ্ঞতার বিপরীতে তারুণ্য এবং প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক জমজমাট লড়াই দেখার অপেক্ষায় আছেন ভোটাররা।
কেন গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-৮
ঢাকা-৮ আসনকে প্রায়শই রাজধানীর 'রাজনৈতিক স্নায়ুকেন্দ্র' বা 'হার্ট' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র সচিবালয়, প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল, রাজনৈতিক সমাবেশের কেন্দ্রবিন্দু পল্টন ময়দান এবং দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় অংশ এই আসনেই পড়েছে। তাই এই আসনের নির্বাচনী ফলাফল সব সময়ই একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
বিএনপির 'হেভিওয়েট' প্রার্থী মির্জা আব্বাস
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে তাদের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদকে (মির্জা আব্বাস) প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি ঢাকার সাবেক মেয়র এবং বিএনপির একজন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। ঢাকার রাজনীতিতে তার দীর্ঘদিনের বিচরণ এবং দলের ভেতরে ও ভোটারদের মধ্যে তার একটি শক্ত ভিত্তি রয়েছে। মির্জা আব্বাসের মতো একজন 'হেভিওয়েট' প্রার্থীর অংশগ্রহণ এই আসনের নির্বাচনকে স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্বের শীর্ষে নিয়ে এসেছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় হাদি
অন্যদিকে, বিএনপির এই হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নেমেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। তিনি এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন। একজন তরুণ মুখ হিসেবে এবং স্বতন্ত্র পরিচয়ে তিনি ভোটারদের, বিশেষত নতুন প্রজন্মের ভোটারদের, নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন।
শরিফ ওসমান হাদি এরই মধ্যে তার নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে আলোচনায় এসেছেন। গত ১৫ নভেম্বর মতিঝিলের এ জি বি কলোনিতে প্রচারণা চালানোর সময় তার গায়ে দুর্বৃত্তরা ময়লা পানি ছুড়ে মারে বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে হাদিকে বলতে শোনা যায়, "ভাই ময়লা পানি যে মারছেন আরও মারতে পারেন, সমস্যা নেই মারেন...।" প্রচারণার শুরুতেই এই ধরনের বাধার শিকার হওয়ায় তিনি ভোটারদের সহানুভূতির পাশাপাশি তার দৃঢ় মনোবলের কারণেও আলোচনায় থাকছেন।
অভিজ্ঞতা বনাম নতুন ধারার রাজনীতি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ঢাকা-৮ আসনের এই লড়াইটি হতে যাচ্ছে 'অভিজ্ঞতা বনাম নতুন মুখ'-এর এক আদর্শ উদাহরণ। একদিকে মির্জা আব্বাস তার দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং দলের শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামোর ওপর নির্ভর করে লড়বেন। অন্যদিকে, শরিফ ওসমান হাদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত দলগুলোর বাইরের ভোটারদের এবং পরিবর্তনের পক্ষে থাকা তরুণদের ভোট টানার চেষ্টা করবেন।
মতিঝিল, পল্টন ও শাহবাগের মতো বৈচিত্র্যময় এলাকার ভোটাররা কাকে বেছে নেবেন, তা নিয়ে এখনই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। এই আসনে যেমন ব্যবসায়ী ও সরকারি চাকরিজীবীদের একটি বড় ভোটব্যাংক রয়েছে, তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার তরুণ শিক্ষার্থী ও প্রগতিশীল ভোটারদেরও একটি বড় প্রভাব রয়েছে। সব মিলিয়ে, ঢাকা-৮ আসনের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইটি এবারের নির্বাচনের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি ইভেন্ট হতে চলেছে।
২৮ নেতার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিল বিএনপি, রিজভীর বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাদের ২৮ জন নেতার ওপর থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর আগে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। নেতারা আবেদন করার পর, দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই ২৮ জনের মধ্যে একটি বড় অংশই গাজীপুর মহানগর এলাকার। তাদের মধ্যে রয়েছেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. তানভীর আহম্মেদ, সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. ছবদের হাসান, সাবেক সদস্য মো. আবুল হাশেম, খায়রুল আলম এবং মো. মনির হোসেন (মাটি মুনির)।
আরও রয়েছেন বাসন মেট্রো থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন মনির, বাসন থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী মুসা, বাসন থানার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম রাতা এবং গাজীপুর মেট্রো থানা বিএনপির সাবেক সদস্য আনোয়ার সরকার।
একই এলাকার ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফিরোজা আক্তার এবং ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিনা আক্তার বীথিও দলে ফিরেছেন। এছাড়া ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা মো. মাহাফুজুর রহমান, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলম এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমের বহিষ্কারাদেশও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গাজীপুর ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলার বেশ কয়েকজন নেতার প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় আছেন বরিশাল দক্ষিণ জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম মৃধা, দিনাজপুর জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মো. রেজওয়ানুল ইসলাম রিজু, কুমিল্লা উত্তর জেলার মেঘনা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. রমিজ উদ্দিন লন্ডনি ও যুগ্ম আহ্বায়ক দিলারা শিরিন এবং সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম জুয়েল।
আরও রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ সভাপতি এস এম আসলাম ও সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক টি এইচ তোফা, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল, টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন সিদ্দিকী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো. কামাল উদ্দিন এবং ছাতক উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. ইজাজুল হক রনি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও দুটি বিশেষ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান, যিনি এর আগে স্বেচ্ছায় দল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, তার সেই পদত্যাগপত্র আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এছাড়াও, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. খুরশিদ আলমের (মতি) ওপর যে স্থগিতাদেশ ছিল, তা প্রত্যাহার করে তাকে বিএনপির স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিএনপি বহিষ্কৃত বেশ কয়েকজন নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছিল।
হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?
২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার করার উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল। এক দশকের বেশি সময় পর, সেই একই আদালতেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।
এই রায়ের পর এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে, এটি কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত দল আওয়ামী লীগের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে? শেখ হাসিনা এখনও দলটির প্রধান। এই রায়ের ফলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কেমন দাঁড়াবে, তা নিয়েও বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার (প্রত্যর্পণ) জন্য ভারতের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। এর আগে আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাজা হওয়ার পরও তাকে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু ভারত সেই অনুরোধে কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়নি।
এই প্রসঙ্গে বিবিসির বাংলা বিভাগের সম্পাদক মীর সাব্বির লিখেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই নির্বাচনে যদি একটি নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে এবং তারা শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে জোরালো দাবি তোলে, অথবা তিনি যেন ভারতে বসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারেন সেজন্য চাপ সৃষ্টি করে, তবে সেই নির্বাচিত সরকারের অনুরোধ উপেক্ষা করা ভারতের জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
এই রায় ঘোষণার আগেই আদালত গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার 'উসকানিমূলক' বক্তব্য প্রচারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল, যার নিন্দা জানিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এর পাশাপাশি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রায় 'অদৃশ্য' দেখা যাচ্ছে। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতাই বর্তমানে নির্বাসনে রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, আবার অনেকেই দেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আজকের এই রায়ের পর যদি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার বা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর আরও নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তবে দলটি আরও বেশি চাপের মুখে পড়বে। যদিও দলটি দাবি করছে যে, তাদের নেতৃত্ব নিয়ে কোনো অভ্যন্তরীণ বিতর্ক নেই, তবে এখন দেখার বিষয় হলো, এই ক্রমবর্ধমান আইনি সীমাবদ্ধতা এবং প্রত্যর্পণের কূটনৈতিক চাপের মুখে আগামী দিনে দলটি ভিন্ন কোনো কৌশল গ্রহণ করতে বাধ্য হয় কি না।
শুধু ব্যক্তি নয়, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার চাই: নাহিদ ইসলাম
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে দলটি শুধু ব্যক্তির নয়, দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরও বিচার দাবি করেছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এই দাবি জানান।
নাহিদ ইসলাম রায় দ্রুত কার্যকরের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে দিল্লি থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টার আসন্ন ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমরা আশা করি, তিনি শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে ফিরবেন।" এনসিপি আহ্বায়ক আরও বলেন, "আগামী এক মাসের মধ্যে তাকে দেশে এনে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।"
তিনি শুধু শেখ হাসিনাই নয়, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং 'ফ্যাসিস্ট' সরকারের সময় অপরাধে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। নাহিদ ইসলাম বলেন, "যারা বর্তমানে কারাগারে আছেন, তাদের মামলার রায়ও দ্রুত দিতে হবে। এটা শুধু রাজনৈতিক দলের দাবি নয়, এটা জুলাই-আগস্টের ভুক্তভোগীদেরও দাবি।"
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের যৌক্তিকতা তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, "আজকের রায়ের মধ্য দিয়ে এটা পরিষ্কার হয়েছে যে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গণহত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন। এর ফলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত। তাই দলেরও বিচার শুরু করতে হবে।"
তিনি জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিচারণ করে বলেন, "১৬ জুলাই আবু সাঈদকে হত্যার পর আমরা শপথ নিয়েছিলাম—বিচার আদায় করেই ছাড়ব। জুলাই বিপ্লবে হাজার হাজার শহীদ ও আহতদের ওপর যে জুলুম হয়েছে, তার বিচার আজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।"
এনসিপির আহ্বায়ক এই রায়কে বাংলাদেশের বিচারিক ইতিহাসে একটি 'মাইলফলক' হিসেবে বর্ণনা করেন। তবে তিনি বলেন, "আমরা সন্তুষ্ট হব সেদিনই, যেদিন এই রায় কার্যকর হবে। সেদিনই শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।"
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ এবং যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল-আমিন, মুশফিক উস সালেহীন ও মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক আহসানসহ অন্যান্য নেতারা।
এর আগে আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
হাসিনাকে ফেরত দিন, প্রতিবেশীর 'প্রথম দায়িত্ব' নিয়ে যা বলল জামায়াত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর জামায়াতে ইসলামী তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে। দলটি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার জন্য ভারতের প্রতি এই আহ্বান জানায়।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এই মন্তব্য করেন।
ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াত বলেছে, "আমরা মনে করি এই বিচারের ব্যাপারে কোন প্রশ্ন তোলার সুযোগ কারো নেই। কারণ বিচার স্বচ্ছ হয়েছে, নিরপেক্ষ হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে।"
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, "পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে যারা আশ্রয় দিয়েছে আমরা মনে করি এই ঘৃণ্য অপরাধীদের পক্ষে তারা অবস্থান নিয়েছে। আমরা দাবি করব তাদের অবশ্যই বাংলাদেশে ফেরত দিতে হবে এবং আইনের কাছে তাদেরকে সোপর্দ করতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ দাবি করলে, সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের দাবিদার প্রতিবেশী হলে, এটি হচ্ছে তার প্রথম দায়িত্ব।"
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ একটি ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল এই রায় দেন।
রায়ে শেখ হাসিনাকে তিনটি পৃথক অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও দুটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার রাজসাক্ষী সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মোট যতটি মামলার মুখোমুখি শেখ হাসিনা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা বহুল আলোচিত মামলার রায় আজ সোমবার ঘোষণা করা হচ্ছে। গোটা জাতি এই রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে, কারণ গণহত্যা–নির্যাতনের অভিযোগে সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এটাই হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম বিচারিক রায়।
এই মামলাটি কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; গত বছরের জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর পুরো দেশজুড়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগের ঢল নেমেছে। বিভিন্ন আদালত ও থানায় এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে ৫৮৬টি মামলা, যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা, হুমকি, লুটপাট এবং দুর্নীতি-সংক্রান্ত অসংখ্য অভিযোগ।
এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় তদন্তাধীন রয়েছে আরও চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা, যেখানে অভিযোগ হিসেবে রয়েছে পরিকল্পিত গণহত্যা, নির্যাতন, গুম এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে অসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ পরিচালনার অভিযোগ।
৫৮৬ মামলার মধ্যে ৩২৪টি হত্যা মামলা, যেখানে শেখ হাসিনাকে নির্দেশদাতা, হুকুমদাতা এবং ঘটনাগুলোর প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক হত্যার অভিযোগ গণঅভ্যুত্থানকালে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের মাত্রা এবং নৃশংসতার গভীরতা তুলে ধরে।দুদকের ছয়টি দুর্নীতি মামলাও বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
তদন্ত সংস্থার কাছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আরও ৫০টির বেশি অভিযোগ পৌঁছেছে, যার মধ্যে রয়েছে পিরোজপুরের সুখরঞ্জন বালি হত্যা, মাইকেল চাকমার নিখোঁজ হওয়া, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের ওপর আক্রমণসহ আরও বহু অভিযোগ। এগুলোর সত্যতা যাচাই–বাছাইয়ের পর প্রয়োজনীয় হলে মামলায় রূপান্তর হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করা হয় ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট, ঠিক গণঅভ্যুত্থানের পরপরই। মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের হওয়া সেই মামলায় শহীদ আবু সাঈদ হত্যার অভিযোগ তদন্ত করছে পুলিশ।
পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের পর দেশে মোট ১,৬১২টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে রয়েছে
- ৫৯৯টি হত্যা মামলা
- ১,০০৩টি সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, হামলা ও লুটপাট মামলা
এই বিস্তৃত মামলার তালিকায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার সংখ্যা ৫৮৬, যা অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিদের তুলনায় বিপুল। বিভিন্ন আসামির মধ্যে এটি সর্বোচ্চও বটে।
আরও উল্লেখযোগ্য হলো, আদালত অবমাননার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিল গত ২ জুলাই।
পাঠকের মতামত:
- যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্ক পুনর্গঠনে কূটনৈতিক দেনদরবার ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা
- হামাসের আপত্তি সত্ত্বেও গাজা পুনর্গঠনে জাতিসংঘে বড় সিদ্ধান্ত
- প্রকাশ্যে যুবদল নেতাকে হত্যা নিয়ে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
- নানা কর্মসূচির ঝড়ে আজ রাজধানীতে বাড়তি ব্যস্ততা
- মঙ্গলবার ঢাকার কোন মার্কেট বন্ধ জেনে নিন
- পপুলার ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের নতুন এনএভি প্রকাশ
- ফেসবুকে মোদীর আবেগঘন পোস্ট ভাইরাল
- বড় ধাক্কা স্বর্ণবাজারে: ভরিতে কমল ৫,৫১৯ টাকা
- আইকিউএয়ার তালিকায় ঢাকার হতাশার খবর
- ডিএসএইচ গার্মেন্টসের আর্থিক ফল প্রকাশ
- বাংলাদেশ–ভারত লড়াইয়ে উত্তাপ সর্বোচ্চে
- "শেখ হাসিনার রায় কার্যকর হবে না"
- সাতক্ষীরা–৩ এ কাজী আলাউদ্দিনের ধানের শীষে ভোটের আহ্বান
- মতিঝিল-পল্টনের আসনে হেভিওয়েট বনাম নবাগত: আলোচনায় ঢাকা-৮
- ধানমন্ডিতে পুলিশের সামনেই জোড়া বিস্ফোরণ!
- ২৮ নেতার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিল বিএনপি, রিজভীর বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা
- নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি নিয়ে 'সুখবর' দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা
- হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?
- পেট ফাঁপা ও গ্যাসে ভুগছেন? মাত্র ১১ দিনেই স্বস্তি মেলার উপায়
- IELTS ছাড়াই অস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ, সাথে সম্পূর্ণ ফ্রি স্কলারশিপ
- তারকাদের বাদ দিয়েই বাংলাদেশের মুখোমুখি ভারত, কোচের কড়া সিদ্ধান্তে তোলপাড়
- হাসিনার রায় নিয়ে 'সতর্ক' প্রতিক্রিয়া ভারতের, জানাল নিজেদের অবস্থান
- অদ্ভুত ধাতব বস্তু, রহস্যময় সংকেত: মারিয়ানার অন্ধকার গহ্বরে চীনের 'ফেন্টোজে' কী দেখল?
- সাময়িক আশ্রয় কি স্থায়ী হচ্ছে? হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের নতুন ভাবনা
- চাউশেস্কু থেকে সাদ্দাম: ইতিহাসে যে শাসকদের পতন হয়েছিল মৃত্যুদণ্ডে
- শুধু ব্যক্তি নয়, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার চাই: নাহিদ ইসলাম
- শাহজালাল বিমানবন্দরে হঠাৎ ধোঁয়া, বহির্গমন টার্মিনালে আতঙ্ক
- আমরা রায়ে খুশি, তবে...হাসিনাদের দণ্ড নিয়ে যা বলল সাঈদের বাবা
- মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি হাসিনা-কামালের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
- হাসিনাকে ফেরত দিন, প্রতিবেশীর 'প্রথম দায়িত্ব' নিয়ে যা বলল জামায়াত
- বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন শেখ হাসিনা
- পাশের দেশ অশান্তি পাকাচ্ছে, রায় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
- আল জাজিরা থেকে এনডিটিভি, বিশ্বজুড়ে যেভাবে প্রচার হলো হাসিনার রায়
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের
- হাসিনার পর আসাদুজ্জামান খান কামালেরও মৃত্যুদণ্ডের আদেশ
- দোষ স্বীকারেও এড়াতে পারলেন না সাজা: সাবেক আইজিপির ৫ বছর কারাদণ্ড
- পতন থেকে মৃত্যুদণ্ড: ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায়
- শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে 'মানবতাবিরোধী অপরাধের' সত্যতা মিলেছে: ট্রাইব্যুনাল
- ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই, এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
- রেড জুলাই নামে ৩২ নম্বরে বুলডোজার, শাওন বললেন 'রাজাকার বাহিনী'
- খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই': রায় ঘোষণাকে ঘিরে টিএসসিতে শিক্ষার্থীদের ভিড়
- ৮ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণ, হাজারো নিহত–আহত: শেখ হাসিনাদের বিরুদ্ধে রায়ে কী ঘটতে যাচ্ছে? সরাসরি দেখুন!
- হাসিনার রায় ঘিরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সতর্ক বার্তা
- ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল-ঘটছে কী?
- জুলকারনাইন: দুই শিং–ওয়ালা বাদশার রহস্য
- এবি ব্যাংকের পারপেচুয়াল বন্ডের রেটিং ঘোষণা
- মাগুরাপ্লেক্সের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন
- সিলেট টেস্টে আয়ারল্যান্ড অলআউট ২৮৬ রানে, দুর্দান্ত সূচনায় বাংলাদেশ
- সাদমানের পর মুমিনুলকে নিয়ে জয়ী রথ বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি
- মামলার রেশ না কাটতেই তিশার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের অভিযোগ
- নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত হামজা জোড়া গোলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ নেপাল ম্যাচের আগে জেনে নিন হেড টু হেড পরিসংখ্যানে কারা চালকের আসনে
- অ্যাকশন, রিভেঞ্জ আর সিক্রেট মিশন: দেখুন সেরা ১০ কোরিয়ান অ্যাকশন সিরিজ!
- আজকের খেলাধুলা সূচি
- জুলাই অভ্যুত্থান মামলা শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির রায়ের তারিখ ঘোষণা
- আজ বিশ্ব ব্যাচেলর দিবস: একাকীত্ব নয়, স্বাধীনতার উৎসব
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের পতন: ৩৮৪ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৫টি বেড়েছে
- আজ রাজধানীতে রাজনৈতিক যেসব কর্মসূচি, কোথায় কী হচ্ছে জেনে নিন
- লকডাউনের দিনেও দোকান-শপিংমল খোলা থাকবে: মালিক সমিতি
- রোনালদোর শেষ খেলার পরিকল্পনা নিয়ে বড় ঘোষণা
- কাদিয়ানী ইস্যু ও পাকিস্তানি সংযোগ: বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিতে বিপজ্জনক অস্থিরতার ইঙ্গিত
- শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘিরে ঢাকা জুড়ে সতর্কতা








