বেতন বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনের ঘোষণা

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ০৮:৫০:০১
বেতন বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনের ঘোষণা
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় বেতন ও সুযোগ-সুবিধায় বড় ধরনের বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ করেছেন। একই পাঠ্যক্রম, সমান ক্লাসঘণ্টা ও দায়িত্ব পালন করেও সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় তাদের আয় অনেক কম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা শুরুর বেতন, বাড়িভাড়া ভাতা মাত্র এক হাজার টাকা ও চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকায় জীবনযাপন তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান বলেন, “এই সামান্য ভাতায় শহর তো দূরের কথা, গ্রামেও মানসম্মত বাড়িভাড়া বা চিকিৎসা খরচ চালানো প্রায় অসম্ভব। অথচ এই কষ্ট কেউ বোঝে না।” তার মতে, শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কোনো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নেই।

এই অসন্তোষের কারণে প্রায় পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণের দাবিতে আগামী ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সমাবেশ শেষে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ লাগাতার কর্মসূচি হতে পারে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস রিজার্ভ করে শিক্ষকরা ঢাকায় আসবেন, আর শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করবেন।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) জানায়, মাধ্যমিক থেকে কলেজ পর্যন্ত প্রায় ৯৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়। দেশে বেসরকারি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৯ হাজার, যেখানে পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো এই প্রতিষ্ঠানগুলো, আর এর প্রাণভোমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থাতেই রয়ে গেছে গভীর বৈষম্য। সরকারি শিক্ষকদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের শতভাগ হলেও বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা মাত্র এক-চতুর্থাংশ, আর কর্মচারীদের জন্য অর্ধেক। এতে শিক্ষকরা বঞ্চনার চক্রে আটকে পড়ছেন।

শিক্ষক নেতা ও শিক্ষাবিদরা বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন—

১. সরকারি শিক্ষকদের মতো পূর্ণাঙ্গ জাতীয় বেতন কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তি ও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন নির্ধারণ।

২. বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা সরকারি শিক্ষকদের সমপর্যায়ে উন্নীত করা এবং বদলি ও পেনশন সুবিধা চালু।

৩. এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করা।

৪. শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া।

৫. নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষকদের সমস্যাগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দুই অধ্যাপক বলেন, শিক্ষকরা যদি বঞ্চনার শিকার হন, তবে দেশের শিক্ষা নামক ‘মেরুদণ্ড’ দুর্বল হয়ে পড়বে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে ও শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ এখন সময়ের দাবি। তারা মনে করেন, শিক্ষকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারলেই উন্নত ও শিক্ষিত জাতি গড়া সম্ভব।

/আশিক


ঢাকার সাত সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১২:৩০:০২
ঢাকার সাত সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগরীর সরকারি সাত কলেজকে কেন্দ্র করে গঠনের প্রস্তাবিত ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’-এর শিক্ষা ব্যবস্থায় আনা হচ্ছে যুগোপযোগী পরিবর্তন। হাইব্রিড ও আন্তঃবিভাগীয় (ইন্টারডিসিপ্লিনারি) পাঠক্রমের মডেলে পরিচালিত হবে নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। এতে ৪০ শতাংশ ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে অনলাইনে এবং বাকি ৬০ শতাংশ সশরীরে ক্যাম্পাসে।

সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবর রহমান, যিনি সচিবের রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন, এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, “ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম হবে সম্পূর্ণ নতুন কাঠামোতে গঠিত, যেখানে ভার্চুয়াল ও অফলাইন উভয় মাধ্যমের মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “সব ধরনের পরীক্ষা হবে সশরীরে এবং একাডেমিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে শারীরিক উপস্থিতির ওপর জোর দেওয়া হবে। তবে ক্লাস পরিচালনায় প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়ানো হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা সময় ও জ্ঞান উভয় দিক থেকেই উপকৃত হতে পারেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম কাঠামো সম্পর্কে তিনি জানান, এখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী প্রথম চারটি সেমিস্টারে ‘নন-মেজর’ কোর্সসমূহ অধ্যয়ন করবে। এতে মূলত বহুমুখী দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকবে এবং ভিন্ন বিষয়ের প্রাথমিক ধারণা তৈরি হবে। এরপর পরবর্তী চারটি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট ‘মেজর’ ডিসিপ্লিন অনুযায়ী পড়াশোনা করবেন।

তবে শিক্ষার্থীরা তাদের মেজর পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন পঞ্চম সেমিস্টার থেকে, যদি নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করেন। এই পরিবর্তনের সুযোগ শুধুমাত্র বিষয়ের (ডিসিপ্লিনের) মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে; ক্যাম্পাস পরিবর্তন করার সুযোগ থাকবে না।

-রফিক


একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু, ফি পরিশোধে সুখবর!

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০১ ০৯:৪২:৩০
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু, ফি পরিশোধে সুখবর!
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণি ও কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে ৩০ জুলাই থেকে এবং তা চলবে আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত। পাশাপাশি, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের (বিটিইবি) অধীন কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ভর্তি আবেদন শুরু হয়েছে একই তারিখে, যা চলবে ১৪ আগস্ট, ২০২৫ পর্যন্ত।

ভর্তির আবেদন ও রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম সহজ এবং নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে থাকছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বিকাশ। শিক্ষার্থীরা সহজেই বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই আবেদন ফি এবং রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ করতে পারবেন।

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রথমে শিক্ষার্থীকে https://xiclassadmission.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হবে। এরপর আবেদন ফি পরিশোধের জন্য বিকাশ অ্যাপে ‘এডুকেশন ফি’ অপশনে গিয়ে ‘XI Class Admission’ নির্বাচন করতে হবে। এরপর বোর্ডের নাম, পাসের বছর, এসএসসি রোল নম্বর এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।

স্ক্রিনে নির্ধারিত ফি প্রদর্শিত হলে বিকাশ পিন দিয়ে ‘চেপে ধরে রাখুন’ অপশনে ট্যাপ করে লেনদেন সম্পন্ন করতে হবে। পেমেন্ট সফল হলে নিশ্চিতকরণ বার্তা এবং একটি ডিজিটাল রিসিট পাওয়া যাবে, যা ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণযোগ্য।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদনেও প্রক্রিয়া প্রায় একই। বিকাশ অ্যাপে ‘এডুকেশন ফি’ অপশন থেকে ‘BTEB’ নির্বাচন করতে হবে এবং নির্ধারিত পেমেন্ট কোড (যেমন: প্রোগ্রাম কোড + পাসের বছর + বোর্ড কোড + রোল নম্বর) লিখে ফি-এর পরিমাণ দেখে নেওয়ার পর বিকাশ পিন দিয়ে লেনদেন নিশ্চিত করতে হবে। সফলভাবে পেমেন্ট সম্পন্ন হলে নিশ্চিতকরণ বার্তা ও ডিজিটাল রিসিট প্রদান করা হবে। পরে শিক্ষার্থীকে http://btebadmission.gov.bd/website লিঙ্কে গিয়ে চূড়ান্ত আবেদন করতে হবে।


বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যে বিষয়ে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ১৪:৩৮:৪৮
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যে বিষয়ে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা নিতে ইচ্ছুক বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। দূতাবাস থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, যারা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বীকৃত ও অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন, তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্টুডেন্ট ভিসা (F-1) আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস জানায়, শিক্ষার্থী ভিসা আবেদন ও অনুমোদনের একটি নির্ধারিত সময়সীমা রয়েছে। প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন ধাপে সম্পন্ন হয় এবং কিছু সময় ব্যয় হয় বিধায় নির্ধারিত সেমিস্টার শুরুর আগেই আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করা অপরিহার্য। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সময়মতো তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারবেন এবং শিক্ষাজীবনের সূচনাতেই কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।

দূতাবাস আরও সতর্ক করে বলেছে, অনেক সময় শেষ মুহূর্তে ভিসা আবেদনের কারণে জটিলতা দেখা দেয় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্ব ঘটে, যা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা যাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যথাসময়ে আবেদন করলে এই ধরনের অপ্রত্যাশিত বিলম্ব এড়ানো সম্ভব হবে।

উল্লেখযোগ্য যে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আবেদন করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী এসব শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে মার্কিন দূতাবাস নিয়মিতভাবে তথ্যভিত্তিক সহায়তা প্রদান করে এবং স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করতে সচেষ্ট থাকে।

বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের নির্ভুল তথ্য পাওয়ার জন্য দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা সংক্রান্ত সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেকোনো বিভ্রান্তি এড়াতে শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

-রাফসান


প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের জন্য নতুন যুগের সূচনা

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৯ ১০:৩৩:২৫
প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের জন্য নতুন যুগের সূচনা
ছবি: সংগৃহীত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা অনুমোদন দিয়েছে সরকার। দেশের প্রায় ৬৫ হাজার বিদ্যালয়ের জন্য এই সিদ্ধান্তকে ‘যুগান্তকারী’ হিসেবে দেখছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মতে, দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত এই পদক্ষেপ প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং তাদের পেশাগত মর্যাদা সুসংহত করবে।

এই সিদ্ধান্তে প্রাথমিক শিক্ষক মহলে স্বস্তি নেমে এসেছে। তারা সরকারের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলছেন, এটি তাদের আত্মমর্যাদা ও পেশাদারিত্বে নতুন মাত্রা যোগ করবে। তবে তারা আরও কিছু দাবি বাস্তবায়নের তাগিদ দিচ্ছেন, বিশেষ করে সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেড নিশ্চিত করা, জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি এবং দীর্ঘ মেয়াদে চাকরি করলে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির সুযোগ।

বর্তমানে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫০২টি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন ৩১ হাজার ৩৯৬ জন। তাদের কেউ ১২তম, কেউ ১১তম, আবার কেউ কেউ ইতিমধ্যে ৮ম, ৯ম ও ১০ম গ্রেডে রয়েছেন।

১২তম গ্রেডে থাকা প্রধান শিক্ষকরা এখন দশম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার ফলে তাদের মূল বেতন গড়ে ৪ হাজার ৭০০ টাকা বাড়ছে। বাড়িভাড়া ভাতা গড়ে ১ হাজার ৬৩৫ টাকা বাড়ছে, উৎসব ভাতা বাড়ছে ৪ হাজার ৭০০ টাকা, বিশেষ ভাতা ৭০৫ টাকা এবং নববর্ষ ভাতা ৯৪০ টাকা বাড়বে।

এই ক্যাটাগরির মাত্র ১ হাজার ১৫৪ জন প্রধান শিক্ষকের জন্য সরকারের বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ১১ কোটি টাকা।

১১তম গ্রেডে থাকা প্রধান শিক্ষক যারা এবার দশম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন, তাদের সংখ্যাও বড়—১৩ হাজার ৮৫৪ জন। এদের মূল বেতন গড়ে ৩ হাজার ৫০০ টাকা বাড়বে। বাড়িভাড়া ১ হাজার ৯৫ টাকা, উৎসব ভাতা ৩ হাজার ৫০০ টাকা, বিশেষ ভাতা ৫২৫ টাকা এবং নববর্ষ ভাতা ৭০০ টাকা করে বাড়বে।

এই গ্রুপের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিতে সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ৯৬ কোটি টাকা।

এদিকে যেসব প্রধান শিক্ষক ইতিমধ্যেই উচ্চতর গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন, যেমন অষ্টম বা নবম গ্রেড, তাদের ক্ষেত্রে এই নতুন সিদ্ধান্তের প্রভাব নেই। তারা আগের মতোই তাদের গ্রেড অনুযায়ী বেতন-ভাতা পেতে থাকবেন।

এই মুহূর্তে প্রধান শিক্ষক পদের ৩৪ হাজার ১০৬টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে ৩১ হাজার ৪৫৯টি পদ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণের পরিকল্পনা রয়েছে। এদের সবাই বর্তমানে সহকারী শিক্ষক হিসেবে ১১তম গ্রেডে বেতন পান। পদোন্নতি পেয়ে তারা দশম গ্রেডে এলে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ২১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

অন্যদিকে সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদ রয়েছে ২ হাজার ৬৪৭টি। এসব পদে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা পূর্বে ১২তম গ্রেডে বেতন পেতেন। এখন তারা সরাসরি দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাবেন। এতে সরকারের বাড়তি খরচ হবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

মোট ব্যয় হিসাব করলে দেখা যায়, কর্মরত প্রধান শিক্ষক, পদোন্নতিযোগ্য শূন্যপদ এবং সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদ মিলিয়ে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৩৪৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা। ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক হাইকোর্টে রিট করার পর আদালত তাদের দশম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেন। এরপর শিক্ষকরা সমবেত হয়ে সব প্রধান শিক্ষকের জন্য একই সুবিধা দাবি করেন এবং রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বড় ধরনের শিক্ষক সমাবেশ করেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে একটি সুসংহত প্রস্তাব তৈরি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয় এর অনুমোদন দেয় এবং তা বাস্তবায়নের পথ সুগম হয়।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে শিক্ষকদের পেশাগত উদ্দীপনা বাড়বে এবং প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে তারা আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন।"

এছাড়াও মন্ত্রণালয় একে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের প্রতি দায়িত্ববোধ ও সম্মান প্রদর্শনের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তারা বলছে, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করার মাধ্যমে সরকার তার দায়বদ্ধতা ও সম্মান প্রদর্শন করেছে।”

প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, “প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীত করায় আমরা কৃতজ্ঞ। তবে আমাদের আরও দাবিগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বিশেষ করে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ, জ্যেষ্ঠদের শতভাগ পদোন্নতি এবং চাকরির বয়স বিবেচনায় উচ্চতর গ্রেডের বিষয়টি আমরা সরকারকে সময়সীমা বেঁধে জানিয়ে দিয়েছি।”

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, “শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অধিদপ্তরও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছে। এবার উচ্চ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে প্রস্তাব তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সম্মতিক্রমে অর্থ মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন দিয়েছে।”

-রফিক


অবশেষে দশম গ্রেড পাচ্ছেন প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকরা, কিন্তু আছে কিছু শর্ত!

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৮ ২১:৪৫:৩৩
অবশেষে দশম গ্রেড পাচ্ছেন প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকরা, কিন্তু আছে কিছু শর্ত!
ছবি: সংগৃহীত

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, শর্ত পূরণে মিলবে সুবিধাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডের বেতন-ভাতার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে এখন থেকে তারা দশম গ্রেড অনুযায়ী বেতন ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।

সোমবার (২৮ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। উপসচিব খালেদা নাছরিনের সই করা আদেশটি প্রকাশের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তবে এই সুবিধা পেতে প্রধান শিক্ষকদের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে—

প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টার সম্মতি নেওয়া

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন গ্রহণ

প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ গ্রহণ

অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখা কর্তৃক বেতন স্কেল যাচাই ও নির্ধারণ

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে চার কপি সরকারি আদেশ (জিও) জারি করে অর্থ বিভাগের পৃষ্ঠাঙ্কন গ্রহণ

সংশ্লিষ্ট দপ্তরের টিওঅ্যান্ডই হালনাগাদ করে উন্নীত পদ অন্তর্ভুক্ত করা

বিদ্যমান নিয়োগবিধি সংশোধন করে নতুন গ্রেড অন্তর্ভুক্ত করা

যারা এখনো প্রশিক্ষণ নেননি, তাদের ১৮ মাসের মধ্যে বিটিপিটি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সব শর্ত মেনে চলা

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব শর্ত পূরণ সাপেক্ষেই প্রধান শিক্ষকরা দশম গ্রেডে উন্নীত হবেন এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেতন ও সুবিধা পাবেন। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হবে।

/আশিক


২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি: কোটা নীতিমালায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৪ ১৯:৫৭:৩২
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি: কোটা নীতিমালায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
ছবি: সংগৃহীত

চলতি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চূড়ান্ত নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী, ভর্তির জন্য আবেদন, নির্বাচন, নিশ্চয়ন এবং শেষে চূড়ান্ত ভর্তি—এই ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

এবারও ভর্তিতে ৭ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তর বা সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের জন্য সংরক্ষিত। মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা শুধু তাঁদের ছেলে-মেয়েরা পাবেন, নাতি-নাতনিরা এই কোটার আওতায় আসবে না।

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না থাকলে সেই আসন ফাঁকা না রেখে মেধা তালিকা অনুযায়ী অন্য শিক্ষার্থীকে ভর্তি করাতে হবে। একইভাবে, পোষ্য কোটায়ও প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হলে তাদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করতে হবে। পোষ্য কোটার জন্য নির্ধারিত দপ্তর থেকে প্রমাণপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

অন্যদিকে, জুলাই মাসের শিক্ষার্থী আন্দোলনে আহত ও হতাহতদের পরিবারের জন্য প্রস্তাবিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোটা’ নীতিমালায় রাখা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে শিক্ষা বোর্ডের প্রস্তাবিত খসড়ার ওপর ভিত্তি করে আলোচনা শেষে তা বাদ দেওয়া হয়।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ৯৩ শতাংশ আসন উন্মুক্ত থাকবে এবং তা মেধার ভিত্তিতে ভর্তি নিশ্চিত করা হবে। তবে মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের প্রতিষ্ঠানগুলোতে পোষ্য কোটার আওতায় ২ শতাংশ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে, যদি তারা ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করে।

মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত গেজেট বা সনদপত্রের সত্যায়িত কপি আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে এবং ভর্তি চলাকালে মূল কপি দেখাতে হবে। সব ধরনের যাচাই-বাছাই শেষে কোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব বলেন, "প্রাথমিক খসড়া তৈরির সময় শিক্ষা বোর্ড কিছু সুপারিশ করেছিল। পরে সেসব বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত আলোচনা করে চূড়ান্ত নীতিমালা করা হয়েছে, যেন ভবিষ্যতে কোনো বিতর্ক না হয়।"

/আশিক


বিমান দুর্ঘটনায় পিছিয়ে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৩ ২০:০৬:৪৯
বিমান দুর্ঘটনায় পিছিয়ে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা
ছবিঃ সংগৃহীত

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। সংশ্লিষ্ট বোর্ডের নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার (২৩ জুলাই) এ তথ্য জানানো হয়।

ঘোষণায় বলা হয়, ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের নির্ধারিত এইচএসসি পরীক্ষা যথাক্রমে আগামী ১৭ ও ১৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। দুর্ঘটনার কারণে স্থগিত হওয়া লিখিত পরীক্ষার কারণে ব্যবহারিক পরীক্ষার সময়ও পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন সূচি অনুযায়ী, ব্যবহারিক পরীক্ষা ২১ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এ পরীক্ষার নম্বর ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইনে আপলোড করতে হবে। পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক খাতা, স্বাক্ষর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র রোল নম্বর অনুসারে সাজিয়ে কেন্দ্র সচিব বা তার মনোনীত প্রতিনিধির কাছে জমা দিতে হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বোর্ডের নির্ধারিত নির্দেশনা অনুযায়ী যথাসময়ে পরীক্ষাগুলো পরিচালনা এবং ফলাফল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, পরীক্ষার নিরাপত্তা, প্রশ্নপত্র বিতরণ ও সময়মতো পরীক্ষার ফলাফল প্রক্রিয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় আজকের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২২ ১০:০৬:২৬
মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় আজকের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) নির্ধারিত এইচএসসি ও সমমানের সকল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, “শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টার উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হচ্ছে, পরিস্থিতির ভয়াবহতা এবং জননিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে আজকের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।” তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই বার্তাটি প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং উদ্ভূত সংকটময় পরিস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় বহু শিক্ষার্থী আহত ও আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ায়, পরীক্ষাকেন্দ্রের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছিল না।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থগিত হওয়া পরীক্ষার নতুন সময়সূচি পরবর্তীতে জানানো হবে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতি ধৈর্য ও সহনশীলতা প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য,গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার কিছু পর একটি এফ-৭ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজ ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে ২৭ জনের প্রাণহানিসহ বহু শিক্ষার্থী আহত হন এবং চারদিকে সৃষ্টি হয় চরম আতঙ্ক। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তৎপর হয়।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের কঠোর নিয়ম চালু, ছাত্র ভিসায় থাকছে পরিবর্তন

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১৬:০৯:২১
অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের কঠোর নিয়ম চালু, ছাত্র ভিসায় থাকছে পরিবর্তন

২০২৪-২৫ অর্থবছরের সূচনায় অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের অভিবাসন নীতিতে আনছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন, যা ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে। এসব পরিবর্তন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, দক্ষ কর্মী, উদ্যোক্তা ও স্থায়ী অভিবাসন প্রত্যাশীদের জীবন ও পরিকল্পনায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।

প্রথমত, নতুন নীতিমালায় ছাত্র ভিসার ফি ১,৬০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২,০০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, স্পনসর ভিত্তিক ভিসার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বেতন (TSMIT) ৭৩,১৫০ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৬,৫১৫ ডলার এবং বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন পেশাজীবীদের জন্য বেতনসীমা ১,৩৫,০০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১,৪১,২১০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই বর্ধিত ব্যয় নিয়োগদাতাদের উপর আর্থিক চাপ তৈরি করলেও বিদেশি কর্মীদের জন্য এটি একটি সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ।

দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন রাজ্য—যেমন দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, কুইন্সল্যান্ড, ভিক্টোরিয়া, নিউ সাউথ ওয়েলস ও নর্দান টেরিটরি ইতোমধ্যেই রাজ্যভিত্তিক মনোনয়ন আবেদন গ্রহণ বন্ধ করেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া ও ক্যানবেরাও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে অভিবাসন দপ্তর জানিয়েছে, জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে নতুন কোটা ঘোষণার পর মনোনয়ন কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে।

তৃতীয়ত, আঞ্চলিক এলাকায় কাজের সুযোগ আরও বাড়াতে ডেজিগনেটেড এরিয়া মাইগ্রেশন এগ্রিমেন্ট (ডামা ভিসা) ব্যবস্থাকে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এই ভিসায় আবেদনকারীদের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৫ বছর এবং ইংরেজি দক্ষতার ক্ষেত্রে শিথিলতা রাখা হয়েছে। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় গত এক বছরে ডামা ভিসার আবেদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এই ভিসা এখন শুধুমাত্র আঞ্চলিক কাজের সুযোগ নয়, অনেকের জন্য স্থায়ী বসবাসের পথও হয়ে উঠছে।

চতুর্থত, অস্ট্রেলিয়া সরকার নতুন একটি স্থায়ী ভিসা চালু করতে যাচ্ছে যার নাম 'ন্যাশনাল ইনোভেশন ভিসা'। এটি মূলত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিভাবান প্রযুক্তিবিদ, উদ্ভাবক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া প্রথম রাজ্য হিসেবে এই ভিসার মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এতে উদ্যোক্তাদের জন্য সাত স্তরের আবেদন পদ্ধতি থাকবে এবং প্রার্থীদের প্রমাণ দিতে হবে যে তাদের ব্যবসায়িক ধারণা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে। আবেদনপত্রে একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ প্যানেলের অনুমোদন বাধ্যতামূলক থাকবে।

পঞ্চমত, ৪৮২ টেম্পোরারি স্কিলড ভিসায় আবেদন বাতিলের হার চলতি বছরে ৪১ শতাংশ বেড়েছে। বাতিল হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো অনেক ক্ষেত্রে মনোনীত পেশা বাস্তব চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেমন, একটি ছোট ক্যাফে থেকে ফুলটাইম শেফ নিয়োগের জন্য ভিসা আবেদন করলেও তা উপযুক্ত বিবেচিত হচ্ছে না। ফলে, এখন আবেদন যাচাইয়ের প্রক্রিয়ায় আরও বেশি কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে।

অভিজ্ঞ অভিবাসন পরামর্শকদের মতে, এসব পরিবর্তন অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করলেও, যারা বাস্তবতা বুঝে, সঠিক প্রস্তুতি নেয় এবং পেশাগতভাবে পরিকল্পনা সাজিয়ে এগিয়ে যায় তাদের জন্য এই পরিবর্তন হতে পারে সম্ভাবনার দ্বার। তারা পরামর্শ দিচ্ছেন, এখনই স্কিল অ্যাসেসমেন্ট সম্পন্ন করা, ইংরেজি পরীক্ষায় ভালো স্কোর অর্জনের দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং অভিজ্ঞ পরামর্শকের সহায়তা নিয়ে পরিকল্পনা সাজানো উচিত।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত: