সুরা আল-বাকারার উল্লেখযোগ্য ঘটনা ও বিষয়বস্তু বিস্তারিত জানুন

সুরা আল-বাকারা (سورة البقرة) কুরআনের দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে দীর্ঘ সুরা, যাতে মোট ২৮৬টি আয়াত রয়েছে। মদীনায় অবতীর্ণ এই সুরাটি মুসলিম উম্মাহর জন্য জীবনদর্শন, বিধান, শিক্ষা ও ইতিহাসের এক অনন্য সমন্বয়। এতে আগের উম্মাহদের ঘটনা, তাদের সাফল্য ও ব্যর্থতা, নবীদের মিশন, শিরক ও কপটতার পরিণতি, এবং মুসলিমদের জন্য বিভিন্ন শরীয়ত আইন বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। নিচে এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা ও বিষয়বস্তু বিস্তারিতভাবে ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হলো—
১. আদম (আ.)-এর সৃষ্টির ঘটনা ও ইবলিসের অবাধ্যতা
আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন যে তিনি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বা খলিফা সৃষ্টি করবেন। ফেরেশতারা জিজ্ঞাসা করেন, “আপনি কি এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে সেখানে অশান্তি সৃষ্টি করবে ও রক্তপাত ঘটাবে, অথচ আমরা আপনার প্রশংসা ও পবিত্রতা ঘোষণা করছি?” আল্লাহ বলেন, “আমি যা জানি, তোমরা তা জানো না।” এরপর আল্লাহ আদম (আ.)-কে সমস্ত বস্তুর নাম শিক্ষা দেন এবং ফেরেশতাদের সামনে তা উপস্থাপন করেন। ফেরেশতারা যখন বস্তুগুলোর নাম জানাতে অক্ষম হন, তখন আদম (আ.) তা সঠিকভাবে বলে দেন, যা তার জ্ঞানগত শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে।
আল্লাহ ফেরেশতাদের আদেশ দেন আদম (আ.)-এর সামনে সিজদা করতে। সবাই আদেশ পালন করলেও ইবলিস অহংকার ও হিংসার কারণে অস্বীকার করে। সে যুক্তি দেয়, “আমি আগুন থেকে সৃষ্টি, আর সে মাটি থেকে—তাহলে আমি কেন সিজদা করব?” এই অবাধ্যতার কারণে ইবলিস চিরতরে অভিশপ্ত হয় এবং মানুষের চিরশত্রু হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনার মাধ্যমে মানবজাতির উৎপত্তি, জ্ঞানপ্রাপ্তির শ্রেষ্ঠত্ব এবং শয়তানের চিরশত্রুতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
২. বনী ইসরাঈলের ইতিহাস ও অপরাধসমূহ
সুরাটিতে বনী ইসরাঈলের ইতিহাস বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাদেরকে বহু নিয়ামত দান করেছিলেন নবী পাঠিয়েছেন, কিতাব দিয়েছেন, দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছেন, খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবস্থা করেছেন কিন্তু তারা বারবার অবাধ্যতা করেছে। তারা বহু নবীর কথা অমান্য করেছে, কাউকে হত্যা করেছে, আবার কাউকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়েছে।
তারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে শিরক, কপটতা, মূর্তিপূজা ও অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়। বহুবার সতর্ক করার পরও তারা সঠিক পথে ফিরতে চায়নি। এই ঘটনা মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করে দেয় যাতে তারা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেয় এবং অবাধ্যতার পথে না চলে।
৩. গরু জবাইয়ের ঘটনা (বাকারাহ্র কাহিনি)
এক খুনের রহস্য উদঘাটনের জন্য আল্লাহ বনী ইসরাঈলকে একটি নির্দিষ্ট ধরনের গরু জবাই করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তারা আদেশ পালনে আন্তরিক না হয়ে অহেতুক প্রশ্ন করতে থাকে—গরুর রঙ কী হবে, বয়স কত হবে, এর ব্যবহার কী রকম হবে—ইত্যাদি। তাদের এই বাড়াবাড়ির ফলে কাজটি জটিল হয়ে ওঠে।
শেষমেশ আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী গরু জবাই করা হয় এবং মৃত ব্যক্তিকে গরুর একটি অংশ দিয়ে আঘাত করলে তিনি জীবিত হয়ে খুনির পরিচয় দেন। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা পাওয়া যায় যে আল্লাহর আদেশ পালন করতে হলে দ্বিধা ও অতিরিক্ত প্রশ্ন থেকে বিরত থাকা উচিত এবং আন্তরিকভাবে নির্দেশ মানা উচিত।
৪. কিবলামুখ পরিবর্তনের ঘটনা
মুসলিমরা প্রথমে সালাতে বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ত। পরে আল্লাহর নির্দেশে কাবা শরীফকে কিবলা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এটি ছিল মুসলিম উম্মাহর স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠার এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
এই পরিবর্তন কিছু লোকের কাছে বিস্ময়কর মনে হলেও এটি প্রমাণ করে যে মুসলিম উম্মাহর দিকনির্দেশনা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে এবং তারা কেবল তাঁর আদেশ মেনে চলে। এই ঘটনা মুসলমানদের ঐক্য ও স্বকীয়তা রক্ষার প্রতীক হয়ে আছে।
৫. তালীম ও বিধান সম্পর্কিত আয়াতসমূহ
- সুরা আল-বাকারায় ইসলামি শরীয়তের বহু মৌলিক বিধান নাযিল হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য
- সালাত, রোজা, যাকাত ও হজের বিধান
- ব্যবসা-বাণিজ্যে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা এবং সুদ (রিবা) কঠোরভাবে নিষিদ্ধকরণ
- আল্লাহর পথে ব্যয় করার উৎসাহ
- শপথ, কসম ও মান্নতের বিধান
- বিবাহ, তালাক, ইদ্দত ও পরিবার-সংক্রান্ত আইন
- ন্যায়সংগত যুদ্ধ (কাতাল) এর অনুমতি ও শর্তাবলি
এসব বিধান মুসলমানদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
৬. তালুত ও জালুতের ঘটনা
বনী ইসরাঈলের জন্য আল্লাহ তালুতকে রাজা নিযুক্ত করেন। কিন্তু অনেকেই তার নেতৃত্ব মেনে নিতে রাজি হয়নি, কারণ তারা মনে করত রাজা ধনী ও প্রভাবশালী হওয়া উচিত। আল্লাহ জানান, তিনি তালুতকে জ্ঞান ও শারীরিক শক্তিতে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।
তালুতের নেতৃত্বে বনী ইসরাঈল জালুতের সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়। যুদ্ধে দাউদ (আ.) আল্লাহর সাহায্যে জালুতকে পরাজিত করেন। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে বিজয় সম্পদ বা বাহ্যিক শক্তির ওপর নির্ভর করে না, বরং আল্লাহর ইচ্ছা ও সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।
৭. আয়াতুল কুরসি (আয়াত ২৫৫)
আয়াতুল কুরসি কুরআনের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আয়াত। এতে আল্লাহর মহিমা, সর্বশক্তিমত্তা ও সর্বব্যাপী জ্ঞানের বর্ণনা রয়েছে। তিনি আকাশ ও জমিনের মালিক, তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ সুপারিশ করতে পারে না, আর তিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব কিছু জানেন।
এ আয়াত হিফাজতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মুসলমানদের জন্য দৈনন্দিন জীবনে পড়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
৮. রাসূল (সা.) ও সাহাবাদের আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি
সুরার শেষের দুটি আয়াতে যা “আমানার রাসূলু” নামে পরিচিত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও মুমিনদের ঈমান, আনুগত্য এবং আল্লাহর কাছে দোয়ার বাণী এসেছে। রাসূল (সা.) এগুলোকে “আর্শের নিচের খাজানা” বলে বর্ণনা করেছেন। এতে আল্লাহ মুসলমানদের জন্য দায়িত্ব সহজ করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া শিখিয়ে দেন।
আজ ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি
ইসলামের পাঁচটি রুকন বা পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে নামাজ অন্যতম এবং এটি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ইমান বা বিশ্বাসের পর নামাজই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী কিয়ামতের দিন মানুষের কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাশাপাশি ইসলামে ওয়াজিব, সুন্নত এবং নফল নামাজের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পার্থিব জীবনে যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন সঠিক সময়ে বা ওয়াক্তমতো ফরজ নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অত্যন্ত জরুরি এবং ঈমানি দায়িত্ব।
আজ বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি (৯ পৌষ ১৪৩২ বাংলা এবং ৩ রজব ১৪৪৭ হিজরি)। ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত নামাজের সময়সূচি অনুযায়ী আজকের জোহর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে দুপুর ১২টা ১ মিনিটে। আসর নামাজের সময় শুরু হবে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে। মাগরিব বা সূর্যাস্তের পরবর্তী নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বিকেল ৫টা ২০ মিনিট এবং এশা নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে। এছাড়া আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ফজর নামাজের সময় শুরু হবে ভোর ৫টা ১৭ মিনিটে।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ঢাকার সময়ের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিভাগের সময়ের কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। ঢাকার সময়ের সঙ্গে যে সকল বিভাগের সময় বিয়োগ করতে হবে তার মধ্যে চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে ৫ মিনিট এবং সিলেটের ক্ষেত্রে ৬ মিনিট বিয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ ঢাকার চেয়ে এই এলাকাগুলোতে ৫ থেকে ৬ মিনিট আগেই নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে।
অন্যদিকে ঢাকার সময়ের সঙ্গে অন্যান্য বিভাগের সময় যোগ করে নামাজ আদায় করতে হবে। যার মধ্যে খুলনার জন্য ৩ মিনিট, রাজশাহীর জন্য ৭ মিনিট, রংপুরের জন্য ৮ মিনিট এবং বরিশালের জন্য ১ মিনিট অতিরিক্ত সময় যোগ করতে হবে। অর্থাৎ ঢাকার চেয়ে এই বিভাগগুলোতে ১ থেকে ৮ মিনিট পরে নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে। মুসল্লিদের নিজ নিজ এলাকার সঠিক সময় অনুযায়ী যথাযথভাবে ইবাদত পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫: আজকের ৫ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচি
ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে ইমান বা বিশ্বাসের পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ। পরকালে হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে বলে ধর্মীয় বিধানে উল্লেখ রয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাশাপাশি ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল নামাজের গুরুত্বও অপরিসীম। মুসলিম উম্মাহর জন্য ব্যস্ততার মাঝেও নির্দিষ্ট ওয়াক্ত অনুযায়ী ফরজ নামাজ আদায় করা বাধ্যতামূলক। আজ মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ৮ পৌষ ১৪৩২ বাংলা এবং ২ রজব ১৪৪৭ হিজরির জন্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের একটি নির্ভুল সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
ঢাকার কেন্দ্রীয় সময়ের ওপর ভিত্তি করে আজকের জোহর নামাজের সময় শুরু হবে দুপুর ১২টা ০১ মিনিটে। আসরের ওয়াক্ত শুরু হবে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে এবং মাগরিবের আজান হবে সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিটে। এরপর এশা নামাজের সময় শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে। আগামীকাল বুধবার পবিত্র ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে ভোর ৫টা ১৭ মিনিটে। এই সময়সূচি মূলত ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দেশের বিভিন্ন বিভাগে এই সময়ের কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
ঢাকার সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতে সময় যোগ অথবা বিয়োগ করে নামাজের ওয়াক্ত নির্ধারণ করতে হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের ক্ষেত্রে ঢাকার সময় থেকে ৫ মিনিট এবং সিলেট বিভাগের ক্ষেত্রে ৬ মিনিট বিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দাদের ঢাকার সময়ের সাথে ৭ মিনিট এবং রংপুর বিভাগের ক্ষেত্রে ৮ মিনিট যোগ করে নামাজের সময় নির্ধারণ করতে হবে। খুলনা বিভাগে ৩ মিনিট এবং বরিশাল বিভাগে ১ মিনিট যোগ করে স্থানীয় সময় অনুযায়ী নামাজ আদায় করতে হবে।
নামাজের এই সময়সূচি পরিবর্তনের বিষয়টি মূলত সূর্যের অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল। তাই নির্ভুলভাবে ইবাদত সম্পন্ন করতে নিজ নিজ এলাকার নির্ধারিত সময় সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। বিউবো বা আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যের মতো নামাজের এই সময়সূচিও প্রতিদিন সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফরজ নামাজ আদায় করা কেবল ধর্মীয় দায়িত্বই নয় বরং এটি একজন মুমিনের জীবনের শৃঙ্খলা ও আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।
জেনে নিন আজকের নামাজের সঠিক সময়
রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এর জন্য নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা। আজ ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ৩০ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। নিয়মিত ইবাদত পালনের সুবিধার্থে মুসুল্লিদের জন্য সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরুর সময়গুলো নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী
আজ জোহরের ওয়াক্ত শুরু হবে দুপুর ১২টা ০০ মিনিটে।
আসরের নামাজের সময় শুরু হবে বিকেল ৩টা ৪১ মিনিটে।
আজ সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে মাগরিবের আজান ও নামাজের সময় নির্ধারিত হয়েছে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে।
এশার ওয়াক্ত শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে। এছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে ভোর ৫টা ২১ মিনিটে।
আজ সোমবার ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে বিকেল ৫টা ১৬ মিনিটে এবং আগামীকাল মঙ্গলবার সূর্যোদয় হবে ভোর ৬টা ৩৭ মিনিটে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে সময়ের এই সূক্ষ্ম পার্থক্যগুলো বিবেচনায় নিয়ে নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। মুসুল্লিদের নিজ নিজ এলাকার মসজিদের জামাতের সময়ের সাথে এই সূচি সমন্বয় করে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য এলাকায় অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে ঢাকার সময়ের সাথে কয়েক মিনিট কমবেশি হতে পারে।
মরুভূমিতে রহমতের ঝরনা: যেভাবে সৃষ্টি হলো পবিত্র জমজম কূপ
আজ থেকে হাজার বছরেরও বেশি সময় আগের কথা। আল্লাহর বিশেষ নির্দেশে হজরত ইবরাহিম (আ.) তার স্ত্রী হজরত হাজেরা (আ.) এবং দুগ্ধপোষ্য শিশুসন্তান ইসমাঈল (আ.)-কে এক জনমানবহীন নির্জন মরুপ্রান্তরে রেখে আসার সিদ্ধান্ত নেন। আজকের আধুনিক মক্কা নগরী তখন ছিল ধূ-ধূ বালু আর পাথুরে পাহাড়ের এক রুক্ষ ও জনশূন্য ভূমি। এই কঠিন পরীক্ষায় হজরত হাজেরা (আ.) যখন জানতে পারেন যে এটি স্বয়ং আল্লাহর নির্দেশ, তখন তিনি ইমানি দীপ্তকণ্ঠে বলেছিলেন যে তবে আল্লাহ তাদের কখনোই ধ্বংস হতে দেবেন না।
কয়েক দিনের মাথায় সাথে থাকা সামান্য খাবার ও পানি ফুরিয়ে গেলে শুরু হয় চরম সংকট। তৃষ্ণায় কাতর শিশু ইসমাঈল (আ.)-এর ছটফটানি দেখে মা হাজেরা স্থির থাকতে পারলেন না। তিনি পানির সন্ধানে ব্যাকুল হয়ে সাফা পাহাড় থেকে মারওয়া পাহাড়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। সন্তানের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আর আল্লাহর ওপর অটল বিশ্বাস নিয়ে তিনি সাতবার এই দুই পাহাড়ের মাঝে দৌড়ান। মরুভূমির প্রখর উত্তাপে ক্লান্ত-শ্রান্ত মা যখন শেষবার মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছান, তখনই ঘটে সেই অলৌকিক ঘটনা।
সপ্তমবার মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছানোর পর তিনি একটি গায়েবি শব্দ শুনতে পান। দ্রুত সন্তানের কাছে ফিরে এসে দেখেন এক বিস্ময়কর দৃশ্য। যেখানে তৃষ্ণার্ত শিশু ইসমাঈল (আ.) পা ছুড়ছিলেন, ঠিক তার পায়ের নিচ থেকেই মাটি চিরে পানির ধারা বেরিয়ে আসছে। আনন্দে আত্মহারা হাজেরা (আ.) সেই পানির অপচয় রোধ করতে চারদিকে বালুর বাঁধ দিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন ‘জমজম জমজম’ অর্থাৎ থামো থামো। পরবর্তীতে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন যে উম্মে ইসমাইল যদি পানিটুকু ওভাবে আটকে না দিতেন তবে তা আজ প্রবহমান নদীতে পরিণত হতো।
পৃথিবীর এই শ্রেষ্ঠ কূপের সৃষ্টি ছিল মহান আল্লাহর এক অনন্য কুদরত। যেখানে এক ফোঁটা পানির অস্তিত্ব ছিল না, সেখানে এই চিরস্থায়ী উৎস থেকে আজ পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষ তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। এই অলৌকিক রহমতের পানিকে কেন্দ্র করেই ধীরে ধীরে মক্কায় জনবসতি গড়ে ওঠে যা আজকের পবিত্র মক্কা মুকাররমা। রাসুলুল্লাহ (সা.) জমজম নিয়ে বলেছেন যে এই পানি যে উদ্দেশ্যে পান করা হবে, আল্লাহ সেই উদ্দেশ্যই পূরণ করবেন। মা হাজেরার সেই ঐতিহাসিক ত্যাগকে সম্মান জানাতেই আজ বিশ্বজুড়ে হাজীদের জন্য সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে সায়ি করা ওয়াজিব বা আবশ্যকীয় ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।
আজকের নামাজ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তর সময়সূচি প্রকাশ
ইসলামে নামাজকে পঞ্চম স্তম্ভ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং সময়মতো নামাজ আদায় একজন মুসলমানের জন্য অপরিহার্য ইবাদত। হাদিসে এসেছে, যারা নামাজের সময়ের আগেই মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামাজের অপেক্ষায় থাকেন, ফেরেশতারা তাদের জন্য দোয়া করতে থাকেন। এ কারণেই প্রতিটি মুসলমানের উচিত দৈনন্দিন ব্যস্ততার মধ্যেও নামাজের সময় সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং যথাসময়ে ইবাদত আদায় করা।
আজ রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। এ উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আজকের নামাজের নির্ধারিত সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা অনুসরণ করে মুসল্লিরা সহজেই নামাজ আদায় করতে পারবেন।
আজ ঢাকায় ফজরের নামাজের সময় নির্ধারিত হয়েছে ভোর ৫টা ১৬ মিনিটে। দুপুর ১২টা ০০ মিনিটে জোহরের নামাজ আদায় করা যাবে। বিকেল ৩টা ৪১ মিনিটে শুরু হবে আসরের সময়। সূর্যাস্তের পর সন্ধ্যা ৫টা ১৯ মিনিটে মাগরিবের নামাজ এবং রাত ৬টা ৩৮ মিনিটে ইশার নামাজ আদায়ের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
আবহাওয়া ও জ্যোতির্বিদ্যার হিসাব অনুযায়ী, আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে বিকেল ৫টা ১৬ মিনিটে এবং সূর্যোদয় হয়েছে সকাল ৬টা ৩৬ মিনিটে। নামাজের সময়সূচি অনুসরণ করে সময়মতো ইবাদত আদায় করলে ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আত্মিক প্রশান্তিও অর্জিত হয়।
-রাফসান
জানাজার নামাজে কী পড়বেন, কী করবেন না
কোনো মুসলিম ব্যক্তি ইন্তেকাল করলে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনায় মরদেহ সামনে রেখে যে বিশেষ নামাজ আদায় করা হয়, সেটিই জানাজার নামাজ। ইসলামী পরিভাষায় ‘জানাজা’ শব্দটি মূলত মরদেহকে নির্দেশ করে। এই নামাজ ফরজে কেফায়া হিসেবে গণ্য, অর্থাৎ সমাজের কিছু মানুষ আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব আদায় হয়ে যায়; তবে কেউ আদায় না করলে এলাকার সবাই গুনাহগার হয়।
জানাজার নামাজ পুরুষদের জন্য আবশ্যিক বিধান হিসেবে বিবেচিত। সাধারণভাবে নারীদের জানাজার নামাজে অংশগ্রহণের বিধান নেই বলে ফিকহি গ্রন্থগুলোতে উল্লেখ রয়েছে। এই নামাজ আদায়ের জন্য অন্যান্য নামাজের মতোই পবিত্রতা শর্ত, অর্থাৎ ওজু ছাড়া জানাজার নামাজ সহিহ হয় না।
জানাজার নামাজের কাঠামো অন্যান্য ফরজ বা নফল নামাজের তুলনায় ভিন্ন। এতে রুকু, সিজদা কিংবা বৈঠক নেই। মরদেহ সামনে রেখে সবাই কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে। জানাজার নামাজে মোট চারটি তাকবির দিতে হয় এবং পুরো নামাজ দাঁড়ানো অবস্থাতেই সম্পন্ন করা হয়।
প্রথম তাকবির বলার পর সানা পাঠ করা হয়। দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরুদ শরিফ পাঠ করতে হয়। তৃতীয় তাকবিরের পর মৃত ব্যক্তির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। মৃত ব্যক্তি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হন, তবে সাধারণ জানাজার দোয়া পড়া হয়; আর শিশু হলে শিশুদের জন্য নির্ধারিত দোয়া পাঠ করা হয়। চতুর্থ তাকবিরের পর ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে জানাজার নামাজ শেষ করা হয়। প্রথম তাকবির ছাড়া অন্য কোনো তাকবিরে হাত তোলা হয় না।
জানাজার নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়; বরং মনে মনে করাই যথেষ্ট। নিয়তের মর্মার্থ হলো চার তাকবিরসহ ফরজে কেফায়া জানাজার নামাজ এই ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে আদায় করছি।
সানার উচ্চারণ হলো: “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।”
এরপর দরুদ শরিফ পাঠ করে তৃতীয় তাকবিরে দোয়া করা হয়। যদি পূর্ণ দোয়া মুখস্থ না থাকে, তবে সংক্ষিপ্তভাবে ‘আল্লাহুম্মাগফির লিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত’ বললেও দোয়া আদায় হয়ে যায়।
ইমাম তাকবিরগুলো উচ্চস্বরে বলবেন, আর মুক্তাদিরা নিচু স্বরে তাকবির ও দোয়া পাঠ করবেন। জানাজার কাতার বিজোড় হওয়া উত্তম বলে আলেমরা উল্লেখ করেছেন।
জানাজার নামাজের মাধ্যমে একদিকে মৃত ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত কামনা করা হয়, অন্যদিকে এতে অংশগ্রহণকারীর জন্যও বিপুল সওয়াবের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তাই ইসলামে জানাজার নামাজকে মানবিক দায়িত্ব ও ইমানি কর্তব্য উভয় হিসেবেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত কামনায় জানাজার দোয়া ও এর তাৎপর্য
মৃত্যু জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী যা থেকে কারোরই পলায়নের পথ নেই। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী যে জন্মেছে তাকে একদিন না একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। মায়াময় পৃথিবীর সব রূপ-রঙ পেছনে ফেলে মানুষকে পাড়ি জমাতে হবে পরকালীন জগতে যেখান থেকে আর ফেরার কোনো পথ নেই। সেই জগতে কেউ কারোর বন্ধু বা শত্রু নয় বরং প্রত্যেককে নিজ নিজ আমলের দায়ভার নিজেকেই বহন করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ ٱلْمَوْتِ (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫; সুরা আনকাবুত : ৫৭)।
আর সুরা নাহলে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন তাদের নির্ধারিত সময় এসে যায়, তখন তারা এক মুহূর্তও বিলম্বিত করতে পারে না, আবার ত্বরান্বিতও করতে পারে না। (আয়াত : ৬১)। মৃত্যুর পর পরকালীন জীবনের প্রথম ধাপ হলো কবর। যারা এই ধাপ সহজে অতিক্রম করতে পারবে তাদের জন্য পরবর্তী ধাপগুলো হবে শান্তিময়।
হাদিসে এসেছে কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা উচিত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— তোমরা মৃত ব্যক্তিকে দ্রুত দাফন করো। যদি সে নেককার হয়, তবে তাকে কল্যাণের দিকে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দিলে; আর যদি অন্যরকম হয়, তবে সেই বোঝা তোমাদের কাঁধ থেকে নেমে গেল। (সহিহ বোখারি : ১৩১৫)। জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া যা মৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমার সুপারিশ হিসেবে গণ্য হয়।
জানাজার নামাজে বালেগ পুরুষ বা নারী হলে এই দোয়া পড়তে হয়—
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا، وَمَيِّتِنَا، وَصَغِيرِنَا، وَكَبِيرِنَا، وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا، وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا، اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الْإِيمَانِ، وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الْإِسْلَامِ، اللَّهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ، وَلَا تُضِلَّنَا بَعْدَهُ
(উচ্চারণ— আল্লাহুম্মাগফির লি হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়েবিনা ওয়া ছগিরিনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উংছানা, আল্লাহুম্মা মান আহয়াইতাহু মিন্না ফাআহইয়িহি আলাল ইসলাম ওয়া মান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ইমান। আল্লাহুম্মা লা তাহরিমনা আঝরাহু ওয়া লা তুদিল্লানা বাদাহু।)
(আবু দাউদ ৩২০১, তিরমিজি ১০২৪)।
মৃত যদি ছেলে শিশু হয় তবে পড়তে হয়—
اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًاً , وَّاجْعَلْهُ لَنَا أَجْرًا وَّذُخْرًا , اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا شَفِيْعًا وَّمُشَفَّعًا
(উচ্চারণ— আল্লাহুম্মাজআলহু লানা ফারাতঁও ওয়াজআলহু লানা আজরাঁও ওয়া জুখরাঁও ওয়াজআলহু লানা শা-ফিআও ওয়া মুশাফ্ফাআ)।
আর মেয়ে শিশু হলে এই দোয়ার শেষ অংশে ‘লাহা’ ও ‘শা-ফিআতাঁও’ শব্দ ব্যবহার করে দোয়া পড়তে হয়।
(উচ্চারণ— আল্লাহুম্মাজআলহা লানা ফারাতঁও ওয়াজআলহা লানা আজরাঁও ওয়া জুখরাঁও ওয়াজআলহা লানা শা-ফিআতাঁও ওয়া মুশাফ্ফাআহ)।
জানাজা আদায়ের জন্য মৃত ব্যক্তিকে কিবলার দিকে রেখে ইমাম তার বুক বরাবর দাঁড়াবেন। প্রথমে তাকবির বলে সানা পড়তে হয় যেখানে ‘ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা’-এর পর ‘ওয়া জাল্লা সানাউকা’ যোগ করতে হয়। এরপর দ্বিতীয় তাকবির দিয়ে দরুদে ইব্রাহিম এবং তৃতীয় তাকবিরের পর নির্দিষ্ট দোয়া পড়তে হয়। সর্বশেষ চতুর্থ তাকবির বলে ডানে ও বাঁয়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ সম্পন্ন করতে হয়
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়: ২০ ডিসেম্বর
ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে নামাজ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে বিবেচিত। ইমান বা বিশ্বাসের পরেই নামাজের স্থান যা ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী হাশরের ময়দানে বা কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। তাই একজন মুমিনের জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ নির্ধারিত সময়ে আদায় করা অত্যন্ত আবশ্যক। আজ শনিবার ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি এবং ৫ পৌষ ১৪৩২ বাংলা তারিখের জন্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
আজকের সূচি অনুযায়ী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায়
জোহর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে বেলা ১১টা ৫৭ মিনিটে।
আসরের নামাজ আদায়ের সময় শুরু হবে দুপুর ৩টা ৩৯ মিনিটে।
সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজের সময় হবে সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে
এশার নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে।
এছাড়া আগামীকাল রোববার পবিত্র ফজর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হবে ভোর ৫টা ১৩ মিনিটে।
পরকালের মুক্তি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য শত ব্যস্ততার মাঝেও সময়মতো নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
উল্লেখ্য যে ঢাকার সময়ের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিভাগের সময়ের কিছুটা তারতম্য রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে উল্লিখিত সময় থেকে ৫ মিনিট এবং সিলেটের ক্ষেত্রে ৬ মিনিট সময় বিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে ঢাকার সময়ের সঙ্গে খুলনার জন্য ৩ মিনিট, রাজশাহীর জন্য ৭ মিনিট, রংপুরের জন্য ৮ মিনিট এবং বরিশালের জন্য ১ মিনিট সময় যোগ করে নামাজের ওয়াক্ত নির্ধারণ করতে হবে। সব ধরনের ফরজ নামাজের পাশাপাশি ওয়াজিব ও সুন্নত নামাজ আদায়েও মুসল্লিদের যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জুমার দিনে দরুদ পাঠের বিশেষ ফজিলত
ইসলামে জুমার দিনকে সপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে আল্লাহ তায়ালা বান্দার জন্য বিশেষ রহমত, ক্ষমা ও নৈকট্য লাভের সুযোগ রেখে দিয়েছেন। এই পবিত্র দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ আমল হলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, জুমার দিন ও রাতে পাঠ করা দরুদ সরাসরি রাসুল (সা.)–এর নিকট পেশ করা হয় এবং ফেরেশতারা বিশেষভাবে এই দরুদ গ্রহণের দায়িত্বে থাকেন। ফলে অন্যান্য দিনের তুলনায় জুমার দিনে দরুদ পাঠের গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণ বেশি।
বিশেষ করে জুমার দিন আসরের নামাজের পর সময়টিকে ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয়। বহু আলেম ও ইসলামি বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে, এই সময়টি দুআ কবুলের অন্যতম বিশেষ মুহূর্ত। এই সময়ে নির্দিষ্ট দরুদ শরিফ পাঠের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অসাধারণ ফজিলত। বর্ণনায় এসেছে, কেউ যদি জুমার দিন আসরের পর নির্দিষ্ট দরুদ ৮০ বার পাঠ করে, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার ৮০ বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন এবং তাকে ৮০ বছরের ইবাদতের সওয়াব দান করেন। গুনাহে ভারাক্রান্ত ও আল্লাহর ক্ষমা প্রত্যাশী বান্দার জন্য এটি এক বিশাল সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
জুমার দিনে নির্দিষ্ট দরুদের পাশাপাশি সাধারণ দরুদ বেশি বেশি পাঠ করাও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি রাসুল (সা.)–এর প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর ১০টি রহমত নাজিল করেন, ১০টি গুনাহ মাফ করেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। জুমার দিনে এই দরুদ যত বেশি পাঠ করা হবে, বান্দা তত বেশি আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের সুযোগ পায় এবং অন্তরে প্রশান্তি অনুভব করে।
ইসলামি বর্ণনায় দরুদের গুরুত্ব শুধু দুনিয়াবি কল্যাণেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং আখিরাতের কঠিন মুহূর্তগুলোর সঙ্গেও এর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, কিয়ামতের দিন পুলসিরাত পার হওয়ার সময় দরুদ পাঠকারীর জন্য এই দরুদ নূরের মতো কাজ করবে এবং তাকে পথ দেখাবে। অর্থাৎ, দুনিয়ায় পাঠ করা দরুদ আখিরাতে বান্দার জন্য আলো ও সহায়তায় পরিণত হবে।
জুমার দিনের আমলকে পূর্ণতা দিতে দরুদ পাঠের পাশাপাশি সূরা কাহফ তিলাওয়াত, বেশি বেশি যিকির ও ইস্তেগফার, এবং আন্তরিক দুআ করার কথাও ইসলামি বর্ণনায় উৎসাহিত করা হয়েছে। বিশেষত আসরের পর সময়টিতে আল্লাহর নিকট ক্ষমা, হেদায়েত ও কল্যাণ কামনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। এসব আমলের মাধ্যমে একজন মুমিন শুধু ইবাদতই করেন না, বরং নিজের আত্মাকে শুদ্ধ করার এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করেন।
সব মিলিয়ে জুমার দিন একজন মুসলমানের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিশেষ উপহার। এই দিনে দরুদ পাঠের মাধ্যমে নবীপ্রেম প্রকাশ, গুনাহ মাফের আশা এবং আখিরাতের সফলতার পথ সুগম হয়। তাই এই মহামূল্যবান দিনটি যেন অবহেলায় না কেটে যায়, বরং ইবাদত, দরুদ ও দুআর মাধ্যমে তা অর্থবহ করে তোলাই একজন মুমিনের দায়িত্ব।
পাঠকের মতামত:
- পাকস্থলীর ধ্বংস করছে আপনার এই ৩টি সাধারণ অভ্যাস
- কম ঘুমে শরীরে বাসা বাঁধছে যেসব মারাত্মক রোগ
- মাত্র ৭ দিনে চুল পড়া কমানোর জাদুকরী ঘরোয়া পদ্ধতি
- সরকারি পদ ছেড়ে ভোটের ময়দানে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান
- ভারতের 'বাহুবলী' রকেটের কাঁধে চড়ে মহাকাশ জয়
- রিকশায় চড়ে মনোনয়নপত্র কিনলেন আলোচিত বক্তা আমির হামজা
- হাদি হত্যার রহস্য উন্মোচন: যুবলীগ কর্মী হিমনের বড় স্বীকারোক্তি
- ভারত এবং আওয়ামী লীগ দেশ অস্থিতিশীল করছে: নাসীরুদ্দীন
- আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কড়া বার্তা
- হাদিকে সেলাই করা ব্যাঙের সাথে তুলনা করলেন বিএনপি নেত্রী মনি
- বৈপ্লবিক বিয়ে: বরের সাজে হাদি হত্যার বিচার চাইলেন ফরহাদ
- জোনায়েদ সাকিকে সমর্থন দিয়ে বিএনপির বড় ত্যাগ
- মাহমুদুর রহমান মান্নার ভোটযুদ্ধ শেষ: আদালত দিল বড় রায়
- চুল পড়ার পেছনে লুকানো ৫টি অবহেলিত কারণ
- ৪৬তম বিসিএসের ভাইভার সময়সূচি প্রকাশ, জানুন বিস্তারিত
- মিশ্র লেনদেনে শেষ হলো ডিএসইর আজকের বাজার
- ২৪ ডিএসইতে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ২৪ ডিসেম্বরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- তারেক রহমানের আগামী ৩ দিনের কর্মসূচি জানালেন সালাহউদ্দিন
- নতুন বছরে কত দিন ছুটি? জানাল সরকার
- উত্থান-পতনের দোলায় ডিএসই–৩০ তালিকা
- স্পট মার্কেটে সীমিত দুই ব্যাংকের পারপেচুয়াল বন্ড
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর, একসঙ্গে খুলছে যেসব বন্ড
- পুঁজিবাজারে আলোচনায় টোসরিফার ক্রেডিট রেটিং
- বাংগাস বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর
- যে কোম্পানির পরিচালকের শেয়ার কেনার ঘোষণা
- বেক্সিমকোর মূলধন কাঠামোতে ইতিবাচক অগ্রগতি
- ডিএসইতে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর সর্বশেষ এনএভি প্রকাশ
- ডিএসই আপডেট: সূচক ও লেনদেনের সর্বশেষ চিত্র
- রমজান উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে বড় ছাড় দিল সরকার
- হীরার বৃষ্টি এবং হিলিয়ামের মেঘে ঢাকা রহস্যময় এক নতুন গ্রহ
- শীতে ঠান্ডা নাকি গরম পানিতে গোসল: কোনটি বেশি নিরাপদ
- শীর্ষ গণমাধ্যমে হামলা আসলে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা: নাসির
- মাত্র ২৯ ঘণ্টায় বাজিমাত: জমার অংক জানালেন তাসনিম জারা
- বিমানবন্দরে ভিড় করলেই ব্যবস্থা: নেতাকর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন তারেক
- বাংলাদেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হলেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী
- এক নজরে আজকের মুদ্রার বিনিময় হার
- ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র তালিকা প্রকাশ করল ঢাকা বোর্ড
- বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ থাকবে
- চরম টানাপড়েনে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক, বাড়ছে উত্তেজনা
- ইমরান খানের দলের সাথে শর্তসাপেক্ষ সংলাপে রাজি শাহবাজ শরিফ
- নানামুখী চ্যালেঞ্জে ভোটের মাঠে জটিল সমীকরণ
- আজ কেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
- আজ ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি
- রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দাম এখন আকাশচুম্বী
- তুরস্কে বিমান বিধ্বস্তে লিবিয়ার সেনাপ্রধান নিহত
- তারেক রহমানকে বরণে ঢাকায় নামছে মানুষের ঢল
- ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলায় জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ
- তিন তারকাকে হারিয়ে বিপিএলের শুরুতেই বিপাকে চট্টগ্রাম রয়্যালস
- ঠোঁট ফাটা কেবল শীতের দোষ নয় বরং আসল অপরাধী অন্য কেউ
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন আকাশছোঁয়া দাম
- রেকর্ড দামে স্বর্ণ: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে বাজুসের নতুন মূল্য
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- নারী-সঙ্গীর হাতে পুরুষের যৌনাঙ্গ ছিন্নকরণ: বাংলাদেশে অবহেলিত এক সহিংসতার সংকট
- আজ টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- আজ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
- সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে শরিফ ওসমান হাদি
- হাদির মৃত্যু ঘিরে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ ইতিহাসের দামী সোনা কিনবেন ক্রেতারা
- ছুটির দিনেও উত্তপ্ত ঢাকা: আজ কোথায় কী কর্মসূচি?
- বাংলা দখল করতে এলে দিল্লি কেড়ে নেব: মমতা
- হাদির জানাজা উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার প্রতিবাদে মির্জা ফখরুল
- এবার মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান








