মূত্রের রঙের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১১ ২১:৫০:৫২
মূত্রের রঙের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত
ছবি: সংগৃহীত

আপনার মূত্রের রঙ আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হতে পারে, বিশেষ করে কিডনির কার্যকারিতা সম্পর্কে। সুস্থ কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্য ও অতিরিক্ত তরল ছেঁকে মূত্র তৈরি করে, যা সাধারণত হালকা হলুদ থেকে অ্যাম্বার রঙের হয়। কিন্তু যখন কিডনি দুর্বল হতে শুরু করে, তখন মূত্রের রঙ, গন্ধ ও স্বরূপে লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা দেয়। গাঢ় রঙ, ফেনাযুক্ত, লাল বা ঝাপসা মূত্র ক্রনিক কিডনি রোগ কিংবা আকস্মিক কিডনি আঘাতের মতো গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।

কিডনি রক্ত থেকে টক্সিন দূর করে, শরীরের পানির মাত্রা, ইলেক্ট্রোলাইট ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। সুস্থ অবস্থায় মূত্র সাধারণত হালকা হলুদ থেকে অ্যাম্বার রঙের হয়ে থাকে, যা শরীরের হাইড্রেশনের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বর্জ্য পদার্থ জমে, মূত্রের রঙ ও পরিমাণ পরিবর্তিত হয়।

কিডনি ব্যর্থতার একটি সাধারণ লক্ষণ হলো গাঢ় বাদামী, চায়ের মতো বা কোলা রঙের মূত্র। এর পেছনে মূত্রে রক্তের উপস্থিতি, অতিরিক্ত পেশী ভাঙনের উপাদান, কিংবা কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়া থাকতে পারে। লাল বা গোলাপি মূত্র মূলত মূত্রে রক্ত থাকার কারণে হয়, যা গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস, পলিসিস্টিক কিডনি রোগ, সংক্রমণ বা আঘাতের কারণে হতে পারে। তবে বিট জাতীয় ফলমূল খাওয়ার পরেও লাল রঙ আসতে পারে; তাই ধারাবাহিক পরিবর্তন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

ফেনাযুক্ত মূত্র সাধারণত প্রোটিন (বিশেষ করে অ্যালবুমিন) উপস্থিতির লক্ষণ, যা ক্রনিক কিডনি রোগের প্রাথমিক সংকেত। প্রস্রাবের ফেনা দীর্ঘস্থায়ী হলে ‘প্রোটিনিউরিয়া’ হতে পারে এবং এটি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। ঝাপসা মূত্র সাধারণত ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, কিডনি পাথর বা প্রদাহের সঙ্গে যুক্ত, যা মাঝে মাঝে দুর্গন্ধ বা প্রস্রাবে ব্যথা নিয়ে আসে। যদিও ঝাপসা মূত্র সব সময় কিডনি ব্যর্থতার লক্ষণ নয়, তবে চিকিৎসা না করলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।

অত্যন্ত স্বচ্ছ বা রঙহীন মূত্র সাধারণত শরীরের পর্যাপ্ত পানি পান করার ইঙ্গিত। কিন্তু ধারাবাহিক ফ্যাকাশে মূত্র হতে পারে ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস বা ক্রনিক কিডনি রোগের উন্নত পর্যায়ের লক্ষণ। যদিও এটা সরাসরি কিডনি ব্যর্থতা নয়, অন্য কোনো উপসর্গ থাকলে পরীক্ষা করানো উচিত।

মূত্রের রঙ ছাড়াও কিডনি সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে পা বা গোড়ালি ফোলা, ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি, মুখে ধাতব স্বাদ, মনোযোগ কমে যাওয়া এবং মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া। যদি এ ধরনের উপসর্গ ও অস্বাভাবিক মূত্রের রঙ দেখা দেয়, দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।

কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করার ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে মূত্রের রঙ ও গন্ধ পরিবর্তিত হয়। এর পেছনে ক্রনিক কিডনি রোগ, আকস্মিক কিডনি আঘাত, গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস, ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন ও কিডনি পাথর অন্যতম কারণ।

হঠাৎ ও অজানা কারণে মূত্রের রঙ পরিবর্তন হলে, গাঢ় বা লাল মূত্র দীর্ঘদিন ধরে থাকলে, ফেনাযুক্ত মূত্র কয়েকদিন বেশি থাকলে, প্রস্রাবে ব্যথা বা অস্বস্তি হলে এবং অন্যান্য কিডনি সমস্যা লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সুস্থ কিডনি রক্ষায় জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি। পর্যাপ্ত জল পান করা, রক্তচাপ ও রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা, ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধ (NSAIDs) কম ব্যবহার করা, লবণ ও অ্যালকোহল সীমিত করা, ধূমপান ত্যাগ করা, উপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা কিডনি রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর।

সূত্র:https://tinyurl.com/2zjrr38n


শীতে বাড়ে কর্নিয়ার আলসার: চোখের যত্নে করণীয়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ১১:১৮:২৯
শীতে বাড়ে কর্নিয়ার আলসার: চোখের যত্নে করণীয়
ছবি : সংগৃহীত

গ্রীষ্মের প্রখর রোদে আমরা চোখের সুরক্ষায় সচেতন থাকলেও শীতকালে বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষা করা হয়। তবে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে বছরের এই সময়ে চোখের স্বাস্থ্যঝুঁকি গ্রীষ্মের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণ হলো শীতের শুষ্ক বাতাস এবং আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়া বায়ুদূষণ। বাতাসে ভেসে থাকা বিষাক্ত ধূলিকণা আর ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান সরাসরি চোখের সংস্পর্শে এসে চোখের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। শহর ও শিল্পাঞ্চলের ধোঁয়াশা এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে যার ফলে চোখের কর্নিয়ায় সূক্ষ্ম ক্ষত তৈরি হতে পারে। এই ক্ষতস্থানে ধূলিকণা বা জীবাণুর সংক্রমণ ঘটলে তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘কর্নিয়ার আলসার’ বলা হয়।

কর্নিয়া হলো আমাদের চোখের আলোক প্রবেশের স্বচ্ছ লেন্স বা প্রবেশদ্বার। কর্নিয়ার আলসারকে একটি ‘মেডিকেল এমার্জেন্সি’ হিসেবে গণ্য করা হয় কারণ এটি চোখের স্থায়ী অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। সংক্রমণের ফলে কর্নিয়ায় যে সাদাটে দাগ তৈরি হয় তা আলোক রশ্মি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে এবং দৃষ্টিশক্তি স্থায়ীভাবে ঝাপসা করে দেয়। সংক্রমণের মাত্রা গভীর হলে কর্নিয়া ফুটো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে যা চোখের অভ্যন্তরীণ অংশকে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলে। বিশেষ করে ছত্রাক বা বিশেষ কিছু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এতটাই দ্রুত ছড়ায় যে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যথাযথ চিকিৎসা না করালে শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে চোখ বাদ দেওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।

কর্নিয়ার আলসারের প্রধান লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চোখ প্রচণ্ড লাল হয়ে যাওয়া এবং অনবরত পানি পড়া। এর পাশাপাশি চোখে তীব্র ব্যথা বা খচখচানি ভাব অনুভব করা এবং আলোর দিকে তাকাতে সমস্যা হওয়া অন্যতম লক্ষণ। অনেক সময় চোখের মণির ওপর স্পষ্ট সাদা দাগ লক্ষ্য করা যায় যা সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায় নির্দেশ করে। বিশেষ করে যারা পেশাগত কারণে বাইরে কাজ করেন কিংবা ধুলোবালির মধ্যে বেশি যাতায়াত করেন তাদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষিত রাখতে হলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। বাইরে বের হওয়ার সময় সানগ্লাস বা প্রোটেক্টিভ চশমা ব্যবহার করা উচিত যা সরাসরি বাতাস ও ধূলিকণা থেকে চোখকে রক্ষা করবে। চোখে বারবার হাত দেওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করার পাশাপাশি প্রতিদিন পরিষ্কার ও ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ ধোয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। যদি চোখে কোনো ধরণের অস্বস্তি বা লাল ভাব দেখা দেয় তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া কোনো ড্রপ ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়। সামান্য সচেতনতাই পারে শীতের এই বৈরি পরিবেশে আপনার মূল্যবান দৃষ্টিশক্তিকে সুরক্ষিত রাখতে।


পাকস্থলীর ধ্বংস করছে আপনার এই ৩টি সাধারণ অভ্যাস

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ২১:৩৯:৩৪
পাকস্থলীর ধ্বংস করছে আপনার এই ৩টি সাধারণ অভ্যাস
ছবি : সংগৃহীত

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন কিছু কাজ রয়েছে যেগুলোকে আমরা আপাতদৃষ্টিতে খুব একটা ক্ষতিকর মনে করি না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই অভ্যাসগুলোই নীরবে আমাদের পাকস্থলীর অপূরণীয় ক্ষতি করে চলেছে। ফ্লোরিডার গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট এবং প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. জোসেফ সালহাব সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় পাকস্থলীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর তিনটি ‘গাট টক্সিন’ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে ধূমপান, অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার এবং নিয়মিত মদ্যপান—এই তিনটি অভ্যাসই গ্যাস্ট্রাইটিস ও রক্তক্ষরণজনিত আলসারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

ডা. সালহাবের বিশ্লেষণ অনুযায়ী ধূমপান বা ভেপিং কেবল ফুসফুসেরই ক্ষতি করে না বরং এটি সরাসরি খাদ্যনালি ও পাকস্থলীতে আঘাত হানে। সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা রাসায়নিক উপাদান পাকস্থলীর নরম আস্তরণে ক্ষত সৃষ্টি করে যা দীর্ঘমেয়াদে প্রদাহ ও তীব্র গ্যাস্ট্রাইটিসের কারণ হয়। এছাড়া নিকোটিনের প্রভাবে পাকস্থলীতে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ কমে যায় যার ফলে কোনো ক্ষত তৈরি হলে তা সহজে সারতে চায় না। এটি ক্রমান্বয়ে পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে।

অনেকেই সামান্য শরীর ব্যথায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেনের মতো ব্যথানাশক ওষুধ বা এনএসএআইডিএস (NSAIDs) গ্রহণ করেন। ডা. সালহাব জানান যে এই ধরণের ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার পাকস্থলীর আস্তরণে তীব্র জ্বালা এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের সৃষ্টি করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী ব্যথানাশক ব্যবহারের ফলে পেপটিক আলসারের সম্ভাবনা তৈরি হয় যা প্রাণঘাতী হতে পারে। একইভাবে অতিরিক্ত মদ্যপান লিভারের ক্ষতির পাশাপাশি পাকস্থলীর আস্তরণে প্রদাহ সৃষ্টি করে যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘অ্যালকোহল গ্যাস্ট্রাইটিস’ বলা হয়। এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী পেটব্যথা, বমি ও বুকজ্বালার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

পাকস্থলী ও হজমতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে ডা. সালহাব কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি ধূমপান ও ভেপিং সম্পূর্ণ বর্জন করার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যেকোনো ধরণের ব্যথানাশক ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া নিয়মিত সুষম খাবার গ্রহণ এবং দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি। পেটের কোনো সমস্যা বা আলসারের লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট। ছোট কিছু সচেতন সিদ্ধান্তই দীর্ঘমেয়াদে আপনার পাকস্থলীকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতে পারে।


ঠোঁট ফাটা কেবল শীতের দোষ নয় বরং আসল অপরাধী অন্য কেউ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৩ ২০:৫৪:১৪
ঠোঁট ফাটা কেবল শীতের দোষ নয় বরং আসল অপরাধী অন্য কেউ
ছবি : সংগৃহীত

শীতের আগমনে প্রকৃতির রুক্ষতার প্রথম প্রভাব পড়ে মানুষের ঠোঁটের ওপর। বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার ফলে গায়ের চামড়ার পাশাপাশি অনেকের ঠোঁট ফেটে চৌচির হয়ে যায় এবং ক্ষেত্রবিশেষে রক্তক্ষরণের মতো যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষ একে কেবল ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব মনে করলেও চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে ভিন্ন কথা। ঠোঁট ফাটার নেপথ্যে কেবল আবহাওয়া নয় বরং শরীরে বিশেষ একটি পুষ্টি উপাদানের অভাব বড় ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে ভিটামিন বি২ বা রিবোফ্লাভিনের ঘাটতি থাকলে শীতের প্রকোপ ছাড়াও সারা বছর ঠোঁট শুষ্ক ও খসখসে থাকতে পারে।

প্রাকৃতিকভাবে শীতকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অন্য যেকোনো ঋতুর তুলনায় অনেক কম থাকে যার ফলে আমাদের শরীর থেকে ঘাম নিঃসরণ কমে যায়। এর ফলে ত্বকের গভীরে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে যে তৈলাক্ত পদার্থ বা সিবাম নির্গত হয় তা পুরো ত্বকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে না। লুব্রিকেন্টের এই অভাবের কারণেই ত্বক কুঁচকে যায় এবং ঠোঁটের সূক্ষ্ম চামড়া ফাটতে শুরু করে। তবে যাদের শরীরে ভিটামিন বি২ পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এই ভিটামিনের অভাবে কেবল ঠোঁট ফাটা নয় বরং মুখে আলসার বা ঘায়ের মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন বি২ মূলত ত্বকের কোষ পুনর্গঠন এবং এর নমনীয়তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। তাই চিকিৎসকদের মতে কেবল বাহ্যিক প্রসাধনী ব্যবহার করে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। ঠোঁটের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে সবার আগে খাদ্যতালিকায় ভিটামিন বি২ যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম, সবুজ শাকসবজি এবং কলিজার মতো খাবারগুলো এই ভিটামিনের চমৎকার উৎস। এছাড়া শীতে তৃষ্ণা কম পেলেও পর্যাপ্ত পানি পান করে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা অত্যন্ত জরুরি কারণ অভ্যন্তরীণ পানিশূন্যতা ঠোঁট ফাটার অন্যতম প্রধান কারণ।

ঘরোয়া উপায়ে ঠোঁটের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক স্ক্রাব ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন রূপ বিশেষজ্ঞরা। সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চারবার হলুদ এবং মধুর মিশ্রণ দিয়ে ঠোঁট স্ক্রাব করলে মৃত কোষ দূর হয়ে ঠোঁট সজীব হয়ে ওঠে। বাজারে থাকা রাসায়নিকযুক্ত লিপবামের বদলে খাঁটি নারিকেল তেল বা অর্গানিক লিপবাম ব্যবহার করা অধিকতর নিরাপদ। চিকিৎসকদের মতে শীতের শুরু থেকেই খাদ্যাভ্যাস ও সঠিক পরিচর্যার দিকে নজর দিলে ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হওয়া বা ব্যথার মতো কষ্টদায়ক পরিস্থিতি অনায়াসেই এড়ানো সম্ভব।


শীতে জয়েন্টে তীব্র ব্যথা নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকদের কার্যকরী টিপস

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৩ ১২:১৮:৫৭
শীতে জয়েন্টে তীব্র ব্যথা নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকদের কার্যকরী টিপস
ছবি : সংগৃহীত

সারাদেশে জেঁকে বসা শীতের প্রকোপে জনজীবনে যেমন স্থবিরতা নেমে এসেছে তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া ও জয়েন্টে ব্যথার মতো শারীরিক সমস্যাগুলো প্রকট হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে এসেছে। এই তীব্র ঠান্ডায় অনেকেই পেশিতে টান পড়া বা হাড়ের সংযোগস্থলে শক্তভাব অনুভব করছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে যে এটি মূলত শরীরের একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া তবে যাদের আগে থেকেই আর্থ্রাইটিস বা স্নায়ুর সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই পরিস্থিতি বেশ যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে শীতকালে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপ ধরে রাখার জন্য রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়ে পড়ে যার ফলে হাত ও পায়ের প্রান্তে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। রক্ত সঞ্চালন কমে যাওয়ার কারণেই মূলত পেশিগুলো শক্ত হয়ে ব্যথার সৃষ্টি করে। এছাড়া হাড়ের জয়েন্টের ভেতরে থাকা লুব্রিকেন্ট বা সিনোভিয়াল ফ্লুইড ঠান্ডায় ঘন হয়ে যাওয়ায় জয়েন্টের নড়াচড়া কঠিন হয়ে পড়ে। ঠান্ডার সময় মানুষের স্নায়ুগুলো ব্যথার সংকেত অনেক বেশি তীব্রভাবে মস্তিষ্কে পাঠায় যার ফলে পুরনো চোট বা বাতের ব্যথা কয়েক গুণ বেশি অনুভূত হয়।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় চিকিৎসকেরা শরীর সবসময় গরম রাখার ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন। উলের মোজা, গ্লাভস এবং পর্যাপ্ত গরম কাপড় ব্যবহারের পাশাপাশি কুসুম গরম পানি দিয়ে সেঁক নেওয়া বা নিরাপদ দূরত্বে হিটার ব্যবহার করা বেশ কার্যকর হতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ১০ থেকে ২০ মিনিট হালকা স্ট্রেচিং বা ব্যায়াম করলে শরীরে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং জয়েন্টের জড়তা কেটে যায়। এছাড়া শীতে তৃষ্ণা কম পেলেও পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি কারণ পানিশূন্যতা পেশিকে আরও শক্ত করে তোলে যা ব্যথার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেও এই সমস্যা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সামুদ্রিক মাছ, ডিম, কলা, বাদাম এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ফ্ল্যাক্সসিড শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। চিকিৎসকেরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে হুটহাট ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া কিডনি বা পাকস্থলীর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যদি ব্যথা এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় কিংবা জয়েন্ট ফুলে লাল হয়ে যায় তবে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। শীতকালীন এই ব্যথা নিয়ে সমাজে প্রচলিত নানা কুসংস্কার বা ঝাড়ফুঁকের বদলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করলেই সুস্থ থাকা সম্ভব বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।


১ মিনিটের ঘরোয়া পরীক্ষায় ধরুন ফুসফুসের রোগ: আজই চেষ্টা করুন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২২ ২১:১১:২২
১ মিনিটের ঘরোয়া পরীক্ষায় ধরুন ফুসফুসের রোগ: আজই চেষ্টা করুন
ছবি : সংগৃহীত

ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করছে কি না তা জানার জন্য সবসময় ব্যয়বহুল বা জটিল মেডিকেল পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। বর্তমান সময়ে বায়ুদূষণ এবং শ্বাসযন্ত্রের নানা রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকায় চিকিৎসকরা প্রাথমিক সচেতনতার ওপর জোর দিচ্ছেন। কেবল ধূমপায়ীরাই ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হন এই ধারণা এখন অনেকটাই অতীত। ধোঁয়া, ধুলোবালি এবং বাতাসের বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে সাধারণ মানুষও এখন হাঁপানি, সিওপিডি এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই মাত্র ১ মিনিটে নিজের ফুসফুসের প্রাথমিক অবস্থা বুঝে নেওয়ার একটি সহজ পদ্ধতি বেশ কার্যকর হতে পারে।

এই ঘরোয়া পরীক্ষার প্রথম ধাপ হলো শান্ত হয়ে সোজা হয়ে বসা এবং নাক দিয়ে অত্যন্ত ধীরে ও গভীরভাবে শ্বাস গ্রহণ করা। পর্যাপ্ত সময় নিয়ে শ্বাস টানার পর দ্বিতীয় ধাপে সেই শ্বাসটি টানা ৬০ সেকেন্ড বা এক মিনিট ধরে রাখতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি অনায়াসেই ৬০ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখতে পারেন এবং এর পর ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে পারেন, তবে ধরে নেওয়া হয় তার ফুসফুস আপাতত সুস্থ রয়েছে। তবে এই পরীক্ষার সময় যদি নাকে অস্বস্তি, হাঁচি বা কাশির উদ্রেক হয়, তবে বুঝতে হবে ফুসফুসের কার্যক্ষমতায় কোনো ধরণের বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে শ্বাস ধরে রাখার এই এক মিনিটের মধ্যে যদি কারোর প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, বুকে চাপ অনুভব করেন কিংবা অনবরত কাশি আসে, তবে বিষয়টি অবহেলার নয়। বিশেষ করে শ্বাস ছাড়ার সময় নাক বন্ধ হয়ে আসা বা গলা দিয়ে শ্লেষ্মা ওঠার মতো লক্ষণগুলো ফুসফুসে ব্লকেজ বা দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে। অনেক সময় হাঁপানি বা অ্যালার্জির সমস্যা শুরুতে ধরা পড়ে না যা এই সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব। বায়ুদূষণ যেহেতু পুরোপুরি এড়িয়ে চলা কঠিন, তাই ফুসফুসের কার্যকারিতা সম্পর্কে নিয়মিত সচেতন থাকা এখন সময়ের দাবি।

তবে মনে রাখা জরুরি যে এই ১ মিনিটের পরীক্ষাটি কেবল প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার জন্য। এটি কোনোভাবেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ বা আধুনিক মেডিকেল টেস্টের বিকল্প নয়। যদি পরীক্ষার সময় বা দৈনন্দিন চলাফেরায় কোনো অস্বাভাবিকতা টের পাওয়া যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি এড়াতে স্পাইরোমেট্রি বা এক্স-রের মতো পরীক্ষাগুলো সঠিক সময়ে করা প্রয়োজন। বায়ুদূষণের এই প্রতিকূল সময়ে শরীরের অভ্যন্তরীণ এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির যত্ন নিতে নিয়মিত সচেতনতাই হতে পারে বড় ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।


আধুনিক জীবনযাত্রায় বাড়ছে বন্ধ্যাত্ব: বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ২০:৪০:১৭
আধুনিক জীবনযাত্রায় বাড়ছে বন্ধ্যাত্ব: বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
ছবি : সংগৃহীত

আধুনিক জীবনধারা ও ক্রমবর্ধমান পরিবেশ দূষণ আমাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর নীরব ঘাতকের মতো প্রভাব ফেলছে যা অনেক দম্পতির কাছেই অজানা থেকে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে বর্তমানে বিপুল সংখ্যক যুবক ও যুবতী অনিয়মিত মাসিক চক্র, দুর্বল শুক্রাণু এবং অনির্ণেয় বন্ধ্যাত্বের মতো জটিল সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন যে আমরা যা খাচ্ছি বা যে বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি তার বিষাক্ত পদার্থগুলো সরাসরি আমাদের দেহের হরমোন ও কোষের ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে। প্রিস্টিন কেয়ার ফার্টিসিটির প্রধান আইভিএফ কনসালট্যান্ট ডা. ইলা গুপ্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন যে পরিবেশগত বিষাক্ত পদার্থের প্রভাব অত্যন্ত সূক্ষ্ম হলেও এটি দীর্ঘমেয়াদী ও ক্ষতিকর।

বায়ু দূষণ এখন আর কেবল শ্বাসকষ্টের কারণ নয় বরং এটি প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি বড় গবেষণায় দেখা গেছে যে দীর্ঘমেয়াদী দূষিত বাতাসের সংস্পর্শে থাকা ৩৫ বছরের ঊর্ধ্ব নারী ও পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। ফর্টিস নোয়েডার ওবস্টেট্রিকস-গাইনোকোলজি বিভাগের প্রধান ডা. অঞ্জনা সিং জানিয়েছেন যে পেস্টিসাইড ও ভারী ধাতু সরাসরি ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এর ফলে বর্তমানে দুর্বল ভ্রূণ মানের কারণে গর্ভপাতের ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। এমনকি দূষণ প্লাসেন্টায় প্রদাহ সৃষ্টি করে অকাল জন্ম বা মৃত জন্মের ঝুঁকিও বৃদ্ধি করছে।

জীবনযাত্রার অদৃশ্য শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ। উচ্চ মাত্রার কোর্টিসল হরমোন শরীরের এস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন ও টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। অনেক দম্পতির মেডিকেল রিপোর্ট স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও তারা গর্ভধারণে ব্যর্থ হচ্ছেন যার মূল কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা অতিরিক্ত মানসিক চাপকে দায়ী করছেন। পুরুষদের ক্ষেত্রেও এটি শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দেয় এবং টেস্টোস্টেরন লেভেলকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করে। এছাড়া ধূমপান, অ্যালকোহল, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অনিয়মিত ঘুমের অভ্যাস এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে। আধুনিক নারীরা অফিস ও ঘর একসঙ্গে সামলাতে গিয়ে যে ‘সুপারউম্যান চাপের’ শিকার হচ্ছেন তা তাদের মাসিক চক্রকে অনিয়মিত করে তুলছে।

প্রজনন ক্ষমতা রক্ষা করতে চিকিৎসকরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। দূষণ থেকে সুরক্ষায় এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার এবং ব্যস্ত সময়ে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম, যোগব্যায়াম এবং সূর্যালোকের সংস্পর্শে থাকা জরুরি। খাদ্যাভ্যাসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ সবুজ সবজি ও ফলমূল যোগ করার পাশাপাশি স্ক্রিন টাইম কমানোর ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে কারণ এটি প্রজনন হরমোনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মেলাটোনিনকে প্রভাবিত করে। চিকিৎসকদের মতে প্রজনন স্বাস্থ্য কেবল একটি চিকিৎসা বিষয় নয় বরং এটি একটি সচেতন জীবনযাত্রার অংশ। আজকের ছোট পরিবর্তনই আগামীকালের সুস্থ প্রজন্মের নিশ্চয়তা দিতে পারে।


হাড়ের ব্যথায় ভুগছেন? শুধু বয়স নয়, দায়ী আপনার ৫টি অভ্যাস

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৯:৪২:৫৪
হাড়ের ব্যথায় ভুগছেন? শুধু বয়স নয়, দায়ী আপনার ৫টি অভ্যাস
ছবি : সংগৃহীত

শরীরের হাড় বা গিঁটে হঠাৎ ব্যথা অনুভব করার বিষয়টি এখন আর কেবল বয়স্কদের সমস্যা নয়। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, অনেক সময় আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস, বিশৃঙ্খল জীবনযাত্রা এবং স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলাই হাড় ও গিঁটের সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই ধরনের ব্যথাকে অনেকেই শুরুতে গুরুত্ব দিতে চান না, কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে এই অবহেলা চলাফেরার ক্ষমতা পর্যন্ত কেড়ে নিতে পারে এবং জীবনমানের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা হাড় ও গিঁটের ব্যথার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। শরীরে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং প্রোটিনের ঘাটতি থাকলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজনের কারণে হাড় ও গিঁটের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে, যা ব্যথার অন্যতম কারণ। বর্তমান জীবনযাত্রায় দীর্ঘ সময় বসে থাকা বা শারীরিক পরিশ্রমের অভাব অর্থাৎ অ্যাক্টিভিটি কমে যাওয়াও এই সমস্যাকে ত্বরান্বিত করছে। এর বাইরে অ্যালার্জি, প্রদাহজনিত সমস্যা বা আর্থ্রাইটিস এবং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াও ব্যথার সাধারণ কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে চিকিৎসকরা বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। হাড় ও সন্ধির সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা অপরিহার্য। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দুধ, ডিম, মাছ, শাকসবজি ও বাদাম সমৃদ্ধ খাবার রাখার ওপর জোর দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি নিয়মিত হালকা হাঁটা, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং হাড় ও গিঁটকে শক্ত রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে হাড়ের ওপর চাপ কমানো এবং পর্যাপ্ত পানি পান করাও জরুরি। তবে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে বা চলাফেরায় সমস্যা দেখা দিলে কালক্ষেপণ না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।


শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কেন বাড়ে? জানুন বাঁচার উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ২১:১৫:০৯
শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কেন বাড়ে? জানুন বাঁচার উপায়
ছবি : সংগৃহীত

শীতের সকালের কুয়াশা আর হালকা ঠান্ডা পরিবেশ অনেকের কাছে উপভোগ্য হলেও হার্টের রোগীদের জন্য এই সময়টা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, তাপমাত্রা কমলে শরীর নিজেকে উষ্ণ রাখতে অতিরিক্ত কাজ শুরু করে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে হৃৎপিণ্ডের ওপর। ঠান্ডার কারণে শরীরের রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়, যা শরীরের ভেতরের তাপ ধরে রাখতে সাহায্য করে। তবে এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হার্টকে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে এটি বড় কোনো সমস্যা না হলেও হার্টের রোগীদের জন্য এটি এনজাইনা, শ্বাসকষ্ট কিংবা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই শীতকালে হৃদরোগীদের বাড়তি সচেতনতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, শীতে বাইরে বের হওয়ার সময় শরীর ভালোভাবে গরম পোশাকে ঢেকে রাখা প্রয়োজন। একটার ওপর আরেকটা বা একাধিক লেয়ারের পোশাক পরা এবং মাথা, হাত ও পা ভালোভাবে ঢেকে রাখা উচিত, কারণ এসব অঙ্গ দিয়ে দ্রুত শরীরের তাপ বেরিয়ে যায়। তবে অপ্রয়োজনে দীর্ঘক্ষণ তীব্র শীতে বাইরে না থাকাই শ্রেয়। পাশাপাশি ঠান্ডার সময় ভারী কাজ করা বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম থেকেও বিরত থাকতে হবে। ভারী জিনিস তোলা, খুব দ্রুত হাঁটা বা দৌড়ানোর মতো কাজ হার্টের ওপর হঠাৎ চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা হৃদরোগীদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।

শীতের সময় আরেকটি বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি, আর তা হলো অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া। গরম কাপড় পরে অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটি বা কাজ করলে শরীর ঘেমে যেতে পারে। এতে হঠাৎ রক্তচাপ কমে গিয়ে হার্টের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই ঘামতে শুরু করলেই কাজ থামিয়ে বিশ্রাম নেওয়া বা ঘরের ভেতরে চলে আসা উচিত। এছাড়া শীতে ফ্লু বা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে, আর জ্বর বা সংক্রমণ হার্টকে আরও দুর্বল করে দেয়। তাই হার্টের রোগীদের জন্য সময়মতো ফ্লু শট নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ফ্লুর উপসর্গ দেখা দিলে নিজে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেকে মনে করেন শীতে অ্যালকোহল শরীর গরম রাখে, কিন্তু এটি ভুল ধারণা। অ্যালকোহল শরীরের তাপ দ্রুত বের করে দেয় এবং হার্টের ঝুঁকি বাড়ায়, তাই হৃদরোগীদের জন্য এটি এড়িয়ে চলাই নিরাপদ।

সূত্র : ভেরিওয়েল হেলথ


শীতে কেন বাড়ে মাইগ্রেন? জেনে নিন বাঁচার উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২০:৫৯:৪৭
শীতে কেন বাড়ে মাইগ্রেন? জেনে নিন বাঁচার উপায়
ছবি : সংগৃহীত

শীতের আগমনে প্রকৃতিতে পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের জীবনে নেমে আসে মাইগ্রেনের অসহ্য যন্ত্রণা এবং ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন এই ব্যথা কতটা পীড়াদায়ক হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে তাপমাত্রার পারদ নিচে নামার ফলে মানুষের মাথার ত্বক এবং ঘাড়ের রক্তনালীগুলো দ্রুত সংকুচিত হতে শুরু করে যা সরাসরি ট্রাইজেমিনাল স্নায়ুপথে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয় এবং এর ফলেই তীব্র মাথাব্যথা অনুভূত হয়। যাদের আগে থেকেই মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে হঠাৎ ঠান্ডা বাতাস লাগাটা বড় বিপদের কারণ হতে পারে আবার বারবার গরম থেকে ঠান্ডা বা ঠান্ডা পরিবেশ থেকে গরমে যাতায়াত করলে ভাস্কুলার সিস্টেমের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে যা যন্ত্রণাকে উসকে দেয়। এছাড়া শীতের তীব্রতায় অনেকে দীর্ঘসময় ঘরবন্দি হয়ে থাকার ফলে শারীরিক সক্রিয়তা কমে যায় এবং এই আলস্য থেকেও মাথাব্যথার প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকরা নিজেকে সবসময় হাইড্রেটেড বা আর্দ্র রাখার ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছেন এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে সুস্থ থাকতে দিনে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন। শীতের সময় সর্দি-কাশির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাইগ্রেন বাড়ে তাই ঠান্ডা বাতাস এড়াতে কান ও মাথা ভালোভাবে ঢেকে রাখা এবং দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনের স্ক্রিন বা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকা জরুরি। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন যে জাঙ্ক ফুড ও অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ মাথাব্যথাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে তাই এর পরিবর্তে খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি ও মৌসুমি ফল রাখতে হবে। ধূমপান ও অ্যালকোহল জাতীয় বদভ্যাস ত্যাগ করার পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে হালকা ব্যায়াম এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও জেগে ওঠার অভ্যাস মাইগ্রেনের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে সাহায্য করে তবে সমস্যা তীব্র হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত