স্টারলিংক চালু, সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কি?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২১ ১৭:২৯:৩৮
স্টারলিংক চালু, সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কি?

সত্য নিউজ: যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করেছে। দ্রুত গতিতে দেশের আইনি কাঠামো প্রস্তুত করে লাইসেন্স প্রদান এবং ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টিতে অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের সফলতা হিসেবে দেখছে এই উদ্যোগকে।

সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এই সেবাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়েছে, যা দেশের ইন্টারনেট অবকাঠামোর মান উন্নয়নে সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। তবে এই দ্রুত প্রসারে সরকারি পক্ষের ‘তাড়াহুড়া’ এবং ‘অতি প্রচার’ নিয়ে বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে স্টারলিংকের জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ ও গ্লোবাল চাপ

প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের আইসিটি বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তাড়াহুড়াকে দেশের ইন্টারনেট সমস্যার সমাধানে ‘জনস্বার্থ’ রক্ষা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুতগতির, মানসম্পন্ন ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে স্টারলিংক একটি কার্যকর বিকল্প।”

আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রশাসন বিভিন্ন দেশে স্টারলিংকের ব্যবসা সম্প্রসারণে চাপ প্রয়োগ করেছে। পুলিৎজার বিজয়ী ‘প্রোপাবলিকা’ সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশেও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা স্টারলিংকের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

বিশেষ করে বাইডেন প্রশাসনের আমলে শুরু হওয়া উদ্যোগ ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে সফলতার মুখ দেখেছে, যেখানে মাস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কাজ করা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের সক্রিয় উদ্যোগ ও দ্রুত গতির সিদ্ধান্ত গ্রহণ

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস দুবাই থেকে ইলন মাস্কের সঙ্গে আলোচনায় বসেন, যার ফলশ্রুতিতে মাত্র ৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংকের বাণিজ্যিক সেবা চালুর পথ সুগম হয়।

অধিকারিক সূত্রে জানা যায়, বিটিআরসি দ্রুত ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট অপারেটর’ লাইসেন্সিং নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং স্টারলিংকের আবেদন অনুমোদন দেয়। এর পর মাত্র এক মাসের মধ্যেই সেবা চালু হওয়ার ঘোষণা আসে।

স্টারলিংকের সুবিধা ও সরকারের প্রত্যাশা

সরকার মনে করছে, স্টারলিংক দেশের নিকৃষ্ট মানের ইন্টারনেটের বিকল্প হবে, যা ফ্রিল্যান্সার, তরুণ উদ্যোক্তা, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীসহ অনেক ক্ষেত্রেই নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। বিশেষ সহকারী তৈয়্যব বলেন, “স্টারলিংকের সেবা গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের জন্য মোবাইল টাওয়ারের সমতুল্য ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করবে।”

সরকারের পক্ষে এটি একটি ‘রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি’ এবং বিদেশি বিনিয়োগবান্ধব দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় করার অন্যতম হাতিয়ার।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বাজারের প্রতিক্রিয়া

দেশীয় ইন্টারনেট সেবাদাতারা (আইএসপি) স্টারলিংকের আগমনে গ্রাহক হ্রাসের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তবে সরকার আইএসপি’দের সতর্ক করে বলেছে, তারা এখনো নিম্নগতির সেবা দিয়ে ‘ব্রডব্যান্ড’ দাবি করতে পারবে না এবং মানসম্মত সেবা দিতে বাধ্য থাকবে।

স্টারলিংকের মোবিলিটি অপশন না রাখায় সরকার স্থানীয় আইএসপি’দের একটি সুযোগ রেখেছে, তবে তাদের মান উন্নয়নে চাপ থাকবে।

নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা

সরকার স্টারলিংকের লাইসেন্স শর্তে স্থানীয় ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) ব্যবহার নিশ্চিত করেছে, যার মাধ্যমে প্রয়োজনে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বর্তমানে ইন্টারনেট শাটডাউন বন্ধ রাখতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সংশ্লিষ্ট আইন পরিবর্তনের পথে।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও বিনিয়োগ

স্টারলিংকের বিনিয়োগের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না করলেও, ইন্দোনেশিয়ার অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্যাটেলাইট ও ডিভাইসের সংখ্যা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশে ইন্টারনেট অবকাঠামোতে এই নতুন সংযোজন দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণের সূচনা হিসেবে বিবেচিত হবে।

বাংলাদেশে স্টারলিংক সেবা চালুর দ্রুত প্রক্রিয়া, কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং সরকারের তাড়াহুড়া মূলত দেশের ইন্টারনেট মান উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গঠনের একটি অংশ। যদিও স্থানীয় সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে, স্টারলিংকের আগমন ডিজিটাল বৈষম্য কমাতে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সরকারের তৎপরতা ও আন্তর্জাতিক চাপ এই সেবার সফল বাস্তবায়নের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে।


জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ২০:১৪:৩৭
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নতুন সীমানা মেনেই অনুষ্ঠিত হবে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

ইসি সচিব জানান, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, যা খুব শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।

নতুন এই সীমানায় কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। গাজীপুরে একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়েছে, আর বাগেরহাটে একটি আসন কমিয়ে তিনটি নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ২৬১টি আসনের সীমানা অপরিবর্তিত রেখে বাকি ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন এনে নতুন সীমানার খসড়া গত ৩০ জুলাই প্রকাশ করেছিল ইসি।

খসড়া প্রকাশের পর সংসদীয় এলাকার সীমানা নিয়ে বিভিন্ন দাবি ও আপত্তি জানানোর জন্য ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে মোট ১ হাজার ৮৯৩টি আপত্তি এবং সুপারিশ জমা পড়ে। এর মধ্যে ৩৩ জেলার ৮৪টি আসন সম্পর্কিত ১ হাজার ১৮৫টি আপত্তি এবং ৭০৮টি পরামর্শ ছিল। উভয় পক্ষ থেকেই মতামত এসেছিল, যার ওপর ভিত্তি করে ইসি আপত্তিগুলো প্রথমে শোনেন।

গত ২৪ থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন ধরে প্রস্তাবিত নির্বাচনী এলাকার সীমানা নিয়ে উত্থাপিত দাবি, আপত্তি ও আবেদনের ওপর শুনানি করে নির্বাচন কমিশন। তখন ইসি সচিব জানিয়েছিলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সবকিছু পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ীই এবার চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো।


দেশে ফিরতে চাইলে তারেক রহমানকে সহায়তা দেবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ২০:০৫:১৮
দেশে ফিরতে চাইলে তারেক রহমানকে সহায়তা দেবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি দেশে ফিরতে চান, তবে সরকার তাকে সব ধরনের সহায়তা দেবে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত বিষয়। তার ভ্রমণ সংক্রান্ত নথিপত্র বা ট্রাভেল ডকুমেন্টস নিয়ে কোনো সমস্যা থাকলে, সরকার তা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

তৌহিদ হোসেন জানান, তারেক রহমান পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন কি না, সে বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। তিনি যখন দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন, তখন তার জন্য প্রয়োজনীয় পাসপোর্ট বা অন্য যেকোনো ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্র সরবরাহ করা হবে।

সরকার নিজে থেকে তাকে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ নেবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আমার মনে হয় সেটার প্রয়োজন নেই। তিনি যখনই দেশে ফিরতে চাইবেন, আমাদের যতটুকু সহযোগিতা করার দরকার, আমরা অবশ্যই করব।"

এছাড়াও, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, এ নিয়ে ভারতকে নতুন করে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। একটি চিঠি একবারই দেওয়া হয়েছে এবং এরপর এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হলে তা সবাইকে জানানো হবে।


পোস্টারবিহীন নির্বাচন, প্রচারে নতুন বিধান যুক্ত করল ইসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১২:৫২:৩৭
পোস্টারবিহীন নির্বাচন, প্রচারে নতুন বিধান যুক্ত করল ইসি
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় পোস্টার ব্যবহার নিষিদ্ধ করে নতুন আচরণবিধি যুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন বিধান অনুযায়ী, একজন প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় সর্বোচ্চ ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন।

রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর জন্য প্রণীত এই নতুন আচরণবিধিমালায় আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এই বিধিমালা সংশোধনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ইসি।

নতুন আচরণবিধিমালায় বলা হয়েছে:

প্রচারণায় নতুন নিয়ম: নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোনো ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

বিলবোর্ডের ব্যবহার: প্রতিটি বিলবোর্ডের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য হবে ১৬ ফুট এবং প্রস্থ ৯ ফুট। একজন প্রার্থী তার সংসদীয় আসনে সর্বোচ্চ ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন।

সাইবার নিরাপত্তা: নারীদের সাইবার বুলিং থেকে রক্ষা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার ছড়ালে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

বিদেশে প্রচারণা: কোনো প্রার্থী সশরীরে বিদেশে গিয়ে তার পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারবেন না।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির বিধানও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ইসি। এক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। জরিমানার পরিমাণ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা করা হয়েছে এবং ছয় মাসের কারাদণ্ডের আগের বিধানটি বহাল রাখা হয়েছে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তৈরি করা এই বিধিমালা কার্যকর হলে এটি নির্বাচনের প্রচারণার পদ্ধতিকে পুরোপুরি বদলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।


জিএম কাদের ও তার স্ত্রীর বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১২:০৭:০৯
জিএম কাদের ও তার স্ত্রীর বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি
ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এবং তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে চলা দুর্নীতির অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিম এই নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া এই আদেশ দেন।

আদালতের আদেশে বলা হয়, জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। এই অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে চলে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত বা দীর্ঘায়িত হতে পারে।

আদেশে আরও বলা হয়, অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। আদালত ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে এই আদেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।


ব্যয় সাশ্রয়ের পরিপত্র উপেক্ষা: মন্ত্রীদের জন্য ৬০টিসহ ২৮০ গাড়ি কিনছে সরকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১০:৪৯:২৬
ব্যয় সাশ্রয়ের পরিপত্র উপেক্ষা: মন্ত্রীদের জন্য ৬০টিসহ ২৮০ গাড়ি কিনছে সরকার
ছবি: সংগৃহীত

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টিসহ মোট ২৮০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য জারি করা পরিপত্র লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২১ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়, যেখানে আগামী নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং পরবর্তী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার কথা বলা হয়। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের ৬০টি গাড়ি মন্ত্রীদের জন্য কেনা হবে, যার প্রতিটির দাম প্রায় ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এছাড়াও নির্বাচনকালীন সময়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য ১৯৫টি জিপ ও ২৫টি মাইক্রোবাসসহ মোট ২২০টি গাড়ি কেনা হবে।

সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে সরকারের মোট খরচ হবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় এসব গাড়ি কেনা হবে।

এদিকে, এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারেরই জারি করা ব্যয় সাশ্রয়ের পরিপত্র উপেক্ষিত হচ্ছে। গত ৮ জুলাই জারি করা ওই পরিপত্রে বলা হয়েছিল, নতুন যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে, তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ির প্রতিস্থাপক হিসেবে নতুন গাড়ি কেনা যেতে পারে। কিন্তু পরিবহণ পুলের তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রীদের জন্য কেনা গাড়িগুলো ৯ বছরের পুরোনো। ফলে এই শর্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, “পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, সেই সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া উচিত নয়। এটি তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।” তিনি আরও বলেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ের পদক্ষেপের পরিপন্থী। তিনি অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানান।

এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৬ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে এক সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনকালীন গাড়িগুলোর মধ্যে ১৯৫টি মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের জিপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য এবং ২৫টি মাইক্রোবাস জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য কেনা হবে। প্রতিটি জিপের দাম ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং প্রতিটি মাইক্রোবাসের দাম পড়বে ৫২ লাখ টাকা। এসব গাড়ি কিনতে মোট খরচ হবে প্রায় ৩৪৩ কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত ২৮০টি গাড়ির জন্য মোট ব্যয় ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দকৃত ৩২৮ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকার চেয়ে প্রায় ৯৬ কোটি টাকা বেশি। অতিরিক্ত এই ব্যয়ের অনুমোদনও দিয়েছে অর্থ বিভাগ।


জুলাই সনদে আসছে বড় পরিবর্তন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ০৯:৩২:৩৫
জুলাই সনদে আসছে বড় পরিবর্তন
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই সনদে আসছে পরিবর্তন, সংবিধানের ওপর প্রাধান্য থাকছে না

‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এর চূড়ান্ত খসড়ায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসছে। সংবিধান ও আইনের ওপর এই সনদের প্রাধান্য দেওয়া হবে না এবং সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ রহিত করার অঙ্গীকারেও বদল আসবে। এছাড়া, সনদের ব্যাখ্যার ক্ষমতা আপিল বিভাগকে দেওয়ার অঙ্গীকার বাতিল করা হতে পারে। সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতিও এতে থাকবে না, বরং তা সুপারিশ আকারে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ সরকারকে দেবে। এরপর সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, কোন পদ্ধতিতে সনদ বাস্তবায়িত হবে।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর বৈঠক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

অঙ্গীকারনামায় পরিবর্তন ও রাজনৈতিক মতভেদ

গত ১৬ আগস্ট, কমিশন সনদের একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া তৈরি করে ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে মতামত দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিল। ২৮টি দল মতামত দিয়েছে এবং এক সপ্তাহ ধরে তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকও করেছে কমিশন। চূড়ান্ত খসড়ার আট দফা অঙ্গীকারনামার মধ্যে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় পরিবর্তন আসবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার।

খসড়ার দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছিল, বিদ্যমান সংবিধান ও আইনের ওপর সনদ প্রাধান্য পাবে। কিন্তু বিএনপি এই অঙ্গীকারে রাজি নয়, যদিও জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি এতে একমত। এই আপত্তির কারণে অঙ্গীকারে ভাষাগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নতুন প্রস্তাবে বলা হতে পারে, যেসব সংস্কার বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন করতে হবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সনদের সুপারিশ প্রাধান্য পাবে। যেমন—এক ব্যক্তি জীবনে ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে যেন সব দল রাজি থাকে এবং রাজনৈতিক বিতর্ক এড়ানো যায়।

খসড়ার তৃতীয় দফায় বলা হয়েছিল, সনদের ব্যাখ্যা দেওয়ার এখতিয়ার একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের থাকবে। কিন্তু বিএনপি-সহ আটটি দল এতে রাজি নয়। তাদের যুক্তি, সনদ একটি রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল, তাই এটি আদালতের হাতে তুলে দেওয়া ঠিক হবে না।

বাস্তবায়ন পদ্ধতির সমাধান ও চূড়ান্ত খসড়া

সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পরেও কোনো সুরাহা হয়নি। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টি গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার চায়, আর বিএনপি-সহ ছয়টি দল মনে করে সংবিধান সংশোধন শুধুমাত্র সংসদের মাধ্যমে হওয়া উচিত। এই মতবিরোধের কারণে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বাস্তবায়ন পদ্ধতি সনদের অংশ হবে না।

তবে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করে সুপারিশ আকারে সরকারকে দেওয়া হবে। চূড়ান্ত খসড়া দুটি খণ্ডে বিভক্ত হবে—প্রথম খণ্ডে থাকবে প্রশাসনিক আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে অবিলম্বে কার্যকর করা যায় এমন সুপারিশগুলো। দ্বিতীয় খণ্ডে থাকবে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হয় এমন সুপারিশগুলো।

কমিশন সূত্র জানিয়েছে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সনদটি চূড়ান্ত করে রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হবে। যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়নি, সেগুলোতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবেই বিএনপির আপত্তি রয়েছে।


মাদকের ভয়াবহ পরিণতি: অকালে ঝরে যাচ্ছে জীবন, পঙ্গু হচ্ছে তরুণ সমাজ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ০৯:০২:০৬
মাদকের ভয়াবহ পরিণতি: অকালে ঝরে যাচ্ছে জীবন, পঙ্গু হচ্ছে তরুণ সমাজ
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীসহ সারা দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই কিশোর থেকে তরুণ (১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকাসক্তদের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ ভাগই ইয়াবায় আসক্ত, যাদের মধ্যে শিক্ষিত তরুণের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ প্রায় সব পেশার লোক এই আসক্তির শিকার।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, মাদকাসক্তদের মধ্যে কিডনি, লিভার, স্ট্রোক, ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এর ফলে তাদের মধ্যে মৃত্যুর হারও বাড়ছে। মাদকের এই আগ্রাসন প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল, প্রশাসন এবং অভিভাবকদের নিয়ে একটি সমন্বিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভয়াবহ রোগ ও পঙ্গুত্বের ঝুঁকি

কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, মাদকাসক্তদের মধ্যে নেফ্রাইটিস, কিডনি ফেইলর এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। মাদকাসক্ত তরুণদের মধ্যে কিডনি রোগীর সংখ্যাই বেশি। তিনি মনে করেন, মাদক কারবারি ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তরুণ সমাজকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, তরুণদের একটি বড় অংশ মাদকাসক্ত হয়ে অকালে মারা যাচ্ছে। লিভার ও প্যানক্রিয়াসে ক্যানসারসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মাদকাসক্তদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি।

নিউরো সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের যুগ্ম-পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম জানান, দীর্ঘদিন মাদক সেবনের ফলে অনেকের নার্ভ ড্যামেজ হয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনিদ্রা ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। এছাড়া নিউরোপ্যাথি, পঙ্গুত্ব এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের কারণে অকালে তাদের মৃত্যু হচ্ছে।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, মাদকাসক্তরা একপর্যায়ে দানবে পরিণত হয় এবং তাদের মধ্যে কোনো মানবতাবোধ থাকে না। মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে তারা খুন, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ করতেও দ্বিধা করে না।

চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এন হুদা বলেন, মাদকাসক্তরা স্থায়ীভাবে যৌন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নোংরা পরিবেশে থাকার কারণে তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগও বেশি হয়।

সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে মাদক, প্রয়োজন সমন্বিত প্রতিরোধ

২০১৭ সালে সরকারি জরিপ অনুযায়ী, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ছিল ৮৩ লাখ, যাদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই সর্বাধিক। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি হবে।

র‍্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি মো. এ কে এম শাহিদুর রহমান বলেন, র‍্যাবের মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে। তবে বড় ধরনের সামাজিক আন্দোলন ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তার মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র এবং সাধারণ জনগণ সমন্বিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলেই মাদকের আগ্রাসন রোধ করা সম্ভব।


২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: আপিলের রায় আজ, কী হবে তারেক রহমানের ভাগ্য?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ০৮:২৬:০৬
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: আপিলের রায় আজ, কী হবে তারেক রহমানের ভাগ্য?
ছবি: সংগৃহীত

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের রায় আজ ঘোষণা করবে আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে এই নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা। এই ঘটনায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।

মামলার বিচারিক ও হাইকোর্টের রায়

হামলার পর দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল—একটি হত্যা এবং অন্যটি বিস্ফোরক আইনে। প্রাথমিক তদন্তে বিতর্ক দেখা দিলে এক-এগারো পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন করে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে অধিকতর তদন্তের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ মোট ৫২ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এই মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ড বাতিল করে সব আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্ট তাদের রায়ে উল্লেখ করেন, মামলার তদন্ত পর্যাপ্ত ও স্বাধীনভাবে হয়নি এবং এতে অসঙ্গতি ও দুর্বলতা ছিল। আদালত এই স্পর্শকাতর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের অভাবকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে বাধা হিসেবে উল্লেখ করে।

আপিল বিভাগে শুনানি

হাইকোর্টের দেওয়া এই খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। তারা বিচারিক আদালতের সাজা বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে। অন্যদিকে, আসামিপক্ষ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি দেখায়। আপিল বিভাগে এই মামলার ধারাবাহিক শুনানি ১৭ জুলাই থেকে শুরু হয়ে মোট পাঁচ দিন ধরে চলে। আজ এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাদাত মো. সায়েম ভূঞা ও সাদিয়া আফরিন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও শিশির মনির।

/আশিক


ইসি’র ঘোষণায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা: তাহলে কি আওয়ামী লীগ বাদ পড়তে যাচ্ছে?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৬:৫৬:৩৭
ইসি’র ঘোষণায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা: তাহলে কি আওয়ামী লীগ বাদ পড়তে যাচ্ছে?
ছবি: জাগো নিউজ

কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের প্রতীকও স্থগিত থাকবে এবং তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। যদিও তিনি আওয়ামী লীগের নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি, তবে তার বক্তব্যে এটি স্পষ্ট যে, যদি দলটির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হয়, তাহলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নিতে পারবে না।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

আরপিও সংশোধনে নতুন বিধিমালা

ইসি সানাউল্লাহ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের বিষয়ে জানান যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তালিকায় সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভোটকেন্দ্র স্থাপন করবেন। এছাড়া, আদালত কর্তৃক যারা ফেরারি হবেন, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। লাভজনক পদে থাকা এবং যে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার আছে এমন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

নতুন সংশোধনীতে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনো প্রার্থী হলফনামায় তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দেন, তাহলে ইসি পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে এবং সেই ব্যক্তি সংসদ সদস্য পদ হারাবেন। একইসঙ্গে, প্রার্থীর জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

ভোটের পদ্ধতি ও অন্যান্য পরিবর্তন

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, একক প্রার্থী থাকলে সেই আসনে ব্যালটে ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকবে। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন। এছাড়া, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংক্রান্ত সকল বিধান বাতিল করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকতে পারবেন। নির্বাচনী পোস্টার বাতিল করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা যাবে না।

/আশিক

পাঠকের মতামত: