তুলসী পাতার যত উপকারীতা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ১৭:২০:৫৯
তুলসী পাতার যত উপকারীতা

তুলসী শুধু একটি উদ্ভিদ নয়, বরং উপমহাদেশীয় জীবনধারার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় তুলসীকে 'ঔষধির রানি' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে আধুনিক গবেষণাও প্রমাণ করেছে, তুলসী পাতায় রয়েছে এমন সব উপাদান, যা শরীর, মন ও পরিবেশ তিনটির জন্যই আশীর্বাদস্বরূপ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একটি করে কচি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দৃঢ় হয়, মানসিক চাপ হ্রাস পায় এবং দীর্ঘমেয়াদে জটিল ও জটিলতর অসুস্থতা থেকেও সুরক্ষা মেলে। তুলসী পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি- ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, যা শরীরের বিষক্রিয়া দূর করে রক্ত পরিষ্কার করে, কোষকে সজীব রাখে এবং বার্ধক্যের গতি কমিয়ে দেয়।

ঠান্ডা-কাশি ও শ্বাসতন্ত্রে তুলসীর জাদু

শিশুদের ঠান্ডা-কাশি কিংবা বুকে কফ জমে গেলে তুলসী পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে দ্রুত উপশম ঘটে। সকালে তুলসী, আদা ও চা পাতা ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে পান করলে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যায় বিশাল আরাম মেলে। এমনকি ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি ও ফুসফুসের অন্যান্য জটিল অসুখেও তুলসী পাতা কার্যকরী।

মানসিক চাপ কমাতে তুলসীর ভূমিকা

তুলসী পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি ও ফাইটোকেমিক্যাল, যা কর্টিসোল হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে স্নায়ুকে শান্ত রাখে এবং মানসিক চাপ ও উদ্বেগ হ্রাস করে। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, নিয়মিত তুলসী পাতা গ্রহণ মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

ক্যানসার প্রতিরোধে তুলসীর সম্ভাবনা

তুলসী পাতার ফাইটোকেমিক্যাল যেমন রোসমারিনিক অ্যাসিড, লিউটিউলিন, মাইরেটিনাল এবং এপিজেনিন ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করে। বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যানসার ও অগ্ন্যাশয়ের টিউমার প্রতিরোধে তুলসীর প্রভাব ইতিবাচক। গবেষকরা তুলসীর রেডিওপ্রটেকটিভ ক্ষমতাকেও ক্যানসার প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করেন।

হৃদযন্ত্র, কিডনি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে তুলসী

তুলসী হার্টের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এটি রক্তে জমাট বাঁধার প্রবণতা হ্রাস করে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে ও উচ্চ রক্তচাপ কমায়। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে কমে। অন্যদিকে, এটি ডিহাইড্রেশন কমিয়ে কিডনিকে সচল রাখে এবং কিডনির পাথর প্রতিরোধেও কার্যকরী।

ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা

প্রতিদিন খালি পেটে কয়েকটি তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তুলসীর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

ত্বক ও চোখের যত্নেও তুলসী অপরিহার্য

ত্বকের যত্নে তুলসী পাতা একটি প্রাকৃতিক টনিক। এতে থাকা ভিটামিন সি, এসেনশিয়াল অয়েল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বয়সের ছাপ কমিয়ে ত্বককে উজ্জ্বল রাখে। তুলসী পাতা বেটে মুখে লাগালে দাগ, ব্রণ ও শুষ্কতা দূর হয়। চোখের অঞ্জনি, চুলকানি ও পিচুটিজনিত সমস্যায় তুলসী পাতার রস কার্যকরী। এমনকি তুলসী দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতেও সহায়তা করে।

পেটের সমস্যা থেকে সুরক্ষা

পেটব্যথা, অম্বল, গ্যাস কিংবা আলসারের মতো সমস্যার জন্য তুলসী পাতা অত্যন্ত কার্যকরী। তুলসী ফুটিয়ে সেই পানি পান করলে হজমক্ষমতা বাড়ে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

তুলসী: ঘরোয়া ভেষজ, বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি

যেখানে তুলসী চিরকাল ধরে একটি ‘ধর্মীয়’ বা ‘পবিত্র’ গাছ হিসেবে পরিচিত ছিল, আজকের বিজ্ঞানের আলোয় এটি স্বীকৃতি পাচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা উপাদান হিসেবে।

শুধু ঠান্ডা কিংবা পেটের সমস্যা নয় হার্ট থেকে শুরু করে মানসিক চাপ, ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে ক্যানসার-তুলসী পাতা এক বহুমাত্রিক প্রতিরক্ষা বলয়ের মতো কাজ করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই প্রাকৃতিক শক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা মানে, শরীরের প্রতি একটি চিরন্তন বিনিয়োগ।

তুলসী আর শুধু রান্নাঘরের পাশে রাখা কোনো উদ্ভিদ নয় এটি হতে পারে আধুনিক জীবনের প্রকৃত প্রতিষেধক। প্রতিদিন একটুকরো সবুজ পাতাই আপনাকে দিতে পারে বহু রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, মন ও শরীরের প্রশান্তি এবং দীর্ঘস্থায়ী সুস্থতা।

ট্যাগ: তুলসী

কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে: আজই শুরু করুন এই সহজ অভ্যাস

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১০:২১:৫০
কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে: আজই শুরু করুন এই সহজ অভ্যাস

কিডনি মানব শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা শরীরের ফিল্টার হিসেবে কাজ করে। এটি রক্ত থেকে অপ্রয়োজনীয় টক্সিন ও অতিরিক্ত পানি বের করে শরীরকে সুস্থ রাখে। তাই কিডনির সুস্থতা বজায় রাখা অপরিহার্য। আধুনিক জীবনযাত্রায় আমরা প্রায়ই এর যত্ন নিতে ভুলে যাই। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় হলো সকালে খালি পেটে পর্যাপ্ত পানি পান করা।

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আমাদের শরীর দীর্ঘক্ষণ পানি থেকে বঞ্চিত থাকে। এই সময়ে পানি পান করলে তা কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। সকালে পানি পান করলে কিডনি হাইড্রেটেড থাকে, যা রক্ত পরিস্রাবণের প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে। এর ফলে কিডনির ওপর চাপ কমে এবং এর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

সকালে খালি পেটে পানি পানের আরেকটি বড় সুবিধা হলো, এটি শরীরের জমে থাকা টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। ঘুমের সময় শরীর যে টক্সিন তৈরি করে, তা সহজেই বেরিয়ে যায়। এতে কিডনির কাজ সহজ হয় এবং এটি দীর্ঘ সময় ধরে সুস্থ থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান কিডনিতে পাথর বা স্টোন তৈরি হওয়াও প্রতিরোধ করে।

এটি শুধু কিডনির জন্যই নয়, বরং পুরো শরীরের জন্য উপকারী। এটি রক্তের প্রবাহকে উন্নত করে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে পানি পান করেন, তাদের কিডনির সমস্যা তুলনামূলকভাবে কম হয়। এটি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং লিভার ও কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

তবে মনে রাখতে হবে, পানি পান করা একটি ধারাবাহিক অভ্যাস হতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম কাজ হওয়া উচিত কমপক্ষে দুই গ্লাস পানি পান করা। পানি ধীরে ধীরে পান করলে হজমে কোনো সমস্যা হয় না। পাশাপাশি, পানি অবশ্যই পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ হতে হবে।

সকালের পানি কেবল কিডনি নয়, পুরো শরীরের জন্যই উপকারী। এটি ত্বককে সতেজ রাখে, মাথা ব্যথা কমায় এবং শরীরের প্রাকৃতিক শক্তি বাড়ায়। তবে, কেবল পানি পানই যথেষ্ট নয়। কিডনিকে সুস্থ রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণ ও চর্বি এড়িয়ে চলা উচিত, এতে কিডনি দীর্ঘ সময় সুস্থ থাকবে।

সকালে খালি পেটে পানি পান করা একটি সহজ কিন্তু শক্তিশালী অভ্যাস, যা কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করে, শরীরকে ডিটক্সিফাই করে এবং কিডনি পাথর প্রতিরোধে সাহায্য করে। এই অভ্যাস আমাদের কিডনির জন্য একটি প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা।

/আশিক


ত্বকের কালো দাগ: কোন ধরনের দাগের কী চিকিৎসা?

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২০ ২১:২১:৪৬
ত্বকের কালো দাগ: কোন ধরনের দাগের কী চিকিৎসা?

ত্বকের দাগ অনেক ধরনের হয় এবং সেগুলো সামনাসামনি দেখে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা জরুরি। শুধুমাত্র সীমিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এর সঠিক কারণ বা ধরন নির্ণয় করা কঠিন।

দাগের প্রকারভেদ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

বিশেষজ্ঞের মতে, কাটা দাগ বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। যদি আপনার দাগ হাইপারট্রপিক বা কিলয়েড ধরনের হয়, তবে তার জন্য সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। হাইপারট্রপিক দাগ সাধারণত ত্বকের উপরে উঁচু হয়ে থাকে, আর কিলয়েড দাগ আরও বড় ও ছড়িয়ে যায়। আবার কিছু কাটা দাগ গর্তের মতো (অ্যাট্রোফিক স্কারস) হতে পারে, যার চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা।

অন্যদিকে, অ্যালার্জি থেকে সৃষ্ট দাগও কয়েক ধরনের হতে পারে। এর মধ্যে একটি প্রধান ধরন হলো ‘পোস্টইনফ্ল্যামেটরি হাইপারপিগমেন্টেশন’। এটি ত্বকের কোনো প্রদাহ বা জ্বালা সেরে যাওয়ার পর সেখানে থেকে যাওয়া গাঢ় রঙের দাগ। এই দাগ ত্বকের কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে কখনো ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়, আবার কখনো লেজার থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।

প্রাথমিক যত্নে করণীয়

বিশেষজ্ঞের মতে, প্রাথমিক পর্যায়ে ত্বকে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার এবং বায়ো অয়েল ব্যবহার করলে কিছুটা উপকার পাওয়া যেতে পারে। তবে এটি সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান নয়।

বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়ার গুরুত্ব

ত্বক মানব শরীরের অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি অঙ্গ। তাই কোনো ধরনের ভুল চিকিৎসা বা অবহেলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। বিশেষজ্ঞের মতে, এই সমস্যার সম্পূর্ণ পরিত্রাণ পেতে হলে অবশ্যই একজন ডার্মাটোলজিস্ট বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে পরামর্শ নেওয়া উচিত। শুধুমাত্র একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই আপনার দাগের ধরন সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারবেন এবং আপনার ত্বকের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারবেন।

/আশিক


 ৬ বছর ধরে চুল খেয়ে পাকস্থলীতে ২ কেজির চুলের গোলা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৮ ১৭:০৩:৩৩
 ৬ বছর ধরে চুল খেয়ে পাকস্থলীতে ২ কেজির চুলের গোলা
ছবি: সাউথ মর্নিং চায়না পোস্ট

দীর্ঘ ছয় বছর ধরে চুল খাওয়ার অদ্ভুত অভ্যাসের কারণে এক কিশোরীর পাকস্থলীতে প্রায় ২ কেজি ওজনের বিশাল একটি চুলের পিণ্ড জমেছিল, যা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছে। চীনের হুবেই প্রদেশে সম্প্রতি এ বিরল ঘটনাটি ঘটে।

সাউথ মর্নিং চায়না পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য চীনের হেনান প্রদেশের ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী তীব্র পেট ব্যথা ও শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে তার মায়ের সঙ্গে হুবেই প্রদেশের উহান শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হুবেই ডেইলি জানিয়েছে, ১.৬ মিটার উচ্চতার ওই কিশোরীর ওজন ছিল মাত্র ৩৫ কেজি, যা তার মারাত্মক অপুষ্টির ইঙ্গিত দেয়। গত ছয় মাস ধরে তার ঋতুস্রাবও বন্ধ ছিল এবং সে তীব্র রক্তাল্পতায় ভুগছিল।

চিকিৎসকদের প্রশ্নের উত্তরে মেয়েটির মা জানান, তার মেয়ে প্রায় ছয় বছর ধরে নিজের চুল খাওয়ার অস্বাভাবিক অভ্যাসে আসক্ত। পরে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা দেখতে পান, কিশোরীর পাকস্থলির ভেতরে চুল ও খাবারের অবশিষ্টাংশে তৈরি এক বিশাল চুলের দলা জমাট বেঁধে আছে। এই চুলের গোলা পুরো পাকস্থলিকে ঢেকে ফেলেছিল এবং স্বাভাবিক আকারের প্রায় দ্বিগুণ করে ফুলিয়ে তুলেছিল।

গত ১৪ জুলাই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই ২ কেজি ওজনের চুলের পিণ্ডটি সফলভাবে অপসারণ করা হয়। অস্ত্রোপচারের পাঁচ দিন পর কিশোরীটি ধীরে ধীরে স্বাভাবিকভাবে খাবার খাওয়া শুরু করে। এরপর তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ৫ আগস্ট ফলোআপ পরীক্ষার জন্য পুনরায় হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, সে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।

একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, যদি কোনো শিশু এক মাসের বেশি সময় ধরে চুল বা কাঁচের মতো অখাদ্য জিনিস খাওয়ার অভ্যাস করে এবং তা থামাতে না পারে, তবে অভিভাবকদের অবশ্যই 'ট্রাইকোফ্যাগিয়া' নামক মানসিক সমস্যা সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

/আশিক


নীরব ঘাতক কিডনি ক্যানসার: এই ৫ লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৬ ২০:২২:৪১
নীরব ঘাতক কিডনি ক্যানসার: এই ৫ লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হন
ছবি: সংগৃহীত

কিডনি ক্যানসারকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’, কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে এর কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ফলে দেরিতে ধরা পড়লে চিকিৎসা জটিল হয়ে যায়। চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু সাধারণ লক্ষণ আছে, যা অবহেলা করা বিপজ্জনক। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ শনাক্ত হলে চিকিৎসার সাফল্যের হার অনেক বেশি থাকে।

সতর্কতা: যেসব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন

চিকিৎসকদের মতে, কিডনি ক্যানসারের কিছু সাধারণ লক্ষণ নিচে দেওয়া হলো:

প্রস্রাবে রক্ত: প্রস্রাবের রং গোলাপি, লাল বা বাদামি হলে সতর্ক হতে হবে। এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানে হেমেচুরিয়া নামে পরিচিত। ব্যথাহীনভাবে এটি ঘটলেও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

পিঠের নিচের দিকে বা পাশে ব্যথা: পিঠের নিচের দিকে বা পাশের অংশে (ফ্ল্যাংক) যদি কোনো আঘাত ছাড়াই স্থায়ী ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, তবে তা কিডনির টিউমারের কারণে হতে পারে।

হঠাৎ ও অকারণে ওজন কমে যাওয়া: কোনো খাদ্যাভ্যাস বা ব্যায়ামের পরিবর্তন ছাড়াই যদি দ্রুত ওজন কমতে থাকে, তবে এটি কিডনি ক্যানসারের একটি লক্ষণ হতে পারে।

কিডনির আশপাশে চাকা বা ফোলাভাব: কিডনির পাশে বা পাঁজরের নিচে চাকা বা ফোলাভাব হলে সতর্ক হতে হবে। ক্যানসার হলে এই চাকা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে।

দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ও দুর্বলতা: কিডনি ক্যানসার রক্তকণিকা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটালে অ্যানিমিয়া হয়, ফলে রোগী স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া


হাঁসের মাংস: কী পরিমাণ এবং কোন পরিস্থিতিতে খাওয়া নিরাপদ?

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ২২:৫৫:৪১
হাঁসের মাংস: কী পরিমাণ এবং কোন পরিস্থিতিতে খাওয়া নিরাপদ?

হাঁসের মাংস সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর হওয়ায় শীতকালে এটি একটি জনপ্রিয় খাবার। তবে এই মাংসে ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকায় সবার জন্য এটি উপযুক্ত নয়। পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন নিশি জানিয়েছেন, কার জন্য হাঁসের মাংস নিরাপদ এবং কারা এটি এড়িয়ে চলবেন।

হাঁসের মাংসের পুষ্টিগুণ

পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন জানান, হাঁসের মাংস প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলসের একটি ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম হাঁসের মাংস থেকে প্রায় ৩০০ ক্যালরি পাওয়া যায়, যা শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন), থায়ামিন, আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস এবং ম্যাগনেশিয়াম ভালো পরিমাণে থাকে। রক্তস্বল্পতা এবং শীতকালে যাদের খাবারে অনীহা থাকে, তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী।

কারা হাঁসের মাংস খাবেন, কী পরিমাণে খাবেন?

নিশাত শারমিন বলেন, হাঁসের মাংসে প্রচুর ফ্যাট ও কোলেস্টেরল থাকে, তাই যাদের হৃদরোগ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার বা ডায়াবেটিস আছে তাদের এই মাংস খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও, যাদের অ্যালার্জি আছে তাদেরও হাঁসের মাংস এড়িয়ে চলা উচিত।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য সাধারণত ৬০-৭০ গ্রাম মাংস খাওয়া নিরাপদ। হাঁসের মাংসের ক্ষেত্রে ৩০ গ্রাম ওজনের দুটি টুকরা খাওয়া যথেষ্ট। রান্নার সময় চামড়া ফেলে দিলে চর্বির পরিমাণ কিছুটা কমানো সম্ভব।


ইনসুলিনের দামে বৈষম্য: বন্ধের মুখে দেশীয় উৎপাদন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ০৮:১৫:৩০
ইনসুলিনের দামে বৈষম্য: বন্ধের মুখে দেশীয় উৎপাদন
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীদের জীবন রক্ষাকারী অন্যতম ওষুধ ইনসুলিন উৎপাদনে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এক বড় সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ইনসুলিনের দামের তুলনায় বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ইনসুলিনের দাম দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ায় দেশীয় কোম্পানিগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে, যার ফলে উৎপাদন প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

ওষুধ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ২০০৭ সাল থেকে দেশে আন্তর্জাতিক মানের ইনসুলিন তৈরি করে আসছে। বিদেশি ওষুধের তুলনায় দেশীয় ইনসুলিন সাশ্রয়ী হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরা ব্যাপকভাবে এটি ব্যবহার করে।

ওষুধ শিল্প সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ১৪ বছর আগে দেশীয় ইনসুলিনের একটি ডোজের মূল্য ২২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং আজও সেই একই দামে এটি বিক্রি হচ্ছে। অথচ একই সময়ে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ইনসুলিনের দাম ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৬৩৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এই অস্বাভাবিক মূল্য বৈষম্যের কারণে দেশীয় উৎপাদনকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে, ইনসুলিন আমদানির জন্য দেশ থেকে প্রচুর ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে।

দেশে প্রায় ১৩ লাখ ডায়াবেটিস রোগী নিয়মিত ইনসুলিন ব্যবহার করেন। এর মধ্যে ৬০ ভাগ দেশীয় ইনসুলিন এবং ৪০ ভাগ আমদানিকৃত ইনসুলিন ব্যবহার করেন। এই ৪০ ভাগ রোগীর পেছনে বছরে প্রায় ৬০ কোটি টাকা খরচ হয়, যেখানে দেশীয় ইনসুলিন ব্যবহারকারী ৬০ ভাগ রোগীর খরচ মাত্র ৩২ কোটি টাকা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও ওষুধ শিল্প সমিতির মতে, দেশে উৎপাদিত ইনসুলিনের গুণগত মান উন্নতমানের। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এটি অনেক দেশে রপ্তানিও করা হচ্ছে। ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব ডা. জাকির হোসেন বলেন, ডায়াবেটিস রোগীদের বৃহত্তর স্বার্থে এই মূল্য বৈষম্য দ্রুত নিরসন করা জরুরি। অন্যদিকে ওষুধ বিক্রেতারা মনে করেন, প্রচুর ডলার বিদেশে যাওয়া বন্ধ করতে চিকিৎসকদের মানসিকতা পরিবর্তন করা এবং দেশীয় ইনসুলিনের ব্যবহার বাড়ানো জরুরি।

তবে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, জনস্বার্থে ইনসুলিনের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা বর্তমানে সরকারের নেই।


মূত্রের রঙের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১১ ২১:৫০:৫২
মূত্রের রঙের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত
ছবি: সংগৃহীত

আপনার মূত্রের রঙ আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হতে পারে, বিশেষ করে কিডনির কার্যকারিতা সম্পর্কে। সুস্থ কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্য ও অতিরিক্ত তরল ছেঁকে মূত্র তৈরি করে, যা সাধারণত হালকা হলুদ থেকে অ্যাম্বার রঙের হয়। কিন্তু যখন কিডনি দুর্বল হতে শুরু করে, তখন মূত্রের রঙ, গন্ধ ও স্বরূপে লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা দেয়। গাঢ় রঙ, ফেনাযুক্ত, লাল বা ঝাপসা মূত্র ক্রনিক কিডনি রোগ কিংবা আকস্মিক কিডনি আঘাতের মতো গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।

কিডনি রক্ত থেকে টক্সিন দূর করে, শরীরের পানির মাত্রা, ইলেক্ট্রোলাইট ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। সুস্থ অবস্থায় মূত্র সাধারণত হালকা হলুদ থেকে অ্যাম্বার রঙের হয়ে থাকে, যা শরীরের হাইড্রেশনের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বর্জ্য পদার্থ জমে, মূত্রের রঙ ও পরিমাণ পরিবর্তিত হয়।

কিডনি ব্যর্থতার একটি সাধারণ লক্ষণ হলো গাঢ় বাদামী, চায়ের মতো বা কোলা রঙের মূত্র। এর পেছনে মূত্রে রক্তের উপস্থিতি, অতিরিক্ত পেশী ভাঙনের উপাদান, কিংবা কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়া থাকতে পারে। লাল বা গোলাপি মূত্র মূলত মূত্রে রক্ত থাকার কারণে হয়, যা গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস, পলিসিস্টিক কিডনি রোগ, সংক্রমণ বা আঘাতের কারণে হতে পারে। তবে বিট জাতীয় ফলমূল খাওয়ার পরেও লাল রঙ আসতে পারে; তাই ধারাবাহিক পরিবর্তন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

ফেনাযুক্ত মূত্র সাধারণত প্রোটিন (বিশেষ করে অ্যালবুমিন) উপস্থিতির লক্ষণ, যা ক্রনিক কিডনি রোগের প্রাথমিক সংকেত। প্রস্রাবের ফেনা দীর্ঘস্থায়ী হলে ‘প্রোটিনিউরিয়া’ হতে পারে এবং এটি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। ঝাপসা মূত্র সাধারণত ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, কিডনি পাথর বা প্রদাহের সঙ্গে যুক্ত, যা মাঝে মাঝে দুর্গন্ধ বা প্রস্রাবে ব্যথা নিয়ে আসে। যদিও ঝাপসা মূত্র সব সময় কিডনি ব্যর্থতার লক্ষণ নয়, তবে চিকিৎসা না করলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।

অত্যন্ত স্বচ্ছ বা রঙহীন মূত্র সাধারণত শরীরের পর্যাপ্ত পানি পান করার ইঙ্গিত। কিন্তু ধারাবাহিক ফ্যাকাশে মূত্র হতে পারে ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস বা ক্রনিক কিডনি রোগের উন্নত পর্যায়ের লক্ষণ। যদিও এটা সরাসরি কিডনি ব্যর্থতা নয়, অন্য কোনো উপসর্গ থাকলে পরীক্ষা করানো উচিত।

মূত্রের রঙ ছাড়াও কিডনি সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে পা বা গোড়ালি ফোলা, ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি, মুখে ধাতব স্বাদ, মনোযোগ কমে যাওয়া এবং মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া। যদি এ ধরনের উপসর্গ ও অস্বাভাবিক মূত্রের রঙ দেখা দেয়, দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।

কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করার ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে মূত্রের রঙ ও গন্ধ পরিবর্তিত হয়। এর পেছনে ক্রনিক কিডনি রোগ, আকস্মিক কিডনি আঘাত, গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস, ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন ও কিডনি পাথর অন্যতম কারণ।

হঠাৎ ও অজানা কারণে মূত্রের রঙ পরিবর্তন হলে, গাঢ় বা লাল মূত্র দীর্ঘদিন ধরে থাকলে, ফেনাযুক্ত মূত্র কয়েকদিন বেশি থাকলে, প্রস্রাবে ব্যথা বা অস্বস্তি হলে এবং অন্যান্য কিডনি সমস্যা লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সুস্থ কিডনি রক্ষায় জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি। পর্যাপ্ত জল পান করা, রক্তচাপ ও রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা, ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধ (NSAIDs) কম ব্যবহার করা, লবণ ও অ্যালকোহল সীমিত করা, ধূমপান ত্যাগ করা, উপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা কিডনি রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর।

সূত্র:https://tinyurl.com/2zjrr38n


প্রথমবারের মতো ৫ কোটি শিশু পাচ্ছে বিনামূল্যে টাইফয়েডের টিকা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ২১:৪৮:৫৮
প্রথমবারের মতো ৫ কোটি শিশু পাচ্ছে বিনামূল্যে টাইফয়েডের টিকা
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) অংশ হিসেবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শিশুদের জন্য টাইফয়েড টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছর ১১ মাস ২৯ দিন বয়সী প্রায় পাঁচ কোটি শিশু এই টিকা পাবে। গত ১ আগস্ট থেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইপিআই প্রগ্রাম ম্যানেজার ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, যেসব শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদ নেই, তারা মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবে।

আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম ১০ কার্যদিবস স্কুলগুলোতে ক্যাম্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। স্কুল ক্যাম্প শেষ হলে আরও আট দিন ইপিআই সেন্টারে গিয়ে স্কুলে না যাওয়া শিশুরাও টিকা নিতে পারবে। টিকা পেতে অনলাইনে https://vaxepi.gov.bd/registration/tcv/ এই ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পর ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করার সুবিধা রয়েছে। জন্ম নিবন্ধন সনদসহ নিবন্ধন করলে সরাসরি ভ্যাকসিন কার্ড পাওয়া যাবে।

টাইফয়েডের জন্য দেওয়া এই ইনজেকশনের এক ডোজ প্রাপ্ত শিশুকে তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে। গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের সহায়তায় এই ভ্যাকসিন এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, টাইফয়েড জ্বর মূলত স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, যা দূষিত খাদ্য বা পানি গ্রহণের মাধ্যমে ছড়ায়। এর উপসর্গের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, মাথাব্যথা, বমিভাব, ক্ষুধামন্দা, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া থাকে। অনেক সময় এসব লক্ষণ অস্পষ্ট হওয়ায় অন্যান্য জ্বরের সঙ্গে বিভ্রান্তি হতে পারে।

গ্যাভির সিএসও স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘টাইফয়েড ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ। বিশ্বব্যাপী শতভাগ নিরাপত্তা নিয়ে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও আগে এটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। করোনার আগে টাঙ্গাইলে পাইলট প্রকল্পে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের কাজ সম্পন্ন হয়। এরপর সরকার গ্যাভিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করে। আগে এই ভ্যাকসিন বেসরকারিভাবে পাওয়া যেত, এবার সরকার বিনামূল্যে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি শিশুকে এই ভ্যাকসিন দেবে।’

/আশিক


হাইপোথাইরয়েডিজম নিয়ন্ত্রণ করে জীবনে ফিরুন প্রাণবন্ততা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ০৯:১১:২৪
হাইপোথাইরয়েডিজম নিয়ন্ত্রণ করে জীবনে ফিরুন প্রাণবন্ততা
ছবি: সংগৃহীত

হাইপোথাইরয়েডিজম একটি হরমোনজনিত সমস্যা, যেখানে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে ব্যর্থ হয়। এই হরমোন শরীরের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে—যার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হৃদস্পন্দন, হজমসহ গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। হরমোনের ঘাটতি হলে শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।

কারণ

হাইপোথাইরয়েডিজমের পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—

অটোইমিউন থাইরয়েডাইটিস (হাশিমোটো রোগ): ইমিউন সিস্টেম থাইরয়েড গ্রন্থিকে আক্রমণ করে, ফলে হরমোন উৎপাদন ব্যাহত হয়।

থাইরয়েড অপারেশন বা রেডিওথেরাপি: গ্রন্থি আংশিক বা সম্পূর্ণ অপসারণ কিংবা ক্যানসার ও হাইপারথাইরয়েডিজমের চিকিৎসায় রেডিওঅ্যাকটিভ আয়োডিন ব্যবহার হরমোন উৎপাদন কমিয়ে দেয়।

আয়োডিনের ঘাটতি বা অতিরিক্ততা: হরমোন তৈরিতে আয়োডিন অপরিহার্য, তবে অতিরিক্ত বা ঘাটতি—দুই অবস্থাই ক্ষতিকর।

ওষুধের প্রভাব: লিথিয়াম বা অ্যামিওডারোনের মতো ওষুধ হরমোন উৎপাদন কমাতে পারে।

জন্মগত কারণ: কিছু শিশু জন্ম থেকেই পর্যাপ্ত হরমোন তৈরি করতে অক্ষম।

লক্ষণ

প্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গ অস্পষ্ট হতে পারে, তবে হরমোন ঘাটতি বাড়লে দেখা দিতে পারে—

অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা

ওজন বৃদ্ধি

ঠান্ডা সহ্য না হওয়া

শুষ্ক ও খসখসে ত্বক

চুল পাতলা হওয়া ও পড়া

কোষ্ঠকাঠিন্য

মুখমণ্ডল ও চোখের নিচে ফোলাভাব

গলায় ফোলাভাব (গয়েটার)

মনোযোগ কমে যাওয়া ও স্মৃতিভ্রংশ

বিষণ্নতা

হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া

মাসিক অনিয়ম বা বন্ধ্যত্ব (নারীদের ক্ষেত্রে)

কর্কশ কণ্ঠস্বর

ঘুম ঘুম ভাব

সব রোগীর ক্ষেত্রে সব লক্ষণ দেখা নাও যেতে পারে; কারও উপসর্গ হালকা, কারও ক্ষেত্রে গুরুতর হতে পারে।

সম্ভাব্য জটিলতা

চিকিৎসা না হলে হাইপোথাইরয়েডিজম থেকে হৃদরোগ, গভীর অবসাদ, বন্ধ্যত্ব, গর্ভাবস্থায় জটিলতা এবং গুরুতর মাইক্সিডিমা (জীবনহানিকর অবস্থা) হতে পারে।

রোগ নির্ণয়

রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করা হয়—

TSH বেশি হলে রোগের ইঙ্গিত

Free T4 কম থাকলে নিশ্চিত

Anti-TPO অ্যান্টিবডি পজিটিভ হলে অটোইমিউন কারণ বোঝা যায়

চিকিৎসা

হাইপোথাইরয়েডিজমের চিকিৎসা সাধারণত আজীবন চলে।

হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি: লেভোথাইরক্সিন প্রতিদিন নির্দিষ্ট মাত্রায় সেবন।

ডোজ নির্ধারণ: বয়স, ওজন, উপসর্গ ও পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ঠিক করা হয়।

নিয়মিত পর্যবেক্ষণ: প্রতি ৬-৮ সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষা করে ডোজ সমন্বয়।

জীবনযাপন পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর খাদ্য, শরীরচর্চা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ।

থাইরক্সিন সেবনের নিয়ম

সকালে খালি পেটে (৬-৮টার মধ্যে) সেবন

খাওয়ার পর অন্তত ৩০-৬০ মিনিট কিছু না খাওয়া

পানি ছাড়া অন্য কিছু না পান করা

আয়রন, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টাসিড ইত্যাদির সঙ্গে অন্তত ৪ ঘণ্টা বিরতি রাখা

প্রতিদিন একই সময়ে ওষুধ খাওয়া

দুধ, কফি, সোয়া খাবার ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার আগে অন্তত আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করা

বিশেষ সতর্কতা

গর্ভবতী বা গর্ভধারণের পরিকল্পনা থাকলে চিকিৎসককে জানানো

ডোজ পরিবর্তনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া

অতিরিক্ত ডোজে হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, অস্থিরতা, ওজন হ্রাস, অতিরিক্ত ঘাম ইত্যাদি হতে পারে—এসব হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

পাঠকের মতামত: