বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৫ ২৩:১৮:২১
বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?

বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে সালাহউদ্দিন আহমেদের আবির্ভাব এবং তার পরবর্তী গুম হওয়া বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অমোচনীয় অধ্যায়। সদ্য প্রকাশিত একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সেই সাহসী দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেছেন, যেখানে উঠে এসেছে গোপন প্রতিরোধ, রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং এক নারীর অসীম সাহসিকতার কথা।

এই স্ট্যাটাসে তিনি তুলে ধরেছেন, কীভাবে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক অবস্থানকে দমন করতে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, এবং সেই সময় বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে সালাহউদ্দিন আহমেদ কীভাবে প্রত্যক্ষভাবে শেখ হাসিনা সরকারের নীতির সমালোচনায় দাঁড়িয়েছিলেন।

শফিকুল আলমের ভাষ্যমতে, সালাহউদ্দিন আহমেদ যখন বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্ব নেন, তখন তার বিবৃতিগুলো ছিল সাহসী, নির্ভুল এবং প্রভাবশালী। তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে সরাসরি সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানান, যা রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এই কারণেই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী তাকে গুম করে—এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন শফিকুল আলম।

এই পোস্টে উঠে এসেছে রাজনৈতিক দমননীতির বিরুদ্ধে সাহসী কিছু চরিত্রের নাম, যেমন—সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ এবং গুমবিরোধী আন্দোলন ‘মায়ের ডাক’-এর নেত্রী হাজেরা খাতুন। লেখকের মতে, এই নারীদের নিরলস সংগ্রামই সালাহউদ্দিনকে জীবিত উদ্ধার পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিল।

শফিকুল আলম তার স্ট্যাটাসে আক্ষেপ করেছেন, আজকের তরুণ প্রজন্ম, এমনকি বিএনপির অনেক নতুন কর্মীও সালাহউদ্দিন আহমেদের গুম ও সাহসী রাজনৈতিক ভূমিকার কথা ভুলে গেছে। এর পেছনে রাজনৈতিক মেরুকরণ, ইতিহাসকে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা এবং দলীয় বিভক্তি দায়ী—এমনটাই তার ইঙ্গিত।

বর্তমানে যখন সামাজিক মাধ্যমে সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে, তখন শফিকুল আলম সেই পুরোনো ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলছেন, রাজনৈতিক সংগ্রামের এই গৌরবময় অধ্যায়গুলো ভুলে যাওয়া মানে আমাদের যৌথ প্রতিরোধের শক্তিকেই উপেক্ষা করা।

এই স্ট্যাটাস শুধু একটি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ নয়, বরং এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ পাঠও বটে। গুম, দমন, রাজনৈতিক প্রতিরোধ ও প্রচারের কৌশল—সবই এতে উঠে এসেছে এক অনন্য বর্ণনায়। এটি এও স্মরণ করিয়ে দেয় যে, রাজনৈতিক লড়াইয়ে শুধু নেতৃত্ব নয়, কখনো কখনো সঠিক ভাষা, বিবৃতি এবং জনগণের সঙ্গে যোগাযোগই হয়ে ওঠে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।

শফিকুল আলমের এই স্ট্যাটাসের মূল্য আজকের প্রেক্ষাপটে নতুন করে উপলব্ধি করা জরুরি। এটি শুধু অতীতের প্রতিচ্ছবি নয়, বরং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক চিন্তারও অনুপ্রেরণা হতে পারে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ