যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ট্রাম্পের শুল্কারোপ স্থগিত: ক্ষমতা লঙ্ঘনের অভিযোগ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানির ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, সেটি স্থগিত করেছে নিউইয়র্কের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত। বুধবার (২৮ মে) দেওয়া এক ঐতিহাসিক আদেশে আদালত জানায়, ট্রাম্প নিজের সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন। এই রায়ে ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি এবং নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের ধরন নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

আদালতের তিন বিচারকের প্যানেল রায়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী বাণিজ্যনীতি নির্ধারণের ক্ষমতা কংগ্রেসের, প্রেসিডেন্টের নয়। অর্থাৎ জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে নির্বাহী আদেশ দিয়ে প্রেসিডেন্ট নিজের ইচ্ছেমতো শুল্ক আরোপ করতে পারেন না।

রায়ের পেছনে রয়েছে দুটি বড় মামলা—

1. লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার নামে একটি সংস্থা মামলাটি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিনির্ভর পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে।
2. অপর মামলাটি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি অঙ্গরাজ্য।

উভয় মামলার মূল বক্তব্য ছিল—ট্রাম্পের শুল্কারোপ মার্কিন ব্যবসা ও রাজ্য অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং তা সংবিধান লঙ্ঘন করে আরোপ করা হয়েছে।

রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আপিলের নোটিশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে হোয়াইট হাউস এই বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, "বিচার ব্যবস্থা এখন অভ্যুত্থানের নিয়ন্ত্রণহীন একটি হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।"

গত ২ এপ্রিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় সব দেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বিপুল অস্থিরতা দেখা দেয়। পরে ট্রাম্প চীন ছাড়া অন্য সব দেশের ওপর ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করেন, শর্ত ছিল আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতের এই রায় স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলেও কেউ সংবিধানের ঊর্ধ্বে নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি যে শুধুই রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং আইনগত প্রশ্নবিদ্ধ একটি প্রয়াস, এই রায় তার প্রমাণ।