মাদ্রাসা শিক্ষকদের ফাঁদে ফেলছে ভুয়া ডিজি!

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ০৯:৫২:৩৮
মাদ্রাসা শিক্ষকদের ফাঁদে ফেলছে ভুয়া ডিজি!

পদোন্নতি, এমপিওভুক্তি, বরাদ্দ প্রদান, প্রশিক্ষণে মনোনয়ন কিংবা ইনডেক্স সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নামে পরিচয় দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুলে ফেলা হচ্ছে ভুয়া আইডি। এসব প্ল্যাটফর্মে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম, ছবি, পদবি এমনকি সরকারি লোগো, অফিসিয়াল প্যাড ও সিল-স্বাক্ষর জাল করে প্রতারকরা তৈরি করছে বিশ্বাসযোগ্যতার ছদ্মবেশ।

সম্প্রতি এই ধরনের প্রতারণার বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এক সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান মজুমদার স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিচয় ব্যবহার করে একটি চক্র শিক্ষক-কর্মচারীদের ফোন ও বার্তা পাঠিয়ে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের (বিকাশ, রকেট, নগদ) মাধ্যমে অর্থ দাবি করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, চক্রটি শুধু ফোনকলেই থেমে থাকছে না বরং হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে অধিদপ্তরের প্রকৃত কর্মকর্তাদের ছবি ও নাম ব্যবহার করে, কখনো কখনো জালিয়াতি করে তৈরি করা কাগজে 'ডিজি প্রতিনিধি' মনোনয়নের চিঠি বা 'বিশেষ বরাদ্দের অনুমোদন পত্র' পাঠিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভ্রান্ত করছে। প্রতারণার অংশ হিসেবে তারা উচ্চতর স্কেল অনুমোদন, প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুপারিশ, ইনডেক্স নম্বর সংশোধন কিংবা অভিযোগ নিষ্পত্তির আশ্বাস দিচ্ছে এবং বিনিময়ে অর্থ দাবি করছে।

অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, তাদের কোনো সেবা গ্রহণে কাউকে কোনো ধরনের অর্থ পরিশোধ করতে হয় না। সব কার্যক্রম নির্ধারিত সরকারি বিধি-বিধান ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এসব সেবাসংক্রান্ত সব তথ্য এবং সিদ্ধান্ত নিয়মিতভাবে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, যদি কেউ এমন প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন বা সন্দেহভাজন কোনো আচরণের মুখোমুখি হন, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা ব্যক্তি যেন অবিলম্বে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেন এবং প্রতারকদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করেন। একই সঙ্গে অনুরোধ জানানো হয়েছে, কেউ যেন এসব প্রতারক চক্রের প্রলোভনে পড়ে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেনে না জড়ান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশাসনিক শূন্যতা ও জবাবদিহির অভাবকে পুঁজি করেই এসব চক্র বছরের পর বছর সক্রিয় থাকতে সক্ষম হচ্ছে। তদ্বির-নির্ভর সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত কিছু শিক্ষক-কর্মচারীর দুর্বলতাও প্রতারকদের জন্য উপযোগী সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সদর্থক অবস্থান ও সচেতনতামূলক পদক্ষেপ সময়োপযোগী বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক


হাঙ্গেরি: ইউরোপের হৃদয়ে উচ্চশিক্ষার নতুন দুয়ার

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১৫:৩৬:৪০
হাঙ্গেরি: ইউরোপের হৃদয়ে উচ্চশিক্ষার নতুন দুয়ার

বিদ্যা অর্জনের নির্দেশনা সীমাহীন, আর সেই সীমারেখা পেরিয়ে ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত হাঙ্গেরি এখন হয়ে উঠেছে বিশ্বের শিক্ষার্থীদের নতুন গন্তব্য। ইতিহাস, সংস্কৃতি, ও আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার অনন্য সংমিশ্রণ—এই দেশটি আজ ইউরোপের শিক্ষা ও গবেষণার এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। “দানিয়ুবের তীরে জ্ঞান ও ভবিষ্যতের শহর” হিসেবে পরিচিত বুদাপেস্টে শিক্ষা গ্রহণ মানে শুধুমাত্র একাডেমিক উৎকর্ষ নয়, বরং এক পরিপূর্ণ ইউরোপীয় অভিজ্ঞতা অর্জন।

কেন হাঙ্গেরি পড়াশোনার জন্য বেছে নেবেন?

অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া ও ইউক্রেনের মাঝখানে অবস্থিত এই দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও শেনজেন চুক্তিভুক্ত, ফলে শিক্ষার্থীরা একসাথে বহু দেশের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পান। উন্নত মানের রিসার্চ সুবিধা, আন্তর্জাতিক কোর্স, এবং বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণ হাঙ্গেরিকে তুলনামূলক কম খরচে উন্নত শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।

বুদাপেস্ট বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর—শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তার মানে এটি ইউরোপের শীর্ষ শহরগুলোর একটি। শিক্ষার পাশাপাশি সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ থাকায় শিক্ষার্থীরা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারেন।

উচ্চশিক্ষায় যোগ্যতা ও ভাষাগত প্রয়োজনীয়তা

হাঙ্গেরির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর পর্যায়ে ভর্তি হতে HSC বা সমমানের সার্টিফিকেট প্রয়োজন। মাস্টার্সে ব্যাচেলর এবং পিএইচডি পর্যায়ে মাস্টার্স ডিগ্রি আবশ্যক। ভাষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে IELTS স্কোর ৫.৫–৬.৫ বা TOEFL ৭২–৯০ পর্যন্ত প্রয়োজন হয়। তবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় Medium of Instruction (MOI) গ্রহণ করে, বিশেষত বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। কিছু কোর্সে Duolingo বা PTE স্কোরও বৈধ।

সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ও জনপ্রিয় বিষয়সমূহ

হাঙ্গেরির বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • Eötvös Loránd University (ELTE)
  • University of Szeged
  • University of Debrecen
  • Budapest University of Technology and Economics (BME)
  • University of Pécs
  • Corvinus University of Budapest
  • Hungarian University of Agriculture and Life Sciences

এখানে তথ্যপ্রযুক্তি, চিকিৎসাবিজ্ঞান, প্রকৌশল, স্থাপত্য, আইন, ব্যবসা ও অর্থনীতি, এবং মনোবিজ্ঞানসহ নানা বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

খরচ ও স্কলারশিপ সুবিধা

হাঙ্গেরিতে পড়াশোনার খরচ ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম—প্রতি বছর প্রায় €1,500 থেকে €5,000 পর্যন্ত। মাসিক জীবনযাত্রার ব্যয় প্রায় €300–€600 এর মধ্যে।

সবচেয়ে জনপ্রিয় সরকারি স্কলারশিপ হলো Stipendium Hungaricum, যা পুরো টিউশন ফি ছাড়, মাসিক স্টাইপেন্ড (HUF 43,700–180,000), বিনামূল্যে আবাসন বা আবাসন ভাতা, স্বাস্থ্যবীমা, এবং পরিবার নিয়ে থাকার সুযোগ প্রদান করে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক ও সরকারি গবেষণা বৃত্তিও পাওয়া যায়।

ভিসা প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরির ভিসা আবেদন করা যায় ঢাকার VFS Global-এর মাধ্যমে। প্রয়োজন হবে:

  • বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার
  • স্কলারশিপ বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • স্বাস্থ্য বীমা
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  • বৈধ পাসপোর্ট ও ছবি

ভিসা প্রক্রিয়া সাধারণত ৪–৫ সপ্তাহ সময় নেয়, এবং আবেদন ফি প্রায় ৫০ ইউরো।

পড়াশোনা শেষে ক্যারিয়ার ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

ডিগ্রি শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা ৯–১২ মাসের Job Search Visa পান, যার মাধ্যমে তারা ইউরোপজুড়ে চাকরির আবেদন করতে পারেন। চাকরি পেলে সহজেই Work Permit ও পরবর্তীতে Permanent Residence (PR)-এর জন্য আবেদন করা যায়। আইনত ৩ বছর বসবাসের পর National Permanent Residence Permit (NPRP) পাওয়া সম্ভব, যা ফ্রান্স, ইতালি বা পর্তুগালসহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ দেয়।

জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি

হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট তার অসাধারণ স্থাপত্য, সেতু, আর্ট গ্যালারি ও দানিয়ুব নদীর মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। এখানে নিরাপত্তা সূচক অত্যন্ত উচ্চ, ক্রাইম ইনডেক্স মাত্র ৩৩.৮—যা ইউরোপের সবচেয়ে নিরাপদ দেশগুলোর একটি। শিক্ষার্থীরা চাইলে সংগীত, সংস্কৃতি, ও ভ্রমণের মাধ্যমে ইউরোপীয় জীবনধারার স্বাদ নিতে পারেন।

ইউরোপীয় স্বপ্নের দুয়ারে হাঙ্গেরি

যে দেশে তুলনামূলক কম খরচে পাওয়া যায় উচ্চমানের শিক্ষা, যেখানে গবেষণা, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে গড়ে ওঠে সৃজনশীল ভবিষ্যৎ—সেই হাঙ্গেরি এখন শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণের গন্তব্য। আপনি যদি বিশ্বমানের ডিগ্রি, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, ও ক্যারিয়ারের নতুন দিগন্ত খুঁজে থাকেন, তবে হাঙ্গেরিই হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।


জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশিত, দেখে নিন পরীক্ষার সময়সূচি

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৫ ২০:০০:৩৬
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশিত, দেখে নিন পরীক্ষার সময়সূচি
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এই পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করেছে।

প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী, পরীক্ষার প্রথম দিন ২১ ডিসেম্বর বাংলা, দ্বিতীয় দিন ২২ ডিসেম্বর ইংরেজি, তৃতীয় দিন ২৩ ডিসেম্বর গণিত এবং চতুর্থ দিন ২৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞান ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু নির্দেশনা

পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে।

বিজ্ঞান ও বিশ্বপরিচয়—এই দুটি বিষয়ের জন্য মোট ৩ ঘণ্টা সময় থাকবে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য সময় দেওয়া হবে দেড় ঘণ্টা।

পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রবেশপত্র প্রতিষ্ঠান-প্রধানের কাছ থেকে পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে সাত দিন আগে সংগ্রহ করবে।

উত্তরপত্রের ওএমআর ফর্মে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং বিষয় কোড সঠিকভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করতে হবে।

পরীক্ষার্থীরা বোর্ড অনুমোদিত সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে।

কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সঙ্গে আনতে পারবেন না।


‘প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই’—সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৫:০৫:৫১
‘প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই’—সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার
ছবিঃ সংগৃহীত

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়া হবে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে—প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া।

আজ রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি (ACCGP) এবং অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটি (ACCEA)-র বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ কথা জানান।

ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “কিছু শ্রেণির বই মুদ্রণের জন্য ইতিমধ্যেই অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা প্রাপ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা খতিয়ে দেখছি, যেন কোনো স্কুল একাধিক বরাদ্দ না পায় বা অতীতে যেসব অনিয়মের অভিযোগ ছিল তা পুনরাবৃত্তি না হয়।”

তিনি জানান, সরকার চায় যেসব প্রতিষ্ঠান অতীতে নিয়মিতভাবে বই পেয়েছে তারা যেন এবারও পায়। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বই নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, “আমরা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করব। আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার—১ জানুয়ারির মধ্যে দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিতে হবে।”

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ঘোষণা শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর। কারণ সময়মতো বই হাতে পাওয়া গেলে শিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে শুরু করা সম্ভব হবে।

-আলমগীর হোসেন


হিজাব-নিকাব নিয়ে হেনস্তা বন্ধে পাবিপ্রবি প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ২১:৩৬:১০
হিজাব-নিকাব নিয়ে হেনস্তা বন্ধে পাবিপ্রবি প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ
ছবি: সংগৃহীত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) ভাইভা বা প্রেজেন্টেশনের মতো একাডেমিক কার্যক্রমে নারী শিক্ষার্থীদের নিকাব খুলতে বাধ্য না করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

নারী শিক্ষিকারা শনাক্ত করবেন পরিচয়

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু না হওয়া পর্যন্ত ভাইভা, প্রেজেন্টেশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিকাব খুলতে বাধ্য করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য নারী শিক্ষিকাদের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

একইসঙ্গে, কোনো ধরনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা বা শিক্ষার্থীদের বিদ্রুপ, ট্যাগিং বা বৈষম্যের শিকার না করার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত

গত ১৪ সেপ্টেম্বর সারা দেশে হিজাব ও নিকাব পরা শিক্ষার্থীদের হেনস্তার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা তিনটি দাবি তুলে ধরেছিল:

১. ছাত্রীদের শনাক্তকরণের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করা।

২. বায়োমেট্রিক চালু না হওয়া পর্যন্ত নারী শিক্ষিকাদের মাধ্যমে শনাক্তকরণ নিশ্চিত করা।

৩. হিজাব বা নিকাব খুলতে বাধ্য না করা এবং কোনো ধরনের বুলিং বা ট্যাগিং না করা।

শিক্ষার্থীদের এই দাবির প্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


জাকসু নির্বাচনে শিবিরের দাপট, ভিপি পদে স্বতন্ত্রের চমক!

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ২৩:০০:০৩
জাকসু নির্বাচনে শিবিরের দাপট, ভিপি পদে স্বতন্ত্রের চমক!
ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু (বামে) ও জিএস মাজহারুল ইসলাম (ডানে)

৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে বড় ধরনের চমক দেখিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’। মোট ২৫টি পদে তারা ২০টিতে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন শিবির সমর্থিত মাজহারুল ইসলাম। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সিনেট কক্ষে নির্বাচন কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

ভিপি পদে জয়ী আব্দুর রশিদ জিতু বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তিনি এর আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি মোট ৩,৩৩৪ ভোট পান, যা তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিবির সমর্থিত প্রার্থী আরিফ উল্লাহর (২,৩৯২ ভোট) চেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে বেশি। অপরদিকে জিএস পদে ইংরেজি বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম ৩,৯৩০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের প্রার্থী আবু তৌহিদ মো. সিয়াম পেয়েছেন ১,২৩৮ ভোট।

শীর্ষ দুই পদের বাইরে শিবিরপন্থী প্যানেলের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে। এজিএস (পুরুষ) পদে ফেরদৌস আল হাসান এবং এজিএস (নারী) পদে আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক, পরিবেশ সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, নাট্য সম্পাদক, তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদকসহ একাধিক পদে তাদের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। কার্যকরী সদস্য পদেও তাদের প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্য ভোটে জয়ী হয়েছেন।

তবে সব পদেই শিবিরের দাপট দেখা যায়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্রীড়া সম্পাদক এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন। এছাড়া শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম সমাজসেবা সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছে। এই বৈচিত্র্যময় ফলাফলে ছাত্র রাজনীতির নানা প্রেক্ষাপট প্রতিফলিত হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক থেকে শিবিরপন্থী প্যানেলই প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে।

১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৫৯ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৯ জন, জিএস পদে ৮ জন এবং এজিএস পদে ১৬ জন প্রার্থী, যাদের মধ্যে ছয়জন নারী।

নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেছেন, প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পড়া শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও উৎসাহের প্রমাণ বহন করে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলেমিশে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার প্রত্যাশা রয়েছে। যদিও ভোট গ্রহণের আগে কিছু অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাত্রদল ও আরও কয়েকটি প্রগতিশীল সংগঠন নির্বাচন বর্জন করেছিল, তবুও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সম্পন্ন হওয়াটাই একটি বড় অর্জন বলে মনে করেন কমিশন।


জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১২ ১১:৩২:০৭
জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনার সময় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় গণনার কক্ষের সামনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস (৩১)। দ্রুত তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা মৃত্যুর ঘোষণা দেন।

দায়িত্ব পালনকালে দুর্ঘটনা

জান্নাতুল ফেরদৌস জাকসু নির্বাচনে প্রীতিলতা হলের পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বৃহস্পতিবার দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বাসায় ফেরার পর শুক্রবার সকালে তিনি আবারও ভোট গণনার কাজে যোগ দিতে আসেন। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে সিনেট ভবনে পৌঁছে ভোট গণনার কক্ষের দরজার সামনেই হঠাৎ পড়ে যান তিনি।

চারুকলা বিভাগের সভাপতি শামীম রেজা জানান, তিনি নিজে প্রীতিলতা হলে রিটার্নিং অফিসার ছিলেন। জান্নাতুল গণনার কাজের জন্য এসেছিলেন তাঁর আহ্বানে। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে সহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় সবাই হতবাক হয়ে পড়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ভোটগ্রহণের দিন রাতভর কর্মব্যস্ততার কারণে সব হলে একসঙ্গে গণনা করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকালে প্রীতিলতা হলের গণনা চলছিল। সে সময়েই এ ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, “আমাদের সবাই শোকে আচ্ছন্ন। তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”

পরিবেশে শোকের ছায়া

জান্নাতুল ফেরদৌসের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে সিনেট ভবনের গণনাকক্ষে শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়ে। দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। কমিশনার রেজোয়ানা করিম স্নিগ্ধা মাইকে উপস্থিত সবার কাছে মরহুম শিক্ষকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করার আহ্বান জানান এবং জানান, প্রীতিলতা হলের ভোট গণনা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় এক তরুণ শিক্ষকের মৃত্যু পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রদায়কে গভীর শোকে নিমজ্জিত করেছে। সহকর্মী, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জান্নাতুল ফেরদৌসের পরিবারকে সমবেদনা জানানো হয়েছে।


শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১১ ১৬:২৮:১৪
শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে ভোট চলাকালীন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দুটি বড় ছাত্রসংগঠনছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল এবং ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল।

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের বর্জন ঘোষণা

বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। এ সময় প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শেখ সাদী হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তাঁরা অভিযোগ করেন, ভোটগ্রহণে নানা অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে তারা এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

ছাত্রশিবির সমর্থিত জোটের অভিযোগ

এদিকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটও একইভাবে অনিয়মের অভিযোগ তোলে। বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের যথাযথ প্রস্তুতি ছিল না। ক্যাম্পাসে ভীতি ও অনিয়মের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।”

তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন হলে বহিরাগতদের আনাগোনা দেখা গেছে এবং ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ভোটারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কিছু সিদ্ধান্ত নির্বাচনী পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য

অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়েছে। কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, “কিছু কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও ভোটগ্রহণ সামগ্রিকভাবে চলমান রয়েছে। যেসব কেন্দ্রে সাময়িক বিরতি ছিল, সেগুলোতে ভোটারদের সুবিধার্থে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে।”

নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা

এই নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন এবং পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন। মোট ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম থাকলেও দুপুরের পর তা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।


ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ২১:৫৩:৪৭
ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এ নির্বাচনে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করলেও সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসজুড়ে দেখা দিয়েছে থমথমে পরিস্থিতি।

প্রায় তিন দশকের বেশি সময় পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আয়োজিত এ নির্বাচনকে ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোরও নানা হিসাব-নিকাশ চলছিল। নানা আশঙ্কা ও আলোচনা-সমালোচনা সত্ত্বেও গত ১৫ দিনে প্রশাসনের উদ্যোগে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এটি মাত্র অষ্টম ডাকসু নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালে, যা ছিল বিতর্কিত।

এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। অন্যদিকে ১৮টি হল সংসদে ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন এক হাজার ৩৫ জন। সব মিলিয়ে একজন ভোটারকে মোট ৪১টি ভোট দিতে হয়েছে।

ভোটগ্রহণ শেষে শিক্ষার্থীরা ফলাফলের অপেক্ষায় থাকলেও বিকেল থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলতে শুরু করেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসজুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সামনেই শিক্ষার্থীদের ভিড় জমেছে ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায়।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শাহবাগ ও নীলক্ষেত এলাকায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম জানান, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে এবং সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

তবে নির্বাচন নিয়ে অভিযোগও তুলেছেন বিভিন্ন প্রার্থীরা। ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে যেতে গিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁরা। আচরণবিধিতে অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও তাঁকে কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় প্রার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।

অন্যদিকে ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী সাদেক কায়েম শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ডাকসু নির্বাচনে হার-জিতের কিছু নেই। জুলাই বিপ্লবের সহযোদ্ধা হিসেবে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। তাই শিক্ষার্থীরা যাকে বেছে নেবে, তাকেই মেনে নিতে হবে।” তিনিসতর্ককরেদেন, শিক্ষার্থীদেরওপরকিছুচাপিয়েদেওয়ারচেষ্টাকরলেতাউল্টোফলবয়েআনবে

সব মিলিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শেষে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে মূলত ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষা। তবে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সক্রিয় অবস্থানের কারণে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উত্তেজনা, আর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।


ডাকসু নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:৫৭:৫২
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ মঙ্গলবার। ভোটের আগের দিন নিজের কার্যালয়ে নির্বাচন আয়োজন ও প্রক্রিয়া নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন প্রকৃত অর্থেই ঐতিহাসিক, কারণ স্বাধীনতার পর মাত্র আটবার এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক চেতনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইতিবাচক ঐতিহ্য রেখে যাওয়ার লক্ষ্য—এই তিন কারণে নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে।

অধ্যাপক নিয়াজ জানান, ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ১১ মাস ধরে প্রশাসন ও অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এবারে ৮১০টি বুথ রাখা হয়েছে, যা পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। ভোটকেন্দ্রগুলো প্রথমবারের মতো আবাসিক হলের বাইরে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে কোনো বিতর্ক না থাকে। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, ভোট গণনার সময় প্রার্থীদের প্রতিনিধি, শিক্ষক, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকরাও উপস্থিত থাকবেন। বাইরে বড় পর্দায় গণনার দৃশ্য দেখানো হবে।

তবে সবকিছু সত্ত্বেও উপাচার্য মনে করেন, কোনো আয়োজনেই শতভাগ ‘ফুলপ্রুফ’ ব্যবস্থা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, অপ্রত্যাশিত কিছু ঝুঁকি থাকতেই পারে, তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও আনন্দঘন পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। তাঁর ভাষায়, “আমাদের লুকানোর কিছু নেই। সবাই ক্যামেরার অধীনে থাকবে। এ অবস্থায় কেউ রিগিং করার সাহস করবে না।”

সেনা মোতায়েনের প্রসঙ্গে তিনি জানান, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো অনুরোধ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আসেনি। ক্যাম্পাসে নিয়মিত সেনা উপস্থিতি রয়েছে, তবে ডাকসু নির্বাচনের জন্য তাদের প্রয়োজন হবে বলে তিনি মনে করেন না। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে।

উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ডাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদেরই অনুষ্ঠান, তাই সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে হবে। তিনি চান, এ নির্বাচন নিয়মিত ক্যালেন্ডারের অংশ হয়ে উঠুক এবং বছরে একবার অনুষ্ঠিত হোক। তিনি আরও জানান, প্রশাসন ইতিমধ্যে উপাচার্যের একক ক্ষমতা কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে—সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম গঠন ও আর্থিক ক্ষমতা সীমিত করার প্রস্তাব সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হয়েছে। ডাকসু সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও উপাচার্য একা নিতে পারবেন না, সিন্ডিকেটের পরামর্শ লাগবে।

প্রার্থীদের দেওয়া নানা প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনের কারণে আবেগ বেশি থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে প্রশাসন ও ছাত্র প্রতিনিধি একসঙ্গে বাস্তবায়নযোগ্য কাজগুলো করতে পারবে। তিনি বলেন, “আমরা আল্লাহর নামে এগোচ্ছি। শিক্ষার্থীদের সমর্থন, সারা দেশের মানুষের শুভকামনা এবং আমাদের সীমিত সামর্থ্যের প্রতিটি পদক্ষেপ মিলেই এই নির্বাচনকে সফল করবে।”

পাঠকের মতামত: