বেতন বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনের ঘোষণা

দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় বেতন ও সুযোগ-সুবিধায় বড় ধরনের বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ করেছেন। একই পাঠ্যক্রম, সমান ক্লাসঘণ্টা ও দায়িত্ব পালন করেও সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় তাদের আয় অনেক কম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা শুরুর বেতন, বাড়িভাড়া ভাতা মাত্র এক হাজার টাকা ও চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকায় জীবনযাপন তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান বলেন, “এই সামান্য ভাতায় শহর তো দূরের কথা, গ্রামেও মানসম্মত বাড়িভাড়া বা চিকিৎসা খরচ চালানো প্রায় অসম্ভব। অথচ এই কষ্ট কেউ বোঝে না।” তার মতে, শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কোনো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নেই।
এই অসন্তোষের কারণে প্রায় পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণের দাবিতে আগামী ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সমাবেশ শেষে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ লাগাতার কর্মসূচি হতে পারে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস রিজার্ভ করে শিক্ষকরা ঢাকায় আসবেন, আর শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) জানায়, মাধ্যমিক থেকে কলেজ পর্যন্ত প্রায় ৯৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়। দেশে বেসরকারি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৯ হাজার, যেখানে পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো এই প্রতিষ্ঠানগুলো, আর এর প্রাণভোমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থাতেই রয়ে গেছে গভীর বৈষম্য। সরকারি শিক্ষকদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের শতভাগ হলেও বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা মাত্র এক-চতুর্থাংশ, আর কর্মচারীদের জন্য অর্ধেক। এতে শিক্ষকরা বঞ্চনার চক্রে আটকে পড়ছেন।
শিক্ষক নেতা ও শিক্ষাবিদরা বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন—
১. সরকারি শিক্ষকদের মতো পূর্ণাঙ্গ জাতীয় বেতন কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তি ও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন নির্ধারণ।
২. বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা সরকারি শিক্ষকদের সমপর্যায়ে উন্নীত করা এবং বদলি ও পেনশন সুবিধা চালু।
৩. এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করা।
৪. শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া।
৫. নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষকদের সমস্যাগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দুই অধ্যাপক বলেন, শিক্ষকরা যদি বঞ্চনার শিকার হন, তবে দেশের শিক্ষা নামক ‘মেরুদণ্ড’ দুর্বল হয়ে পড়বে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে ও শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ এখন সময়ের দাবি। তারা মনে করেন, শিক্ষকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারলেই উন্নত ও শিক্ষিত জাতি গড়া সম্ভব।
/আশিক
‘প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই’—সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়া হবে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে—প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া।
আজ রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি (ACCGP) এবং অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটি (ACCEA)-র বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ কথা জানান।
ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “কিছু শ্রেণির বই মুদ্রণের জন্য ইতিমধ্যেই অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা প্রাপ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা খতিয়ে দেখছি, যেন কোনো স্কুল একাধিক বরাদ্দ না পায় বা অতীতে যেসব অনিয়মের অভিযোগ ছিল তা পুনরাবৃত্তি না হয়।”
তিনি জানান, সরকার চায় যেসব প্রতিষ্ঠান অতীতে নিয়মিতভাবে বই পেয়েছে তারা যেন এবারও পায়। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বই নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, “আমরা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করব। আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার—১ জানুয়ারির মধ্যে দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিতে হবে।”
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ঘোষণা শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর। কারণ সময়মতো বই হাতে পাওয়া গেলে শিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে শুরু করা সম্ভব হবে।
-আলমগীর হোসেন
হিজাব-নিকাব নিয়ে হেনস্তা বন্ধে পাবিপ্রবি প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) ভাইভা বা প্রেজেন্টেশনের মতো একাডেমিক কার্যক্রমে নারী শিক্ষার্থীদের নিকাব খুলতে বাধ্য না করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
নারী শিক্ষিকারা শনাক্ত করবেন পরিচয়
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু না হওয়া পর্যন্ত ভাইভা, প্রেজেন্টেশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিকাব খুলতে বাধ্য করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য নারী শিক্ষিকাদের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
একইসঙ্গে, কোনো ধরনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা বা শিক্ষার্থীদের বিদ্রুপ, ট্যাগিং বা বৈষম্যের শিকার না করার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত
গত ১৪ সেপ্টেম্বর সারা দেশে হিজাব ও নিকাব পরা শিক্ষার্থীদের হেনস্তার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা তিনটি দাবি তুলে ধরেছিল:
১. ছাত্রীদের শনাক্তকরণের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করা।
২. বায়োমেট্রিক চালু না হওয়া পর্যন্ত নারী শিক্ষিকাদের মাধ্যমে শনাক্তকরণ নিশ্চিত করা।
৩. হিজাব বা নিকাব খুলতে বাধ্য না করা এবং কোনো ধরনের বুলিং বা ট্যাগিং না করা।
শিক্ষার্থীদের এই দাবির প্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাকসু নির্বাচনে শিবিরের দাপট, ভিপি পদে স্বতন্ত্রের চমক!
৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে বড় ধরনের চমক দেখিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’। মোট ২৫টি পদে তারা ২০টিতে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন শিবির সমর্থিত মাজহারুল ইসলাম। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সিনেট কক্ষে নির্বাচন কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
ভিপি পদে জয়ী আব্দুর রশিদ জিতু বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তিনি এর আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি মোট ৩,৩৩৪ ভোট পান, যা তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিবির সমর্থিত প্রার্থী আরিফ উল্লাহর (২,৩৯২ ভোট) চেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে বেশি। অপরদিকে জিএস পদে ইংরেজি বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম ৩,৯৩০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের প্রার্থী আবু তৌহিদ মো. সিয়াম পেয়েছেন ১,২৩৮ ভোট।
শীর্ষ দুই পদের বাইরে শিবিরপন্থী প্যানেলের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে। এজিএস (পুরুষ) পদে ফেরদৌস আল হাসান এবং এজিএস (নারী) পদে আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক, পরিবেশ সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, নাট্য সম্পাদক, তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদকসহ একাধিক পদে তাদের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। কার্যকরী সদস্য পদেও তাদের প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্য ভোটে জয়ী হয়েছেন।
তবে সব পদেই শিবিরের দাপট দেখা যায়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্রীড়া সম্পাদক এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন। এছাড়া শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম সমাজসেবা সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছে। এই বৈচিত্র্যময় ফলাফলে ছাত্র রাজনীতির নানা প্রেক্ষাপট প্রতিফলিত হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক থেকে শিবিরপন্থী প্যানেলই প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে।
১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৫৯ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৯ জন, জিএস পদে ৮ জন এবং এজিএস পদে ১৬ জন প্রার্থী, যাদের মধ্যে ছয়জন নারী।
নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেছেন, প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পড়া শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও উৎসাহের প্রমাণ বহন করে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলেমিশে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার প্রত্যাশা রয়েছে। যদিও ভোট গ্রহণের আগে কিছু অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাত্রদল ও আরও কয়েকটি প্রগতিশীল সংগঠন নির্বাচন বর্জন করেছিল, তবুও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সম্পন্ন হওয়াটাই একটি বড় অর্জন বলে মনে করেন কমিশন।
জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনার সময় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় গণনার কক্ষের সামনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস (৩১)। দ্রুত তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা মৃত্যুর ঘোষণা দেন।
দায়িত্ব পালনকালে দুর্ঘটনা
জান্নাতুল ফেরদৌস জাকসু নির্বাচনে প্রীতিলতা হলের পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বৃহস্পতিবার দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বাসায় ফেরার পর শুক্রবার সকালে তিনি আবারও ভোট গণনার কাজে যোগ দিতে আসেন। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে সিনেট ভবনে পৌঁছে ভোট গণনার কক্ষের দরজার সামনেই হঠাৎ পড়ে যান তিনি।
চারুকলা বিভাগের সভাপতি শামীম রেজা জানান, তিনি নিজে প্রীতিলতা হলে রিটার্নিং অফিসার ছিলেন। জান্নাতুল গণনার কাজের জন্য এসেছিলেন তাঁর আহ্বানে। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে সহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় সবাই হতবাক হয়ে পড়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ভোটগ্রহণের দিন রাতভর কর্মব্যস্ততার কারণে সব হলে একসঙ্গে গণনা করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকালে প্রীতিলতা হলের গণনা চলছিল। সে সময়েই এ ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, “আমাদের সবাই শোকে আচ্ছন্ন। তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”
পরিবেশে শোকের ছায়া
জান্নাতুল ফেরদৌসের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে সিনেট ভবনের গণনাকক্ষে শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়ে। দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। কমিশনার রেজোয়ানা করিম স্নিগ্ধা মাইকে উপস্থিত সবার কাছে মরহুম শিক্ষকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করার আহ্বান জানান এবং জানান, প্রীতিলতা হলের ভোট গণনা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় এক তরুণ শিক্ষকের মৃত্যু পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রদায়কে গভীর শোকে নিমজ্জিত করেছে। সহকর্মী, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জান্নাতুল ফেরদৌসের পরিবারকে সমবেদনা জানানো হয়েছে।
শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে ভোট চলাকালীন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দুটি বড় ছাত্রসংগঠন—ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল এবং ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের বর্জন ঘোষণা
বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। এ সময় প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শেখ সাদী হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তাঁরা অভিযোগ করেন, ভোটগ্রহণে নানা অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে তারা এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন।
ছাত্রশিবির সমর্থিত জোটের অভিযোগ
এদিকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটও একইভাবে অনিয়মের অভিযোগ তোলে। বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের যথাযথ প্রস্তুতি ছিল না। ক্যাম্পাসে ভীতি ও অনিয়মের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।”
তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন হলে বহিরাগতদের আনাগোনা দেখা গেছে এবং ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ভোটারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কিছু সিদ্ধান্ত নির্বাচনী পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়েছে। কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, “কিছু কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও ভোটগ্রহণ সামগ্রিকভাবে চলমান রয়েছে। যেসব কেন্দ্রে সাময়িক বিরতি ছিল, সেগুলোতে ভোটারদের সুবিধার্থে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে।”
নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা
এই নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন এবং পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন। মোট ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম থাকলেও দুপুরের পর তা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।
ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এ নির্বাচনে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করলেও সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসজুড়ে দেখা দিয়েছে থমথমে পরিস্থিতি।
প্রায় তিন দশকের বেশি সময় পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আয়োজিত এ নির্বাচনকে ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোরও নানা হিসাব-নিকাশ চলছিল। নানা আশঙ্কা ও আলোচনা-সমালোচনা সত্ত্বেও গত ১৫ দিনে প্রশাসনের উদ্যোগে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এটি মাত্র অষ্টম ডাকসু নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালে, যা ছিল বিতর্কিত।
এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। অন্যদিকে ১৮টি হল সংসদে ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন এক হাজার ৩৫ জন। সব মিলিয়ে একজন ভোটারকে মোট ৪১টি ভোট দিতে হয়েছে।
ভোটগ্রহণ শেষে শিক্ষার্থীরা ফলাফলের অপেক্ষায় থাকলেও বিকেল থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলতে শুরু করেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসজুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সামনেই শিক্ষার্থীদের ভিড় জমেছে ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায়।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শাহবাগ ও নীলক্ষেত এলাকায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম জানান, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে এবং সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
তবে নির্বাচন নিয়ে অভিযোগও তুলেছেন বিভিন্ন প্রার্থীরা। ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে যেতে গিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁরা। আচরণবিধিতে অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও তাঁকে কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় প্রার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
অন্যদিকে ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী সাদেক কায়েম শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ডাকসু নির্বাচনে হার-জিতের কিছু নেই। জুলাই বিপ্লবের সহযোদ্ধা হিসেবে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। তাই শিক্ষার্থীরা যাকে বেছে নেবে, তাকেই মেনে নিতে হবে।” তিনিসতর্ককরেদেন, শিক্ষার্থীদেরওপরকিছুচাপিয়েদেওয়ারচেষ্টাকরলেতাউল্টোফলবয়েআনবে।
সব মিলিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শেষে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে মূলত ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষা। তবে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সক্রিয় অবস্থানের কারণে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উত্তেজনা, আর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ মঙ্গলবার। ভোটের আগের দিন নিজের কার্যালয়ে নির্বাচন আয়োজন ও প্রক্রিয়া নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন প্রকৃত অর্থেই ঐতিহাসিক, কারণ স্বাধীনতার পর মাত্র আটবার এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক চেতনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইতিবাচক ঐতিহ্য রেখে যাওয়ার লক্ষ্য—এই তিন কারণে নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে।
অধ্যাপক নিয়াজ জানান, ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ১১ মাস ধরে প্রশাসন ও অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এবারে ৮১০টি বুথ রাখা হয়েছে, যা পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। ভোটকেন্দ্রগুলো প্রথমবারের মতো আবাসিক হলের বাইরে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে কোনো বিতর্ক না থাকে। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, ভোট গণনার সময় প্রার্থীদের প্রতিনিধি, শিক্ষক, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকরাও উপস্থিত থাকবেন। বাইরে বড় পর্দায় গণনার দৃশ্য দেখানো হবে।
তবে সবকিছু সত্ত্বেও উপাচার্য মনে করেন, কোনো আয়োজনেই শতভাগ ‘ফুলপ্রুফ’ ব্যবস্থা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, অপ্রত্যাশিত কিছু ঝুঁকি থাকতেই পারে, তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও আনন্দঘন পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। তাঁর ভাষায়, “আমাদের লুকানোর কিছু নেই। সবাই ক্যামেরার অধীনে থাকবে। এ অবস্থায় কেউ রিগিং করার সাহস করবে না।”
সেনা মোতায়েনের প্রসঙ্গে তিনি জানান, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো অনুরোধ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আসেনি। ক্যাম্পাসে নিয়মিত সেনা উপস্থিতি রয়েছে, তবে ডাকসু নির্বাচনের জন্য তাদের প্রয়োজন হবে বলে তিনি মনে করেন না। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে।
উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ডাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদেরই অনুষ্ঠান, তাই সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে হবে। তিনি চান, এ নির্বাচন নিয়মিত ক্যালেন্ডারের অংশ হয়ে উঠুক এবং বছরে একবার অনুষ্ঠিত হোক। তিনি আরও জানান, প্রশাসন ইতিমধ্যে উপাচার্যের একক ক্ষমতা কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে—সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম গঠন ও আর্থিক ক্ষমতা সীমিত করার প্রস্তাব সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হয়েছে। ডাকসু সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও উপাচার্য একা নিতে পারবেন না, সিন্ডিকেটের পরামর্শ লাগবে।
প্রার্থীদের দেওয়া নানা প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনের কারণে আবেগ বেশি থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে প্রশাসন ও ছাত্র প্রতিনিধি একসঙ্গে বাস্তবায়নযোগ্য কাজগুলো করতে পারবে। তিনি বলেন, “আমরা আল্লাহর নামে এগোচ্ছি। শিক্ষার্থীদের সমর্থন, সারা দেশের মানুষের শুভকামনা এবং আমাদের সীমিত সামর্থ্যের প্রতিটি পদক্ষেপ মিলেই এই নির্বাচনকে সফল করবে।”
জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে জাকসু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ প্রকাশ করা হয়। নোটিশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান ও সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম স্বাক্ষর করেন।
নোটিশ অনুযায়ী, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করা হবে। তবে আলাদা সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য।
জাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করবেন। ২১টি আবাসিক হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ডোপ টেস্ট করবেন।
বাধ্যতামূলক শর্ত হিসেবে ডোপ টেস্ট
নোটিশে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইলে সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। এর বাইরে কোনো প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের জাকসুর গঠনতন্ত্রে বলা আছে যে মাদকাসক্ত কেউ জাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এর পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার দাবিতে অনশনে বসেছিলেন। এরপর আমরা প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করি এবং কেউই এর বিরোধিতা করেনি। তাই কমিশন সব প্রস্তুতি শেষ করে আজকের মধ্যে ডোপ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করছে, প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট প্রক্রিয়া নির্বাচনী প্রার্থীদের স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কাছে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।
যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থার শীর্ষে এএইচজেড
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিত্বকারী এএইচজেড এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার নির্ভরযোগ্য সহযোগী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত ২৫,০০০-এরও বেশি শিক্ষার্থীকে তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করেছে।
এমএইচ গ্লোবাল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এএইচজেড আজ একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। ১৫টি দেশে তাদের ৬৫টিরও বেশি শাখা রয়েছে। বাংলাদেশেও ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনায় ১০টিরও বেশি স্থানীয় শাখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এভাবে শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষায় ও পরিচিত পরিবেশে সহজে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছে।
বাংলাদেশে এএইচজেড-এর কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়াহিদ জামান বলেন, “প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্নই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ভর্তি নিশ্চিত করা পর্যন্ত আমরা তাদের প্রতিটি ধাপে পাশে থাকি। আমাদের লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের জন্য এই যাত্রাকে যতটা সম্ভব সহজ, মসৃণ ও চাপমুক্ত করে তোলা।”
বর্তমানে এএইচজেড-এর বৈশ্বিক টিমে রয়েছে ৭৫০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ কাউন্সিল-সার্টিফায়েড কাউন্সিলর, যারা সম্মিলিতভাবে ৬ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে সেবা প্রদান করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত কোর্স নির্বাচন, আবেদনপত্র তৈরি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ এবং স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP) প্রস্তুতকরণে তারা নির্ভুল দিকনির্দেশনা দেন। তাদের এই অভিজ্ঞতা ও পেশাদারিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ, এএইচজেড ৫০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে।
এএইচজেড শুধু ভর্তি প্রক্রিয়া নয়, বরং শিক্ষার্থীদের নতুন জীবনের প্রস্তুতিতেও সহায়তা করে। তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আইইএলটিএস সহায়তা, প্রি-ডিপার্চার ব্রিফিং, ব্রিটিশ সংস্কৃতি ও জীবনযাপন বিষয়ে ধারণা, আবাসন খোঁজার পরামর্শ, পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ এবং সাংস্কৃতিক মানিয়ে নেওয়ার দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২০১২ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত এএইচজেড আজ নৈতিকতা ও বিনামূল্যে পূর্ণাঙ্গ সেবা প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশ্বস্ত শিক্ষা পরামর্শদাতা সংস্থায় পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ভর্তি নিশ্চিতকরণ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণই তাদের প্রধান অঙ্গীকার।
পাঠকের মতামত:
- ঐক্য ধরে রাখতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: বিএনপি নেতার ‘খিচুড়ি কূটনীতি’
- গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’
- নিউইয়র্কের জাতিসংঘের মঞ্চে ড. ইউনূস: বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত
- গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ: জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য
- নিউইয়র্কের লাঞ্ছনা: সফরসঙ্গীদের ঘটনায় সরকারের ‘বিশেষ বার্তা’
- বিসিবি নির্বাচনে চমক: খসড়া ভোটার তালিকা ঘিরে চলছে নানা জল্পনা!
- ‘এই সময়’-এর সংবাদে ভুল? মির্জা ফখরুলের নতুন বক্তব্যে দানা বাঁধছে কৌতূহল
- ‘দ্য রেড জুলাই’র প্রতিবাদ: যুক্তরাষ্ট্রে লাঞ্ছনার জবাবে টিএসসিতে এক বিশেষ কর্মসূচি
- ‘দাওয়াত পেলেও যেতাম না’: প্রধান উপদেষ্টার সফর নিয়ে রনির কড়া মন্তব্য
- দেশের জ্বালানি খাতে আসছে নতুন গতি: ৪১৩ কোটি টাকার এক বড় চুক্তি
- গাজা নিয়ে ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনা: মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক
- কারাগারে মহিলা লীগ নেত্রী লিমাসহ ১০
- ৩৩ বছরের অপেক্ষার অবসান! অবশেষে কিং খানের ঘরে সেই কাঙ্ক্ষিত সম্মান
- শাহবাগে এনসিপি’র বিক্ষোভ: নিউইয়র্কে নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদ
- মানবদেহে নতুন অঙ্গের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা: ক্যানসার চিকিৎসায় আশার আলো
- মির্জা ফখরুলের অভিযোগ: ভারতের পত্রিকা সাক্ষাৎকার বিকৃত করেছে
- যুক্তরাষ্ট্রে আখতার ও জারাকে লাঞ্ছিত: নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
- প্রতীক ‘শাপলা’ না হলে নির্বাচন কীভাবে হয় দেখে নেবো: সারজিস
- চাকসু ও রাকসু নির্বাচনে নতুন সময়সূচি
- কৌতূহলবশত বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে ঢুকে বিদেশে ১৩ বছরের কিশোর
- সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ আর নেই
- আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করলে রাজনীতি নাই হয়ে যাবে: নাহিদ ইসলাম
- ডিএসইতে আজকের শেয়ারবাজারের সারসংক্ষেপ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বিসিবির কোষাগারে ১৩৯৮ কোটি টাকা রেখে দায়িত্ব ছাড়ছে বিদায়ী পর্ষদ
- পুলিশ পাবে ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা: নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে সরকারের নতুন উদ্যোগ
- শাপলা প্রতীক পাবে না এনসিপি
- টানা বৃষ্টি ও নতুন লঘুচাপ: তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অফিসের সতর্ক বার্তা
- আখতারের ওপর হামলা নিয়ে ঢাবি ছাত্রদলের কড়া হুঁশিয়ারি
- আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে নির্বাচন চান মির্জা ফখরুল
- জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে বিশ্বনেতারা
- সিরি আ’তে টানা চতুর্থ জয়ে শীর্ষে নাপোলি
- কক্সবাজারে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রতিশ্রুতি
- বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত নয়, ‘সবুজ সংকেত’ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর ষড়যন্ত্র: রিজভী
- ফিলিস্তিনবিরোধী অবস্থান: ম্যানেজারকে ছাঁটাই করলেন ডুয়া লিপা
- এনসিপি নেতা আখতারের উপর হামলা: হাসনাত আব্দুল্লাহর তীব্র ক্ষোভ ও হুঁশিয়ারি
- কড়া নিরাপত্তা ফাঁকি দিয়ে জোড়া খুনের আসামি পালালো বগুড়া আদালত থেকে
- ফোলা পা থেকে শ্বাসকষ্ট: কিডনি বিকল হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ৫ ইঙ্গিত
- হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের
- “আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা আমার দায়িত্ব”—শোকাহত পরিবারকে প্রধান উপদেষ্টা
- ফেব্রুয়ারির শুরুতেই বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা
- বিশ্ব বদলের ডাক: তরুণদের ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের
- নিউইয়র্কে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বেলজিয়ামের রানি ম্যাথিল্ডের বৈঠক
- ‘ভারত নাকি অস্ট্রেলিয়া, ওভাবে চিন্তা করছি না’: প্রতিপক্ষ নিয়ে নির্ভার মাহেদী
- মাকে পাশে নিয়ে ব্যালন ডি’অর হাতে নিলেন উসমান ডেম্বেলে
- যুক্তরাষ্ট্রে এনসিপি নেতা আখতারকে ডিম ছুড়ে হামলা
- দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ: স্বর্ণের দামে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতা
- ‘শত্রুদের অনুতপ্ত করবে’: ইরানের শীর্ষ জেনারেলের কড়া হুঁশিয়ারি
- সঞ্চয়পত্রকে ‘লেনদেনযোগ্য’ করার পথে সরকার? আসছে নতুন বাজার
- রেনেসাঁর দর্শন ও দিশা: গ্রিক-রোমান জ্ঞান, মুসলিম দার্শনিকদের ভূমিকা ও আধুনিকতার উন্মেষ
- অটোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস: উত্থান, পতন ও সভ্যতা–বিজ্ঞানে অবদান
- ডিএসইতে রবিবারের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গ্রেফতার বিএনপি নেতা হাজতে সিগারেট–ফোনে ব্যস্ত, ফাঁস হলো ছবি
- আফগানিস্তানে নারী লেখকদের বই নিষিদ্ধ করল তালেবান
- বরিশালে ১৭ বিয়ে কাণ্ড: বন কর্মকর্তা কবির হোসেন বরখাস্ত
- আদালত চত্বরে ব্যারিস্টার সুমনের বারবার উচ্চারণ: ‘ভালো থাকুক বাংলাদেশ’
- ডিএসইতে সোমবারের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বলিউডের গ্ল্যামার থেকে ব্যক্তিগত সংগ্রামের গল্প: জিনাত আমানের জীবন ও ভালোবাসা
- ১৭ সেপ্টেম্বর লেনদেনে উত্থান যে ১০ টি শেয়ারে
- “অপরাধী যে বাহিনীরই হোক, বিচারের আওতায় আনতে হবে”
- ট্রাম্পের তালিকায় ভারত–পাকিস্তান ‘মাদক পাচারকারী’ রাষ্ট্র
- চরিত্র বদলের খেলায় শুভশ্রী গাঙ্গুলি
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে ওলামা-মাশায়েখদের বিক্ষোভ