উপদেষ্টার সমালোচনায় ফেসবুক পোস্ট, বরখাস্ত হলেন সহকারী শিক্ষক

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৮ ১৫:১৪:৪৪
উপদেষ্টার সমালোচনায় ফেসবুক পোস্ট, বরখাস্ত হলেন সহকারী শিক্ষক

সত্য নিউজ:কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিবুল হক বসুনিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

অভিযোগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র রায় পোদ্দারের বক্তব্যের প্রতিবাদে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এরপরই এই পদক্ষেপ নেয় কর্তৃপক্ষ।

মনিবুল হক বসুনিয়া বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের আবুল কাশেম সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজ ও সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বিষয়টিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

এ বিষয়ে এখনো মন্ত্রণালয় কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।


আবারও দুই প্রতিবন্ধীকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৭ ১৭:৫৭:৩১
আবারও দুই প্রতিবন্ধীকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের ঠেলে পাঠানো দুই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। ছবি : কালবেলা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে আবার দুই প্রতিবন্ধীকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার (১৬ আগস্ট) গভীর রাতে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পঁয়ষট্টিবাড়ী সীমান্ত দিয়ে তাদের পুশ-ইন করা হয়।

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ঠেলে পাঠানো এই দুই ব্যক্তি হলেন সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার আবু সিদ্দিক (৫০) এবং নড়াইলের কালিয়া উপজেলার রানু মোল্লা (৬০)। দুজনই শারীরিকভাবে পঙ্গু। সিদ্দিকের ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে নেই এবং রানু মোল্লার ডান হাত কবজি থেকে কাটা।

জানা যায়, কোচবিহার জেলার বিএসবাড়ী ক্যাম্পের ৯৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা প্রধান সীমান্ত পিলার ৮৪৫-এর কাছে তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। পরে ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) পঁয়ষট্টিবাড়ী ক্যাম্পের টহল দল তাদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

আটক দুই ব্যক্তি জানিয়েছেন, প্রায় এক বছর আগে তারা অবৈধভাবে ভারতের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন এবং সেখানে গুজরাটে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিজিবি তাদের কাছে ওই দুই ব্যক্তিকে হস্তান্তর করেছে। তাদের আত্মীয়স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে এবং নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, একই বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা গত ১৩ আগস্ট দুই শিশুসহ ৯ বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠিয়েছিল।


মহসিনের যন্ত্রণার গল্প: গুলিবিদ্ধ, স্বীকৃতি নেই, সহায়তাও মেলেনি

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৫ ১৮:৩৫:২৫
মহসিনের যন্ত্রণার গল্প: গুলিবিদ্ধ, স্বীকৃতি নেই, সহায়তাও মেলেনি
ছবি : কালের কণ্ঠ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ঘোড়াবান্ধা বালুখোলা গ্রামের তরুণ মহসিন সরকার মিঠুন ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ২০২২ সালে এসএসসি পাস করার পর বাবার ব্রেইন স্ট্রোকের কারণে লেখাপড়া ছাড়তে হয় তাকে। জীবিকার খোঁজে চলে যান গাজীপুরে, সেখানে শ্রমিকের কাজ নেন। কিন্তু হৃদয়ে লুকানো ছিল একটি স্বপ্ন—স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ে দেশের পাশে দাঁড়ানো।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট, গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন মহসিন। আনসার একাডেমির সামনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। তার শরীরে ঢুকে পড়ে দুই শতাধিক গুলি। দীর্ঘ চিকিৎসার পর অনেক গুলি অপসারণ করা সম্ভব হলেও এখনো শরীরে রয়েছে ৩০টির বেশি গুলি। প্রতিদিন সেগুলোর যন্ত্রণাই তাকে মনে করিয়ে দেয় সেই দিনটির কথা।

চিকিৎসা শেষে এখন তিনি গাইবান্ধায় ফিরে এসেছেন। অভাব আর অবহেলার জীবনেই চলছে তার প্রতিদিনের লড়াই। ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে এখনো স্বীকৃতি পাননি তিনি। নেই কোনো সরকারি সহায়তাও। তার মা চোখে জল ধরে বলেন, “মহসিনকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল, সবকিছু ভেঙে গেছে।”

স্থানীয়রা বলছেন, দেশের জন্য এমন ত্যাগ যিনি করেছেন, তার ন্যায্য স্বীকৃতি পাওয়া উচিত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা সদস্যসচিব বায়োজিদ বোস্তামী জীম জানিয়েছেন, বাদ পড়াদের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রক্রিয়া নেওয়া হবে।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেছেন, “আবেদন পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিমান নিয়ে মহসিন বলেন, “সবার কাছে বলেছি, কোনো কাজ হয়নি। শুধু চাই স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করার সুযোগ, অন্য কিছু না।”

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে দাঁড়ানো এই তরুণের প্রশ্ন—দ্বিতীয় স্বাধীনতার লড়াইয়ে তার এই ত্যাগ কি অবশেষে কোনো সম্মান পাবে? রাষ্ট্র কি মনে রাখবে তার নাম?

/আশিক


রাতে ‘নৌকা’ ঝুলিয়ে রাখায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ কর্মী

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৬ ০৯:২৪:১৪
রাতে ‘নৌকা’ ঝুলিয়ে রাখায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ কর্মী
বাঁশ ও কাপড় দিয়ে বানানো নৌকাটি রাস্তার মোড়ে টাঙানো হয়। ছবি : সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে রাতের আঁধারে রাস্তার পাশে বাঁশ ও কাপড় দিয়ে তৈরি ‘নৌকা’ ঝুলিয়ে রাখার ঘটনায় এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের কুড়ার পাড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তি ময়নাল হক (৩৫), যিনি স্থানীয় মৃত আকাব আলীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে আরেকজন জড়িত আছেন—মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে বারেক (৫৫)। দুজনেই স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কুড়ার পাড় বাজার এলাকায় বাঁশ ও কাপড় দিয়ে তৈরি একটি নৌকা রাস্তার পাশে ঝুলিয়ে দেন ময়নাল ও বারেক। সেই নৌকার সঙ্গে একটি ডিজিটাল ব্যানারে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানসহ নিজেদের ছবি লাগানো ছিল।

শুক্রবার সকালে ঘটনাটি স্থানীয়দের নজরে এলে তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যানারে থাকা ছবি দেখে ময়নাল হককে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে এবং নৌকাটি থানায় নিয়ে যায়।

ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ জানান, ময়নালের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করা হয়েছে এবং শুক্রবার দুপুরে তাকে কুড়িগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত অপর ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

/আশিক


জাগপার রংপুর সমাবেশে তীব্র সমালোচনায় রাশেদ প্রধান, দিল্লির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ২০:২২:১৫
জাগপার রংপুর সমাবেশে তীব্র সমালোচনায় রাশেদ প্রধান, দিল্লির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন

ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে বুধবার (১৬ জুলাই) রংপুরের পায়রা চত্বরে বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)-এর সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান। শহীদ আবু সাইদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে মাসব্যাপী ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণ ও আগামীর বাংলাদেশ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ প্রধান বলেন, দিল্লির আশ্বাসে আওয়ামী লীগ এখনো আস্ফালন করছে। পুলিশ হত্যার বিচারের কথা বললেও তারাই আবার পুলিশের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, “এই দেশ এখন আর খুনি হাসিনার নয়, এই দেশ এখন আবু সাইদদের, ওয়াসিমদের, মুগ্ধদের।”

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের প্রসঙ্গে রাশেদ বলেন, “আওয়ামী লীগ বারবার প্রমাণ করেছে তারা জনগণের নয়, বরং প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করে তারা একটি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে।” তিনি বলেন, “গোপালকে দিল্লি পাঠিয়ে গোপালগঞ্জকে আবুসাইদগঞ্জ বানাতে হবে।”

সমাবেশে ভারতীয় হস্তক্ষেপ ও আধিপত্যবাদেরও কড়া সমালোচনা করেন জাগপা নেতারা। রাশেদ প্রধান বলেন, “আমরা শপথ নিই, খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আগ পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না।”

জাগপা আগামী ৬ আগস্ট ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তারা এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতীয় আধিপত্যের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে অভিহিত করে তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাবে।

পথসভায় আরও বক্তব্য দেন জাগপা প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, শামীম আকতার পাইলট, ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক শ্যামল চন্দ্র সরকার, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, শ্রমিক জাগপার সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারীর নেতৃবৃন্দ।

/আশিক


শহীদ আবু সাঈদকে স্মরণে ছাত্রদলের শ্রদ্ধা ও প্রতিজ্ঞা

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১৭:২০:৪১
শহীদ আবু সাঈদকে স্মরণে ছাত্রদলের শ্রদ্ধা ও প্রতিজ্ঞা

ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (১৬ জুলাই) রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়ায় তাঁর কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। দুপুরে কবরস্থানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ দলের নেতারা।

এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শ্যামল মালুম, সহ-সভাপতি এম এম মুসা, যুগ্ম সম্পাদক সালেহ মো. আদনান, ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সভাপতি রবিন খানসহ বিএনপি ও ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বক্তব্যে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, শহীদ আবু সাঈদ ও ওয়াসিমরা দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আজ এক বছর পরেও কেন এই শহীদদের হত্যাকারীরা বিচারের মুখ দেখেনি, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। তিনি অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদদের হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনোই বাংলাদেশে আবার ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে দেবো না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখতে পাচ্ছি, সেই পুরনো হিংস্রতা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।”

এদিন বিকেলে রংপুর শহরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে ছাত্রদলের বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ অন্যান্য নেতারা। তারা সরকারকে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে আগামী দিনে ছাত্রজনতা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

/আশিক


মনোনয়ন না পেয়ে হামলা? মাঠেই মুখোমুখি বিএনপির দুই পক্ষ

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১২ ১০:৪৫:৫৩
মনোনয়ন না পেয়ে হামলা? মাঠেই মুখোমুখি বিএনপির দুই পক্ষ

দিনাজপুর-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব রূপ নিয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। মনোনয়নপ্রত্যাশী কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর পক্ষ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে এ উত্তেজনা শুক্রবার রাতে গড়িয়ে পড়ে সহিংসতায়। সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন, ভাঙচুর করা হয়েছে অর্ধ-শতাধিক মোটরসাইকেল।

জানা যায়, কর্নেল মোস্তাফিজুরের অনুসারীরা ভাবকী ইউনিয়নের তিনটি স্থানে তারেক রহমান ঘোষিত বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি প্রচারের উদ্যোগ নেন। এ উপলক্ষে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হিসেবে আব্দুল জলিল শাহের নাম ব্যবহার করে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়। তবে আব্দুল জলিল শাহের পদ নিয়ে বিরোধ আছে দলীয় ভেতরে। সাবেক সভাপতি হিসেবে তিনি এখন উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, দাবি করেন মিয়া গ্রুপের নেতারা। তাদের মতে, ভাবকী ইউনিয়নের দায়িত্বে বর্তমানে রয়েছেন নাসির উদ্দিন, সেলিম শাহ, তহিদুল ইসলাম ও জাকারিয়া ইসলাম।

এই নেতৃত্ব বিরোধ ঘনীভূত হয় শুক্রবার সকালে। কর্নেল পক্ষের নেতা আব্দুল জলিল শাহ ও আশরাফ আলীকে মিয়া গ্রুপের নেতারা মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তারা হাসপাতালে ভর্তি হন। সন্ধ্যায় কর্নেল মোস্তাফিজুরের নেতৃত্বে কাচিনীয়া বাজারে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়, যেখানে স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অংশ নেন। কিন্তু সভা শেষ হতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মিয়া গ্রুপের অনুসারীরা সভাস্থলে এসে অতর্কিতে হামলা চালায়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন শ্রমিক নেতা মহসিন আলী, ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মানিকসহ অন্তত ২৫ জন। হামলার সময় কর্নেল মোস্তাফিজুর ও মিজানুর রহমান চৌধুরী দেড় ঘণ্টার মতো অবরুদ্ধ ছিলেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি শান্ত করে।

এ বিষয়ে কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, গণতান্ত্রিক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনার সময় প্রতিপক্ষের হামলা পরিকল্পিত ছিল এবং সাবেক এমপি আখতারুজ্জামান মিয়ার নির্দেশেই তা হয়েছে। তিনি জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া সাংগঠনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

অন্যদিকে, ঘটনার কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব মিয়া গ্রুপের অনুসারী এবং ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে, নির্বাচনের আগে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধ একমাত্র প্রতিপক্ষ নয়, বরং নিজেরাই নিজেদের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। grassroots পর্যায়ে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব দলকে কতটা বিপদে ফেলতে পারে, দিনাজপুরের ঘটনাই তার বাস্তব প্রমাণ।


হিমাগার ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে সড়কে আলু ফেলে চাষিদের অবরো

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৮ ১৬:৪৩:২৭
হিমাগার ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে সড়কে আলু ফেলে চাষিদের অবরো

কুড়িগ্রামে হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে সড়কে আলু ফেলে অনন্য প্রতিবাদ জানিয়েছেন আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি বাজারে কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কে এই অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২টার দিকে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা রাস্তায় আলু ছড়িয়ে দিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অবরোধ সরিয়ে নেন। পরে আন্দোলনকারীরা সড়কের পাশে মানববন্ধন করেন এবং দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মসূচি চালান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চলতি মৌসুমে আলু উৎপাদনে কেজিপ্রতি কৃষকের ব্যয় হয়েছে প্রায় ২২ টাকা। হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য ভাড়া বাড়িয়ে ৪ টাকা থেকে ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে, অর্থাৎ প্রতি কেজিতে বাড়ানো হয়েছে ২ টাকা ৭৫ পয়সা। সব মিলিয়ে প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা। অথচ বাজারে এখন আলুর কেজিপ্রতি দাম ১৫ টাকা, ফলে প্রতি কেজিতে ১৪ টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া আলুচাষি আরিফুল ইসলাম, মোস্তফা কামাল, ফয়জার হোসেন প্রমুখ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে কৃষকের পক্ষে টিকে থাকা অসম্ভব। অতিরিক্ত হিমাগার ভাড়া না কমানো হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

/আশিক


নীলফামারীতে হাঁড়িভাঙা আমে ভরপুর মৌসুম, ব্যস্ততা পাইকারি বাজারে

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৫ ১০:৫০:০২
নীলফামারীতে হাঁড়িভাঙা আমে ভরপুর মৌসুম, ব্যস্ততা পাইকারি বাজারে

নীলফামারী ও আশপাশের এলাকায় মৌসুমি আমের বাজারে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে। পাইকারি ও খুচরা বিক্রিতে জমে উঠেছে হাঁড়িভাঙা, আম্রপালি, বারী-৪ ও অন্যান্য জাতের আম। বর্তমানে হাঁড়িভাঙা আম প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা খুচরা বাজারে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

জেলার সৈয়দপুরের রেলঘুনটি এলাকার বাজারে এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় আম বেচাকেনা। বিশেষ করে রংপুরের বদরগঞ্জে স্টেশন রোড এলাকায় ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বসছে বড় পাইকারি বাজার। এখান থেকে আম দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে কুরিয়ারের মাধ্যমে।

পাইকারি বাজারে প্রতিমণ হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। স্থানীয় কৃষক অহিদুল হক জানান, শুরুর দিকে ভালো দাম পেলেও বর্তমানে কিছুটা দাম কমেছে। তবে বাজারে সরাসরি উপস্থিত হয়ে বিক্রির সুবিধায় আমদানি বেড়েছে।

ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “একসময় রিকশা চালালেও এখন বাগান করে ও অনলাইনে আম বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছি। আমার বাগানে অনেক বেকারও কাজ করছে।”

সৈয়দপুর-পার্বতীপুর সড়কের কেলোকার সামনে, বদরগঞ্জ-পার্বতীপুর সড়কের ডারারপাড়সহ বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে আমের বাজার। হোন্ডা, রিকশা, ভ্যানের যাত্রীরাও এ বাজার থেকে আম কিনছেন। চাষি, ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা বলছেন, আমের এমন বাজার যেন এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে।

সত্য প্রতিবেদন/আশিক


‘পুলিশ পরিচয়’ ফেসবুকে বন্ধ, রংপুর আরপিএমপি’র ব্যাখ্যা কী?

রংপুর ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১৭:১৬:১৮
‘পুলিশ পরিচয়’ ফেসবুকে বন্ধ, রংপুর আরপিএমপি’র ব্যাখ্যা কী?

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) পুলিশ সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের আসল ‘পুলিশ পরিচয়’ ব্যবহার করার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে রংপুর পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত মাসিক কল্যাণ সভায় এই নির্দেশনা দেন আরপিএমপি কমিশনার মো. মজিদ আলী।

কমিশনার মজিদ আলী সভায় বলেন, “কোনো পুলিশ সদস্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে ‘পুলিশ পরিচয়’ দেখিয়ে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। এ বিষয়ে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।” তিনি আরও জানান, পুলিশ সদস্যদের অবশ্যই অনলাইন জিডি সিস্টেম সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকা উচিত, যাতে তারা জনগণকে আরও উন্নত, প্রযুক্তিনির্ভর ও কার্যকর সেবা দিতে পারেন।

সভায় কমিশনার পেশাদারিত্ব বজায় রাখা এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এছাড়া, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও উৎকর্ষ সাধনের জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সভা শুরুতেই কমিশনার সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং আগের মাসের কল্যাণ সভায় উত্থাপিত সমস্যা ও তাদের সমাধান নিয়ে খোঁজখবর নেন। বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছ থেকে সরাসরি সমস্যা শুনে তাৎক্ষণিক সমাধানের নির্দেশনা দেন।

বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা এই পদক্ষেপকে পুলিশের পেশাদারিত্ব, প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার ও সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস হিসেবে দেখছেন।

সত্য প্রতিবেদন/আশিক

পাঠকের মতামত: