ক্ষমতার কেন্দ্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, চ্যালেঞ্জেও রাজনীতির ভারসাম্য রক্ষা চেষ্টা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৫ ০৮:৫২:০২
ক্ষমতার কেন্দ্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, চ্যালেঞ্জেও রাজনীতির ভারসাম্য রক্ষা চেষ্টা

২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়টা যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য ছিল নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং। দ্বিতীয় মেয়াদের মাত্র ছয় মাসের মাথায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তিনি তখন তার রাজনৈতিক ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করছিলেন।

একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে নির্বাহী ক্ষমতার ব্যাপক প্রয়োগের পথ উন্মুক্ত করেছিল। অন্যদিকে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলা এবং গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত ট্রাম্প প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকাকে তুলে ধরে। একই সময়ে ন্যাটো সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি আসে।

অর্থনৈতিক দিক থেকেও ট্রাম্প তৎকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি ও প্রবৃদ্ধির ধারাকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। যদিও শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত হুমকিতে বাজারে কিছুটা উদ্বেগ ছিল। অভিবাসন নীতিতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের ফলে দক্ষিণ সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঐতিহাসিকভাবে হ্রাস পেয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

এতকিছুর পরও রাজনৈতিক বাস্তবতায় ট্রাম্পকে একটি বিল পাস করাতে নিজ দল রিপাবলিকানদের সঙ্গে টানা ২০ ঘণ্টা আলোচনায় কাটাতে হয়। বহু কাঙ্ক্ষিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস হলেও তা ছিল না খুব সহজ। তিনি একদিকে চাপ প্রয়োগ করেছেন, আবার অন্যদিকে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

বিল পাসের প্রক্রিয়া ধীরগতির হওয়ায় রাত ১২টার দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন— “রিপাবলিকানরা কীসের জন্য অপেক্ষা করছে?” এই মন্তব্যের পরই ধীরে ধীরে ভোট প্রক্রিয়া সচল হয় এবং টানা ১৪ ঘণ্টা পর বিলটি পাস হয়, মাত্র দু’জন রিপাবলিকান ভিন্নমত দেন।

বিলটি পাস হওয়ার পর হোয়াইট হাউজে এক আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমানও প্রদর্শন করা হয়, যা এর আগে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বাংকার বাস্টার বোমা ফেলেছিল।

তবে একাধিক জরিপে দেখা যায়, মার্কিন জনগণের একটি বড় অংশ এই বিল নিয়ে সন্দিহান। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনমত পরিবর্তন করাই হবে ট্রাম্পের জন্য বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। বিল অনুযায়ী কর হ্রাসের বিষয়টি শিগগিরই কার্যকর হবে, তবে মেডিকেইড ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির বড় পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়িত হবে ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর।

ট্রাম্প নিজেও স্বীকার করেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বড় কাটছাঁট রাজনৈতিকভাবে সমস্যার কারণ হতে পারে। হোয়াইট হাউজ বারবার চেষ্টা করেছে আইনপ্রণেতাদের বোঝাতে, এই পরিবর্তনগুলো ধীরে ধীরে কার্যকর হবে এবং রাজ্য সরকার ও হাসপাতালগুলোকে মানিয়ে নেওয়ার সময় দেওয়া হবে।

ওবামাকেয়ার বাতিলের ব্যর্থ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার ট্রাম্প প্রশাসন আরও ঘনিষ্ঠভাবে রিপাবলিকানদের সঙ্গে কাজ করেছে। উদ্দেশ্য ছিল— বিলের কার্যকারিতা এবং জনস্বার্থে এর প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট করে তোলা।

সত্য প্রতিবেদন/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ