শীতের পোশাক: অ্যালার্জি এড়াতে জ্যাকেট, সোয়েটার পরিষ্কারের সঠিক পদ্ধতি

নভেম্বরের শুরু থেকেই দেশে ধীরে ধীরে জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। ঋতুর বদলের সঙ্গে সঙ্গে শীতের পোশাক বদলও শুরু হতে চলেছে। যদিও এই ছয় ঋতুর দেশে তিন মাসের বেশি শীত স্থায়ী হয় না, কিন্তু এই স্বল্প সময়ে ভারী ও উষ্ণ কাপড় পরিধানের প্রয়োজন হয়। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সেই হিমেল অনুভূতি টের পেতে শুরু করেছেন সবাই। তবে ভারি কাপড় পরার আগে সেগুলোর যত্ন নেওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, গত শীতের পোশাক আলমারি থেকে বের করে পরিষ্কার না করে পরা ঠিক নয়। কারণ, কাপড়ে জমে থাকা ধুলো থেকে অ্যালার্জি হতে পারে এবং সফট টিস্যু ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই পোশাক নামিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও মনে রাখতে হবে, শীতের এই তিন মাসের মধ্যেও অন্তত একবার শীতের কাপড় পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিতে হবে, এতে পোশাক নরম, উষ্ণ আর তাজা গন্ধে ভরা থাকবে।
কোন পোশাক কীভাবে পরিষ্করণ করবেন
১. সংরক্ষণের পর পরিষ্করণ: যদি গত শীত শেষে পোশাক পরিষ্কার করে তুলে রাখা হয়ে থাকে, তবে এ বছর নামানোর পর না ধুলেও চলবে। তবে পরার আগে একটু পরিষ্কার করে নিলে ভালো। দীর্ঘদিন আলমারিতে থাকার কারণে পোশাকে অনেক সময় স্যাঁতসেঁতে ভাব পরিলক্ষিত হয়। সেই কারণে পোশাক বের করে একটু রোদে বা খোলা বাতাসে রেখে দিলে অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও স্যাঁতসেঁতে গন্ধ চলে যায়।
২. উল বা সোয়েটারজাত কাপড়: উলের বা সোয়েটারজাত কাপড়ের ক্ষেত্রে লেবেলে নির্দেশিত মতো পরিষ্কার করা উচিত। অনেক শীতের পোশাক ড্রাই ক্লিন করলে ভালো থাকে। যদি পোশাকে কোথাও ছোপ বা ছত্রাক ফাঙ্গাস দেখা যায়, তবে ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে আলতো করে পরিষ্কার করতে পারেন।
৩. জ্যাকেট: ওয়েস্টার্ন পোশাকে জ্যাকেট বেশ মানিয়ে যায় এবং হালকা-ভারি নানা ধরনের জ্যাকেট এখন বাজারে পাওয়া যায়। যদি কলারে বা সাইডে থাকা লেবেলে ড্রাই ক্লিন অনলি লেখা থাকে, তবে অবশ্যই ড্রাই ক্লিন করান। আবার যদি ওয়াশেবল হয়, তবে মেশিনে জেন্টল মোডে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করে ধুয়ে নিন। জ্যাকেটে ক্ষতি হতে পারে, তাই রোদে বেশি সময় ঝুলিয়ে রাখবেন না। হালকা শুকিয়ে গেলে ঘরে তুলে ঝুলিয়ে রাখুন।
৪. মাফলার, স্কার্ফ ও শাল: মাফলার, স্কার্ফ এবং শাল ফ্যাশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এসব যত্ন নিয়ে না ধুলে খুব কম সময়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। শাল যারা ব্যবহার করেন, তারা সাধারণত সৌখিন হন এবং অনেক চড়া দামের শাল নিজের আলমারিতে রাখেন, সেটির ক্ষেত্রে বাড়তি যত্ন প্রয়োজন।
ধোয়ার নিয়ম: এসব পোশাক সিল্ক বা পশমের হলে ঠান্ডা পানিতে হাতে ধুতে হবে। তুলার হলে মেশিনে জেন্টল মোডে ধোয়া যায়।
ইস্ত্রি: শুকিয়ে নেওয়ার পর হালকা ইস্ত্রি করুন। প্রয়োজন হলে উপরে হালকা ভেজা সুতি কাপড় দিয়েও ইস্ত্রি করতে পারেন।
৫. উলের সোয়েটার ও কার্ডিগান: উলের সোয়েটার এবং কার্ডিগান সবসময়ই ফ্যাশনের জন্য উপযোগী। বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার বেশি দেখা যায় এবং নারীদের কার্ডিগান খুব পছন্দের।
ধোয়ার নিয়ম: এ ধরনের পোশাক কুসুম গরম পানিতে হালকা ডিটারজেন্ট মিশিয়ে হাতে ধুতে হবে। অবশ্যই জোরে ঘষবেন না। আলতো করে চেপে ফেনা বের করে দিন।
শুকানোর নিয়ম: শুকানোর সময় তারে লম্বা করে না ঝুলিয়ে আড়াআড়িভাবে মেলে দিন অথবা ফ্লোরে তোয়ালে দিয়ে তার ওপর সমানভাবে রেখে শুকান। ধোয়ার পর সামান্য কন্ডিশনার মেশালে সোয়েটার নরম থাকবে।
কফি বিনের গোপন রহস্য: আপনার প্রিয় কাপেও কি লুকিয়ে আছে তেলাপোকার ক্ষুদ্র অংশ?
সকালে বা সন্ধ্যায় আপনার প্রিয় কফির কাপে চুমুক দেওয়ার আগে হয়তো কখনো ভাবেননি, এর মধ্যে তেলাপোকা বা অন্যান্য পোকামাকড়ের ক্ষুদ্র অংশ মিশে থাকতে পারে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও, এই বিষয়টি বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত এবং বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর আলোচনায় এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রক্রিয়াজাত কফি বিনের মধ্যে তেলাপোকার অংশ সরাসরি না থাকলেও, তাদের উপস্থিতিজনিত ক্ষুদ্র উপাদানগুলো মেশা অস্বাভাবিক নয়।
তেলাপোকার অংশ কীভাবে মেশে?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এফডিএ প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে 'গ্রহণযোগ্য ত্রুটিপূর্ণ মাত্রা' নির্ধারণ করে থাকে। এই নীতি অনুযায়ী, শিল্প কারখানায় প্রক্রিয়াজাত কফি বিনের একটি নির্দিষ্ট নমুনার মধ্যে তেলাপোকা বা অন্যান্য পোকামাকড়ের খুব ক্ষুদ্র কিছু অংশ বা ফ্র্যাগমেন্টস মেশা থাকতে পারে।
প্রক্রিয়াকরণের ত্রুটি: কফি বিন সংগ্রহ ও বড় আকারের প্রক্রিয়াকরণের সময় তেলাপোকা বা অন্যান্য পোকামাকড় অসাবধানতাবশত বিনের সঙ্গে মিশে যেতে পারে।
সক্রিয় উপাদান: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কফিতে থাকা এসব ক্ষুদ্র উপাদানগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য সাধারণত ক্ষতিকর নয়। এগুলো উচ্চ তাপে রোস্টিং এবং গ্রাইন্ডিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়।
তবে, যারা তেলাপোকা বা পোকামাকড়ের প্রতি সংবেদনশীল বা অ্যালার্জিতে ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে এটি কফি পানের পর অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
পুষ্টিবিদরা জোর দিয়ে বলেন, উচ্চ মানের বা ভালো প্রক্রিয়াজাত কফিতে এই ধরনের ক্ষুদ্র উপাদান থাকার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তাদের মতে, কফি পানের সময় এই বিষয়ে উদ্বেগ না রেখে বরং কফির প্রস্তুতকারক বা ব্র্যান্ডের মানের বিষয়ে সচেতন থাকা বেশি জরুরি। কারণ, আপনার কাপে যে কফি এসেছে, তা শত শত ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত হওয়ার পরই এসেছে।
কিশমিশের জাদু: কেন এটি প্রাকৃতিক ওষুধ? এক মাসেই শরীরে আসে ৬ পরিবর্তন
কিশমিশ, অর্থাৎ শুকনো আঙুর, একটি মিষ্টি এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল। আয়রন, ফাইবার, পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরা এই ফলটি শুধু শক্তির জোগানই দেয় না, বরং শরীরের নানা জটিল সমস্যা দূর করতেও দারুণ কার্যকর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিশমিশ শুকনো খাওয়ার চেয়ে ভিজিয়ে খেলে এর পুষ্টিগুণ আরও অনেক বেশি বাড়ে। ভেজানোর ফলে কিশমিশের ভেতরের ভিটামিন ও মিনারেল শরীরে দ্রুত শোষিত হয়, হজম সহজ হয় এবং শরীরের নানা অঙ্গের কার্যকারিতা উন্নত হয়।
আয়ুর্বেদ থেকে আধুনিক পুষ্টিবিজ্ঞান পর্যন্ত সবখানেই ভেজানো কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাসকে 'প্রাকৃতিক ওষুধ' হিসেবে বর্ণনা করা হয়। পুষ্টিবিদদের দাবি, কেউ যদি টানা এক মাস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৮ থেকে ১০টি ভেজানো কিশমিশ খান, তাহলে শরীরে দেখা দেবে একের পর এক ইতিবাচক পরিবর্তন।
ভেজানো কিশমিশ কেন বেশি উপকারী
শুকনো কিশমিশে প্রাকৃতিক চিনি ও ফাইবারের ঘনত্ব বেশি থাকে, যা কখনও কখনও হজমে সমস্যা করতে পারে। কিন্তু পানি ভিজিয়ে রাখলে কিশমিশ নরম হয়, এর প্রাকৃতিক চিনি কমে আসে এবং ভেতরের পুষ্টি উপাদান সহজে শরীরে মিশে যায়। এর ফলে হজমের চাপ কমে ও পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
এক মাস ভেজানো কিশমিশ খাওয়ার ৬টি সুফল
১. হজম ক্ষমতার উন্নতি: কিশমিশে থাকা ফাইবার শরীরের প্রাকৃতিক রেচক বা ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে। সকালে ভেজানো কিশমিশ খেলে হজম দ্রুত হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য কমে এবং পেটের সমস্যা দূর হয়। নিয়মিত এই অভ্যাস অন্ত্রের গতি স্বাভাবিক রাখে, পেট হালকা লাগে ও হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়।
২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: কিশমিশ হলো পটাশিয়ামের দারুণ উৎস। এই পটাশিয়াম রক্তনালীকে শিথিল করে এবং শরীরে সোডিয়ামের প্রভাব কমিয়ে দেয়। নিয়মিত ভেজানো কিশমিশ খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে, হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে এবং সারাদিন শরীর স্বস্তিতে থাকে।
৩. রক্তস্বল্পতা দূরীকরণ: আয়রন ও বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন সমৃদ্ধ কিশমিশ রক্তে লোহিত কণিকা বাড়ায় এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত করে। এক মাস নিয়মিত খেলে রক্তস্বল্পতা দূর হয়, দুর্বলতা কমে এবং শরীরে প্রাণশক্তি ফিরে আসে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ভেজানো কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। ফলে সর্দি-কাশির মতো সাধারণ সংক্রমণ কম হয় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
৫. ত্বক উজ্জ্বল ও লিভার পরিষ্কার রাখে: কিশমিশ রক্ত পরিশোধনে অত্যন্ত সহায়ক। রক্ত পরিশোধন প্রক্রিয়া উন্নত হওয়ায় তা ত্বক ও লিভারের জন্য উপকারী। নিয়মিত সেবনে ত্বক হয় উজ্জ্বল ও দাগহীন, লিভার ডিটক্স হয়, বলিরেখা কমে এবং মুখে আসে প্রাকৃতিক জেল্লা।
৬. প্রাকৃতিক শক্তি ও অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ: সকালে ভেজানো কিশমিশ খেলে সারাদিনের জন্য প্রাকৃতিক শক্তি বা এনার্জি পাওয়া যায়। এতে থাকা পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শরীরের অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর ফলে ক্লান্তি কমে, পেশির টান দূর হয় এবং মানসিক সতেজতা বাড়ে।
ভেজানোর সঠিক পদ্ধতি
রাতে ঘুমানোর আগে ৮ থেকে ১০টি কিশমিশ একটি পরিষ্কার গ্লাসে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কিশমিশগুলো ভালোভাবে চিবিয়ে খান এবং সেই ভেজানো পানিটিও পান করুন।
সতর্কতা: ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন-সংবেদনশীল ব্যক্তিরা নিয়মিত এই অভ্যাস শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
গভীর ঘুমের রহস্য: গ্লিমফ্যাটিক সিস্টেম কীভাবে মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে?
আজকের ব্যস্ত জীবনে অনেকেই রাতের ঘুম কমিয়ে কাজ অথবা ফোন স্ক্রোলিংয়ে সময় কাটাচ্ছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, এই অভ্যাস ধীরে ধীরে আমাদের শরীরে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ঘুম শুধু শারীরিক বিশ্রামের জন্য নয়, এটি মস্তিষ্ক ও শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
নিউরো এবং কার্ডিওলজিস্ট বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেছেন যে, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রমে কীভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
মস্তিষ্কের বর্জ্য পরিষ্কারে ঘুম অপরিহার্য
ডা. রিতু ঝা ব্যাখ্যা করেছেন, মস্তিষ্কের জন্য ঘুম কেন এত জরুরি। তিনি জানান, গভীর ঘুমের সময় মস্তিষ্কের গ্লিমফ্যাটিক সিস্টেম সক্রিয় হয়ে ওঠে, যা মস্তিষ্কের 'বর্জ্য পরিষ্কারের' কাজটি করে। এই প্রক্রিয়ায় ক্ষতিকর প্রোটিন, যেমন বিটা-অ্যামাইলয়েড, অপসারিত হয়। এই প্রোটিন জমা হওয়া আলঝেইমার’স রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
যদি পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, মস্তিষ্ক এই পরিশোধন প্রক্রিয়া ঠিকমতো করতে পারে না। ফলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয় এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞানীয় ক্ষমতা কমতে শুরু করে। ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মানুষের ক্ষেত্রেও এই ঝুঁকি দেখা যায়।
হৃদযন্ত্র ও হরমোনের ওপর প্রভাব
ডা. প্রভীন কুলকার্নি জানান, ভালো ঘুম শরীরের কার্ডিওমেটাবলিক ভারসাম্য বজায় রাখে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়:
ঘুমের ঘাটতি হলে ক্ষুধা উদ্দীপক হরমোন বেড়ে যায় এবং তৃপ্তি বা সাচার হরমোন কমে যায়, যার ফলস্বরূপ ওজন বাড়ে ও রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।
একই সঙ্গে স্ট্রেস হরমোন করটিসল বেশি নিঃসৃত হয়, যা ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ, রক্তে গ্লুকোজের বৃদ্ধি এবং ধমনিতে প্লাক জমার ঝুঁকি বাড়ায়। ডা. কুলকার্নি সতর্ক করে বলেন, দীর্ঘমেয়াদে এই পরিস্থিতিই হার্ট অ্যাটাক বা অনিয়মিত হার্টবিটের কারণ হতে পারে।
ডা. কুলকার্নি বলেন, নিয়মিত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম শরীর ও হৃদযন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত ও চাপমুক্ত রাখে।
ঘুমের ঘাটতির বিপদ
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার কম ঘুম হলে যে গুরুতর বিপদগুলো দেখা দিতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে:
ক্লান্তি ও মনোযোগের সমস্যা
স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া
হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া
হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ বৃদ্ধি
তাই সারাদিনের ব্যস্ততা যাই হোক না কেন, রাতে ন্যূনতম ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শুধু ক্লান্তি নয়, বরং মস্তিষ্ক ও হার্টের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
রোদে ভিটামিন ডি পাওয়ার সঠিক কৌশল জেনে নিন
শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণে সূর্যের আলোকে প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু কীভাবে, কখন এবং কতক্ষণ রোদে থাকা উচিত তা নিয়ে এখনো অনেকের মধ্যেই বিভ্রান্তি রয়েছে। বিশেষ করে শীতকালে যখন সূর্যের আলো তুলনামূলক কম পাওয়া যায়, তখন ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি বাড়ে। এই প্রসঙ্গে দিল্লিভিত্তিক চিকিৎসক ডা. জামাল খান সম্প্রতি একটি ভিডিওতে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে সঠিকভাবে সূর্যের আলো ব্যবহার করে শরীরে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি উৎপন্ন করা যায়।
ডা. জামাল বলেন, সূর্যের আলো সরাসরি ভিটামিন ডি তৈরি করে না; বরং সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (UVB rays) ত্বকে পড়ে একটি জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ভিটামিন ডি উৎপাদন করে। অর্থাৎ, সূর্যের আলো হলো মূলত এই রাসায়নিক প্রক্রিয়ার উদ্দীপক। কিন্তু সব সময় সূর্যের আলো একরকম কাজ করে না। দিনের যে কোনো সময় রোদে বের হলেই ভিটামিন ডি পাওয়া যায় এই ধারণাটি ভুল।
তার মতে, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি সবচেয়ে কার্যকর থাকে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে, কারণ তখন সূর্যের কোণ এমন অবস্থানে থাকে, যা ত্বকের উপর সরাসরি UVB রশ্মি ফেলে। সকাল ৯টার আগে বা বিকেল ৪টার পর রোদে থাকলে এই রশ্মির তীব্রতা কম থাকে, ফলে শরীর তেমনভাবে ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে না। এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট রোদে থাকে, তবে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ সম্ভব।
অনেকে মনে করেন, রোদে থাকতে হলে শরীর পুরোপুরি নগ্ন হতে হবে। কিন্তু ডা. জামাল খান এই ধারণাকে ভুল বলে অভিহিত করেন। তার মতে, হালকা সুতির পোশাক পরলেও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকে পৌঁছাতে পারে, কারণ পাতলা কাপড় UV রশ্মির বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। তবে মোটা কাপড়, জিন্স, বা সিন্থেটিক পোশাক পরলে রশ্মি ত্বকে পৌঁছায় না, তাই রোদে থাকার সময় হালকা সুতির পোশাকই উপযুক্ত।
ভিটামিন ডি উৎপাদনের জন্য শরীরের কোন অংশে রোদ পড়া সবচেয়ে কার্যকর এই প্রশ্নের উত্তরে ডা. জামাল বলেন, শরীরের যে অংশে রক্তসঞ্চালন বেশি এবং চর্বির স্তর তুলনামূলক পাতলা, সেখানে রোদ বেশি কার্যকরভাবে কাজ করে। বিশেষ করে কোমর ও পিঠের অংশে সূর্যের আলো পড়লে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়। তিনি বলেন, “রোদে থাকার সময় সূর্যের দিকে পিঠ করে কোমরের অংশে আলো পড়া সবচেয়ে উপকারী।”
অনেকে আবার মনে করেন, বেশি সময় রোদে থাকলে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বাড়বে। কিন্তু চিকিৎসক জামাল খান বলছেন, এটি প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, “প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট রোদে থাকা যথেষ্ট। এর বেশি সময় রোদে থাকলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, তবে ১৫ মিনিটই শরীরের প্রাকৃতিক চাহিদা পূরণে যথেষ্ট।”
ভিটামিন ডি কেবল সূর্যের আলো থেকেই নয়, কিছু খাবার থেকেও পাওয়া যায়। যেমন— ডিমের কুসুম, চর্বিযুক্ত মাছ, দুধ, মাখন ইত্যাদি। তবে ডা. জামালের মতে, এই খাদ্য উৎসগুলো থেকে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া যায় না। শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি-এর ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই সূর্যের আলো থেকেই আসে।
রোদে থাকার সময় অনেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন। এ বিষয়ে ডা. জামাল বলেন, “সানস্ক্রিন ত্বকে UVB রশ্মি পৌঁছাতে বাধা দেয়, ফলে ভিটামিন ডি উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই রোদে ভিটামিন ডি আহরণের সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার না করাই ভালো। তবে রোদে থাকার পর ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত।”
ভিটামিন ডি শুধু হাড় বা রক্তের জন্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত সূর্যালোক না পেলে মানুষের শরীরে সেরোটোনিন হরমোনের ঘাটতি হয়, যা বিষণ্ণতা, ঘুমের সমস্যা এবং ক্লান্তি বাড়ায়। সূর্যের আলো সেরোটোনিন উৎপাদন বাড়ায়, ফলে মানসিক প্রশান্তি বজায় থাকে। ডা. জামাল বলেন, “ভিটামিন ডি শুধু দেহ নয়, মনেরও ওষুধ। যারা নিয়মিত সূর্যালোক পান, তারা সাধারণত মানসিকভাবে আরও প্রফুল্ল ও স্থিতিশীল থাকেন।”
তার মতে, সুস্থ থাকার সহজ উপায় হলো প্রতিদিন ১৫ মিনিটের সূর্যালোক। এটি কেবল হাড় মজবুত রাখে না, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মনকে সতেজ রাখে। তবে তিনি সতর্ক করেন, দুপুরের রোদে দীর্ঘক্ষণ থাকা উচিত নয় বিশেষত গরমের সময়, কারণ এতে ত্বক পোড়ার ঝুঁকি থাকে।
হরর সিনেমা হতে পারে থেরাপি, জানেন কী এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি?
মানুষ স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেলেও, আশ্চর্যের বিষয় হলো অনেকেই স্বেচ্ছায় ভয় উপভোগ করতে ভালোবাসেন। জম্বি, দানব বা অদৃশ্য আতঙ্কের মতো ভৌতিক সিনেমার দৃশ্য দেখে অনেকেই এক ধরনের মানসিক শান্তি অনুভব করেন। সিনেমা দেখার সময় ভয়ে কাঁপলেও শেষে মন হালকা হয় এবং বাস্তব জীবনের দুশ্চিন্তা সাময়িকভাবে দূরে সরে যায়।
শুনতে অবাক লাগলেও বিজ্ঞান বলছে—হরর সিনেমা দেখা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। বিশেষ করে যারা উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তায় ভোগেন, তাদের জন্য ভয়ও এক ধরনের 'থেরাপি' হিসেবে কাজ করতে পারে।
মস্তিষ্ককে প্রস্তুত করে ভয়ঙ্কর গল্প
মনোবিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভীতিকর সিনেমা আমাদের উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী কোল্টান স্ক্রিভনার বলেন, "ভয়ঙ্কর গল্প আমাদের মস্তিষ্ককে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত করে।"
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, ভীতিকর গল্প বা সিনেমা নিরাপদ পরিবেশে ভয় অনুভবের সুযোগ দেয়। এতে আবেগ নিয়ন্ত্রণ শেখা যায় এবং বাস্তব জীবনের চাপ সামলানো সহজ হয়।
স্ক্রিভনারের গবেষণায় ভৌতিক সিনেমার দর্শকদের তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
অ্যাড্রেনালিন জাঙ্কিজ: যারা ভয়ের মাধ্যমে রোমাঞ্চ খোঁজেন।
হোয়াইট নাকলারস: যারা ভয়ের মধ্য দিয়ে আনন্দ পান এবং নিজেদের ভয়কে জয় করার অনুভূতি উপভোগ করেন।
ডার্ক কোপার্স: যারা ভয়কে এক ধরনের নিরাপত্তার অনুভূতি হিসেবে দেখেন।
ডেনমার্কের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ভৌতিক সিনেমা দেখেন, তারা সংকটের সময় মানসিকভাবে বেশি স্থিতিশীল থাকেন। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারির মতো চরম পরিস্থিতিতেও তারা তুলনামূলকভাবে বেশি ধৈর্য ধরতে পেরেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মার্ক মিলার বলেন, ভয়ঙ্কর গল্প আমাদের মস্তিষ্ককে ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে তা কল্পনা করতে সাহায্য করে, যা অনিশ্চয়তা সামলাতে সুবিধা দেয়।
শিশুদের উদ্বেগ কমানোর জন্য নেদারল্যান্ডসে 'মাইন্ডলাইট' নামের একটি ভিডিও গেম তৈরি হয়েছে, যেখানে ভয়কে থেরাপির অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, এই গেম খেলার পর শিশুদের উদ্বেগ অনেক কমে গেছে।
হরর সিনেমার মানসিক উপকারিতা
১. নিরাপদ ভয় অনুভব: হরর সিনেমার ভয় বাস্তব নয়। শরীর ভয় পাওয়ার প্রতিক্রিয়া দেখায়—হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, অ্যাড্রেনালিন নিঃসৃত হয়—কিন্তু মস্তিষ্ক জানে আপনি নিরাপদ আছেন। এটি এক ধরনের মানসিক অনুশীলনের মতো কাজ করে এবং বাস্তব জীবনের চাপ সামলাতে সাহায্য করে।
২. চিন্তা থেকে বিরতি: হরর সিনেমা এত বেশি মনোযোগ কাড়ে যে দর্শক নিজের দুশ্চিন্তা ভুলে গিয়ে সব মনোযোগ সিনেমায় দিতে বাধ্য হন। এটি মানসিকভাবে একটি মূল্যবান বিরতি, যা উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
৩. ভয় সহ্য করার অভ্যাস তৈরি: যারা বাস্তব জীবনে কোনো ধরনের ভয়কে এড়িয়ে চলেন, তারা হরর সিনেমার মাধ্যমে নিরাপদ পরিবেশে ভয় অনুভব করতে পারেন। এতে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ভয় সহ্য করতে শেখে এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হয়।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যদি কেউ অতিরিক্ত ভয় বা দুঃস্বপ্নে ভোগেন, তবে এমন সিনেমা দেখা থেকে বিরত থাকা উচিত।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
ত্বক মসৃণ ও রোগমুক্ত রাখতে চান? প্রতিদিনের রুটিনে অ্যালোভেরা জেল রাখার ৫টি উপকারিতা
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী শুধু একটি সাধারণ উদ্ভিদ নয়, এটি প্রকৃতির অন্যতম এক নিয়ামক হিসেবে পরিচিত। শত শত বছর ধরে এটি ওষুধ, সৌন্দর্যচর্চা এবং ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে তা শরীরের ভেতর ও বাইরে—দু'দিক থেকেই উপকার এনে দেয় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
অ্যালোভেরার ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
১. ত্বকের যত্নে অপরিহার্য: অ্যালোভেরা জেল ত্বকের আর্দ্রতা বা ময়েশ্চার বজায় রাখতে অসাধারণ কাজ করে। বিশেষত গ্রীষ্মকালে রোদে পোড়া বা সামান্য পুড়ে যাওয়া ত্বক দ্রুত সারিয়ে তোলে। এতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদানগুলো ব্রণ, দাগ এবং র্যাশ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বককে উজ্জ্বল, মসৃণ ও সতেজ দেখায়।
২. চুলের জন্য প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: অ্যালোভেরা চুলে একটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এটি মাথার ত্বককে পরিষ্কার রাখে, খুশকি কমায় এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে। নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে চুল পড়া রোধে কার্যকর ফল পাওয়া যায়।
৩. হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক: অ্যালোভেরা জুস শরীরের হজমশক্তি বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এতে বিশেষ ধরনের এনজাইম থাকে, যা খাদ্য ভাঙতে সহায়তা করে এবং গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য বা অ্যাসিডিটির মতো সাধারণ সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: অ্যালোভেরাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই থাকে। এই উপাদানগুলো সম্মিলিতভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এটি শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ জমা হওয়া কমায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোর পুনর্গঠনে সহায়তা করে।
৫. ক্ষত সারাতে ও প্রদাহ কমাতে কার্যকর: অ্যালোভেরা জেল প্রাকৃতিক ফার্স্ট-এইড উপাদান হিসেবে পরিচিত। কোনো ক্ষতস্থানে এটি লাগালে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া দ্রুত কমে আসে এবং নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে, যার ফলে ক্ষত দ্রুত সারে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন, যদিও অ্যালোভেরা উপকারী, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে জুস খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। তাই এর পূর্ণাঙ্গ সুফল পেতে পরিমিতভাবে এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করা জরুরি।
কাঁচকলার জাদু: ৫টি পরিবর্তনে শরীরকে সুস্থ রাখতে সেদ্ধ কাঁচকলা খান
ইদানীং পুষ্টিবিদদের মধ্যে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ বা প্রতিরোধী শ্বেতসার নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি কাঁচকলায় প্রচুর পরিমাণে এবং এর সঙ্গে উপকারী ফাইবার **'পেকটিন'**ও পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞ রায়ান ফার্নান্দো জানাচ্ছেন, নিয়মিত অল্প পরিমাণে সেদ্ধ কাঁচকলা ভাতের সঙ্গে খেলে মানবদেহে এর নানা ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সহজপাচ্য এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর সেদ্ধ কাঁচকলা নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে সহায়তা মেলে।
নিয়মিত কাঁচকলা খাওয়ার ৫টি উপকারিতা
১. পেটের স্বাস্থ্য সুরক্ষা: কাঁচকলায় থাকা ফাইবার অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার খাদ্য হিসেবে কাজ করে। এর ফলে অন্ত্রের পরিবেশ পরিষ্কার থাকে, হজম প্রক্রিয়া ভালো হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস ও পেট ফাঁপার মতো সাধারণ সমস্যাগুলো কমে আসে। পেটের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য এটি বিশেষ উপকারী।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা: কাঁচকলা উচ্চ ফাইবারযুক্ত হওয়ায় সেদ্ধ করে খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে। এতে অতিরিক্ত খাবার বা ঘন ঘন ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমে আসে, যা শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৩. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ: কাঁচকলায় যে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ পাওয়া যায়, তা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে দেয় না। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম। এই কারণে এটি ডায়াবেটিক বা উচ্চ রক্তে শর্করা রয়েছে এমন রোগীদের জন্যও উপকারী খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
৪. হৃদ্স্বাস্থ্য সুরক্ষা: কাঁচকলায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদ্পেশিকে সক্রিয় রাখে। এছাড়াও, এটি শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাসেও বিশেষ সাহায্য করে।
৫. ভিটামিন ও খনিজের জোগান: কাঁচকলাতে ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং অভ্যন্তরীণ প্রদাহ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সেদ্ধ কাঁচকলা সহজে হজম হয় ঠিকই, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। বেশি খেলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে গ্যাস বা পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সূত্র : আনন্দবাজার
ঘরে বসেই বানান ডিজিটাল NID: সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া জানুন ধাপে ধাপে
বাংলাদেশে এখন জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল বা অনলাইনভিত্তিক। আগে যেখানে এটি শুধু হাতে লেখা বা ল্যামিনেটেড কার্ড আকারে বিতরণ করা হতো, এখন সেটি বদলে গেছে স্মার্ট NID বা ডিজিটাল NID কার্ডে। এই স্মার্ট কার্ড কেবল একটি পরিচয়পত্র নয়- এটি আপনার জাতীয়তা, নাগরিক অধিকার ও ডিজিটাল পরিচয়ের সরকারি স্বীকৃতি বহন করে।
ডিজিটাল NID বা স্মার্ট কার্ড তৈরি বা সংগ্রহের প্রক্রিয়াটি এখন অত্যন্ত সহজ। আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করতে পারেন, তথ্য যাচাই করতে পারেন এবং প্রয়োজনে ডিজিটাল কপি ডাউনলোড করে তা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কাজে ব্যবহার করতে পারেন। নিচে ধাপে ধাপে পুরো প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করা হলো।
ধাপ ১: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
প্রথমেই যেতে হবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে-? https://services.nidw.gov.bd
এটি নির্বাচন কমিশন (EC Bangladesh)-এর নিয়ন্ত্রিত একটি সরকারি ওয়েবসাইট, যেখানে NID সংক্রান্ত সব সেবা পাওয়া যায়। এখানে আপনি নতুন নিবন্ধন, পুরোনো তথ্য সংশোধন, NID পুনর্মুদ্রণ বা ডিজিটাল কপি ডাউনলোড সব কিছু করতে পারবেন।
ধাপ ২: অনলাইন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন
ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট (Account) খুলতে হবে। এর জন্য উপরের মেনু থেকে “Create Account” বা “Register” বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর কয়েকটি তথ্য দিতে হবে-
- আপনার NID নম্বর
- জন্মতারিখ
- বর্তমান ঠিকানার জেলা ও উপজেলা
- মোবাইল নম্বর (যেটি আপনার নামে নিবন্ধিত)
এরপর আপনার মোবাইলে একটি OTP (One Time Password) আসবে। সেটি দিয়ে আপনি সহজেই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। এটি একবার করলেই আপনি ভবিষ্যতে বারবার লগইন করতে পারবেন।
ধাপ ৩: তথ্য যাচাই ও প্রোফাইল তৈরি
রেজিস্ট্রেশন শেষ হলে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত সব তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে। নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা, পিতা-মাতার নাম, ছবি ইত্যাদি যাচাই করুন।
যদি কোনো ভুল পান, তাহলে “Information Update” বা “তথ্য হালনাগাদ” অপশন থেকে সংশোধনের আবেদন করতে পারেন। এই সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করলেও পরে আপনাকে স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে।
ধাপ ৪: ডিজিটাল NID কপি ডাউনলোড করুন
যদি আপনি ইতিমধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন, কিন্তু হাতে এখনো স্মার্ট কার্ড না পান তাহলে আপনি আপনার Digital NID (অনলাইন কপি) ডাউনলোড করতে পারবেন।
লগইন করার পর “Download Form” বা “Print Smart ID” অপশনে যান। এখানে আপনার তথ্য যাচাই করে সিস্টেম একটি PDF কপি তৈরি করবে, যেটি আপনি ডাউনলোড করে প্রিন্ট নিতে পারবেন।
এই কপিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলা, মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন, পাসপোর্ট আবেদন বা যেকোনো সরকারি কাজে অস্থায়ী NID হিসেবে বৈধ।
ধাপ ৫: নতুন নিবন্ধনের প্রক্রিয়া (যাদের এখনো NID নেই)
যদি আপনার বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হয় এবং আপনি এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র না নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে প্রথমে নতুনভাবে নিবন্ধন করতে হবে।
এর জন্য যেতে হবে আপনার উপজেলা নির্বাচন অফিসে। সঙ্গে নিতে হবে-
- জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পিতা-মাতার NID কার্ড
- বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ (যেমন বিদ্যুৎ বিল বা ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেট)
সেখানে আপনার ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। এরপর আপনার তথ্য NID ডাটাবেজে যুক্ত হবে। কয়েক সপ্তাহ পর আপনি অনলাইনে গিয়ে নিজের ডিজিটাল NID ডাউনলোড করতে পারবেন।
ধাপ ৬: স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করুন
আপনি অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পর নির্বাচন কমিশন আপনার তথ্য যাচাই করে স্মার্ট NID কার্ড প্রস্তুত করবে। কার্ড প্রস্তুত হলে আপনাকে এসএমএস দিয়ে জানানো হবে।
এসএমএস পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে গিয়ে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। কার্ডে থাকবে আপনার নাম, ছবি, জন্মতারিখ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ডিজিটাল চিপ যা আধুনিক পরিচয় ব্যবস্থার অংশ।
ধাপ ৭: তথ্য সংশোধন ও নিরাপত্তা
ডিজিটাল NID ব্যবস্থায় তথ্য সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কখনোই অজানা ওয়েবসাইট বা ব্রোকারের মাধ্যমে তথ্য জমা দেবেন না।
যদি কোনো ভুল পান, তবে সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে সংশোধনের আবেদন করুন। প্রয়োজনে স্থানীয় নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
অতিরিক্ত টিপস ও পরামর্শ
- ওয়েবসাইটের ঠিকানা services.nidw.gov.bd ছাড়া অন্য কোনো লিংক ব্যবহার করবেন না।
- আপনার NID নম্বর ও জন্মতারিখ কাউকে জানাবেন না।
- OTP বা লগইন পাসওয়ার্ড কখনো শেয়ার করবেন না।
- পাসওয়ার্ডে অন্তত ৮টি অক্ষর ব্যবহার করুন- অক্ষর, সংখ্যা ও চিহ্ন মিলিয়ে।
- তথ্য হালনাগাদের আবেদন করলে ট্র্যাকিং নম্বরটি সংরক্ষণ করুন।
বাংলাদেশের ডিজিটাল NID ব্যবস্থা নাগরিক সেবা সহজ ও আধুনিক করেছে। আগে যেখানে পরিচয় যাচাই বা সরকারি সেবা পেতে দিন কাটাতে হতো, এখন ঘরে বসেই আপনি পরিচয় যাচাই, ডাউনলোড বা তথ্য সংশোধন করতে পারেন।
ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী ছেলে না থাকলে সম্পত্তি বণ্টনের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা
ইসলামে উত্তরাধিকার বা সম্পত্তি বণ্টনের নিয়মকে বলা হয় ফারায়েজ। এটি এমন এক বিধান যা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। কুরআনের সূরা আন-নিসা (৪:১১–১২, ১৭৬) তে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর একজন মুসলমানের সম্পত্তি কীভাবে ও কার মধ্যে ভাগ হবে। ইসলামী উত্তরাধিকার ব্যবস্থার মূল দর্শন হলো কারও প্রতি অবিচার না করা, পারিবারিক সম্পর্ক রক্ষা করা এবং সম্পদকে সমাজে ন্যায্যভাবে সঞ্চালিত করা।
ইসলামিক আইন অনুযায়ী, সম্পত্তি বণ্টনের আগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মৃত ব্যক্তির জানাজা ও দাফনের খরচ পরিশোধ করা হয়, এরপর তার জীবদ্দশার কোনো ঋণ থাকলে তা শোধ করতে হয়, এবং সর্বশেষে যদি মৃত ব্যক্তি কোনো ওসিয়তনামা (Will) করে যান তবে সেটি কার্যকর করতে হয় তবে ওসিয়তের পরিমাণ কখনোই সম্পদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি হতে পারে না। এই তিন ধাপ শেষ হওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে শরিয়াহ অনুযায়ী ভাগ হয়।
যদি কোনো পুরুষের মৃত্যু হয় এবং তার ছেলে না থাকে, তবে তার সম্পত্তি বণ্টিত হবে তার কন্যা, স্ত্রী, পিতা-মাতা ও ভাইবোনের মধ্যে। কন্যা বা মেয়ের ক্ষেত্রে কুরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে এক মেয়ে থাকলে সে পাবে মোট সম্পত্তির অর্ধেক (½), আর যদি দুই বা ততোধিক মেয়ে থাকে, তারা একত্রে পাবে দুই-তৃতীয়াংশ (⅔)। অর্থাৎ ছেলে না থাকলে মেয়েরাই প্রধান উত্তরাধিকারী। স্ত্রী জীবিত থাকলে, সন্তান থাকলে তিনি পাবেন মোট সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ (⅛), আর সন্তান না থাকলে এক-চতুর্থাংশ (¼)।
পিতা-মাতা উভয়েই জীবিত থাকলে তারা প্রত্যেকে পাবেন এক-ষষ্ঠাংশ (⅙) করে। তবে যদি মৃত ব্যক্তির কোনো সন্তান না থাকে, তাহলে মা পাবেন এক-তৃতীয়াংশ (⅓) এবং পিতা পাবেন বাকি অংশ। ইসলামী শরিয়াহে পিতা-মাতার অধিকারকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে; তারা জীবিত থাকলে কখনোই বঞ্চিত হন না।
এ ছাড়া ভাই-বোন তখনই উত্তরাধিকারী হন, যখন মৃত ব্যক্তির কোনো সন্তান ও পিতা জীবিত না থাকে। সেই ক্ষেত্রে একজন বোন এক-অর্ধেক (½) পায়, আর দুই বা ততোধিক বোন মিলে দুই-তৃতীয়াংশ (⅔) পায়। যদি ভাই-বোন একসাথে থাকে, তাহলে ভাগ হবে ২:১ অনুপাতে অর্থাৎ ভাইয়ের ভাগ মেয়ের দ্বিগুণ। এটি অনেকেই সমালোচনা করলেও ইসলামিক নীতিতে এটি ন্যায্যতার প্রতিফলন, কারণ পুরুষের ওপর পারিবারিক অর্থনৈতিক দায়িত্ব বেশি।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় একজন পুরুষ মারা গেছেন, রেখে গেছেন স্ত্রী, দুই মেয়ে ও পিতা-মাতা। এখানে স্ত্রী পাবেন এক-অষ্টমাংশ (১/৮), দুই মেয়ে মিলে পাবেন দুই-তৃতীয়াংশ (২/৩), এবং পিতা-মাতা প্রত্যেকে পাবেন এক-ষষ্ঠাংশ (১/৬)। এই হিসাব অনুযায়ী কেউই বঞ্চিত নয়, বরং প্রত্যেকেই তাদের প্রাপ্য অংশ পাচ্ছেন। যদি হিসাবের যোগফল সম্পদের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে ইসলামী “আওল” পদ্ধতিতে অনুপাতে কমিয়ে ভাগ করা হয়, যেন সবাই তাদের ন্যায্য অংশ পান।
ইসলামে সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ইচ্ছার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কেউ মৃত্যুর আগে কোনো উত্তরাধিকারীকে বাদ দিতে পারেন না, কিংবা কাউকে অতিরিক্ত সুবিধা দিতে পারেন না। মৃত্যুর আগে সম্পত্তি ইচ্ছাকৃতভাবে একপক্ষের নামে লিখে দেওয়া বা কাউকে বঞ্চিত করা শরিয়াহ অনুযায়ী হারাম। তবে কেউ চাইলে মৃত্যুর আগে নিজের সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত অংশ কোনো গরিব আত্মীয়, এতিম বা দাতব্য কাজে ওসিয়ত করতে পারেন, যা ইসলাম অনুমোদন করে।
ফারায়েজ ব্যবস্থার বিশেষত্ব হলো এর ন্যায়বিচারমূলক ভারসাম্য। ইসলাম বলে, সম্পত্তি এক প্রজন্মের ব্যক্তিগত মালিকানা নয়, এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব ও আমানত। তাই ছেলে না থাকলে মেয়ের অধিকার পুরোপুরি সুরক্ষিত, স্ত্রী বঞ্চিত নন, পিতা-মাতা উপেক্ষিত নন। এভাবে ইসলাম পরিবারে অর্থনৈতিক স্থিতি, ন্যায্যতা এবং প্রজন্মের ভারসাম্য নিশ্চিত করে।
ইসলামী উত্তরাধিকার আইন সমাজে নারীর অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রথম দৃষ্টান্ত। সপ্তম শতাব্দীতেই ইসলাম নারীদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার স্বীকৃতি দিয়েছে যখন পৃথিবীর অন্য কোনো সভ্যতায় নারীর সম্পত্তির অধিকার ছিল না। ছেলে না থাকলেও মেয়ের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তার পিতার সম্পত্তিতে, যা কুরআনে আল্লাহ নিজেই নির্ধারণ করেছেন।
পাঠকের মতামত:
- শীতের পোশাক: অ্যালার্জি এড়াতে জ্যাকেট, সোয়েটার পরিষ্কারের সঠিক পদ্ধতি
- তারেক রহমানের নেতৃত্বেই শহীদদের স্বপ্নের দেশ গড়া সম্ভব: মীর স্নিগ্ধের
- নব্য ফ্যাসিস্ট হতে চাইলে বসে থাকব না: বিএনপিকে জুলাই সনদ নিয়ে হুঁশিয়ারি এনসিপি নেতার
- জেনে নিন বৃহস্পতিবারের সদাকাহর গোপন রহমত
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় পতন, সূচক হারাল প্রায় ৪০ পয়েন্ট!
- ৬০ দিনে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি: জীবনযাত্রার চাপ কমাতে ৫টি বিশেষ খাবার
- এক কেজি আলুর দামে এখন পাওয়া যায় না এক আঁটি শাকও!
- আসন পুনর্বিন্যাস বাতিল: বাগেরহাটে ৪টি আসনই বহাল রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
- ভারতের আধিপত্য রুখতে হবে: নির্বাচনী লক্ষ্য নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর কড়া বার্তা
- কফি বিনের গোপন রহস্য: আপনার প্রিয় কাপেও কি লুকিয়ে আছে তেলাপোকার ক্ষুদ্র অংশ?
- ডিএমপি'তে রদবদল: পাঁচ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে বদলি
- তিন দিনের অভিযানে মিলল লাশ: পশুর নদে নিখোঁজ সাবেক নারী পাইলটের মরদেহ উদ্ধার
- কিশমিশের জাদু: কেন এটি প্রাকৃতিক ওষুধ? এক মাসেই শরীরে আসে ৬ পরিবর্তন
- সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জিহাদ ঘোষণা করেছে ইসি
- নৌকার সমর্থকরা হতাশ হবেন না,ধানের শীষ আপনাদের পাশে আছে: মির্জা ফখরুল
- ফুটবল উন্মাদনা: ৬ মিনিটে সব টিকিট বিক্রি, তোলপাড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
- গোলের রাজা কে, মেসি না রোনালদো? সংখ্যার হিসাবে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে!
- ১০ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১০ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১০ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- সুদানে গণহত্যার প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা: মরদেহ পুড়িয়ে ফেলছে আরএসএফ
- ধানমন্ডি থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি খুন: পুরান ঢাকায় দিনেদুপুরে গুলি করে হত্যা
- জিয়াউর রহমানের অর্ধাঙ্গিনী জননেত্রী শেখ হাসিনা: ভুল মন্তব্যে বিতর্কে কুমিল্লার বিএনপি নেতা
- ৭ শব্দের নায়ক আসিফ মাহমুদ: রাশেদ খান সমর্থন জানালেন তরুণ এই নেতার সিদ্ধান্তে
- মোহাম্মদপুরে আতঙ্ক: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে ককটেল হামলা
- নির্বাচন পিছিয়ে গেলে দেশের সর্বনাশ: মির্জা ফখরুল
- ভ্যাট রিফান্ড এখন এক ক্লিকেই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে, জানুন বিস্তারিত
- জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে আসছে যেসব বড় পরিবর্তন
- ঢাবির এক আবাসিক হলে ধূমপান নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত
- আগেভাগে জানুন আগামী বছরের ছুটির দিন
- বিদ্যুৎ খাতে বড় সিদ্ধান্ত, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
- মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সুখবর
- সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করল ওরিয়ন ইনফিউশন
- মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- বিদ্যুৎ গ্রিড কোম্পানির প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- জেনে নিন আজ কোথায় কী কর্মসূচি
- টিভিতে আজকের খেলা: কোন ম্যাচ কখন ও কোথায় দেখবেন
- মেঘনা পেট্রোলিয়ামের নাম বদলে হচ্ছে যে নাম
- সোমবার ঢাকায় কোন কোন মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে জানুন
- বার্ষিক পরীক্ষার মুখে স্থবির শিক্ষা: শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে ক্লাস বন্ধ, শঙ্কায় পড়েছেন অভিভাবকরা
- ১০ নভেম্বর ২০২৫: আজকের নামাজের পূর্ণ সময়সূচি প্রকাশ!
- দেশে আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ল
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর সর্বশেষ আপডেট , ১০ নভেম্বর ২০২৫
- তফসিলের আগে গণভোটের বাস্তবতা নেই: ভিপি নুর
- ১২৩ ঘণ্টা অনশন শেষে আম জনতার দলের তারেক রহমান হাসপাতালে
- ঢাকা-১০ আসন হটস্পট: ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘিরে ভোটের হিসাব নিকাশ
- মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!
- রংপুরে চার হত্যার দায় স্বীকার পুলিশের, জবানবন্দিতে এল শীর্ষ কর্তাদের নাম
- পদ্মার চরাঞ্চলে অপারেশন ফার্স্ট লাইট: উদ্ধার বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র
- গভীর ঘুমের রহস্য: গ্লিমফ্যাটিক সিস্টেম কীভাবে মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে?
- গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ
- ৫ ও ৬ নভেম্বর বন্ধ থাকবে ২ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ড
- গ্রিন সিগন্যাল কী পেল মান্না, নুর, পার্থসহ ১২ জোটনেতা
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প
- দেউলিয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত
- ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে
- রেকর্ড ডেট ঘিরে দুই দিন লেনদেন বন্ধ থাকবে
- রিয়াল বনাম লিভারপুল: চ্যাম্পিয়নস লিগে হাইভোল্টেজ লড়াই আজ যখন
- বোনের কোরআন পাঠে হার মানল দম্ভ; হজরত ওমর (রা.) এর ইসলাম গ্রহণের বিস্তারিত ঘটনা
- বুক ধড়ফড়ের নেপথ্যে পানিশূন্যতা: হৃদস্পন্দন দ্রুত হলে যা করবেন, জানালেন বিশেষজ্ঞরা
- কালো মুরগি কেন এত দামি: জেনেটিক বিস্ময়, ঐতিহ্য ও বিলাসিতার এক অনন্য সংমিশ্রণ
- ০৪ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ








