স্ক্যাবিস কতটা মারাত্নক? চলুন জেনে নেওয়া যাক ডাক্তারের থেকে

ডা. মো. মাহবুবুর রহমান
সত্য নিউজ: বর্তমানে দেশে প্রচণ্ড দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমের কারণে চর্মরোগের প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রতিদিনই সরকারি হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে ১,১০০ থেকে ১,২০০ রোগী চর্মরোগজনিত সমস্যায় চিকিৎসা নিতে আসছেন। এসব রোগীর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই স্ক্যাবিস (খোসপাঁচড়া) রোগে আক্রান্ত। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।
স্ক্যাবিস কী? কেন হয়?স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে পরজীবীঘটিত চর্মরোগ, যা Sarcoptes scabiei নামক অতি ক্ষুদ্র জীবাণুর কারণে হয়। এটি ত্বকের নিচে গর্ত করে ডিম পাড়ে এবং এই প্রক্রিয়াতেই তীব্র চুলকানি, লাল ফুসকুড়ি ও প্রদাহ তৈরি হয়।
লক্ষণ ও বিস্তার* চুলকানি শুরু হয় আঙুলের ফাঁকে, কনুই, কবজি, নাভি, নিতম্ব, যৌনাঙ্গ, বগল ও হাতের তালুতে।
* রাতে চুলকানি বেশি হয় এবং ছোট ছোট ফোসকা বা ফুসকুড়ির মতো হয়ে যায়, যা থেকে তরল পদার্থ বের হয়।
* চুলকানির জায়গায় ঘা হতে পারে এবং সেখানে সংক্রমণ ঘটার ঝুঁকিও থাকে।
এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে। একজন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেই অন্যরা আক্রান্ত হতে পারেন। রোগী ব্যবহৃত কাপড়, তোয়ালে, বিছানার চাদর, বালিশ বা গামছা ব্যবহার করলেই সহজে ছড়িয়ে পড়ে।
চিকিৎসার নিয়ম:* চিকিৎসকের পরামর্শে পারমেথ্রিন (Permethrin) বা স্যালফারযুক্ত মলম ব্যবহার করতে হয়।
* চুলকানির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ সেবন করা যায়।
* একবার চিকিৎসা নেওয়ার পরও যদি চুলকানি থেকে যায়, দ্বিতীয়বার চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
কাপড়চোপড় ব্যবস্থাপনা:* রোগীর ব্যবহৃত কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে, বালিশের কভার গরম পানি দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে
* শুকাতে হবে বা আয়রন করে নিতে হবে।
* পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে একই সঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে, না হলে বারবার পুনঃসংক্রমণ হতে পারে।
শিশুরা কেন বেশি ঝুঁকিতে?শিশুরা বেশি ঘনিষ্ঠভাবে একে অপরের সঙ্গে মিশে এবং তাদের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সচেতনতা কম থাকে। তীব্র গরমে ঘাম, ময়লা এবং অসচেতনতার কারণে তাদের মধ্যে চর্মরোগের ঝুঁকি বেশি।
শিশুদের করণীয়:* প্রতিদিন কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে।
* পরিষ্কার ও সুতির হালকা পোশাক পরাতে হবে।
* পানি ও তরল খাবার বেশি খাওয়াতে হবে।
* স্কুলে বা খেলাধুলায় ব্যবহৃত কাপড় ও জুতা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে।
গরমে সচেতনতা জরুরিবর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে স্ক্যাবিসসহ অন্যান্য চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে আবহাওয়ার গরম ও আর্দ্রতার কারণে রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে। তাই রোগটি নিয়ে অবহেলা না করে সচেতন হতে হবে এবং পরিবারের সবাইকে সচেতন করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, স্ক্যাবিস একটি নিরাময়যোগ্য রোগ। তবে এটি উপেক্ষা করলে শুধু ব্যক্তির নয়, পুরো পরিবারের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সঠিক চিকিৎসা, পরিচ্ছন্নতা এবং সচেতনতা—এই তিনেই রয়েছে রোগ প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- মাহফুজ আলমের ফেইসবুক পোস্ট: কি বার্তা দিলেন?
- আবারও খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের দুয়ার!
- “ইশরাককে দায়িত্ব দাও, শহর বাঁচাও!”- কেন এই স্লোগান!
- ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাত: কারও প্রকৃত বিজয় নেই, শুধু দাবির প্রতিযোগিতা
- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কাগজে শান্তি, মাটিতে অনিশ্চয়তা
- রেলওয়ের আয় ১ টাকা, খরচ ২.৫!নৈপথ্যে কারন?
- চীনের কৌশলগত সহায়তায় পাকিস্তানের সামরিক শক্তির উত্থান: আঞ্চলিকশক্তির নতুন বিন্যাস
- ১০৩ বছরের নীরবতা ভাঙল এল ক্লাসিকো, দেখল অভাবনীয় গোলবন্যা!
- গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- তারেক রহমানের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তী সরকার কি স্বৈরাচারের পুনর্বাসন করছে?
- শেয়ার বাজারে স্বরণকালের বড় ধ্বসঃ নেপথ্যে কি?
- হবিগঞ্জে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৪০, কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর
- নেইমার কিনলেন ১৫ কোটি টাকার ফেরারি: কারন শুনলে অবাক হবে
- আ.লীগ নিষিদ্ধে বিএনপি কি দ্বিধায়?
- কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ: সহজ এবং সাশ্রয়ী ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেখানে পড়াশোনা করা সম্ভব