“ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাইয়ের পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, ভারতের দালালরা দেশের সর্বত্র ঘাপটি মেরে বসে আছে এবং সুযোগ পেলেই তারা ছোবল মারবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে তারা পদে পদে বাধা সৃষ্টি করছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও একটি দল নির্বাচন নির্বাচন করে সরকারের প্রতি অসহযোগিতার হুমকি দিচ্ছে। অথচ তারাও মুখে মুখে সংস্কার ও বিচার চায়। তিনি এই দ্বিচারিতাকে বন্ধ করার আহ্বান জানান।

বুধবার বিকেলে দিনাজপুর শহরের ইনস্টিটিউট মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। চরমোনাই পীর বলেন, একাত্তরে লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম, কিন্তু পরবর্তী সরকারগুলো দেশকে অরাজকতা, হানাহানি ও অর্থপাচারের স্বর্গভূমিতে পরিণত করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছে, তারা চেয়েছিল নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। কিন্তু এখনো দেশে চাঁদাবাজি ও দখলবাজি বন্ধ হয়নি, সন্ত্রাস থেমে যায়নি। এসব পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

চরমোনাই পীর দিনাজপুরবাসীকে উদ্দেশ করে বলেন, স্বাধীনতার পর অনেক দল দেশ শাসন করেছে এবং আমরা তাদের কর্মফল ভোগ করেছি। এখন সময় এসেছে ইসলামকে ক্ষমতায় নেওয়ার। তিনি জানান, ১৯৮৭ সাল থেকে তারা বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রলোভন এড়িয়ে দেশ ও জাতির পক্ষে লড়াই করে আসছেন। এমপি বা মন্ত্রিত্বের লোভে তারা কখনো নীতিহীন রাজনীতিতে অংশ নেননি। তাই আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতা ও জুলাইয়ের চাওয়াকে বাস্তবায়ন করতে ইসলামকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর দক্ষিণের সভাপতি নূর আলম সিদ্দিকী এবং সঞ্চালনায় ছিলেন দিনাজপুর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মুফতি মুহাম্মদ খাইরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্মমহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকি এবং ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুনতাসির আহমাদ। এই জনসভাকে ঘিরে দিনাজপুরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, এটি ছিল সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চরমোনাই পীরের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, তিনি আগাম নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনকে একক রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে চান এবং সরকারবিরোধী ইসলামপন্থী ভোটারদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন।