মাদ্রাসা শিক্ষকদের ফাঁদে ফেলছে ভুয়া ডিজি!

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ০৯:৫২:৩৮
মাদ্রাসা শিক্ষকদের ফাঁদে ফেলছে ভুয়া ডিজি!

পদোন্নতি, এমপিওভুক্তি, বরাদ্দ প্রদান, প্রশিক্ষণে মনোনয়ন কিংবা ইনডেক্স সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নামে পরিচয় দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুলে ফেলা হচ্ছে ভুয়া আইডি। এসব প্ল্যাটফর্মে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম, ছবি, পদবি এমনকি সরকারি লোগো, অফিসিয়াল প্যাড ও সিল-স্বাক্ষর জাল করে প্রতারকরা তৈরি করছে বিশ্বাসযোগ্যতার ছদ্মবেশ।

সম্প্রতি এই ধরনের প্রতারণার বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এক সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান মজুমদার স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিচয় ব্যবহার করে একটি চক্র শিক্ষক-কর্মচারীদের ফোন ও বার্তা পাঠিয়ে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের (বিকাশ, রকেট, নগদ) মাধ্যমে অর্থ দাবি করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, চক্রটি শুধু ফোনকলেই থেমে থাকছে না বরং হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে অধিদপ্তরের প্রকৃত কর্মকর্তাদের ছবি ও নাম ব্যবহার করে, কখনো কখনো জালিয়াতি করে তৈরি করা কাগজে 'ডিজি প্রতিনিধি' মনোনয়নের চিঠি বা 'বিশেষ বরাদ্দের অনুমোদন পত্র' পাঠিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভ্রান্ত করছে। প্রতারণার অংশ হিসেবে তারা উচ্চতর স্কেল অনুমোদন, প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুপারিশ, ইনডেক্স নম্বর সংশোধন কিংবা অভিযোগ নিষ্পত্তির আশ্বাস দিচ্ছে এবং বিনিময়ে অর্থ দাবি করছে।

অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, তাদের কোনো সেবা গ্রহণে কাউকে কোনো ধরনের অর্থ পরিশোধ করতে হয় না। সব কার্যক্রম নির্ধারিত সরকারি বিধি-বিধান ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এসব সেবাসংক্রান্ত সব তথ্য এবং সিদ্ধান্ত নিয়মিতভাবে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, যদি কেউ এমন প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন বা সন্দেহভাজন কোনো আচরণের মুখোমুখি হন, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা ব্যক্তি যেন অবিলম্বে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেন এবং প্রতারকদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করেন। একই সঙ্গে অনুরোধ জানানো হয়েছে, কেউ যেন এসব প্রতারক চক্রের প্রলোভনে পড়ে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেনে না জড়ান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশাসনিক শূন্যতা ও জবাবদিহির অভাবকে পুঁজি করেই এসব চক্র বছরের পর বছর সক্রিয় থাকতে সক্ষম হচ্ছে। তদ্বির-নির্ভর সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত কিছু শিক্ষক-কর্মচারীর দুর্বলতাও প্রতারকদের জন্য উপযোগী সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সদর্থক অবস্থান ও সচেতনতামূলক পদক্ষেপ সময়োপযোগী বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ