নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, উপদেষ্টা হিসেবে পরিচিত আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম বর্তমানে এনসিপির সঙ্গে কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা রাখছেন না। শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর বাংলামোটরে দলীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সে সময় সরকারের অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আমিও তখন তাদের সঙ্গে ছিলাম। তবে যদি তারা আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চান কিংবা নির্বাচনে অংশ নিতে চান, সেটি সরকারের বাইরে থেকেই করতে হবে।”

তিনি এনসিপির বিরুদ্ধে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে কেন্দ্র করে দলটির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা আমাদের জন্য নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য।”

আসন্ন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমাদের 'জুলাই ঘোষণাপত্র' প্রকাশ করা উচিত। একইসঙ্গে বিচার সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপও একত্রে ঘোষণা করা জরুরি। দেশের ভবিষ্যৎ ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।”

সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর প্রকাশিত ৬২৬ জনের তালিকা প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “যদি আগে থেকেই এই তালিকা প্রকাশ করা হতো, তাহলে অনেক গুজব ও শঙ্কার অবসান ঘটত। রাজনীতির সঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা অতীতে যেমন দেখা গেছে—বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময় সেটি সুখকর অভিজ্ঞতা ছিল না। গুমসহ মানবতাবিরোধী নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অনেকের বিষয়ে আজও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।”

স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা ক্ষীণ হয়ে গেছে। কমিশনের উচিত নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করা, নতুবা দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো।”

তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মধ্য দিয়েই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সূচনা হতে পারে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

এই সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক পরিস্থিতির এক টেকসই সমাধান ও দায়িত্বশীল অংশগ্রহণের আহ্বান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে দলীয় বিভাজনের বদলে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।