গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে হামাসের আলোচনার প্রস্তুতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৫ ১২:২৯:৪৫
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে হামাসের আলোচনার প্রস্তুতি

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ‘অবিলম্বে’ আলোচনা শুরু করতে তারা প্রস্তুত। একই সময় গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলের চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। খবর এএফপির।

সোমবার ওয়াশিংটনে সফরে যাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার সফরের আগে অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর সঙ্গে পরামর্শের পর এই ঘোষণা দেয়া হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য চাপ দিচ্ছেন। গাজার সীমানায় সংঘাত প্রায় ২১ মাস ধরে চলমান।

হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন সমর্থিত মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের খসড়া শর্তাবলী কার্যকর করার জন্য তারা অবিলম্বে এবং গুরুত্বসহকারে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত।

অপরদিকে, হামাসের মিত্র সংগঠন ইসলামিক জিহাদ জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে সমর্থন করে; তবে গাজায় বন্দী ফিলিস্তিনি জিম্মিদের মুক্তির পর ইসরায়েল যেন পুনরায় আগ্রাসন শুরু না করে তার নিশ্চয়তা চেয়েছে তারা।

গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হামাসের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, “এটি ভালো সংবাদ। তবে তারা এখনও বিস্তারিত জানায়নি। আমাদের বিষয়টি দ্রুত সমাধান করতে হবে। গাজার পরিস্থিতিতে আমাদের কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।”

এর আগে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি গাজার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান, কারণ তারা নরকের মতো পরিবেশে বাস করছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় সংঘাত শুরু হয়। সেদিন হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়, যা নজিরবিহীন। এরপর ইসরায়েল হামাসকে পরাস্ত করার এবং তাদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্ত করার লক্ষ্যে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করে।

কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পূর্ববর্তী দুই যুদ্ধবিরতিতে কিছু ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পেয়েছেন। তবে এখনও হামাসের কাছে বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মি আটক রয়েছেন।

সত্য প্রতিবেদন/আশিক


‘বোমাবর্ষণ বন্ধের’ ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় ইসরায়েলের তীব্র হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১৭:৪৭:৫৪
‘বোমাবর্ষণ বন্ধের’ ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় ইসরায়েলের তীব্র হামলা
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় ‘বোমাবর্ষণ বন্ধ’ করার কথা বলার পরও ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৬৬ জন নিহত হয়েছেন। এই সময়ে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭ জনসহ মোট ২৬৫ জন আহত হয়েছেন বলে গাজার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

নিহত ও আহতের সংখ্যা বাড়ল

আল জাজিরার শনিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এই আহ্বানের পরও ইসরায়েল তীব্র হামলা চালাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে উপত্যকায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭,০৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আহত হয়েছেন ১,৬৯,৪৩০ জন। ধারণা করা হচ্ছে, গাজাজুড়ে বিস্ফোরিত ভবনের বিশাল ধ্বংসাবশেষের নিচে আরও হাজার হাজার মৃতদেহ চাপা পড়ে আছে।

হামাসের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনি এই দলটি গাজার প্রশাসন ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাটদের হাতে হস্তান্তর করতে এবং সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে।

তবে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়ায় তাদের নিরস্ত্রীকরণের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। তারা বলেছে, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে অবিলম্বে শান্তি আলোচনায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক তারা।


জাতিসংঘ মহাসচিবের উৎসাহ: হামাসের সেই ঘোষণায় কী আছে, যা শান্তি ফেরাতে পারে?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১৪:৩২:০৫
জাতিসংঘ মহাসচিবের উৎসাহ: হামাসের সেই ঘোষণায় কী আছে, যা শান্তি ফেরাতে পারে?
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনার আলোকে জীবিত ও মৃত সকল ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস। হামাসের এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে জানান, মহাসচিব হামাসের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এতে উৎসাহিত হয়েছেন। তিনি সব পক্ষকে গাজায় চলমান সংঘাত শেষ করার সুযোগটি গ্রহণ করার আহ্বান জানান এবং কাতার ও মিশরকে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।

জাতিসংঘের আহ্বান ও ইসরায়েলের প্রস্তুতি

ডুজারিক বলেন, মহাসচিব তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন—তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, সকল বন্দির তাত্ক্ষণিক ও শর্তহীন মুক্তি এবং অবাধ মানবিক সহায়তার নিশ্চয়তা দেওয়া হোক। তিনি বলেন, “জাতিসংঘ এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে সকল প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে, যাতে আরও বেশি দুর্ভোগ রোধ করা যায়।”

হামাসের পক্ষ থেকে ইতিবাচক জবাব আসার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল এখন ‘সব জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্ত করার জন্য ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে প্রস্তুত’।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আমরা প্রেসিডেন্ট ও তার দলের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতায় কাজ চালিয়ে যাব, যাতে যুদ্ধের সমাপ্তি ইসরায়েলের নির্ধারিত নীতিমালার আলোকে হয়—যা ট্রাম্পের যুদ্ধ শেষ করার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।” হামাস একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও প্রশাসনিক হস্তান্তর নিয়ে আলোচনায় বসার আগ্রহও জানিয়েছে।


ইসরায়েলের নাম টেনে ইরানে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১৪:০০:৩০
ইসরায়েলের নাম টেনে ইরানে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড
ছবি: সংগৃহীত

ইরান বিতর্কিত বিচারের মাধ্যমে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কয়েক বছর আগে চার নিরাপত্তা কর্মী এবং একজন ধর্মীয় ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ ছিল। শনিবার (৪ অক্টোবর) দণ্ড কার্যকরের পর দেশটির বিচার বিভাগের সংবাদ সংস্থা মিজান এই তথ্য জানিয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের পরিচয়

রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুজেস্তান প্রদেশের খোররামশাহরে সশস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর অভিযোগে ছয়জন জাতিগত আরব বিচ্ছিন্নতাবাদীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ওই হামলায় চারজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছিলেন।

এছাড়া, সপ্তম মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছিলেন সামান মোহাম্মদী খিয়ারেহ, যিনি একজন কুর্দি। ২০০৯ সালে কুর্দিশ শহর সানন্দজে সরকারপন্থী সুন্নি মামুস্তা শেখ আল-ইসলামকে হত্যার অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

মিজান জানিয়েছে, এই ব্যক্তিদের ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল।

জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতি নিপীড়ন

অধিকার গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তেহরান নিয়মিতভাবে জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ভিন্নমত পোষণকারীকে স্বদেশী না বলে বিদেশি-সমর্থিত হিসেবে চিত্রিত করে আসছে। মূলত ভিন্নমতের বিরোধীদের হত্যাকে বৈধতা দিতেই সরকার এই কৌশল অবলম্বন করে।

বিশেষ করে মোহাম্মদী খিয়ারেহের মামলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হত্যার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বা ১৬ বছর। তাকে ১৯ বছর বয়সে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তাকে আটক রাখা হয়েছিল। অধিকার কর্মীরা বলেছেন, তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে নির্যাতনের মাধ্যমে সংগৃহীত স্বীকারোক্তির ওপর নির্ভর করে। এ ধরনের চর্চা ইরানি আদালতগুলোতে নিয়মিতভাবে হয়ে আসছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ইরানি কর্তৃপক্ষ ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত ১,০০০ জনেরও বেশি লোককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, যা কমপক্ষে ১৫ বছরের মধ্যে রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ বার্ষিক সংখ্যা। তাদের প্রায় সবাইকে ইসরায়েলের এজেন্ট বা বিদেশি শক্তির সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।


ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ধস: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪, নিখোঁজ আরও ৪৯

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১২:১৫:২৪
ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ধস: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪, নিখোঁজ আরও ৪৯
ছবিঃ সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ স্কুল ভবন ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে। এখনো অন্তত ৪৯ জন শিক্ষার্থী ও কর্মী নিখোঁজ, যাদের উদ্ধার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার (BNPB) প্রধান সুআরিয়ান্তো।

গত সোমবার বিকেলে নামাজের সময় হঠাৎ করেই বহু-তলা বোর্ডিং স্কুলটির একটি অংশ ভেঙে পড়ে। ধসের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে আশপাশের এলাকায় ভূমিকম্পের মতো কম্পন অনুভূত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুরো ভবনটি মুহূর্তের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

শুক্রবার পর্যন্ত উদ্ধারকারীরা নয়টি নতুন লাশ উদ্ধার করেন, যা মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে। শনিবার গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে সুআরিয়ান্তো বলেন, “আমরা এখনো নিখোঁজ ৪৯ জনকে খুঁজে যাচ্ছি। আশা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপে আরও মরদেহ পাওয়া যাবে।”

উদ্ধারকাজে শুরুতে শুধুমাত্র হাতে খোঁজ চালানো হলেও, ৭২ ঘণ্টার ‘গোল্ডেন পিরিয়ড’ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুমতি দেন নিখোঁজদের পরিবার। শনিবার থেকে একাধিক এক্সকাভেটর ও বুলডোজার ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করেছে। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ অত্যন্ত জটিল, কারণ এক জায়গায় কম্পনের প্রভাব অন্য জায়গার ধ্বংসস্তূপকেও নড়বড়ে করে তুলতে পারে।

এই দুর্ঘটনার তদন্তে প্রাথমিকভাবে অমানক নির্মাণকাজকেই দায়ী করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবন নির্মাণে মান বজায় রাখা হয়নি বলেই এত ভয়াবহ ধসের ঘটনা ঘটতে পারে। এরই মধ্যে তদন্ত টিম ভবনের স্থাপত্য ও নির্মাণ ইতিহাস খতিয়ে দেখছে।

উদ্ধারকাজকে আরও কঠিন করে তুলেছিল মঙ্গলবার রাতে হওয়া একটি ভূমিকম্প, যা কয়েক ঘণ্টার জন্য কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য করে কর্তৃপক্ষকে। তবে বর্তমানে উদ্ধার অভিযান পূর্ণমাত্রায় চলছে এবং ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে নিখোঁজদের খুঁজে বের করাই এখন প্রধান লক্ষ্য।

-হাসানুজ্জামান


আর্জেন্টিনায় তিন কিশোরী হত্যা: মূলহোতা পেরুতে আটক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১১:২৮:৩৯
আর্জেন্টিনায় তিন কিশোরী হত্যা: মূলহোতা পেরুতে আটক
ছবিঃ সংগৃহীত

আর্জেন্টিনায় নৃশংস তিন কিশোরী হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত এক ব্যক্তিকে পেরুর আদালত শুক্রবার প্রতিরোধমূলক হেফাজতে পাঠিয়েছে। নিহতরা হলেন—২০ বছর বয়সী কাজিন মোরেনা ভার্দি ও ব্রেন্ডা দেল কাস্তিয়ো এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সী লারা গুতিয়েরেস। গত সপ্তাহে বুয়েনস আইরেসের দক্ষিণাঞ্চলীয় এক বাড়ির আঙিনায় মাটিচাপা অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আদালত জানায়, অভিযুক্ত টোনি ভালভার্দে (২০), যিনি “লিটল জে” নামে পরিচিত, তিনি পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই তাকে অন্তত নয় মাসের জন্য হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যতক্ষণ না আর্জেন্টিনার প্রত্যর্পণ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়।

তদন্তকারীরা জানান, গত ১৯ সেপ্টেম্বর তিন তরুণীকে এক ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা ধারণা করেছিল, একটি পার্টিতে যোগ দিতে যাচ্ছে। কিন্তু পরে জানা যায়, স্থানীয় মাদক পাচারকারীরা তাদের প্রতারণার মাধ্যমে ডেকে নেয়। আর্জেন্টিনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এই হত্যাকাণ্ডটি সরাসরি একটি বন্ধ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গ্রুপে লাইভ সম্প্রচার করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, মাদক চুরির অভিযোগে তাদের শাস্তিস্বরূপ এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

কিছু আর্জেন্টাইন গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, ওই পার্টিতে তাদের যৌনকর্মী হিসেবে অংশ নিতে বলা হয়েছিল। নিহত ব্রেন্ডা ও মোরেনার এক আত্মীয় জানিয়েছেন, জীবিকার জন্য তারা মাঝে মাঝে এ ধরনের কাজে যুক্ত হতো, যদিও পরিবার তা জানত না।

এই হত্যাকাণ্ড আর্জেন্টিনায় ব্যাপক জনরোষের সৃষ্টি করেছে। গত সপ্তাহান্তে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে।

ভালভার্দে বুয়েনস আইরেসের জাভালেতা এলাকায় একটি মাদক চক্রের নেতৃত্ব দিতেন বলে সন্দেহ করছে কর্তৃপক্ষ। তবে তার আইনজীবী মার্কোস সান্দোভাল দাবি করেছেন, ভালভার্দে নির্দোষ। তিনি আর্জেন্টিনায় কেবল ব্লুবেরি সংগ্রহ ও মোজা বিক্রির মতো কাজ করতেন।

গত মঙ্গলবার পেরুর লিমার দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা পুকুসানায় ভালভার্দেকে গ্রেপ্তার করা হয় তার এক সহযোগী মাতিয়াস ওসোরিও (২৮)-এর সঙ্গে। বৃহস্পতিবার ওসোরিওকে ইতোমধ্যে আর্জেন্টিনায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আর্জেন্টিনায় ইতিমধ্যেই সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

-হাসানুজ্জামান


গাজা যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় রাজি হামাস, ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১১:১৪:০৪
গাজা যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় রাজি হামাস, ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রায় দুই বছর ধরে চলমান গাজা যুদ্ধের অবসান ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তুতি ঘোষণা করেছে হামাস। শুক্রবার সংস্থাটি জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অবিলম্বে আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত।

হোয়াইট হাউস সোমবার এ প্রস্তাব প্রকাশ করে। ২০ দফার এ শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণার সময় ট্রাম্পের পাশে ছিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, যিনি প্রস্তাবের প্রতি ‘সতর্ক সমর্থন’ ব্যক্ত করেন।

গাজা সংকট সমাধানে ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা

১. সন্ত্রাসমুক্ত গাজা: গাজাকে সন্ত্রাসমুক্ত ও প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য হুমকিমুক্ত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

২. গাজার পুনর্গঠন: দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে গাজার উন্নয়ন ও পুনর্গঠন করা হবে।

৩. যুদ্ধবিরতি: উভয় পক্ষ প্রস্তাবে রাজি হলে যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হবে। ইসরায়েল সেনা নির্দিষ্ট সীমারেখায় সরে যাবে, সব সামরিক অভিযান (বিমান ও আর্টিলারি হামলা সহ) বন্ধ থাকবে।

৪. জিম্মি মুক্তি: ইসরায়েল প্রকাশ্যে চুক্তি গ্রহণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মি (জীবিত ও মৃত) ফেরত দেওয়া হবে।

৫. বন্দি বিনিময়: জিম্মি মুক্তির পর ইসরায়েল ২৫০ জন আজীবন সাজাপ্রাপ্ত ও ১,৭০০ আটক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে, যার মধ্যে নারী-শিশুও থাকবে। মৃত ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে ১৫ ফিলিস্তিনির মৃতদেহ ফেরত দেওয়া হবে।

৬. আমনেস্টি: জিম্মি মুক্তির পর যারা অস্ত্র ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান মেনে নেবে, সেই হামাস সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে। যারা গাজা ছেড়ে যেতে চাইবে, তাদের নিরাপদ পথে পাঠানো হবে।

৭. মানবিক সহায়তা: চুক্তি স্বাক্ষরের পরই ব্যাপক মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করবে—বিদ্যুৎ, পানি, সড়ক, হাসপাতাল, বেকারি পুনর্গঠন ও ধ্বংসস্তুপ অপসারণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

৮. সহায়তা বিতরণ: জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে গাজায় সহায়তা প্রবাহিত হবে। রাফাহ সীমান্ত একই প্রক্রিয়ায় উভয়দিকে খোলা থাকবে।

৯. অস্থায়ী শাসনব্যবস্থা: গাজা পরিচালনা করবে প্রযুক্তিবিদ ও অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটি, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সহায়তায়। তদারকির দায়িত্ব থাকবে নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা “বোর্ড অব পিস”–এর হাতে, যার নেতৃত্ব দেবেন ট্রাম্প। টনি ব্লেয়ারসহ অন্যান্য বিশ্বনেতারা যুক্ত হবেন।

১০. অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা: মধ্যপ্রাচ্যের সফল শহরগুলোর মডেল ধরে গাজার পুনর্গঠন ও বিনিয়োগ আকর্ষণে নতুন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নেওয়া হবে।

১১. বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল: গাজায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে, যেখানে শুল্ক ও বাণিজ্য সুবিধা থাকবে।

১২. গাজা ত্যাগে স্বাধীনতা: কেউ চাইলে গাজা ছেড়ে যেতে পারবে এবং চাইলে পুনরায় ফিরে আসতে পারবে। তবে মানুষকে গাজায় থেকে পুনর্গঠনে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হবে।

১৩. হামাসের শাসনে নিষেধাজ্ঞা: হামাস ও অন্যান্য দল গাজার শাসনে কোনোভাবেই অংশ নেবে না। সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করে অস্ত্র জব্দ করা হবে, আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে নিরস্ত্রীকরণ হবে।

১৪. আঞ্চলিক গ্যারান্টি: আঞ্চলিক সহযোগীরা নিশ্চয়তা দেবে যে হামাস চুক্তি মানছে এবং গাজা প্রতিবেশীদের জন্য হুমকি নয়।

১৫. আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (ISF): যুক্তরাষ্ট্র, আরব দেশ ও আন্তর্জাতিক অংশীদাররা গাজায় একটি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করবে। এ বাহিনী ফিলিস্তিনি পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেবে এবং ইসরায়েল-মিসরের সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তায় কাজ করবে।

১৬. ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার: গাজা দখল বা সংযুক্ত করবে না ইসরায়েল। আইডিএফ ধাপে ধাপে এলাকা ছেড়ে দেবে, যতক্ষণ না গাজা নিরাপদ ও নিরস্ত্র হয়।

১৭. প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে: হামাস দেরি করলে বা প্রত্যাখ্যান করলে সন্ত্রাসমুক্ত এলাকায় উন্নয়ন ও সহায়তা কার্যক্রম চলবে।

১৮. ধর্মীয় সংলাপ: ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান জোরদার করতে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ চালানো হবে।

১৯. ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা: ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার প্রোগ্রাম সফলভাবে শেষ করলে স্বশাসন ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি হবে।

২০. দীর্ঘমেয়াদি শান্তি: যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংলাপ চালিয়ে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সহাবস্থানের রাজনৈতিক রূপরেখা তৈরি করবে।

-আলমগীর হোসেন


ইসরায়েলে আটক গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অভিযাত্রীদের অনশন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ০০:৫৮:০১
ইসরায়েলে আটক গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অভিযাত্রীদের অনশন

ইসরায়েলে আটক গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মিশনের অভিযাত্রীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী যে নৃশংসভাবে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মিশনের নৌযান, ক্রু ও অভিযাত্রীদের আটক করেছে, তার প্রতিবাদেই অভিযাত্রীরা এই অনশন শুরু করেছেন। ১ অক্টোবর আটক অভিযান শুরুর দিন থেকেই তারা অনশনের সিদ্ধান্ত নেন।

ফ্লোটিলা অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার জনগণের জন্য খাদ্য ও ওষুধ বহন করা। ৩১ আগস্ট স্পেনের একটি বন্দর থেকে ৪৩টি নৌযান গাজার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এতে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৫০০ নাগরিক, যারা এসেছিলেন ৪৪টি দেশ থেকে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা, এছাড়া সংসদ সদস্য, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা।

তবে গাজার জলসীমায় পৌঁছানোর আগেই একে একে প্রায় সব নৌযান আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। ১ অক্টোবর রাতে প্রথম ধাপে ১৩টি নৌযান আটক করা হয়। এর পরও বাকি নৌযানগুলো এগিয়ে যেতে থাকে। ২ অক্টোবর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আরও ২৯টি নৌযান আটক করে ইসরায়েলি বাহিনী। অবশেষে ৩ অক্টোবর সকালে সর্বশেষ নৌযানটিও আটক হয়। সবমিলিয়ে ৪৩টির মধ্যে ৪২টি নৌযানকে ইসরায়েলের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এই অভিযানে বিশ্বব্যাপী পরিচিত অনেক ব্যক্তির অংশগ্রহণের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে এবং আটক অভিযাত্রীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে। ফ্লোটিলা অভিযাত্রীদের অনশন শুরুর ঘোষণা ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


ভারত অস্বীকার করল খাগড়াছড়ি অস্থিরতায় জড়িত থাকার অভিযোগ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ০০:৪৫:৪৩
ভারত অস্বীকার করল খাগড়াছড়ি অস্থিরতায় জড়িত থাকার অভিযোগ

বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলায় সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক বিতর্কে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) জানায়, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, খাগড়াছড়ির সহিংসতা উসকে দেওয়ার পেছনে ভারত এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট অনুসারীদের ইন্ধন থাকতে পারে। তিনি দাবি করেন, দুর্গাপূজার উৎসবমুখর পরিবেশ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে অশান্তি সৃষ্টি করছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেন:

“আমরা এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বারবার নিজেদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে দায়ভার অন্যের ওপর চাপাচ্ছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, বাংলাদেশের উচিত হবে আত্মসমালোচনা করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় উগ্রপন্থিদের সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ভূমি দখলের ঘটনার ওপর গুরুতর তদন্ত করা।

২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় এক কিশোরীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগীর বাবা তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করলে পরদিন পুলিশ শয়ন শীল নামে এক যুবককে (১৯) গ্রেফতার করে।

এই মামলার জের ধরেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুর্বৃত্তরা শত শত ঘরবাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তবে পরবর্তীতে মেডিকেল রিপোর্টে দেখা যায়, কিশোরীটি ধর্ষণের শিকারই হয়নি। কিন্তু রিপোর্ট হাতে আসার আগেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তার দাবি, অশান্তি সৃষ্টি করার পেছনে রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে এবং এটি দুর্গাপূজার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার উদ্দেশ্যমূলক প্রচেষ্টা।

খাগড়াছড়ির সাম্প্রতিক অস্থিরতা একটি অপরাধমূলক ঘটনা থেকে দ্রুতই বড় আকারের সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে স্থানীয় রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতি একত্রে মিশে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার যেখানে বিদেশি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করছে, সেখানে ভারত সরাসরি তা প্রত্যাখ্যান করেছে।


বিক্ষোভের মুখে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর, বন্ধ মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৩ ১৪:৪৪:৪২
বিক্ষোভের মুখে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর, বন্ধ মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর টানা চতুর্থ দিনের মতো সম্পূর্ণ অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে। গত কয়েক দিনে সহিংস সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নাগরিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত জম্মু কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (জেএএসি)। সংগঠনটি ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন শুরু করেছে, ফলে অঞ্চলজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, যানবাহন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।

আন্দোলনের কারণ ও দাবি

আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল ২০২৩ সালে বিদ্যুতের বিল বৃদ্ধি এবং ময়দার সংকট ঘিরে। পরে এটি বিস্তৃত আন্দোলনে রূপ নেয়, যার মূল দাবি ৩৮ দফা।

উল্লেখযোগ্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:

বিশেষ সুবিধা বাতিল: শাসক শ্রেণির সরকারি গাড়ি, ভাতা ও জ্বালানির মতো বিশেষ সুবিধা বাতিল করা।

শরণার্থী আসন বাতিল: শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত ১২টি আসন বাতিল করা।

অন্যান্য: শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি, নতুন অবকাঠামো প্রকল্প, ট্যাক্স ছাড় এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি।

সরকার ও প্রশাসনের অবস্থান

সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে জেএএসি।

পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের অর্থমন্ত্রী আবদুল মজিদ খান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে শরণার্থী আসন বাতিল এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধা কমানোর মতো দুটি ইস্যুতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। তিনি আরও জানান, রাজস্ব আদায় অত্যন্ত কম থাকায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফেডারেল সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের আলোচক দল মুজাফফরাবাদে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবারের বৈঠক কোনো সমাধান ছাড়াই শেষ হলেও শুক্রবার আবারও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ বাস করেন, যারা একটি আংশিক স্বায়ত্তশাসিত ব্যবস্থার অধীনে নিজেদের সরকার ও আইনসভা পরিচালনা করে।

সূত্র: আল-জাজিরা

পাঠকের মতামত: